একসময় দৈনিক আজকের কাগজভোরের কাগজ-এর সাময়িকী সংগ্রহ করতাম, কিন্তু অধুনালুপ্ত দৈনিক মুক্তকণ্ঠ-র আট পৃষ্ঠার বর্ণিল সাময়িকী ‘খোলা জানালা’ দেখার পর অন্যসব সাময়িকী নিষ্প্রভ ও গৌণ হয়ে গেল হঠাৎ। আমাদের লেখালেখির মালশায় আগুন উসকে দিয়েছিল ‘খোলা জানালা’, আমরা তর্ক করতাম ‘খোলা জানালা’-র লেখা ও প্রচ্ছদ নিয়ে, প্রতি শুক্রবার ছিল আমাদের কাছে নবান্নের মতো। [...]

একসময় দৈনিক আজকের কাগজ ও ভোরের কাগজ-এর সাময়িকী সংগ্রহ করতাম, কিন্তু অধুনালুপ্ত দৈনিক মুক্তকণ্ঠ-র আট পৃষ্ঠার বর্ণিল সাময়িকী ‘খোলা জানালা’ দেখার পর অন্যসব সাময়িকী নিষ্প্রভ ও গৌণ হয়ে গেল হঠাৎ। আমাদের লেখালেখির মালশায় আগুন উসকে দিয়েছিল ‘খোলা জানালা’; আমরা তর্ক করতাম ‘খোলা জানালা’-র লেখা ও প্রচ্ছদ নিয়ে, প্রতি শুক্রবার ছিল আমাদের কাছে নবান্নের মতো। হকারকে অগ্রিম টাকা ও বখশিস দিয়ে রাখতাম, তবু কারা যেন আগেভাগে এসে ছিনিয়ে নিয়ে যেত দুয়েকটি সংখ্যা মাঝেমধ্যে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায়, মনে আছে, একবার ‘খোলা জানালা’ না পেয়ে ভরদুপুরে না খেয়েই হেঁটে হেঁটে চলে গিয়েছিলাম হাটহাজারি বাসস্টপে এবং আশ্চর্য, সেদিনের সংখ্যার নামই ছিল ‘দূরপাল্লার পদাবলী’ (সংখ্যা ৫০, ২ অক্টোবর ১৯৯৮)―শামসুর রাহমান, সিকদার আমিনুল হক, আবু হাসান শাহরিয়ার, আওলাদ হোসেন, নুরুন্নাহার শিরীন ও টোকন ঠাকুরের দীর্ঘ কবিতাভাসান ছিল সেদিন। দুঃখ এই যে, আমার সংগৃহীত সাময়িকীর স্তূপ থেকে নিভৃতে বেছে বেছে ‘খোলা জানালা’তেই শুধু দাঁত বসিয়েছে সাহিত্যপ্রাণ ইঁদুরেরা! ছোটকাগজ-বড়কাগজের চারিত্র্য, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে একটি সংখ্যা সাজিয়েছিল ‘খোলা জানালা’, ‘অভিবাদন ছোটকাগজ’ (সংখ্যা ৪৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮) শিরোনামে; শহীদুল ইসলামের মূল প্রচ্ছদরচনার পাশাপাশি ‘দৃশ্য ও দৃশ্যান্তরের গল্প’ প্রবন্ধে আবু হাসান শাহরিয়ার উনিশটি মূল্যবান খণ্ডচিত্র তুলে ধরেছিলেন, সমকালীন সাহিত্যচর্চার প্রসঙ্গে যেগুলো বেশ তাৎপর্যময় : ০২. বেশিরভাগ বড়কাগজের সাহিত্য সাময়িকীই তকমাধারী মুষ্টিমেয় লেখকের উপনিবেশে রূপান্তরিত হয়েছে। ঐসব সাময়িকীতে তকমাধারীদের জন্য শতকরা আশিভাগ স্থান বরাদ্দ থাকে। বাকি মাত্র কুড়িভাগ স্থান নতুন বা নিভৃতচারী লেখকদের জন্য। ১৫. দশকচর্চার প্রতি অপ্রতিভাবানদের বিশেষ প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। দশকের ঝাঁপিতে-ঝাঁপিতে ঢোঁড়া সাপের আস্ফালন থেকে নতুন প্রজন্মও বেরিয়ে আসতে পারছে না। ১৯. হাতুড়ে পরামর্শকদের মহাজনী ও মোড়লিপনায় দিগ্‌ভ্রান্ত হচ্ছেন অনেক নতুন লেখক। [কথায় কথায় এরা দেরিদা ফুকো কপচালেও প্রত্নবাঙলার হুঁকোর সঙ্গে পরিচিত নন।] ‘প্রত্নবাঙলার হুঁকো’ কথাটিই যেন ‘খোলা জানালা’র অদৃশ্য প্রতীক; আবু হাসান শাহরিয়ার নিজেই তখন লিখছেন ‘মাটিবর্তী’ নামের কবিতা, পড়তে পড়তে আমাদের মনে হয়েছে, তিরিশি আধুনিক কবিদের বিরুদ্ধে সাধারণভাবে যে-ইউরোপলগ্নতার অভিযোগ তোলা হয়ে থাকে, ‘খোলা জানালা’ বোধহয় সে-অভিযোগ স্খালনেরই চেষ্টা করে যাচ্ছে আন্তরিক সচেতনতায়। না হলে ময়মনসিংহের জলমগ্ন জনপদে নৌকাভ্রমণের মনোজ্ঞ ছবি আঁকতেন না টোকন ঠাকুর ‘দূরের বসতি প্রাণের বাসিন্দা’ শিরোনামে (সংখ্যা ৪৯, ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮)। ভাববাচ্যপ্রধান…

মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিংকের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিংক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে। ধন্যবাদ।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.