গত ১৭ মার্চ ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। যে যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর গুণকীর্তন করে গলা ফাটিয়ে ফেলেছেন। যাই হোক, এই লেখা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন নিয়ে নয়, সম্প্রতি পড়া বঙ্গবন্ধুর এক সাক্ষাৎকার নিয়ে। [..]

গত ১৭ই মার্চ ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় নিশ্চয় দেশে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে এই জন্মদিন পালিত হয়েছে। কিছুদিন আগে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়ে যাবার পরে যারা মিষ্টি খেয়ে, আধাবেলা অফিস করে ছুটি কাটাতে চলে গিয়েছিলেন, তাঁরাও নিশ্চয় এই সু্যোগে আধাবেলা বা পুরো বেলা ছুটি নিয়েছেন। যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর গুণকীর্তন করে গলা ফাটিয়ে ফেলেছেন। যাই হোক, এই লেখা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন নিয়ে নয়, সম্প্রতি পড়া বঙ্গবন্ধুর এক সাক্ষাৎকার নিয়ে। এক বন্ধুর কল্যাণে ইতালিয়ান সাংবাদিক ওরিয়ানা ফালাচীর নেয়া বঙ্গবন্ধুর ‘সাক্ষাৎকারের’ বিবরণ দেখলাম। সাক্ষাৎকারটি নেয়া হয়েছিল ১৯৭২ সালের জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে, ফালাচীর বর্ণনামতে ‘ঘৃণ্য নগরী’ ঢাকা শহরে (যেখানে সশস্ত্র মুক্তিবাহিনী ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ইচ্ছামত লুটতরাজ করেছে, দৈনিক রাস্তাঘাটে অবাঙ্গালী হত্যা চলছে)। একটি সদ্য স্বাধীন দেশ সম্পর্কে একটিও ইতিবাচক কথা নেই। ফালাচী বঙ্গবন্ধু বিষয়ে টাইম পত্রিকায় যে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে তার উল্লেখ করেছেন। টাইম পত্রিকার অনলাইন আর্কাইভে রাখা সেই লেখা পড়ে সংশয়ের তেমন কিছুই দেখা গেল না। বরং দেখা গেল কিশোর বঙ্গবন্ধু ব্রিটিশ আমলের পুলিশের হাতে বন্দি হয়ে ছয়দিনের জেল খেটেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের আন্দোলনে সাহায্য করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কৃত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ফালাচীর ‘কঠিন’ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান আর তাঁকে অফিস থেকে বের করে দেন। ফালাচী আরও বলেছেন যে মুক্তিবাহিনী তাঁকে হত্যার হুমকি দেয় এবং এক জার্মান পর্যটকের সহায়তায় তিনি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর এক ভাগনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, বঙ্গবন্ধু একজন মাথামোটা ব্যক্তি যিনি ফাঁকতালে নেতা বনে গেছেন। সাক্ষাৎকারটি পড়ে বঙ্গবন্ধুকে মোটামুটি একজন গ্যাং লীডার ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি। তবে সেন্ট পিটার্সবার্গ টাইমসের অনলাইনে আর্কাইভে দেখা গেল (১৮ জানুয়ারি, ১৯৭২) বঙ্গবন্ধু সকল মুক্তিযোদ্ধাকে ১০ দিনের মধ্যে অস্ত্র জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। একজন পেশাদার সাংবাদিক এই জাতীয় মিথ্যাচার কেন করলেন সেটা বুঝতে পারছি না। মূল সাক্ষাৎকারটি কোথাও খুঁজে পাইনি। তবে এই সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে www.sheikhmujiburrahman.org বঙ্গবন্ধুর নামে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। জামায়াত নেতারাও আসন্ন যুদ্ধাপরাধ বিচারে ফালাচীর বইয়ের (Interview With History) উদ্ধৃতি দিবেন বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্ত সেই একই সময়ে বিশ্ববিখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য শুনে পোড় খাওয়া সাংবাদিক ফ্রস্ট নিজেও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.