জয়বাংলা- আবারও জীবন্ত হয়ে উঠেছে এই স্লোগান, যেটি ছিল বাংলাদেশের জীবনদায়িনী স্লোগান; আরো ফিরে এসেছে তোমার আমার ঠিকানা/পদ্মা মেঘনা যমুনা, ফিরে এসেছে তুমি কে, আমি কে/ বাঙালি, বাঙালির মতো স্লোগানগুলোও। রক্তের বন্যায় অন্যায়কে ভাসিয়ে দেয়ার স্লোগানে, লড়াই করে বাঁচতে চাওয়ার স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে আকাশ-বাতাস। কাদের দেয়া এসব স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে আজ শাহবাগ থেকে শুরু করে সারা বাংলা? এসব তো পরিণত হয়েছিল মৃত স্লোগানে, পরিণত হয়েছিল দলীয় স্লোগানে- আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ আর যুবলীগ তাদের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি আর সহিংসতার মধ্য দিয়ে তো জয়বাংলা স্লোগানকে করে তুলেছিল মূর্তিমান আতঙ্কে। তাহলে রাজনীতি-সমাজ-সংস্কৃতির কোন বাস্তবতা আবারো ফিরিয়ে এনেছে এসব স্লোগানকে? একটি দিন-৫ ফেব্রুয়ারির দিনটি আমাদের ইতিহাসকে পাল্টে দিতে চলেছে। মানুষ জেগে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত হয়ে একাত্তরের সময় সংঘটিত ম্যাসাকারের জন্য অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে। না, একদিনে তৈরি হয়নি ৫ ফেব্রুয়ারি, তৈরি হয়েছে তিলে তিলে এবং তার প্রকাশ ঘটেছে একটি দিনে- ৫ ফেব্রুয়ারিতে। এ দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই ঐতিহাসিক কথাটিকে, ইতিহাসে কখনো কখনো এমন বন্ধ্যা সময় আসে যখন ১ দিনের কাজ ১শ দিনেও সম্পন্ন হয় না, আবার এমন উর্বর সময় আসে যখন ১শ দিনের কাজ একদিনেই সম্পন্ন হয়। শাহবাগ ফিরিয়ে আনতে চলেছে ইতিহাসের সেই উর্বর সময়। আর এজন্য আমরা আজ শ্রদ্ধায় নত হয়ে আছি তারুণ্যের এ শক্তির কাছে, তারুণ্যের এ উত্থানের কাছে- কেননা বিস্ময়কর তাদের এ জাগরণ। কেননা মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই শুরু হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভিন্নমুখী করার, বিকৃত করার নানা চক্রান্ত। মুক্তিযুদ্ধে বাম সংগঠনগুলোর অবদানকে অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভিন্নমুখী করার চক্রান্ত শুরু হয়েছিল। পরে মুক্তিযুদ্ধের এমনকি সাধারণ তথ্যগুলোও বিকৃত করা হতে থাকে মৌলবাদী-ডানপন্থী রাজনীতির স্বার্থে। বছরের পর বছর ধরে আমাদের শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অনেক মিথ্যা তথ্য পড়েছে, এক বছর একরকম পড়েছে তো অন্য বছর পড়েছে আরেকরকম, স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে শুনেছে একরকম আবার ঘরে ফিরে মা-বাবার কাছে শুনেছে অন্যরকম। এত পরস্পরবিরোধিতার মধ্য দিয়ে কারো পক্ষে সত্য জানা প্রায় অসম্ভব- কিন্তু আমাদের নতুন প্রজন্ম সেই অসম্ভব কঠিন কাজটিই করেছে, তারা অসত্যের নিরেট দেয়াল ভেঙে সত্য জেনেছে। কোনো কোনো সংগঠন এজন্য নিরন্তর কাজ করেছে বটে, কিন্তু তারপরও…
...কাদের দেয়া এসব স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে আজ শাহবাগ থেকে শুরু করে সারা বাংলা? এসব তো পরিণত হয়েছিল মৃত স্লোগানে, পরিণত হয়েছিল দলীয় স্লোগানে- আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ আর যুবলীগ তাদের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি আর সহিংসতার মধ্য দিয়ে তো ‘জয়বাংলা’ স্লোগানকে করে তুলেছিল মূর্তিমান আতঙ্কে। তাহলে রাজনীতি-সমাজ-সংস্কৃতির কোন বাস্তবতা আবারো ফিরিয়ে এনেছে এসব স্লোগানকে?...