আন্তর্জাতিক অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত আসামীর বয়স কোনো বিষয় না। পার হয়ে যাওয়া দশকের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যাবে না অপরাধের দায় থেকে। অপরাধে সম্পৃক্তি (complicity)-ও গুরুতর অপরাধ, এবং বিচারযোগ্য অপরাধ।

লাজলো সাতারির বয়স এখন ৯৭ বছর, অবশেষে তাকে খুঁজে পাওয়া গেল বুদাপেস্ট শহরে। এতদিন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন কুখ্যাত এই নাজি যুদ্ধাপরাধী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হাঙ্গেরীর কাস্সা শহরে ইহুদীদের জন্য তৈরী ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলো এই লাজলো একজন পুলিশ কমান্ডার হিসেবে। সেখান থেকে কম পক্ষে ১৬০০০ ইহুদীকে অসউইৎজ ‘মৃত্যু ক্যাম্পে’ পাঠানোতে এই লাজলোর ভূমিকা ছিল, যে কারণে এখন তার বিরুদ্ধে অপরাধে সম্পৃক্তির (complicity) অভিযোগ আনা হতে পারে। লাজলোর এখন বিচার হওয়ার জোর সম্ভাবনা, ছয় (৬) দশক পেরিয়ে গেছে, তারপরও।

কয়েকটি বিষয় লক্ষনীয় এখানে। এক: লাজলোর বয়স; দুই: লাজলোর অপরাধের ধরণ।

প্রসঙ্গতঃ লাজলো যে অপরাধের কারণে বিচারের সম্মুখীন হবেন, ঠিক সেই একই ধরণের অপরাধে আসামী গোলাম আযমের বিচার ইতোমধ্যেই হচ্ছে বাংলাদেশের মাটিতে। অপরাধটির নাম হল সম্পৃক্তি (complicity)। কিসে সম্পৃক্তি? আইনে উল্লেখিত বিভিন্ন ধরণের আন্তর্জাতিক অপরাধে “সম্পৃক্তি”। অবশ্য গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৬ টি ভিন্ন অভিযোগের একটি হল এই “সম্পৃক্তি”, অর্থাত তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগের বিচার চলছে।

লাজলোর বিচারের কথাবার্তা শুরু হয়েছে যখন তার বয়স ৯৭ বছর। আর অন্যদিকে, যখন বিচার শুরু হয়, তখন গোলাম আযমের বয়স ছিল ৮৯ বছর। গোলাম আযমের আইনজীবিরা তার বার্ধক্যের অজুহাত দেখিয়ে জামিনের আবেদন করেছিল। সে আবেদন মঞ্জুর হয়নি। কারণ, যেখানে আসামীর বিরুদ্ধে “আন্তর্জাতিক অপরাধ”-এর মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে সেখানে আসামীর বয়স কিংবা কোনো স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা জামিনের পক্ষে যুক্তি হতে পারে না। [এই পোস্টে বিস্তারিত] আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যেখানে গোলাম আযমের চেয়ে আরও বেশি বয়সের আসামীকেও “আন্তর্জাতিক অপরাধের” বিচারকালে জামিন দেয়া হয়নি। উদাহরণ হিসেবে ৯১ বছর বয়স্ক নাৎসি যুদ্ধাপরাধী জন দেমইয়ানযুক (John Demjanjuk) -এর বিচারের ঘটনাটি উল্লেখ করা যেতে পারে — গোলাম আযমের জামিনের শুনানির সময় প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকেও দেমইয়ানযুক এর মামলাটি উল্লেখ করা হয়েছে।

দেমইয়ানযুকের ক্ষেত্রে ঘটনা কি ছিল? আসুন জেনে নিই।

আমেরিকা-নিবাসী ইউক্রেনীয় দেমইয়ানযুকের বিরুদ্ধে মিউনিখের এক আদালতের অভিযোগ ছিল — তিনি ১৯৪৩ সালে ইউক্রেনের এক নাৎসি মৃত্যুশিবিরে প্রায় ২৭,০০০ ইহুদি নিধনে সহযোগিতা করেছিলেন। ২০০৯ সালে জার্মানির আদালত দেমইয়ানযুক-এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একই বছর তাঁকে বিচারের জন্য আমেরিকা থেকে জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পুরো বিচারকালীন সময়টুকুতেই তাঁকে স্টাডেলহেইম জেলখানার মেডিকেল ইউনিটে বিনা জামিনে আটক রাখা হয়েছিল। এখানে দেমইয়ানয়ুক-এর বার্ধক্য তাঁকে হাজত-বাস থেকে বাঁচাতে পারেনি। গ্রেফতারকালে তাঁর বয়স ছিল ৮৯ বছর বয়স, ঠিক গোলাম আযমের মতোই। ২০১১ সালের মে মাসে বিচার শেষে দেমইয়ানযুককে মিউনিখের আদালত ২৭৯০০ ইহুদি নরনারীর হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে এবং শাস্তি প্রদান করে। দেমইয়ানযুক জেলেই মৃত্যুবরণ করেন কিছুদিন আগে।

সুতরাং–

<>অনুসিদ্ধান্ত এক – আন্তর্জাতিক অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত আসামীর বয়স কোনো বিষয় না। তার জন্য দেমইয়ানযুক রেহাই পায়নি, গোলাম আযমও পায়নি, লাজলোও পাবে না।

<>অনুসিদ্ধান্ত দুই – এসব অপরাধের বিচার কখনো তামাদি হয় না। ৬ দশক পরে হলেও দেমইয়ানযুক ও লাজলোদের খুঁজে বের করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে, হচ্ছে। গোলাম আযমের বিরুদ্ধেও অভিযোগ মাত্র চার (৪) দশকের পুরোনো। সুতরাং, পার হয়ে যাওয়া দশকের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যাবে না অপরাধের দায় থেকে।

<>অনুসিদ্ধান্ত তিন – যারা বলেন এতো দিন পর এসব পুরোনো অভিযোগ ঘাঁটাঘাঁটি করে কি লাভ, তারা আসলে সে সব বলেন এক ধরণের মতলব থেকে, এই সব কুখ্যাত আসামীদের পিঠ বাঁচাতে। তারা আসলে এসব বলেন আমাদের না জানার সুযোগ নিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করতে। তাই লাজলো, দেমইয়ানযুক আর অগুনতি এমন আসামীদের কার কি পরিণতি হয়েছিল বিচারের কাঠগড়ায়, সে সব আমাদের নখদর্পনে থাকা চাই।

<>অনুসিদ্ধান্ত চার – সরাসরি নিজে উপস্থিত থেকে নিজের হাতে অপরাধ করলে সেটাই কেবল বিচার্য অপরাধ হয় না। অপরাধে সম্পৃক্তি (complicity)-ও গুরুতর অপরাধ, এবং বিচারযোগ্য অপরাধ।

========

আপডেট:
– লাজলো সাতারি গ্রেফতার হয়েছেন। এখানে দেখুন।

রায়হান রশিদ

জন্ম চট্টগ্রাম শহরে। পড়াশোনা চট্টগ্রাম, নটিংহ্যাম, এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমান আবাস যুক্তরাজ্য। ১৯৭১ সালে সংঘটিত অপরাধসমূহের বিচার প্রক্রিয়াকে সহায়তা প্রদান, এবং ১৯৭১ এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের দাবীতে সক্রিয় নেটওয়ার্ক 'ইনটারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম' (ICSF) এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি।

১৮ comments

  1. নাশীন - ১৭ জুলাই ২০১২ (৩:১৪ পূর্বাহ্ণ)

    অসাধারণ! কিপিটাপ! 🙂

  2. মোহাম্মদ মুনিম - ১৭ জুলাই ২০১২ (৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ)

    এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে বিচারাধীন (এবং সাজাপ্রাপ্ত) কম্বোডিয়ার খেমার রুজ নেতাদের সকলেই সত্তোরর্ধ (একজনের বয়স ৮৬, যিনি ব্রাদার নাম্বার টু নামে কুখ্যাত)। এদের মধ্যে একজন, ইয়েং থিরিথ (Ieng Thirith), বর্তমানে মানসিক রোগে আক্রান্ত এবং বিচারে দাঁড়াতে মানসিক ভাবে সক্ষম নন। তাঁকেও রেহাই দেওয়া হয় নি, আদালতে আদেশে তাঁকে মানসিক চিকিৎসা শেষে বিচারে দাঁড়াতে হবে।

    • ডাইনোসর - ১৯ জুলাই ২০১২ (৭:১৮ অপরাহ্ণ)

      মোহাম্মদ মুনিম @

      এই নিয়ে একটা ব্লগ লিখে ফেলেন আমাদেরও এই বিষয়ে জানা হবে।

    • রায়হান রশিদ - ২৩ জুলাই ২০১২ (৯:১৬ পূর্বাহ্ণ)

      মুনিম,
      ডাইনোসর এর সাথে একমত। এই বিষয়েও একটা পোস্ট হতে পারে। বিশেষ করে কম্বোডিয়া ট্রাইবুনাল যে একজন মাত্র আসামীর বিচার করতে গিয়ে ৫ বছর লাগিয়েছে আর ১৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী খরচ করেছে, সেটা একটা ইনট্ারেস্টিং দিক। এছাড়াও সেখানে তথাকথিত আন্তর্জাতিক সমাজ অনুমোদিত বিদেশী বিচারপতি এবং আইনজীবিদের নিয়ে যে সব সংকট তৈরী হয়েছে সে সবের ওপরও প্রচুর তথ্য গুগলেই রয়েছে এখন। বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে এখন সেগুলো তুলে ধরা দরকার। তাতে অন্তত অনেকের ভুল ভাঙবে এই জেনে যে আন্তর্জাতিক বা হাইব্রিড ট্রাইবুনালগুলোও সমালোচনার উর্ধ্বে না।

  3. ডাইনোসর - ১৯ জুলাই ২০১২ (৭:১৬ অপরাহ্ণ)

    চমৎকার হয়েছে। জামাতিদের প্রচারণার একটু সমুচিত জবাব পেলাম।

    অ.ট: এটা এই ব্লগে প্রথম কমেন্ট ।

  4. আনিকা - ২১ জুলাই ২০১২ (৭:১৫ পূর্বাহ্ণ)

    ধন্যবাদ, রায়হান রশিদ। আনন্দবাজার পত্রিকায়ও একটা প্রতিবেদন [লিংক] চোখে পড়ল :

    ৭০ বছর পর ধৃত ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নাৎসি কম্যান্ডার
    সংবাদসংস্থা • লন্ডন

    বছর সাতানব্বইয়ের বৃদ্ধটিকে দেখে ঈষৎ করুণা হতে পারে। কিন্তু ‘নৃশংস’ নাৎসি কম্যান্ডারের ভূমিকায় তাঁকে কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব। অথচ পুলিশি তথ্য বলছে ইনিই চল্লিশের দশকের কুখ্যাত ও বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নাৎসি নেতা লাদিসলাউস সিৎসিক-সাতারি। প্রায় সত্তর বছর পর সম্প্রতি তাঁকে বুদাপেস্টের ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করেছে হাঙ্গেরি পুলিশ। যুদ্ধাপরাধ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে লাদিসলাউসের বিরুদ্ধে।

    হাঙ্গেরির পুলিশি তথ্য অনুসারে, অগুনতি ইহুদিকে নির্দ্বিধায় আউশভিৎসের নাৎসি ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে’ পাঠানোর বিরল ‘কৃতিত্ব’ রয়েছে এই নাৎসি নেতার ঝুলিতে। এতেই শেষ নয়। ১৯৪৪ সাল নাগাদ রয়্যাল হাঙ্গেরিয়ান পুলিশের ‘কম্যান্ডার’ থাকাকালীন প্রায় ৮০ জন ইহুদিকে ট্রেনের কামরায় উঠিয়ে দেন লাদিসলাউস। এমন এক কামরা যেখানে শ্বাস নেওয়ার জন্য ছিল না একটি ছিদ্রও। কামরার যাত্রীরা কাতর আর্তনাদ করলেও সে চিৎকার কানে তোলেননি তিনি। এর পরও একাধিক ইহুদি গণহত্যায় নাম জড়িয়েছে তাঁর। শুধু তা-ই নয়, কারণ ছাড়াই ইহুদি বন্দীদের নিয়মিত বেত মারার ‘রেকর্ড’ও রয়েছে আজকের এই অশীতিপর বৃদ্ধের। সেই তালিকা থেকে বাদ যেতেন না শিশু ও মহিলারাও। অসুস্থদেরও রেয়াত করতেন না তিনি।

    অত্যাচারের ইতিবৃত্ত যাতে কেউ ভুলে না যান, সে জন্য বিশ্ববাসীকে আবেদন জানিয়েছেন আমেরিকার ইহুদি অধিকার কমিশন সিমন ভিজেনথাল সেন্টারের প্রধান এফরাইম জুরোফ। লাদিসলাউসের বার্ধক্য যাতে কোনও ভাবেই তাঁর শাস্তির মেয়াদ বা ভয়াবহতা কমাতে না পারে, সে ব্যাপারেও বিশ্ববাসীকে সচেতন করেছেন জুরোফ। কারণ তাঁর মতে, প্রায় সাড়ে পনেরো হাজার ইহুদি খুনে অভিযুক্ত কোনও ভাবেই ক্ষমা পেতে পারেন না।

    ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পরই ইউরোপ ছেড়ে পালিয়ে যান লাদিসলাউস। পাড়ি দেন সূদূর কানাডায়। আর্ট-ডিলারের ভুয়ো পরিচয় নিয়ে সেখানে পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় কাটানোর পরে চলে আসেন হাঙ্গেরিতে। তার পর কেটে গিয়েছে ১৫ বছর। এত দিনেও লাদিসলাউসের পড়শিরা জানতে পারেন নি যে তাঁদের সঙ্গেই বাস করছেন বিগত শতাব্দীর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নাৎসি নেতা।

    আপাতত যিনি নিজগৃহেই নজরবন্দি।

    • রায়হান রশিদ - ২৩ জুলাই ২০১২ (৯:২১ পূর্বাহ্ণ)

      ধন্যবাদ, এখন লাজলোর বিচার সঠিক পথে এগোবে আশা করি। এগোনো দরকারও।

      দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গত ৬ দশক ধরে একটা একটা করে নাজি অপরাধী খুঁজে বের করার কাজ মহাশক্তিধর সরকারগুলো করেনি। ন্যুরেমবার্গ আর টোকিওতে হাতে গোণা কয়েকজনের বিচার শেষ হতে না হতেই সবার আগে যুদ্ধাপরাধী খোঁজার কাজে ইস্তফা দিয়েছে বৃটেন, এরপর একে একে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাকিরা। কিন্তু স্বজনহারা ইহুদীদের নাগরিক সমাজ পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছিল এমনকি মহাশক্তিধর সরকারগুলোও যখন রাজনীতি আর অর্থনীতির হিসাব নিকাশে চুপটি মেরে যায়, তখনও নাগরিক সমাজের আমার আপনার মতো সাধারণ মানুষ কি না করতে পারে!

      তারা সে সব শুধু মুখে বলেনি, করেও দেখিয়েছে। একারণেই ৬ দশক পর গ্রেফতার হয় জন দেমইয়ানযুক, গ্রেফতার হয় লাজলো সাতািররা। কারণ, সাইমন ওয়াইসেনথালের মতো মানুষদের গড়ে তোলা নাগরিক সংগঠনগুলোর মতো এমন কয়েক ডজন সংগঠনের অগুনতি কর্মী দিন রাত পৃথিবীর মানচিত্র চষে বেড়িয়েছে পালিয়ে থাকা অপরাধীদের খুঁজে বের করতে; তাদের বিরুদ্ধে আদালতে টিকবে এমন প্রমাণ খুঁজে বের করতে। যখনই অপরাধীদের কারও খোঁজ পেয়েছে, তখনই সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর দরবারে ধর্ণা দিয়েছে। আর শুরুতে সরকারগুলোও যথারীতি দোনোমনা করেছে, কালক্ষেপন করেছে। নাগরিকদের এই সব দলগুলো কিন্তু থেমে যায়নি তাতে। সাক্ষ্য এবং তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে শক্তিশালী একেকটা ডোশিয়ে বানিয়েছে – চামচ দিয়ে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়ার মতো করে সে সব ডোশিয়ে সরকারগুলোর হাতে তুলে দিয়েছে, যাতে কারও বাবার সাধ্যও না থাকে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আর দোনোমনা করে।

      তাই, এদিকে করার মতো জমে থাকা কাজ – বাংলাদেশে আমাদেরও কিন্তু একেবারে কম না।

  5. নীড় সন্ধানী - ২৫ জুলাই ২০১২ (১:৫৭ অপরাহ্ণ)

    বয়সের কারণে কারো পাপ লঘু হয়ে যায় না। হাশরের দিনে বয়স্ক পাপীরা আলাদা মর্যাদা পাবে বলে শুনিনি।

    এই গোলামকে যথেষ্ট সম্মান দেখানো হয়ে যাচ্ছে হুইল চেয়ারের কোলে করে আদালতে আনা নেয়া করাতে। চ্যাংদোলা করে আনা নেয়া করলে কি বিচারের আগেই মরে শহীদ হয়ে যাবার সম্ভাবন আছে?

  6. মাসুদ করিম - ২২ এপ্রিল ২০১৩ (৭:৩৪ অপরাহ্ণ)

    এবার ৯৩ বছর বয়সের নাৎসি যুদ্ধাপরাধী Hans Lipschis, হান্স লিপসিজ-এর খোঁজ পাওয়া গেছে এই মর্মে দাবি করেছে জার্মান দৈনিক পত্রিকা Die WElt’ডি ভেল্ট’ এর গতকাল রবিবারের সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত বিশেষ রিপোর্ট। ওই পত্রিকার সাংবাদিককে যদিও হান্স লিপসিজ বলতে চাইছেন তিনি Auschwitz-এর নির্যাতন ক্যাম্পে রান্নার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি গণহত্যা সম্বন্ধে জানেন না, তিনি জড়িত নন, শুনেছেন এরকম ঘটেছিল — কিন্তু তিনি অভিযুক্ত, তার নাৎসি এসএস বাহিনীর পরিচয় পত্র পাওয়া গেছে — আর এধরনের কথা বললেই তো সন্দেহটা কেমন যেন আরো বেড়ে যায়। গতকাল ইংরেজিতে কোথাও রিপোর্টটা পাচ্ছিলাম না, আজ ইসরাইলি পত্রিকা Haaretz ‘হারেৎজ’এ পেলাম।

    4019873985
    হান্স লিপশিজ-এর এসএস পরিচয়পত্র

    German prosecutors are seeking to indict a 93-year-old alleged Nazi war criminal whom they believe worked as a guard at the Auschwitz concentration camp during World War II.

    Hans Lipschis is expected to be the first person brought to court as a result of a series of investigations launched by German officials several weeks ago into 50 alleged Auschwitz guards under suspicion of murder.

    Lipschis, who was born in Lithuania in 1919 and was granted “ethnic German” status in 1943, is accused of working at Auschwitz-Birkenau as a member of the S.S. from 1941 to 1945. He is suspected of participating in murder and genocide.

    Lipschis’ name was added a few weeks ago to a list of wanted Nazi criminals published by Dr. Efraim Zuroff, director of the Simon Wiesenthal Center’s office in Israel.

    Michael Borgstede, a reporter who interviewed Lipschis for the German newspaper WELT am Sonntag, told Haaretz that “Lipschis denied the charges and claimed that he did not see the horrors committed at Auschwitz; rather he only heard about them.”

    When asked if he worked at Auschwitz, Lipschis reportedly said, “Yes, as a cook, the entire time.”

    “I didn’t see anything,” Lipschis reportedly said of the mass murders carried out at Auschwitz, “but I heard about them.”

    Yet the investigation by WELT am Sonntag revealed a story. Documents uncovered by the newspaper from the German national archive, as well as Polish archives, reveal that Lipschis served in the SS–Totenkopf Sturmbann, or Death’s Head Battalion, which guarded the camp.

    In 1956, he fled to the United States and lived in Chicago for 26 years, but was deported to Germany in 1983 after he was reportedly identified by the U.S. as a Nazi war criminal. According to a JTA article from 1983, Lipschis was “the first Nazi war criminal to have been deported [by the United States] in more than 30 years for concealing his crimes.”

    For the next 30 years, Lipschis lived quietly in the German state of Baden-Württemberg.

    Martin-U

    বিস্তারিত পড়ুন : Elderly German suspected of being a Nazi guard: I was only a cook at Auschwitz

  7. মাসুদ করিম - ২২ জুন ২০১৩ (১:৩৫ পূর্বাহ্ণ)

    আজকের এই খবরেও গোলাম আযম প্রাসঙ্গিক, রাশিয়ায় এক ‘নাৎসি দালাল’কে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছে — যে কিনা ভুলভাল জীবনী/আত্মজীবনীর মাধ্যমে নিজেকে রাশিয়ার মহান যুদ্ধের নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এসেছিল এতদিন, গোলাম আযমও তো নিজেকে প্রবাদপ্রতিম ভাষাসৈনিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কত ভাওতাবাজি করল।

    A former Russian soldier who reportedly fought for the Nazis in an SS regiment, and then spent fifty years creating a false biography as a Red Army war hero has been uncovered, and is set to stand trial that may strip him of his privileges and medals.

    On every significant war anniversary 91-year-old Sergey Maslov turned out in full military uniform, adorned with a scattering of war decorations. Among them, an Order of Glory, awarded for personal heroism on the battlefield, and the Defense of Moscow medal, given to those who staved off Hitler’s onslaught on the Russian capital in the harsh winter of 1941.

    বিস্তারিত পড়ুন : Russian ‘Nazi collaborator’ who convinced everyone he was a war hero goes to trial।

  8. রবিউল ইসলাম সবুজ - ২২ জুন ২০১৩ (৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ)

    অসাধারণ! … ধন্যবাদ

  9. মাসুদ করিম - ১২ আগস্ট ২০১৩ (৪:৪১ অপরাহ্ণ)

    বিচারের জন্য অপেক্ষমাণ অবস্থায় ৯৮ বছর বয়সে গত শনিবার বুদাপেস্টের এক হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় কুখ্যাত নাৎসি যুদ্ধাপরাধী লাজলো সাতারির মৃত্যু হল।

    2462316068

    ‘Most wanted’ Nazi war criminal dies while awaiting trial

    Laszlo Csatary, a former police officer indicted in June by Hungarian authorities for abusing Jews and contributing to their deportation to Nazi death camps during World War II, has died. He was 98.

    His lawyer, Gabor Horvath B., said Csatary died Saturday of pneumonia in a Budapest hospital.

    Csatary, who had denied the charges, was sentenced to death in absentia in Czechoslovakia in 1948 for similar war crimes. After the war, he lived for decades in Canada before leaving in 1997 after it was discovered that he had lied about his past to obtain citizenship.

    Csatary’s case and his whereabouts were revealed in 2012 by the Simon Wiesenthal Center, a Jewish organization active in hunting down Nazis who have yet to be brought to justice. The Wiesenthal Center had named Csatary their most wanted war crimes suspect last year.

    The Simon Wiesenthal Center expressed deep disappointment in response to the death in Budapest of Hungarian Nazi war criminal Laszlo Csatary, while awaiting trial for his role in the deportation of approximately 15,700 Jews from Kosice.

    “The fact that a well-known war criminal whose Nazi past was exposed in Canada could live undisturbed for so long in the Hungarian capital raises serious questions as to the commitment of the Hungarian authorities to hold their own Holocaust criminals accountable,” said chief Nazi-hunter, director Dr. Efraim Zuroff. “It is a shame that Csatary, a convicted (in Czechoslovakia in 1948) and totally unrepentant Holocaust perpetrator who was finally indicted in his homeland for his crimes, ultimately eluded justice and punishment at the very last minute.”

  10. মাসুদ করিম - ১২ আগস্ট ২০১৩ (৪:৫৫ অপরাহ্ণ)

    গোলাম আযমের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল

    অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন দলের সমন্বয়ক এম কে রহমান সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

    এই আপিলের সঙ্গে একাত্তরে ভূমিকার জন্য জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার আবেদনও জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ

    গোলাম আযমের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়ায় বিভিন্ন দল ও সংগঠন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেও সরকারের পক্ষ থেকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছিল।

    অপরাধ বিবেচনায় সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়ার যোগ্য হলেও বয়স ও স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনায় গত ১৫ জুলাই গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

    ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর রায়ে বলেন, “তার যে অপরাধ, এর সবগুলোই সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। তবে গ্রেপ্তারের পর থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি আছেন। তার বয়স ও শরীরিক অবস্থা বিবেচনা করে এই সাজা দেয়া হয়েছে।”

    রায়ের পর্যবেক্ষণে গোলাম আযমের নেতৃত্বাধীন জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল দল’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়।

    ওই রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের সাবেক আমির গত ৫ অগাস্ট আপিল করেন।

    গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রথম ও দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষকে দমনের জন্য পাকিস্তানের সামরিক কর্তাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে শান্তি বাহিনী ও রাজাকার বাহিনী গঠন এবং সেগুলোর কার্যক্রম পরিচালনায় সভা করেন। এ দুটি অভিযোগে প্রতিটিতে তাকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

    তৃতীয় অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধে উস্কানি দেয়ার ২৮টি ঘটনার কথা বলা হয়। চতুর্থ অভিযোগে ছিল মানবতাবিরোধী অপরাধে সহযোগিতা বা সম্পৃক্ততার ২৩টি ঘটনা। এ দুটি অভিযোগের প্রতিটির জন্য তাকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

    মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দলটির যুদ্ধকালীন প্রধানের বিরুদ্ধে পঞ্চম অভিযোগ ছিল পুলিশ কর্মকর্তা সিরু মিয়া ও তার ছেলেকে হত্যার নির্দেশ দেয়, যার জন্য তাকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

    প্রতিটি অপরাধের সাজা একের পর এক কার্যকর হবে বলেও ট্রাইব্যুনালের আদেশে বলা হয়েছে।

    একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনে নেতৃত্ব দেন গোলাম আযম। এসব আধা সামরিক বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশে ব্যাপক হত্যা ও নির্যাতন চালায়।

    বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও প্রকাশ্যে তদবির চালান এই জামায়াত নেতা।

    মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে ১৯৭১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ছেড়ে পাকিস্তানে যান গোলাম আযম। যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর সেখান থেকে চলে যান যুক্তরাজ্যে।

    ৭ বছর লন্ডনে অবস্থান করার পর ১৯৭৮ এ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে আবার বাংলাদেশে আসেন এই জামায়াত নেতা; নাগরিকত্বও ফিরে পান। ১৯৯৯ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমিরের পদ থেকে অবসরে গেলেও দলটির তাত্ত্বিক গুরু হিসেবে সম্পৃক্ততা বজায় রাখেন।

    গোলাম আযম ফেরার পর থেকেই একাত্তরের ভূমিকার জন্য তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন এবং ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ গণ আদালতে প্রতীকী বিচার ও ফাঁসির রায়ের মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি চূড়ান্ত রূপ পায়।

    সে সময় ক্ষমতাসীন সরকার সেই দাবিতে সাড়া না দিলেও বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠনের মধ্য দিয়ে বহু প্রতীক্ষিত সেই বিচার কাজ শুরু হয়।

    ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এর ভিত্তিতে ওই বছর ১২ ডিসেম্বর প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে।

    মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ২০১২ সালের ১১ই জানুয়ারি গোলাম আযমকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে বিচারকরা তাকে কারাগারে পাঠান। তখন থেকেই তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে রাখা হয়েছে।

    এরপর পাঁচ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬১টি ঘটনায় অভিযোগ গঠন করে গত বছরের ১৩ মে জামায়াতের এই সাবেক আমিরের বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল।

    এ মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে মোট ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হলেও গোলাম আযমের পক্ষে সাক্ষ্য দেন কেবল তার ছেলে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.