প্রায় ৭/৮ মাস পড়ে থাকার পর গত পরশু ‘স্বপ্নভূমি’ দেখলাম। ভালো লাগল। তবে প্রামাণ্য চিত্রটির বিহার ও করাচি অংশটির মেকিং আমার ভালো লাগেনি। সম্ভবত বিহার ও করাচির অংশটি নিয়ে সময় কম দেয়া হয়েছে, অথবা যাবতীয় খোঁজখবর সংগ্রহে ব্যাপ্তি কম ছিল। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে সময় কম দিয়ে, পাকিস্তানের কিছু সাংবাদিক বা বুদ্ধিজীবিকে যদি এর সাথে যোগ করা যেত ভালো হতো। আর বিহারি নিধন নিয়ে আরো গভীর পর্যবেক্ষণ বেরিয়ে আসতে পারত। কারণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ঠিক আগে আগে রাজাকার ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অনেক রাজাকার বিহারি পাড়াগুলোতে চড়াও হয়েছিল, নিশ্চিত পরাজয়ের আগে যতটুকু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যায়, আর ধন-সম্পদ লুণ্ঠণতো এধরনের ঘটনার খুবই স্বাভাবিক ও লাভজনক অর্জন। কাজেই কোন নিধনযজ্ঞটি বাঙালি বিহারির শোধ-প্রতিশোধের এবং কোনটি রাজাকারি আগ্রাসন তা নিয়ে আরো তথ্য সংগ্রহ করে এ অধ্যায়টি সুসম্পন্ন করাটা খুবই দরকার ছিল। কারণ ১৯৭১-এর আরো গভীরে যাওয়া ইতিহাসই বাঙালি-বিহারি সম্পর্কের সমাধানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর ধন-সম্পদ লুণ্ঠন এবং তা যদি হয় স্থাবর সম্পত্তি আত্মসাৎ, তাহলে একটি জনগোষ্টিকে পঙ্গুই করে দেয়া হলো, এখন এ বিষয়টি নিয়ে আরো বেশি আলোকপাত দরকার ছিল। অনেক অপ্রয়োজনীয় অংশ ছিল, অনেক পুনরাবৃত্তিও ছিল, কাজেই আরো তথ্য সংগ্রহ করে ছবিতে যোগ করা গেলে দৈর্ঘ তেমন বাড়ত না, কিন্তু ছবিটি আরো বিষয় গভীরতায় যেতে পারত। সাদি মোহাম্মদের অংশটি নিয়ে আরো ভাববার প্রয়োজন ছিল, সাদি মোহাম্মদের করুণ ঘটনার বর্ণনা যেহেতু আমরা জানি হাসির উদ্রেক করে, কাজেই ওকে আরো চিন্তা ভাবনা করে ওর ম্যানারিজমগুলো নিয়ে ওকে আরো সতর্ক করে ক্যামেরায় ধরা দরকার ছিল। কামাল হোসেনের উপস্থিতি ভালো হয়নি, তিনি তেমন কোনো আলো বিষয়টার ওপর ফেলতে পারেননি। তাকে দিয়ে আর্ন্তজাতিক রিফিউজি আইনে বাংলাদেশ সরকার ও পাকিস্তান সরকার বিহারিদের নিয়ে কী করেছে তার পর্যালোচনা এবং এ দুদেশের দায় কী, এবং এ দায়গুলো দুটো সরকার কিভাবে পাশ কাটাচ্ছে, কিন্তু দুটো দেশ সত্যিকার অর্থে কিভাবে এর প্রতিকার করতে পারত বা এখনো পারে, তার আলোচনা আরো জোরদার করা যেত। অথচ ওই অংশটা দেখে মনে হয়েছে, এটা কোনো প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রুটিন ক্যামেরা উপস্থিতি, কোনো পার্থক্য তাই দেখা যায়নি কুখ্যাত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের ক্যামেরা উপস্থিতির সাথে কামাল হোসেনের ক্যামেরা উপস্থিতি। এটা ছিল খুবই দু:খজনক।মিউজিক ভালো নয়। যে গায়ক বারবার থিমের ধুয়ো দিয়েছেন তার গায়কী খুবই বাজে।

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
