তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ, বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি সোমবার ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছে। কেন এই হরতাল, এবং ইদের পুজোর লম্বা ছুটির আগে যে সপ্তাহটি শেষ পূর্ণ কর্মসপ্তাহ তার দ্বিতীয়দিনের অর্ধেক হরতালের মতো বহুপরীক্ষিত স্বতঃস্ফূর্ততাহীন কর্মসূচী দিতে জাতীয় কমিটিকে কারা প্ররোচিত করেছে? আমরা প্ররোচনাকারীদের মধ্যে যাদের নাম দেখতে পাচ্ছি তারা হল: বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, গণসংহতি আন্দোলনসহ কয়েকটি বামন রাজনৈতিক সংগঠন। কী এদের জনভিত্তি যে জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনকে হরতালের মতো একটি নষ্ট কর্মসূচী দিয়ে জনগণের কাছে হাসির পাত্র হচ্ছেন? অবশ্য উল্লেখিত প্রত্যেকটি বামন রাজনৈতিক দলের শিষ্যনেতৃত্ব এমনই হাস্যকর তাদের কাছ থেকে এরচেয়ে বেশি কিছু আশা করাই ভুল হবে। আমাদের আশা সরকারের দিকে হরতালের মতো একটা জনক্ষতিকর ব্যয়বহুল পঁচাডিম ছোঁড়ার এই সিদ্ধান্ত থেকে আপনারা সরে আসুন, অন্তত এই বামন সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদলের কাছে আহ্বান: আপনাদের হাস্যকর শীর্ষনেতৃত্বকে একটু সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে চাপপ্রয়োগ করুন, আন্দোলনে থাকুন কিন্তু হরতাল পরিহার করুন। আর রাজনীতি করতে হলে মানুষের মনোভাবটা বুঝতে হয় সবার আগে, আপনাদের আগে আপনাদের দৃষ্টিতে বুর্জোয়া জুটি চোরডাকাত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যেরকম সর্দিকাশির মতো হরতাল করে গণআন্দোলনের এই মানবিক অস্ত্রটিকে পুরোপুরি ধারহীন করে গেছেন—তারাও ইদের আগের সপ্তাহে এরকম হরতাল ডাকতেন না, আর আপনারা মানুষের মনোভাবের পুরো বিপরীতে যে হরতাল ডাকলেন—এতে আপনাদের বিপ্লবী রাজনীতি আরো একবার প্রমাণ করল, যে কথা শুনলে ঘোড়াও হাসবে সেধরনের কথার প্রতি আপনাদের রক্তের প্রবল টানে হয়তো কোনোদিনই ভাটা পড়বে না।
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১৮ comments
মনজুরাউল - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (২:০৫ পূর্বাহ্ণ)
হরতাল ইতিমধ্যেই আংশিক সফল। বাকিটা আজ সফল হোক। অন্তত স্টাবলিশমেন্টের দালালেরা দেখুক কত কম শক্তি নিয়েও ঝঁপিয়ে পড়া যায়।
nizam udin - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৭:০৬ অপরাহ্ণ)
masud vai,nomosskaar.
apni jebhabe baam rajnoitik dolguloke BAMON tokhmaa diye berachchen tatey ruchi o chintaar chhap prokash pachche ki ? kauke liliput kore nijey hoyto galiver hotey paren.hortal j bhota osstrow,se apni kibhabe janlen.ami jani apni jatiyo sompod rokhkhar pokhkhey,tahole teel gas bondor biddyut rokkha jatiyo committee’r bokktobbyer sathe apner dimot korar kotha na.torrko’ta holo andolon’er koushol niye.likhun,aro kibhabe,koun pothey hatle porey,ai sob chokkrantow thekano jabe.ai bhaasa bebohar korun tader biruddhe jara apnar amar sokoler sarrther hani ghotachche,nijeder kacherr manusher jonno na.emnitai awami league khomotay ese jono-o-jatio sarrthow birodhi korrmokando suru korle,ai desher odhikangshow buddhijibi kichuta bibbroto o oshosstitey poren.tader dikei apnar dharalow joban taak korun,taghole ai desher manush o porobortee projonmo upokkritow hoben.
ami jotodin baam rajniti’r saathey achi,prayee sunechee rabindranath’er GORA chorittyer kotha.uponnash er ek jaigay gora’r maa bolche,jokhon chaarpaas ondhokaar thakey,tokhon tumi kisher vorrsay path cholbe?gora uttor’e bolechilow,oi j onek durer dip shikh’ti timtim korey jolche,taar upor vorrsa korbo.karon se bole dichchey chaarpas ondhokaar.
রায়হান রশিদ - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৮:২৭ অপরাহ্ণ)
@ নিজামউদ্দিন
কম্পিউটারে বাংলা লেখা কিন্তু অতোটা কষ্টের না, যতোটা আপনি মনে করছেন। একটু চেষ্টা করে দেখবেন? সাহায্য লাগলে নির্দ্বিধায় বলুন। আমি নিশ্চিত আরও অনেকে এই ব্লগে আছেন যাঁরা আপনাকে সহায়তা করতে খুশী মনে এগিয়ে আসবেন। তবে শুরুটা কিন্তু আপনাকেই করতে হবে।
সৈকত আচার্য - ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (২:২৮ পূর্বাহ্ণ)
@ নিজামউদ্দিনঃ
হরতালের যৌক্তিকতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলবেন, এটাই স্বাভাবিক। বিভিন্ন রকমের পরষ্পর বিরোধী চিন্তা সমাজে আছে, থাকবে। ফলে, তার প্রতিফলনও ব্লগে থাকবে। প্রত্যেকেই তার নিজের চিন্তার পক্ষে তীক্ষ্ণ যুক্তি তুলে ধরুন, এটাই তো আশা।
মাসুদ করিমের হরতাল ভালো লাগছে না। যদিও তার মতের স্বপক্ষে যুক্তিগুলো তিনি গুছিয়ে বলেননি এবং কিছুটা একপেশে ধরনের আলোচনা হয়েছে এটি। যারা এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে চান তাদের মধ্যেও হরতালের পক্ষে বিপক্ষে একটা অবস্থান আছে। অনেকে মনে করেন, আরো জনমত সংঘটিত করে, নিজেরা আরো কিছুটা সংঘটিত হয়ে এ ধরনের একটা কর্মসূচি দিলে আরো ভালো ফল পাওয়া যেত। এই ব্লগেই “অবিশ্রুত” তার একটা পোষ্টে এই বিষয়ে সুন্দর একটা আলোচনা দাঁড় করিয়েছিলেন।
কথা হলো, মাসুদ করিমের লেখা আপনার পছন্দ হয়নি। তা হতেই পারে। কিন্ত কোন প্রেক্ষাপটে এই হরতাল দিতে হলো, কি কি রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছিলো, আরো কোনো বিকল্প ছিল কিনা, থাকলে কোন বিবেচনা থেকে সেই বিকল্পের পথে যাওয়া হলো না, এনিয়ে আপনি ধারাবাহিক একটা আলোচনা দাঁড় করালে উপকৃত হতাম। সেই পথে না গিয়ে আপনি মাসুদ করিমকেই বলছেন, “likhun,aro kibhabe,koun pothey hatle porey,ai sob chokkrantow thekano jabe”. কেন? তাকেই কেন বলছেন, এই পথের সন্ধান দিতে? আপনি নিজে কেন লিখেন না? আপনার নিজের মতটা/যুক্তিগুলো কেন আমাদের জানান না? বামপন্থী দলের একজন নেতা/কর্মী হিসেবে সেই দায়িত্ব আপনার অন্যদের চাইতে কিছু কম নয়, বরং বেশি।
মাসুদ করিমের মতো করে ভাবেন এ রকম হাজারো মানুষ আপনি চারপাশে পাবেন। তাদেরকে কিভাবে আপনার মতের পক্ষে আনবেন, সেটাই তো আপনার প্রায়োরিটি হওয়া ঊচিত, তাই না?
এই ব্লগও তো হাজারো পাঠক পড়েন, দেশে বিদেশে। তাদেরকে আপনার সুচিন্তিত মতামত জানানোর জন্যও তো আপনি লিখতে পারেন। তা না করে “গালিভার” বলে তাকে কিছুটা বিদ্রুপ করেছেন বলে মনে হলো। শুধু আবেগতাড়িত মন্তব্য দিয়ে দায়িত্ব এড়ানো যায় না।
nizam udin - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৭:১২ অপরাহ্ণ)
tel gas bondor biddyut rokkha committee’k ami sei dip shikha mone kori.
রায়হান রশিদ - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৮:১৭ অপরাহ্ণ)
@ মাসুদ ভাই,
তেল গ্যাস রক্ষার আন্দোলনে হরতালই এখন সময়ের দাবী নাকি আরও মাঠ পর্যায়ে কর্মকান্ড শেষ করে এসে এই পথে জাতীয় কমিটির পা বাড়ানো উচিত ছিল, তা নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত থাকতেই পারে। সে সব ভিন্ন মতের কিংবা সমালোচনার স্বাস্থ্যকর চর্চাটার দরকার রয়েছে। সেটা যে কোন প্লাটফর্মের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু পুরো আন্দোলনের ব্যাপারে ঢালাও বক্রোক্তিটা মনে হয় না ঠিক হল। তেল-গ্যাস-বিদ্যুত-কয়লা-বন্দর ইস্যুতে আমাদের তো সবেধন নীলমনি এই একটাই জাতীয় প্লাটফর্ম, কলেবর তার যেমনই হোক! ঠিক করুক ভুল করুক কিছু একটা করার চেষ্টাটা তো একমাত্র এদের মধ্যেই আছে। তাই না মাসুদ ভাই? প্রতিরোধের আর কোন শক্তি তো রাজপথে চোখে পড়ছে না।
কেন যেন মনে হচ্ছে কোন কারণে আপনি খুবই বিরক্ত, তাই হয়তো এভাবে বলে ফেলেছেন। আর কিছু কিছু বাম দলের (সবাই না কিন্তু) অকর্মণ্যতা আর গতবাঁধা বুলিসর্বস্ব কর্মকান্ডে কেউ যদি বিরক্তিবোধ করেন, সেটা তাঁর অধিকার। কিন্তু তেল-গ্যাসের আন্দোলনকে ঢালাওভাবে বাম লেবেল এঁটে দিয়ে আক্রমণ কি যুক্তিযুক্ত? অনেকগুলো বাম দল এই প্লাটফর্মে রয়েছে, সেটা ঠিক। কিন্তু তেল-গ্যাসের এই আন্দোলনটা বামদের কেন, কারোরই একচ্ছত্র আন্দোলন বলে মানতে রাজি নই। যদি ভুল না বুঝে থাকি – এটা মূলত একধরণের জাতীয়বাদী চেতনার আন্দোলন। আর এতে সামিল তারাই যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবহারে সুবিচার আর স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী; সে সম্পদ যাতে দেশের মানুষের কল্যাণে লাগে তা নিশ্চিতকল্পে বদ্ধপরিকর।
সারা বিশ্বব্যাপী, মূলতঃ তেল গ্যাসে সমৃদ্ধ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে প্রায় একই সময়ে (৬০ এবং ৭০ এর দশক জুড়ে) এই ধারার আন্দোলন-চেতনার জন্ম এবং বিকাশ। রাষ্ট্রসমূহের “Permanent Sovereignty over Natural Resources” এর ধারণা ৬০ আর ৭০ দশকের সেই সময়টাতে এতটাই নৈতিক সমর্থন আদায়ে সমর্থ হয়েছিল যে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান আর মোর্চা একে (প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর সার্বভৌমত্ব) মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। আরেকটু বিস্তারিত জানতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত এই রেজোল্যুশনটা পড়ে নেয়া যেতে পারে এই লিন্ক থেকে। সেখান থেকে মূল অংশটি উদ্ধৃত করছি নিচে:
আর সবার মতো সকাল বিকাল সুযোগ পেলেই আমিও ‘জাতিসংঘ’ নামের এই প্রতিষ্ঠানটাকে গাল দেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এদের হাত দিয়েও মাঝে মাঝে ভাল কিছু দলিল বেরোয়!!
nizam udin - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ)
ekti lekharr somorrthon’e arekti lekha,odhbhut taina masud bhai!!
shibram beche thakle bolten,
bhar-bhar buli jar
tar naam galiver…
আহমেদ মুনির - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১০:১৫ পূর্বাহ্ণ)
‘বামন হয়ে হরতালে হাত’? বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘উত্তরা’ চলচ্চিত্রের কথা মনে পড়ে গেল। উত্তরা নামের সহজ-সরল একটি গ্রাম্য মেয়ের কাহিনি ‘উত্তরা’। দুই ভাইয়ের সংসারে উত্তরাকে নিয়ে ঝগড়া। সারাক্ষণই কুস্তি লড়ে তারা। এর মধ্যে যাকে তার মানুষ মনে হয়, সেই গির্জার ফাদারকেও অসহায়ভাবে খুন হতে দেখে সে। বেঁচে থাকার আশা-আকাঙ্ক্ষা কার কাছে জানাবে উত্তরা? দুই ভাই তো লড়ছে সারাক্ষণ। ঠিক এমন সময় এক বামন বিয়ের প্রস্তাব দেয় তাকে। সংলাপগুলো ঠিক হুবহু মনে নেই, তবে মুল কথাটা মনে আছে অনেকটা এই রকম : ‘যাবে উত্তরা আমাদের সঙ্গে? আমার মা বামন, বাবা বামন, আমাদের সবাই বামন। দেখবে একদিন বামনরাই সব পাল্টে দেবে। লম্বা মানুষরা তো অনেক কিছুই করল, কই তারা তো পৃথিবীটা বদলাতে পারল না!’ মাসুদ করিমকে ধন্যবাদ, কথা ক’টি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। আসলে বামন হয়েই তো ওরা হরতালে হাত দিয়েছে। যারা দেশের কথা ভাবে, দেশের গ্যাস-সম্পদকে লুটের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পুলিশের লাঠির দিকে পিঠ পেতে দেয়, তারা তো বামনই!
এদেশে বামনদের সংখ্যাই তো শতকরা নব্বইভাগ। অথচ প্রত্যেকেই নিজের উচ্চতা নিয়ে লজ্জিত — পাছে সকলে জেনে যায়, এই ভয়ে তারা অন্যের কাছে নকল এক উচ্চতা তুলে ধরে। আমি প্রতিদিন যে-রিকশায় কিংবা ট্যাক্সিতে করে অফিসে আসি, বাড়ি যাই, তার চালক ও যাত্রীর আসনে বসা দু’জনই বামন; অথচ আমি তাকে প্রতিমুহূর্তেই বোঝাতে চাই আমি বামন নই, বামন ব্যাটা তুই। তোর সামর্থ্যের হাত কখনওই মাটির খুব বেশি উপরে উঠবে না! অথচ সেই আমিই আবার বামনে পরিণত হই যখন অফিসে আসি। অন্যের নির্দেশ পালনের যন্ত্রণাটাকে উপভোগ্য করে তোলার চেষ্টা করি।
আজকাল আমি নিজের উচ্চতা নিয়ে লজ্জিত নই, যদিও শরীরে আমি প্রায় ছ’ফুট লম্বা, তবু আমার প্রকৃত উচ্চতা অনেক কম। বস্তুত আমি একটা তেলাপোকার চেয়ে বেশি লম্বা নই। আমার কোনো উচ্চাশা নেই। কিন্তু স্বপ্ন আছে। দাবি-দাওয়া আছে। মাঝে-মাঝে মনে হয়, এসব কিছু থাকাটা আমাদের জন্য স্পর্ধা! অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। আমি বামনদের হরতালের সমর্থক। এদেশের সব বামনরা এক হয়ে দেখাক বামনরাও বদলে দিতে পারে। আসলে যে যা-ই বলুক, পৃথিবীটা আমাদের বামনদেরই!
রায়হান রশিদ - ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৭:৩৫ অপরাহ্ণ)
ধন্যবাদ মুনির। এমন মন্তব্য প্রতিদিন পড়ার সুযোগ হবে সেজন্যই মুক্তাঙ্গনের জন্ম হয়েছিল। প্রতিদিন না হলেও পুরো ছ’মাস-বছরে অন্তত একটা মন্তব্যামৃত পাওয়া যাচ্ছে তোর কাছ থেকে, এই দুঃসময়ে তাও বা কম কি!
সেইসাথে অভিনন্দন বাংলা টাইপিং পুরোপুরি আয়ত্ব করে ফেলার জন্য। মুখে মুখে ভাষাপ্রেমী-সংস্কৃতিপ্রেমী-দেশপ্রেমী লেখকদের অভাব তো কোন কালেই তেমন ছিল না, কিন্তু তাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যকেরই কম্পিউটারে বাংলা টাইপ শিখে নেয়ার ফুরসত বা সদিচ্ছা হয়। হায় একুশ, হায় বাংলা ভাষা! কিন্তু জেনে খুশী হলাম তুই তাদের থেকে আলাদা। আমাদের সৌভাগ্য।
মাহতাব - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৩:৩৭ অপরাহ্ণ)
আমার পিতা একজন অতি সাধারণ মানুষ, সারাজীবন অফিস বাসা আত্মীয়-স্বজন — এই নিয়ে দিনযাপন করছেন। গতকাল সকালে তিনি ঘুম থেকে জেগেই বললেন টিভিতে খবর ধরার জন্য। আমি বললাম, এত সকালে কী খবর দেখবেন? তিনি বললেন, তেল-গ্যাসের হরতালের কী খবর একটু দেখি। তৎক্ষণাৎ মনে হল, তেল-গ্যাসের হরতাল এবং তার আন্দোলনকারীরা সফল এবং তারা সঠিক পথেই আছে।
মাসুদ করিম - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৬:২৯ অপরাহ্ণ)
১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ এর হরতালের পক্ষে সবচেয়ে বিকট বিশুদ্ধ যৌক্তিক প্রেক্ষাপটটি উপস্থাপন করেছেন শীতনিদ্রার মেধাবী নেতা মুজাহিদ ইসলাম সেলিম। তার ভাষ্য মতে, আওয়ামী লীগ বিএনপির হরতালের কোটা শেষ হয়ে গেছে। এর মানে তাহলে, তাদের হরতালের কোটা শুরু হয়েছে। কী জানি এ কোটা নির্ধারনের মহান কাজটি কে করছেন? এবং তাদের জন্য নির্ধারিত কোটাই বা কত? তিনি আরো বলেছেন, তারা ক্ষমতায় যাওয়ার কামড়াকামড়ির হরতাল করছেন না। হ্যাঁ, তাতো আমরা সবাই জানি, কিন্তু হরতালের ক্ষতির কামড় যে সবার গায়েই লাগে তা হয়তো তিনি এখন জানেন না।তবে তিনি এও বলতে পারতেন তাদের হরতাল লোকে অতো মানে না, মানবে না, তাই তাদের হরতাল হবে মানববান্ধব। যেমন অসুস্থতার মধ্যে সর্দি কাশি—আহা, বেঁচে থাকুক সর্দি কাশি!
মাসুদ করিম - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ (১০:০৭ পূর্বাহ্ণ)
ফিরোজ আহমেদ - ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:৩০ অপরাহ্ণ)
ঠিকই আছে।
“মুসলিম বাম” শীর্ষক অভিসন্দর্ভ লেখকে উপযুক্ত রাজনৈতিক বিশ্লেষণই বটে।
অভিনন্দন।
মোরশেদ উদ্দিন - ২৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ)
@মুনির ভাই
আপনার লেখাটা মনে ধরেছে। ভাল।
@মাসুদ ভাই
যাহাদের বামন বলিয়া গালিগালাজ করলেন তাহাদের দলে আপনি নিজেকে রাখেন নাই সেটা দৃশ্যত। এক অর্থে কমিটির পক্ষে আপনার অবস্থান নিয়েও আমার একটু সন্দেহ হইল। সন্দেহ না করে পারিনা। কারণ কমিটির মধ্যে লেফট অরগানাইজেশন ছাড়াও যারা আসছে এখন পর্যন্ত তারা বাম ঘরানারই। এবং একসময় সাধারণ মানুষই এর মধ্যে আসবে (ফুলবাড়ীর ঘটনাটি মনে করা যেতে পারে)। বস্তুত বলা যায় আপনার ঘোষিত বামনরাই গনমানুষের প্রতিনিধি।
বামন না হইয়াই কী যে করল আপনাদের লম্বা লম্বা হাত-পা’ওয়ালা দানবেরা! কী করলেন হতভাগা সম্পদগুলার লাইগা, একটু যদি দয়া কইরা বাৎলাইতেন, অনেক উপকৃত হইতাম। তাইলে আপনার লেখার জোরটাও আরো বাড়ে এবং আমরাও গালি খাইয়া আরেকটু ভাল পীড়িত হইতাম। আমি বুঝিনা আপনার অভিযোগ, আপনার লেখায় উদাহরণস্বরূপ উল্লিখিত দলগুলার মাথায় যারা বসে আছে তাদের চেয়ে আনু কিংবা শহিদুল্লাহ’র মাথার ঘিলু কি কম নাকি! তারা সরাসরি রাজনীতি করেনা বলে কি রাজনীতি বুঝেনা! তারা কেন এই সিদ্ধান্ত নেয় অই গর্ধভ(!) বামনদের সাথে এক হয়ে! কী কইতে চাইলেন? আনু স্যারদেরও অসুখ হয় আজকাল, উনিও হাঁচি মারেন, কাশি মারেন!
কী লাভ ওই বামনদের! তারা এই হরতাল দিয়ে কি ক্ষমতায় চলে যাবে!! আপনি বলতে পারেননি এই হরতালের ক্ষতির প্রকৃ্ত বর্ণনা। কেবল গতানুগতিক হরতাল সংস্কৃতির পুরাতন ধারণা নিয়ে এর বিপক্ষে সাফাই গেয়েছেন সেটা প্রতীয়মান।
এই সমালোচিত হরতালের সমালোচনার কিছু যুক্তিযুক্ততা আছে, এবং এটাও ঠিক এই হরতালের উদ্দেশ্য ছিল যে এই সমালোচনার জায়গাটাই তৈরি হোক। নাহলে মানুষ এতো দ্রুত এতো কিছু জানত কিভাবে? জানাইত কে এই দেশে? আপনারা? বলুনতো?
অথচ এই পন্থা অবলম্বন করায় কিছু মানুষ আছে যারা এইসব ঝুটঝামেলার নামই শুনতে চায়নি বা চায়না। যারা রাত দিন খেটেখুটে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে গালমন্দ খেয়েও মানুষকে জাতীয় সম্পদের কথা শুনাইল তারা এখন আপনাদের চোখে পীড়িত! স্পেসিফিকভাবে আপনাকে বলছিনা। কারণ আপনি কী করেন আমি জানিনা। সাধারণত ঐ অফিস ফেরত মেদ-ভুঁড়িওয়ালা বুদ্ধি-পরজীবী্রাই এই হরতালের বিরোধিতা করেছে।
আপনার এই জাতীয় লেখা নিবেদিত প্রানের মানুষদের জন্য অপমানসুচক। আমার ধারনা…এই বামনদের ভালটা স্বীকার না করাটা একধরনের পেটের অসুখ, এই কারণে এই জাতীয় ‘পাদ’ বের হয়, মাগার পেটের অসুখ ভালও হয়না কেন সেটাও বুঝিনা।…সত্য এইভাবে শুনতে কি ভাল লাগবে, দাদা? পুরাতন হরতাল সংস্কৃতির কারণে এই হরতালের কিছু সমালোচনা অগ্রাহ্য ছিল না, সেটাকি বামেরা স্বীকার করে না? কিন্তু আনুপাতিক হারে ফলপ্রসূর জায়গার পাল্লাটা যেই দিকে ভারি তা কৌশলী হলেও কেন বিবেচনায় আনা হবেনা? (আমার লেখা একপেশে হয়ে গেছে। আপনার ভাল লাগার কারণ নাই। কিন্তু এ বিষয়ে অবিশ্রুত’এর লেখায় নিরপেক্ষতা নিয়ে চমৎকার আলোচনা হয়েছে যেখানে আপনি অংশগ্রহণ করতে পারতেন!)
মাসুদ করিম - ১৩ অক্টোবর ২০০৯ (৭:২২ অপরাহ্ণ)
তেল-গ্যাস-বন্দর রক্ষা কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে ২/১ সপ্তাহ আগে আমি প্রথম দেখলাম, তাও টিভিতে, কথা বলছিলেন, কিন্তু কী যুদ্বংদেহী মনোভাব, অনেক দিন ঠিক এরকম লোক দেখিনি। তারপর কী ভাষা – এক পর্যায়ে বললেন, আমার সম্পদ তুই তুলবি তুই এনে দিবি, বুঝতে পারলাম তিনি বিদেশী তেল কোম্পানিগুলোকে তুই সর্বনামে ভূষিত করছেন। এরকমটি ঠিক অনেক দিন দেখিনি।
আজ চট্টগ্রামের পত্রিকা ‘আজাদী’তে দেখলাম গতকাল সোমবার তেল-গ্যাস-বন্দর রক্ষা কমিটির ‘চট্টগ্রাম বিভাগীয় কনভেনশন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম কমিটির আহবায়ক হিসেবে দেখলাম আবুল মোমেনের নাম। দুই বড় শহরের দুই আহবায়ককেই খুব পছন্দ হল – কথার ঢঙ্গে ঢাকার বা জাতীয় জনকে তো ‘অসম সাহসী সৈনিক’ই মনে হয় – আর চট্টগ্রামের জন কবি সাংবাদিক আবুল মোমেন তো এ অঞ্চলের ‘বুদ্ধিজীবিদের বুদ্ধিজীবি’। ভয়ে আছি, এই আন্দোলনে সাহস আর বুদ্ধির মেলবন্ধনে শেষ পর্যন্ত কী উঠে আসবে কে জানে? আর আজাদীর খবর পড়ে তো ঠিক খবরটা ঠিক মতো পাওয়া যায় না, তাই ‘প্রথম আলো’টা নিয়ে নিজের সাধ্যমত খবরটি পুরো পত্রিকা খুঁজে কোথাও পেলাম না। চট্টগ্রামের ‘প্রথম আলো’র আবাসিক সম্পাদক একটা সভায় ছিলেন, কিন্তু খবরটি ‘প্রথম আলো’তে এলো না! ঠিক বুঝতে পারলাম না।
মাসুদ করিম - ২৭ অক্টোবর ২০০৯ (৩:২৬ অপরাহ্ণ)
তেল-গ্যাস রক্ষা আন্দোলনকে এরমধ্যেই বদরুদ্দীন উমর ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি আন্দোলন’ তকমা দিয়ে ফেলেছেন। বহুজাতিক কোম্পানির বিরুদ্ধে শুধু নয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিরই বিরুদ্ধে ও জনগণকে সচেতন করা শুধু নয় সরকারেরই বিরুদ্ধে — ‘উমরকথিত’ এই পথে বামদলগুলো কি আদতেই তাদের আন্দোলনকে আগাতে পারবে? উমর সংশয় প্রকাশ করছেন! আর আমরা?
আজকের সমকালে বদরুদ্দীন উমরের কলামটি পড়ুন। ২৭ অক্টোবর ২০০৯ বদরুদ্দীন উমর-এর আর্কাইভে। না, পুরো লেখাটাই এখানে তুলে দিতে হচ্ছে, সমকালের পুরো লিন্কটা দেখছি আসছে না।
মাসুদ করিম - ১৪ জানুয়ারি ২০১৩ (২:১০ পূর্বাহ্ণ)
বেতালহরতালরোগারোগ্য
=========
বাস্তবরাজনীতির বাস্তবসমরনীতির ধারায় – ভাল তালেবান খারাপ তালেবানের মতো, ভাল মুসলমান খারাপ মুসলমানের মতো, ভাল হিন্দু খারাপ হিন্দুর মতো, এখন ভাল হরতাল খারাপ হরতালও শোনা যাচ্ছে, বলা হচ্ছে। কিন্তু হরতাল, হরতালই – বংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে হরতাল সম্পূর্ণ অকার্যকর একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি। হরতালের কারো কারো বরাদ্ধ শেষ হয়ে গেছে, কারো কারো বরাদ্ধ মাত্র শুরু হয়েছে – এগুলো রাজনৈতিক প্রলাপ ছাড়া কিছুই নয়। অসহযোগ, ধর্মঘট, ঘেরাও, মানববন্ধন, জেলভরো, মিছিল, গণসংযোগ এসব রাজনৈতিক কর্মসূচি রেখে রাজনৈতিকভাবে হরতালকে অনুৎসাহিত করা হোক, আইন করে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা যাবে না, কিন্তু হরতাল পালন না করার অধিকার নাগরিককে দেয়া হোক, হরতাল সফল করতে সহিংস পিকেটিং, গাড়ি-সম্পদ জ্বালানো পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হোক।
সাপ্তাহিক ছুটির আগে পরে হরতাল ডাকা হচ্ছে আরেকটি মহাবিড়ম্বনা, এটা নিয়ে তো আর আইন করা যাবে না, সব বালখিল্যতা নিয়ে আইন করতে গেলে তো আইনের মাহাত্ম্যই আর থাকে না। কিন্তু রাজনৈতিক দলের এসব বালখিল্যতা পরিহার করতে হবে। যেমন এবার ১৬ জানুয়ারি ২০১৩ সিপিবি-বাসদের হরতাল ডাকা হয়েছে বুধবার, যাক অন্তত বৃহষ্পতিবার ডাকা হয়নি, এটা অন্তত একটা উল্লেখযোগ্য শুভবুদ্ধি।
মাসুদ করিম - ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ (১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ)