বিডিআর-এর বর্তমান মহাপরিচালক বিডিআর-এর নাম ও পোষাক পরিবর্তনের পরিকল্পনার কথা মিডিয়ায় প্রকাশ করেছেন। এখনো এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রধান মন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির কাছ থেকে কোনো মতামত এখনো জানা যায়নি। মহাপরিচালকের যুক্তি পিলখানার ঘটনায় বিডিআর ও এর পোষাকের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। কিন্তু যে ঘটনাটিকে আমরা অনেক আগেই জঙ্গিহানা বলেছি তার সাথে কেনো বিডিআর-এর ভাবমূর্তি গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে ? হ্যাঁ দৃশ্যমাধ্যমগুলোতে ঘটনার সময়ের বিডিআর-এর ছবি ও দৃশ্য মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে, জঙ্গিরা ও বহিরাগতরা এবং বিডিআর-এর আভ্যন্তরীন জঙ্গি অংশ বিডিআর-এর পোষাক পরেই অ্যাকশনে ছিল, সেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দূর করতে বিডিআর-এর পোষাক পরিবর্তনই যথেষ্ট।
বিডিআর শুধু পিলখানা হত্যাযজ্ঞেরই প্রতিনিধিত্ব করে না। বিডিআর মুক্তিযুদ্ধের অপরিসীম সাহস ও আত্নত্যাগেরও প্রতীক। সত্যিকার অর্থে তারা মুক্তিযুদ্ধের আনসাংগ হিরো। সামরিক বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর কথা যত বলা হয়েছে আমাদের প্যারামিলিটারি ও পুলিসের কথা কিন্তু সেভাবে কখনো বলা হয়নি। বিডিআর আমাদের সীমান্ত রক্ষায়ও যথেষ্ট দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে এসেছে স্বাধীনতার পর থেকেই। বিডিআর-কে বিপথে চালিত করার জন্য কাউকে যদি সবচেয়ে বেশি দায়ী করতে হয় তাহলে ২০০১-২০০৬ এর জঙ্গি সরকারকেই দায়ী করতে হয়। ওই সরকারের দায়িত্বহীন নিয়োগ বিডিআর-এর মধ্যে আত্মঘাতী শক্তির অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছিল। সেই অনুপ্রবেশ বাংলাদেশের সশস্ত্র সব বাহিনীতেই হয়েছে। পিলখানার মতো ঘটনা বাংলাদেশের যে কোনো বাহিনীতেই ঘটতে পারে, তাই বলে কি আমরা সে রকম কিছু ঘটলেই অনবরত সব সশস্ত্র বাহিনীর নাম পরিবর্তন করতে থাকব ?
বিডিআর-এর নাম পরিবর্তন মোটেই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। বড় জোর পোষাকের পরিবর্তন ঘটিয়ে ভাবমূর্তি পরিবর্তনের চেষ্টা অনেক বেশি প্রতীকী ও কার্যকর হবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে সবচেয়ে পরিবর্তন আনতে হবে সাধারণ জওয়ানদের যথার্থ দাবী-দাওয়াগুলো মিটিয়ে সরকার যে বিডিআর বান্ধব তার সংকেত বিডিআর-এর প্রত্যেকটি সদস্যের কাছে পৌঁছানো। সেনাবহিনীর কর্তৃত্ব এখনই খর্ব করা যাবে না কিন্তু দিনে দিনে খর্ব করা হবে এবং সে লক্ষ্যে এখনই কাজ শুরু করা হবে সেই প্রতিশ্রুতি বিডিআর-কে দেয়া।
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
২ comments
মাসুদ করিম - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১২:১৮ পূর্বাহ্ণ)
বিডিআরের নাম ও পোশাক পরিবর্তন, মহাপরিচালককে সংসদীয় কমিটির সামনে হাজির করে ব্যাখ্যা চাওয়ার দাবি। মেজর জেনারেল মইনুল ইসলামের শাস্তি দাবি করেছেন দুই সাংসদ। সাহারা খাতুন বলেছেন, আমি বিডিআরের ডিজিকে ডেকে এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছি। তিনি স্যরি বলেছেন। কিন্তু সাহারা খাতুনের বোঝা উচিত তার স্যরি বলাই যথেষ্ট নয়, তাকে ও বিডিআরে ন্যাস্ত সকল সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাকে অবিলম্বে প্রচলিত বিডিআরের পোশাক পরতে আদেশ দেয়া হোক। পোশাক পরিবর্তনের আগে তাদের প্রচলিত পোশাকই পরা উচিত। শেখ হাসিনার তাদের মনে করিয়ে দেয়া উচিত, চেইন অফ কমান্ড মানে চেইন অফ কমান্ড, চেইন অফ ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নয়।
রায়হান রশিদ - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ)
ধন্যবাদ লিন্কটি শেয়ার করার জন্য। সবই তো বুঝলাম, কিন্তু সাহারা-সাংসদদের এমন একটি ছেলেমানুষি আবদারের ব্যাপারে এই উপলদ্ধিতে আসতে এতো দিন লাগলো! কি জানি, এখন হয়তো তারা ভাবছেন এত দিনে সেনাবাহিনীকে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা গেছে, সুতরাং নিরাপদে ‘মুখ খোলা’ যেতে পারে! আর আপনার সাথে একমত, কেবল ‘লিপ সার্ভিস’ যথেষ্ট না, কাজ দেখতে চাই আমরা। সেটাই হবে দেখার বিষয়।