বাচ্চাদের স্কুলের টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে, সরকারী কর্মচারীদের একদিনের বেতনের টাকা দিয়ে, আমদানীতে সারচার্জ বসিয়ে, এডিপি কাটছাট করে……..(আরো অনেক খাত থেকে) পদ্মাসেতুর জন্য তহবিল যোগাড় করার রূপরেখা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে রীতিমত বিশ্বযুদ্ধের হুংকার দেয়া শুরু হয়েছিল ২৯শে জুনের পর থেকে। নিজেদের টাকায় পদ্মাসেতু হবে। এই আশ্বাসে আশায় বুক বেধেছিল দেশবাসী। ভেবেছিল কষ্ট হলেও এবার বিশ্বব্যাংক মহাজনের খবরদারী থেকে রক্ষা পেল দেশ। একটা সেতু করার পয়সা নিশ্চয়ই যোগাড় হবে আমাদের।
কিন্তু মাস না যেতেই সব হুংকারের চার্জ শেষ? এখন আবারো ভিক্ষা চেয়ে চিঠি? ইজ্জতের কিছু বাকী আছে আর?
এই বক্তৃতা শোনার পর এই খবর পড়তে কেমন লাগে?
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, পদ্মা সেতুর ব্যাপারে আপনাদের ভারসাম্যহীন অবস্থানের কারণে জাতি আপনাদের উপর কতোটা আস্থাহীন হয়ে পড়ছে, আপনারা কি জানেন? ইআরডি থেকে বিশ্বব্যাংকে পাঠানো চিঠিটা কি আপনাকে দেখানো হয়নি? কেন আপনি এখনো গর্ব করে বলে যাচ্ছেন “আবুলের মতো দেশপ্রেমিক আছে বলেই…..”
….মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, আমাদের বড় লজ্জা লাগে এসব উচ্চারণ করতে! আপনি সরকার প্রধান, আপনার মন্ত্রীদের অভিভাবক নন। এসব কথা আবুলের বাকী সহকর্মীরা বললে ততটা খারাপ লাগে না। কিন্তু খোদ সরকার প্রধানের মুখে এসব কথা একেবারে বেমানান। আমরা জানি আপনার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব আবুলদের রক্ষা করার চেয়ে আরো অনেক গুরুতর। আজকের পত্রিকার বিশ্বব্যাংকে চিঠি দেবার খবরটা পড়ে কয়েকটা প্রশ্ন জেগেছে মনে-
-এত হম্বিতম্বি করে শেষমেষ বিশ্বব্যাংকের কাছে আত্মসমর্পণ করলো সরকার? এখন দেশের ভাব কই মূর্তি কই?
-সরকার যদি আগে থেকে জানতো বিশ্বব্যাংক ছাড়া সেতু হবে না, তবে ওইসব হুংকার দিয়ে কার উপকার করলো?
-নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাব থাকলে কিংবা নিজের সামর্থ্যের উপর আস্থা না থাকলে দেশ পরিচালনায় আপনাদের যোগ্যতার ভিত্তি কি?
-কেন একটা সেতুপ্রকল্পের মতো বিষয়ে স্বয়ং সরকারপ্রধানকেই হাটে মাঠে চটকদার বক্তৃতা দিয়ে বেড়াতে হয়?
আমি জানি বাংলাদেশের মতো দেশে এসব প্রশ্নের কোন উত্তর হয় না। তবু প্রশ্নদের থামিয়ে রাখা যায় না।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১ comment
রায়হান রশিদ - ২৬ জুলাই ২০১২ (২:৪৫ অপরাহ্ণ)
ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য। একটা ছোটো অনুরোধ – বাইরের লিন্কের পাশাপাশি পোস্টের টেক্সট এর মধ্যেই উদ্ধৃতিগুলো (যেমন: ইআরডি’র চিঠির টেক্সট) দিয়ে দেয়া যায়? বুঝতে পারছি টানা বসে দ্রুত লেখা পোস্ট এটি। এখন একটু সময় পেলে পোস্টের টেক্সট এর ভেতরেই যা কিছু জানার আছে তা বসিয়ে নিলে পাঠক এক জায়গাতেই প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জেনে নিতে পারবে।
আবারও ধন্যবাদ।