সুপারিশকৃত লিন্ক : অক্টোবর ২০২৪

মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিন্ক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে। ধন্যবাদ।

আজকের লিন্ক

এখানে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই সুপারিশ করুন এখানে। ধন্যবাদ।

২৪ comments

  1. মাসুদ করিম - ১ অক্টোবর ২০২৪ (৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ)

    জীবাশ্ম জ্বালানি ও বাণিজ্যিক কৃষিতে বছরে ভর্তুকি ৬৭৭ বিলিয়ন ডলার
    https://samakal.com/bangladesh/article/258413/%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AE-%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%93-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A3%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%95%E0%A7%83%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%9B%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%AD%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A7%AC%E0%A7%AD%E0%A7%AD-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%A8-%E0%A6%A1%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B0

    জীবাশ্ম জ্বালানি প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্যিক কৃষি খাতে প্রতিবছর প্রায় ৬৭৭ বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, যা গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা বাড়িয়ে তুলছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসে ভূমিকা রাখছে, এমন অনেক ব্যবসা সরকারি পর্যায়ে ভর্তুকি পাচ্ছে। উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট সৃষ্টি করছে বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

    গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে একশনএইড বাংলাদেশ তাদের পরিচালিত ‘হাউ দ্য ফাইন্যান্স ফ্লো’ শীর্ষক সমীক্ষার ফল প্রকাশ করে। এ সময় জলবায়ু বিপর্যয় প্রতিরোধবিষয়ক ক্যাম্পেইন ‘ফান্ড আওয়ার ফিউচার’ উন্মোচন করা হয়। সমীক্ষায় বৈশ্বিক দক্ষিণের জনগণের টাকা কীভাবে জলবায়ু ধ্বংসের পেছনে খরচ হচ্ছে এবং এই অর্থ দিয়ে কীভাবে জীবাশ্ম জ্বালানি ও বাণিজ্যিক কৃষি খাতগুলো লাভবান হচ্ছে, সেসব চিত্র উঠে এসেছে।

    একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, এ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে জীবাশ্ম জ্বালানি এবং বাণিজ্যিক কৃষি প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের জলবায়ু সংকটের মূল চালক হিসেবে কাজ করছে। আমাদের লক্ষ্য নির্ধারণ, জবাবদিহি ও পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

    সমীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক আহমেদ জুবায়ের, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবিলিটি ফাইন্যান্স বিভাগের সাবেক পরিচালক মোর্শেদ মিল্লাত, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আনোয়ার ফারুক, জার্মান দূতাবাসের হেড অব জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন কাউন্সেলর ফ্লোরিয়ান হেলেন, ব্র্যাক ব্যাংকের চিফ অপারেটিং অফিসার সাব্বির হোসেন, একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সোসাইটির চেয়ারপারসন ইব্রাহিম খলিল আল জায়াদ।

  2. মাসুদ করিম - ২ অক্টোবর ২০২৪ (৭:০২ অপরাহ্ণ)

    Leaked files expose covert US government plot to ‘destabilize Bangladesh’s politics’
    https://thegrayzone.com/2024/09/30/us-plot-destabilize-bangladesh/

    Leaked docs reveal that prior to the toppling of Bangladeshi PM Sheikh Hasina, the US govt-funded International Republican Institute trained an army of activists including rappers and “LGBTQI people,” even hosting “transgender dance performances,” to achieve a national “power shift.” Institute staff said the activists “would cooperate with IRI to destabilize Bangladesh’s politics.”

    On August 5, months of violent street protests finally toppled Bangladesh’s elected Prime Minister Sheikh Hasina. When the military seized power and announced the imposition of a so-called “interim administration,” video footage showed Hasina fleeing to India aboard a helicopter. As vast swarms of student protesters overran the presidential palace, Western media outlets and many of their progressive-leaning consumers cheered the rebellion, framing it as a decisive defeat of fascism and the restoration of democratic rule.

    Hasina’s replacement, Muhammad Yunus, is a longtime Clinton Global Initiative fellow granted a Nobel Prize for pioneering the dubious practice of micro-lending. While Yunus has hailed the “meticulously-designed” protest movement that thrust him into power, Hasina personally accused Washington of working to remove her from power over her alleged refusal to allow a US military base on Bangladeshi territory. The State Department has dismissed allegations of US meddling as “laughable,” with spokesman Vedant Patel telling reporters that “any implication that the United States was involved in Sheikh Hasina’s resignation is absolutely false.”

    But now, leaked documents reviewed by The Grayzone confirm the State Department was informed of efforts by the International Republican Institute (IRI) to advance an explicitly stated mission to “destabilize Bangladesh’s politics.” The documents are marked as “confidential and/or privileged.”

    IRI is a Republican Party-run subsidiary of the National Endowment for Democracy, which has fueled an array of regime change operations across the globe since it was conceived in the office of CIA Director William Casey over forty years ago.

    The newly-uncovered files reveal how IRI spent millions in the lead-up to Hasina’s overthrow covertly coaching opposition parties and establishing a regime change network concentrated among the country’s urban youth. Among the GOP-run Institute’s front line foot soldiers were rappers, ethnic minority leaders, LGBT activists hosting “transgender dance performances” in the presence of US embassy officials – all groomed to facilitate what the US intelligence cutout called a “power shift” in Bangladesh.

    Kit Klarenberg

    Kit Klarenberg is an investigative journalist exploring the role of intelligence services in shaping politics and perceptions. @KitKlarenberg

    Wyatt Reed

    Wyatt Reed is the managing editor of The Grayzone. As an international correspondent, he’s covered stories in over a dozen countries. Follow him on Twitter at @wyattreed13.

  3. মাসুদ করিম - ৫ অক্টোবর ২০২৪ (৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ)

    বড্ড দেরি হয়ে গেল! বাংলা ভাষার ‘ধ্রুপদী’ তকমায় দ্বিধাবিভক্ত বাংলার সাহিত্য সমাজ
    https://www.sangbadpratidin.in/entertainment/event/bengali-among-five-new-classical-languages-approved-by-modi-cabinet-bengali-authors-react/

    আমরি বাংলা ভাষা! প্রাচীন থেকে আধুনিক যুগের ভাষা সংস্কৃতিতে বাংলার আধিপত্য থাকলেও অবশেষে ‘ধ্রুপদী’ ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলা। নরেন্দ্র মোদি সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে বাংলা ভাষাকে এই স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। লড়াই করেছি, এই স্বীকৃতি নিয়ে সওয়াল করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু পুরস্কার এবং স্বীকৃতির দোলাচলে আদৌ কিছু পেল ‘রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র ভাষা? ধ্রুপদী তকমায় কি কিছু আসবে-যাবে নিজের ভাষাকে প্রায় ভুলতে বসা বাঙালির?

    বাংলাটা ঠিক আসে না এবং বাংলার ধ্রুপদী তকমার প্রভাব নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে বিস্তর। নিজেদের ভাষার নতুন তকমায় মুখ খুলেছেন ভাষাবিদ পবিত্র সরকার। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে তিনি জানান, ”লাফ ঝাঁপ করার কিছুই নেই। নাম হল, গয়না হল, বিশেষণ হল। কিন্তু এটা নিয়ে সরকার কী করবে! সরকার কি এর বিস্তারে সাহায্য করবে? কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এখন এই ভাষা নিয়ে কী করবে সেটা জানা দরকার। সরকারি কাজে বাংলার ব্যবহার বাড়বে, মেডিক্যাল কলেজের গেটে বাংলায় লেখা থাকবে কি? ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে বাধ্য়তামূলক বাংলা ভাষা শেখানোর ব্যবস্থা করবে? এসব কথা আগে আসা দরকার। আমাদের ছেলেমেয়েদের বাংলা শেখাব কিনা, দলে দলে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পাঠানো হবে কি না! আমরা আমাদের ভাষা নিয়ে কী করব, সেটা সাধারণ মানুষ হিসেবেও ভাবতে হবে, উদাসীন না থেকে। না হলে শুধু তকমা বা সম্মান দিয়ে কিছু হবে না।”

    প্রায় একই সুরে সরব হয়েছেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে তিনি বলেন, ”এটা একটা আলঙ্কারিক সম্মান। এ সম্মানের যে খুব একটা তাৎপর্য আছে বলে মনে হয় না। বাংলা ভাষা ধ্রুপদী সম্মান অনেক আগে পেতেই পারত। এই ভাষার লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অন্যান্য বিদ্বজ্জন তো আছেনই। এই স্বীকৃতি অনেক দেরিতেই তাঁরা দিয়েছেন। এই স্বীকৃতিতে ভাষার কিছু আসে যাবে না। ভাষা তার নিজের পথেই চলবে। ভাষা বহমান জিনিস, পালটে যায়। মানুষের মুখে মুখে পালটে যাবে হয়ত। তবুও একটা সম্মান এসেছে এটা ভালো কথা।”

    অন্যদিকে বাংলা ভাষার ধ্রুপদী স্বীকৃতি নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন সাহিত্যিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে তিনি জানান, ”বাংলা ধ্রপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এটা গর্বের কথা। এই স্বীকৃতি অনেক আগে পাওয়া উচিত ছিল। এই দেরির কোনও টেকনিক্যাল দিক আছে বোধহয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগ নিয়েছেন। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়রা সক্রিয় হয়েছেন। প্রমাণ সংগ্রহের ব্যাপারে তাঁরা যত্নশীল ছিলেন বলেই এই স্বীকৃতি এসেছে। পরম্পরা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার উৎসাহ, উদ্দীপনা ভালোভাবে হবে বলে মনেহয়। আমাদের ভাষা যে সেদিনকার ভাষা নয়, এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।”

    • মাসুদ করিম - ৫ অক্টোবর ২০২৪ (৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ)

      ধ্রুপদী ভাষার তকমা পেয়েও বাঙালির কাছে বাংলার সম্মান ফিরবে কি? প্রশ্ন সহজ, উত্তর কি জানা?
      https://www.anandabazar.com/lifestyle/the-recognition-of-classical-language-make-bengali-language-more-important-to-bengalis-dgtl/cid/1550755

      বাণিজ্যে যদি লক্ষ্মী বাস করেন, তা হলে ভাষায় নিশ্চয় সরস্বতীর বাস? অন্তত অঙ্ক তো তাই বলছে। আশ্বিনের শারদপ্রাতে বাংলা ‘ধ্রুপদী ভাষা’র মর্যাদা পাওয়ায় এমনই নানা ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। সবচেয়ে বেশি যে ভাষায় কথা হয় গোটা পৃথিবীতে, সে তালিকায় বাংলার স্থান হল পঞ্চমে। পরিসংখ্যান বলছে, বাংলা বলতে পারে পঁচিশ কোটি মানুষ। সেই পঁচিশ কোটি মানুষই কি বাংলায় বলে এবং লেখে? যদি তা-ই হত, তা হলে কি আর বাংলা ভাষার পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যেত? ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করানোর জন্য দিনরাত এক করে পরিশ্রম করতেন অভিভাবকেরা? কিংবা সরকারি স্কুলের বেঞ্চগুলি কি এত ফাঁকা ফাঁকা থাকত? বাংলা ভাষা জাতীয় স্তরের স্বীকৃতি পাওয়ার পরেও নানা প্রশ্ন উঠছে বাংলা ভাষাপ্রেমীদের মনে। বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী তকমা পাওয়ার জন্য বহু লড়াই করতে হয়েছে। পেরোতে হয়েছে কিছু মানদণ্ড। অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলার মর্যাদার বৃদ্ধি পেয়েছে। এই গৌরবের পরেও বিশেষ কোনও বদল আসবে কি? মাতৃভাষার চর্চা কি বাড়বে? অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী অবশ্য মনে করেন না এই স্বীকৃতি কোনও বড়সড় বদল আনবে। কারণ তিনি মনে করেন, ভাষার সঙ্গে আত্মীয়তা থাকা জরুরি। ঋত্বিক বলেন, ‘‘খুব সাংঘাতিক কোনও পরিবর্তন আসবে বলে আমার মনে হয় না। ভাষার এই স্বীকৃতি যদি সব বদলে দিত, তা হলে বাঙালির প্রাথমিক যে ভাষা চর্চা সেটা এতটা অস্তিত্বহীন হয়ে যেত না। বহু মানুষ জানেনই না যে আমাদের রাষ্ট্রভাষা শুধু হিন্দি নয়। নিজের সংস্কৃতির প্রতি ভালবাসাটা ভিতর থেকে আসতে হয়। স্বীকৃতি দিয়ে ভাষার প্রতি আবেগ বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া যায় না।’’

      বহুজাতিক সংস্থা হোক কিংবা কর্পোরেট জগৎ— ইংরেজি ভাষা ছাড়া অচল এই স্তরগুলি। কাগজেকলমে হোক কিংবা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগে— ইংরেজি ভাষা অন্যতম মাধ্যম। এমনকি পেশাগত প্রয়োজনে সারা বছরই ইংরেজিতেই প্রেসক্রিপশন লিখতে হয় চিকিৎসকদের। এই স্বীকৃতির পর বাংলা প্রেসক্রিপশন লেখা কি শুরু করবেন তাঁরা? চিকিৎসক সুর্বণ গোস্বামী বলেন, ‘‘কিছু ক্ষেত্রে আছে যেখানে ইংরেজি ভাষার উপর ভরসা করতে হয়। তা না হলে কাজ এগোনো যায় না। ওষুধের নাম বাংলায় লিখতে পারব না। তার মানেই বাংলা ভাষার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে নেব, সেটাও নয়। মাতৃভাষা আমাদের মননে রয়েছে, জীবনে রয়েছে। এই স্বীকৃতি তখনই কার্যকর হবে, যখন দেখব বাংলা ভাষা সর্বত্র গুরুত্ব পেয়েছে। পেশার তাগিদে যদি ইংরেজি কিংবা হিন্দির কাছে আশ্রয় নিতেও হয়, বাংলা ভাষা যেন জীবন থেকে হারিয়ে না যায়। ইংরেজিতে লেখা বলে আইনের অর্থ অনেকেই বুঝতে পারেন না। ইংরেজির পাশাপাশি সব কিছু বাংলাতেও যেন তর্জমা হয়ে থাকে। এটুকু চাই।’’

      বাংলা নিয়ে উচ্চশিক্ষার কথা ভাবা যে একটা বড় ঝুঁকির বিষয়, বাংলা সাহিত্যের অনেক ছাত্রছাত্রী এ ব্যাপারে সহমত হবেন। অন্য কোনও বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ হয়নি তাই বাংলা নিয়ে পড়ছেন, বাংলা সাহিত্যের পড়ুয়াদের জীবনে এক বার হলেও এটা শুনতে হয়। সেটাই বলছিলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তনী রাজর্ষি ধাড়া। তিনি বলেন, ‘‘আর কোথাও ঠাঁই না পেয়ে বাংলা পড়তে এসেছি, এটা তো শুনতে হয়েছে। তেমনই এই আকালে কেন বাংলা নিয়ে পড়তে এলাম, তেমন কথাও আমাদের শিক্ষকদের থেকে শুনেছি। আমার মনে হয় বাংলার চর্চা যদি থেমে যায়, তা হলে কোনও স্বীকৃতি কিচ্ছু পরিবর্তন আনতে পারবে না। বাংলার সঙ্গে পালি, প্রাকৃতও ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে। এই ভাষাগুলির তো বিশেষ কোনও চর্চা নেই। স্বীকৃতি পাওয়ার পর কি হঠাৎ সকলে পালি ভাষায় কথা বলতে শুরু করবে? তা তো নয়। বাংলার ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য।’’

      গত দু’দশকে বাংলা ভাষা যে ভাবে গত দু’দশকে মুখ থুবড়ে পড়েছে, সেখান থেকে ভাষাটিকে তুলে আনতে হলে একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে এর চর্চা শুরু করতে হবে। সে ক্ষেত্রে স্কুলগুলিতেও বাংলা ভাষার চর্চা আরও বেশি করে জরুরি। বহু দিন ধরে এই বিষয়টি নিয়ে নানা আলাপ-আলোচনা চলছে। জাতীয় স্তরে বাংলা ভাষার এই স্বীকৃতিতে খানিকটা হলেও পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটবে? অভিনেত্রী ইশা সাহা বলেন, ‘‘সন্তান বাংলা লিখতে পারে না। ইংরেজিতে গড়গড়িয়ে কথা বললেও বাংলা বলতে হোঁচট খায়, আর সেটা নিয়ে বাবা-মায়েরা গর্ব করেন। এই স্বীকৃতিতে সত্যিই সেই গর্ব খর্ব হবে কি না, আমার সংশয় আছে। গাড়ি করে যাওয়ার সময় কোনও রেডিয়ো চ্যানেলে আমি বাংলা গান শুনতে পাই না। আমরা নিজেরাই যদি নিজেদের ভাষাকে এত অবহেলা করি, তা হলে কোনও কিছুতেই কোনও সমাধান হবে না। এই স্বীকৃতি শোপিস করে তুলে রাখা ছাড়া গতি নেই।’’

      বাংলা ভাষার এই ‘প্রাপ্তি’তে যারপরনাই খুশি বরাহনগর মোহন গার্লস হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা গোধূলি মুখোপাধ্যায়। মেয়েকে বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়িয়েছেন। সেই মেয়ে এখন এক বহুজাতিক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন। ইংরেজিতেই সব কাজকর্ম সারতে হয়। বাংলায় পড়াশোনায় করেও বড় চাকরি পেতে অসুবিধা হয়নি। তা হলে এখনকার অভিভাবকদের বাংলা মাধ্যম স্কুলে সন্তানকে পড়াতে এত ভীতি কেন? তিনি বলেন, ‘‘আমি সত্যিই জানি না অভিভাবকেরা কী ভাবেন। বাংলা পড়ে যে কিছু হবে না, এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। তবে বাংলা ধ্রুপদী ভাষা হওয়ার পর সেই ভাবনা সরে যাবে কি না, আমি জানি না। কিন্তু বাংলা যে পেশাগত ক্ষেত্রে কোনও বাধা হতে পারে না, এটুকু আমি নিশ্চিত।’’

      আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পরেও বাঙালির কাছে বাংলা ভাষার গুরুত্ব বাড়বে কি না, তা নিয়ে সংশয় খেলা করছে নানা জনের মনে। পাশাপাশি, এটাও ভাবনা যে বাংলা ভাষার সঙ্গে একটা প্রজন্মের যে প্রেমহীন সম্পর্ক, এই তকমা কি সত্যিই পারবে সেই দূরত্ব মুছে দিতে? আসলে বাংলা ভাষার সঙ্গে বাঙালির যে নাড়ির টান, তা বিস্মৃত হলে সংস্কৃতিও ধীরে ধীরে মুছে যাবে। বাঙালির ভাষা-মানচিত্রে যেন বাংলার স্থান সবচেয়ে উপরে থাকে, এটাই চাওয়া সকলের।

  4. মাসুদ করিম - ৫ অক্টোবর ২০২৪ (৫:৪০ পূর্বাহ্ণ)

    প্রাচীন বাঙালির সূত্র খুঁজেই ধ্রুপদী স্বীকৃতি এল বাংলার
    https://www.anandabazar.com/west-bengal/how-bengali-language-got-its-classical-language-tag/cid/1550903

    চার খণ্ড, ২২০০ পৃষ্ঠা। বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা আখ্যা দিয়ে তৈরি দাবিপত্রটি কৃশ নয়। ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া বেশির ভাগ ভাষার দাবিপত্রের থেকেই তা কলেবরে বৃহৎ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। রসগোল্লার মতো বাংলা ভাষা নিয়েও বঙ্গ-ওড়িশা দ্বৈরথ সৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল, যা এড়িয়ে গিয়েছেন রাজ্যের গবেষকেরা।

    প্রসঙ্গত, বছর দশেক আগেই ১১৯ পাতার দাবিপত্র পেশ করে ওড়িয়া ভাষা যে স্বীকৃতি পায়, তাতে চর্যাগীতিকেও ‘ওড়িয়া’ বলে দাবি করছে সংশ্লিষ্ট মহল। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর আবিষ্কার করা প্রাচীন গ্রন্থের নামও পাল্টে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিতর্কে না-ঢুকে বাংলা ভাষার দাবি মেলে ধরা গবেষকেরা বাংলা ভাষার প্রাচীনত্ব নিয়ে অনুসন্ধানের গভীরেই ডুব দিয়েছেন।

    রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের অধীনে ‘ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ় অ্যান্ড রিসার্চ’ (আইএলএসআর) -এর তৈরি দাবিপত্রটি জানুয়ারিতে তৈরি হয়। রাজ্য সরকারের তরফে তা কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং সাহিত্য অকাদেমির কাছে পেশ করা হয়েছিল। নিয়ম মেনে রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রের কাছে আর্জি এবং কেন্দ্রের মন্ত্রিসভার সায়, এই ভাবেই স্বীকৃতি আসে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

    আইএলএসআর-এর স্কুল অব লিঙ্গুয়িস্টিক স্টাডিজ়-এর অধ্যাপক অমিতাভ দাসের নেতৃত্বে ভাষাতত্ত্ববিদ, প্রত্নতত্ত্ববিদ মিলে পাঁচ সদস্যের দল দাবিপত্রটি তৈরি করেছে। অমিতাভের কথায়, “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দারুণ উৎসাহে কাজ করি। পাঁচ বছরের কাজ দু’বছরে সারা হয়েছে।” তাঁর বক্তব্য, “বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম প্রমাণ খোঁজা ছাড়াও, বাঙালিকে পেলেই বাংলারও খোঁজ মিলবে ভেবেই এগিয়েছি।”

    ধ্রুপদী ভাষার মাপকাঠি হিসেবে কোনও ভাষার দেড় থেকে দু’হাজার বছরের পুরনো প্রত্নপুরাণকেই ধরা হয়। বাংলার ক্ষেত্রে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে মহাস্থানগড়ের (এখন বাংলাদেশের বগুড়া) শিলালিপি মিলেছে। তাতে ব্রাহ্মী লিপিতে সংবঙ্গীয় (সম্যক রূপে বঙ্গীয়) শব্দটি তাৎপর্যবাহী বলে ধরছেন গবেষকেরা। ঐতরেয় ব্রাহ্মণ গ্রন্থেও বঙ্গদেশীয়দের প্রসঙ্গ। আবার অশোকের আমলে গিরনার শিলালিপিতে ‘দ্বাদশ’ শব্দটির বানান হিসাবে ব্রাহ্মী লিপিতে বাংলা উচ্চারণ রীতি মেনে চলা হচ্ছে বলেও গবেষকদের দাবি। অষ্টম শতকে প্রকাশিত সংস্কৃত-চিনা অভিধানটির সূত্রও দাবিপত্রটিতে তাৎপর্যপূর্ণ বলা হয়েছে। লি য়েনের সংকলিত অভিধানটি ১৯২৯ সালে ফরাসিতে প্রকাশ করেন প্রবোধচন্দ্র বাগচী। তাতেও ৫০টির বেশি বাংলা শব্দ রয়েছে। অমিতাভ বলেন, “সংস্কৃত-চিনা অভিধানে বেশ কয়েকটি শব্দকে বাংলা বলে দাবি করা মানে, বাংলার প্রভাব বিশ্বের নানা প্রান্তেই ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে আইস, বইস, মাংস, মোটা, ভতর (ভাতার) শব্দগুলি রয়েছে।”
    Advertisement

    বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করেন, বাংলা ভাষা চর্চায় উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে উঠবে, অন্তত দু’টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার এবং কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ‘চেয়ার প্রফেসরের’ বেশ কিছু পদ তৈরি হবে। তবে এই সাফল্য কার কৃতিত্বে, তা নিয়েও রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। মেচেদায় শুভেন্দু অধিকারী প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রিসভাকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। বালুরঘাটে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও মুখ্যমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখার কৃতিত্ব নস্যাৎ করেন। অন্য দিকে, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক আগ্রহে এবং উপদেশে উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন আইএলএসআর গবেষণাপত্র প্রস্তুত করে কেন্দ্রের কাছে জমা দেয়। ব্রাত্য মুখ্যমন্ত্রীকে বাঙালি জাতির হয়ে কৃতজ্ঞতা জানান।

  5. মাসুদ করিম - ৫ অক্টোবর ২০২৪ (৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ)

    Chaos in Bangladesh Opens Door to Islamist Extremists
    https://www.bloomberg.com/news/features/2024-09-27/bangladesh-s-political-turmoil-opens-space-for-islamic-extremism?srnd=undefined

    Militants are gaining strength after a tumultuous change in government, creating security concerns across Asia.

    Soon after student protesters dramatically took down Bangladesh’s government last month, a group of boys broke into the home of Tureen Afroz, the former chief prosecutor of a tribunal for war crimes committed during the nation’s independence movement in the early 1970s.

  6. মাসুদ করিম - ৮ অক্টোবর ২০২৪ (৬:১৮ অপরাহ্ণ)

    Iran 1953: MI6 plots with Islamists to overthrow democracy
    https://www.declassifieduk.org/iran-1953-mi6-plots-with-islamists-to-overthrow-democracy/

    Declassified British files highlight a little known aspect of the joint MI6/CIA coup against Iran’s democratically elected government in August 1953 – UK covert action in support of leading radical Shia Islamists, the predecessors of Ayatollah Khomeini.

    Declassified British files highlight a little known aspect of the joint MI6/CIA coup against Iran’s democratically elected government in August 1953 – UK covert action in support of leading radical Shia Islamists, the predecessors of Ayatollah Khomeini.

    Thanking Kashani

    After Mossadeq’s overthrow, the British received a report from the new Iraqi ambassador in Tehran, telling how the Shah and Zahedi had together visited Kashani, “kissed his hands, and thanked him for his help in restoring the monarchy”.

    The Shah soon assumed all powers and became the “dictator” preferred by the British ambassador. The following year a new consortium was established, controlling the production and export of Iranian oil, in which the US and Britain each secured a 40 per cent interest – a sign of the new order, the US having muscled in on a formerly British preserve.

    Kashani, meanwhile, faded from political view after 1953, but he acted as Khomeini’s mentor and the latter was a frequent visitor to Kashani’s home. Kashani’s death in 1961 would mark the start of Khomeini’s long rise to power.

    Despite eventual US management of the coup, the British had been the prime movers, and their motives were evident.

    As a former Iranian ambassador to the UN until the 1979 Islamic revolution, Fereydoun Hoveyda, claimed years later: “The British wanted to keep up their empire and the best way to do that was to divide and rule.”

    He added: “The British were playing all sides. They were dealing with the Muslim Brotherhood in Egypt and the mullahs in Iran, but at the same time they were dealing with the army and the royal families.”

    Hoveyda continued: “They had financial deals with the mullahs. They would find the most important ones and would help them…The British would bring suitcases of cash and give it to these people. For example, people in the bazaar, the wealthy merchants, would each have their own ayatollah that they would finance. And that’s what the British were doing”.
    ‘Made in Britain’

    In her memoirs, written in exile in 1980, the Shah’s twin sister, Ashraf Pahlavi, who pressed her brother to assume power in 1953, observed that “many influential clergymen formed alliances with representatives of foreign powers, most often the British, and there was in fact a standing joke in Persia that if you picked up a clergyman’s beard, you would see the words ‘Made in England’ stamped on the other side.”

    Although exaggerating with her ‘Made in England’ claim, Ashraf neatly summed up the British view of the Islamists – that they could be used to counter threats to UK interests.

    During the 1951–3 coup planning period, Kashani was seen by the British as too much of an anti-Western liability to be a strategic ally. But his forces could be used to prepare the way for the installation of pro-Western figures, and be dropped as soon as their tasks for the imperial powers had been performed.

    Kashani’s successor, Ayatollah Khomeini, took over the country following the 1979 revolution, presiding over an Islamic theocracy until his death a decade later.

    This is an edited extract from Mark Curtis’ book, Secret Affairs: Britain’s Collusion with Radical Islam.

  7. মাসুদ করিম - ১০ অক্টোবর ২০২৪ (২:৪৫ অপরাহ্ণ)

    ৭২ এর সংবিধানের ‘জন্মভূমি’ ভারত : জামায়াত আমির শফিকুর
    https://bangla.bdnews24.com/politics/afed439dcdb9

    বিদ্যমান সংবিধান পর্যালোচনা ও মূল্যায়নের জন্য সংবিধান সংস্কারের আলোচনার মধ্যে ১৯৭২ সালে রচিত বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানের ‘জন্ম’ ভারতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান।

    রাজধানীর একটি হোটেলে বুধবার জামায়াতে ইসলামীর তরফে ‘রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা’ তুলে ধরার পর প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানটি ‘জন্মভূমি হিসেবে বাংলাদেশকে পায়নি’।

    সংবিধান সংস্কার হবে, না পুনর্লিখন– এমন প্রশ্নের উত্তরে জামায়াতের আমীর বলেন, “আপনি ৭২ এর সংবিধান সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন, যে সংবিধানটি রচিত হয়েছিল, সেটা ভারতে বসেই হয়েছিল। এবং ভারত যখন স্বাধীনতা যুদ্ধে একটা গুরুত্বপূর্ণ রোল রেখেছে। সংবিধানটা বাংলাদেশে বসে রচিত করা যেত।

    “শুধু ভারত নয়, দুনিয়ার এক্সপার্টদের আমরা ইনভাইট করে আনতে পারতাম। তাহলে আমাদের সংবিধানের জন্মভূমি হত বাংলাদেশ।”

    ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভারতে বসে রচিত’ বাহাত্তরের সংবিধান পার্লামেন্টে এনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল; তার ভাষায় ওই সংবিধান ছিল ‘ফরমায়েশি’।

    “এটায় অনেক পক্ষ, অনেক কনসার্ন এক্সপ্রেস করেছে। পরবর্তীতে এসে আবার অনেক সংশোধনী এসেছে। এবং এই সংশোধনীগুলো তারা যেটা প্রথম সংবিধান করেছিল, ওই জায়গায়ও থাকেনি।”

    জামায়াতের আমির বলেন, “আমরা লক্ষ্য করলাম মুজিব সাহেব থাকা অবস্থায় পার্লামেন্টে ৭ মিনিটের বক্তব্যের পর বাকশাল কায়েম হল। আমাদের সংবিধান যেন মতলবি সংবিধান না হয়। শুধু নির্বাচন নয়, সমগ্রিক সমাজ কাঠামো ধরে সংবিধান হতে হবে।”

    আগে নির্বাচন, না আগে সংস্কার– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “দুটি রোডম্যাপ হবে। একটা সংস্কারের, আর একটা নির্বাচনের। তবে সময় যেন অতি দীর্ঘ না হয়, আবার অতি সংক্ষিপ্ত না হয়। দেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে। একটি বর্ণাঢ্য সংসদের জন্য জনগণের কোনো ব্যাক্তিকে না, ভোট দিতে হবে দলকে।”

    গত সরকারের শেষ দিনে আন্দোলন দমন করতে গিয়ে ‘গণহত্যায় জড়িত’ যারা সরকার পতনের পর পালিয়ে গেছে, তাদের ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
    আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে বাধ্য করা ‘জুলুম হবে’

    ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। দলটির নেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।

    নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা নেওয়ার পর আন্দোলনকারী ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও নির্বাচনের কোনো সময়সূচি এখনও দেয়নি।

    আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তিনটি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান বলেন, “আওয়ামী লীগ নিজেরাই নির্বাচন চান না, আমরা তাদের ওপর নির্বাচন চাপিয়ে দিলে জুলুম হবে।”

    ‘জোর’ করে আওয়ামী লীগের ওপর নির্বাচন চাপিয়ে দিলে তাদের ওপর ‘বৈষম্য’ হয় কিনা, সেটাও ভাবার কথা বলেন আমীরে জামায়াত।

    অতীতের মত কোনো দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হবে, নাকি সব দল নিয়ে নির্বাচনের পক্ষে– সেই প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন, “তারা ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় এসেছেন, ওটা যেভাবেই আসুক, তারা এসেছেন। এরপর ‘১৪, ’১৮, ’২৪ তিনটা নির্বাচন হয়েছে, আদৌ কি এটা নির্বাচন হয়েছে?”

    শফিকুর রহমান বলেন, “তারা নির্বাচন চাননি, তারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন। এই ক্ষমতায় থাকার জন্য যা কিছু করা দরকার, তারা সেটাই করেছেন। তারা নিজেরাই যদি নির্বাচন চেয়ে না থাকেন, তো আওয়ামী লীগের ওপর আমরা নির্বাচন চাপায়ে দিলে এটা তাদের ওপর জুলুম হবে কিন্তু।”

    আওয়ামী লীগের নির্বাচনে আসা বা না আসার ‘হিসেবের ভার বাংলাদেশের জনগণের ওপর’ দেওয়ার কথা বলেন জামায়াত নেতা।

    তিনি বলেন, “আমরা কোনো মত দিতে চাই না। এটাও একটা বৈষম্য হয় কিনা চিন্তা করেন, তারা চাচ্ছে না, আমরা জোর করে বললাম এটা দিতেই হবে।”

    অনুষ্ঠানে জামায়াতের তরফে ৪১টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে সংক্ষেপে ১০টি তুলে ধরা হয়। জামায়াত আমীরের পক্ষে সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের।

    অন্যদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, আ না ম শামসুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম মাছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাইফুল আলম খান মিলন, হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, নূরুল ইসলাম বুলবুল, মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও মোবারক হোসাইন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

  8. মাসুদ করিম - ১০ অক্টোবর ২০২৪ (৩:০৩ অপরাহ্ণ)

    Over 370 million girls and women globally subjected to rape or sexual assault as children – UNICEF
    https://www.unicef.org/press-releases/over-370-million-girls-and-women-globally-subjected-rape-or-sexual-assault-children
    First-ever estimates on sexual violence in childhood reveal alarming prevalence, with devastating impact on children

    More than 370 million girls and women alive today – or 1 in 8 – experienced rape or sexual assault before the age of 18, according to new UNICEF estimates released today.

    The first-ever global and regional estimates on sexual violence against children – published ahead of the International Day of the Girl – reveal the scale of the violation worldwide, especially for adolescent girls, often with lifelong implications.

    When ‘non-contact’ forms of sexual violence, such as online or verbal abuse are included, the number of girls and women affected rises to 650 million globally – or 1 in 5, underscoring the urgent need for comprehensive prevention and support strategies to effectively address all forms of violence and abuse.

    “Sexual violence against children is a stain on our moral conscience,” said UNICEF Executive Director Catherine Russell. “It inflicts deep and lasting trauma, often by someone the child knows and trusts, in places where they should feel safe.”

    Sexual violence against children is pervasive, cutting across geographical, cultural, and economic boundaries, the data show. Sub-Saharan Africa has the highest number of victims, with 79 million girls and women affected (22 per cent), followed by 75 million in Eastern and South-Eastern Asia (8 per cent), 73 million in Central and Southern Asia (9 per cent), 68 million in Europe and Northern America (14 per cent), 45 million in Latin America and the Caribbean (18 per cent), 29 million in Northern Africa and Western Asia (15 per cent), and 6 million in Oceania (34 per cent).

    In fragile settings such as those with weak institutions, UN peacekeeping forces, or large numbers of refugees fleeing due to political or security crises, girls face an even greater risk, with the prevalence of rape and sexual assault in childhood slightly more than 1 in 4.

    “Children in fragile settings are especially vulnerable to sexual violence,” said Russell. “We are witnessing horrific sexual violence in conflict zones, where rape and gender-based violence are often used as weapons of war.”

    According to the data, most childhood sexual violence occurs during adolescence, with a significant spike between ages 14 and 17. Studies show that children who experience sexual violence are more likely to suffer repeated abuse. Implementing targeted interventions during adolescence is crucial to breaking this cycle and mitigating the long-term impacts of such trauma.

    Survivors often carry the trauma of sexual violence into adulthood, facing higher risks of sexually transmitted diseases, substance abuse, social isolation, and mental health issues like anxiety and depression, as well as challenges in forming healthy relationships. Evidence shows that the impact is further compounded when children delay disclosing their experiences, sometimes for long periods, or keep the abuse secret altogether.

    Although more girls and women are affected, and their experiences are better documented, boys and men are also impacted, the data show. An estimated 240 to 310 million boys and men – or around 1 in 11 – have experienced rape or sexual assault during childhood. This estimate rises to between 410 and 530 million when non-contact forms are included.

    Persistent data gaps, particularly on boys’ experiences and non-contact forms of sexual violence, highlight the need for increased investment in data collection to capture the full scale of sexual violence against children.

    As government leaders and civil society, including activists, survivors, and young people, prepare to meet at the inaugural Global Ministerial Conference on Violence Against Children in Colombia next month, the data highlight the urgent need for intensified global action to combat childhood sexual violence and build a safer future for children worldwide by:

    Challenging and changing social and cultural norms that allow sexual violence to occur and discourage children from seeking help.
    Equipping every child with accurate, accessible, and age-appropriate information that empowers them to recognize and report sexual violence.
    Ensuring that every child victim and survivor has access to services that support justice and healing and reduce the risk of further harm.
    Strengthening laws and regulations to protect children from all forms of sexual violence, including in organizations that work with children, and investing in the people, resources, and systems needed to implement them.
    Building better national data systems to monitor progress and ensure accountability by implementing international standards like the International Classification of Violence against Children.

    #####

    Notes for editors:

    Estimates are based on data from a subset of countries, varying by indicator. The most comprehensive data coverage is on girls’ and women’s experiences of contact sexual violence from nationally representative surveys conducted between 2010 and 2022 in 120 countries and areas. As a result of existing data gaps, limited coverage, and the varying scope and quality of the available information, global estimates on non-contact sexual violence and sexual violence against boys and men were informed by a broader range of data sources and applied some indirect methods.

    The list of fragile and conflict-affected situations is released annually by the World Bank Group. See the classification and country list here.

  9. মাসুদ করিম - ১২ অক্টোবর ২০২৪ (৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ)

    ‘I love the whole atmosphere and can spend hours browsing’: how did bookshops suddenly become cool?

    https://www.theguardian.com/books/2024/oct/11/i-love-the-whole-atmosphere-and-can-spend-hours-browsing-how-did-bookshops-suddenly-become-cool?CMP=twt_books_b-gdnbooks

    Gen Z’s cultural tastes are heralded, maligned and mythologised in almost equal measure. But one stereotype persists above all: that young people are addicted to their phones, keen to live their lives primarily through a screen.

    But is this the whole picture? A survey commissioned by the Booksellers Association ahead of Bookshop Day tomorrow has found that gen Z and millennials are more likely to buy a book based on a bookseller’s recommendation – in person, in a bookshop – than older age groups: 49% and 56% respectively, compared with 37% of gen X and 31% of baby boomers. Booksellers from around the UK told me this wasn’t surprising – that, in the last few years, they’ve noticed a sharp rise in young readers coming into their shops seeking out human guidance, eager to be in a physical store rather than filtering through AI and influencer-recommended titles online.

    “I love the whole atmosphere in bookstores and can spend hours browsing – I think that’s a big part of it,” Emily, 26, from Northampton explains. “You can take hours without feeling rushed or like you’re imposing.”

    “I really feel like it’s a proper outing to go and talk with the person at the bookstore and see what they think and tell them about the books that I like,” Sarah, 27, who lives in Edinburgh, tells me. “I just think it’s so much more fun than picking something based on an algorithm.” She describes the bookshops in her neighbourhood as beautiful and calming – visiting is an event, something which can’t be re-created online. “I just find shopping online so much less joyful,” Hannah, 26, from south London agrees.

    The internet does have a role to play in bookshops’ popularity with young people, however. BookTok, the corner of TikTok devoted to all things literary, is where many people I spoke to said they got both book and bookshop recommendations. “Videos of people going to irl bookshops have made me romanticise them a bit more,” Hannah tells me. Emily says that she will take recommendations she gets online and wait until she can buy it in a bookshop.

    There is a flipside to this – what Jordan Taylor-Jones, the founder of The West Kirby Bookshop, describes as “the gamification of reading and the ‘accessorisation’ of books” we’ve seen in the last few years. Fashion brands are aligning themselves with authors and things like the notorious celebrity book stylist have emerged as a result of books and reading becoming “cool”.

    “I have noticed over the last year gen Z readers visiting the bookshop and using it almost as a studio to take staged photos,” he says. “They’ll often get their friend or partner to take posed photographs of them browsing the shelves or simply looking wistfully out of our shop window.”

    He emphasises that this does not apply to all young customers – and that social media has helped to amplify the bookshop to younger readers who travel from neighbouring towns and cities to visit – but says it’s not uncommon to have the bookshop being treated as a backdrop for social media posts by people who have no intention of actually buying a book.

    However, a resistance to algorithmic recommendations popular on BookTok (as well as online bookstores like Amazon) might be one of the most common things driving young readers into physical bookshops. Almost everyone I spoke to – both booksellers and young readers – were on the whole sceptical of giving BookTok too much credit for the popularity of shopping in physical shops. Some readers said they experienced an inverse effect, a kind of “BookTok burnout”, and have actually sought out in-person recommendations as an antidote to being pushed the same books by BookTokers ad nauseam.

    “The algorithm doesn’t really do much other than give you the same books within the genre,” Jack, 24, who lives in Mallaig, argues. Conversely, he says, “the art of the bookseller is almost like a DJ where, if you tell them your general reading habits, then they’ll come out with something you are almost categorically going to enjoy – even if it’s left field from your normal habits.”

    What really draws young readers into bookshops, though, is something more personal. Booksellers tell me readers come out in droves to buy signed books, and that author talks are a big draw, especially for younger readers wanting to connect with their favourite writers.

    “Post Covid, people don’t go out drinking or clubbing as much – we’ve found students are choosing to spend their money on a special edition of a new book,” Adele Wrightson, the manager at the bound bookshop in Whitly Bay says.

    “I think it’s kind of a misconception that younger people want to do everything online or only care about how things look on social media,” Grace Gooda, the manager at Morocco Bound in Bermondsey tells me. “In our experience … it creates a relationship where they trust our recommendations and might take home something they wouldn’t have seen advertised elsewhere.”

    This deeper connection is what really makes physical bookshops appeal to many younger readers. “Bookshops aren’t just places to buy books, they’re places of community, of gathering and this is something that’s actively fostered by so many bookshops,” Ash, 29, from Yorkshire, says. “Speaking to staff to get book recommendations is often a path into hearing more about the community aspects of bookshops, too – it’s often more than just a book recommendation.”

  10. মাসুদ করিম - ১২ অক্টোবর ২০২৪ (৮:৫৭ পূর্বাহ্ণ)

    অভিনেতা জামালউদ্দিনের জীবনাবসান
    https://bangla.bdnews24.com/glitz/c727f7a3ad27

    মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে খ্যাতি কুড়ানো জামালউদ্দিন হোসেন কানাডার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

    স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিনেতা শামসুল আলম বকুল।

    তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এর আগে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ৮১ বছর বয়সী জামালের লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়।

    “জামাল ভাই শেষ সময়টা তার ছেলের কাছে ছিলেন, কানাডার ক্যালগেরি শহরে। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় বেশ কয়েকদিন আগে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। মাঝে ক্ষণিকের জন্য অবস্থা ভাল হলেও শেষাবধি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।”

    স্থানীয় সময় শনিবার বাদ জোহর জানাজা শেষে ক্যালগেরি শহরেই তাকে দাফন করা হবে বলে জানান বকুল।

    সত্তরের দশকের মাঝামাঝি থেকে মঞ্চ নাটকে অভিনয় শুরু করেন জামালউদ্দিন হোসেন। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তবে তারকা হয়ে উঠেছেন টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে।

    জামাল ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন। ১৯৯৭ সালে তিনি ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল’ নামে আরেকটি নাট্যদল গড়ে তোলেন।

    বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বেতার টেলিভিশন শিল্পী সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘রাজা রাণী’, ‘চাঁদ বণিকের পালা’, ‘আমি নই’, ‘বিবি সাহেব’, ‘যুগলবন্দী’সহ কয়েকটি মঞ্চ নাটকে নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।

    জামালউদ্দিনের স্ত্রী অভিনয়শিল্পী রওশন আরা হোসেন। তার ছেলে কানাডায় এবং মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। তিনি গত এক দশক ধরে ছেলেমেয়েদের কাছেই থাকতেন। এজন্য তাকে অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি। ২০১৩ সালে তিনি একুশে পদক পান।

  11. মাসুদ করিম - ১৫ অক্টোবর ২০২৪ (৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ)

    মেট্রোরেল: একক যাত্রার আড়াই লাখ টিকেটের দুই লাখই নিয়ে গেছে যাত্রীরা
    https://bangla.bdnews24.com/bangladesh/4533f813f0a8

    “এসব কার্ড বাইরে নিয়ে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করতেও পারবেন না। তাই অনুরোধ রইল, এসব কার্ড নিকটবর্তী স্টেশনে এসে ফেরত দেবেন। এতে রাষ্ট্র আর্থিক ক্ষতি থেকে বাঁচবে।”

    মেট্রোরেলে একক যাত্রায় ব্যবহার করা টিকেটের মধ্যে দুই লাখ ফেরত না দিয়েই স্টেশন থেকে বের হয়ে গেছেন যাত্রীরা। টিকেটের অভাবে যাত্রীদের সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে সেগুলো ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-ডিএমটিসিএল।

    সোমবার রাজধানীর উত্তরায় ডিএমটিসিএল কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জানান সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।

    ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ স্টেশন মঙ্গলবার থেকে চালুর ঘোষণা দিতে সাংবাদিকদেরকে আামন্ত্রণ জানানো হয় সেখানে।

    আবদুর রউফ জানান, তারা মেট্রোরেলে একক যাত্রার জন্য ২ লাখ ৪৮ হাজার টিকেট এনেছিলেন। এর মধ্যে ১৩ হাজার নষ্ট হয়ে গেছে। ২ লাখ হারিয়ে গেছে।

    “হারিয়ে যাওয়া মানে যাত্রীরা এগুলো বিভিন্ন সময়ে স্টেশনে জমা না দিয়ে নিয়ে গেছেন। এটা আইনত অপরাধ।”

    মেট্রোরেলে দুই ধরনের টিকেট আছে। এমআরটি পাস কিনে কেবল রিচার্জ করে যাত্রীরা ট্রেনে চড়তে পারেন। যতক্ষণ কার্ডে টাকা থাকে ততক্ষণ ট্রেনে চড়া যায়। সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা রিচার্জের সুযোগ আছে।

    এভাবে কার্ড করে চলাচলে ছাড়ায় ১০ শতাংশ ছাড়ও মেলে। এই কার্ড পাঞ্চ করে স্টেশন থেকে বের হতে হয়। পাঞ্চ মেশিনেই ভাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেওয়া হয়।

    তবে কেউ চাইলে কোনো একক যাত্রার টিকেট কিনেও গন্তব্যে যেতে পারেন। এই একক যাত্রার টিকেট মেশিনে ঢুকিয়ে বের হতে হয়।

    সেই টিকেট মেশিনে দিলেই বের হওয়ার সুযোগ থাকে স্টেশনে। তবে একজন টিকেট দেওয়ার পর তার সঙ্গে বের হয়ে যাওয়া যায়, এই সুযোগই নিয়ে থাকেন যাত্রীরা।

    মেট্টোরেল ভিত্তিক বিভিন্ন ফেইসবুক গ্রুপে যাত্রীরা প্রায়ই মজার ছলে বা ইচ্ছে করে টিকেট এভাবে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে পোস্টও করেন। একজন যাত্রী এভাবে একাধিক টিকেট নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে গর্বও করেছেন।

    এভাবে নিয়ে যাওয়া টিকেট ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ডিএমটিসিএল এমডি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এককযাত্রার টিকিট মেট্রো স্টেশনের বাইরে নেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। এসব কার্ড বাইরে নিয়ে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করতেও পারবেন না। তাই অনুরোধ রইল, এসব কার্ড নিকটবর্তী স্টেশনে এসে ফেরত দেবেন। এতে রাষ্ট্র আর্থিক ক্ষতি থেকে বাঁচবে।”

    যাত্রীদের এই টিকেট নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা ভুগছেন অন্যরা। টিকেট কম থাকায় প্রায়ই কিছু কিছু ভেন্ডিং মেশিন বন্ধ থাকে। তখন দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হয়।

    স্টেশনে এসে এমআরটি পাস রিচার্জে ভোগান্তি অবসানের উদ্যোগ নেওয়ার কথাও সংবাদ সম্মেলনে জানান আবদুর রউফ।

    তিনি বলেন, “ঘরে বসেই যাতে এমআরটি রিচার্জ করা যায়, সে জন্য অ্যাপ তৈরি হচ্ছে। খুব দ্রুতই চুক্তি হবে, বিষয়টি ফাইনাল স্টেজে আছে। আশা করি, খুব শিগগিরই ভালো সংবাদ দিতে পারব।”

  12. মাসুদ করিম - ১৫ অক্টোবর ২০২৪ (৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ)

    Chinese premier meets with Pakistani military leaders
    https://news.cgtn.com/news/2024-10-15/Chinese-premier-meets-with-Pakistani-military-leaders-1xIcLtmRhZu/p.html

    Chinese Premier Li Qiang met with Sahir Shamshad Mirza, Chairman of the Joint Chiefs of Staff Committee, Pakistan, Chief of Army Staff Asim Munir, Chief of Naval Staff, Naveed Ashraf, and Chief of Air Staff, Zaheer Ahmad Babar, in Islamabad, Pakistan, on Monday.

    Noting that since the establishment of diplomatic ties, China and Pakistan have always respected and supported each other, Li said that the two countries are good brothers and good partners who have stood the test of the changing international landscape and truly shared weal and woe and helped each other.

    Under the strategic guidance of Chinese President Xi Jinping and Pakistani leaders, China-Pakistan relations have developed in depth and are moving steadily toward building an even closer China-Pakistan community with a shared future in the new era, Li said.

    China is willing to work with Pakistan to implement the important consensus reached by the leaders of the two countries, deepen strategic coordination, strengthen mutually beneficial cooperation and bring more benefits to the two peoples, he added.

    Li pointed out that China firmly supports Pakistan in building a united, stable, prosperous and strong Pakistan and is willing to continue to provide support and assistance to Pakistan within its capacity and further deepen cooperation with Pakistan in various fields.

    It is hoped that the two militaries will continue to strengthen cooperation and provide solid support for China-Pakistan friendship and mutually beneficial cooperation, noted Li.

    China supports Pakistan’s efforts to combat terrorism and stands ready to deepen counterterrorism cooperation with Pakistan, pool counterterrorism efforts among regional countries and jointly safeguard peace and stability of the two countries and the region, Li said.

    The Pakistani side said that deepening the ironclad Pakistan-China friendship is a strong consensus across all sectors of Pakistani society.

    Pakistan and China have always firmly supported and coordinated with each other on issues concerning their respective core interests, with solid political mutual trust, they said.

    The Pakistani military is committed to contributing to the cause of friendly cooperation between the two countries and will take all necessary measures to ensure the safety of Chinese personnel, institutions, and projects in Pakistan, they said.

    Pakistan is also willing to strengthen defense and security cooperation with China within bilateral and multilateral frameworks, safeguard the common interests of both countries and promote regional peace, stability and development, they added.

  13. মাসুদ করিম - ১৬ অক্টোবর ২০২৪ (৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ)

    সিআরপি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ সারজিস আলমের
    https://bangla.bdnews24.com/samagrabangladesh/c6de6f9bee47

    সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র-সিআরপির চিকিৎসা, সেবার মান ও পরিবেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম।

    মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

    সারজিস আলম বলেন, “সিআরপিতে অনেক সমস্যা রয়েছে। আমাদের কাছে একাধিক তথ্য ও ছবি এসেছে এখানে রোগীদের বেডপ্যাডের পরিবর্তে পেপার দেওয়া হচ্ছে। এই পেপার ময়লা জিনিস, দোকানে কেজি দরে কিনতে পাওয়া যায়। ক্ষতস্থানে পেপার লেগে ইনফেকশন হতে পারে।

    “সিআরপির আরেকটি বড়া সমস্যা হল এখানের পরিবেশ অনেক নোংরা। এখানে নতুন ভবন আছে যার পরিবেশ ভালো। কিন্তু এখানের একজন বললেন, আজ থেকে কয়েকবছর আগে যে কক্ষগুলো পরিত্যক্ত হয়েছে সেখানে রোগী রাখা হচ্ছে। এগুলোর অবস্থা গুদামের থেকেও খারাপ, সেটা তো যৌক্তিক হতে পারে না। ভালো পরিবেশে রোগী থাকলে দ্রুত ভালো হবে, খারাপ পরিবেশে রোগী থাকলে সেই রোগী আরও খারাপের দিকে যাবে।”

    তিনি বলেন, “আমাদের আসার খবর শুনে হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষের ফ্লোর তড়িঘড়ি করে মুছা হচ্ছে। স্যাভলন দেওয়া হচ্ছে। এগুলো এক-দুই দিনের জন্য আমাদের দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা প্রত্যেকদিন আসতে পারবো না। এটা হতে হবে ৩৬৫ দিনের জন্য। রোগীরা এখানে জিম্মি হয়ে থাকতে পারে না।”

    এখানকার খাবারের মানও ভালো না অভিযোগ করে সারজিস আলম বলেন, “রোগীরা যেদিন খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ দেয় তার পরদিন খাবার ভালো দেয়। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, এখানে যে খাবার দেওয়া হয় তা খাওয়া যায় না। আবার বাইরে থেকে কেউ খাবার নিয়ে গিয়ে খেতে চাইলেও নিতে দেয় না কর্তৃপক্ষ। এই দায় এখানকার ম্যানেজমেন্টের নিতে হবে। আমাদের কাছে এমনও অভিযোগ আছে, ১৫ দিনেও একজন চিকিৎসক রোগীকে দেখতে যায় না।”

    এসব বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান সারজিস আলম।

    সারজিস আলমের অভিযোগের বিষয়ে সিআরপিতে কর্মরত কয়েকজনের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা অপারগতা প্রকাশ করেন।

  14. মাসুদ করিম - ১৭ অক্টোবর ২০২৪ (৭:০৭ পূর্বাহ্ণ)

    The great wall of debt
    https://www.ft.com/content/0a1c4332-fbe3-4f49-9a11-007646ad21b1

    Given the pile of maturing financing, 2025 and 2026 will prove challenging years for investors
    Michael Howell

    The writer is managing director at Crossborder Capital and author of ‘Capital Wars: The Rise of Global Liquidity’

    If bull markets always climb a wall of worry, then financial crises often smash into a wall of debt. We are already walking into the foothills of another crisis. It is not just the growing size of the interest bill that matters, but more so the task of rolling over a pile of maturing debts. Next year and particularly 2026 will prove challenging years for investors.

    Consider how, over the coming months, stock prices will not only have to defy growing investor doubts about growth and inflation, but by late 2025 they will have to scale a sizeable maturity wall of debts. This term describes the bunching in the refinancing of those debts mostly taken out, a few years back, when interest rates were rock bottom. Similar refinancing tensions have helped trigger several past financial meltdowns such as the 1997-98 Asian crisis and the 2008-09 financial crisis.

    Tensions arise because debt grows ever upwards whereas liquidity is cyclical. History shows that financial stability requires a near-constant ratio between the stock of debt and the pool of liquidity. Too much debt relative to liquidity threatens refinancing crises as debts mature and cannot be rolled over. At the other extreme, too much liquidity leads to monetary inflation and asset price bubbles. It is important that policymakers steer a middle course.

    This is not the standard textbook argument, which still views capital markets primarily as new financing mechanisms for capital spending, whereas, under the current weight of world debt that is estimated by the Institute of International Finance to be $315tn in the first quarter, they have turned into huge debt refinancing systems.

    In a world dominated by debt refinancing, the size of the financial sector’s balance sheet capacity matters more than the level of interest rates. Roughly three in every four trades now made through financial markets simply refinance existing borrowings. For illustration, taking an average seven-year maturity, this means that a whopping near $50tn of existing global debt must be rolled over on average each year.

    This requires greater financial sector balance sheet capacity. Troublingly, this also demands ever larger volumes of global liquidity to grease the bearings.

    It is true that global liquidity — the flow of cash savings and credit through financial markets — has lately been rising strongly. The evidence is in the recent solid gains across riskier asset markets as well as the all-time records set for many stock markets and the gold price. Global liquidity has been fuelled by rising bank lending, underpinned by the improving value of collateral to that supports loans, and by a long list of central banks eager to ease monetary policy. Our latest estimates show a $16.1tn increase in global liquidity over the past 12 months and a more impressive $5.9tn jump since end-June to reach nearly $175tn: a pool roughly 1½ times global GDP. This equates to a seemingly healthy 15 per cent annualised expansion.

    Yet, looking ahead, the markets will demand even more liquidity to feed the rapacious appetite of debt. Since 1980, the ratio between advanced world debt and global liquidity has averaged 2.5 times, and in the crisis year 2008 it hit 2.9 times. It went on to peak during the Eurozone banking crisis in 2010-12. By 2027, it is likely to again exceed 2.7 times. More worryingly, by 2026 the maturity wall, which measures the size of the annual debt roll for the advanced economies alone, is likely to jump by nearly a fifth to over $33tn in absolute terms, or three times their annual spend on new capital expenditure.

    What can policymakers do to protect investors? In the short term, the answer is to explicitly manage liquidity conditions rather than simply tweak interest rates. This may be unfashionable because it takes us back to the days of the QE (quantitative easing) and QT (quantitative tightening) programmes by central banks to support economies. That runs the risk that overeager central bankers inflate ever larger asset bubbles. Nonetheless, given big and embedded government budget deficits, and given the recent shift, notably by US Treasury secretary Janet Yellen, towards funding these with short-dated bills and Treasury notes, we figure that the pool of global liquidity may need to expand at an annual 8-10 per cent clip. Put another way, at this growth rate its aggregate size will double every eight years.

    In the long term, the only solution is to reduce debt. With ageing populations demanding ever larger and often mandatory welfare outlays, this is a big ask for governments. But unless something more is done, the cost of the next bank bailout could make the 2008-09 rescue packages look like the lunch bill.

  15. মাসুদ করিম - ১৯ অক্টোবর ২০২৪ (১০:৪২ পূর্বাহ্ণ)

    Bangladesh power struggle: Yunus government wants President out, Army chief on radar
    https://www.indiatoday.in/opinion/story/dhaka-power-struggle-bangladesh-government-wants-president-out-army-chief-muhammad-yunus-2619448-2024-10-18

    The hurdle before the Muhammad Yunus government is that the President can’t be elected because the Hasina government collapsed and Parliament was dissolved.

    Intense power struggle continues to rage in Bangladesh even as it has just been a few months since the unceremonious ouster of former prime minister Sheikh Hasina. The interim government led by Muhammad Yunus is now exploring options to oust President Sahabuddin Chuppu after the Army Chief, General Waker-Uz-Zaman, made it clear that the three service chiefs will report to the President — the supreme commander of the armed forces.

    Top lawyers and constitutional experts have been roped in to explore how the President’s post can be filled legally if Shahabuddin Chuppu is forced to resign. “So far advice from legal eagles close to the advisors of the interim government has been negative on that issue,” a top government official said on the condition of anonymity.

    The hurdle before the Yunus government is that the President can’t be elected because the Hasina government collapsed and Parliament was dissolved. The provision to elect the President through an indirect election was introduced after the 12th Amendment to the Bangladesh Constitution under Article 48.

    Top military sources confirmed Zaman, right now on an official trip to the US, anticipated plans to remove him and decided to flex his muscles.

    Social media in Bangladesh is abuzz with reports of a verbal confrontation between military officers close to him and student leaders backing Yunus. Neither the Army nor the interim government has confirmed or denied these reports, lending grist to speculation of a possible civil-military confrontation in the making.

    Student groups, who piloted the mass upsurge leading to Hasina’s ouster in August, are now reportedly planning to hit the streets again to force the President to resign. President Chuppu has, however, made it clear he is determined to hold his ground and not give in to “unlawful pressure”.

    This time, the student groups who Yunus described as “masterminds” of the anti-Hasina upsurge, intend to bring down Chuppu in the same way they forced the Chief Justice of the Supreme Court and his appellate bench to resign. Judges who refused to resign were sent on leave by the new Chief Justice appointed by the interim government.

    “This is the weapon of orchestrated anarchy that the interim government has freely used to oust anyone seen as close to the Hasina government but who could not be ousted legally,” said Bangladesh expert Sabyasachi Basu Raychoudhuri.
    PRESIDENT: LAST VESTIGE OF AWAI GOVERNMENT

    The President is seen as the last vestige of the Awami League government because he was nominated by Hasina and elected with her blessings.

    Since the President administers the advisers of the interim government the oath of office, he cannot be constitutionally thrown out. And the army chief, who was also appointed by Hasina and is her relative, can only be legally removed by the President.

    The Army Chief invited the ire of Yunus and the student leaders after he pitched for elections within eighteen months. Informed sources said General Zaman has been pushing Yunus to announce a road map for holding elections.

    The Bangladesh Nationalist Party, which emerged as the front runner to win the polls after the Awami League, has also been pushing the Yunus administration to announce early elections.

    The Nobel laureate economist heading the interim government as chief adviser has avoided announcing any plans for elections and said he would do so only after enacting important reforms to address woes facing Bangladesh.

    Student groups and the Islamist organisations have given Yunus unstinted support because he has appointed many of their favourites in key positions.

    Jamaat-e-Islami, a leading radical group, had the ban on it lifted after Yunus took charge. It is now working to create a broader Islamist platform that could evolve into a political alternative independent of the Bangladesh Nationalist Party (BNP).

    Constitutional experts said reform is the prerogative of an elected parliament and the interim government should just focus on restoring law and order and then hold free and fair elections.

    In fact, Yunus and his council of advisors have taken an oath on the existing Bangladesh Constitution, which has no provision for an interim government. The provision for a caretaker government was done away with 14 years ago.

    Yunus critics are raising these issues, and he is especially unnerved by the pressure from the Army and the spectre of an “unfriendly” President.

    After Hasina’s ouster, the street power of the student groups, many closely aligned to Islamist radical groups like Jamaat-e-Islami and Hizb-ut-Tahrir, has been used ruthlessly to force the resignation of judges, bureaucrats and academic professionals — all in the name of a revolution to end the undemocratic Awami League regime.

    Meanwhile, the Yunus administration has gone after the Awami League with vengeance.

    At least 1,474 cases have been filed nationwide between August 6 and September 25 after the fall of Hasina’s government. Arrest warrants have been issued against Hasina and some of her former cabinet colleagues.

    Police sources say 92,486 people, including former prime minister Hasina, ex-ministers, political leaders, and police personnel, have been implicated in these cases, mostly for murder.

    While only 779 people were arrested between August 5 and September 25 in the July-August violence cases. The arrests have sharply gone up this month, with 7,018 individuals apprehended in the first week alone.

    Lawyers say most of these cases, especially those for alleged murder, would be difficult to prove, but they are good enough to keep the Awami Leaguers and others close to them on the run.

    (Subir Bhaumik, a former BBC and Reuters correspondent, has worked in Bangladesh as Senior Editor with Dhaka-based bdnews24.com)

  16. মাসুদ করিম - ২৩ অক্টোবর ২০২৪ (৩:০৮ অপরাহ্ণ)

    আসিফ, এটা সত্য নয়: ফরহাদ মজহার
    https://www.banglatribune.com/others/869204/%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%AB-%E0%A6%8F%E0%A6%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%A8%E0%A7%9F-%E0%A6%AB%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A6-%E0%A6%AE%E0%A6%9C%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0

    সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাক্ষাৎকারকে ঘিরে সোমবার (২১ অক্টোবর) দিনভর ব্যাখ্যা দিয়েছেন সরকারের উপদেষ্টারা। সেসবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র কেন রাষ্ট্রপতির কাছে থাকবে না এবং রাষ্ট্রপতি ঠিক কথা বলছেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনও করতে দেখা গেছে। দিন শেষে সোমবার রাতে শ্রম উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে উদ্দেশ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার। তিনি লিখেছেন, ‘উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া লিখেছেন, ‘‘রাষ্ট্রপতির কাছে মৌখিকভাবে পদত্যাগ করেছিল স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা। পদত্যাগপত্র নিয়ে বঙ্গভবনে যাওয়ার কথা থাকলেও ছাত্র-জনতা গণভবনের কাছাকাছি চলে এলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় খুনি হাসিনা।’’ ’

    তিনি লেখেন, ‘আসিফ, এটা সত্য নয়। মৌখিকভাবে পদত্যাগের কথা কখনোই বলা হয়নি। সবসময়ই রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যে জন্য আমি আমার একটি ভিডিওতে পদত্যাগপত্র দেখতে চেয়েছি। আপনারা তখন দেখাতে পারেননি। এখন কেন মৌখিক পদত্যাগপত্রের ভুয়া গল্প প্রচার করছেন?’

    ‘শুরু থেকেই আমরা বলেছি, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ নেওয়া ছিল আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কিন্তু আপনারা সেটাই করেছেন। আপনারা সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা সরকার বানিয়েছেন। বাস্তব সত্য স্বীকার করুন। এটা কি ঠিক করেছেন? আমার ভিডিওগুলো আবার শুনুন। পোস্টগুলো আবার পড়ুন।’ যোগ করেন ফরহাদ মজহার।

    উপদেষ্টা আসিফকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আমাদের কারও কথা শোনেননি। এমনকি কথা বলারও প্রয়োজন বোধ করেননি। আপনাদের অনেকে দাবি করেছেন, ট্রেন মিস হয়ে গেছে, এখন আর কিছু করা যাবে না। এটাও ঠিক নয়। অবশ্যই সমাধান আছে। এখন সমাধানের কথা আলোচনা না করে পদত্যাগপত্র নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।’

    এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং আপনাদের এখন ব্যাখ্যা করতে হবে কোন যুক্তিতে আপনারা গণঅভ্যুত্থানকে ফ্যাসিস্ট সংবিধানের অধীনে ঢুকিয়েছেন এবং সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লবে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। এখন যে ভয়াবহ রাজনৈতিক এবং আইনি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, সেই অবস্থা থেকে নিষ্ক্রান্ত হবেন কীভাবে? সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা সরকারতো এখনও অবৈধ। এর বৈধতা প্রতিষ্ঠার জন্য কী করছেন?’

    ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আসিফ নজরুলসহ আপনারা সেনাপ্রধান এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিযুক্ত সেনাবাহিনীর কিছু উচ্চপদস্থ অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে যে রাজনৈতিক আঁতাত গড়ে তুলেছিলেন, সেটা শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। এখন তা অনেক জটিল রূপ পরিগ্রহণ করেছে। শুধু তাই নয়, আপনারা সাধারণ সৈনিকদের দেশপ্রেম এবং গণঅভ্যুত্থানে তাদের অবদানকেও অস্বীকার করেছেন।’

    তিনি উল্লেখ করেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান ছিল ছাত্র-জনতা-সৈনিকদের অভ্যুত্থান। কিন্তু আপনারা সাধারণ সৈনিকদের অবদান অস্বীকার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিযুক্ত সেনাপ্রধানের সঙ্গে আঁতাত করেছেন। সাধারণ সৈনিকদের দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি আনুগত্যকে গণশক্তিতে রূপান্তরিত করার পরিবর্তে ফ্যাসিস্ট হাসিনার জেনারেলদের সঙ্গে আঁতাত করা কি ঠিক হয়েছে? আত্মসমালোচনা করতে শিখুন। আমরা বারবার এর সমালোচনা করেছি। তথাকথিত সাংবিধানিক শূন্যতা এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার নামে যেভাবে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা আপনারা টিকিয়ে রেখেছেন, তা আবার বিষধর সাপ হয়ে বাংলাদেশকে ছোবল মারতে উদ্যত। গণভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ব্যক্ত জনগণের অভিপ্রায়ের পূর্ণ বাস্তবায়নে আপনারা যে বিঘ্ন ঘটিয়েছেন, দয়া করে তা উপলব্ধি করুন। সমাধানের পথ খুঁজুন।’

    জনগণই শক্তির উৎস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আসুন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে নিষ্ক্রান্ত হওয়ার সঠিক রণনীতি ও রণকৌশল আমরা আগে নির্ণয় করি। মনে রাখবেন, জনগণই আমাদের শক্তির উৎস, জেনারেলরা নয়। জনগণের শক্তির মানে হচ্ছে ছাত্র-জনতা ও সৈনিকের মৈত্রী। এই মৈত্রীকে জোরদার করুন। জনগণের জয় হোক।’

  17. মাসুদ করিম - ২৪ অক্টোবর ২০২৪ (৩:০৫ অপরাহ্ণ)

    রাষ্ট্রব্যবস্থাই কি শাসনতন্ত্রের শেষ গন্তব্য
    https://bangla.bdnews24.com/opinion/7bbd76f156b0

    মানুষের বিবর্তন বা বিশ্বের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মানুষই তার নিজের প্রয়োজনে বিভিন্ন শাসনতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করেছে। আবার প্রয়োজনে ওই কাঠামো ভেঙেও ফেলেছে।

    বর্তমানে সারা পৃথিবীব্যাপী চলমান অরাজক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বহুমাত্রিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত বিদ্যমান। সকল রাষ্ট্রই জাতিসংঘ কর্তৃক সর্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাকে স্বীকৃতি দিলেও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সাম্রাজ্যবাদী অভিলাষ চরিতার্থ করতে গিয়ে অনেক রাষ্ট্র নিজেরাই দুনিয়ায় বিভিন্ন জায়গায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বা জোট শুধু অন্যদেশ বা জোটের সঙ্গেই যুদ্ধে লিপ্ত নয় বরং অনেক দেশের অভ্যন্তরেই জাতিগত বা ধর্মীয় সংঘাতে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এমতাবস্থায়, মানবাধিকার রক্ষায় এবং মানুষের সর্বজনীন কল্যাণে রাষ্ট্রব্যবস্থার সফলতা, ব্যর্থতা এবং এই ব্যবস্থার গন্তব্য নিয়ে আলোচনা জরুরি।

    আজ আমরা যে রাষ্ট্রব্যবস্থা দুনিয়াব্যাপী দেখতে পাচ্ছি, সেটা একদিনে তৈরি হয়নি। হাজার বছরের রাজনৈতিক বিবর্তনের সর্বশেষ অবস্থা হলো আজকের এই আধুনিক রাষ্ট্রের স্বরূপ। দুনিয়াজোড়া ১৯৫টি স্বাধীন দেশ ১৯৫ রকমের ভূখণ্ডভিত্তিক জাতীয়তা তৈরি করেছে। এই ভূখণ্ডভিত্তিক জাতীয়তার ধারণা শক্তিশালী হয়েছে জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণা থেকে। প্রাচীন আমল থেকেই সীমিত আকারে জাতীয়তাবাদ, জাতীয়তাবোধ এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকলেও, ভূখণ্ডভিত্তিক জাতীয়তাবাদ এবং সার্বভৌমত্বের ধারণা শক্তিশালী হয় ১৬৪৮ সালে যখন; ইউরোপে প্রোটেস্ট্যান্ট এবং ক্যাথলিক চার্চ প্রায় তিনশ বছরব্যাপী ধর্মযুদ্ধের পর একে অপরের সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়। ঐতিহাসিকভাবে এই চুক্তিটি ‘ট্রিটি অব ওয়েস্টফেলিয়া’ নামে পরিচিত। এই চুক্তির মূল বিষয় হলো, একে অপরের ভূমির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। একটি নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে সংশ্লিষ্ট শাসকশ্রেণি চূড়ান্তভাবে তার ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারবে। রাষ্ট্রে বা ভূখণ্ডে যুদ্ধাবস্থা ছাড়া রাষ্ট্রের এই ক্ষমতাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। এক কথায়, রাষ্ট্রের ক্ষমতা হলো চরম এবং চূড়ান্ত। এই ধারণাই রাষ্ট্রের বা ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব হিসেবে পরিচিতি পায়।

    ইউরোপে সতেরো শতকে আবির্ভূত হওয়া এই জাতীয়তাবাদী ধারণা তারা প্রথমে তত্ত্বগতভাবে গ্রহণ করে এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও গ্রহণ ও প্রয়োগ করে। এই তত্ত্বের সফল বাস্তবায়নের চূড়ান্ত রূপ হলো আধুনিক রাষ্ট্রসমূহ ও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব। ১৬৪৮ সালে স্বাক্ষরিত ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তির ফলে ইউরোপে ব্যাপকভিত্তিক ভূখণ্ডভিত্তিক জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণার উন্মেষ ঘটে। যদিও; মানুষের নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, দীর্ঘ সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, ধর্ম, রীতিনীতি এবং সমষ্টিগত মূল্যবোধ হলো জাতীয়তাবাদ ও জাতীয়তাবোধের মূল উপাদান বা ভিত্তি। কিন্তু, ভূখণ্ডভিত্তিক জাতীয়তাবাদে এই উপাদান এবং ভিত্তির চেয়েও রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের সীমানার গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। যদিও অনেক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে জাতিগত নৃ-তাত্ত্বিক পরিচয়, ধর্ম বা সংস্কৃতি বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। অনেক ক্ষেত্রে উগ্র জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণার কারণে নৃতাত্ত্বিক জাতিসত্তাসমূহ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো নিগ্রহের শিকার হয়েছে, কোথাও আবার চিরতরে বিনাশ হয়েছে। এখনো দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় বিরোধ, জাতিগত বিরোধ, রাষ্ট্রের সীমানা নিয়ে বিরোধসহ নানা বিরোধ চলমান।

    ইউরোপে জন্ম নেওয়া এই জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণা পরে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের জাতীয়তাবাদী নেতারা ধার করে নিয়ে আসেন বা ইউরোপীয়দের প্ররোচনায় স্থানীয়ভাবে এই ধ্যান-ধারণার রাজনৈতিক প্রয়োগ ঘটান। ফলস্বরূপ, বিভিন্ন উপনিবেশ এবং সাম্রাজ্য ভেঙে গিয়ে অনেকগুলো নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

    বর্তমান দুনিয়ায় বা বিশ্বব্যবস্থায় রাষ্ট্র যেমন শক্তিশালী হয়েছে তেমনি রাষ্ট্রব্যবস্থাপনার মধ্যে অনেক নতুন উপকরণ যোগ হয়েছে। যেমন আইন, শাসনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা ইত্যাদি। মানুষ রাষ্ট্র এবং জাতীয়তার ধারণা তৈরি করেছে ঠিকই, কিন্তু কিছুকাল পরে মানুষ আবার বুঝতে পেরেছে, শুধু নিজের রাষ্ট্রের মধ্যেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখলেই তার উদ্দেশ্য সাধিত হবে না। বিভিন্ন কারণেই বিশেষ করে, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং নিজের সৃষ্টি করা জ্ঞান বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে না পারলে কোথায় যেন অপূর্ণতা থেকেই যায়। তাই রাষ্ট্রসমূহ রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে থেকেই অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে একপ্রকার বাধ্য হয়েছে।

    বর্তমান রাষ্ট্র এবং বিশ্বব্যবস্থায় ‘বিশ্বায়ন’ অন্যতম শক্তিশালী তত্ত্ব। এই তত্ত্বটিকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলো বিশ্বব্যাপী প্রয়োগ করেছে মূলত নিজেদের পুঁজির বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণের মাধ্যমে মুনাফাকে সর্বোচ্চভাবে বাড়ানোর উদ্দেশ্যে। অন্যদিকে, গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে নিজের সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে।

    যদিও বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্যই হলো ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা। তথাপিও, এই বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে গিয়েই বিশ্বব্যাপী এক ধরনের নৃতাত্ত্বিক এবং সামাজিক বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে প্রতিনিয়তই। দুনিয়াব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিকাশের ফলে রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে থেকেই দুনিয়ার একপ্রান্তের মানুষের সঙ্গে অন্যপ্রান্তের মানুষের নিবিড় যোগাযোগ যেমন সৃষ্টি হয়েছে, তেমনই এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যান্য রাষ্ট্র এবং বাকি বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক বহুমাত্রিক রূপ ধারণ করেছে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে যেমন সাহায্য করছে, ঠিক একইভাবে বিশ্বের এক প্রান্তের মানুষের সঙ্গে অন্যপ্রান্তের বা অন্যদেশের মানুষের সম্পর্ক আরও দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে গেছে। এমতাবস্থায়, মানুষ নিজের সংস্কৃতি, বিশ্বাস, মূল্যবোধ অন্যের সঙ্গে শেয়ার করছে। একইভাবে, অন্যদেশের সংস্কৃতি, নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, জাতিগত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও জানতে পারছে।

    বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন নেতিবাচক দিক থাকলেও, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিছু অপার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে। যা নিয়ে নতুন সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ প্রয়োজন। যে বিষয়টি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে খুবই আলোড়িত করে সেটি হলো, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সঙ্গে আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হওয়ার ফলে মানুষ একদেশে থেকেও অন্যদেশের মানুষের সঙ্গে নিজের অনুভূতি, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, সংস্কৃতি শেয়ার করছে। মানুষের সঙ্গে মানুষের ভাষাগত দূরত্ব বা বোঝাপড়া ঘুচিয়ে দিচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আমরা কেউই এক দশক আগেও চিন্তা করতে পারতাম না যে, বাংলাদেশের কোনো এক ধানক্ষেতে বসে স্পেনের মাদ্রিদ শহরে বান্ধবীর সঙ্গে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে, ভাষাগত বোঝাপড়ার দূরত্ব ঘুচিয়ে পারস্পরিক অনুভূতি প্রকাশ করা যায় বা শেয়ার করা যায়! এই পারস্পরিক আদান-প্রদান অনেকসময় প্রেম বা ভালোবাসায় রূপ নিচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতেই আমেরিকা বা কানাডা বা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশে এসে পরস্পরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে। দুই জাতীয়তার মিলনের ফলে, নতুন সংকর জাতীয়তার জন্ম হচ্ছে। এই ঘটনা নেহায়েত কম নয়। ভিন্ন একটি দেশের মানুষের সঙ্গে পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়ার ফলে নতুন ধরনের সংকরায়ণ সৃষ্টি হচ্ছে। যদিও, দুনিয়ায় অনেক জায়গাতেই এই সংকরায়ণকে কটু দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে। সংরক্ষণবাদীরা এই প্রক্রিয়াকে মেনে নিতে পারছেন না। অনেক দেশেই পপুলিস্ট বা জনতুষ্টিবাদীরা শক্তিশালী হচ্ছে। যেমন জার্মানি, স্কটল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি। আবার অনেক দেশ আগে থেকেই জাতিগত সংরক্ষণশীলতা মেনে চলে। এরমধ্যে চীন, জাপান বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো অন্যতম।

    বিখ্যাত ফ্রেঞ্চ দার্শনিক রুশো বলেছিলেন, ‘man is born free but everywhere he is chained’ অর্থাৎ, ‘মানুষ স্বাধীন হয়ে জন্মগ্রহণ করে, কিন্তু সর্বত্রই সেই শৃঙ্খলিত।’ আবার সমাজবিজ্ঞানী আন্তেনিও গ্রামসি রাষ্ট্রের ধারণা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন, ‘রাষ্ট্র হলো এক ধরনের স্বীকৃতি’। অর্থাৎ, মানুষের জন্মের পরে যখন সে বুঝতে শেখে তখন তাকে রাষ্ট্র, সমাজ, কাঠামো ইত্যাদি বিষয়কে শিখিয়ে দেওয়া হয়। একটা মানুষ যখন দেখতে পায় অন্যসব মানুষ যখন এই ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, তখন সে নিজেও এই ব্যবস্থাকে নিরঙ্কুশভাবে স্বীকৃতি দিয়ে দেয়।

    এখন প্রশ্ন হলো, মানুষ কি এই রাষ্ট্রব্যবস্থাকেই তাদের শেষ শাসনতান্ত্রিক কাঠামো হিসেবে মেনে নেবে? নাকি অন্যকোনো ব্যবস্থার সূত্রপাত ঘটাবে? মানুষের বিবর্তন বা বিশ্বের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মানুষই তার নিজের প্রয়োজনে বিভিন্ন শাসনতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করেছে। আবার প্রয়োজনেই ওই কাঠামো ভেঙেও ফেলেছে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন জাগতে পারে, ‘মানুষ শক্তিশালী নাকি কাঠামো বা সিস্টেম বা রাষ্ট্র শক্তিশালী?’ এই প্রশ্নের সহজ এবং সাবলীল উত্তর হলো, নিশ্চিতভাবেই মানুষই বেশি শক্তিশালী। কারণ, রাষ্ট্র বা কাঠামো বা রীতিনীতি মানুষই তৈরি করেছে। কোনো রাষ্ট্রই নিজ থেকে কোনো আইন, নীতি, প্রথা, মূল্যবোধ, সংস্কৃতি তৈরি করতে পারে না। মানুষ নিজেই এগুলো তৈরি করে রাষ্ট্রের মধ্যে প্রয়োগ করে। এককথায়, রাষ্ট্র হলো এক প্রকার কাঠামোবাদী ধারণার নাম। যার মধ্যে মানুষই বিভিন্ন শাসনতান্ত্রিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক অনুষঙ্গ যোগ করে। সুতরাং, একথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, মানুষ ভবিষ্যতে নিজের প্রয়োজনে জুতসই এবং আরও আধুনিক নতুন কোনো ব্যবস্থার জন্ম দিতে পারে।

    রাজনৈতিক বাস্তববাদ এবং কাঠামোবাদী ধ্যান-ধারণার জায়গা থেকে রাষ্ট্রকাঠামো বা বর্তমান বিশ্বব্যবস্থার পক্ষে আপনি অনেক বক্তব্যই দিতে পারবেন। অথবা, এই ব্যবস্থা বা মতবাদকে শক্তিশালী করার জন্য অনেক পদক্ষেপই নিতে পারবেন। কিন্তু, সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এবং শাসনব্যবস্থা ও রাষ্ট্রব্যবস্থার রাজনৈতিক বিবর্তন পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবেন, আসলেই তাত্ত্বিক এবং রাজনৈতিক বিবর্তনের কোনো শেষ গন্তব্য নেই।

    রাজনৈতিক এবং শাসনতান্ত্রিক বিবর্তন খুঁজতে আপনাকে খুব বেশি দূরে যেতে হবে না। আপনি আজকের বাংলাদেশের দিকে তাকালেই দেখতে পাবেন, ১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্টের আগ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে তিনবার ভূখণ্ডগত বিবর্তন ঘটেছে। একইসঙ্গে তিনবার নাগরিকত্বের বিবর্তন ঘটেছে। আজকের একই বাংলাদেশের মানুষ ১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্টের আগ পর্যন্ত ছিল ব্রিটিশ ভারতের নাগরিক, ১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্ট থেকে ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল পাকিস্তানের নাগরিক এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে আজ অব্দি বাংলাদেশের নাগরিক।

    বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রব্যবস্থা, সার্বভৌমত্ব, সীমানা, জাতীয়তা, নিরাপত্তা এই বিষয়গুলোর গুরুত্ব এবং প্র্যাকটিস আগেকার যেকোনো সময়ের চেয়েও শক্তিশালী হয়েছে। একইভাবে, জাতীয়তার আত্মপরিচয়ের অহমিকা ভুলে গিয়ে মানুষ সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় নিজের ডেরা সাজাতে শুরু করেছে। যেহেতু, এই রূপান্তর প্রতিনিয়ত ঘটছে সেহেতু এই সংকরায়ণের ধারাকে সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের নতুন ডিসকোর্স হিসেবে বিবেচনায় নিতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সংকরায়ণকে খুবই ইতিবাচকভাবেই দেখি। আমি মনে করি মানুষ যখন কোনো জ্ঞান বা সামর্থ্য বা শক্তি অর্জন করে, ওই জ্ঞান সামর্থ্য বা শক্তির উপযোগ বিশ্বের সকল প্রান্তের মানুষের জন্য উন্মুক্ত হতে হবে। তাহলে, পৃথিবীটা আরও সুন্দর হতে পারে।

    রাষ্ট্র নিজেই একটা কাঠামো। কিন্তু, এই কাঠামোর প্রধান উপাদানই আসলে মানুষ। খুব ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন, রাষ্ট্রের মূল স্পিরিট সর্বজনীন কল্যাণের জন্য হলেও, যখনই পুঁজিবাদকে রাষ্ট্রের চালিকাশক্তির উপাদান হিসেবে যোগ করা হয়েছে, সেখানে রাষ্ট্র ইচ্ছা করলেই পুঁজিপতি এলিটদের পাশ কাটিয়ে সর্বজনীন জনহিতৈষীরূপে আত্মপ্রকাশ করতে পারে না। অনেক সময় রাষ্ট্র নিজেই বড় পুঁজিবাদী রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের পুঁজির দাসত্ব মেনে নিতে বাধ্য হয়।

    আজকের দুনিয়ায় রাষ্ট্রসমূহ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, মানুষের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তা, সীমানার নিরাপত্তার নামে কত আয়োজন সম্পন্ন করে চলেছে! যেখানে, অন্য কোনো দেশকে বা রাষ্ট্রকে কল্পিত শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কত বোমা, গুলি, বোমারু বিমান, ফ্রিগেডসহ নানা যুদ্ধ উপকরণ তৈরি করে চলেছে। সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলো কমবেশি একই কাজই করতে থাকে তথাকথিত নিরাপত্তা ঝুঁকির অজুহাতে। যার ফলস্বরূপ, রাষ্ট্রসমূহ নীরবে নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংস করার দিকে ধাবিত করে। মানুষের মনে রাখা দরকার, রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে গেলে রাষ্ট্রের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। যা ক্ষতি হবার সেটা মানুষেরই হবে।

    বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র এবং মানুষের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক তৈরিতে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইতিবাচক ভূমিকা রাখলেও, অনেকসময়; এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়ানো হয়। অনেক ধরনের সাইবার অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। অনেকসময়, ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং সন্ত্রাসবাদকে প্রসারিত করা হয় এবং উসকে দেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অনেক ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া এবং প্রভাবের পাশাপাশি, রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রের জনগণের ওপর এবং জাতীয়তার ঊর্ধ্বে উঠে বিশ্বব্যাপী মানুষে-মানুষে সম্পর্ক তৈরিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যে ইতিবাচক ভূমিকা এবং প্রভাব রেখে চলেছে, সেটিকেই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই বিবেচনায় নিতে চাই।

    দুনিয়াব্যাপী মানুষে-মানুষে মিলন এবং ভালোবাসা প্রতিষ্ঠাই মানুষকে কৃত্রিম আরোপিত অবৈজ্ঞানিক নিরাপত্তাবোধের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আনতে পারে। বিশ্বব্যাপী মানুষের পরস্পরের সঙ্গে মিশে যাওয়ার এই প্রবণতা মানুষের সর্বজনীন কল্যাণের অন্যতম নিয়ামক হতে পারে। এই প্রক্রিয়া যত জোরালোভাবে সম্পন্ন হবে, ততই মঙ্গল। বিভিন্ন সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং চিন্তার ধরন একত্রে মিলে গিয়ে বহুমাত্রিক এবং ভিন্নমাত্রার সমষ্টিগত নতুন মূল্যবোধের বিকাশ ঘটতে পারে। এই চিন্তাধারার দুনিয়া হয়তো খুব বেশি দূরে নেই। যখন রাষ্ট্রসমূহ দেখতে পাবে, যে নাগরিকের জন্য তার এত আয়োজন, ওই নাগরিকেরাই রাষ্ট্রের এই কাঠামোগত ভূমিকাকে তোয়াক্কা করে না, কোনো আরোপিত বাধ্যবাধকতা মেনে নেয় না। ঠিক তখনই রাষ্ট্রের ভূমিকার চেয়ে মানুষের ভূমিকাই মুখ্য হয়ে দাঁড়াবে।

    মানুষ যত দ্রুত রাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে বা রাষ্ট্রের জাতীয়তাকে গৌণ মনে করে মানুষে-মানুষে মিশে যাবে, তত তাড়াতাড়িই মানুষের ওপর থেকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ কমতে শুরু করবে। লাখ লাখ বা কোটি কোটি মানুষ অন্যায্য যুদ্ধ এড়াতে সক্ষম হবে। কোটি মানুষের প্রাণ রক্ষা পাবে। অনেকে মনে করতে পারেন, এই ধারণা একটা কল্পিত ফ্যান্টাসি। তবে, নতুন চিন্তার কল্পিত ফ্যান্টাসিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চিন্তা বা কল্পনা করার শক্তিই নতুন কিছু সৃষ্টি হওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ।

  18. মাসুদ করিম - ২৪ অক্টোবর ২০২৪ (৩:০৭ অপরাহ্ণ)

    জাতির কী রূপ?
    https://samakal.com/opinion/article/261814/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A7%80-%E0%A6%B0%E0%A7%82%E0%A6%AA-

    শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ‘জাতির পিতা’ কিনা, তা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত সম্প্রতি জমে উঠেছে। এ বিতর্ক করার জন্য উপযুক্ত সময় এখন কিনা– সে প্রশ্নও কেউ কেউ তুলেছেন। তাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলা যায়, এ বিতর্ক উঠতই। বিমূর্ত স্তরে ‘জাতির পিতা’ ধারণার পিতৃতান্ত্রিকতা উপেক্ষা করার উপায় নাই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় অন্যান্য ঐতিহাসিক চরিত্রের অবদান অস্বীকার করে বিশেষ একজন ব্যক্তিকে ‘জাতির পিতা’ বানানোর ভাবাদর্শিক তাৎপর্যও উপেক্ষা করা যায় না।
    পূর্ব বাংলা থেকে ক্রমে বাংলাদেশ নামে আবির্ভূত এ ভূখণ্ডের ইতিহাসে শেখ মুজিবুর রহমান গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চরিত্র। তাঁর ঐতিহাসিক অবদান অস্বীকার বা খাটো করার সুযোগ নাই। স্বাধীন বাংলাদেশে মুজিব শাসনামল সম্পর্কে ঐতিহাসিক মূল্যায়নেরও বিকল্প নাই।

    আসলে কোনো ‘জাতি’র একক ‘পিতা’ থাকতে পারে কি? সাম্প্রতিক বিতর্কে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফাউন্ডিং ফাদারস’ ধারণার নজির টেনেছেন। ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের অবদান আনুষ্ঠানিকভাবে যদি স্বীকার করতেই হয়, ফাউন্ডার্স তথা স্থপতি ধারণার শরণাপন্ন হওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে একজন নয়, কয়েকজন স্থপতির কথা ভাবতে হবে।

    ‘জাতির পিতা’ ধারণার সমস্যা উপলব্ধির আগে খোদ ‘জাতি’ ধারণার সংকট উপলব্ধি করা প্রয়োজন। ইংরেজি ‘নেশন’ শব্দের বাংলা হিসেবে আমরা ‘জাতি’ শব্দটি গ্রহণ করেছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মনে করেন ‘নেশন’ শব্দের বাংলা হওয়া উচিত নয়; কারণ আমাদের সামষ্টিক জীবন নেশনকেন্দ্রিক নয়, সমাজভিত্তিক। বাংলায় ভাষায় ‘জাতি’ বা ‘জাত’ শব্দের অর্থও অনেক রকম– ঠিক রাষ্ট্রবাদী নয়; বাঙালি জাতি, নারী জাতি, পশু জাতি ইত্যাদি। তবু নেশন-স্টেটের বাংলা জাতিরাষ্ট্র, আর নেশনের বাংলা হিসেবে জাতি টিকে গেছে। রবীন্দ্রনাথের নোক্তা পাত্তা পায় নাই। পেলে ভালো হতো। তাঁর অবস্থানটাই সঠিক ছিল।

    নেশন-স্টেট ইউরোপের বিশেষ ইতিহাসের ফসল। নিজেদের মধ্যে অনেক মারামারি-কাটাকাটি করে পাশ্চাত্য উপলব্ধি করে, এবার ‘সভ্য’ হওয়া দরকার। তারা সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিটি নেশনের একটা স্টেট থাকতে থাকবে। খ্রিষ্টানদের অন্তঃধর্মীয় বিবাদে ১৭ শতকের ইউরোপ টালমাটাল ছিল। ক্যাথলিক ও প্রটেস্টান্টরা পরস্পরের বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ৩০ বছরের (১৬১৮-৪৮) ধর্মযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সাব্যস্ত হয়– ‘রাজার ধর্মই হবে প্রজার ধর্ম’। ক্যাথলিক রাজত্বে প্রজার ধর্ম ক্যাথলিক; আর প্রটেস্টান্ট রাজত্বে প্রজার ধর্মমত প্রটেস্টান্ট। এই দফারফা ইতিহাসে ‘ওয়েস্টফালিয়ার সন্ধি’ হিসেবে পরিচিত। এর ফলে ধর্মের দিক থেকে রাজত্বগুলো একবাদী হয়ে উঠেছিল। ধর্মযুদ্ধে বিধর্মীনাশের মাধ্যমে ইউরোপে এক অদ্ভুত সাম্প্রদায়িক ‘শুদ্ধতা’ অর্জিত হয়েছিল। আশ্চর্য নয়; পরবর্তীকালের ইউরোপে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে স্বাধিকার চেতনা যত বেড়েছে, এই একবাদী জাতীয়তাবাদের সঙ্গে বহুত্ববাদী ধ্যান-ধারণার সংঘাত তীব্রতর হয়েছে।

    এক অর্থে, আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ‘এক জাতি এক ধর্ম এক ভাষা এক রক্ত’ কিসিমের বর্ণবাদী ধারণার সঙ্গে বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক চেতনার সংগ্রামেরই ইতিহাস। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সুদীপ্ত কবিরাজ মন্তব্য করেছেন: ‘দেখানো হয় যে ইয়োরোপীয় মানব ক্রমশই একটা থেকে আরেকটা মুক্তির দিকে লম্ফ দিয়ে বাকি পৃথিবীকে পথ দেখাচ্ছে। একটু খতিয়ে দেখলেই দেখা যায় সেই ইতিহাস যে কেবল শ্রেণিবিদ্বেষের এবং শোষণের ওপরে প্রতিষ্ঠিত তাই নয়, নিজের অস্মিতা ছাড়া সে অন্য সব অস্মিতাকেই অবমাননা এবং হিংসা করে এসেছে। এবং তাই পাশ্চাত্যের আধুনিক ইতিহাস মানবিক ভ্রাতৃত্বের ইতিবৃত্ত নয়, প্রত্যেক জাতির অন্য জাতির বিরুদ্ধে হিংসার ও যুদ্ধের রক্তাক্ত ইতিহাস।’ (অ-জাতীয়, সুদীপ্ত কবিরাজ, রাষ্ট্রচিন্তা জার্নাল, ত্রয়োদশ সংখ্যা)

    প্রচলিত কাণ্ডজ্ঞান অনুযায়ী ‘জাতি’ ধারণা আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে ইউরোপ তার ধর্ম প্রশ্নের মীমাংসা করেছে বলে মনে করা হয়। আসলে ব্যাপার হচ্ছে, ইউরোপের ‘জাতি ধারণা’র সঙ্গে (খ্রিষ্ট) ধর্মের যোগাযোগ ও আঁতাত গভীর। কারা এক ও অভিন্ন ‘জাতি’– এই প্রশ্নের মীমাংসা করতে গিয়ে আধুনিক ইউরোপ সাব্যস্ত করেছে যে, যারা ভাষা, ধর্ম ও রক্তের দিক থেকে ‘এক ও অভিন্ন’, তারাই একীভূত জাতি। অর্থাৎ ইউরোপের জাতি ধারণা ‘মধ্যযুগীয়’ ধর্মের প্রতিবিধান তো নয়ই; বরং ধর্ম, ভাষা ও তথাকথিত অমিশ্রিত রক্তই ইউরোপের আধুনিক জাতিবাদী ধ্যান-ধারণার গাঠনিক উপাদান হিসেবে রয়ে গেছে। একই রক্তের অধিকারী অভিন্ন ভাষিক ও ধর্মীয় গোষ্ঠী নির্দিষ্ট ভূমিতে ‘জাতিরাষ্ট্র’ কায়েম করবে– এমন ধ্যান-ধারণা উপনিবেশবিরোধী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়েও স্বাভাবিক মডেল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এই কাণ্ডজ্ঞান অনুযায়ী রাষ্ট্র মানেই জাতিরাষ্ট্র। বলা বাহুল্য, সাম্প্রদায়িক ও বর্ণবাদী এই (জাতি) রাষ্ট্রতত্ত্ব আধুনিক জমানার সব সংকটের মূলে। আধুনিক জাতিবাদের সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদের সম্পর্কও অত্যন্ত গভীর।

    ‘জাতি’ ধারণার বলেই ইউরোপ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। অভিন্ন ধর্ম-ভাষা-রক্তের বলে বলীয়ান কোনো ‘জাতি’ তথা সংগঠিত ইউরোপীয় লোকশক্তি পরদেশ আক্রমণ ও দখল করেছে। উপনিবেশিত অঞ্চল আকারে ও জনসংখ্যায় অনেক ক্ষেত্রেই ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তির তুলনায় বড় হলেও, তারা শুরুর দিকে উপনিবেশের যৌক্তিক বিরোধিতা করতে পারে নাই জাতি বা জনগণ ধারণার অভাবে।

    উপনিবেশিত অঞ্চলের বুদ্ধিজীবীরা শুরুর দিকে ঠিক এ কারণেই উপনিবেশের পক্ষাবলম্বন করেছিলেন। এমন নয় যে, তারা স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন। কিন্তু কেন স্বাধীনতা? কার জন্য স্বাধীনতা? আমরা কি স্বাধীনতার উপযুক্ত হয়ে উঠেছি?– এই ছিল প্রধান তর্ক। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, কেবল স্বাধীনতা চাইলেই হবে না। চাওয়ার আগে ‘জাতি/জনগণ’ হয়ে উঠতে হবে। আবার ইউরোপীয় জাতিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পদানত অঞ্চলে ক্রমশ জাতীয় মুক্তির চেতনা তৈরি হওয়াতে উপনিবেশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম সূচিত হয়েছে।

    যে যুক্তিতে ইউরোপ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলকে দখলে নিয়েছে, সেই একই যুক্তিতে উপনিবেশিত অঞ্চলের মানুষ বিংশ শতাব্দীতে উপনিবেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে তথা নিজেদের জাতি/জনগণ ঘোষণা করেছে। একই রক্তের অধিকারী জনগোষ্ঠী একটি ‘নেশন’ এবং তারাই একটি রাষ্ট্র গঠনের অধিকারী– এটাই আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের গোড়ার অনুমান।

    ‘নেশন’ শব্দ এসেছে লাতিন ‘নেশিও’ শব্দ থেকে; অর্থ জন্মসূত্রে একই সম্প্রদায়। অর্থাৎ জাতিরাষ্ট্রের সদস্যরা জন্মের সূত্রে সম্বন্ধিত, এ-ই হচ্ছে অনুমান। আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের সব বর্ণবাদ ও অপরায়নের শিকড় এর মধ্যে নিহিত।

    ইউরোপের অতীত দেখে আমাদের ভবিষ্যৎ চিনতে হবে– এ কথা আজকাল পাঁড় প্রাচ্যবাদীরাও বলার স্পর্ধা দেখান না। পার্টিশনের কালে সাম্রাজ্যবাদী ইউরোপের অভিজ্ঞতা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষাকে ‘সর্বজনীন’ ভেবে বহু ধর্ম বহু জাতি বহু ভাষার ভারতবর্ষকে দুই জাতিতে বিভক্ত করেছি আমরা। ধরে নেওয়া হয়েছিল, রাষ্ট্র মানেই জাতিরাষ্ট্র।

    আধুনিক রাষ্ট্রতত্ত্বের ইতিহাসে বিঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রাচ্য থেকেই উঠতে থাকবে। অধুনা দার্শনিক ও রাষ্ট্রতাত্ত্বিকরা বলছেন– তন্মধ্যে ওয়াল্টার মিনালু, মাহমুদ মামদানি, সুদীপ্ত কবিরাজ, ফরহাদ মজহার উল্লেখযোগ্য– রাষ্ট্র মানেই জাতির রাষ্ট্র হতে হবে, এমন কোনো দিব্যি নাই। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে গঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে জাতি ও রাষ্ট্রের আবশ্যিক যোগসাজশ অপ্রয়োজনীয়। এ কারণেই ফরহাদ মজহারের রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী, মাহমুদ মামদানির বিউপনিবেশিত রাজনৈতিক সম্প্রদায়, সুদীপ্ত কবিরাজের অ-জাতিবাদী রাষ্ট্র ধারণা ‘জাতিরাষ্ট্র’ ধারণার বিরুদ্ধে শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রস্তাব হিসেবে হাজির আছে। কোনো রক্তবাদী ও জাতিবাদী রাষ্ট্রকল্পকে সমর্থন করার সুযোগ নাই।

    গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী নিজেদের জন্য সুসংহত রাষ্ট্র গড়ে তুলবে, এটাই আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকল্প। এ ধরনের রাষ্ট্রে ‘মেজরিটি’ হবে অস্থায়ী ও রাজনৈতিক মেজরিটি তথা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ফলাফল; স্থায়ী, অনড় কোনো সূচনাবিন্দু নয়। জাতিরাষ্ট্রে মেজরিটি ও মাইনরিটি উভয়ই স্থায়ী, অনড় এবং ধর্ম বা ভাষার দিক থেকে ধাতবাদী। অ-জাতিবাদী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মেজরিটি ও মাইনরিটি উভয়ই অস্থায়ী, পরিবর্তনশীল ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ফসল। কাজেই ‘জাতি’ ধারণার বিপরীতে ‘রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী’ বর্গটির চর্চা ও প্রয়োগ অধিকতর গণতান্ত্রিক।

  19. মাসুদ করিম - ২৪ অক্টোবর ২০২৪ (৩:১১ অপরাহ্ণ)

    মামলা উঠেছে, বাধা এখনো সরেনি: তৌফিক ইমরোজ খালিদী
    https://bangla.bdnews24.com/%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE/7ce2765acc3b

    “কিছু প্রভাবশালী রাজনীতিক, অত্যন্ত ক্ষমতাশালী দুর্বৃত্ত প্রকৃতির ব্যবসায়ী, তারা এই কাজগুলো করেছেন। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, তাদের লোকেরা এখনও সক্রিয়।”

    পাঁচ বছর ‘হয়রানির’ পর দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা প্রত্যাহার করে নিলেও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এগিয়ে চলার পথকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা যে রয়ে গেছে, সে অভিযোগ সামনে এনেছেন দেশের শীর্ষ এ সংবাদমাধ্যমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

    তিনি বলেছেন, মামলা উঠেছে ঠিক, কিন্তু মামলার বিভিন্ন অভিযোগের সূত্র ধরে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে (আরজেএসসি) বিনিয়োগের শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়া এখনো আটকে রাখা হয়েছে।

    বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অষ্টাদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন বুধবার এই দীর্ঘ পথচলার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ রাজনীতিবিদ ও ‘দুর্বৃত্ত প্রকৃতির’ ব্যবসায়ীদের চাপ, সেই সঙ্গে পদে পদে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঘটনাগুলো বর্ণনা করেন তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

    ২০১৯ সালের অক্টোবরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ। এরপর তৎপর হয়ে ওঠে একটি মহল।

    বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন শেয়ার হস্তান্তর আটকে দেয়, বিনিয়োগের অর্থ স্থানান্তরে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মামলা করে দুদক। নানাভাবে চাপ দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শ্বাসরোধ করার মত পরিস্থিতি তৈরি করা হয়।

    শেষ পর্যন্ত এ বছর সেপ্টেম্বরে সেই মামলা প্রত্যাহার করে দুদক। কিন্তু হয়রানির অবসান যে পুরোপুরি হয়নি, সে কথা তুলে ধরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক বলেন, “পাঁচ বছর আগের বিনিয়োগের সেই শেয়ার হস্তান্তরের নিবন্ধন এখনো করেনি যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) ।”

    তিনি বলেন, যেদিন বিনিয়োগ নেওয়া হয়েছে, সেদিনই কত টাকার বিনিয়োগ, কোন উদ্দেশ্যে নেওয়া– সব প্রকাশ করা হয়েছিল।

    “সেদিনই সম্ভবত ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বৈঠক করে সেই বিনিয়োগ বন্ধ করবার জন্য আরজেএসসিকে চিঠি দেয়, চিঠি দিয়ে বলা হয় যেন নিবন্ধন না করা হয়। সেই নিবন্ধনের আনুষ্ঠানিকতা এখনও শেষ করা হয়নি।”

    দুর্নীতির মামলা দিয়ে পাঁচ বছর ধরে হেনস্তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে খালিদী বলেন, “দুদকের একজন কমিশনারের বক্তব্য, তার মেয়াদে সবচেয়ে ন্যক্কারজনক কাজ করতে তারা বাধ্য হয়েছেন আমার বিরুদ্ধে। বহু কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন, এর চেয়ে বাজে কাজ খুব একটা তাদের করতে হয়নি। এত বড় অন্যায়।

    “যে আইনজীবী আমার বিরুদ্ধে নর্তনকুর্দন করতেন, সেই আইনজীবী করজোড়ে বলেছেন, এসব মিথ্যা ছিল, মামলা দাঁড়ায় না, মামলা তুলে নেওয়া হোক। মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু আরজেএসসিতে আমাদের নিবন্ধন এখনও করা হয় নাই।”

    এর পেছনে ‘দুর্বৃত্ত প্রকৃতির ব্যবসায়ীদের’ পক্ষে অতীতে কাজ ব্যক্তিরা জড়িত থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক।

    তিনি বলেন, “ওই দুর্বৃত্ত প্রকৃতির ব্যবসায়ীরা এবং তাদের পক্ষে যারা কাজ করতেন বিভিন্ন রেগুলেটরি কমিশনে, (ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর) উপরের দিকে কিছু পরিবর্তন হলেও বাকিটা রয়ে গেছে।

    “এবং তাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য গোয়েন্দা সংস্থার চাপের মুখে পড়ে যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, সেই সাক্ষ্যের ভিত্তিতে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছিল, সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমাদের সাথে আবার ঝামেলা করার চেষ্টা করা হয়েছে।”

    খালিদী বলেন, বিনিয়োগকারী কোম্পানি কোথায় কী করেছে সেটা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের দেখার বিষয় নয়। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ‘অসততা, অন্যায় বা এমন কোনো কিছু করা হয়নি’।

    “একটি কোম্পানিকে বাধ্য করা হয়েছে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য। তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে। সেই মিথ্যা সাক্ষ্যের ভিত্তিতে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, সেটা দিয়ে আমাদের সমস্যা সৃষ্টি করা হয়েছে।”

    অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, নেপথ্যে কারা কোথায় কীভাবে কাজ করেছে, তার অনেক কিছুই তিনি জানতে পেরেছেন।

    সেই বিনিয়োগের আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মূল কোম্পানির ভ্যালুয়েশন করার পরও ‘মিথ্যা সাক্ষ্য’ দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশ্ন তোলেন প্রধান সম্পাদক।

    ওই কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদ থেকে সরলেও তার উত্তরসূরীরা একই কায়দায় ‘মিথ্যা কথা বলে গেছে’ বলে অভিযোগ করেন তিনি।

    খালিদী বলেন, “এখনকার ডিজিটালাইজড ব্যবসায় পরিবেশে ব্যাংক থেকে ইমেইল করে বলা হয়, এর উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নাই। সেখানে স্বাক্ষরেরও প্রয়োজন নাই। এটি একটি অটোজেনারেটেড চিঠি..

    “সেখানে অফিসিয়াল ইমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অফিসের ইমেইল অ্যাকাউন্টে (তথ্য) পাঠানোর মাধ্যমে যে যোগাযোগ হয়েছে, মেইল চালাচালি হয়েছে- সেটাকে অস্বীকার করা হয়েছে। তারপর দ্বিতীয় দফায় আরেকটি কোম্পানি তাদের নিজস্ব লোকবল দিয়ে মূল্যায়ন করেছে, সেটাকে অস্বীকার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সেখানে কারও স্বাক্ষর ছিল না। তাহলে ইমেইলগুলো কী?”

    দুদক ও বিএসইসির যৌথ তদন্ত কমিটি করে প্রতিবেদন তৈরি করা হলেও তখনকার এসইসি চেয়ারম্যান সেটা ‘কিছুতেই দিতে চাননি’ বলে অভিযোগ করেন তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

    পরে সেই চিঠি অন্য মাধ্যমে হাতে পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “দেখা গেল ‘সবই মিথ্যে’। সেটা এখনও ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

    “এর একটাই ব্যাখ্যা, একটাই কারণ হতে পারে, একটাই যুক্তি হতে পারে- ওইসব দুর্বৃত্ত ব্যবসায়ী, যাদের বিরুদ্ধে আমার সহকর্মীরা প্রতিবেদন করেছিল, তাদের লোকজন এখনও এসব কমিশনে আছে। হয় তারা এটা করিয়েছে, বা নতুন যারা এসেছে তারা এত অদক্ষ, অযোগ্য- একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ভ্যালুয়েশন কীভাবে করা হয়, সেটা নিয়ে কোনো জ্ঞান নেই।”

    বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক বলেন, “এসব লোকজন দিয়ে পরিবর্তন হবে না। আপনি অন্যায় এবং অবিচারের প্রতিকার করতে পারবেন না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার কথাতো বলা হচ্ছে।… আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে, অন্তত আমাদের এই ক্ষেত্রে।”

    তিনি বলেন, চাপে পড়ে বা স্বেচ্ছায় যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাদেরকে জবাবদিহির মুখোমুখি করতে হবে।

    মামলা প্রত্যাহারের পর বিনিয়োগ আটকে রাখার ক্ষতিপূরণ কে দেবে, সেই প্রশ্নও তোলেন খালিদী।

    তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যদি একটা সভ্য দেশ হত, আইনের শাসনের দেশ হত, তাহলে রাষ্ট্রই ক্ষতিপূরণ দিত। কারণ, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো জড়িত ছিল। দুর্নীতি দমন কমিশন জড়িত ছিল, বিএসইসি জড়িত ছিল। বাংলাদেশের দুই-তিনটা গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত ছিল।

    “তাদের একটির (গোয়েন্দা সংস্থা) কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার হাসনাত তিনি আমাদের নাম বলে দিয়ে মন্ত্রীদেরকে বলতেন, আমাদেরকে যেন লাইসেন্স না দেওয়া হয়। সেই অফিসার এখনও চাকরিতে আছেন, তার চাকরি গেছে বলে আমার জানা নাই। যদিও তার মতো অফিসারের কোর্ট মার্শাল করা উচিত।”

    এ ধরনের কর্মকাণ্ড যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, সে কথা তুলে ধরে খালিদী বলেন, “ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে, মানুষের কাছে। ব্যক্তিগতভাবে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানকে হেয় করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের সাংবাদিকদেরকে কাজকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হয়েছে।

    “(বিনিয়োগের) টাকাগুলো তখন যদি আমরা ব্যবহার করতে পারতাম, ওই সময়ে বিনিয়োগ করতে পারতাম, যে কাজগুলো আমরা করতে পারতাম, ফলাফল যেটা আসত, অর্থনৈতিক হোক বা সাংবাদিকতার দিক থেকে হোক… একটা নিউজ পাবলিশিং কোম্পানিতে বটমলাইন সবসময় টাকা না, মুনাফা না; ভালো সাংবাদিকতাটা হচ্ছে বটমলাইন।”

    এলআর গ্লোবালের আগে নিউ ইয়র্কভিত্তিক একটি বড় ফাউন্ডেশন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল জানিয়ে প্রধান সম্পাদক বলেন, “আমাদেরকে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল, সিদ্ধান্তও নিয়েছিল- পরে তাদের বোর্ড বাংলাদেশকে দেশ হিসাবে বিনিয়োগ করতে রাজি হয়নি, কোম্পানি হিসাবে আমাদেরকে বাছাই করেছিল।

    “সেই একই ভ্যালুয়েশনের ভিত্তিতে। এবং তখন কিন্তু তাদেরকেও (ভ্যালুয়েশনকারী কোম্পানি) আমরা কপিতে রেখেছিলাম। আরেকটি বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তখনও কিন্তু তাদেরকে (ভ্যালুয়েশনকারী কোম্পানি) এটা জানানো হয়েছিল। তাদের সিইও বলেছিল, ‘প্রয়োজন হলে আমিও বৈঠকে থাকব’।”

    তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, এলআর গ্লোবাল পরে নিজস্ব ভ্যালুয়েশনের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করে।

    পাঁচ বছর ধরে প্রকাশ্যে হয়রানি করার আগে থেকেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের রাজস্ব আয় নষ্ট করার জন্য ‘প্রচার চালানোর’ অভিযোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, “সেই কারণে দুর্বল অবস্থানের সুযোগ বিনিয়োগকারী কোম্পানিও নিয়েছিল। যে ভ্যালুয়েশন হয়েছিল, তার এক-তৃতীয়াংশ মূল্যে আমাদেরকে শেয়ার হস্তান্তর করতে হয়েছিল। যদিও আনুষ্ঠানিক হস্তান্তরের সেই প্রক্রিয়া এখনও শেষ করেনি। কারণ, ওই যে এসইসি থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল– ‘এটা করা যাবে না’।

    বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের দিক থেকে কোনো অনিয়ম বা আইন ভাঙা হয়নি। আইন কেউ ভাঙলে ‘অন্য কেউ’ ভেঙেছে।

    “এটা দেখার দায়িত্ব রেগুলেটরের, এক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কিন্তু আমাদেরকে রেগুলেট করে না (যেহেতু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি, পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি নয়), অন্যদেরকে করে।

    “তারপরও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সব ধরনের বিধি, নিয়মকানুন ভেঙে আমাদেরকে চিঠি দিয়ে বলেছে, টাকা ফেরত দিতে হবে। আমরা হাই কোর্টে গিয়েছিলাম, কোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে।”

    এত প্রতিকূলতার মধ্যেও বিচারব্যবস্থা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ‘অনেক কিছু থেকে রক্ষা’ করেছে বলে মন্তব্য করেন খালিদী।

    এখনকার পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেখেন কি না, সেই প্রশ্নে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক বলেন, “আমরা যারা লড়াই করতে চাই, ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ সবসময় থাকে। ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ এখনও আছে, সেটা সবসময় থাকে। এখনও কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। আমরা চাই এবং বিশ্বাস করি যে, সেটা ঠিক হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি।”

    তবে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ভ্যালুয়েশন কীভাবে হওয়া উচিত, সেই দৃষ্টিভঙ্গি না থাকা ব্যক্তিদের কারণেও জটিলতা তৈরি হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আপনি বলুন না, আকিজের ১০০ টাকার শেয়ার জাপান টোবাকোর কাছে বিক্রি করা হয়েছে ৬ লাখ ৪১ হাজার টাকায়, আপনি এটা ওইভাবে হিসাব করবেন?

    “আপনি যখন পরিশোধিত মূলধনের সঙ্গে ভ্যালুয়েশনের মিল করতে চান, সেটা লিস্টেড কোম্পানির ক্ষেত্রে, যেটা পাবলিকলি ট্রেডেড হয়, সেখানে দেখার বিষয়। প্রাইভেট কোম্পানির ক্ষেত্রে এটা দেখার বিষয় না। এই সহজ বিষয় যদি না বোঝেন, আপনি তাহলে বুঝে না বোঝার ভান করছেন বলে আমি বিশ্বাস করি।”

    সরকার পরিবর্তন হলেও ‘দুর্বৃত্তপ্রকৃতির’ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কাজ করা ব্যক্তিরা এখনও অবস্থান ধরে রাখায় নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন খালিদী।

    তিনি বলেন, “আসলে অপকর্মের দায় কেউ নিতে চায় না। যারা অপকর্ম করে তারা পালিয়ে বেড়ায়। তাদের আর পরে হদিস পাওয়া যায় না।

    “কিছু প্রভাবশালী রাজনীতিক, অত্যন্ত ক্ষমতাশালী দুর্বৃত্ত প্রকৃতির ব্যবসায়ী, তারা এই কাজগুলো করেছেন। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, তাদের লোকেরা এখনও সক্রিয়।”

  20. মাসুদ করিম - ২৫ অক্টোবর ২০২৪ (৬:২২ অপরাহ্ণ)

    বিপ্লবী সরকার না হয়ে সাংবিধানিক পথে কেন? ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ নজরুল
    https://bangla.bdnews24.com/politics/06afaefdea60

    সরকার পতনের পর রাজনৈতিক সব দল মিলেই অন্তর্বর্তী নতুন সরকার গঠনে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে তুলে ধরেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

    সেসময় এ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “খুব সময় নিয়ে সুচিন্তিতভাবে করা হয়নি। আর সাংবিধানিক পথে যাত্রাটা যদি ভুল হয়ে থাকে, তা আমাদের সবার ভুল।”

    ছাত্র-জনতার তুমুল গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে সরকার পতনের সে সময়কার পরিস্থিতি তুলে ধরে কেন সাংবিধানিক পথেই নতুন সরকার দায়িত্ব নিল, কেন বিপ্লবী সরকার হল না? সেই ব্যাখ্যা সোয়া ২ মাসের বেশি সময় পর দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

    বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “এই প্রশ্নটা অনেকেরই, এটা নিয়ে এর আগে বলিনি। আজকে বলছি।”

    আইন উপদেষ্টা এমন এক সময়ে এ বিষয়ে কথা বললেন যখন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন ও বিক্ষোভের পর এ নিয়ে সাংবিধানিক সংকট হবে কি না সেই বিষয় আলোচনায় এসেছে। ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের পর বিপ্লবী সরকার গঠন না করে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কবি ও রাষ্ট্র চিন্তক ফরহাদ মজহার।

    ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা: আসন্ন চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে আসিফ নজরুল এ বিষয়ে কথা বলেন।

    তিনি বলেন, “সরকার পতনের পর প্রথম যে মিটিংটা হল, সেখানে আমি গেলাম। আমাকে সেনাপ্রধানের পক্ষ থেকে একজন ফোন করল। আমি তো হতবাক। আমি তো বুঝতেই পারছি না, আমাকে কি মারার জন্য ফোন করেছে? আমার স্ত্রী হু হু করে কান্না শুরু করল, বলল ‘তুমি যাইও না, তোমাকে মেরে ফেলবে’। তারপর আমি যখন গেলাম, গিয়ে দেখি বাংলাদেশের সকল পলিটিক্যাল পার্টি সেখানে আছে, আওয়ামী লীগ ছাড়া।”

    বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্য আন্দোলন, হেফাজত সবার প্রতিনিধিদের থাকার কথা তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, “সাংবিধানিক পথে যাত্রা উনারা সবাই মিলে শুরু করেছেন। তাহলে আমি কে? আমাকে উনারা বললেন, আপনি সামনে থাকেন, তাহলে ছাত্র-জনতা উত্তেজিত হবে না।”

    উপদেষ্টা নির্বাচনের কিছু বিষয়ে ছাত্র নেতারা মতামত নিলেও পুরো প্রক্রিয়ায় তিনি ছিলেন না বলেও দাবি করেন।

    তিনি বলেন, “পরে গণতন্ত্র মঞ্চও আসছে। যারা আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, প্রত্যাকটা দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এত বড় টেবিল, এক কোণার মধ্যে বসেছিলাম আমি। সেখানে আমি একটা কথায় সবচেয়ে জোর দিয়ে বলেছিলাম, যে খালেদা জিয়াকে আজকেই মুক্তি দিতে হবে।”

    সাংবিধানিক পথে যাত্রা যদি ভুল হয়ে থাকে, সে ভুল সবার মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পুরো প্রক্রিয়ায় কেউ তো বলে নাই, কেন সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় শপথ নেব? এত ছাত্রনেতা ছিল, এতগুলো পলিটিক্যাল দল, নো বডি, কেউ তো বলে নাই। এখন এটা কি দোষের ব্যাপার? না। তখন এমন একটা সিচ্যুয়াশন ছিল, খুব সময় নিয়ে সুচিন্তিতভাবে করা হয়নি। আর সাংবিধানিক পথে যাত্রাটা যদি ভুল হয়ে থাকে, তা আমাদের সবার ভুল।”

    প্রকাশনা সংস্থা আদর্শ ও ব্রেইন আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ বলেন, “সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। গণতন্ত্র কেন চাই, তা নির্ধারণ করতে না পারলে আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে পারব না।”

    গণতন্ত্র মানেই বহুমতের জায়গা মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অনেক বিষয়ে আমরা একমত হব, আবার দ্বিমত পোষণ করব। দ্বিমত করার অধিকার তৈরি করতে হবে।”

    রাজনৈতিক দলের সংস্কারের বিষয়ে কথাও বলেন তিনি।

    ”জুলাইয়ে যা হয়েছে, এটা অভ্যুথান, বিপ্লব নয়। আমি তা মনে করি। এই অভ্যুথানের মধ্যদিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল কি তাদের বদলের চেষ্টা করছে? করেনি। রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই উপলব্ধি নাই কেন? যে তাকেও বদলাতে হবে। রাজনৈতিক দলকে একাউন্টেবল না করে রাষ্ট্রকে একাউন্টেবল করা যাবে না। সংস্কারের আলোচনা একদিনে হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোকে চাপ দিতে হবে, আপনারাও বদলান।”

    নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের সদস্য জাহেদ উর রহমান বলেন, “আমরা যদি মনে করি, অল্প সময়ের মধ্যে বড় সংস্কার করে দেশকে পালটে ফেলব। সেটা হবে ভুল।”

    নিজের অজান্তেও অনেকে স্বৈরাচারী হয়ে উঠেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।]

    সূচনা বক্তব্যে আদর্শের প্রকাশক মাহাবুব রহমান বলেন, “মত প্রকাশের স্বাধীনতায় আদর্শ অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে, সামনে আরও ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। জুলাই গণঅভ্যুথান নিয়ে আদর্শ সর্বাধিক মানসম্পন্ন বই প্রকাশ করতে চাই।”

    আরেক আয়োজক প্রতিষ্ঠান ব্রেইনের নির্বাহী সদস্য সাদিক মাহবুব বলেন, “বাংলাদেশের দেয়ালে দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতিগুলো সংগ্রহ করছি। এক সময় দেয়াল থেকে হয়ত গ্রাফিতি মুছে যাবে, কিন্তু আমাদের পরের প্রজন্ম যেন জানতে পারে। এজন্য আমরা ডিজিটালি গ্রাফিতিগুলো সংগ্রহ করছি।”

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা উমামা ফাতেমা বলেন, “যারা এখন সংবিধানের দোহায় দেন, তারা ভুলে যান একটা অভ্যুথান হয়েছে। হাজারো মানু্ষের লাশের উপর দাঁড়িয়ে একটা সরকার তৈরি হয়েছে।”

    বর্তমান সরকার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের ব্যাপারে দায়িত্ব নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, “নতুন বাংলাদেশে এটা বড় পরিবর্তন যে মানুষ আর নিজেদেরকে প্রজা না, নাগরিক ভাবতে শুরু করেছে।”

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদে একটা ইন্টেলেকচুয়াল শ্রেণি ছিল, একটা ব্যবসায়ী শ্রেণি ছিল। একটা ওলামা শ্রেণি ছিল। কিছু হলেই তারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদিকে সুরক্ষা দিয়ে গেছে। সবকিছু যে গণভবনকেন্দ্রিক হয়েছে, যাদেরকে দিয়ে হয়েছে। তারা এই ফ্যাসিজমকে সুরক্ষা দিয়ে গেছে।”

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা সারজিস আলম বলেন, “এখনও সারাদেশে মামলার ব্যবসা শুরু হয়েছে। এটা কারা করছে? দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ। বিগত ১৫ বছরে যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, সেটি না ভেঙে হাত বদল হয়েছে। আগের সিন্ডিকেটও এখন ভাগ পায়। আমরা সবাই সুবিধাবাজ, স্বার্থপর।”

    আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক মনির হায়দার ও সাহেদ আলম।

  21. মাসুদ করিম - ২৫ অক্টোবর ২০২৪ (৬:২৮ অপরাহ্ণ)

    রাষ্ট্রপতি অপসারণের শাসনতান্ত্রিক সংকট ও সমাধান
    https://samakal.com/opinion/article/261979/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%85%E0%A6%AA%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A3%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%95%E0%A6%9F-%E0%A6%93-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8

    বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদ থেকে মোঃ সাহাবুদ্দিনের অপসারণ দাবি ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে জাতীয় জীবনে ঔৎসুক্য ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। বিশেষত এই দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে প্রায় নজিরবিহীন বিক্ষোভ এবং দাবির ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক দলের নানামুখী বক্তব্যে বিভ্রান্তি বাড়ছে বৈ কমছে না।

    আমার মতে, এই সংকটের শুরু আরও আগে। গণঅভ্যুত্থানের পর দৃশ্যত রাষ্ট্র পরিচালনার সুনির্দিষ্ট রূপরেখা না থাকায় এমন পরিস্থিতির উদ্ভব। যেমন সংসদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি। যেহেতু গত জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ছিল, সেহেতু সংসদ ভেঙে দেওয়ার ব্যাপারে মোটামুটি ঐকমত্য ছিল। কিন্তু স্পিকারের পদত্যাগের কোনো প্রয়োজন ছিল না। নিয়ম অনুযায়ী বর্তমান স্পিকার পরবর্তী স্পিকার না আসা পর্যন্ত থাকতে পারতেন। কিন্তু স্পিকার না থাকায় বর্তমান সংকট আরও ঘনীভূত।

    এখন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে– রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ বা পদত্যাগের কোনো সাংবিধানিক পথ খোলা নেই। সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে; স্পিকার পদত্যাগ করেছেন। এদিকে সংবিধানও স্থগিত করা হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের সুযোগ না থাকায় রাষ্ট্রপতিকে এখন অপসারণ করা হলে, সেটি সংবিধানের বাইরে গিয়ে করতে হবে।

    মনে রাখতে হবে, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বর্তমান রাষ্ট্রপতিই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদকে শপথ করিয়েছেন। তিনিই সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। যদি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সংসদ, রাষ্ট্রপতি, স্পিকার– সবাইকে বাদ দিয়ে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ বা প্রয়োজনীয়তার নীতির বরাতে গণঅভ্যুত্থানের চেতনা নিয়ে সরকার গঠিত হতো, তাহলে আজকের সংকট দেখা দিত না।
    আবার নতুন সরকারের কিছু কর্মকাণ্ড যেমন সংবিধান অনুযায়ী, তেমনই অনেক কর্মকাণ্ড সংবিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সম্পাদিত হচ্ছে। ফলে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা হলে সংসদ না থাকায় সংবিধান অনুযায়ী নতুন কোনো রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করা যাবে না। ফলে বর্তমান রাষ্ট্রপতির অপসারণ সাংবিধানিক ও শাসনতান্ত্রিক শূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে।
    আমরা দেখেছি, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় তিন জোটের রূপরেখা ছিল এবং ওই রূপরেখা অনুযায়ী সবকিছু হয়েছিল। এইচএম এরশাদের কাছ থেকে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, জাতীয় নির্বাচন, বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রধান বিচারপতি পদে ফিরে যাওয়া, রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি থেকে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন– সবই হয়েছিল তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী। পরে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে সংবিধানের একাদশ ও দ্বাদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে এসব পদক্ষেপকে সাংবিধানিক বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। ফলে ওই সময় আইনশৃঙ্খলা, প্রশাসনিক কাজ, দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে অস্থিরতা দেখা দেয়নি।

    নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক বা অস্থায়ী সরকার নির্বাচন করে নির্বাচিত সংসদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে বিদায় নিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কোনো রূপরেখা বা ঘোষণা আমরা দেখতে পাচ্ছি না, যে রূপরেখা বা ঘোষণা অনুযায়ী সরকারি ও শাসনতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে পারে।
    শাসনতান্ত্রিকভাবে বর্তমানে যে অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে জনসাধারণ যেমন অনেক কিছু বুঝে উঠতে পারছে না, তেমনি আমরা যারা আইন পড়ি ও চর্চা করি, তারাও বুঝতে পারছি না কোন কাজটি সংবিধান অনুযায়ী আর কোনটা ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী হচ্ছে। যেমন দল বেঁধে গিয়ে বা বিক্ষোভ করে বিচারক, শিক্ষক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিদের পদত্যাগের পরিস্থিতি সৃষ্টি করার বিষয়টি আমরা কোন শ্রেণিতে ফেলব?
    যাই হোক, ছাত্র-জনতার আগস্ট অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসের অনন্য ঘটনা। এর মধ্য দিয়ে জনগণ নতুনভাবে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। রাষ্ট্র সংস্কার করে একটি জনবান্ধব কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য শত শত তরুণ আত্মাহুতি দিয়েছে। কিন্তু এই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কোনো রূপরেখা বা ঘোষণা না থাকায় যে শাসনতান্ত্রিক বাধা-বিপত্তি তৈরি হচ্ছে, সেটা কেবল রাষ্ট্রপতির অপসারণে সুরাহা হবে বলে মনে হয় না।

    উল্লেখ্য, ১৭৭৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়, তখন তারা আমেরিকান ডিক্লারেশন অব ইনডিপেনডেন্স প্রণয়ন করে এবং সে অনুযায়ী তাদের স্বাধীনতার কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। ১৭৮৯ সালে যখন ফরাসি বিপ্লব হয়, তখনও বিপ্লবীরা প্রণয়ন করেন জগদ্বিখ্যাত দ্য ডিক্লারেশন অব রাইটস অব মেন অ্যান্ড অব দ্য সিটিজেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও দেশের প্রথম সরকার ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রণয়ন করে দ্য ডিক্লারেশন অব ইনডিপেনডেন্স, যা অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান হিসেবে কাজ করে এবং সে অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রথম সরকারের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের রূপরেখা বা ডিক্লারেশন থাকলে সে অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে পারত।

    প্রশ্ন হচ্ছে, বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে শেষ পর্যন্ত যদি অপসারণ করাই হয়, তাহলে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে কীভাবে? সংসদ না থাকায় সংবিধান অনুযায়ী সেটা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, শিক্ষক, আইনজীবী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর কনভেনশন ডাকতে হবে। সেখানকার মতামতের ভিত্তিতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনীত করা যেতে পারে। সবাইকে, বিশেষত রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে, পরবর্তী সংসদে এর বৈধতা দেওয়া হবে।

    রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি ওঠার পর আমরা দেখলাম যে মধ্যপন্থি ও বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো এর বিরোধিতা করছে। মঙ্গলবার বিএনপির পক্ষ থেকে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে জানিয়ে দিয়েছে– বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হলে রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক শূন্যতা দেখা দিতে পারে। এটি বর্তমান প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
    প্রশ্ন হচ্ছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি ও বর্তমান সরকারের সমর্থক বিএনপি রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিরোধিতা করছে কেন? উত্তরে বলা যেতে পারে, বিরাজনীতিকীকরণ প্রক্রিয়ার আশঙ্কায়। কেবল বিএনপি নয়; মধ্যপন্থি গণতান্ত্রিক ও বামপন্থি প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলোও এই ভয় পেতে পারে। নির্বাচনী রোডম্যাপ এখন পর্যন্ত না দেওয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পাওয়ার প্রধানতম দাবিদার বিএনপি আগে থেকেই সতর্ক ও সচেতন অবস্থায় ছিল। নতুন করে কোনো ধরনের অস্থিরতা তারা স্বাভাবিকভাবেই চাইছে না।
    যাই হোক, আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ছাত্র-জনতার বিপুল অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার ক্ষমতাসীন, তারা দ্রুততার সঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার ব্যবস্থা, শিক্ষা ও অর্থনীতির কিছু মৌলিক সংস্কার করে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্যোগ নেবে। এতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা এগিয়ে যাবে এবং জনবান্ধব কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সামষ্টিক প্রচেষ্টা বেগবান হবে।

  22. মাসুদ করিম - ২৬ অক্টোবর ২০২৪ (৫:১৮ অপরাহ্ণ)

    L.A. Times owner’s decision not to endorse in presidential race sparks resignations, questions

    https://www.latimes.com/business/story/2024-10-25/latimes-no-presidential-endorsement-decison-resignations

    A decision by the owner of the Los Angeles Times not to endorse in the 2024 presidential race — after the paper’s editorial board proposed backing Kamala Harris — has created a tempest, prompting three members of the board to resign and provoking thousands of readers to cancel their subscriptions.

    Times owner Dr. Patrick Soon-Shiong said that his decision not to offer readers a recommendation would be less divisive in a tumultuous election year.

    “I have no regrets whatsoever. In fact, I think it was exactly the right decision,” he said in an interview with The Times on Friday afternoon. “The process was [to decide]: how do we actually best inform our readers? And there could be nobody better than us who try to sift the facts from fiction” while leaving it to readers to make their own final decision.

    He said he feared that picking one candidate would only exacerbate the already deep divisions in the country.

    Members of the editorial board protested that the non-endorsement was out of step with recent precedent at the newspaper, which has picked a presidential candidate in every election since 2008, and with The Times’ previous editorial position, which has been ardently opposed to former President Trump.

    Editorials Editor Mariel Garza resigned Wednesday as a result of the decision. Editorial board members Robert Greene and Karin Klein tendered their resignations from The Times the following day. Greene won the Pulitzer Prize for editorial writing in 2021 for his writing about criminal justice reform.

    “How could we spend eight years railing against Trump and the danger his leadership poses to the country and then fail to endorse the perfectly decent Democrat challenger — who we previously endorsed for the U.S. Senate?” Garza wrote Wednesday in her letter of resignation to Times Executive Editor Terry Tang. “The non-endorsement undermines the integrity of the editorial board and every single endorsement we make, down to school board races.”

    “I’m disappointed by the editorial [board] members resigning the way they did. But that’s their choice, right?” Soon-Shiong said in the interview.

    The medical technology billionaire, who bought The Times in 2018, posted on the social media site X on Wednesday that he believed he had offered his opinion writers a reasonable alternative to a traditional endorsement. He said they should “draft a factual analysis of all the POSITIVE AND NEGATIVE policies by EACH candidate during their tenures at the White House, and how these policies affected the nation.”

    “In addition, the Board was asked to provide their understanding of the policies and plans enunciated by the candidates during this campaign and its potential effect on the nation in the next four years,” he added. “In this way, with this clear and non-partisan information side-by-side, our readers could decide who would be worthy of being President for the next four years.”

    “The Editorial Board chose to remain silent,” Soon-Shiong contended in his X post, “and I accepted their decision.”

    The three journalists who resigned said they were not silent but, rather, disagreed with the owner’s proposal.

    “The ‘opportunity’ to instead present a both-sides analysis would properly be done by the newsroom, not by an editorial board, whose purpose is to take a stand and defend it persuasively,” Greene said in a statement.

    “I left in response to the refusal to take a stand,” Greene wrote, “and to the incorrect assertion that the editorial board had made a choice.”

    For many news consumers, the very existence of editorial writers and editorial boards is a point of confusion.

    They are generally veteran journalists who write editorials that express the position of their news outlet. Though written by one individual, the resulting essays are usually not signed because they express the consensus of the board.

    At The Times, the eight-member editorial board is overseen by Tang, though Garza led day-to-day operations. Soon-Shiong sits on the board, though he attends its thrice-weekly meetings only occasionally. It is understood that, as owner of The Times, he is entitled to change editorials or prevent them from being published.

    Several individuals familiar with The Times’ board say that Soon-Shiong has intervened only on occasion, including in the 2020 presidential primary season, when he decided that The Times should not name a favorite.

    The Times’ stable of in-house columnists and the paper’s editorial stances are generally liberal. The owner said Friday that he has been pushing for some time to bring more conservative and centrist voices into the mix. He noted that Republican political strategist Scott Jennings has recently been writing more opinion pieces for The Times, which he said was a bonus for readers.

    He said he hoped the conflict over the presidential endorsement would lead to “deep reflection” about the role of journalists.

    “Is this just groupthink, brainwashing or what, on either side?” he said. “I think we stand for more than that. We should be an organization that stands up and says the facts,” and also presents views across the political spectrum. He added: “I think that the country needs that desperately.”

    The Chandler family owned The Times for more than a century, from its founding in 1881. During that long stretch, the family and Times leadership set a stolidly conservative agenda. The newspaper routinely endorsed Republicans for president and most other offices.

    The Times backed former Vice President Richard Nixon, a Californian and a Republican, for president in 1972. But after the Watergate scandal brought President Nixon down in 1974, The Times editorial board agreed to no longer endorse in presidential races.

    That policy held through eight elections, until 2008, when The Times urged readers to vote for Democrat Barack Obama. It endorsed Democrats in every presidential election since then.

    The newspaper backed former Vice President Joe Biden over then-President Trump in the 2020 election. Soon-Shiong made no effort to change the editorial board’s decision. After the Democrat’s victory became clear, The Times owner posted a message on social media: “Congratulations President-Elect Biden and Vice-President Elect Harris. Historic day. Now time for our nation to heal. #PresidentElect #AmericaDecides.”

    Four years earlier, Soon-Shiong congratulated Trump on his victory. “Incredible honor dining w/Pres-elect @realDonaldTrump last night,” he wrote on the site then known as Twitter. “He truly wants to advance #healthcare for all.”

    A native of South Africa who grew up under apartheid, Soon-Shiong has spoken out passionately in the past about his belief in civil rights. But he has been less vocal publicly about his thoughts on elected officials.

    He told Spectrum News this week that some might “look upon me or our family as ultra-progressive or not.” But he said he considered himself a political independent, adding in his interview with The Times that — despite speculation — his stand is not based on any singular issue or intended to favor either of the major party candidates.

    Soon-Shiong said he has heard from people who supported his decision as well as many who strongly opposed it.

    “That’s the whole value of democracy. You can voice your opinion, but I hope they understand by not subscribing that it just adds to the demise of democracy and the fourth estate,” he told Spectrum.

    Many other newspapers continue to endorse in the presidential race. The New York Times recently published an editorial warning about the dangers of a second term for Trump.

    But the Washington Post decided, for the first time in 36 years, not to pick a candidate for the White House this year, prompting one board member to resign Friday.

    As with the Los Angeles Times decision, the Post’s non-endorsement was met with an immediate backlash from many readers and threats of subscription cancellations. Former Post Editor Martin Baron criticized the Washington paper’s move, saying Friday that “history will mark a disturbing chapter of spinelessness at an institution famed for courage.” Post Publisher Will Lewis said the paper would allow readers to make up their own minds.

    The Trump campaign quickly tried to use word of the L.A. Times’ non-endorsement to its advantage. “Even her fellow Californians know she’s not up for the job,” the Republican’s campaign said.

    That position flew in the face of statements from Garza and others about their intention to back Harris.

    A little more than two months after Trump took office in 2017, the editorial board published a series of scathing essays under the headline: “Our dishonest president.” One editorial described Trump’s initial actions as “a train wreck” that “will rip families apart, foul rivers and pollute the air, intensify the calamitous effects of climate change and profoundly weaken the system of American public education for all.”

    Several thousand customers, including actor Mark Hamill, dropped their subscriptions this week in protest over the non-endorsement.

    The owner’s intervention did not sit well with other Times employees, including many of those who work for the news pages. The morale of many of the workers already had been at a low ebb, given two rounds of layoffs — including the departure of 115 journalists early this year, more than 20% of the newsroom — following a period of growth and hiring since 2017.

    The Times — like virtually every other American newspaper — has been struggling to find a viable financial model, given the massive downsizing of print advertising. Soon-Shiong’s willingness to underwrite tens of millions of dollars of losses per year has made cuts at The Times, though painful, less extreme than at the some of country’s biggest newspaper chains.

    The union representing Times journalists, which has been without a contract and pay raises for more than two years, demanded that management give a fuller explanation of the failure to endorse.

    “Those of us who work in the newsroom, rather than on the Editorial Board, do not have a position on whether a presidential endorsement should have been made,” said a letter to Soon-Shiong signed by nearly 200 Times journalists. “However, we all expect The Times to be transparent with readers.”

    Longtime columnist Robin Abcarian said in an interview that it was “patently absurd” for the newspaper that had written dozens of news stories and opinion pieces about the dangers of Trump to belatedly pull back from endorsing Harris.

    “Refusing to endorse for president at a moment when democracy is imperiled is a betrayal of what our editorial pages do: tell the truth, say what we believe and why,” Abcarian said.

    Abcarian sympathized with readers lashing out at the paper’s ownership. But she also called on subscribers to keep supporting the hundreds of journalists who played no role in the decision.

    “The Los Angeles Times is so much more than a single endorsement,” she said. The staff “still manages to turn out extraordinary coverage.”

    In an X post, leaders of the union representing Times journalists agreed. “Before you hit the cancel button,” they wrote, “that subscription underwrites the salaries of hundreds of journalists in our newsroom. Our member-journalists work every day to keep readers informed during these tumultuous times. A healthy democracy is an informed democracy.”

  23. মাসুদ করিম - ৩১ অক্টোবর ২০২৪ (৪:০২ অপরাহ্ণ)

    Its leader is in exile, student wing banned and party workers under attack, but Awami League refuses to give up the fight
    https://www.thehindu.com/todays-paper/tp-international/its-leader-is-in-exile-student-wing-banned-and-party-workers-under-attack-but-awami-league-refuses-to-give-up-the-fight/article68814716.ece

    Rabiul Alam

    Sheikh Hasina’s party is ready to participate in elections if stability is restored; it remains silent on proposals of political reforms, but is steadfastly opposed to amending the 1972 Constitution, and reject any alliance with Jamaat

    “With only the clothes on our backs and empty hands, we left our homeland, feeling utterly helpless. We don’t know how we’ll survive. Hold on, stay safe. When the time comes, we’ll journey together again.”

    These were the only words of consolation that top Awami League leaders could muster for their followers and party members before fleeing Bangladesh after the collapse of Sheikh Hasina’s government on August 5, amid sweeping national protests.

    More than a dozen mid-level Awami League leaders and leaders of its affiliates unable to flee, expresses a deep sense of abandonment and uncertainty among them, marking the party’s most critical moment in the past 16 years.

    Grim reality

    From the top ranks to the grassroots, leaders and activists of the Awami League now face a grim reality of lawsuits, arrests, and attacks. Ms. Hasina alone faces over two hundred cases, many involving threats to her life, while prominent figures like AL General Secretary Obaidul Quader are also listed as defendants. For countless members, the situation has forced them into hiding, and many are urgently seeking ways to escape the country.

    Leaders from the AL’s affiliates have also disappeared. Some disheartened AL and its affiliate members, speaking with The Hindu, expressed their fear and concern over the situation.

    A Vice-President of the recently banned Bangladesh Chhatra League (BCL), the student wing of the AL, who has gone into hiding, asking for anonymity, expressed deep frustration with the party’s top leadership.

    “With only the clothes on our backs and empty hands, we left our homeland, feeling utterly helpless. We don’t know how we’ll survive. Hold on, stay safe. When the time comes, we’ll journey together again.”

    These were the only words of consolation that top Awami League leaders could muster for their followers and party members before fleeing Bangladesh after the collapse of Sheikh Hasina’s government on August 5, amid sweeping national protests.

    More than a dozen mid-level Awami League leaders and leaders of its affiliates unable to flee, expresses a deep sense of abandonment and uncertainty among them, marking the party’s most critical moment in the past 16 years.
    Grim reality

    From the top ranks to the grassroots, leaders and activists of the Awami League now face a grim reality of lawsuits, arrests, and attacks. Ms. Hasina alone faces over two hundred cases, many involving threats to her life, while prominent figures like AL General Secretary Obaidul Quader are also listed as defendants. For countless members, the situation has forced them into hiding, and many are urgently seeking ways to escape the country.

    Leaders from the AL’s affiliates have also disappeared. Some disheartened AL and its affiliate members, speaking with The Hindu, expressed their fear and concern over the situation.

    A Vice-President of the recently banned Bangladesh Chhatra League (BCL), the student wing of the AL, who has gone into hiding, asking for anonymity, expressed deep frustration with the party’s top leadership.

    “We wouldn’t be in this situation if the party had valued its dedicated leaders,” he said. “Instead, they always favoured flatterers. Now, with Sheikh Hasina’s fall, they’ve left the country, while we— the loyal ones — don’t even have the financial means to escape. We know the party is facing hard times, but this responsibility rests squarely with the top leadership. We’re now left to live a life filled with fear and uncertainty.”

    On October 24, Bangladesh’s interim government banned the BCL, designating it a “terrorist organisation. This decision has intensified an already tense political atmosphere, with mass arrests of BCL leaders and activists stirring unease across university campuses.

    Shortly after banning the BCL, the Adviser for the Ministry of Labour and Employment and the Ministry of Youth and Sports, Asif Mahmud Shojib Bhuiyan, said that members of banned organisations would not be allowed to be appointed in government positions.

    BCL members are being detained while attending classes and exams. Law enforcement officials have arrested dozens of BCL members, including female students, as they arrive for exams on campuses. In some instances, protest leaders have handed over BCL members to police, who then show them as arrested in connection with various pending cases.

    However, Sarjis Alam, a top coordinator of the anti-discrimination movement, has voiced opposition to the mass arrests targeting BCL leaders, noting that many of them, while holding positions within the organisation, also participated in the anti-discrimination movement in July.

    After banning the BCL, demands for a ban on the AL itself are intensifying. Two petitions were recently filed with the High Court seeking a suspension of the activities of the AL and 10 other political parties. However, Hasnat Abdullah and Sarjis Alam, coordinators of the Anti-Discrimination Student Movement, later withdrew the petitions.

    In response to this, AL Joint Secretary A.F.M. Bahauddin Nasim told The Hindu the interim government appears to be on a mission to eliminate the AL — an effort he said would fail because “the party is embedded in the hearts of the masses”. Questioning the government’s recent ban on the BCL, Mr. Nasim said: “How can they ban the BCL, the student wing that played a pivotal role in securing the nation’s independence?”

    “Over 200 lawsuits have been filed against Sheikh Hasina, with thousands of party leaders arrested in connection with several thousand cases. Many have been forced into hiding to evade arrest. Homes and businesses — not only of Awami League leaders and activists but also of ordinary citizens — are being looted. Yet, there is a pervasive silence, including from the media, on these issues,” Mr. Nasim added.
    Over 1,000 cases

    According to Dhaka Metropolitan Police sources, 399 cases have been filed in various police stations and courts in the capital since August 5. Nationwide, a total of 1,695 cases have been filed as of October 13.

    Police and court sources said Ms. Hasina now faces around 250 cases, including nearly 200 murder cases, on charges of killing and attempted murder during the student protests. The first case against her was filed on August 15 in a Dhaka court. Since then, a series of cases have been filed in the capital and across various parts of the country.

    AL Organizing Secretary Shafiul Alam Chowdhury Nadel told The Hindu that more than 500,000 leaders, activists, and professionals affiliated with the party have been named in recent cases filed.

    “These are fabricated cases. They include not only Awami League members and affiliates but also leaders from pro-liberation democratic parties, as well as cultural activists, journalists, and sports organisers. This is nothing but a campaign of harassment,” Mr. Nadel said.

    According to party sources, grassroots leaders are staying away from their homes to avoid being monitored by law enforcement. They attempt to remain hidden, while their families live in constant fear, uncertain about what might happen next. Fearing for their lives, several political figures, among others, sought refuge within military cantonments. The Bangladesh Army provided shelter to 626 individuals from various backgrounds. After leaving the cantonments, political leaders went into hiding, with some escaping within the country while others crossed the border into neighbouring India.

    Mr. Nadel accused Jamaat-BNP activists of indiscriminately targeting leaders and workers of the AL’s student organisation. Arrested AL leaders and activists are being denied the right to legal representation, an act he described as both illegal and inhumane.

    “Due to the illegal takeover of power, these individuals are receiving little support from the administration and law enforcement. As a result, the ongoing disillusionment among the public, fuelled by the government’s controversial actions, has led to widespread disenchantment,” he added.

    The International Crimes Tribunal on October 27 showed 10 former Ministers, including Anisul Huq, Abdur Razzaque, Lt. Col. (retd) Faruk Khan, Dipu Moni, Shahjahan Khan; and as many others were arrested on charges of crimes against humanity and genocide during the July-August mass uprising. Earlier, the tribunal also issued an arrest warrant against Ms. Hasina.

    There are allegations that cases are being filed indiscriminately, with even deceased individuals listed as accused. For instance, on September 2, a case was filed against several AL leaders, alleging they attacked students during an August 4 protest in Beltoli under the Comilla district. Among the 96 individuals named in the case was Kamal Uddin Mazumder, an upazila AL leader who passed away on July 11, 2023. In addition to Kamal, two other deceased Awami League leaders were also included in the case.

    Civil society members warn that this approach risks allowing actual perpetrators to evade justice, adding that many of these cases are unlikely to withstand scrutiny in court or progress beyond preliminary stages.
    Mob violence

    Meanwhile, even after nearly three months, mob violence is still going on in some places in the country. According to Ain o Salish Kendra (ASK), 49 people were killed in mob violence across the country in August and September.

    A new crisis has also emerged after protests broke out demanding the removal of President Mohammed Shahabuddin from office. The interim government’s decision on this issue is still pending due to a lack of ‘political consensus’. The BNP opposes this move, cautioning that it could create a constitutional vacuum, potentially sparking a broader crisis.

    The AL views the BNP’s recent positions positively but refrains from commenting on the immediate reforms the interim government is planning. However, the party firmly rejects the Anti-Discrimination Student Movement’s demand to scrap the 1972 Constitution. The AL also denies any possibility of forming an alliance with Jamaat-e-Islami, despite speculation that Jamaat might seek common ground with the AL to counter the BNP in the next elections. Party leaders expressed willingness to participate in elections but stressed that stability is essential to ensure credibility, something they doubt the Yunus-led interim government can achieve.

    “It’s impossible to form any alliance with Jamaat-e-Islami due to our strong ideological differences,” said AL leader Mr. Nasim. “However, we appreciate the BNP’s stance on not banning political parties and on retaining the President.”

    The AL reiterated its support for democratic elections in a neutral, stable environment under the leadership of Sheikh Hasina. “Immediate reforms may be necessary in some cases, but we will not tolerate the scrapping of the 1972 Constitution which Anti-Discrimination Student Movement leaders have demanded,” Mr. Nasim added.

    Asked if the AL is prepared to ensure Ms. Hasina’s safety upon her return to the country Mr. Nadel said: “We are maintaining communication with our activists and democratic allies. Soon, we will launch a political programme and take our movement to the streets. Our leader, Sheikh Hasina, will be returning soon.”

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.