মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিন্ক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে।
ধন্যবাদ।
আজকের লিন্ক
এখানে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই সুপারিশ করুন এখানে। ধন্যবাদ।
৫ comments
মাসুদ করিম - ৭ এপ্রিল ২০২৪ (৬:১৪ পূর্বাহ্ণ)
ঈদে জমেছে খাদির বাজার
https://bangla.bdnews24.com/samagrabangladesh/9pq8vb4hsd
শতবর্ষের খাদি পণ্য তার গুণগত মান বজায় রেখে আধুনিকতার সংমিশ্রণে হাল-ফ্যাশনের প্রতিযোগিতার বাজারে চাহিদা ধরে রেখেছে।
রোজার ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদি পোশাক ও কাপড়ের বাজার ততই জমে ওঠছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, খাদির বিভিন্ন পোশাক থাকলেও পুরুষদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাবি আর ফতুয়া। আর মেয়েদের কাছে খাদির থ্রি-পিসের চাহিদা ব্যাপক।
ঈদকে কেন্দ্র করে নগরীর প্রতিটি খাদি দোকানেই ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজগঞ্জ বাজারের পশ্চিম দিক থেকে কান্দিরপাড়ের রামঘাটলা পর্যন্ত দোকানগুলোতে ঘুরে ক্রেতাদের বেশ উপস্থিতি দেখা গেছে।
১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদি শিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য ডাক ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সেই সময় থেকেই কুমিল্লা নামের সঙ্গে খাদি কাপড়ের নামটি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। খাদি কাপড়কে বলা হয়ে থাকে কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক।
তবে যাত্রা শুরুর সময়ের সেই মোটা খাদি কাপড় এখন অনেকটাই মিহি হয়েছে। কাপড়ে লেগেছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। খাদি কাপড় কুমিল্লাকে ব্র্যান্ডিং করে। ক্রেতাদের চাহিদার ওপর নির্ভর করে বর্তমানে খাদি শিল্পে অনেক নতুন নতুন ডিজাইন এসেছে।
কুমিল্লার খাদি শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, শতবর্ষের ঐতিহ্য, সুনাম ও খ্যাতি অক্ষুন্ন রাখার লড়াইয়ে এখনো টিকে রয়েছে কুমিল্লার খাদি। কালের পরিক্রমায় খাদি পরিণত হয়েছে বাঙালির অন্যতম ফ্যাশন প্রিয়তায়। শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। শতবর্ষের খাদি পণ্য তার গুণগত মান বজায় রেখে আধুনিকতার সংমিশ্রণে হাল-ফ্যাশনের প্রতিযোগিতার বাজারে চাহিদা ধরে রেখেছে।
খাদি কাপড় বিক্রেতাদের ভাষ্য, দাম অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষের কাছে খাদি পোশাকের কদর বেশি। পুরুষরা কিনছেন, পাঞ্জাবি ও ফতুয়া। আর নারীদের প্রিয় থ্রি-পিস। সেই সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে খাদি কাপড়ের তৈরি বিছানার চাদর ও নকশিকাঁথা। প্রতি বছরের রোজার ঈদের মতো এবারও ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে নানা ধরনের নকশায় তৈরি করা হয়েছে খাদি পোশাক।
নগরীর মনোহরপুর এলাকার ‘খাদি ভবন’ দোকানের ব্যবস্থাপক বাবুল পাল বলেন, “দেশ-বিদেশে এখনো খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ বছর রমজানের শুরুর দিক থেকেই বেচাকেনা ভালো। মানে ভালো দামে কম হওয়ায় মানুষ খাদি পোশাক কিনছেন। ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাবি আর থ্রি-পিস। প্রতিনিয়ত ঐতিহ্য রক্ষা করে খাদি কাপড়ে নান্দনিকতার ছোঁয়া লাগছে; এজন্য ক্রেতারা খাদি কাপড় বেশি কিনছেন।”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে কুমিল্লা জেলায় খাদির নাম যুক্ত দোকান আছে চার শতাধিক। এর মধ্যে কুমিল্লা নগরীতেই রয়েছে তিন শতাধিক। নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের পশ্চিম দিক থেকে কান্দিরপাড়ের রামঘাটলা পর্যন্ত এসব দোকানের অবস্থান।
১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করার পর ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদি শিল্পে সংকট দেখা দেয়। পরবর্তীতে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা ড. আখতার হামিদ খান।
খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। জেলা সদর ছাড়াও চান্দিনা, দেবিদ্বার উপজেলায় এখনো ঐতিহ্যগতভাবে খাদি কাপড় তৈরি হয়। হাতের পাশাপাশি মেশিনেই বর্তমানে বেশি খাদি কাপড় তৈরি হচ্ছে। এজন্য মোটা খাদি কাপড় এখন মিহি হয়েছে। কাপড়ে লেগেছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। বর্তমান খাদির পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্ট, ফতুয়া, চাদর ও থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে পুরো দেশেই। কুমিল্লার ঐতিহ্যের খাদি কাপড় যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও।
তবে প্রতিষ্ঠার শত বছর পার হলেও খাদি এখনো জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন কুমিল্লার শিক্ষাবিদ ও কবি নজরুল গবেষক অধ্যাপক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক।
তিনি বলেন, “কুমিল্লার খাদি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়া দুঃখজনক। জিআই পণ্য নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের এবং কুমিল্লার জেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে আরও আন্তরিক হতে হবে। কারণ খাদি কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক।”
কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার লাকসাম রোডের খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক রতন পাল বলেন, রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার খাদি কাপড় বেশি বিক্রি হয়। শুধু রমজানের ঈদেই কুমিল্লায় প্রায় শত কোটি টাকার খাদি কাপড় বিক্রি হয়। ব্যবসায়ীদের পুরো বছরের ঘাটতি পুষে যায় রোজার ঈদে।
একই দোকানের আরেক মালিক তপন পাল বলেন, “সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাদি কাপড় কিনতে আসছেন মানুষজন। আশা করছি, এবারের ঈদে ভালোই লাভ হবে খাদি ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে খাদির পাঞ্জাবি ও ফতুয়া। তবে খাদির ঐতিহ্যবাহী শাড়ি এবং থ্রি-পিসও বিক্রি হচ্ছে ভালো।”
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত নগরীর মনোহরপুর এলাকার ‘খাদিঘর’ নামক দোকানের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি ও মজুরি খরচ বাড়ায় বর্তমানে খাদি কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে এটা ঠিক যে, দামে ও গুণমানে কুমিল্লার খাদির চেয়ে কম মূল্যে কোনো ব্র্যান্ডের কাপড় এখনো পাওয়া যায় না।
“হাতে তৈরি কাপড় হওয়ায় খাদির পোশাক পরে একটা ন্যাচরাল ফিল পাওয়া যায়। বাংলাদেশের বিদেশি দূতাবাসে খাদিসহ দেশীয় পণ্যের প্রদর্শনী করা যেতে পারলে এ পণ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটাবে। এখনো দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে কুমিল্লার খাদি পোশাকের।”
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে কুমিলা নগরীর কান্দিরপাড়, মনোহরপুর ও রাজগঞ্জ এলাকার দোকানগুলোতে খাদির বিভিন্ন পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ বছর খাদি পোশাকগুলোর মধ্যে সাদা ও রঙিন পাঞ্জাবি সর্বনিম্ন ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, মেয়েদের থ্রি পিস ৫০০ থেকে চার হাজার টাকা, শর্ট ফতুয়া ৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা, শাড়ি ৫০০ থেকে তিন হাজার ৮০০ টাকা, শার্ট ৩০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা দামে মিলছে।
এ ছাড়া বিছানার চাদর ৪০০ থেকে ছয় হাজার টাকা এবং নকশিকাঁথা তিন থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর মনোহরপুর এলাকার একটি দোকানে খাদি কাপড় কিনতে আসা শাহনাজ আক্তার পারভীন বলেন, “খাদির থ্রি-পিস আমার পছন্দের। বাসার অন্যরাও খাদির জামা পরতে পছন্দ করে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো বাজেটের মধ্যে ভালোমানের খাদি পোশাক পাওয়া যায়। তাই রোজার ঈদের জন্য খাদি জামা কিনতে এসেছি।”
জেলার মুরাদনগর থেকে আসা ক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “প্রতি বছরই ঈদে খাদির পাঞ্জাবি পরি। ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে খাদির ভালোমানের পাঞ্জাবি পাওয়া যায়। এ ছাড়া খাদির পাঞ্জাবি পরতেও আরাম লাগে। তাই তরুণরা ঈদে খাদির পাঞ্জাবি বেশি কিনছেন।”
একই কথা বলেছেন জেলার মনোহরগঞ্জ থেকে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “দামে কিছুটা কম এবং মানে ভালো হওয়ায় খাদি কাপড়ের চাহিদা সব সময়ই ভালো। এ ছাড়া খাদি কাপড় প্রতিনিয়ত আধুনিক ডিজাইনের হওয়ায় মানুষের নজর কাড়ছে।”
কুমিল্লার সামাজিক সংগঠন তিন নদী পরিষদের সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক আবুল হাসনাত বাবুল বলেন, খাদি কাপড়ের বুননে বৈচিত্র্য আসায় নারী-পুরুষ সবার কাছে যুগের পর যুগ ধরে এর জনপ্রিয়তা অক্ষুন্ন রয়েছে। ঈদ, নববর্ষ ও পূজা উপলক্ষে খাদির পাঞ্জাবি, ফতুয়া, থ্রি-পিস ও শাড়ির বেশ চাহিদা সব সময়ই থাকে।
এক সময় খাদি কাপড় অনেক ভারি ছিল উল্লেখ করে আবুল হাসনাত বাবুল বলেন, তবে এখন ওই কাপড় প্রতিনিয়ত মিহি করা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম এখন খাদি নিয়ে ভাবছে। এদের হাত ধরেই খাদি কাপড়, খাদি পাঞ্জাবি ও ফতুয়ার নকশায় বৈচিত্র্য আসছে। আমার বিশ্বাস তরুণ প্রজন্ম কুমিল্লার খাদিকে অনেক দূর নিয়ে যাবে।
মাসুদ করিম - ৯ এপ্রিল ২০২৪ (৩:২৭ অপরাহ্ণ)
সৌদি আরবে সাবু ছিলেন শ্রমিক হিসেবে: এটিইউ
হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলায় সরাসরি অংশ নেন সাবু।
https://bangla.bdnews24.com/bangladesh/k0yi0zxbbe
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু হামলার পরপরই পালিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে।
মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক এসএম রুহুল আমিন।
তিনি বলেন, “হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলায় সরাসরি অংশ নেন সাবু। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করলে কৌশলে দেশের বাইরে চলে যান। প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি সৌদি আরবে শ্রমিক হিসাবে কাজ করেছেন।”
২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বাংলা একাডেমি থেকে বেরিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশ দিয়ে টিএসসির দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীর চাপাতির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হন বহুমাত্রিক লেখক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ।
কয়েক মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর ওই বছর অগাস্টে গবেষণার জন্য জার্মানিতে যান এই লেখক। পরে ১২ অগাস্ট মিউনিখে নিজের ফ্ল্যাট থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
হামলার পরদিন হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছিলেন। আদালতের আদেশে অধিকতর তদন্তের পর তা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
সেই মামলার রায়ে ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল চার জঙ্গির ফাঁসির আদেশ আসে। জেএমবি নেতা নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু ওরফে শামীম তাদেরই একজন। শুরু থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।
বারিধারা এটিইউ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান রুহুল আমিন বলেন, “সাবু জেএমবির আমির শায়খ আব্দুর রহমানের কাছে বায়াত গ্রহণ করে সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হন। আর তাকে সংগঠনে দাওয়াত দিয়েছিলেন জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানি।
“দেশে অবস্থানকালে সালাউদ্দিন সালেহিন, হাফেজ শহিদ, মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শাওন ওরফে শাকিব ওরফে হাসিম, আনোয়ারুল আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ, মো. হাফিজ মাহমুদ ওরফে রাকিব এর মত জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সাথে সম্পৃক্ত থেকে সাবু সাংগঠনিক নানা কাজে অংশগ্রহণ করেন।”
অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ উপন্যাসটির কারণে ক্ষুব্ধ হয়েই জেএমবি তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল মন্তব্য করে রুহুল আমিন বলেন, “২০০৪ সালে জেএমবির আমির শায়খ আব্দুর রহমানের নির্দেশে জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানি, সালাউদ্দিন সালেহিন, হাফেজ শহিদসহ অন্যদের সঙ্গে সাবু সরাসরি হামলায় অংশ নেন।”
এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত বাকি তিনজন হলেন জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান মিনহাজ ওরফে শফিক ওরফে শাওন, আনোয়ারুল আলম ওরফে ভাগ্নে শহীদ এবং সালেহীন ওরফে সালাউদ্দিন ওরফে সজীব ওরফে তাওহিদ।
মাসুদ করিম - ১৭ এপ্রিল ২০২৪ (৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ)
The Iran attack changes everything
https://www.newstatesman.com/world/middle-east/2024/04/the-iran-attack-changes-everything?mrfhud=true
Lines have been crossed and the new state of affairs no longer has the same handrails.
For the first time since 1991, when Saddam Hussein launched a barrage of Scud missiles towards Tel Aviv and Haifa, another state has directly attacked Israel. Hussein’s attack decades ago is worth noting because it highlights how much has changed between then and 13 April, when Iran attacked Israel with more than 300 drones, cruise and ballistic missiles. Some of the latter were able to pierce Israel’s air defences but with only minor damage recorded.
There are some similarities between 1991 and 2024. Just as it did three decades ago, the United States today wants Israel to refrain from a military response or, as Joe Biden put it in his initial phone call with Benjamin Netanyahu, to “take the win” offered by robust international support and an air defence system able to intercept 99 per cent of Iranian launches. But the differences are profound: in 1991, Washington promised to destroy the missile launchers in Iraq. Today Biden fears a new war in the Middle East like nothing else: energy prices would skyrocket and no one believes the American public has much patience for repeated misadventures like the kind that have caused so much pain in the recent past.
Biden was clear: the US would not support any response that could take us all closer to a war. Whether Netanyahu and his ministers will oblige is difficult to predict. Netanyahu has been silent so far. There are reports of a divided war cabinet. Benny Gantz, a Netanyahu rival who has become increasingly close to American officials, is poised to replace him.
The Iranian attack, however, changes everything. Whereas it had previously relied on proxies to carry out attacks on its behalf, Tehran has acted with the kind of boldness that will profoundly hurt Israel’s own sense of security. This levelling of their respective positions may well be unacceptable to the Israeli authorities. I remain convinced that there will be a response and Israeli officials have even promised, off the record, that such a response will be “unprecedented”.
Some will argue that Iran had no choice: the Israeli attack on the Iranian embassy compound in Damascus on 1 April had itself crossed a line, striking the equivalent of Iranian sovereign territory. The Iranian regime knew its credibility was on the line. Future Israeli actions had to be deterred not so much through punitive strikes, whose consequences Iran fears, but by ratcheting up regional tensions and forcing the Americans to intervene. Which they did.
There should be no illusions that, after an alarming night, we are now back to the status quo ante. The new situation no longer contains the same handrails. And in the background, as the ultimate source of the current security crisis, the war in Gaza continues, with the same horrors as before, and with little hope of a resolution.
Throughout my meetings in Israel two weeks ago, including with the former Shin Bet head Ami Ayalon, one concern was evident: that the war in Gaza had reached an impasse and that the current, deeply unpopular Israeli government may be desperately looking for a way to prevent its own ruinous political defeat. Netanyahu seems to have seen the attack against the Iranian embassy as a way to expand the war, placing it in a more favourable position. Draw in Iran and the swelling American criticism of Israel’s actions will fall silent. So far that has worked.
There are reports that Biden is now afraid the Israeli government may be trying to drag the US into a larger regional war. After all, neither Netanyahu nor his ministers regard Palestinians as Israel’s largest threat. The main threat lies in Tehran, so they may well be tempted to try to address it while the “ironclad” American support stemming from 7 October is still available, and practically unconditional. Iran responded to the Damascus strike with a “calibrated” attack, large in its symbolic force but so obviously choreographed and so forewarned that the material impact could be contained. Perhaps the Israeli government expected something even more brazen from an Iran it regards as blinded by theocratic hatred.
Benjamin Netanyahu may think that a regional war will be necessary sooner or later, and he may want to be the man conducting it. Alternatively, the growing regional tensions may give him new leverage. He might be tempted to tell Biden that he can keep tensions with Iran under control provided the American president supports him in his planned offensive against Rafah, the city where more than a million refugees from the destroyed cities of Gaza await their fate. In the meantime, the war continues and tensions grow.
https://twitter.com/MacaesBruno/status/1779792338140676377
মাসুদ করিম - ১৮ এপ্রিল ২০২৪ (৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ)
চৈত্রে রচিত বৈশাখী গান
https://www.banglatribune.com/literature/special-edition/95853/%E0%A6%9A%E0%A7%88%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A7%80-%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8?fbclid=IwZXh0bgNhZW0CMTAAAR2WP-zMHs9w7u8H21MFMu6L9aFohUJHjO6s0EkLA-usdRatcURj_Dbl2Ps_aem_AQJrkQuBYnoy9AtkD3UdS23TuYT3zV5IFoQxlG68btp5juRcJWq9eT5LhESS0sZaVWSPAKeYDJXm_5JuOi7CZMvQ
আজকাল অনেকই বলছে এ শোভাযাত্রা যশোরে শুরু হয়েছিল। কথাটা ভুল নয়, কিন্তু কথাটা সঠিকও নয়। মনে রাখতে হবে এটি যশোর শোভাযাত্রার ঢাকাই রূপ নয়। যেমন এটি নয় রিও কার্নিভ্যাল কিংবা মহরমের তাজিয়া মিছিল কিংবা রথযাত্রা। যশোরের অভিজ্ঞতা ঢাকা চারুকলার শোভাযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এটা শতভাগ ঠিক, কিন্তু যশোরের শোভাযাত্রার প্রেক্ষিত সম্পূর্ণ ভিন্ন
১ লা বৈশাখ ১৩৯৬ (১৪ এপ্রিল, ১৯৮৯) সকাল, আনন্দ শোভাযাত্রার পর
মালি : কী করলেন ভাই, আমার সব ফুলগাছ তছনছ হয়ে গেল…
আমি : মেজাজ খারাপ হচ্ছে!
মালি : হচ্ছে…কিন্তু…না! অন্য রকম একটা কেমন যেন লাগছে…এতো মানুষ কোনোদিন চারুকলায় আসেনি…এমন পাগলের মতো হৈ হৈ করে ছুটাছুটিও করেনি, দেখছেন কেমন আনন্দ নিয়ে ঘুরছে…
ছোট সন্তানের হাতে ধরে আনন্দ উদ্বেল বাবা-মা কিংবা আমারই বয়সী কেউ বারবার জানতে চাইছে আর কী আছে? কিংবা এইসব পুতুল (হাতী ও অন্যান্য) একটু ছুঁয়ে দেখা যাবে কি? বিশিষ্ট ক’জন জানতে চাইলেন মুখোশ বা ঘোড়াগুলি কীভাবে পাওয়া যেতে পারে (কেনা যেতে পারে)?
১/২টি ঘোড়া ও ৫/৬টি মুখোশ ঘরে ফেরেনি! কী অদ্ভুত, একজন বাবা তার পাঁচ-ছ’বছরের বাচ্চাটিকে নিয়ে এসেছেন, বাচ্চাটি তার ও বাবা-মার মাথার মুকুটটি খুলে আমার হাতে ফেরত দিচ্ছে, বাবা বলছেন ‘আঙ্কেলকে ওগুলো দিয়ে দাও…এ মুকুটগুলি আমরা গত পাঁচ-ছ’দিনে এন্টিকাটারে কাগজ কেটে তুলিতে রঙ-নকশা ফুটিয়ে বানিয়েছি…‘না, আঙ্কেল ওগুলো তোমার ও আব্বু-আম্মুর…’ বিস্ময় ও আনন্দ হাসিতে বাবা-মা-ছেলের মুখ বলে দিচ্ছে– আজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা সাধারণ মানুষের কাছে এক অনন্য আনন্দের উৎস হয়ে গেল…
১ লা বৈশাখ ১৩৯৬ (১৪ এপ্রিল, ১৯৮৯) সকাল ৮-৮.৩০, আনন্দ শোভাযাত্রা
গেটটা খুলে দেয়া হলো, ঢাকের শব্দের সঙ্গে সঙ্গে ময়ূরবেশে মেয়েরা পা ফেললো শাহবাগ-টিএসসির রাস্তায়। শুরু হলো বৈশাখী আনন্দ শোভাযাত্রা। টিএসসি মোড়ে পৌঁছুতে পৌঁছুতে অসংখ্য মানুষ যুক্ত হলো এর সঙ্গে। যারা বছরের প্রথম দিনে এক জমকালো আনন্দ আয়োজনে যুক্ত হতে চেয়েছিলেন…
দোয়েল চত্বর পেরিয়ে শোভাযাত্রা পৌঁছে গেল শিক্ষা ভবনের মোড়ে। পুলিশী বাধা। শঙ্কা ও উত্তেজনা। অনুমতি নেই বা নেয়া হয়নি! না, তা খুব সমস্যা তৈরি করেনি, কর্তব্যরত পুলিশই পথ দেখালো। আনন্দ শোভাযাত্রা হাইকোর্ট-মৎস্যভবন (তখনো নির্মাণ হয়নি) ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট, ঢাকা ক্লাব হয়ে শাহবাগ মোড়। পথে শোভাযাত্রা দীর্ঘই হয়েছে। আলোকচিত্রীরা ‘ছায়ানট’-এর ছবি তুলে ফিরে গেছেন অফিসে, গুটিকয় সৌখিন ক্যামেরায় তাই ইতিহাস রইলো তোলা।
১ লা বৈশাখে হবে শোভাযাত্রা এবং সেটা হবে আনন্দ শোভাযাত্রা। আনন্দই পারে স্বৈরাচারের জুজুর ভয় দূর করতে। স্বৈরাচার তো আনন্দকেই প্রথমে হত্যা করতে চায়, তো আনন্দই হোক স্বৈরাচার প্রতিরোধের প্রথম ও প্রধান হাতিয়ার
১ লা বৈশাখ ১৩৯৬ (১৪ এপ্রিল, ১৯৮৯), সকাল, আনন্দ শোভাযাত্রা শুরুর আগে
ঘুমে ঢুলু ঢুলু চোখে হল থেকে পৌঁছালাম চারুকলায়। ৭ টা বেজে কিছু সময় গেছে। শোভাযাত্রা শুরু হয়ে যাওযার কথা, কিন্তু না, গত রাতেই আমাদের মনে পড়েছিল রমনা বটমূলের ‘ছায়ানট’-এর কথা, তো ৮ টায় হবে শুরু। সহপাঠী মেয়েরা সেজেছে ময়ূরের সাজে। ছেলেরা এবং যারা গত ২০-২২ দিন ধরে হাতি, ঘোড়া, পাখি, ময়ূর ও মুখোশ ও মুকুট বানিয়ে চলেছি তাদের থেকে ক’জন হয়ে গেছি ঘোড়সওয়ার। আরো সকলের হাতে হাতে ধরা মুখোশের দণ্ড। সকলেরই মাথায় কাগজের মুকুট, মুকুট আরো আছে সাধারণের জন্য…
নজরুলের কবরের দেয়াল ঘেষে যে গেট, সেটা দিয়ে বের হবে আমাদের শোভাযাত্রা, ঢাকিরা প্রস্তুত। ঢাকের বাড়ি পড়ছে মাঝে মাঝেই।
কাল সন্ধ্যায় যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিতে গিয়ে ঘণ্টা হিসেবের রিক্সাওয়ালা আমায় ঢাকা শহর চেনালো, সে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি কি ছাপা হয়েছে? পোস্টার উল্টো করে লাগালাম বলে শামীমের সঙ্গে হাতা-হাতি হতে বাকি ছিল, সে পোস্টার কি মানুষের চোখে পড়েনি? মধ্যরাতের বৈশাখী স্বাগত সম্ভাষণ শেষে, আমাদের (চারুকলার ছাত্রদের) মানুষ মূর্খ ভাববে কিনা সে নিয়ে মাথা নাড়াতে নাড়াতেই মুকুল বাড়ৈ নিউ মার্কেট ও ইডেনের দেয়ালে পোস্টার সেটে দিল উল্টো করেই, তা কি কারোই চেখে পড়েনি?
আটটা বাজে, আমরা অপেক্ষমান। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও মানুষের চোখে পড়েছে, চোখে পড়েছে উল্টো পোস্টারও…মানুষ আসছে…বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারাই প্রধানত, তারা আসছে টিএসসির দিক থেকে। শাহবাগের দিক থেকে শুরু হলো মানুষের ঢল, সে ঢলে শিশুরাও আছে…
আনন্দ শোভাযাত্রা কেনো এ বৈশাখে?
আমরা খুঁজছিলাম এমন এক উপলক্ষ যা হাজার বছর ধরেই গ্রাম-বাংলার নাড়ির সঙ্গে প্রোথিত। যা কোনো ধর্মীয় পরিচয়ে পরিচিত নয়। হ্যাঁ, সেটা পহেলা বৈশাখ, বছরের প্রথম দিন। এদেশে ইংরেজ শাসন আগমনের আগে কিংবা ৩০-৪০ বছর আগেও এটাই ছিল বছরের প্রথম দিন। সারাবিশ্বেই প্রত্যেক জনগোষ্ঠিরই তাদের নিজেদের নববর্ষ আছে, যা আসলে ভূগোল, প্রকৃতি, কৃষি উৎপাদন ও বাণিজ্য যাত্রার হিসেবের খাতা। আমাদের সেটা ১লা বৈশাখ, এ দিনটি পশ্চিমে সিন্ধু উপতক্যা থেকে পূর্বের ইন্দোনেশীয়া পর্যন্ত বছরের প্রথম দিন, ভিন্ন ভিন্ন নামে। এসব অঞ্চলে আরব, পারসী ও আফগানদের (মুসলমান) আগমনের আগে থেকেই এটি বছরের প্রথম দিন। মুঘলেরা রাজস্ব ও বাণিজ্য সুবিধার প্রয়োজনে এটাকেই পারসীক নওরোজের সঙ্গে সমন্বয় করে নিয়েছিল। একথা New Year’s Day লিখে গুগল কিংবা উইকিপিডিয়ায় খোঁজ দিলে বিস্তারিত জানা যাবে।
কীভাবে শোভাযাত্রা
এটার একটু ইতিহাস আছে। আজকাল অনেকই বলছে এ শোভাযাত্রা যশোরে শুরু হয়েছিল। কথাটা ভুল নয়, কিন্তু কথাটা সঠিকও নয়। মনে রাখতে হবে এটি যশোর শোভাযাত্রার ঢাকাই রূপ নয়। যেমন এটি নয় রিও কার্নিভ্যাল কিংবা মহরমের তাজিয়া মিছিল কিংবা রথযাত্রা। যশোরের অভিজ্ঞতা ঢাকা চারুকলার শোভাযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এটা শতভাগ ঠিক, কিন্তু যশোরের শোভাযাত্রার প্রেক্ষিত সম্পূর্ণ ভিন্ন।
ঢাকায় এর শুরুতে দুটো প্রধান বিষয় কাজ করেছিল, একটি চারুকলার তৎকালীন অচলাবস্থা অপরটি রাজনৈতিক। চারুকলায় তখন বার্ষিক প্রদর্শনীটিও ঠিকমত হতো না, বর্তমান জয়নুল গ্যালারী ছিল ভাঙা ডংকি (চারুকলার ছাত্রদের আসন বিশেষ), ইঁদুর, তেলাপোকা ও মাকড়শার নিরাপদ আশ্রয়। শিল্পকলা বা জাদুঘর গ্যালারীতে বছরে কী দু’বছরে দর্শকের ভূমিকা পালন করা ছাড়া ছাত্রদের আর কোনো সুযোগ নেই। এর বাইরে এলিয়ন্স ও জার্মান কালচারাল সেন্টারের নিয়মনীতি ও সাজু আর্ট গ্যালারীর পছন্দ অপছন্দ। ঢাকা চারুকলার বহু বছরের পুরোনো প্রি-ডিগ্রী, বিএফএ ও এমএফএর সিলেবাস।
দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে এরশাদ শাসন, এরশাদ ভ্যাকেশন আর ছাত্রদল, ছাত্রলীগ (আওয়ামী), ছাত্রলীগ (জাসদ), শিবির ও ছাত্রসমাজ (এরশাদ) এর হল দখলের লড়াই যেন চর দখলের নাগরিক রূপ। আনন্দ বলতে শাহনেওয়াজ ভবনের প্রবেশ পথের পাশে রাখা পাইপের উপরে বসে ক’জন মিলে গলা ছেড়ে গান, ‘হরিণ একটা বান্ধা ছিল গাছেরও তলায়…’
শোভাযাত্রার প্রতীক বা মোটিভসমূহ বেছে নেয়া হলো গ্রাম্য শিশুর হাজার বছরের খেলনা থেকে, যা আমাদের লোক ঐতিহ্যের বাহক। হাতি, ঘোড়া, পাখি আর মুখোশ।
১৯৮৮-এর বন্যা আমাদের (ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, চারুকলা) এক কঠিন প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল– আমাদের পরিচয় কী ও সামরিক স্বৈরাচারের বিপরীতে আমরা কীভাবে লড়তে পারি? হ্যাঁ, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট পরবর্তী যে সামরিক শাসনের পুনরাগমন ঘটে, হ্যাঁ পুনরাগমনই বলছি, পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের কথা স্মরণে রেখেই, ব্রিটিশ শাসনের কথাও মনে রাখছি। এগুলো মনে না রাখলে বলতে হয় বাংলাদেশের প্রথম সামরিক শাসন, আর সেটা হবে ইতিহাসের খণ্ডিত অধ্যায়ন। এরশাদ সে ধারাবাহিকতারই অংশমাত্র। জগতের সকল স্বৈরাচারের ন্যায় ব্রিটিশ, পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি স্বৈরাচার ধর্ম ও সাম্প্রদায়ীকতার ‘Divide & Rule’এর নীতি মেনেই ক্ষমতা সুসংহত করে ও করতে চায়। জিয়া-এরশাদ তার থেকে ভিন্ন কিছু নয়। তাই এ শোভাযাত্রার আয়োজন কালটি ছিল গোপনীয় ও সতর্কতার। গোপনীয় রাখতে গিয়ে চৈত্র-সংক্রান্তীর বিকেলে আমরা আবিষ্কার করেছিলাম এ শোভাযাত্রার খবর পত্রিকাওয়ালারাও জানে না, এমন কী চারুকলার অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও জানে না কী হচ্ছে! কর্মী সংখ্যাও ছিল মাত্র ২০-২৫ জন এবং আমি হচ্ছি তাদের মধ্যে কনিষ্ঠতম ও হাতি বা মুখোশ বানাতে অযোগ্যতম।
১৯৮৮-এর বন্যার পর থেকেই আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছিল। সেটা মোল্লা ভাইয়ের দোকানে, শাহনেওয়াজ ভবনের পাইপের উপর, সকাল-সন্ধ্যা-রাত…
সে আলোচনাতেই আমরা আবিষ্কার করি ছায়ানটের অনুষ্ঠানের শক্তি এখন নিছক আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়েছে। নাগরিক বাংলার রবীন্দ্র-নজরুলকে রক্ষা বা হৃদয়ে মননে ধারণের চেয়েও বৃহত্তর এক প্রয়াস নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। ছায়ানটের অভ্যূদয় ও ক্রমবিকাশ ঢাকা কেন্দ্রিক নাগরিক ইতিহাসের প্রথম পাঠ, যার ফলাফল মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে তৎকালীন নাগরিকবৃন্দের ভূমিকাতেই পাওয়া যায়। কিন্তু এখন সময় এসেছে যুক্ত করতে হবে ঢাকা নগরের সঙ্গে গ্রাম বাংলাকে, এমনভাবে যে, এ পথ ধরেই গ্রাম এগিয়ে আসবে নগরের পথে আর নগর ভুলবে না তার অতীত ও শেকড়, এটা হওয়া দরকার ছিল মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরেই, হয়নি (কলকাতার ঠাকুর পরিবারের বাংলা লোকায়তকে সাগ্রহে উৎসাহ প্রদান এবং ঠাকুর পরিবারের ভক্ত-অনুকারী বৃন্দের লোকায়তকে উপেক্ষার ইতিহাস কিংবা জয়নুলের লোকশিল্প যাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রয়াস ও তা পূর্ণ হতে না পারা, এ ধারণারই প্রমাণ), না হোক এখন হতে তো ক্ষতি নেই।
সেটা ভাবতে গিয়েই আমরা অনুসন্ধানের বিশ্বভ্রমনও বাদ দেইনি। আমরা গিয়েছি রিও, থাইল্যান্ড, চীন, পারস্য, আরব, মিশর ও ইউরোপের আনাচে কানাচে। কিন্তু ‘ঘর হইতে দু-পা ফেলিয়া’ মহরম তাজীয়া মিছিল আর রথযাত্রা আমাদের চোখ খুলে দিল।
১ লা বৈশাখে হবে শোভাযাত্রা এবং সেটা হবে আনন্দ শোভাযাত্রা। আনন্দই পারে স্বৈরাচারের জুজুর ভয় দূর করতে। স্বৈরাচার তো আনন্দকেই প্রথমে হত্যা করতে চায়, তো আনন্দই হোক স্বৈরাচার প্রতিরোধের প্রথম ও প্রধান হাতিয়ার (প্রসঙ্গত, রমনার বটমূলে বোমা হামলার পর ও তার পরের বছর আনন্দ শক্তিকে অনুভব করেছিলাম নতুন অনন্যতায়)
শোভাযাত্রার প্রতীক বা মোটিভসমূহ বেছে নেয়া হলো গ্রাম্য শিশুর হাজার বছরের খেলনা থেকে, যা আমাদের লোক ঐতিহ্যের বাহক। হাতি, ঘোড়া, পাখি আর মুখোশ। চাইনিজ উন্নয়ন পণ্যের আগমনের আগে এগুলো সবই গ্রাম বাংলার বৈশাখী মেলাতে পাওয়া যেত। এখনো কিছু কিছু পাওয়া যায়। শোভাযাত্রার জন্য যখন এসব মোটিফ পুনঃনির্মাণ করা হয় তখন স্বাভাবিকভাবেই নির্মাণ উপাদান, আকার, আয়তন ও ব্যবহার বিধির পরিবর্তন ঘটানো হয়। আর সেটা করা হয় গণরূপ বা বৈশ্বিকরূপ নির্মাণের লক্ষ্যেই। যা বিশ্বের সকলকেই জানান দেয় এটা আমাদের, আবহমান বাংলার; হিন্দুর কিংবা মুসলমানের, বুদ্ধের কিংবা খ্রিস্টানের, নগরবাসীর কিংবা গ্রাম-মফস্বল বাসীর। এটাই শিল্পের শক্তি। কুপমুণ্ডক স্বৈরাচার সাম্প্রদায়িক দানব এটাকেই ভয় পায়। কারণ সে আমিত্বের শক্তিকে সকলের সঙ্গে মিলতে দিতে চায় না। ‘আমি’ যখন সকলের সঙ্গে মেলে সে তখন গণতন্ত্র নির্মাণ করে, সে তখন মানুষ হয়ে ওঠে। সে বোঝে অপরের অস্তিত্বই তাকে মহান করে তোলে, অপরের বিনাশ তাকেও পরিচয়হীন করে তোলে। হারিয়ে যেতে থাকে সকল সুন্দর। ধর্ম পরিচয়, জাতি পরিচয়, ধনমাত্রার পরিচয় যার যার; সে পরিচয় বজায় রেখেই এ পৃথিবী এ রাজপথ সকলের। এটাই ‘আমি’র আমরা হয়ে ওঠা। আমারই দেশ সব মানুষের…
দিনলিপিতে আমরা ক’জন
চারুকলা পরিস্থিতির পরিবর্তনের ইচ্ছে নিয়ে বা চারুকলাকে সৃষ্টিশীলতার আনন্দযাত্রায় বেগবান করতে ২৯ মে ৮৮, প্রথম বর্ষ (পুরাতন)-ছাত্ররা জয়নুল স্মরণে প্রি-ডিগ্রীর দেয়ালে কাগজ সেটে একটা প্রদর্শনী করে ফেললো আর ২৮ ডিসেম্বর ৮৮-তে ২য় বর্ষ (নতুন)-আর ১ম বর্ষ (পুরাতন)-এর কিছু ছাত্রের উদ্যোগে জয়নুল জন্মোৎসবে একটা শোভাযাত্রা হলো, এ শোভাযাত্রায় ছিল কাগজে তৈরি বড় বড় পেন্সিল, তুলি আর রঙের টিউব। যা চারুকলা থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পাঠাগার, মধুর কেন্টিন হয়ে কলাভবন প্রদক্ষিণ করে চারুকলায় ফিরে আসে।
তারপরের ঘটনা, সম্ভবত সেটা ছিল ১৯ মার্চ, ১৯৮৯, আমরা বসেছিলাম চারুকলার ছাপচিত্র বিভাগের পেছনে (এখন সেখানে কংক্রিটের বসবার ব্যবস্থা করা হয়েছে) উদ্দেশ্য এবারের পয়লা বৈশাখে একটা শোভাযাত্রা নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করা। সেদিন উপস্থিত ছিলেন তরুণ ঘোষ, কামাল পাশা চৌধুরী, হিরন্ময় চন্দ, বিপুল শাহ, ২য় বর্ষ (নতুন)-এর শাখওয়াত হোসেন, ফরিদুল কাদের, শহীদ আহমেদ মিঠু, কামরুল, আহসান হাবীব লিপু ও সালেহ আহমেদ, ছিল ১ম বর্ষ (পুরাতন)-এর আমিনুল হাসান লিটু, শামীনুর রহমান ও নাদান আমি নাজিব তারেক।
২য় দিন আমরা বসলাম ২১-২২ মার্চ একই জায়গায়, সেদিন যুক্ত হলেন মুখোশের শিল্পী সাইদুল হক জুইস, তরুণতম শিক্ষক শিশির ভট্টাচার্য এবং মাহবুব জামাল শামীম (চারুপিঠ, যশোর শোভাযাত্রার প্রধান নাম), ফজলুল করিম কাঞ্চন, মনিরুজ্জামান শিপু, ফারুখ হেলাল, আদিব সাঈদ শিপু সহ আরো ক’জন। তরুণ শিক্ষকদের মধ্যে নিসার হোসেনও ছিলেন, কিন্তু চারুকলার রাজনীতি তাঁর মতো আরো ক’জনকে আড়ালেই রাখলো (সংযুক্ত সকলকেই অনুরোধ করছি এ নিয়ে লিখবার জন্য)। প্রথমে নিজেদের পকেটের টাকা ও খেপের রঙ তুলি দিয়েই কাজ শুরু হলো। এখন যেখানে (মিজানের) ক্যান্টিন সেখানে। এখানে একটা বিশাল গুদাম ঘরের মত ছিল, তার ভেতরে। বলেছি গোপনীয়তার কথা। কাজ শুরুর পরে প্রথম ক’দিন যতটুকু কাজ হতো তা খড় ও চট দিয়ে ঠেকে রাখা হতো। খুব শিঘ্রই বোঝা গেল এভাবে হবে না। প্রকাশ্য হতে হবে। আর অর্থের যোগান দরকার। জানানো হলো ক’জন শিক্ষককে, পাওয়া গেল স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াই। সহযোগিতার হাত গুটি কয় মাত্র। সবচেয়ে আবাক করা সহযোগিতা দিলেন এক বিপরীত রাজনীতির শিক্ষক। তার সহযোগিতা না পেলে আমরা হতে পারতাম মৌলবাদের আক্রমনের শিকার। না, তার নাম এখানে অনুচ্চারিতই থাক। যারা সহযোগিতা করেছিলেন তাদের নাম উচ্চারণের ভার আমার বয়োজ্যেষ্ঠদের কাঁধেই রাখতে চাই। সেটা তারা আরো বিস্তারিত বলতে সক্ষম, সর্বকনিষ্ঠের অনেক কিছুই আড়াল থেকে দেখা। নিরব সহযোগিতা ছিল চারুকলার বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় সকল কর্মচারীর। আর আমাদের মোল্লা ভাইয়ের নাম বলতেই হয়, প্রতিদিন বিকেলের পর আমাদের জন্য ক’কাপ চা ছিল বিনামূল্যে।
হাতি, ঘোড়া, পাখি, ময়ূর ইত্যাদি নির্মাণের মূল কুশীলব ছিলেন তরুণ’দা, জুইস ভাই, শামীম ভাই, হিরণ’দা। প্রধান সমন্ময়ক ছিলেন কামাল ভাই। অশোক তরু ছিলেন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগে এবং তাদের অহেতুক নাক গলানো থেকে আমাদের বাঁচাতে (অর্থ নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে)। পোস্টার ডিজাইন করেছিলেন তরুণ ঘোষ। বাকী যাদের নাম উচ্চারিত ও অনুচ্চারিত তাহারা সকলেই মাথাদের মতোই নিজ নিজ ভূমিকায় অনন্য কর্মী। শেষ চৈত্র-সংক্রান্তির বিকেলে প্রচার প্রচারণার দায়িত্ব আমার কাঁধে অর্পণ করা হয়। আমাকে সহযোগিতা করেছিল লিটু, অঞ্জন, শামীম, মুকুল এবং তিনজন নাম না জানা রিক্সাওয়ালা ও ছোট বড় টোকাইরা। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিল মূলত ছোটরা, প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রীরা। গুটিকয় সিনিয়র শোভাযাত্রায় গিয়েছিলেন।
এতোগুলো বছর পরে একথা বলতেই পারি– যা আজ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে পরিচিত, তা আসলে চৈত্রে রচিত বৈশাখী গান, প্রতি চৈত্রে কি যুক্ত হবে না নতুন সুর ও কলি?
পরিশিষ্ট
১৯৯০ খ্রিস্টাব্দ বা বাংলা ১৩৯৭ থেকে এই ঢাকা চারুকলার ছাত্ররা নিজ নিজ শহরে এ শোভাযাত্রাকে নিয়ে যেতে থাকে, এর দ্বারা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া এ শোভাযাত্রা ছিল ব্রিটিশ-পাকিস্তান-বাংলাদেশি স্বৈরাচারের সমাজকে ধর্মীওকরণের মাধ্যমে বিভক্ত করবার বিপরীতে এক প্রতিবাদ ও আত্ম-অনুসন্ধানের পথে যাত্রা। দ্বিতীয়বারের আয়োজন গণমাধ্যমের চোখের সামনেই হতে থাকে। ১৩৯৭-এর শোভাযাত্রার প্রস্তুতি থেকে শেষের অজস্র ছবি তাই পত্রিকার পাতায় পাতায়।
অবশ্যই এ রকম আয়োজনে যে সতর্কতা প্রয়োজন তা সর্বদা রক্ষিত হয়নি বা হয় না। বছর বছর কতৃত্ব ও কৃতিত্বের দ্বন্দ্বের ফাক গলে ঢুকে পড়ে বিবিধ পশ্চাৎপদতা ও অচলায়তন এবং পৌনঃপুনিকতা ও অনুসন্ধানহীনতা। কখনো রাজনীতি ছাপিয়ে ওঠে মৌলিক চেতনাকে আড়াল করে, এমন কী বিপরীত রাজনীতি বা অপ-সংস্কৃতিও দখল নেয় পরিচালনার আসন। গত ২৭ বছরে এ আনন্দ শোভাযাত্রাও পার হয়েছে এ রকমই কিছু অধ্যায়। এরপরও যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন ধারণা, উৎপাদন ও পণ্য। যার কিছুটা শিল্প, বাকিটা নিছক অর্থ লেনদেন। হ্যাঁ, মনে করিয়ে দিতে চাই জগতের সকল নববর্ষ মানে ‘হালখাতা’, পহেলা বৈশাখও তাই, আর মুদি দোকানিরও থাকে নির্দিষ্ট পণ্য বা বিনিময় তালিকা। সেটা তাকে মেনে চলতে হয়। সেটাই ব্রান্ডিং। এতোগুলো বছর পরে একথা বলতেই পারি– যা আজ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে পরিচিত, তা আসলে চৈত্রে রচিত বৈশাখী গান, প্রতি চৈত্রে কি যুক্ত হবে না নতুন সুর ও কলি?
শুভেচ্ছা, অভিন্দন, কৃতজ্ঞতা তাদের যারা আমাকে ও পুরো বাংলাদেশকে আনন্দ শোভাযাত্রার বা মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো একটি অনন্য অভিজ্ঞতার স্বাদ দিয়েছেন তাদের।
১০ এপ্রিল ২০১৬ নাজিব তারেক : চিত্রকর ও ব্রান্ড কনসালটেন্ট
মাসুদ করিম - ২৮ এপ্রিল ২০২৪ (৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ)
How Africa’s National Liberation Struggles Brought Democracy to Europe: The Seventeenth Newsletter (2024)
https://thetricontinental.org/newsletterissue/carnation-revolution/
Dear friends,
Greetings from the desk of Tricontinental: Institute for Social Research.
Fifty years ago, on 25 April 1974, the people of Portugal took to the streets of their cities and towns in enormous numbers to overthrow the fascist dictatorship of the Estado Novo (‘New State’), formally established in 1926. Fascist Portugal – led first by António de Oliveira Salazar until 1968 and then by Marcelo Caetano – was welcomed into the North Atlantic Treaty Organisation (NATO) in 1949, the United Nations in 1955, and the Organisation for Economic Co-operation and Development in 1961 and signed a pact with the European Economic Community in 1972. The United States and Europe worked closely with the Salazar and Caetano governments, turning a blind eye to their atrocities.
Over a decade ago, I visited Lisbon’s Aljube Museum – Resistance and Freedom, which was a torture site for political prisoners from 1928 to 1965. During this time, tens of thousands of trade unionists, student activists, communists, and rebels of all kinds were brought there to be tortured, and many were killed – often with great cruelty. The ordinariness of this brutality permeates the hundreds of stories preserved in the museum. For instance, on 31 July 1958, torturers took the welder Raúl Alves from Aljube Prison to the third floor of the secret police’s headquarters and threw him to his death. Heloísa Ramos Lins, the wife of Brazil’s ambassador to Portugal at the time, Álvaro Lins, drove by at that moment, saw Alves’ fatal fall, and told her husband. When the Brazilian embassy approached the Portuguese Interior Ministry to ask what had happened, the Estado Novo dictatorship responded, ‘There is no reason to be so shocked. It is merely an unimportant communist’.
It was ‘unimportant communists’ like Raúl Alves who initiated the revolution of 25 April, which built on a wave of workers’ actions across 1973, beginning with the airport workers in Lisbon and then spreading to textile workers’ strikes in Braga and Covilha, engineering workers’ strikes in Aveiro and Porto, and glass workers’ strike in Marinha Grande.
Around this time, the dictator Caetano read Portugal and the Future, written by General António de Spínola who was trained by commanders of the fascist General Francisco Franco during the Spanish Civil War, led a military campaign in Angola, and was formerly the Estado Novo’s governor in Guinea-Bissau. Spínola’s book argued that Portugal should end its colonial occupation since it was losing its grip on Portuguese-controlled Africa. In his memoirs, Caetano wrote that when he finished the book, he understood ‘that the military coup, which I could sense had been coming, was now inevitable’.
What Caetano did not foresee was the unity between workers and soldiers (who themselves were part of the working class) that burst through in April 1974. The soldiers were fed up with the colonial wars, which – despite the great brutality of the Estado Novo – had failed to quell the ambitions of the people of Angola, Cape Verde, Guinea-Bissau, Mozambique, and São Tomé and Príncipe. The advances made by the African Party for the Independence of Guinea-Bissau and Cape Verde (PAIGC), Front for the Liberation of Mozambique (FRELIMO), and People’s Movement for the Liberation of Angola (MPLA) were considerable, with Portugal’s army losing more soldiers than at any time since the eighteenth century. Several of these formations received assistance from the USSR and East Germany (DDR), but it was through their own strength and initiative that they ultimately won the battles against colonialism (as our colleagues at the International Research Centre on the DDR have documented).
On 9 September 1973, soldiers who had been sent to Guinea-Bissau met in Portugal to form the Armed Forces Movement (MFA). In March 1974, the MFA approved its programme Democracy, Development, and Decolonisation, drafted by the Marxist soldier Ernesto Melo Antunes. When the revolution erupted in April, Antunes explained, ‘A few hours after the start of the coup, on the same day, the mass movement began. This immediately transformed it into a revolution. When I wrote the programme of the MFA, I had not predicted this, but the fact that it happened showed that the military was in tune with the Portuguese people’. When Antunes said the ‘military’, he meant the soldiers, because those who formed the MFA were not more senior than captains and remained rooted in the working class from which they had come.
In December 1960, the United Nations General Assembly proclaimed the ‘necessity of bringing to a speedy and unconditional end colonialism in all its forms and manifestation’. This position was rejected by the Estado Novo regime. On 3 August 1959, Portuguese colonial soldiers fired on sailors and dockworkers at Pidjiguiti at the Port of Bissau, killing over fifty people. On 16 June 1960, in the town of Mueda (Mozambique), the Estado Novo colonialists fired on a small, unarmed demonstration of national liberation advocates who had been invited by the district administrator to present their views. It is still not known how many people were killed. Then, on 4 January 1961, a strike at Baixa do Cassange (Angola) was met with Portuguese repression, killing somewhere between 1,000 and 10,000 Angolans. These three incidents showed that the Portuguese colonialists were unwilling to tolerate any civic movement for independence. It was the Estado Novo that imposed the armed struggle on these parts of Africa, moving the PAIGC, MPLA, and FRELIMO to take up guns.
Agostinho Neto (1922–1979) was a communist poet, a leader of the MPLA, and the first president of independent Angola. In a poem called ‘Massacre of São Tomé’, Neto captured the feeling of the revolts against Portuguese colonialism:
It was then that in eyes on fire
now with blood, now with life, now with death,
we buried our dead victoriously
and on the graves recognised
the reason for these men’s sacrifice
for love,
and for harmony,
and for our freedom
even while facing death, through the force of time
in blood-stained waters
even in the small defeats that accumulate towards victory
Within us
the green land of São Tomé
will also be the island of love.
That island of love was not just to be built across Africa, from Praia to Luanda, but also across Portugal. On 25 April 1974, Celeste Caeiro, a forty-year-old waitress, was working at a self-service restaurant called Sir in the Franjinhas building on Braancamp Street in Lisbon. Since it was the restaurant’s one-year anniversary, the owner decided to hand out red carnations to the customers. When Celeste told him about the revolution, he decided to shut down Sir for the day, give employees the carnations, and encourage the employees to take the carnations home. Instead, Celeste headed to the city centre, where events were unfolding. On the way, some soldiers asked her for a cigarette, but instead, she put a few carnations into the barrels of their guns. This caught on, and the florists of Baixa decided to give away their in-season red carnations to be the emblem of the revolution. That is why the 1974 revolution was called the Carnation Revolution, a revolution of flowers against guns.
Portugal’s social revolution of 1974–1975 swept large majorities of people into a new sensibility, but the state refused to capitulate. It inaugurated the Third Republic, whose presidents all came from the ranks of the military and the National Salvation Junta: António de Spínola (April–September 1974), Francisco da Costa Gomes (September 1974–July 1976), and António Ramalho Eanes (July 1976–March 1986). These were not men from the ranks, but the old generals. Nonetheless, they were eventually forced to surrender the old structures of Estado Novo colonialism and withdraw from their colonies in Africa.
Amílcar Cabral (1924–1973), who was born one hundred years ago this September and who did more than many to build the African formations against Estado Novo colonialism, did not live to see the independence of Portugal’s African colonies. At the 1966 Tricontinental conference in Havana, Cuba, Cabral warned that it was not enough to get rid of the old regime, and that even more difficult than overthrowing the regime itself would be to build the new world out of the old, from Portugal to Angola, Cape Verde to Guinea-Bissau, Mozambique to São Tomé and Príncipe. The main struggle after decolonisation, Cabral said, is the ‘struggle against our own weaknesses’. This ‘battle against ourselves’, he continued, ‘is the most difficult of all’ because it is a battle against the ‘internal contradictions’ of our societies, the poverty borne of colonialism, and the wretched hierarchies in our complex cultural formations.
Led by people like Cabral, liberation struggles in Africa not only won independence in their own countries; they also defeated Estado Novo colonialism and helped bring democracy to Europe. But that was not the end of the struggle. It opened new contradictions, many of which linger today in different forms. As Cabral often said as the closing words to his speeches, a luta continua. The struggle continues.
Warmly,
Vijay