সুপারিশকৃত লিন্ক : ডিসেম্বর ২০২৩

মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিন্ক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে। ধন্যবাদ।

আজকের লিন্ক

এখানে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই সুপারিশ করুন এখানে। ধন্যবাদ।

৬ comments

  1. মাসুদ করিম - ১ ডিসেম্বর ২০২৩ (১০:১১ পূর্বাহ্ণ)

    দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন: আসন প্রতি প্রার্থী গড়ে ৯ জন, এক চতুর্থাংশই স্বতন্ত্র
    https://bangla.bdnews24.com/bangladesh/yodqq10vy7
    তিনশ আসনে মনোনয়ন জমা পড়েছে ২৭১৩টি; তার মধ্যে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ১৯৬৬ জন, বাকি ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র।

    বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশের ৩০০ আসনে মোট ২৭১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

    তাদের মধ্যে ৩২ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ১৯৬৬ জন, বাকি ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

    ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হয় বৃহস্পতিবার বিকালে। সারা দেশ থেকে আসা তথ্য সমন্বয় করে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ শুক্রবার মনোনয়ন জমার পরিসংখ্যান সাংবাদিকদের জানান।

    এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার মোট প্রার্থীর এক চতুর্থাংশই স্বতন্ত্র। আর প্রতি আসনে গড়ে প্রার্থী হয়েছেন ৯ জন।

    রাজনৈতিক দল থেকে যত প্রার্থী

    জাতীয় পার্টি: ৩০৪ জন

    আওয়ামী লীগ: ৩০৩ জন

    তৃণমূল বিএনপি : ১৫১ জন

    জাসদ: ৯১ জন

    ইসলামী ঐক্যজোট: ৪৫ জন

    জাকের পার্টি: ২১৮ জন

    ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ: ৩৯ জন

    বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি: ৩৩ জন

    কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ: ৩৪ জন

    বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট: ৩৭ জন

    গণফ্রন্ট: ২৫ জন

    গণফোরাম: ৯ জন

    জমিয়তে ইসলাম বাংলাদেশ: ১ জন

    ন্যাশনাল পিপলস পার্টি: ১৪২ জন

    বাংলাদেশ মুসলিম লীগ: ২ জন

    বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন: ১৩ জন

    বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন: ৪৭ জন

    জাতীয় পার্টি (জেপি): ২০ জন

    বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল: ৬ জন

    গণতন্ত্রী পার্টি: ১২ জন

    বাংলাদেশ ন্যশনাল আওয়ামী পার্টি: ৬ জন

    বিকল্প ধারা বাংলাদেশ: ১৪ জন

    বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল: ১ জন

    বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি: ১৩ জন

    বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি: ১৮ জন

    বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস: ১ জন

    বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল): ৫ জন

    বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট: ৭৪ জন

    বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ): ৫৫ জন

    বাংলাদেশ কংগ্রেস: ১১৬ জন

    বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম): ৪৯ জন

    বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি: ৮২ জন

    স্বতন্ত্র প্রার্থী: ৭৪৭ জন

    এবার কী

    আওয়ামী লীগ প্রাথমিকভাবে ২৯৮টি আসনে দলের মনোনয়ন জমা দেয়। পরে ৫টি আসনে দুটি করে মনোনয়ন জমা পড়ে।

    সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি মনোনয়ন জমা দেয় ২৮৬ টি আসনে। পরে ১৮টি আসনে দুটি করে দলীয় মনোনয়ন জমা দেয়।

    শুক্র থেকে সোমবার পর্যন্ত এসব মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই চলবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল চলবে ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর। সেগুলো নির্বাচন কমিশনে নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

    প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার আগে দলীয়ভাবে জানাতে হবে তাদের চূড়ান্ত প্রার্থী কারা। যেসব আসনে একাধিক মনোনয়ন এখন রয়েছে, সেখানে চূড়ান্ত প্রার্থী থাকবে, বাকিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাদ পড়ে যাবেন।

    এরপর ১৭ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হলে জানা যাবে, কারা থাকছেন ৭ জানুয়ারি ভোটের লড়াইয়ে।

    ২০১৪ সালের স্মৃতি

    তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি ও তার মিত্রদের বর্জনের ডাকের মধ্যে ২০১৪ সালে নির্বাচন হয়েছিল। এবারও তাই হচ্ছে।

    ভোট বর্জনের পাশাপাশি তা প্রতিহতের চেষ্টায় হরতাল অবরোধ হয়েছে তখনও। সেসব কর্মসূচিতে ব্যাপক সহিংসতায় প্রাণ গেছে শতাধিক মানুষের। এবারও হরতাল অবরোধ চলছে টানা, তবে সহিংসতার মাত্রা কম।

    দশম সংসদ নির্বাচনের অংশগ্রহণ প্রশ্নেও জাতীয় পার্টিতে ছিল নানা নাটকীয়তা, এবারও সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখে শেষ দিকে এসেছে ভোটে আসার ঘোষণা। তবে দলের মধ্যে বিভেদ কাটেনি। রওশন এরশাদ ও তার অনুসারী নেতারা নির্বাচন থেকে দূরে।

    দশম সংসদ নির্বাচনের চিত্রটা ছিল উল্টো। রওশন ও তার অনুসারীরা ছিল ভোটে। জি এম কাদের ও এরশাদ অনুসারীদের অনেকেই ছিলেন ভোট থেকে দূরে।

    দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল ১২টি দল, তবে এবার সেই সংখ্যা প্রায় তিনগুণ। নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে ভোটে এসেছে ৩২টি। নিবন্ধিত এসব দলের সঙ্গে জোট করে আছে অনিবন্ধিত আরও বেশ কিছু দল।

    ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাই ভোট থেকে দূরে ছিল। তবে এবার বিএনপির বেশ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য, নির্বাহী কমিটির নেতা এমনকি একজন ভাইস চেয়ারম্যান দল ছেড়ে আওয়ামী লীগে এসে ভোটে অংশ নিচ্ছেন।

    দশম সংসদ নির্বাচনের তুলনায় এবার মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে প্রায় তিনগুণ। এর কারণ কেবল বেশি দলের অংশগ্রহণ নয়, আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিলেও নৌকার বিরুদ্ধে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র ভোট করতে বাধা না দেওয়ার নীতি নিয়েছে। এ কারণে আবার অবরোধ-হরতালের মধ্যেও আসনে আসনে নির্বাচনি আমেজ টের পাওয়া যাচ্ছে নানাভাবেই।

    আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ঘোষণার দিন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বলেছেন, কোনো আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত দেখতে চান না তিনি। এমনটি হওয়ার চেষ্টা হলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। এরপর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া নেতারা উৎসাহের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

    এমনকি তিনবারের সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকও নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার মানসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

    তবে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি যে এরকম থাকবে না, সে ইংগিতও এসেছে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে।

    আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “কোন কোন আসনে কারা কারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে, আর তাদের মধ্যে আমাদের দলের কারা, সেই বিষয়গুলো জানতে হলে পুরো তালিকা পেতে হবে। আশা করি শুক্রবার দুপুরের মধ্যে পেয়ে যাব। তালিকা পাওয়ার পর আমরা এটা নিয়ে বসব, সেখানে আমাদের পরবর্তী পরিকল্পনা ঠিক করব।”

    বিএনপি-জামায়াতের বর্জনের মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল মোট ১ হাজার ১০৭টি, বাছাইয়ের পর টিকে ছিলেন ৮৭৭ জন। সেবার ১৫৩টি আসনে একজন প্রার্থী ছিল বলে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যান।

    শেষ পর্যন্ত প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৮৬১ জন। তাদের মধ্যে দলীয় ১ হাজার ৭৩৩ জন; বাকি ১২৮ জন ছিলেন স্বতন্ত্র।

    ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী সংখ্যা এবারের চেয়ে কিছুটা বেশি ছিল। ওই বছর দলীয় মনোনয়নপত্র ছিল ২ হাজার ৫৬৭টি, স্বতন্ত্র মনোনয়ন ছিল ৪৯৮টি।

  2. মাসুদ করিম - ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ (৩:৩৪ পূর্বাহ্ণ)

    Bangladesh pull off quiet triumph at a time of major upheaval
    https://www.espncricinfo.com/story/ban-vs-nz-1st-test-bangladesh-pull-off-quiet-triumph-at-a-time-of-major-upheaval-1411355

    Najmul Hossain Shanto and Taijul Islam walked down the stairs from the picturesque Bangladesh dressing room, towards the post-match presentation area. There was no real rush. The usually crowded hangers-on zone, somewhere near the dressing room and the presentation area in Bangladeshi stadiums, was nearly empty. It was only 11am in Sylhet and Bangladesh’s resounding win over New Zealand in Sylhet was slowly sinking in.

    The Bangladesh players had done the usual end-of-match protocols before walking into the dressing room. Only Shanto and Taijul walked out. Mushfiqur Rahim watched briefly from the window. There was very little obvious celebration from the team. The 18,000-capacity stadium was all but empty too.

    Selector Habibul Bashar and media manager Rabeed Imam were standing in front of the Bangladesh dugout. Bashar, the former Bangladesh captain, wondered who would get the Player-of-the-Match award. He was mostly convinced Taijul should get it for his 10-wicket match haul. “You can’t really forget Shanto’s innings too,” he said. “He scored that century on the third day, getting us on the victory path.”

    The jovial Bashar is however never far from a punchline, even if it is at his own expense. “Shanto is the first Bangladeshi to get a Test century on captaincy debut, right? I am the only captain to get a pair on captaincy debut.”

    The only sound of victory at this stage was the roll of laughter that followed Bashar’s tale, and the text messages congratulating him.

    It may seem like the quietest of wins for Bangladesh, but its magnitude is palpable to those within and outside the dressing room. If you put Sylhet against what went on in the World Cup, the picture becomes clearer. Bangladesh lost seven out of nine games in India, and the fans turned their backs on the team to the extent that they even called off the protests they had planned at the Dhaka airport. Nobody cared, and it showed.

    There are interesting parallels with Bangladesh’s famous victory in the Mount Maunganui Test last year. Then, Bangladesh had had a woeful T20 World Cup campaign followed by a disastrous home series against Pakistan. Key players were injured. Nobody paid much attention, until they conjured up a miracle in New Zealand.

    This one in Sylhet didn’t look like a miracle but turning around from such a World Cup campaign wasn’t going to be easy. The regular captain and vice-captain were out. Two of the main pacers were missing. The senior opener remained injured.

    It didn’t matter. The stand-in captain scored a crucial century. One of the young openers made a fifty, and an unheralded and hugely underrated left-arm spinner took 10 wickets.

    Shanto hailed the team’s effort against one of the top Test sides in world cricket, reminding them not to forget what had worked for them in this game.

    “I am happy to win my first Test as captain,” Shanto said. “Everything went to plan. We played a good game. Winning a Test, against any team, anywhere, is a great feeling. They are a very good team definitely. They won the first WTC [World Test Championship] so to beat such a team, it brings a lot of confidence to the players. Our belief is slowly growing that we can do better in Tests. If we don’t forget these wins, what worked for us, we will raise our level in Tests.”

    Shanto insisted that Bangladesh’s dressing-room environment didn’t change after the World Cup, as the players understood that the reactions they would get depended highly on results.

    “Nothing has changed [since the World Cup],” he said. “There will be talk outside. Now that we won, they will say nice things. When we will lose, they will criticise us. It is beyond our control. We don’t even think about it.

    “We think about the process, and try to stick to it regularly. We won today but it wasn’t a perfect game. We have to talk about our mistakes, and then take it forward.”

    Bangladesh’s on-field chatter was audible throughout the game, reflecting both their own enjoyment of their performance and the lack of a crowd to drown them out.

    “I think we were a little more excited as we were playing well,” Shanto said. “Everyone enjoyed these four-and-a-half days. Maybe it was seen more today but the batters and bowlers took up the challenge. I think it is important how we handle and enjoy pressure and difficult moments.

    “I think it is disappointing that our fans don’t really like watching Test matches. Motivation comes from different places, but I don’t think we had this [criticism] in mind. We wanted to win this game. We wanted to do our work rather than focusing on who came and who didn’t.”

    Shanto also paid tribute to Taijul for his accuracy over long spells. Taijul took four wickets in the first innings and followed it up with a six-for in the second innings. He struck decisive blows including removing Kane Williamson twice in the game.

    “He is one of the best Test bowlers in recent years.” Shanto said. “His strength is to bowl in one spot for a long time. I tried to use him for long from one end with this belief. We didn’t plan anything different. He just wanted to bowl for a long time from one end.”

    Taijul said after the game that it was satisfying to beat New Zealand twice in two years, in different conditions. “We beat NZ in their conditions not too long ago,” he said. “When they came to our conditions, we beat them. We are successful. We believed in our process throughout this game, and thought that we would attack as soon as we get into a winning position.”

    While Bangladesh will celebrate this win in Sylhet, they know how important it is for them to repeat their processes in Dhaka to clinch the Test series.

    “There has to be some form of celebrations after such a big win,” Taijul said. “We celebrated on the field and in the dressing room. But yes, it is not the end of the series. We have to do well in Dhaka, and then we will see what happens.”

    Ultimately, it was a team effort that brought Bangladesh this memorable victory. Partnerships were key to their progress with both bat and ball. Bangladesh had the three highest batting partnerships in the match, including the 98-run stand between Mushfiqur Rahim and Shanto that played a pivotal role on the third day. On the fourth morning, the tail wagged with Mehidy Hasan Miraz. There were small but important contributions when it was much required.

    It was the same in the bowling department. Taijul, Mehidy and Nayeem Hasan tag-teamed New Zealand. Shanto said he had found it difficult to take the ball out of their hands. Taijul often played the attacker’s role, while Mehidy and Nayeem gave him perfect support from the other end. Mominul Haque’s three wickets in the first innings were crucial too.

    These partnerships were the major element missing in the World Cup. Bangladesh had the big stars at that tournament but they needed a team effort to get them across the line. It didn’t happen. They were vilified on social media. Fans turned their backs on them. Nobody really seemed to know or care that New Zealand had arrived in Bangladesh less than a week after the World Cup had ended. Everyone has had enough.

    Now, after Sylhet, they can’t get enough of Bangladesh 2.0.

    https://twitter.com/ESPNcricinfo/status/1730964599292445117

  3. মাসুদ করিম - ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ (৪:৪১ অপরাহ্ণ)

    We won’t stop speaking out about Gaza’s suffering – there is no climate justice without human rights
    Greta Thunberg and Fridays for Future Sweden
    https://www.theguardian.com/commentisfree/2023/dec/05/gaza-climate-justice-human-rights-greta-thunberg

    More than 15,000 people, of whom at least 6,000 were children. That’s how many people Israel has reportedly killed in the Gaza Strip in a matter of weeks – and those numbers are still rising. Israel has bombed basic societal infrastructure and civilian targets such as hospitals, schools, shelters and refugee camps. Israel has imposed a siege, preventing food, medicine, water and fuel from reaching the 2.3 million Palestinians trapped in the occupied Gaza Strip, leading Oxfam to accuse Israel of employing “starvation as a weapon of war”.

    Dozens of United Nations experts have described the situation as “a genocide in the making”, hundreds of international scholars have warned of an unfolding genocide and prominent Israeli genocide expert Raz Segal has called it “a textbook case of genocide”. But most of the world, particularly the so-called global north, is looking the other way.

    Despite these horrors, some have chosen to focus the public debate on attempts to delegitimise statements about Gaza made by young people in the climate justice movement. Contrary to what many have claimed, Fridays for Future has not “been radicalised” or “become political”. We have always been political, because we have always been a movement for justice. Standing in solidarity with Palestinians and all affected civilians has never been in question for us.

    Advocating for climate justice fundamentally comes from a place of caring about people and their human rights. That means speaking up when people suffer, are forced to flee their homes or are killed – regardless of the cause. It is the same reason why we have always held strikes in solidarity with marginalised groups – including those in Sápmi, Kurdistan, Ukraine and many other places – and their struggles for justice against imperialism and oppression. Our solidarity with Palestine is no different, and we refuse to let the public focus shift away from the horrifying human suffering that Palestinians are currently facing.

    Due to the amount of misdirected attention on us, as well as the number of misinterpretations of our position, we would like to once again clarify our stance. All Fridays for Future groups are autonomous, and this article represents the views of nobody but FFF Sweden.

    The horrific murders of Israeli civilians by Hamas cannot in any way legitimise Israel’s ongoing war crimes. Genocide is not self-defence, nor is it in any way a proportionate response. It also cannot be ignored that this comes within the broader context of Palestinians having lived under suffocating oppression for decades, in what Amnesty International has defined as an apartheid regime. While all of this alone would be reason enough to comment on the situation, as a Swedish movement, we also have a responsibility to speak up due to Swedish military cooperation with Israeli arms companies, which makes Sweden complicit in Israel’s occupation and mass killing.

    We are now seeing a sharp increase in antisemitic and Islamophobic statements, actions and hate crimes in Sweden and the world. The leader of the largest member of Sweden’s rightwing governing bloc is speaking of demolishing mosques, and the Israeli flag was burned in front of a synagogue in Malmö. This is unacceptable. We unreservedly condemn all forms of discrimination, including antisemitism and Islamophobia. Everyone speaking out on this crisis has a responsibility to distinguish between Hamas, Muslims and Palestinians; and between the state of Israel, Jewish people and Israelis.

    We grieve the lives lost over the past several weeks and are appalled by the fact that those numbers have been allowed to continue to rise. The death rate in the Gaza Strip is at a historic high, with thousands of children killed in just a few weeks. This amount of suffering is incomprehensible and cannot be allowed to continue. When UN experts call upon the world to act to prevent a genocide, as fellow humans, we have a responsibility to speak out.

    Demanding an end to this inexcusable violence is a question of basic humanity, and we call on everyone who can to do so. Silence is complicity. You cannot be neutral in an unfolding genocide.

    This article was written by:

    Greta Thunberg (she/her), a Swedish activist who inspired Fridays for Future, a movement of school strikes against global climate inaction

    Alde Nilsson (all pronouns), a global development student and climate justice activist with Fridays for Future Sweden

    Jamie Mater (they/them), a researcher and climate justice activist with Fridays for Future Sweden

    Raquel Frescia (she/they), a writer/researcher and climate justice activist with Fridays for Future Sweden

  4. মাসুদ করিম - ৬ ডিসেম্বর ২০২৩ (৩:৩১ অপরাহ্ণ)

    কার সঙ্গে কার লড়াই
    https://bangla.bdnews24.com/opinion/i6wclsi4at
    নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরু থেকে বিএনপি ভাঙার যে তৎপরতা ছিল তাতে কোনো মহলই সফল হয়নি বলে মনে করছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। নানা চাপ ও প্রলোভন থাকার পরও ‘দল ভাঙার প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা যায়নি।

    ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের প্রতিটিতেে গড়ে ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও যাচাই-বাছাই এবং জোট-মহাজোট ও মিত্রদের মধ্যে আসন ভাগাভাগির পর বলা যাবে আসন্ন নির্বাচনে ঠিক কতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

    ১৭ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ওই দিনই স্পষ্ট হবে এবারের নির্বাচনে কার সঙ্গে কার লড়াই হবে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী ২৮টি দলের কোনো একটি বিশেষ দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। কারণ সব আসনে কোনো দলই প্রার্থী দিতে পারেনি।

    কোন দল নির্বাচনে কয়টি আসন পাবে, সে ব্যাপারে আগাম মন্তব্য করা না গেলেও এটা এখনই প্রায় নিশ্চিত করে বলা যায় যে আগামী নির্বাচনের পর সরকার গঠন করবে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টিই আবারও সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হলেও সম্ভবত অনুগত বিরোধী দলের ভূমিকায় না-ও থাকতে পারে। কারণ রওশন এরশাদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। দেবর-ভাবির লড়াইয়ে দেবর শেষ পর্যন্ত ওয়াকওভার পেয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের কাছে আনুগত্যের পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়েছেন।

    দেশের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে মনে করা হয় বিএনপিকে। বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে না। যাওয়ার আর সুযোগও নেই এবার। নির্বাচনে না যাওয়ায় দলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।

    নির্বাচন যখন দুয়ারে দাঁড়ানো তখনও সরকার পতনের ‘এক দফা’ দাবি আদায়ে দিনের পর দিন দেশব্যাপী হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিরতি দিয়ে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকল বিএনপি। দলের ঘোষণা অনুযায়ী ৬ ডিসেম্বর ভোর ৬টা থেকে ৮ ডিসেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি শেষে আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে ঢাকাসহ সারাদেশের জেলা সদরে মানববন্ধন কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। আদৌ তারা মানববন্ধনের কর্মসূচি পালন করতে পারবে কিনা এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।

    কর্মসূচি পালন করতে পারুক বা না না পারুক, মানববন্ধন শেষে আবারও কর্মসূচি দেবে দলটি। হয়তো আবারও অবরোধ-হরতাল ডাকবে। বিএনপির নিয়মরক্ষার এই সব কর্মসূচির মধ্যেই রাজধানীসহ সারা দেশে জনজীবন বেশ স্বাভাবিকই আছে। দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল একটু কমলেও, থেমে থাকেনি। রাজপথে দলটির সিনিয়র নেতাদের দেখা নেই। মাঝেমধ্যে রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে গুটিকয়েক মানুষের ঝটিকা মিছিল ছাড়া চোখে পড়ার মতো কোনো পিকেটিংও নেই। দলটির এমন আন্দোলন কর্মসূচি গায়ে মাখছে না ক্ষমতাসীনরা।

    দ্বাদশ নির্বাচনের ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন এবং টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পথে ছুটছে আওয়ামী লীগ। ফলে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপির কর্মসূচি কি অচলাবস্থার বৃত্তে ঢুকে পড়েছে? কোন আশায় হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি টেনে নিয়ে যাচ্ছে দলটি সে প্রশ্নও আছে। অভিযোগ আছে, স্থায়ী কমিটিকে পাশ কাটিয়ে ‘লন্ডন’ থেকে আসা নির্দেশে অকার্যকর কর্মসূচির চক্রে পড়ে গেছে দলটি। এ অবস্থায় সিনিয়র অনেক নেতা যেমন হতাশ হয়ে পড়েছেন; তেমনি দলের তৃণমূলেও দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি।

    গত ২৮ অক্টোবর আন্দোলনের মহাযাত্রা পণ্ড হওয়ার মুহূর্তে ‘হ্যান্ড মাইকে’ পরের দিন ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে তারা প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার এবং শুক্রবার-শনিবার বিরতি দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ অথবা হরতাল কর্মসূচি করে যাচ্ছে।

    বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের খবর, চলমান আন্দোলনে কর্মসূচি নিয়ে দলটিতে দেখা দিয়েছে সমন্বয়হীনতা। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র নির্ভরযোগ্য কিনা, সেটা নিয়ে তর্ক থাকতে পারে। দাবি আদায়ে টানা হরতাল-অবরোধের মতো শক্ত কর্মসূচি না দিয়ে আন্দোলনের ধরনে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। বিএনপির সিনিয়র নেতারা সেটা আনতেও চান বলে জানা গেছে। তবে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রকাশ্যে কিছু না বললেও অবস্থাদৃষ্টে ধারণা করা যায় হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই তার মত।

    পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ২৯ নভেম্বর, বুধবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চলমান হরতাল-অবরোধের বাইরে বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় পরের দিন ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হরতালের শেষ দিন দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। কিন্তু দুপুরেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে রুহুল কবির রিজভীকে টেলিফোন করে রোববার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করার নির্দেশ দেন তারেক রহমান। পরে সন্ধ্যায় রিজভী কর্মসূচি ঘোষণা করলে হতচকিত হয়ে পড়েন দলের অনেক নেতাই। এ নিয়ে বিএনপির এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সবই যদি লন্ডন থেকে একক সিদ্ধান্তে হয় তাহলে আর স্থায়ী কমিটি দিয়ে কি হবে। তিনি একটি কিচেন কেবিনেট করেছেন শুনলাম, তাদের সঙ্গে আলাপ করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন’।

    সত্যাসত্য যাচাই করা কঠিন। তবে বিএনপি যে লন্ডন থেকে পরিচালিত হচ্ছে, তা বুঝবার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ রাখলেই চলে। চলমান হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির এক নেতা একজন সাংবাদিককে বলেছেন, ‘যে কোনো এন্টিবায়োটিক সাত দিনের বেশি কাজ করে না। সাতদিন পর কিছুদিন গ্যাপ দিয়ে ফের শুরু করতে হয়।’ বিএনপির হরতাল-অবরোধের অবস্থাও অনেকটা সেই পর্যায়ে গিয়েছে। কারণ, মানুষকে কোনো স্বস্তি না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি চালিয়ে গেলে জনগণ বিরক্ত হতে পারে। এ কারণেই কিছুটা গ্যাপ প্রয়োজন।

    বিএনপির চলমান হরতাল অবরোধের মাঠের চিত্রে দেখা যায়, ধীরে ধীরে অবরোধ-হরতালের প্রভাব কমে আসছে। দলের নেতাকর্মীদের রাজপথে তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির পক্ষ থেকে ‘দুর্জয় সাহস’ দেখানোর আহ্বানেও কাজ হচ্ছে না। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় বহু নেতা কারাগারে। নাশকতার মামলায় সাজাও হয়েছে বহুজনের। বাকি নেতারা আত্মগোপনে। মামলা হামলার শিকার হয়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে ক্ষেতখামারে রাত কাটাচ্ছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের মাঠে না পেয়ে তারা হতাশ হয়েছেন।

    তবে বিএনপির আশার জায়গা হলো, দলছুটের ঘটনা কম ঘটেছে। এবারের জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরু থেকে বিএনপি ভাঙার যে তৎপরতা ছিল তাতে কোনো মহলই সফল হয়নি বলে মনে করছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। নানা চাপ ও প্রলোভন থাকার পরও ‘দল ভাঙার প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা যায়নি। ফলে সরকারের পরিকল্পনা হোঁচট খেয়েছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা বিএনপির জন্য এটিই বড় ধরনের সাফল্য।

    অন্য দিকে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা দলগুলোর মধ্যেও সেভাবে স্বস্তি বা উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। জাতীয় পার্টি, ১৪ দলের শরিক দল, নির্বাচনে আসা নিবন্ধিত একাধিক রাজনৈতিক দল এবং বিএনপি থেকে আসা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ক্ষমতাসীন দলের কাছ থেকে কী রকম সমর্থন বা সহযোগিতা পাবে— তার চূড়ান্ত ফায়সালা এখনো হয়নি। এ বিষয়ে ‘সিগন্যাল’-এর অপেক্ষায় আছেন বেশ কিছু আসনের প্রার্থী। প্রার্থীদের কেউ কেউ চিন্তিত-হতাশ হলেও আশা ছাড়ছেন না কেউ। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বরের আগেই আসনের বিষয়টি সমাধান করা হবে। জোট সঙ্গী ও মিত্রদের আশা, এর মধ্যেই সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতার উদ্যোগ নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আসন সমঝোতা নিয়ে তাড়াহুড়া না করে অনেক হিসাব-নিকাশ করেই এগুচ্ছেন শেখ হাসিনা। সম্ভবত তিনটি বিষয় বিবেচনায় রাখছেন তিনি। প্রথমত নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করা, দ্বিতীয়ত দলীয় প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করা, তৃতীয়ত জোট শরিক ও মিত্রদের সন্তুষ্ট রাখা— এসব বিষয় মাথায় রেখেই হয়তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

    এদিকে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা নয়, দলটি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের নিশ্চয়তা চায়। তাহলেই জাতীয় পার্টি বড় বিজয় পাবে বলে আশা দলটির। এমনকি সরকারও গঠন করার সুযোগের কথা বলছেন দলটির নেতারা! দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, তার দল এখন ‘সাবালক’ হয়েছে। তাই নিজের পায়ে দাঁড়াবে।

    জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এ ধরনের কথা বলা হলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ভিন্ন। বিএনপি অংশ নিলেও জাতীয় পার্টিকে কোথাও জিততে হলে সেই আসনে প্রয়োজন হবে আওয়ামী লীগের সমর্থন কিংবা আসন ছাড়। এমনকি রংপুর অঞ্চলেও আর জাতীয় পার্টির একচেটিয়া প্রভাব নেই। নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে দেখা গেছে, যেসব আসনে জাতীয় পার্টি প্রার্থী দিয়েছিল, সেসব আসনে আওয়ামী লীগ নৌকার কোনো প্রার্থী দেয়নি। ফলে আওয়ামী লীগের ভোট পেয়েছিল জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা।

    বিএনপিবিহীন নির্বাচনে শক্তিশালী বিরোধী দলের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের জোট মিত্র জাপাকেই হয়তো এবারও বিরোধী দলের আসনেই দেখা যাবে। বেশ কয়েকটি আসনে তাদের প্রার্থীরা যেন বিজয়ী হয়ে আসতে পারে, সেজন্য একটা সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

    আওয়ামী লীগের সমর্থন ছাড়া নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া অনেকটা চ্যালেঞ্জের হবে বলে মনে করে ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা। বিগত তিনটি নির্বাচনে এই জোটের কয়েকটি দল জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হয়েছিলেন। এসব দলের নিজস্ব প্রতীক থাকলেও নির্বাচনে সেই প্রতীক তারা ব্যবহার করেন না। এবারও এসব শরিক নৌকা প্রতীক নিয়েই নির্বাচন করবেন বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। মনোনয়ন ফরম দাখিলও করেছেন তারা। আসন বন্টনের বিষয়ে আলোচনার জন্য ৪ ডিসেম্বর জোটের সঙ্গে শেখ হাসিনা বৈঠক করেছেন।

    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর মধ্যে জোট সঙ্গীদের বিষয়ে আসন সমঝোতার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে বলেছেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের হাতে সময় আছে। এর মধ্যে আমরা অবজার্ভ করব, মনিটর করব, অ্যাডজাস্ট করব, অ্যাকোমোডেট করব। যেখানে যেটা প্রয়োজন, সেটা আমরা করব। স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ডামি ক্যান্ডিডেটের ব্যাপারেও বিষয়টা এরকম। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে।

    দলের সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্যে অনেকটা দোটানায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। কেননা দলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে জোট শরিকদের আসনে।

    নির্বাচনে কার সঙ্গে কার লড়াই হবে, সেটা পরিষ্কার হবে ১৭ ডিসেম্বরের পরেই।

  5. মাসুদ করিম - ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ (৪:৩২ পূর্বাহ্ণ)

    লুপ্তপেশা কাগজি: বিস্মৃত আড়িয়ল পেপার
    https://bangla.bdnews24.com/opinion/cb34pax4dt

    এককালের সমৃদ্ধ জনপদ কীভাবে ইতিহাসের অংশ হয়ে আবার তা বিস্মৃতিপ্রবণ হয়ে উঠতে পারে তার দৃষ্টান্ত এই আড়িয়ল কাগজ আর কাগজিদের গ্রাম।

    কিছুকাল আগে সরকারের একটি বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্প ঘিরে আলোচনায় আসে আড়িয়ল বিল। গণমাধ্যমের কল্যাণে নামটি তখন থেকে মুখে মুখে ছড়িয়ে যায়। কিন্তু আড়িয়ল আরেকটি কারণে শত শত বছর আগে পরিচিতি পেয়েছিল যা আমাদের ইতিহাসে উপেক্ষিত।

    কয়েক বছর আগে ব্রিটিশ সরকারের অফিসিয়াল কিছু নথি উন্মুক্তকরণের পর বিষয়টি নিয়ে জানাজানি হয়। খুবই সামান্য কিছু নোট পাওয়া যায় আড়িয়লের নামে। ঐতিহাসিক এসব নথি সাক্ষ্য দেয়, ইতিহাস আড়িয়লকে তার গর্ভে জায়গা দিয়েছিল কাগজ শিল্পে বিশেষ অবদানের কারণে। বস্তুত, হাতে বানানো কাগজের কারিগর বা কাগজিদের কারণে বাংলাদেশের এই স্থানটি একসময় বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছিল। স্থানটি সম্পর্কে বর্ণনায় যাওয়ার আগে কাগজিদের সম্পর্কে কিছু বলা উচিত।

    কাগজি (Kagji/Kaghzi/Kaghazi) বলা হতো এমন পেশাজীবীদের, যারা হাতে কাগজ প্রস্তুত ও বিপণনে কুশলী ছিল। কাগজিরা যেসব গ্রামে বসবাস করতো এবং কাগজ বানাতো সেই গ্রামগুলো কাগজি পাড়া, কাগতি পাড়া ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিল। মধ্যযুগের কবি মুকুন্দ রাম চক্রবর্তীর লেখায় এই পেশার উল্লেখ আছে। তিনি লিখেছেন, “কাগজ কাটিয়া নাম ধরিল কাগতি”। এই কাগতি বা কাগতিয়ারাই লুপ্তজীবী- ‌‘কাগজি’। মুনতাসীর মামুন তাঁর ‘ঢাকা স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী’ বইতে সপ্তদশ শতকে কাগজিদের জীবনযাত্রা বর্ণনা দিতে গিয়ে দেলওয়ার হাসানের উদ্ধৃতিতে বলেছেন:

    “আজ যেখানে বাংলাবাজার, পাটুয়াটুলী, ইসলামপুর, বাবুবাজার, চকবাজার ও নিউমার্কেট, সেখানে একসময় কাগজের বাজার ছিল। এর শুরুটা মোগল আমলে। মোগল সুবাদাররা এ অঞ্চলের হুকুমবরদার হয়ে আসার সময় তারা সাথে করে কাগজিদের নিয়ে এসেছিলেন দরবারের প্রয়োজনীয় কাগজ বানানোর জন্য। মোগল প্রশাসনের সঙ্গী হওয়া সেই কাগজিরাই কালে কালে রয়ে যায় এবং বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। শায়েস্তা খাঁ ১৬১৬ সালে ঢাকার আশপাশে কাগজিদের বসবাসের জন্য জমি দান করেন। যার অন্যতম ধামরাইয়ের কাগজিপাড়া। বুড়িগঙ্গার পাড়েও কাগজিদের আবাস ছিল। ঢাকায় বসবাসরতদের জন্য দান করা জায়গাটি পরিচিত কাগজিটোলা নামে। পুরান ঢাকার কলুটোলার পাশেই কাগজিটোলার অবস্থান। একসময় মোগল দরবার, দপ্তর, আদালতসহ বাণিজ্যিক নানা কাজে কাগজের এস্তেমাল ছিল সীমিত। ক্রমেই কাগজিরা হাতে তৈরি কাগজ তৈরি বাড়িয়ে দিতে থাকে। শুরুতে মেস্তা দিয়ে এরা কাগজ তৈরি করতো। পরে পাট, চট এবং আরও পরে বাঁশের মণ্ড দিয়ে কাগজ উৎপাদনে ঝুঁকে পড়ে তারা। ফরিদপুরের পাট ও বিক্রমপুর অঞ্চলে তৈরি চটের সহজলভ্যতার কারণে পরবর্তীকালে বিক্রমপুর অঞ্চলে কাগজ তৈরির কারিগররা বসতি গড়ে তোলে। সময়ের সাথে উৎপাদন ও বিক্রিতে জড়ায় কাগজিরা। এসব কাগজিদের তৈরি নানা রংয়ের কাগজ ঢাকার কাগজিটোলায় বেচাকেনা হতো। মুঘল সুবাহ’র দপ্তরে হাতে বানানো কাগজ কদর পেয়েছিল। পরে মুর্শিদ কুলী খাঁ রাজধানী রাজমহলে স্থানান্তর করলে কাগজিরা সংকটে পড়ে”। 1

    এই বর্ণনা থেকে ঢাকার আশপাশের এলাকায় কাগজিদের বসবাস করা কিছু জায়গার কথা বলা হয়েছে। সঙ্গে কাগজ শিল্প এবং কাগজিদের জীবন সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে। এখানে কিছু আবাসস্থলের নাম দেয়া হলেও কাগজিদের যে দলটি বিক্রমপুর অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল তার পরিচয় মেলে না। সেটা যে আড়িয়ল গ্রামকে কেন্দ্র করে এমনটা আমাদের ইতিহাসবেত্তারা তাঁদের নথিতে উল্লেখ করার প্রয়োজন বোধ করেননি।

    বাংলাদেশের ইতিহাস সংক্রান্ত সমস্ত নথি ব্রিটিশ সার্টিফাইড পেপারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার পর ধারণা করি জায়গাটি এখনো খুঁজে পাওয়া সম্ভব। ধারণার ওপর ভর করে কিছুকাল অনুসন্ধানের পর গ্রামটি খুঁজে পাই ২০২২ সালে। উল্লেখ্য আড়িয়লের সেই জায়গা, কাগজিদের বংশধর বা তাদের ব্যবহৃত উপকরণ নিয়ে এর আগে দেশে কোনো গবেষণা বা অনুসন্ধান আমার জানা ছিল না। তাই গোড়া থেকেই ব্যাপারটা শুরু করতে হয়েছিল।

    সূত্রপাতটা মোগল আমলে সেটা লেখার গোড়াতেই বলা হয়েছে। মোগল শাসন বিদায় নিলেও কাগজিরা এ অঞ্চলে রয়ে যায়। শত শত বছরের পরিক্রমায় তাদের উত্তরসূরিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ঢাকার পুনর্জাগরণের (১৯০৫) পর বা ঢাকা দ্বিতীয় দফায় রাজধানী হওয়ার পরও কাগজিরা এই পরিযান প্রক্রিয়ার মধ্যেই ছিল। এর মধ্যে অন্যতম বড় আবাসস্থানের কথা জানা যায় ঢাকার অদূরে বিক্রমপুরে। ঘুরেফিরে ইতিহাসবিদরা বিক্রমপুর নামটাই শুধু ব্যবহার করেছেন কিন্তু যে নামে কাগজ আর কাগজিরা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল সেই ‘আড়িয়ল’ নামটি উপেক্ষিত রয়ে গেছে। কোথায় ছিল আড়িয়লের অবস্থান আর তার সীমানা সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়নি শিল্প সংক্রান্ত প্রতিবেদন, বাংলাদেশের ইতিহাস বা ব্রিটিশ নথিতে। বস্তুত এলাকাটি প্রথম নজরে আসে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ ও বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় সাহেব আর নেটিভ কর্তাদের সমীক্ষার কল্যাণে। ১৮৮৩ সালে ঢাকার সিভিল সার্জন James Wise-এর লেখায় এই স্থানের কিছুটা উল্লেখ পাওয়া যায়। ওয়াইজসহ অন্যরা ব্রিটিশরাজের কাছে যুগের পর যুগ যেসব রিপোর্ট পাঠিয়েছেন, সেখানে অবস্থান হিসেবে শুধু ঢাকার অধীন একটি এলাকা হিসেবে আড়িয়লকে বর্ণনা করেছেন যদিও ব্যাপারটা তেমন নয়। ওয়াইজের লেখায় বিভিন্ন বিষয় উঠে আসত। এমনকি এ অঞ্চলের পেশাজীবীদের যে বর্ণনা আছে সেখানে কাগজিদের নাম ছিল না তেমনটা কিন্তু নয়। কাজেই ঢাকাবাসীর নাকের ডগায় এমন একটা ইতিহাস শত শত বছর কাটিয়ে দিলেও ইতিহাসের উপকরণ হিসেবে আমরা তাকে গুরুত্ব দিইনি।

    James wise তাঁর লেখা- ‘Races, Castes and Trades of Eastern Bengal’ শিরোনামে যেসব নোট লিখেছিলেন সেখানে প্রথম কাগজিদের বাসস্থান লিখতে গিয়ে জায়গার নাম তিনি ‌‘Arial Khan’ লিখেছেন এবং সেটা একাধিকবার। ওয়াইজের পরে আবার অন্যরা শুধু আড়িয়ল নামটি ব্যবহার করেন। ধারণা করা যায়, ইংরেজদের এই ‘Arial Khan’ এবং ‘Areal/Arial’ নামবাচক শব্দ হিসেবে সমার্থক। নদীর নামে জনপদ এবং জনপদের নাম পরে সংক্ষিপ্ত হতে দেখেছি আমরা হামেশাই। এ বিষয়ে ঐতিহাসিকদের গবেষণাও এই যুক্তির পক্ষে রায় দিচ্ছে এবং একইসঙ্গে পূর্বাপর তথ্যেরও ধারাবাহিকতাও পাওয়া গেছে। এরমধ্যে অন্যতম কাগজিদের আর্থ সামাজিক অবস্থা, যা তুলে ধরতে গিয়ে ওয়াইজ নিজেই লিখেছেন:

    “শোনা যায়, নবাবী আমলে পূর্ববঙ্গের কাগজ প্রস্তুতকারীদের আনা হয়েছিল উত্তর ভারত থেকে এখন তারা যেসব গ্রামে বসবাস করেন শুরুতে সেখানেই বসতি করা হয়েছিল তাদের। কাগজ প্রস্তুত গোড়া থেকে মুসলমানদের ব্যবসা। দেশের নিম্নাঞ্চল কাগজ প্রস্তুতের জন্য সুবিধাজনক। কেননা যে গাছ থেকে কাগজ বানানো হয় ওই অঞ্চলেই তা ছিল অধিক ও সহজলভ্য। বিক্রমপুরের উত্তর সীমানা বরাবর অসংখ্য কাগজির বাস। শুধু আড়িয়ল খাঁ গ্রামে বাস চার/পাঁচশ কাগজি পরিবারের”।2

    মনে রাখা দরকার, ওয়াইজ এই রিপোর্ট যখন লিখছেন সেটা উনিশ শতকের শেষভাগ। তখনই প্রায় ৫শ কাগজি পরিবার যারা পরের শতক সমাপ্তির আগেই হারিয়ে যায় তারা সেখানে বসতি গেড়েছিল। এ বিষয়ে শ্রী অমিত ভট্টাচার্যের Bengal: Past and Present প্রবন্ধে বলা হয়েছে:

    “আড়িয়ল অত্যন্ত পুরোনো কাগজ তৈরির স্থান এবং এখানকার সব কাগজি ফুলটাইম শ্রমিক। ৭টি পরিবার থেকে শুরু হয় এই কাগজি হওয়ার যাত্রা। এই শিল্পের সাথে কারিগর, শ্রমিক তাদের সন্তান ও স্ত্রীরাও কাজ করছে। এই খাতে কোন যন্ত্রপাতি নয় শুধু কাগজ তৈরির কাঁচামাল ও নিজেদের বানানো হস্ত উপকরণ এস্তেমাল হয়”।3

    পেশাজীবীদের শুমারি অংশে বাংলার কুটির শিল্প গ্রন্থে কাগজিদের কাঁচামাল সম্পর্কে বলা হয়েছে:

    স্থানীয় কাঁচামাল বলতে তখন এ অঞ্চলে সবচেয়ে জনপ্রিয় তখন- পাট। সবকিছুতেই তখন পাটের ব্যবহার ছিল উল্লেখযোগ্য। এক মণ পাট দিয়ে একবার মণ্ড প্রস্তুত করলে তা থেকে ৫/৬ রিম কাগজ তৈরি করা যেত। আর সেই রিমও ছিল ঢাউস সাইজের। এই পরিমাণ কাগজ বানাতে তিনজন কাগজির সময় লাগতো প্রায় ১০ দিন। ১৯৩৪ সালের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, মানভেদে প্রতি রিম কাগজের বিক্রয়মূল্য ছিল ৫ থেকে ৬ টাকা।4

    গেল শতকের ত্রিশের দশকেও আড়িয়ল গ্রামে বেশ কিছুসংখ্যক কাগজি মোটা কাগজ তৈরি করেছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। হাতে তৈরি এসব কাগজ জ্যোতিষী/রাশিফল গণক এবং স্থানীয় হিসাবরক্ষকদের কাছে কদর ছিল। আগাগোড়াই আড়িয়ল কাগজের প্রধান কাঁচামাল ছিল পাটের আঁশ।

    উনিশ শতকের শেষভাগে এসে কাগজিদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকে। ডব্লিউ হান্টার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সেসময় ঢাকা অঞ্চলে মাত্র ৯৭ ঘর কাগজির কথা জানা যায়, যা ওয়াইজের দেয়া হিসাবের এক পঞ্চমাংশ। একই প্রতিবেদন থেকে সমকালীন ঢাকায় ২৩ হাজারের বেশি জেলে এবং প্রায় সাড়ে ৬ হাজার গোয়ালার সংখ্যা জানা যায়।5

    নাতিদীর্ঘ টিকা, মন্তব্য আর চিঠি থেকে আড়িয়ল গ্রামের নামটি নিশ্চিত হয়ে সন্ধানের পর জানা যায়, উল্লিখিত এলাকাটি আজকের মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত টঙ্গীবাড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন। অতি প্রচীন এক জনপদ ও বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে এই জায়গায় সুনাম আছে। আড়িয়ল গ্রামের কারণেই গোটা ইউনিয়নের নামকরণ হয়েছে। সেখানে গিয়ে গ্রামটি আর লুপ্ত পেশাজীবীদের সন্ধান পাই। পুরোনো আড়িয়ল গ্রামের অবস্থান মূল সড়কের পশ্চিমে। কলেবর কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে তুলনামূলক নতুন আড়িয়ল গ্রামটি সড়কের পূর্ব দিক বরাবর গড়ে উঠেছে। গ্রামের মাঝখান দিয়ে এঁকে-বেঁকে বয়ে গেছে একটি খাল। গ্রামটি শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে অগ্রসর। কিছুদিন অনুসন্ধানের পর আঞ্চলিক ইতিহাসে দু-চারজন আগ্রহী পাওয়া গেল। পেশায় তাঁরা স্কুল শিক্ষক ও সরকারি কর্মচারি। আরও একজনকে আবিষ্কার করা গেল যিনি ইতিহাসে আগ্রহী নন কিন্তু ইতিহাসের জ্বলন্ত সাক্ষী। তিনি আজিজ তালুকদার। বংশ পরম্পরায় এই গ্রামেই বসবাস অশীতিপর আজিজ তালুকদারের। পুরনো পরিবারগুলোর একটি এই তালুকদাররা। আজিজ তালুকদার কাগজিদের বংশধর, কিন্তু কততম প্রজন্ম তার হিসেব জানা নেই। শুধু জানালেন, তার পরিবার কাগজ তৈরির ফর্মূলা পেয়েছে বংশ পরম্পরায়। তিনি একসময় কাগজ বানিয়েছেন নিজ হাতে। আড়িয়লের ঘরে ঘরে তৈরি হতে দেখেছেন হলদেটে মোটা কাগজ। হাতে বানানো কাগজের কারিগর আর প্রত্যক্ষদর্শী ২/৩ জনের বেশি জীবিত নেই। অর্থাৎ আড়িয়ল কাগজ বানানোর চাক্ষুষ সাক্ষী আর নির্মাতাদের শেষ প্রজন্মের মুখোমুখি আমরা।

    আজিজ তালুকদারের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন সেখানে ভিড় করেছে উ‌ৎসুক গ্রামবাসী। তালুকদারের পরিবার ও তিনি নিজে যে কাগজি তার প্রমাণ খুঁজছিলাম। ভদ্রলোক আমার এক প্রশ্নের জবাবে, কীভাবে কাগজ বানাতে হয় তা গড়গড় করে বলে চললেন, তারপর উঠানে পড়ে থাকা একটি পাথর দেখিয়ে বললেন, এটি ‘হ্যান্ডমেড পেপার’ প্রক্রিয়ার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার একমাত্র দৃশ্যমান প্রমাণ। গ্রামবাসীর দাবি, এই পাথর ব্যবহার হতো ঢেঁকির নিচে বা তল হিসেবে। আড়িয়ল কাগজের প্রধান উপকরণ যেহেতু পাট তাই এই পাথরের ওপর রেখে পাটগুলোকে ঢেঁকির সাহায্যে চূর্ণ করার পর তা থেকে মণ্ড বানানো হতো। তারা দেখালেন, সেজন্যই পাথরের মাঝখানটায় কিছুটা গর্ত হয়ে আছে। কোথা থেকে কীভাবে পাথরটা এলো তা জানেন না আজিজ তালুকদার। পাথর ছাড়া সেই ঢেঁকি বা উপকরণের কিছুই অবশিষ্ট নেই এখন। যন্ত্রপাতি সব হাতছাড়া হয়েছে তবে মূঢ় সাক্ষীটি খোলা আকাশের নিচে আছে অর্ধযুগেরও বেশি। বর্তমানে আড়িয়লে এই পাথরটা পূর্বপূরুষের স্মৃতি আর গ্রামের শিশুদের খেলার সঙ্গী।

    কাগজ বানানোর এই প্রক্রিয়া শুধু যে আড়িয়ল জানত তা নয়। আশপাশের গ্রামেও কাগজিদের বসতি ছিল। খুঁজলে এমন স্মৃতিকথা আর প্রমাণ আরও মিলতে পারে। নাগেরপাড়, ডুলিহাটা, ধাইরপাড়া, আলগাকান্দি, দিঘিরপাড় ও ধাকুরপাড় গ্রামের মানুষ কমবেশি এ পেশায় জড়িত ছিল। কয়েক গ্রাম মিলে তৈরি হলেও আড়িয়লের নামে পরিচিত হয়েছে এখানকার কাগজ। ধারণা করা হয়, যেহেতু আড়িয়ল কাগজ নামটি ব্র্যান্ড হয়ে গিয়েছিল এবং গুণে-মানে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিল, তাই এ অঞ্চলে প্রস্তুত সব কাগজই পরে এই গ্রামের নামে সুপরিচিত হয়ে ওঠে। ব্যাপারটা অনেকটা ইংল্যান্ডের কেন্ট পেপারের ইতিহাসের সাথে মিলে যায়।

    গ্রামের ঘরে ঘরে প্রস্তুত হওয়া আড়িয়ল কাগজ বিক্রির জন্য চলে যেত নারায়ণগঞ্জ আর ঢাকায়। এ অঞ্চলের পুরনো ম্যাপ থেকে ভৌগলিক অবস্থান ও যোগাযোগের একটা চিত্র পাওয়া গেছে। সেখান থেকে বোঝা যায়, আড়িয়লের পণ্য কাছের বা দূরের বাণিজ্য কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যেতে নৌ-নির্ভর যোগাযোগ ছিল প্রধান ব্যবস্থা। টঙ্গীবাড়ি থেকে চলাচলের জন্য অতীতে চারটি নৌ-রুট ছিল। তিন দিকে চলে যাওয়া এই রুটগুলো একসময় বড় নদীতে গিয়ে যুক্ত হতো। এগুলো হলো:

    পূর্বদিকে: আড়িয়ল-ডুলিহাটা-মটকপুর-টঙ্গীবাড়ি-সোনারং আবদুল্লাহপুর-কমলাঘাট বা রিকাবীবাজার-ধলেশ্বরী নদী।

    পশ্চিম দিকে: আড়িয়ল-আপড়কাঠি-বালিগাঁও-তালতলা-ধলেশ্বরী নদী।

    দক্ষিণ দিকে: আড়িয়ল-বালিগাঁও-ডহরী-পদ্মা নদী।

    এছাড়া দক্ষিণ বরাবর আরেকটি রুট হয়ে যাতায়াত ছিলো নৌযানগুলোর। সেটি আড়িয়ল-মটুকপুর-হাসাইল হয়ে পদ্মার মূল শাখা নদী পর্যন্ত। প্রবাহগুলো আজ মরা খালে পরিণত হয়েছে, তারপরও আড়িয়ল গ্রামে গেলে সেই যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা ধারণা পাওয়া যায়। বর্ষা তো বটেই এমনকি শুকনো মৌসুমেও পানি থাকত এসব খালে। তাই যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনে খালের ওপরই ভরসা করত স্থানীয়রা। এতবছর পর সংরক্ষণের অভাবে পলি পড়ে খালের মুখগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু দখল দূষণের শিকার। প্রায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে এগুলো। দেখে বোঝার উপায় নেই, এককালে এই খাল ধরেই নৌকা ভর্তি মোটা কাগজ পৌঁছে যেত গঞ্জে। কাঁচামাল আনা নেয়া আর হাতে বানানো পণ্য বাজারে নিয়ে যেতে একটা ভালো ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল পদ্মা পাড়ের এই জনপদে।

    যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে তখন ঢাকার সিংহভাগই জঙ্গল। জিম করবেট বা কেনেথ অ্যান্ডারসনের লেখা থেকে হুটহাট উঁকি দিচ্ছে ম্যান ইটার। জঙ্গল কেটে জনপদ বিস্তৃত হচ্ছে বুড়িগঙ্গার অদূরে। হিকি বা টেলরের স্মৃতিকথায় এসব জ্বলজ্বলে অতীত আর চার্লস ডয়েলির ড্রয়িংয়ে তা রীতিমতো বাস্তব। এসব বাস্তবতার সাক্ষী আড়িয়ল গ্রাম।

    গ্রামের পেশাজীবীদের নিয়ে কথা হচ্ছিল আজিজ তালুকদারসহ পুরনো মানুষগুলোর সঙ্গে। তারা দেখেছেন, হাতে কাগজ বানানো তাঁদের পূর্বপুরুষের কাছে অনেকটা ভাত-তরকারি রান্নার মতোই দৈনন্দিন স্বাভাবিক ঘটনা ছিল। ঘুম থেকে উঠে সূর্যাস্ত পর্যন্ত গ্রামগুলো কর্মমুখর থাকত এই কাজে। ব্যাপারটা তাদের কাছে এতই সাধারণ যে, উত্তরসূরিরা কখনো ভাবতেই পারেননি যে, কাগজ হাতে তৈরির কোনো ফর্মূলা বা রেসিপি সংরক্ষণ হয় আর এ নিয়ে কোনোদিন তাদের প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে। তাই এই অধ্যায় সবসময়ই তাদের কাছে অবহেলার পাত্র। অথচ এখান থেকেই একসময় উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল কাগজিরা। এমনকি উনিশ শতকে মাড়োয়ারিদের সহায়তায় নৌ-নির্ভর কাগজের সুশৃঙ্খল বাণিজ্য ব্যবস্থার অংশ ছিল এই আড়িয়ল। উত্তরে রাজশাহী থেকে দক্ষিণে চট্টগ্রামের পটিয়া পর্যন্ত হাতে বানানো এই কাগজের বাণিজ্যিক মানচিত্র বিস্তৃত ছিল। এই হ্যান্ডমেড পেপার সেসময় ভারতবর্ষের আনাচেকানাচে বিক্রি হয়েছে।6

    এককালের সমৃদ্ধ জনপদ কীভাবে ইতিহাসের অংশ হয়ে আবার তা বিস্মৃতিপ্রবন হয়ে উঠতে পারে তার দৃষ্টান্ত এই আড়িয়ল কাগজ আর কাগজিদের গ্রাম। অথচ পূর্ব বাংলার কাগজ একসময় প্রদর্শনীর জন্য বিলেত নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ইতিহাসের সে আলাপ অন্য কোনোদিনের জন্য তোলা রইল।

  6. মাসুদ করিম - ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ (৫:১২ পূর্বাহ্ণ)

    ‘Rakhi Purnima Dasgupta’s passing leaves a huge void in the food world’
    https://www.telegraphindia.com/my-kolkata/people/rakhi-purnima-dasguptas-passing-leaves-a-huge-void-in-the-food-world/cid/1989109
    A school friend recounts life and times with the pioneering restaurateur and Bengali food connoisseur

    We met when Rakhi was four and I was three.

    Our families knew each other and the school years went by in a delightful mix of giggles, pranks, phuchkas, shared laughter and secrets, orange ice lollies, and unabashed naughtiness — the stuff precious, what unforgettable memories are made of.

    No one associated Rakhi with food expertise in those days. In fact, she used to be peeved about the fact that the entire family of gourmets and gourmands constantly talked about food, around her, but no one discussed food with her. It was only when she was in London — for film and television studies, and her parents were there, that her initiation into food and cooking commenced.

    In Delhi, Rakhi ran a weekend business of Thai food (another area of expertise for her) called Gourmet Club and the idea of setting up a place for Bangla khabar took shape in Rakhi’s mind.

    In the face of opposition from Mithu mama (her father), Rakhi’s fierce tenacity won the day and they started with just four tables, in the garage, at 2, Elgin Lane.

    I was caught up in the whirl of launching Kewpie’s — organising a lunch at Calcutta Club, a discussion and tea at Oxford Bookstore and a dinner for close friends and family at Elgin Lane. Rakhi’s energy was boundless and infectious.

    The excitement was palpable. Kewpie’s revolutionised the eating out habits of Bengalis, becoming the first standalone Bengali-cuisine eatery of its kind. It sparked the mushrooming of many others of the same genre, but, to most, Rakhi’s eatery will always remain the pioneer and her faith in her idea was vindicated.

    One by one, the members of this very talented family departed — Kewpie maima (Minakshie Das Gupta of ‘Bangla Ranna’ fame), Chandradeep, Mithu mama, Pia Promina and, now, Rakhi Purnima — leaving a huge void in the food world.

    Serious health issues slowed Rakhi down considerably, but couldn’t douse her indomitable spirit. At a Crafts Council of West Bengal event, with Usha Uthup, at ITC Sonar, in September, my friend was her old feisty self ­— dancing, feasting, laughing her troubles away. This was to be the last time we could spend some carefree time together.

    https://youtu.be/ZUbEcd9OhTQ?si=6s53s8kBh5Hl3zjb

    A sense of disquiet made me push for the Loreto House Alumnae on-line session with Lovey Kapur and Rakhi, on November 18. It was as if I knew time was running out.

    She was really excited about the launch of her book, Eating Calcutta, early next year, and asked me to arrange a suitable launch. When it had to be sent back for certain corrections, she said despondently, “It will come out only after I die”.

    Sadly prophetic words. I can only pray that it is a huge success just as her mother’s books were.

    The family is surely united in food heaven and may they have a splendid, never-ending feast together.

    Will miss you, Rakhi. Wish I could hug you one last time.

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.