সুপারিশকৃত লিন্ক জুন ২০২০

মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিন্ক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে।
ধন্যবাদ।

আজকের লিন্ক

এখানে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই সুপারিশ করুন এখানে। ধন্যবাদ।

১০ comments

  1. মাসুদ করিম - ৩ জুন ২০২০ (১:৫১ অপরাহ্ণ)

    প্রাদুর্ভাবের শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ‘পর্যাপ্ত তথ্য দেয়নি চীন’

    প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে চীনের কাছ থেকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) বেশ বেগ পেতে হয়েছিল বলে সংস্থাটির অভ্যন্তরীণ কয়েকটি বৈঠকের রেকর্ডিং থেকে জানা গেছে।

    সংক্রমণের বিস্তার কমাতে চীনের ভূমিকা নিয়ে ডব্লিউএইচও’র কর্মকর্তাদের প্রকাশ্যে করা প্রশংসার সঙ্গে ওই রেকর্ডিংয়ের কথাবার্তায় ব্যাপক বৈপরীত্য আছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।

    যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থার হাতে আসা ওই রেকর্ডিংয়ে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হওয়া বৈঠকগুলোতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা ভাইরাসের বিস্তৃতি এবং বাকি বিশ্বের জন্য এর ঝুঁকি কতটুকু তা নিরূপণে বেইজিংয়ের কাছ থেকে পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছিলেন।

    এরও দুই সপ্তাহ পর চীন নতুন করোনাভাইরাস যে ছোঁয়াচে, তা প্রথম জানিয়েছিল। পরে ৩০ জানুয়ারি ডব্লিউএইচও ভাইরাস বিষয়ে সতর্ক করে বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে।

    “আমরা খুবই স্বল্প পরিমাণ তথ্য পাচ্ছি। সঠিক পরিকল্পনার জন্য এটা যথেষ্ট নয়,” বৈঠকের একটিতে ডব্লিউএইচওর কোভিড-১৯ বিষয়ক কৌশলের নেতৃত্বে থাকা মার্কিন এপিডেমিওলজিস্ট মারিয়া ভ্যান কেরখোভকে এমনটাই বলতে শোনা গেছে।

    অন্য একটি বৈঠকে চীনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা গডেন গ্যালি বলেছেন, “আমরা এমন একটি পর্যায়ে আছি, যেখানে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভিতে কোনো তথ্য যfওয়ার কেবল ১৫ মিনিট আগে আমাদের সেটি জানায়।”

    চীনের তিনটি সরকারি ল্যাবরেটরি ভাইরাসের বংশগতি বৈশিষ্ট্য বের করারও প্রায় এক সপ্তাহ পর বেইজিং ভাইরাসের জেনেটিক ম্যাপ প্রকাশ করে বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওই বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে।

    বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে ভাইরাসটি নিয়ে আগে থেকে সতর্ক করা কিংবা দেরিতে তথ্য দেয়ার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ধারাবাহিকভাবে চীনের প্রশংসা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। সংস্থাটিকে চীনঘেঁষা অ্যাখ্যা দিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ডব্লিউএইচওর সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নেরও ঘোষণা দিয়েছে।

    প্রভাবশালী এ দাতা দেশের অসন্তোষ সত্ত্বেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসাসকে কিছুদিন আগেও ‘ত্বরিত ও আগ্রাসী পদক্ষেপের মাধ্যমে চীন ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় নতুন মান নির্ধারণ করে দিয়েছে’ বলে বেইজিংয়ের প্রশংসা করতে দেখা গেছে।

    গার্ডিয়ান রেকর্ডিংগুলোর বিষয়ে চীনের ডব্লিউএইচও কার্যালয়ের মন্তব্য চাইলেও তাতে সাড়া মেলেনি।

    তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থাটিকে পাঠানো এক বিবৃতিতে কার্যালয়টি বলেছে, “আমাদের নেতাকর্মীরা দিনরাত সংস্থার নিয়ম ও বিধিবিধান মেনে সদস্য সকল দেশকে সমান সহায়তা ও তথ্য দিতে কাজ করে যাচ্ছেন; সরকারগুলোর সব স্তরের সঙ্গেই খোলামেলা ও সরাসরি কথাবার্তা হচ্ছে আমাদের।”

    ২০০২ সালে সার্সের প্রাদুর্ভাবের সময় চীনের কর্মকর্তারা যেভাবে ‘তথ্য লুকিয়েছিলেন’, সেরকমই কিছু হতে যাচ্ছে বলে জানুয়ারির শুরুতে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছিলেন ডব্লিউএইচও’র জরুরি বভাগের প্রধান মাইকেল রায়ান।

    “একই দৃশ্যপট। কী ঘটছে সে বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য পেতে একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যেতে হচ্ছে,” বলেছিলেন তিনি।

    বেইজিং সহযোগিতা করছে না অভিযোগ করে তাদের উপর চাপ বাড়াতে আহ্বানও ছিল রায়ানের।

    “এটা কঙ্গোতে হতো না; কঙ্গো কিংবা অন্য কোথাও হয়ওনি। আমাদের তথ্যউপাত্ত দেখার দরকার আছে; এই মুহূর্তে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ,” এ ডব্লিউএইচও কর্মকর্তা এমনটাই বলেছিলেন বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওই বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

    সার্সের মতো অজ্ঞাত একটি ভাইরাস চীনের উহানে ছড়িয়ে পড়ছে বলে গত বছরের ডিসেম্বরেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে সতর্ক করা হলেও বেইজিং সেসময় এর অস্তিত্বের কথা জানায়নি।

    ৯ জানুয়ারি চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম উহানে অসংখ্য মানুষের অসুস্থতার পেছনে নতুন একটি করোনাভাইরাস দায়ী বলে জানালেও সেটি ছোঁয়াচে নয় বলে আশ্বস্ত করেছিল।

    তার দুই সপ্তাহ পরে দেশটির কর্মকর্তারা ভাইরাসটি মানবদেহ থেকে অন্য মানবদেহে ছড়ায় বলে স্বীকার করে নেন; সেসময় উহানের হাসপাতালগুলোতে কোভিড-১৯ রোগী উপচে পড়ছে। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে হুবেই প্রদেশের অন্যান্য এলাকাতেও।

    চীনের কর্তৃপক্ষ পরে ২৩ জানুয়ারি উহানকে লকড ডাউন করে দেয়; যদিও এর আগেই শহরটির অন্তত ৫০ লাখ লোক চীন এবং বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়েছিল।

    বিশ্বজুড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া সেই ভাইরাস এরই মধ্যে ৬০ লাখেরও বেশি মানুষের দেহে শনাক্ত হয়েছে; ভাইরাসটির কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ছাড়িয়েছে পৌনে চার লাখ।

    China delayed releasing coronavirus info, frustrating WHO

    After the new coronavirus was first detected in China, scientists rushed to identify it

    Throughout January, the World Health Organization publicly praised China for what it called a speedy response to the new coronavirus and thanked the Chinese government for sharing the genetic map of the virus “immediately.”

    But in fact, Chinese officials sat on releasing the genetic map, or genome, of the deadly virus for over a week after multiple government labs had fully decoded it, not sharing details key to designing tests, drugs and vaccines. Strict controls on information and competition within the Chinese public health system were largely to blame, The Associated Press has found from internal documents, emails and dozens of interviews.

    Health officials only released the genome after a Chinese lab published it ahead of authorities on a virology website on Jan 11. Even then, China stalled for at least two weeks more on giving WHO the details it needed, according to recordings of multiple internal meetings held by the U.N. health agency in January — all at a time when the outbreak arguably might have been dramatically slowed.

    Although WHO continued to publicly commend China, the recordings obtained by the AP show they were concerned China was not sharing enough information to assess the risk posed by the new virus, costing the world valuable time.

    “We’re currently at the stage where yes, they’re giving it to us 15 minutes before it appears on CCTV,” said WHO’s top official in China, Dr. Gauden Galea, referring to the state-owned China Central Television, in one meeting.

    The story behind the early response to the pandemic comes at a time when the U.N. health agency is under siege. U.S. President Trump cut ties with WHO on Friday, after blasting the agency for allegedly colluding with China to hide the extent of the epidemic. Chinese President Xi Jinping said China has always provided information to WHO and the world “in a most timely fashion.”

    The new information does not support the narrative of either the U.S. or China, but portrays an agency now stuck in the middle that was urgently trying to solicit more data. Although international law obliges countries to report information to WHO that could have an impact on public health, the U.N. agency has no enforcement powers. Instead, it must rely on the cooperation of member states.

    The AP has found rather than colluding with China, WHO was itself largely kept in the dark, as China gave it only the minimal information required. But the agency did attempt to portray China in the best light, most likely to coax the country into providing more outbreak details.

    WHO officials worried about how to press China for more information without angering authorities or jeopardizing Chinese scientists, whom they praised for decoding the genome with astonishing speed. Dr. Michael Ryan, WHO’s emergencies chief, said the best way to “protect China” was for WHO to do its own independent analysis, because otherwise the spread of the virus between people would be in question and “other countries will take action accordingly.”

    From the time the virus was first decoded on Jan. 2 to when WHO declared a global emergency on Jan. 30, the outbreak grew by a factor of 100 to 200 times, according to retrospective Chinese Center for Disease Control and Prevention data.

    WHO and officials named in this story declined to answer questions asked by the AP without audio or written transcripts of the recorded meetings, which the AP was unable to supply to protect its sources.

    “Our leadership and staff have worked night and day….to support and share information with all Member States equally, and engage in frank and forthright conversations with governments at all levels,” a WHO statement said.

    China’s National Health Commission and Ministry of Foreign Affairs had no comment. But in the past few months, China has repeatedly defended its actions, and many other countries — including the U.S. — have responded to the virus with even longer delays of weeks and even months.

    In late December, doctors noticed mysterious clusters of patients with unusual pneumonia. Seeking answers, they sent samples to commercial labs. By Dec. 27, one company, Vision Medicals, had pieced together most of the genome of a new virus with striking similarities to SARS. They alerted Wuhan officials, who, days later, issued internal notices warning of the unusual pneumonia.

    On Dec. 30, Shi Zhengli, a renowned coronavirus expert at the Wuhan Institute of Virology, was alerted to the disease, and by Jan. 2, her team had fully decoded it.

    But when it came to sharing the genome with the world, things went awry. China’s top medical authority, the National Health Commission, issued a confidential notice forbidding labs from publishing about the virus without authorization. The order barred Shi’s lab from publishing the sequence or warning of the possible danger.

    Commission officials later said the order was to prevent any accidental release of the then-unknown pathogen, and to ensure consistent results by giving it to four state labs to identify at the same time.

    By Jan. 5, two other government labs sequenced the virus, and another lab in Shanghai led by Zhang Yongzhen had also decoded it. Zhang warned the National Health Commission the virus was “likely infectious.” The Chinese CDC raised its emergency level to the second highest, but did not have the authority to alert the public.

    Suspicious cases starting surfacing across the region. In Thailand, airport officials pulled aside a woman traveling from Wuhan with a runny nose, sore throat and high temperature. Scientists at Chulalongkorn University soon figured out she was infected with a new coronavirus, but did not have a sequence from China to match it.

    WHO officials, meanwhile, grumbled in internal meetings that China was stalling on providing crucial outbreak details even though it was technically meeting its obligations under international law. Ryan, WHO’s emergencies chief, said it was time to “shift gears” and push for more information.

    “The danger now is that despite our good intent…there will be a lot of finger-pointing at WHO if something does happen,” he said.

    On Jan. 11, Shanghai’s Zhang finally published the coronavirus sequence ahead of health authorities on virological.org, used by researchers to swap tips on pathogens. It was only then that the Chinese CDC, Wuhan Institute of Virology and the Chinese Academy of Medical Sciences raced to publish their sequences, doing so on Jan. 12.

    On Jan. 20, Chinese authorities warned the virus spread between people. WHO dispatched a small team to Wuhan from its Asia offices. China representative Galea told colleagues the Chinese were “talking openly and consistently about human-to-human transmission.”

    WHO’s emergency committee of independent experts met twice that week and decided against recommending an emergency. But the agency’s concern prompted an unusual trip to Beijing by WHO director-general Tedros Adhanom Ghebreyesus and top scientists.

    At the end of Tedros’ trip, WHO convened another emergency meeting, finally declaring a global emergency on Jan. 30. Tedros thanked China profusely, declining to mention any of WHO’s earlier frustrations.

    “We should have actually expressed our respect and gratitude to China for what it’s doing,” he said. “It has already done incredible things to limit the transmission of the virus to other countries.”

  2. মাসুদ করিম - ১৪ জুন ২০২০ (৩:৫৩ পূর্বাহ্ণ)

    একজন মোহাম্মদ নাসিমের চলে যাওয়া

    মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু বা পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া মানে বাংলাদেশের রাজনীতির একটি যুগের একজন অন্যতম রাজনীতিকের বিদায়। আপাদমস্তক রাজনীতিবিদই ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। এই আপাদমস্তক রাজনীতিবিদদের যুগ বাংলাদেশে ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখন ধীরে ধীরে আসছে পার্ট টাইম রাজনীতিবিদদের যুগ, এর পরে হয়তো আসবে ট্রাম্পের মত শতভাগ ব্যবসায়ী রাজনীতিদের যুগ। তখন মানুষ হিসেব করবে বাংলাদেশের কেনেডিদের আমলে তারা ভালো ছিল, না বাংলাদেশের ট্রাম্পদের আমলে তারা ভালো আছে। আমরা যখন ধীরে ধীরে সেই বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছি, ঠিক এ সময়ে একজন নাসিমের চলে যাওয়া অনেক দুঃখের। খবর শুনে শুধু একজন আপনজন, বড়ভাই, বন্ধু হিসেবে চোখে পানি আসেনি, চোখে পানি এসেছে ভবিষ্যত বাংলাদেশকে ভেবেও।

    মোহাম্মদ নাসিমকে নিয়ে লিখতে গেলে একটা বই লেখা যায়। আর সে বই একেবারে অপ্রয়োজনীয় কিছু নয়। কিন্তু তাঁর মৃত্যু সংবাদ পাবার মিনিট দশেক পরে নিজেকে একটু সামলে নিয়ে এই লেখা লিখতে বসেছি। তাই কিছুটা খাপছাড়াও হতে পারে এ লেখা। কারণ, ঠিক এই মুহূর্তে একজন ঘনিষ্ঠজনকে নিয়ে লেখা যায় না। অনেকে বলতে পারেন, আমরা সাংবাদিক, আমাদের সবকিছুতে নির্মোহ থাকা উচিত। তাদের কথা ঠিক। তবে আমাদের প্রজম্মের জন্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবেগহীন থাকা একটু অসম্ভব।

    কারণ, তার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ছে পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট, ৩ নভেম্বর এর হত্যাকাণ্ডের পরে মোহাম্মদ নাসিম যখন ভারতে, তখন একটি প্রতিরোধ যুদ্ধের আশায় তারা ছিলেন। সেই যুদ্ধের নানান সহযোগী তখন বাংলাদেশের ভেতর কাজ করতো। সেই সব কাজের মাধ্যমে খবর পেতাম, মোহাম্মদ নাসিম, শেখ সেলিম- প্রমুখ কী কষ্টে সেখানে আছেন। আসলে সেটা মোহাম্মদ নাসিম, শেখ সেলিম, এস এম ইউসুফ, কাদের সিদ্দিকী, লতিফ সিদ্দিকী , ডা. এস এ মালেক এমনই অনেকের কষ্টই শুধু ছিল না, সেটা ছিল বাংলাদেশের রাজনীতির একটি অধ্যায়। সেদিনের এদের কষ্ট, শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার কষ্টকে বাদ দিয়ে কখনই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের পরিপূর্ণ ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়। ১৯৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পরিপূর্ণ ইতিহাস লিখতে গেলে অবশ্যই ৭৫ পরবর্তী ভারতে ও লন্ডনে যারা সীমাহীন কষ্টের ভেতর সংগ্রাম করেছেন তাদের ইতিহাস লিখতে হবে।

    ৭৫ এর ১৫ অগাস্ট এর সন্ধ্যায় যুবলীগের মমতাজউদ্দিনের পল্টনের বাসায় তৎকালীন যে তরুণ নেতারা জড়ো হয়েছিলেন তাদের সংগ্রামের ইতিহাস থেকে শুরু করে এই ভারত ও ইউরোপে যারা সংগ্রাম করেছে তাদের সবার ইতিহাস লিখতে হবে। আর সেই পরিপূর্ণ ইতিহাসের ওপর দাঁড়িয়ে একজন মোহাম্মদ নাসিমের চলে যাওয়ার দুঃখ, বেদনা ও ক্ষতি হিসেব করা যাবে। এই সংগ্রামের পথের ভেতর দিয়েই মোহাম্মদ নাসিম আর শুধু জাতীয় চার নেতার একজন ক্যাপ্টেন মুনসুর আলীর ছেলে ছিলেন না, তিনি নিজেই একজন মোহাম্মদ নাসিম হয়ে উঠেছিলেন। আর চলে গেলেন একজন মোহাম্মদ নাসিম হিসেবে।

    বাংলাদেশে ১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্টের পরে শুধু গণতন্ত্র নয় সিভিল শাসন পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয় ১৯৮২ সালের শেষ ও ১৯৮৩ সালের শুরুতে পরিপূর্ণভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৫ দলীয় জোট গড়ে ওঠার পরে। এ সময়ে মোহাম্মদ নাসিম তরুণ ও টগবগে নেতা। ১৫ দলীয় জোটের মূল মঞ্চে তিনি ভাষণ দেবার সুযোগ খুব একটা পেতেন না। কিন্তু আওয়ামী লীগের জনসভায় তাঁর ও মোহাম্মদ হানিফের বক্তব্যের প্রতি কর্মীদের একটা আলাদা আকর্ষন ছিল। বিশেষ করে এই দুজনের ভরাট গলায় যেন গোটা পল্টন, বায়তুল মোক্কারম চত্তর গমগম করে উঠতো। তখন আওয়ামী লীগে অনেক প্রবীণ নেতা। তাদের ফাঁকেও শুধু মনসুর আলীর ছেলে নয়, নিজস্ব আচরণ ও বক্তৃতার কারণে ধীরে ধীরে মোহাম্মদ নাসিম জাতীয় রাজনীতির একজন নেতা হিসেবে প্রবেশ শুরু করেন কর্মীদের মন আকর্ষণের মাধ্যমে। আর এরশাদ আমলের শেষের দিকে এসে তিনি নিজেকে অনেকখানি জাতীয় রাজনীতির অংশ করে ফেলেন। এই জাতীয় রাজনীতিক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে তার সব থেকে বড় গুণ ছিল কর্মীদেরকে অসীম ধৈর্যের সঙ্গে সময় দেয়া ও অন্য শ্রেণি-পেশার লোকদের সঙ্গে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে ওঠাবসা। ওই সময়ে আওয়ামী লীগের যে কোন কর্মসূচীর পরে সাংবাদিক বর্তমানে এমপি শফিকুর রহমান ভাই, আতাউস সামাদ ভাই ও আমি অনেক দিন আওয়ামী লীগ অফিসে যেতাম দুজন লোককে অবশ্যই পাব মনে করে। একজন ফজলুল হক বিএসসি, অপরজন মোহাম্মদ নাসিম। আওয়ামী লীগের তখন দুর্দিন। অফিসে একটা দুটো বাল্ব জ্বলতো, সব রুমে ফ্যান নেই। ওই গরমে এবং খানিকটা আলো আঁধারীর ভেতর এই দুজন লোককে অবশ্যই পাওয়া যেত। তাদের কাছ থেকে আমরা আওয়ামী লীগের বা ১৫ দলীয় জোটের রাজনীতির অনেক খবরাখবর পেতাম।

    একটা দিনের কথা আজ মনে আসছে খুব বেশি করে। কারণ, মোহাম্মদ নাসিমের বাসায় অনেকদিন খেয়েছি কিন্তু তারপরেও আওয়ামী লীগ অফিসে সেদিনের তার সেই আন্তরিকতা সত্যি ভোলার নয়। আমরা যখন আওয়ামী লীগ অফিসে ঢুকেছি তখন মোহাম্মদ নাসিম দুটো বন রুটি ও একটু চিকেন ফ্রাই নিয়ে কেবল খেতে যাবেন। আমাদের দেখে উঠে এসে হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে তিনি যে টেবিলে ছিলেন তার পাশে নিয়ে গেলেন। তার পরে নিজে দুটো চেয়ার টেনে আনলেন। এরপরে ওই বনরুটি টুকু নিজে হাতে ছিঁড়ে আমাদের হাতে দিলেন। সবাই মিলে চিকেনটুকু ভাগ করে ওই বন রুটি খাই। বাস্তবে এই ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম।

    তবে আওয়ামী লীগ অফিসের কথা মনে হলে ১৯৯১ এ খালেদা জিয়া ক্ষমতা আসার পরে অফিসের ভেতর রাবার বুলেট ছুড়ে শত শত কর্মীর সঙ্গে মোহাম্মদ নাসিমকে আহত করার সেই দৃশ্য মনে পড়ে। সেদিনও আতাউস সামাদ ভাই, শফিকুর রহমান ভাই ও আমি আওয়ামী লীগ অফিসে ছিলাম। সেদিন বিএনপির এই অপারেশনের নেতৃত্ব দিয়েছিল মতিঝিল থানার ওসি স্বয়ং। যতদুর মনে পড়ে তার নাম ছিল কুদ্দুস। ওই রাবার বুলেটের বৃষ্টির ভেতর আতাউস সামাদ ভাই এগিয়ে গিয়ে তাকে বলেন, আপনার পুলিশ থামান। কী করছেন এটা। মনসুর আলীর ছেলেকে এভাবে মেঝেতে ফেলে পিঠাচ্ছেন আর রাবার বুলেট মারছেন। একি!

    মোহাম্মদ নাসিমের শাদা পাঞ্জাবি রক্তে ভিজে ততক্ষণে লাল হয়ে গেছে। সামাদ ভাইয়ের গায়ে একটা বুলেট লাগায় তার শাদা শার্ট রক্তাক্ত। আমি নিজেও বাদ যাইনি। তবে তখন প্রায় বারোমাসই জিনসের বা কডের জ্যাকেট পরতাম। যে কারণে জিনসের জ্যাকেটের ওপর দিয়ে আমার শরীরে রাবার বুলেট খুব বেশি রক্তপাত ঘটাতে পারেনি। সেদিন সেই রক্তাক্ত মোহাম্মদ নাসিম সব কর্মীদের হাসপাতালে পাঠিয়ে তারপরে যতদূর মনে পড়ে উনি এবং মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এক রিকশায় ঢাকা মেডিকেলে যান। এরপরে ১৯৯৬ এর জনতার মঞ্চে মোহাম্মদ নাসিমের আগুন ঝরানো ভাষণ এসব বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও সিভিল শাসন অর্জনের ইতিহাসের অংশ।

    তবে মোহাম্মদ নাসিমের রাজনীতিতে সব থেকে বড় সাফল্য ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে। ওই সময়ে সত্যি অর্থে সফল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। কারণ, পূর্ব পাকিস্তানের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশের ওই সময়টি জুড়ে দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল থেকে শুরু করে পাবনা রাজশাহী এলাকা অবধি পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টি ও সর্বহারা পার্টির ক্যাডারদের অবৈধ অস্ত্রের একটি রাজত্ব ছিল। তারা যখন তখন শ্রেনিশত্রু খেতাব দিয়ে যে কোন বড় কৃষক বা সাধারণ মধ্যবিত্ত এমনিক বাজারের একটু বড় দোকানিকেও হত্যা করা শুরু করেছিল। আর প্রায় রাতে কোন না কোন বাড়িতে ডাকাতি করতো। সর্বোপরি এরা মা বোনদের ইজ্জত নষ্ট করতো ওই এলাকায়। মোহাম্মদ নাসিমের আগে কোন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এদেরকে দমন করতে পারেননি। দমন করতে পারেননি সামরিক শাসকরাও। কারণ এদের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান শুরু হলেই এরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ওপারে গিয়ে থাকতো।

    অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের উগ্র বামদের কাছে তাদের এক ধরনের আশ্রয় ছিল। তাছাড়া সীমান্তের ওপার থেকেও তাদের কাছে অস্ত্র শস্ত্র আসতো। মোহাম্মদ নাসিমই প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যিনি রাজনৈতিক উদ্যোগ দিয়ে রাজনৈতিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করেন। তিনি তাদেরকে অস্ত্র সমর্পন করাতে সমর্থ হন। ফিরিয়ে আনতে সমর্থ হন ওইসব তথাকথিত সশস্ত্র বামদের স্বাভাবিক জীবনে। ওই সময়ে একজন সাংবাদিক হিসেবে ওই এলাকার প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি কী পরিমান জনপ্রিয় ছিলেন সেখানে মোহাম্মদ নাসিম। সত্যি অর্থে শেখ হাসিনার পরেই ওই এলাকায় সেদিন জনপ্রিয় ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। তার জনপ্রিয়তা ওই এলাকায় তখন এমন তুঙ্গে পৌঁছেছিল যে, ২০০১ এ যদি সত্যি অবাধ নির্বাচন হতো মোহাম্মদ নাসিমকে ওই এলাকায় ৫টি সিটে নমিনেশান দিলে তিনি সবকয়টি থেকেই পাস করে আসতেন।

    আজ অনেকে দোষ দেন, ২০০১ এ মোহাম্মদ নাসিমের ওই বক্তব্য ‘অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেও ক্ষমতা হস্তান্তর নয়’ এই সিদ্ধান্তের কারণে আওয়ামী লীগ ২০০১ এ হেরে যায়। আগাম নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জিততো এমনটি বলেন। বাস্তবে এ কথা ঠিক নয়। কারণ, ২০০১ সালের এই নীল নকশার নির্বাচন প্রায় এক বছর আগের থেকে বিএনপি ঠিক করতে সমর্থ হয়। সেদিনের সে ষড়যন্ত্রের অনেক কিছু দেখা ও জানার সুযোগ হয়েছিল। ভবিষ্যতে সময় সুযোগ হলে হয়তো সেগুলো লিখবো। সাহাবুদ্দিন- লতিফুর রহমানের সেদিনের অনেক কীর্তি-কলাপ নানান সময়ে লিখেছিও। যাহোক, এই আগাম নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জিততো এমন একটা ধারণা সৃষ্টি করাও ছিল বিএনপি-জামায়াত চক্রের একটি কৌশলে। তাদের এই কৌশলে পা দিয়ে একটি প্রগতিশীল পত্রিকাও সেদিন ‘শেষ সময়ে যা পাই তাই খাই’ বলে আওয়ামী লীগের নেতাদের সেদিন চরিত্র হনন করেছিল। তবে এটাই সত্য ২০০১ এ আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছিলো বলে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদেরকে নির্বাচনে জোর করে পরাজিত করে।

    এর পরে বিএনপির ২০০১ এর আমলে সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আরেক জাতীয় নেতা ও বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ সহ আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী এমনকি যুবমহিলা লীগের গর্ভবতী মহিলারাও সেদিন কীভাবে রাজপথে পুলিশের হাতে নিগৃহীত হয়েছে সে ইতিহাসও হয়তো আজকের তরুণরা জানে না। সেদিন রাজপথে বার বার রক্তাক্ত হয়েছেন মোহাম্মদ নাসিম, সোহেল তাজ তবুও কখনও তারা রাজপথ ছাড়েননি। আর ওই যুব মহিলা লীগের কর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ তাদের কীভাবে নির্যাতন করেছে সেই সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে এক পর্যায়ে আমার মহিলা সহকর্মীর সহায়তা নিতে হয়েছে। শোনা সম্ভব হয়নি নিজ থেকে। কারণ, সেই সমাজে আমরা বেড়ে উঠিনি বা আমাদের সমাজের গঠন ভিন্ন। আমাদের বাঙালির সমাজে মা বোন ভিন্ন সম্মানের আসনে।

    এমনিভাবে একের পর এক ঘটনা লিখতে গেলে লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে। তাই সংক্ষেপে শুধু এটুকু বলা যায় আগে ছাত্র রাজনীতি করলেও তখন তিনি ছিলেন ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর ছেলে। কিন্তু ১৯৭৫ এর পর থেকে একের পর এক চড়াই উৎরাই পার হয়ে নিজেই হয়েছিলেন জাতীয় রাজনীতির মোহাম্মদ নাসিম।

    তার মৃত্যুর পরে বা তিনি অসুস্থ হবার পরে এক শ্রেণির লোকেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা বিভিন্ন খবরের নিচে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে তার ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কথা তুলে অনেক কথা লিখছেন। মোহাম্মদ নাসিম কতটুকু দুর্নীতি করেছিলেন তার সঠিক তথ্য আমার কাছে নেই। তবে তার আমলে অন্য অনেক মন্ত্রণালয়ের মত তার মন্ত্রণালয়ে কেনা-কাটা সহ অনেক কিছু সঠিকভাবে হয়নি। এর জন্যে একজন ব্যক্তি নাসিমকে দোষারোপ করে খুব কি লাভ হবে! আমাদের সামগ্রিক কাঠামো না বদলে কি আসলে আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে পারবো? বঙ্গবন্ধুও এই দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে বাকশাল করেছিলেন দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে।

    বাংলাদেশকে সত্যি অর্থে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে সামাজিক বিপ্লব করতে হবে হয়তো। তবে তারপরেও আজ আমি মোহাম্মদ নাসিমকে ডিফেন্ড করছি না শুধু বলতে চাই, মোহাম্মদ নাসিম কি কোন ‘ভবন’ খুলে দুর্নীতি করেছে? দুই বার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে যাদের পরিবার পরিজনরা জুয়াকে রোজগারের উৎস দেখিয়ে মালয়েশিয়া বা ইংল্যান্ডে রাজার হালে বাস করছেন মোহাম্মদ নাসিম কি তাদের মত কিছু করেছেন? এমনকি যারা বিদেশে ক্যাসিনো হাউজ গড়ে তুলেছে, যারা শেয়ার বাজার শেষ করে বিদেশি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছেন , মোহাম্মদ নাসিম কি সেই পথে গেছেন!

    বরং বলা যায়, ভুল ক্রটি যাই থাকুক জীবনের বড় অংশ তিনি দেশের মানুষের জন্যেই নিবেদন করে গেছেন। তাই তিনি একটি বিশেষ যুগের প্রতিনিধি। আর ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি বাংলাদেশে একজন মুক্তিযোদ্ধা যদি কোটি টাকা দামের গাড়ি চড়ে তাহলেও এ মাটি সন্তুষ্ঠু হবে কিন্তু রাজাকার বা রাজাকারের সন্তান কোটি টাকার গাড়ি এ মাটিতে চড়লে বাংলা মায়ের মাটি নিঃসন্দেহে ব্যথা পায়।

  3. মাসুদ করিম - ১৭ জুন ২০২০ (২:৩০ অপরাহ্ণ)

    সাইফুল আজম: এক যোদ্ধা ‘ঈগলের’ উপাখ্যান

    ইতিহাসে সেই লড়াই ‘ছয় দিনের যুদ্ধ’ হিসেবে পরিচিত। ১৯৬৭ সালের ৫ জুন অতর্কিত হামলায় মুহুর্মুহু বোমা ফেলে মিশরের প্রায় সব জঙ্গি বিমান ধ্বংস করে দেয় তখনকার অত্যাধুনিক জেট ফাইটার ‘মিরাজ’ আর ’সুপার মিসটেয়ার’ সজ্জিত ইসরায়েলি বাহিনী।

    মিশরে এমন তাণ্ডবের পর ইসরায়েল একই রকম হামলা চালাতে যায় আরব মিত্র জর্ডানে। অনেকটা বিনা বাধায় ইসরায়েলি ফাইটার জর্ডানে ঢুকে মাফরাক বিমানঘাঁটিতে হামলা শুরু করে।

    সে সময় প্রতিরোধ গড়তে পেরেছিলেন কেবল পাকিস্তান বিমানবাহিনী থেকে ডেপুটেশনে আসা দুঃসাহসী বাঙালি তরুণ- সাইফুল আজম সুজা, যিনি পরে সত্তরের দশকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর গ্রুপ কাপ্টেন হিসেবে অবসরে যান।

    রয়্যাল জর্ডানিয়ান এয়ারফোর্সের একটি হকার হান্টার নিয়ে সেদিন আকাশে উড়ে সাইফুল ফ্রান্সে তৈরি একটি ইসরায়েলি সুপার মিসটেয়ার জেট ভূপাতিত করেন। তার ছোড়া গোলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আরেকটি ইসরায়েলি ফাইটার পালানোর পথে বিধ্বস্ত হয়।

    তরুণ অফিসার সাইফুল আজমসহ তখনকার পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একটি দল মাত্র কয়েক মাসের জন্য আরবের দেশ জর্ডানে গিয়েছিলেন বৈমানিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য। কিন্তু মিশরের পর ইসরায়েল যখন জর্ডানে জঙ্গি বিমান পাঠাল, সাইফুলদের ওপর ভার পড়েছিল প্রতিরোধ গড়ার।

    তাদের সেই চেষ্টায় জর্ডানের শেষ রক্ষা হয়নি, বোমা ফেলে একদিনে কেবল যুদ্ধবিমান নয়, যাত্রীবাহী সব উড়োজাহাজও ধ্বংস করে দিয়েছিল ইসরায়েলিরা।

    তবুও এমন বীরত্বের জন্য জর্ডানের বাদশাহর কাছ থেকে ‘ওয়াসাম-আল-ইসতিকবাল’ খেতাব পেয়েছিলেন বৈমানিক সাইফুল আজম।

    মাফরাক বিমানঘাঁটি থেকে সেই যুদ্ধের দুদিনের মাথায় সাইফুল আজমের ডাক পড়ে যুদ্ধের আরেক ফ্রন্ট ইরাকে; সেখানেও ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পেরেছিলেন তিনি।

    এক জর্ডানি ও দুই ইরাকি বৈমানিককে সঙ্গে নিয়ে বাঙালি যোদ্ধা সাইফুল আজম সেদিন ওড়েন ইরাকি বিমানবাহিনীর হয়ে।

    পশ্চিম ইরাকের আকাশে ডগ ফাইটে সাইফুল ধরাশায়ী করেন ইসরায়েলের একটি মিরাজ ফাইটারকে। পরে ভূপাতিত করেন ইসরায়েলের ভুতুর বোমারু বিমান। দুই ইসরায়েলি বৈমানিক ধরা পড়ে ইরাকি বাহিনীর হাতে।

    ইরাকি বাহিনীর হয়ে এমন বীরোচিত লড়াইয়ের জন্য দেশটির তরফ থেকে ’নাওত-আল সুজা’ পদকে ভূষিত হন সাইফুল।
    ইসরায়েলি বাহিনীর চারটি যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করার রেকর্ড সাইফুল আজম ছাড়া আর কোনো বৈমানিকের নেই। জেট ফাইটার নিয়ে তিনি আকাশে উড়েছেন চার দেশের হয়ে, এটাও একটি রেকর্ড।

    আকাশ যুদ্ধের বীর সেনানী সাইফুল আজম বিমানবাহিনী থেকে অবসরের পর দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান হিসেবে। রাজনীতিতে নেমে পাবনার এমপি হিসেবে গেছেন সংসদে।

    গত ১৪ জুন ৭৯ বছর বয়সে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এই সাবেক গ্রুপ ক্যাপ্টেন।

    ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাইফুল আজমের মৃত্যু হয়। সোমবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বাশারে জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শাহীন কবরস্থানে সমাহিত করা হয় তাকে।

    সাইফুল আজমের মৃত্যু শোকগ্রস্ত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদেরও। ফিলিস্তিনের ইতিহাসবিদ ওসামা আল-আশকার তাকে বর্ণনা করেছেন একজন ‘মহান বৈমানিক’হিসেবে।

    ফেইসবুকে এক পোস্টে শোক জানাতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদকে রক্ষার লড়াইয়ে এই ‘বাংলাদেশি ভাইও’ শামিল হয়েছিলেন।

    ফিলিস্তিনের অধ্যাপক নাজি শুকরি এক টুইটে সাইফুল আজমের প্রতি স্যালুট জানিয়ে লিখেছেন, “তিনি ফিলিস্তিনকে ভালোবাসতেন এবং জেরুজালেমের স্বার্থে লড়াই করেছিলেন।”

    মৃত্যুতে সাইফুল আজমকে স্মরণ করেছে জর্ডানও। দেশটির যুবরাজ হাসান বিন তালাল এক শোকবার্তায় এই বাংলাদেশি বৈমানিকের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

    ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ ভারতে পূর্ববাংলার পাবনায় সাইফুল আজমের জন্ম। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগ দিয়ে দুই বছর পর কমিশন পান।

    তার চাচাত ভাই বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান ফখরুল আজম জানান, ছেলেবেলা থেকেই সাইফুল ছিলেন চৌকস, খেলাধুলায় পারদর্শী।

    “তিনি ছোটবেলা থেকে আমার কাছে ছিলেন রোল মডেলের মত। যেমন খেলাধুলায়, তেমন লেখাপড়ায়। তাকে দেখেই আমি মূলত বিমান বাহিনীর দিকে ঝুঁকেছিলাম।”

    ‘প্রিয় ভাইজান’ সাইফুল আজম সেই দক্ষতা আর বুদ্ধিমত্তা দিয়ে জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাফল্য পেয়েছেন বলে মনে করেন অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল ফখরুল আজম।

    পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কমিশন পাওয়ার পর প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের লুক এয়ার ফোর্স বেইজে পাঠানো হয় তরুণ অফিসার সাইফুল আজমকে। সেখানে বম্বিংয়ে নিখুঁত নিশানার ট্রেইনিংয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে তিনি ‘টপ গান’ উপাধি পান।
    অ্যারিজোনার ওই ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এসে মিলিটারি ফ্লাইট ইনস্ট্রাক্টর হিসাবে যোগ দেন জুনিয়র পাইলট সাইফুল। ১৯৬৫ সালের কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ জড়ালে পশ্চিম পাকিস্তানের পাঞ্জাবে ডাক পড়ে তার।

    ২৪ বছর বয়সী সাইফুল আজম সেই যুদ্ধে অংশ নেন কানাডায় নির্মিত একটি সেবার জেট নিয়ে। ব্রিটেনে তৈরি ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি ফোল্যান্ড নাট ফাইটারের ধাওয়া এড়িয়ে পাল্টা আক্রমণ চালান। আকাশযুদ্ধে ভূপাতিত করেন একটি ভারতীয় বিমান।

    সেই বীরত্বের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন সাইফুল আজম। পাকিস্তান সরকার তাকে তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক পদক ’সিতারা-এ-জুরাআত’ এ ভূষিত করে।

    ২০১৮ সালে ’লিভিং ঈগল: সাইফুল আজম’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্রে ভারতের সেই ফোল্যান্ড নাট বিমান ভূপাতিত করার একটা বর্ণনা দেন এই যোদ্ধা।

    আকাশে যথাযথভাবে নিশানা ঠিক করতে পারাকে নিজের সাফল্যের মূল কারণ হিসাবে বর্ণনা করে সেখানে তিনি বলেন, “আমার টার্গেট স্পটিং ছিল সুচারু, সে কারণে আমি সফল হতাম।”

    যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসিকতা আর কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাদারিং অব ঈগলস ফাউন্ডেশন বিশ্বের যে ২২ বৈমানিককে ‘লিভিং ঈগল’ সম্মাননা দিয়েছিল, সাইফুল আজম তাদেরই একজন।

    লড়া হয়নি দেশের জন্য

    যে তিন দেশের বিমান বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেছিলেন, সবগুলো থেকে বীরত্বের স্বীকৃতি পেয়েছেন সাইফুল আজম। কিন্তু চেষ্টা চালিয়েও জন্মভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে যোগ দিতে পারেননি এই বৈমানিক।

    ১৯৭১ সালের অগাস্টে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর ছয় মাসের মাথায় পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসতে চেয়ে ব্যর্থ হন সাইফুল আজম। কয়েকজন বাঙালি সহকর্মীকে নিয়ে একটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে পালানোর পরিকল্পনা করে ধরা পড়ে যান।

    তার চাচাত ভাই ফখরুল আজম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, টানা ২১ দিন নির্জন সেলে আটকে রেখে নির্মম অত্যাচার চালানো হয় সাইফুলের ওপর। তাকে সামরিক আদালতের মুখোমুখি করা হলেও জর্ডানের বাদশাহ হুসেইন বিন তালালের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত তিনি রক্ষা পান।

    “নির্যাতনে ভাইজানের শরীরে অনেক জখম ছিল, শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জর্ডানের পদকপ্রাপ্ত হওয়ায় বাদশাহ হস্তক্ষেপ করেছিলেন।”

    বিচার থেকে রেহাই পেলেও পরিবারসহ সাইফুল আজমকে গৃহবন্দি থাকতে হয় দীর্ঘদিন। শেষ পর্যন্ত তার মুক্তি মেলে ১৯৭৪ সালে। পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত বাঙালিদের সর্বশেষ ব্যাচের সঙ্গে ৯ জানুয়ারি তিনি দেশে ফেরেন।

    বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফ্লাইট সেফটি পরিচালক এবং পরে ডিরেক্টর অব অপারেশনসের দায়িত্ব পালন করেন সাইফুল আজম। ১৯৭৭ সালে পদোন্নতি পেয়ে হন উইং কমান্ডার, পান ঢাকায় বিমান ঘাঁটির দায়িত্ব।

    ১৯৭৯ সালে গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে বিমান বাহিনীর ২১ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানেন তিনি।

    ঘনিষ্ঠজনরা জানান, অবসরে গেলেও প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে শুরু করে আকাশে ওড়ায় বিরাম ছিল না সাইফুল আজমের।

    বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিনি মূলত বিমানবাহিনীতে ছিলেন। বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমিতেও অনারারি ইন্সট্রাকটর হিসেবে আসতেন।
    ”১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে ফ্লাইং একাডেমিতে যখন ফ্লাই করতেন তখন তার সঙ্গে অনেকেই ফ্লাই করেছেন। এখন আমরা বিমানে অনেকেই যারা ক্যাপ্টেন আছি, ৭৭৭, ৭৮৭ বা এসব জাহাজের, অনেকেই তার ছাত্র। আমি তার সরাসরি ছাত্র না হলেও তার অনেক ব্রিফিং আমি ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে পেয়েছি।”

    সাইফুল আজম ১৯৮২-৮৪ এবং ১৯৮৭-৮৮ সাল পর্যন্ত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

    ১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদে সাইফুল আজম পৈত্রিক এলাকা পাবনার একটি আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। এক সময় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করেপারেশনের (এফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।

    জীবনের শেষ সময়ে নাতাশা ট্রেডিং এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন সাইফুল আজম। এমএএএস নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সিও ছিল তার।

    পেশাগত জীবনে উচ্চশিখরে ওঠার স্বীকৃতি পেলেও সেভাবে প্রচারের আলোয় আসেননি বৈমানিক সাইফুল আজম।

    মৃত্যুর পর ‘বিনয়ী, প্রচারবিমুখ ও স্বল্পভাষী’ সেই সাইফুল আজমকে স্মরণ করেছেন এভিয়েশন খাতের পত্রিকা পাক্ষিক মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম।

    বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ”তার যে বীরত্বপূর্ণ আর গৌরবোজ্জ্বল একটা অতীত রয়েছে, সেটা নিজে থেকে তিনি কখনোই কাউকে বলতেন না। এ কারণে মৃত্যুর পর আজ তার বীরত্বপূর্ণ অবদানের কথা সামনে আসছে।”

    ’লিভিং ঈগল: সাইফুল আজম’ প্রামাণ্যচিত্রে বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এজি মাহমুদ বলেছিলেন, “সে কখনো ওই বিষয়গুলো গল্প হিসাবেও বলেনি। আমি তাকে খুবই সজ্জন হিসাবে জানি। এই মডেস্টিই তাকে নেতৃত্বের সারিতে নিয়ে আসে।

    ”একজন ক্যাডেট হিসাবে আমি তাকে মনে করতে পারি। সে সময়ে আমি একজন প্রশিক্ষক ছিলাম। আমি সাইফুল আজমের জন্য খুবই গর্বিত, কারণে তার অর্জনগুলো এসেছে ৩০ বছর বয়স হওয়ার আগেই।”

  4. মাসুদ করিম - ২০ জুন ২০২০ (১:৫৯ অপরাহ্ণ)

    কামাল লোহানী: বিজয়ের খবর এসেছিল যার কণ্ঠে

    ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি যে খবরটি শোনার জন্য উন্মুখ হয়ে ছিল, সেই বিজয়ের খবরটি এসেছিল কামাল লোহানীর কণ্ঠে।

    “আমরা বিজয় অর্জন করেছি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাদের মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছে।”

    খুব সংক্ষিপ্তভাবে এক কথায় বলেছিলেন কামাল লোহানী, তারপর নিজেরা মেতেছিলেন বিজয় উদযাপনে, সেই সঙ্গে গোটা দেশও।

    স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের বার্তা বিভাগের প্রধান ছিলেন কামাল লোহানী; নানা রোগের পাশাপাশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৮৬ বছর বয়সে শনিবার চিরবিদায় নিলেন তিনি।

    ছেলেবেলাতেই বাঙালির ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ার পর প্রতিটি সংগ্রামে নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন কামাল লোহানী।

    সেজন্য মৃত্যুতে তাকে স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, “সাংস্কৃতিক আন্দোলনসহ বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে তিনি ছিলেন একজন পুরোধা ব্যক্তি।”

    “আমরা একজন প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার অসাধারণ যোদ্ধাকে হারালাম,” বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    কামাল লোহানীর জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৬ জুন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার খান সনতলা গ্রামে। তার নাম রাখা হয়েছিল আবু নঈম মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান লোহানী।

    পাবনা জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন ১৯৫২ সালে তিনি। পরে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।

    পাবনা জিলা স্কুলে শেষ বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে কামাল লোহানীর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ১৯৫৩ সালে নুরুল আমিনসহ মুসলিম লীগ নেতাদের পাবনা আগমন প্রতিরোধ করতে গিয়ে তাকে কারাগারে যেতে হয়।

    মুক্ত হতে না হতেই আবার ১৯৫৪ সালে গ্রেপ্তার হন কামাল লোহানী। সেই সময় তিনি কমিউনিস্ট মতাদর্শে দীক্ষিত হন।

    পরের বছর আবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে একই কারাকক্ষে তার বন্দিজীবন কাটে।

    পরে কমিউনিস্ট মতাদর্শ নিয়ে নেমে পড়েন সংগ্রামে, উচ্চ মাধ্যমিকের পর তাই তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আর এগোয়নি।

    এর মধ্যে সাংবাদিকতা শুরু করেন ১৯৫৫ সালে দৈনিক মিল্লাত পত্রিকা দিয়ে। এরপর দৈনিক আজাদ, সংবাদ, জনপদ, বঙ্গবার্তা, পূর্বদেশ, বাংলার বাণী, দৈনিক বার্তায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন।

    সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাংবাদিকদের রুটি-রুজির আন্দোলনেও ছিলেন অগ্রভাগে। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর ঠিক আগে।

    ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে কামাল লোহানীও তাতে যুক্ত হন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের বার্তা বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব নেন তিনি।

    কামাল লোহানী ২০০৩ সালে এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, “এটা আমার কাছে গর্বের ব্যাপার যে, ৯ মাস যে যুদ্ধ আমরা করেছি, জয় মুহুর্তের খবরটি আমি সমস্ত পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষী মানুষ শুধু নয়, সমস্ত মানুষের কাছে আমরা মুখেই উচ্চারিত হল।”

    তিনি বলেছিলেন, ওইদিন ওই বিশেষ বুলেটিনটি প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে বেজে উঠেছিল গান- ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই…।’

    কামাল লোহানীর ভাষ্যে – “যেহেতু আমি সংবাদ বিভাগের প্রধান ছিলাম, সেজন্য ওই দিনের (১৬ ডিসেম্বর) সংবাদ লেখার দায়িত্বটা আমার উপর পড়ল।

    “আমি যে সংবাদটা লেখেছিলাম মাত্র পাঁচ লাইনের সংবাদ ছিল। তিন লাইন ছিল শুধু পাকিস্তানকে গালাগাল করার এবং দুই লাইন ছিল- আমরা স্বাধীন হয়েছি… ।”

    “আত্মসমপর্ণের সংবাদ যখন আমরা পেলাম, তখন আমরা শিল্পী কলাকুশলী সবাই জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে হৈ হুল্লোর করতে করতে ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। যতদূর মনে পড়ে আশ-পাশের ঘর থেকে আমাদের জন্য মিষ্টি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল,” বলেছিলেন তিনি।

    স্বাধীনতার পর বেতারের পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন কামাল লোহানী। প্রেস ইন্সটিটিউটেও কিছুদিন কাজ করেছেন তিনি।

    ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের দিকে মনোযোগী হন তিনি। ১৯৮১ সালে দৈনিক বার্তার সম্পাদকের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে নতুন উদ্যমে সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন। পরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

    তবে এর শুরুটা হয়েছিল ষাটের দশকে। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র শতবর্ষ পালনে পাকিস্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি হলে ছায়ানটের নেতৃত্বে কামাল লোহানী ও হাজারো রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক কর্মী সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

    ১৯৬২ সালে কামাল লোহানী ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। পরে ১৯৬৭ সালে গড়ে তোলেন তার রাজনৈতিক আদর্শের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি’।

    ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর হয়ে গান গাইতেন আলতাফ মাহমুদ, শেখ লুৎফর রহমান, সুখেন্দু দাশ, আবদুল লতিফসহ প্রথিতযশা শিল্পীরা ।

    ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে পূর্ব বাংলার শিল্পীরা যে ভূমিকা রেখেছেন, তার সঙ্গেও কামাল লোহানী সম্পৃক্ত ছিলেন পুরোপুরি।

    স্বাধীন বাংলাদেশে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট গড়ে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বের ভূমিকা রাখেন তিনি।

    তবে এখনকার সাংস্কৃতিক আন্দোলনের হালে হতাশ ছিলেন কামাল লোহানী।

    এক বছর আগে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, “পাকিস্তান আমলে লবণের দাম বেড়েছিল, তখন গান লেখা হয়েছিল। কবিতা লেখা হয়েছিল। কিন্তু আজ দুইশ টাকার বেশি দাম উঠলেও তা নিয়ে কোনো গান লেখা হয় না, কবিতা হয় না।”

    উদীচী শিল্পী গোষ্ঠির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন কামাল লোহানী।

    আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর দুই দফা মহাপরিচালক ছিলেন।

    একাত্তর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টাও ছিলেন কামাল লোহানী।

    সাংবাদিকতার জন্য ২০১৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।

  5. মাসুদ করিম - ২১ জুন ২০২০ (৯:০৪ পূর্বাহ্ণ)

    চলে গেলেন অনুবাদক জাফর আলম

    চলে গেলেন বাংলাদেশের অন্যতম অনুবাদক তথ্য অধিদপ্তরের সাবেক জ্যেষ্ঠ উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা জাফর আলম। গতকাল শনিবার তথ্য অধিদপ্তরের এক তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়, শুক্রবার রাতে ঢাকার মিরপুরে নিজের বাসায় মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। গতকাল মিরপুরে স্ত্রীর কবরের পাশে তার লাশ সমাহিত করা হয়।

    দুই ছেলে, এক মেয়ে রেখে গেছেন জাফর আলম। তথ্য সচিব বেগম কামরুন নাহার এক শোকবার্তায় তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার এবং বিসিএস ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স ম গোলাম কিবরিয়া ও মহাসচিব মুন্সী জালাল উদ্দিনও পৃথক বিবৃতিতে জাফর আলমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন।

  6. মাসুদ করিম - ২২ জুন ২০২০ (৪:৫৫ পূর্বাহ্ণ)

    What if all viruses disappeared?

    Viruses seem to exist solely to wreak havoc on society and bring suffering to humanity. They have cost untold lives over the millennia, often knocking out significant chunks of the global population – from the 1918 influenza epidemic which killed 50 to 100 million people to the estimated 200 million who died from smallpox in the 20th Century alone. The current Covid-19 pandemic is just one in a series of ongoing and never-ending deadly viral assaults.

    If given the choice to magically wave a wand and cause all viruses to disappear, most people would probably jump at that opportunity, especially now. Yet this would be a deadly mistake – deadlier, in fact, than any virus could ever be.

    “If all viruses suddenly disappeared, the world would be a wonderful place for about a day and a half, and then we’d all die – that’s the bottom line,” says Tony Goldberg, an epidemiologist at the University of Wisconsin-Madison. “All the essential things they do in the world far outweigh the bad things.”

    The vast majority of viruses are not pathogenic to humans, and many play integral roles in propping up ecosystems. Others maintain the health of individual organisms – everything from fungi and plants to insects and humans. “We live in a balance, in a perfect equilibrium”, and viruses are a part of that, says Susana Lopez Charretón, a virologist at the National Autonomous University of Mexico. “I think we’d be done without viruses.”

    Most people are not aware of the role viruses play in supporting much of life on Earth, because we tend to focus only on the ones that cause humanity trouble. Nearly all virologists solely study pathogens; only recently have a few intrepid researchers begun investigating the viruses that keep us and the planet alive, rather than kill us.

    “It’s a small school of scientists who are trying to provide a fair and balanced view of the world of viruses, and to show that there are such things as good viruses,” Goldberg says.

    What scientists know for sure is that without viruses, life and the planet as we know it would cease to exist. And even if we wanted to, it would probably be impossible to annihilate every virus on Earth. But by imagining what the world would be like without viruses, we can better understand not only how integral they are to our survival, but also how much we still have to learn about them.

    For a start, researchers do not know how many viruses even exist. Thousands have been formally classified, but millions may be out there. “We’ve discovered only a small fraction because people haven’t looked much,” says Marilyn Roossinck, a virus ecologist at Penn State University. “It’s just bias – the science has always been about the pathogens.”

    Nor do scientists know what percentage of total viruses are problematic toward humans. “If you looked numerically, it would be statistically close to zero,” says Curtis Suttle, an environmental virologist at the University of British Columbia. “Almost all viruses out there are not pathogenic to things we care about.”

    Key to ecosystems

    What we do know is that phages, or the viruses that infect bacteria, are extremely important. Their name comes from the Greek phagein, meaning “to devour” – and devour they do. “They are the major predators of the bacterial world,” Goldberg says. “We would be in deep trouble without them.”

    Phages are the primary regulator of bacterial populations in the ocean, and likely in every other ecosystem on the planet as well. If viruses suddenly disappeared, some bacterial populations would likely explode; others might be outcompeted and stop growing completely.

    This would be especially problematic in the ocean, where more than 90% of all living material, by weight, is microbial. Those microbes produce about half the oxygen on the planet – a process enabled by viruses.

    These viruses kill about 20% of all oceanic microbes, and about 50% of all oceanic bacteria, each day. By culling microbes, viruses ensure that oxygen-producing plankton have enough nutrients to undertake high rates of photosynthesis, ultimately sustaining much of life on Earth. “If we don’t have death, then we have no life, because life is completely dependent on recycling of materials,” Suttle says. “Viruses are so important in terms of recycling.”

    Researchers studying insect pests also have found that viruses are critical for species population control. If a certain species becomes overpopulated, “a virus will come through and wipe them out”, Roossinck says. “It’s a very natural part of ecosystems.” This process, called “kill the winner”, is common in many other species as well, including our own – as evidenced by pandemics. “When populations become very abundant, viruses tend to replicate very rapidly and knock that population down, creating space for everything else to live,” Suttle says. If viruses suddenly disappeared, competitive species likely would flourish to the detriment of others.

    “We’d rapidly lose a lot of the biodiversity on the planet,” Suttle says. “We’d have a few species just take over and drive out everything else.”

    Some organisms also depend on viruses for survival, or to give them an edge in a competitive world. Scientists suspect, for example, that viruses play important roles in helping cows and other ruminants turn cellulose from grass into sugars that can be metabolised and ultimately turned into body mass and milk.

    Researchers likewise think that viruses are integral for maintaining healthy microbiomes in the bodies of humans and other animals. “These things are not well understood, but we’re finding more and more examples of this close interaction of viruses being a critical part of ecosystems, whether it’s our human ecosystem or the environment,” Suttle says.

    Roossinck and her colleagues have discovered concrete evidence supporting this. In one study, they examined a fungus that colonises a specific grass in Yellowstone National Park. They found that a virus that infects that fungus allows the grass to become tolerant to geothermal soil temperatures. “When all three are there – the virus, fungi and plant – then the plants can grow in really hot soils,” Roossinck says. “The fungus alone doesn’t do it.”

    In another case study, Roossinck found that a virus passed through jalapeno seeds allows infected plants to deter aphids. “Aphids are more attracted to plants that don’t have the virus, so it’s definitely beneficial,” Roossinck says.

    She and her colleagues have discovered that plants and fungi commonly pass viruses from generation to generation. While they have yet to pinpoint the function of most of those viruses, they assume the viruses must somehow be helping their hosts. “Otherwise, why would plants hang on to them?” Roossinck says. If all of those beneficial viruses disappeared, plants and other organisms that host them would likely become weaker or even die.

    Protective to humans

    Infection with certain benign viruses even can help to ward off some pathogens among humans.

    GB virus C, a common blood-born human virus that is a non-pathogenic distant relative of West Nile virus and dengue fever, is linked to delayed progression to Aids in HIV-positive people. Scientists also found that GB virus C seems to make people infected with Ebola less likely to die.

    Likewise, herpes makes mice less susceptible to certain bacterial infections, including the bubonic plague and listeria (a common type of food poisoning). Infecting people with herpesvirus, bubonic plague and listeria to replicate the mouse experiment would be unethical, but the study’s authors suspect that their findings in rodents likely apply to humans.

    While lifelong infection with herpesviruses “are commonly viewed as solely pathogenic,” they write, their data suggest that herpes in fact enters into a “symbiotic relationship” with its host by conferring immune benefits. Without viruses, we and many other species might be more prone to succumbing to other diseases.

    Viruses are also some of the most promising therapeutic agents for treating certain maladies. Phage therapy, the subject of considerable research in the Soviet Union as far back as the 1920s, uses viruses to target bacterial infections. It’s now a quickly growing field – not only because of increasing antibiotic resistance, but also because of the ability to fine-tune treatments to knock out specific bacterial species rather than indiscriminately wipe our entire bacterial populations, as antibiotics do. (Read more about what we do and don’t know about our microbiome).

    “Quite a number of lives have been saved by using viruses when antibiotics have failed,” Suttle says. Oncolytic viruses, or ones that selectively infect and destroy cancer cells, are also increasingly being explored as a less toxic and more efficient cancer treatment. Whether targeting harmful bacteria or cancer cells, therapeutic viruses act “like little microscopic guided missiles that go in and blow up the cells we don’t want”, Goldberg says. “We need viruses for a suite of research and technology development efforts that are going to lead us into the next generation of therapeutics.”

    Because they are constantly replicating and mutating, viruses also hold a massive repository of genetic innovation that other organisms can incorporate. Viruses replicate by inserting themselves into host cells and hijacking their replication tools. If this happens in a germline cell (eggs and sperm), the viral code can be passed on to the next generation and become permanently integrated. “All organisms that can be infected with viruses have an opportunity to suck up viral genes and use them to their advantage,” Goldberg says. “The insertion of new DNA into genomes is a major mode of evolution.” The disappearance of viruses, in other words, would impact the evolutionary potential for all life on the planet – including Homo sapiens.

    Viral elements account for an estimated 8% of the human genome, and mammalian genomes in general are peppered with around 100,000 remnants of genes originating from viruses. Viral code often manifests as inert pieces of DNA, but sometimes it confers new and useful – even essential – functions. In 2018, for example, two research teams independently made a fascinating discovery. A gene of viral origin encodes for a protein that plays a key role in long-term memory formation by moving information between cells in the nervous system.

    The most striking example, though, relates to the evolution of the mammalian placenta and the timing of gene expression in human pregnancy. Evidence indicates that we owe our ability to have live births to a bit of genetic code that was co-opted from ancient retroviruses that infected our ancestors more than 130 million years ago. As the authors of that 2018 discovery wrote in PLOS Biology: “It is tempting to speculate that human pregnancy would be very different – perhaps even nonexistent – were it not for eons of retroviral pandemics afflicting our evolutionary ancestors.”

    Experts believe that such signatures occur throughout all forms of multi-cellular life. “There are likely many functions that remain unknown,” Suttle says.

    Scientists have only just begun to discover the ways that viruses help to sustain life, because they have only just begun to look. Ultimately, though, the more we learn about all viruses, not just the pathogens, the better equipped we will be to harness certain viruses for good and to develop defenses against others that could lead to the next pandemic.

    More than that, learning more about the wealth of viral diversity will help us unlock a deeper understanding of how our planet, ecosystems and very bodies work. As Suttle says, “We need to invest some effort in trying to figure out what’s out there, just for our own good.”

  7. মাসুদ করিম - ২৬ জুন ২০২০ (১২:৪৫ পূর্বাহ্ণ)

    দেশে কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে ১২৭১ জনের মৃত্যু: বিপিও

    বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এখন পর্যন্ত এক হাজার ২৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি (বিপিও) জানিয়েছে।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) গবেষণা প্রকল্প বিপিও করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে প্রতি সপ্তাহে হালনাগাদ তথ্য ‘কোভিড-১৯ গ্রাফিক্স’ শীর্ষক লেখচিত্র আকারে প্রকাশ করছে। গত ৮ মার্চ থেকে ২০ জুন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর ওই পরিসংখ্যান দিয়েছে তারা।

    জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র, অনলাইন সংবাদমাধ্যম, টেলিভিশনসহ ২৪টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে এ গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

    বৃহস্পতিবার বিপিও তাদের ১১তম ‘কোভিড-১৯ গ্রাফিক্স’ প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে দেশে ১৭৪ জন করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।

    বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরে পড়ে। শুরুতে প্রথম দুই সপ্তাহে কেউ উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার সংবাদ না এলেও পরে গত ২২ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তিনজন কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে মারা যান বলে লেখচিত্রে দেখা যায়।

    তবে ২৯ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৬৩ জন কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে মারা যান। পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে পর্যায়ক্রমে ১০৬, ১২০, ১১৪, ৯৩, ৫০, ৬৭, ৪৮, ৬৩, ১৫৪, ২০৬ এবং সর্বশেষ সপ্তাহে ১৭৪ জন মিলে মোট ১২৭১ জনের মৃত্যুর তথ্য উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

    বিপিও বলছে, করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৮৬ জন। এরপর ঢাকায় ৩০৩, খুলনায় ১৩২, রাজশাহীতে ১২৩, বরিশালে ১৩৩, সিলেটে ৭৮, রংপুরে ৬৮ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৮ জন মারা গেছেন করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে।

    এছাড়া বিপিও তাদের গবেষণায় করোনাভাইরাস মহামারী ঘিরে সংঘটিত দেশের বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার তথ্য তুলে ধরেছে ।

    তাদের প্রতিবেদন বলছে, করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে গত ২০ জুন পর্যন্ত ৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। এছাড়া ত্রাণ আত্মসাৎ, খাদ্যে ভেজাল ও করোনাভাইরাস বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘনের মতো অনিয়ম ও অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫০৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ১০ হাজার ৬০৩ জনকে।

    বিপিও বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে ২১০টি নির্যাতন ও সামাজিক কলঙ্ক দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৫৬টি বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ ত্রাণসামগ্রী ও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহায়তার দাবিতে, বেতন ও বোনাস পরিশোধের দাবিতে ৪৪ শতাংশ এবং ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের বিরুদ্ধে ৬ শতাংশ।

    এছাড়া করোনাভাইরাস নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে ১৩১টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে সারা দেশে। এতে ১৮ জন মারা গেছেন এবং ৫৫০ জন আহত হয়েছেন।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার নিয়মিত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের তথ্য দিচ্ছেন। কিন্তু সেখানে কোভিডের লক্ষণ নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। মানুষ মনে করছে, কোভিডের উপসর্গ নিয়ে বহু সংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, সংক্রমণের শুরুতে এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা কম হলেও, মাঝে অনেক বেড়ে গিয়েছিল। এখন আবার কমছে। কারণ পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ছে।”

    গবেষণার পদ্ধতি নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সেকেন্ডারি ডেটা অ্যানালাইসিস করে গবেষণা করছি। জাতীয়, আঞ্চলিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, টেলিভিশনসহ সব সংবাদমাধ্যম থেকে তথ্য নিচ্ছি। তথ্যের ক্রস চেক করার জন্য বেশি গণমাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে মাঠপর্যায় থেকে এসব তথ্য যাচাই করা সম্ভব হচ্ছে না।”

    অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, “করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেও তাদের অনেকেই পজিটিভ নাও হতে পারেন। একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে আমরা পেয়েছি, কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেও এদের ৮৫ শতাংশেরই মৃত্যুর পর করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে। তবে আমাদের গবেষণায় নেগেটিভ আসার তথ্যটি তুলে আনা সম্ভব হয়নি।”

    COVID19graphics from BPO.

  8. মাসুদ করিম - ২৬ জুন ২০২০ (২:০৪ অপরাহ্ণ)

    Will Floating Turbines Usher in a New Wave of Offshore Wind?

    As locations for wind energy fill up onshore and near-shore, companies are deploying floating turbines that can be sited in deep waters, out of view from the coast. Proponents contend the new technology could boost the wind industry, but daunting challenges, including costs, remain.

    At Scotland’s easternmost headland, the old fishing port of Peterhead juts out into the North Sea. “On a clear day,” says Alastair Reid, an economic development official with the Aberdeenshire Council, “from the harbor you can just make out the turbines of the Hywind park.”

    In windswept northern Scotland, where abundant wind arrays both on land and off the coast vie for limited space, the distant location of the five towering 574-foot-tall turbines, 15 miles offshore, is just one novelty of this renewable energy project. Indeed, Hywind Scotland, which generates enough electricity for more than 20,000 homes, is the first wind energy array that floats on the sea’s surface rather than being dug into the ocean bed. Proponents say the technology heralds a new generation of green energy.

    What’s groundbreaking about the Hywind project, located in more than 300 feet of water, is that the giant masts and turbines sit in buoyant concrete-and-steel keels that enable them to stand upright on the water, much like a fishing bobber. The turbines’ nearly 10,000-ton cylindrical bases are held in place with three taut mooring cables attached to anchors, which lie on the seafloor.

    In contrast to ordinary offshore wind turbines, with long towers sunk into the seabed and bolted into place in shallow seas 60 to 160 feet deep, the advantage of floating turbines is that they can access large swaths of outlying ocean waters, up to half a mile deep, where the world’s strongest and most consistent winds blow. In Europe, where the density of onshore and near-shore wind turbines in places like Germany, the United Kingdom, and Norway has spurred increasing opposition to new arrays, the floating turbines can be installed over the horizon, out of sight of coastal residents.

    “Floating wind power has enormous potential to be a core technology for reaching the climate goals in Europe and around the world,” says Frank Adam, an expert on wind energy technology at the University of Rostock in Germany.

    The ocean space beyond the reach of conventional offshore turbines makes up 80 percent of the world’s maritime waters, opening the way for floating arrays, Adam says. “In the past few years this technology has made great strides, and Hywind shows that it can work as a whole park,” says Adam. “Now the farms have to grow bigger to show governments and investors that they’re feasible on a really large scale.”

    Some renewable energy experts remain skeptical that the high costs of floating offshore wind turbines — currently the electricity they generate is often almost twice as expensive as near-shore wind turbines and three times that of land-based wind turbines — will come down far enough to rival other clean-energy technologies.

    “It will always be cheaper to build turbines on land, and that is where the [emissions-reduction] targets are going to have to be reached,” says R. Andreas Kraemer, founder and director emeritus of the Ecologic Institute, a Berlin-based think tank. “Even though the floating parks may be cheaper in some cases than fixed offshore wind power plants, and deployable over a larger sea area, it is still maritime engineering — and that makes it expensive to build, deploy, and maintain. Lifespans of the stations are short because of the corrosive nature of the marine environment.”

    But advocates of floating wind arrays note that the costs of onshore and near-shore wind energy have been steadily falling as the efficiency of these technologies has been rising; the same trends, they contend, are likely to lower the costs of floating offshore wind. The Hywind Scotland array — 75 percent owned by the Norwegian firm Equinor, formerly Statoil — has been in operation for nearly three years and remained afloat and generating power during Hurricane Ophelia in 2017 and throughout other harsh winter storms with 100 mile-an-hour winds and 27-foot waves.

    Other floating wind projects, some with turbines larger than Hywind, are now being built in Europe and Japan. In Portugal, the WindFloat Atlantic project, now under construction, is expected to produce enough power for 60,000 homes when it is completed later this year. France has floating wind power written into its clean energy plans and says it aims to be a world leader in deploying the technology. It has dedicated sites and price supports for wind farms off of Brittany and the Mediterranean coast. Scotland, which aspires to cover all of its electricity needs with renewables this year, has new floating parks in the works, including one just south of Hywind Scotland.

    Walt Musial, an offshore wind energy expert at the National Renewable Energy Laboratory, a research institute funded by the U.S. government, says that in the United States the coastal waters of both coasts are often too deep for conventional offshore wind turbines; nearly 60 percent of suitable offshore wind locations, he notes, exist in places at depths greater than 200 feet. That creates yet another opportunity for floating wind energy technologies.

    Po Wen Cheng, head of an international research project on floating wind energy at the University of Stuttgart, says that floating turbines could produce more energy than the largest onshore or offshore technologies. Not only are winds in deeper waters more powerful than those closer to shore, he says, but the physics of the flexible, suspended rigs enables them to carry larger turbines. “The bigger the turbine, the more energy they can produce in the right conditions,” he says. Cheng argues that floating turbines could be even taller than today’s largest offshore rigs, perhaps with 400-foot blades and towers stretching nearly 1,000 feet into the air — as tall as the Eiffel Tower. Turbines of such dimensions could generate three times the electricity of today’s most advanced onshore turbines, says Cheng.

    Experts say that while some of the floating turbines’ finer mechanics are still being tweaked, the technology is sound. The oil and gas industry has used similar marine know-how for decades. (Hywind Scotland’s chief owner, Equinor, is Norway’s largest oil and gas company.) And the masts and rotors are identical to those of conventional offshore wind turbines. “Floating turbines can adopt a lot of knowledge and experience of the wind power development of the past 10 years, which gives them a huge jump,” says Adam. Like conventional offshore wind arrays, the floating turbines transmit electricity to coastal grid connections through heavy-duty underwater cables.

    In Europe’s ambitious plans to be carbon-neutral by 2050, wind energy of all types figures prominently. Although onshore wind parks are the most cost-effective solution, they have been met with stiff opposition from activists, who object to their marring the landscape, the proximity to their homes, and the impact on nature, particularly birds. In some countries, such as Germany and Norway, citizen opposition has nearly ground onshore wind to a halt.

    Offshore wind farms in the North Sea, Baltic Sea, and elsewhere have substantially increased clean-energy production in Europe and driven down the price to a level competitive with fossil fuels. But Europe’s current offshore production is roughly 5 to 10 percent of the wind power supply that the International Energy Agency (IEA) and the European Union says Europe should reach by 2050 to meet its goals under the Paris Agreement. The problem is that a massive increase in near-shore wind arrays simply isn’t feasible, in part because of growing opposition from fishing fleets, conservation groups, and coastal residents.

    This is where floating parks enter the equation, says Jonathan Cole, the managing director of offshore wind energy at Iberdrola, one of the world’s leading producers of wind power. “Green energy is going to be needed in all sectors of the economy,” says Cole. “Fixed-bottom offshore wind will be expanded far beyond what it is today, but it will run out of space, too, like onshore has in some places.”

    Experts say that while some of the floating turbines’ finer mechanics are still being tweaked, the technology is sound. The oil and gas industry has used similar marine know-how for decades. (Hywind Scotland’s chief owner, Equinor, is Norway’s largest oil and gas company.) And the masts and rotors are identical to those of conventional offshore wind turbines. “Floating turbines can adopt a lot of knowledge and experience of the wind power development of the past 10 years, which gives them a huge jump,” says Adam. Like conventional offshore wind arrays, the floating turbines transmit electricity to coastal grid connections through heavy-duty underwater cables.

    In Europe’s ambitious plans to be carbon-neutral by 2050, wind energy of all types figures prominently. Although onshore wind parks are the most cost-effective solution, they have been met with stiff opposition from activists, who object to their marring the landscape, the proximity to their homes, and the impact on nature, particularly birds. In some countries, such as Germany and Norway, citizen opposition has nearly ground onshore wind to a halt.

    Offshore wind farms in the North Sea, Baltic Sea, and elsewhere have substantially increased clean-energy production in Europe and driven down the price to a level competitive with fossil fuels. But Europe’s current offshore production is roughly 5 to 10 percent of the wind power supply that the International Energy Agency (IEA) and the European Union says Europe should reach by 2050 to meet its goals under the Paris Agreement. The problem is that a massive increase in near-shore wind arrays simply isn’t feasible, in part because of growing opposition from fishing fleets, conservation groups, and coastal residents.

    This is where floating parks enter the equation, says Jonathan Cole, the managing director of offshore wind energy at Iberdrola, one of the world’s leading producers of wind power. “Green energy is going to be needed in all sectors of the economy,” says Cole. “Fixed-bottom offshore wind will be expanded far beyond what it is today, but it will run out of space, too, like onshore has in some places.”

    Adam of Rostock University says, “It’s easy to produce one or half-dozen floating turbines, but 10 or 20 or 100, that’s another story.” This requires supply chains, shipyards, and ports that can handle such enormous structures, and factories for serial fabrication, he says.

    Despite these challenges, the promise of harnessing so much of the open seas for renewable energy generation remains an enticing proposition. As the IEA has noted, in theory, offshore wind power alone could eventually meet the entire electricity needs of Europe, the U.S., and Japan many times over.

  9. মাসুদ করিম - ২৮ জুন ২০২০ (৫:২৩ পূর্বাহ্ণ)

    Exodus from cities

    To stretch the maxim, ‘survival of the fittest’ would be a gross injustice to the millions falling victim to the global pandemic and failing to make both ends meet. It is once-in-a-century, if not more, cataclysmic disruption of the established socio-economic order where no one knows who will be the next victim and when. But as long as life lasts, man has to give his best to overcome the reversal. This exactly is what people the world over are now doing. At home, fellow citizens are fighting an overwhelming odd because of a developing economy with wide disparities. The economic base in the informal sector was in the process of consolidation and before it could complete the process, coronavirus has arrived with all its furies to negate many of the gains of decades. Those involved with enterprises in the informal sector, no wonder, are the worst hit.

    This is manifest mostly in the capital city Dhaka with families in their hundreds leaving it because of their loss of livelihoods. There are families who have been living in this mega city for decades, raised their children here, sent them to schools and colleges but job losses of all earning members have compelled them to say goodbye to this city. It is unlikely to be any different for their fraternity in other cities and towns in this country. Those who have a village home will at least be able to protect themselves from elements when they return to their roots but what about others who do not have even a homestead? Not many of their relations will welcome them with open arms and even if they do for the time being, they will prove burdensome soon enough. Many such people could not pay their house rent for three or four months and had to vacate their rented residences on account of uncertainty over getting their jobs back or managing another.

    A Brac study published in May last finds that 36 per cent people of diverse professions and classes all across the country have lost employments. Three per cent employees were not terminated and yet not paid their wages and salaries. Of those working as daily wage earners, 62 per cent had no work. According to the Bangladesh Institute of Labour Studies (BILS), about 10 million people have become unemployed in the country since the corona-induced shutdown. With the opening up of the economy, the situation may have improved somewhat but for the majority there is no option other than leaving their urban shelters.

    Corona has, thus, not only taken a heavy toll of lives and livelihoods but also of people’s optimism about life. The country’s prime minister has time and again urged people to remain positive. Indeed, the shiny days break forth following the darkest nights. However, to welcome better days, both the government and the private sector must join hands together for gradual recovery of the economy. There is an indication that opportunities might be there in the post-corona period to seize for some productive sectors like the readymade garments. In the meantime, though, the local government system has to be empowered far more than it is now in order to trace all those returnees. Close cooperation between local government, lower tiers of administration and public health system can address problems like contact tracing and irregularities in distribution of government aid and small credits. These may prove crucial for survival of the vulnerable.

  10. মাসুদ করিম - ২৮ জুন ২০২০ (৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ)

    Fiona Hill: ‘I knew more about what was going on in the Kremlin’

    Before Fiona Hill even finished addressing Congress in the impeachment investigation into Donald Trump, she had become a global talking point.

    In explosive testimony, the former White House Russia expert chastised lawmakers for helping Moscow to sow discord by entertaining a “fictional narrative” about Ukraine interfering in the 2016 election.

    On the specific charges faced by Trump, she went on to recount how John Bolton, her boss at the National Security Council, had described the president’s lawyer Rudy Giuliani as a “hand grenade” who would “blow everyone up” as he pressed Ukraine to find dirt on Joe Biden.

    What made her appearance stand out even more was how far she was from the archetype of a White House official. Avoiding jargon, she peppered her account with the self-deprecating humour she developed growing up in a coal-mining family in north-east England. At one point, quizzed about her background, she told a lawmaker of how a classmate had set her pigtails on fire in school, prompting her mother to administer an unflattering bowl haircut: “For the school photograph . . . I look like Richard III.”

    Amid such light relief, she had a chastening message for the country of her birth. The US “offered for me opportunities I would never have had in England,” she said. “I grew up poor with a very distinctive working-class accent. In England in the 1980s and 1990s, this would have impeded my professional development.”

    Six months on, Hill joins me for an on-screen lunch from what appears to be Moscow’s Bolotnaya Square, courtesy of the Zoom feature that allows people to alter their background. After teleporting briefly to the harem at Topkapi Palace in Istanbul, she reverts to her home study in the leafy Washington suburb of Bethesda, where the 54-year-old lives with her husband and teenage daughter.

    I remember the compelling briefings Hill gave at the White House before her resignation in July 2019, and am hoping she will be even more candid today. I have many questions about US-Russia relations, including the extraordinary 2018 Helsinki summit at which Trump sided with his Russian counterpart Vladimir Putin over the evidence of his own intelligence services.

    But we start with coronavirus gallows humour. Hill’s mother recently paid upfront for her own funeral after Hill mentioned that an elderly neighbour had died. “The next thing she’s talking about the Grim Reaper and the Four Horsemen,” she jokes. “I said, ‘Mum, you’re not supposed to pay the ferryman until you get to the other side.’ ”

    She swivels her screen to reveal the miso soup, seaweed salad and eel and avocado sushi she has ordered from Satsuma, a Japanese restaurant. I’ve made salmon rolls, helped by my half-Japanese daughter, who charged $10. Hill is drinking “Q” ginger beer; I am armed with Drumshanbo Gunpowder Irish Gin and Japanese barley tea.

    Studying Russia is the thread that runs through her adult life. She came to the US in 1989 to study Soviet studies and Russian history at graduate school at Harvard. She made her way to Washington as a think-tanker and, after becoming a US citizen, eventually became a senior intelligence officer for Russian affairs.

    She was hired to join the White House in 2017 by Michael Flynn, the retired general who was Trump’s first national security adviser. But in a sign of the turbulence that would come to plague the Trump administration, he was fired after just 22 days in post — and before Hill even started.

    She started at the National Security Council under Flynn’s successor, HR McMaster, a three-star army general, and then worked under his successor, Bolton, a foreign policy hawk known for his fondness for regime change. Many friends were stunned when she joined; some acquaintances no longer speak to her. “I worried about it for all the reasons that are obvious,” she says, but explains that she felt a strong “call to duty”.

    She was anxious about the dismal state of US-Russia relations and the potential for confrontation. She says she hoped that her experience and knowledge of Russia, coupled with the fact that she had practically “met every Russian in the current Russian government” during her peripatetic career, would help improve the situation.

    We are suddenly interrupted by a loud bang, which Hill thinks is probably a bird hitting the window. “Or a stone being thrown by a passing agent from the Russian security services,” she jokes.

    Given her down-to-earth demeanour, I am curious about whether she was surprised at the reaction to her testimony; #FionaHillFanClub became a hashtag on Twitter. “I was shocked,” she says. “I expected actually a very different reaction given some of the experience I’ve had being trolled.”

    She received death threats during her time in the White House, and is frequently inserted into conspiracy theories involving Russia, which she believes is partly because her biography is “so improbable”.

    Hill says the most revealing part about the hearings was learning what other officials had been doing without her knowledge. “I knew more about what was going on in the Kremlin than what was going on in the White House.”

    Hill was neither a Trump acolyte nor a Never Trumper; her resignation came, she says, after she completed the two years that she had told herself she would serve. I ask whether she thinks she had a better understanding of the president because she grew up in a coal-mining region that had been hard hit by the closure of pits — the kind of area that voted strongly for Trump in 2016.

    “I do,” she replies, and shifts the subject to Putin. “It also helped me to understand Putin a lot better as well, because Putin was an outsider.” Putin’s parents were not party members, and the closest that anyone in his family had come to Soviet power was his grandfather, who had served as Stalin’s cook. “I don’t think that’s really a job you’d want to have,” she laughs.

    So how would she describe Trump, I ask? “There’s not much of a difference between the private and the public,” she responds, cautiously. I approach from a different angle. What was he like to work for? “About like you would expect,” she replies, again guardedly.

    “This is one thing I don’t really want to get into,” says Hill. “I don’t want to have this . . . becoming a dog’s breakfast . . . rather than an actual FT lunch.”

    But she is willing to say that Trump “came into office on the back of a revolution” and has been “massively disruptive”. Warming to the subject, she says she got to experience Russian history — inside the White House. “I kept thinking ‘Bolshevik Revolution’,” she says, pointing to the infighting. “I had always wondered what it was like . . . and then I found myself in the middle.”

    She recalls how Steve Bannon, the “America First” nationalist who served as chief White House strategist for Trump, compared himself to Lenin. “I kept thinking . . . he’s a bit more like Trotsky, because he’s like the permanent revolution guy who doesn’t quite fit in.”

    One conclusion Hill reached during her time was that America was scoring own goals against Russia, which was “exploiting all this infighting”. So was Putin successful in his election meddling, I ask? “The GRU guys probably give themselves a big pat on the back . . . and are asking for bonuses,” she says of Russia’s military intelligence service. “The question is, to what end?”

    Trump came to office saying he wanted to improve relations with Russia. How does Hill think he has done? She says tensions eased but overall it was tough. Moscow was not totally to blame. While Russia often lobbed grenades at the US, Washington was mired in toxic partisan politics related to the Russian election interference. But she says the administration also made life hard for itself. “You needed a coherent, consistent policy, which became difficult when every horse got changed in midstream. And sometimes they didn’t even get to the stream.”

    Hill says it was critical for Trump and Putin to set the tenor of the relationship, but any talk of a meeting would send the media into a frenzy. “Not pointing fingers at anyone,” she adds with a smile.

    It reminded her of the 1966 Zero Mostel farce, A Funny Thing Happened on the Way to the Forum. “All these crazy things would happen and we never actually got there.” But, I point out, the two leaders did hold a summit in Helsinki. “We did. But then there was the press conference,” she rues.

    Satsuma

    8003 Norfolk Ave, Bethesda, Maryland 20814

    Miso soup

    Seaweed salad

    Eel avocado roll

    Ginger beer
    Sevastopulo home

    Homemade salmon rolls

    Drumshanbo Gunpowder Irish Gin

    Japanese barley tea

    Total (inc tip, not drinks) $37.64

    She said the meeting about arms control had gone well. But at the news conference Trump stunned everyone by accepting Putin’s denial of interference in the US election and dismissing the conclusions of US intelligence. My impression at the time was that Putin was smiling because he could not believe his luck, but Hill thinks he was more stunned. “He even tried to smooth things over at one point . . . like he saw it all unravelling . . . I remember thinking, ‘Oh, he’s trying to help him out.’”

    Hill has watched Putin for years and co-authored a book on the former KGB officer. How has he changed? “He has kind of got himself in a bubble . . . He was much more attuned to the world around him.” But she stresses that he is flexible, and gives him 50/50 odds of staying in power until 2036, after a court ruling made that possible. “He’s somebody who you should never write off, because he does learn from his mistakes.”

    I am interested in her journey from Bishop Auckland, particularly because of her comment about the lack of social mobility in the UK. Her accent has faded over the years, but it is still strong enough to draw comment occasionally. She recalls the former British Labour prime minister Tony Blair asking, “How did you get here?” after hearing her speak at a foreign policy event in Aspen. “I came on a plane,” she told Blair, who was perplexed that she could be a Russia expert at the Brookings Institution.

    Hill’s family had no car, no telephone and no TV until she was in her teens. “We often had the electricity shut off because we couldn’t pay the electricity bills,” she recalls about her childhood.

    She jokes that she sounds like one of the “Four Yorkshiremen” in the Monty Python skit. But she was smart and had ambitions beyond Bishop Auckland. Once, she told a friend that she wanted to be UN secretary-general. “You’re mad, you are,” the friend had replied. “You’re just gonna get knocked up and go and work in a shop like everybody else.”

    As she tucks into her avocado and eel rolls, she describes her unusual path to the pinnacle of American power. Her school urged her and two others to apply to Oxford university. She alone took the exam, and failed.

    Yet something must have suggested talent, because she was called for an interview to Hertford College. She arrived in clothes her mum had sewn and felt intimidated. “I started trying to talk to the girls, and they were all like, ‘Oh my God, we don’t understand a word you’re saying.’ ”

    “It was like Billy Elliot,” she says, referring to the film about the son of a coalminer who wanted to be a ballet dancer. She had never experienced such blatant discrimination back home. “I knew we were working class, but everybody was working class.”

    The interviewer took pity on her after hearing the other girls give her “a rough time”, but offered that “I don’t think this is really the place for you.” He suggested St Andrews, which was already on her list to study Russian, and that is where she ended up as an undergraduate.

    Why Russia, I ask? She explains that it was partly growing up in the UK in the 1980s amid fears about nuclear war, particularly after the US deployed Pershing II missiles in Europe. She was also swayed by Uncle Charlie, her grandfather’s cousin, who had been rescued by the Soviet Navy when his ship sank during the second world war. He was “fixated” on how wartime allies became cold war enemies. “He was always telling my dad that I was good at languages and . . . should learn Russian and try to figure it out. So that kind of planted the seed in my brain.”

    Hill arrived in Moscow from St Andrews as an exchange student in 1987, the year Ronald Reagan and Mikhail Gorbachev signed the Intermediate Nuclear Forces treaty. When the leaders met in Moscow in 1988, she experienced the event at NBC television, where she had a part-time job doing everything from translation for the crews to being a “hairspray girl” for Tom Brokaw, a veteran correspondent.

    She laughs as she points out how things came full circle last year before she left the White House. “I’m with the Trump administration and [then national security adviser] John Bolton, where we pull out of the INF because the Russians have been violating it all this time.” Days after our lunch, Trump announced he also would withdraw from Open Skies, another cold war-era arms-control pact.

    Hill has finished her eel rolls and switched to her seaweed salad, which, she laments, “sticks in your teeth”. I have polished off my salmon rolls.

    We zigzag around a wide range of issues, including Russian military activity. Russian fighter jets had recently entered Irish airspace, which she says shows that Moscow is “stuck in the 20th century”. Putin’s Russia, she adds, is trying to demonstrate global reach particularly because it is worried about China.

    Hill suddenly interrupts our discussion to point out that I am on the beach — thanks to the virtual background feature in Zoom, though I am perplexed because I have not pressed anything. “The Chinese are saying, ‘Come on, get to the beach, man,’ ” jokes Hill, who had quipped earlier that it was a good thing our lunch was on the record because she assumed it was being listened to anyway.

    As we wind down, I suggest that she is almost unique in having left the Trump team with an enhanced reputation. “I’ve got a few shrapnel wounds and scars,” she jokes. She says she survived the White House trenches by reminding herself of her grandfather.

    “If this little guy from the north of England can have gone through all this crazy shit in world war one, I can do this,” she recalls thinking. “Because nobody was actually shooting at me.”

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.