সুপারিশকৃত লিন্ক: সেপ্টেম্বর ২০১৯

মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিন্ক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে।
ধন্যবাদ।

আজকের লিন্ক

এখানে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই সুপারিশ করুন এখানে। ধন্যবাদ।

৮ comments

  1. মাসুদ করিম - ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (১:৪৬ পূর্বাহ্ণ)

    সিরাজুল আলম খান : ইতিহাসের এক ব্যর্থ খলনায়ক

    সময়টা সত্তরের দশকের মাঝামাঝি। ৭ নভেম্বরের ঘটনাবলীর কিছু পরে জনপ্রিয় ‘সাপ্তাহিক বিচিত্রা’ তার প্রচ্ছদের শিরোনাম দেয়, ‘সিরাজুল আলম খানঃ বাংলাদেশের রাজনীতির রহস্য পুরুষ’। তাতে লম্বা দাঁড়ি এবং চুলওয়ালা এক ব্যক্তির ছবি ছাপা হয়। অনেকটা যেন কার্ল মার্কস বা রাসপুটিনের মত দেখতে। এ ব্যক্তিটিকে বাংলাদেশের রাজনীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। তিনি নেপথ্যে থাকেন। কিন্তু দেশের এমন কোন তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা নেই, যাতে তিনি মূখ্য ভূমিকা পালন করেন না।

    এ ব্যক্তিটি জনসম্মুখে আসেন না। বক্তৃতা, বিবৃতি দেন না; সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এ যান না। এমনকি, সাংবাদিকদের সাথে কথাও বলেন না। তিনি কোনো সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিনে সাক্ষাৎকারও দেন না। কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্যও নন তিনি। আড়ালে থাকেন সব সময়। কেমন যেন রহস্যে ঘেরা মানুষ।

    রহস্যের প্রতি মানুষের একটা সহজাত আকর্ষণ রয়েছে। যা কিছু রহস্যময়, তাই যেন আকর্ষণীয়। বাংলাদেশের মধ্যবিত্তের প্রিয় চরিত্র তখন মাসুদ রানা। ইতিমধ্যে কর্নেল তাহের নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ঘটে গেছে এক ব্যর্থ অভ্যুথান। এর পিছনেও নাকি এ রহস্যময় লম্বা চুল, দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তিটি।

    এর কিছু পূর্বে, বিচিত্রা বছরের আলোচিত চরিত্র করে হাইকোর্ট মাজারের নুরা পাগলাকে। প্রচ্ছদে ছবি দেওয়া হয় নুরা পাগলার। লম্বা চুল, দাঁড়ি, হাতে গাঁজার কল্কি। লম্বা দাঁড়ি চুলের ব্যক্তির প্রতি বস্তুবাদী পাশ্চাত্যেই যেখানে জনমানসে আগ্রহের জায়গা তৈরি হয়; সেখানে ভাববাদ, ভক্তিবাদ, সুফিবাদ, লালন আর সহজিয়ার দেশ বাংলাদেশে তাঁদের তো একটা বাড়তি আবেদন থাকবেই।

    বলিভিয়ায় নিহত হওয়া চে পুঁজিবাদী, অপুঁজিবাদী সব দেশেই তখন প্রবল জনপ্রিয়। কিছুদিন পূর্বে নিহত হয়েছেন নকশাল আন্দোলনের জনক চারু মজুমদার। তারই ধারাবাহিকতায় অনেকটা একই রকমভাবে নিহত হয়েছেন চারু মজুমদারের ভাব শিষ্য সিরাজ শিকদার।

    ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। হত্যার মিছিলে সামিল হন কর্নেল তাহেরও। ব্যর্থ অভ্যুত্থানের ফলশ্রুতিতে গোপন বিচারের নামে হত্যা করা হয় তাঁকেও। তাঁদের সবার চাওয়া একই ছিল। সেটা হল সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা।

    বিচিত্রা থেকে জানা গেল সিরাজুল আলম খানও সেটা চান। আরো জানা গেল, জাসদ গঠন করে বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে দক্ষযজ্ঞ বাঁধিয়ে দেয়া ব্যক্তিটিও নাকি সিরাজুল আলম খান। ফলে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি পরিচিতি পেয়ে যান রহস্য পুরুষ হিসাবে। আর লম্বা চুল দাঁড়ির জন্য কাপালিক। তবে, তাঁর অনুসারী জাসদ নেতা কর্মীরা তাঁকে ডাকেন দাদা হিসাবে।

    ৭ নভেম্বরের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর জিয়া বুঝতে পেরেছিলেন তাঁকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে জাসদকে ভেঙ্গে তছনছ করতে হবে। জিয়ার শাসনামলে জাসদের উপর নেমে আসে স্টিমরোলার। হাজার হাজার নেতাকর্মী এ সময় গ্রেফতার হন। সাথে দাদা সিরাজুল আলম খানও। তিনি সহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জেলে থাকা অবস্থাতেই জাসদ ভেঙ্গে হয় বাসদ। জিয়ার উদ্দেশ্য সফল হয়। তারপরের জাসদের ইতিহাস হল ক্রমশ নিঃশেষ থেকে নিঃশেষিত হওয়ার। একের পর এক ভাঙ্গন আসতে থাকে জাসদে।

    সিরাজুল আলম খান ১৯৮১ সালে দীর্ঘ কারাভোগের পর মুক্তি পান। কারামুক্তির পরও তিনি একাকী, নিভৃত জীবন যাপন করতে থাকেন। এরপর রাজনৈতিক অঙ্গনে আর তিনি কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেননি। বরং, তাঁকে দেখা যায় রবের জাসদকে দিয়ে সামরিক শাসক এরশাদের তাঁবেদারি করতে। এরশাদ পতনের পর তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে যান। সাধারণ মানুষ তাঁকে কখনোই তেমনভাবে চেনেনি, যারা তাঁর সম্পর্কে জানতেন, তাঁদের অনেকেই ইতিমধ্যে তাঁকে ভুলে যান।

    আশির কাছাকাছি বয়সে সিরাজুল আলম খান আজ জীবন সায়াহ্নে উপনীত। শারীরিকভাবে তিনি অনেকটা অসুস্থ্য। জীবনের প্রান্তে এসে হঠাৎ করে তিনি তাঁর ভাব শিষ্য শামসুদ্দিন পেয়ারার অনুলিখনে ‘আমি সিরাজুল আলম খান’ শিরোনামে সম্প্রতি একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। এক প্রাক্তন সহকর্মী বইটি আমাকে পাঠিয়েছেন।

    বইটি হাতে আসার পর প্রথমে যতটা উল্লসিত হয়েছিলাম, পড়া শেষ করে ততটাই হতাশ হয়েছি। বইটা পাবার পর ভেবেছিলাম ১৯৭১-৭৫ কালপর্বে তাঁর ভূমিকা কি ছিল সেটা হয়ত শেষ বয়সে অকপটে তিনি জাতির সামনে তুলে ধরবেন। কিন্তু বইটিতে অত্যন্ত সুকৌশলে তিনি তাঁর ভূমিকা এড়িয়ে গেছেন। মাত্র কয়েক পাতায় এ কালপর্ব সম্পর্কে তিনি যা বলেছেন, তাতে নতুন কিছু নেই। ইতিমধ্যে যে বিষয়গুলো আমরা জানি, সেগুলোই খুব দায়সারাভাবে, কয়েক পাতায় তিনি এখানে উল্লেখ করেছেন। এতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেপথ্যে থেকে তিনি যে কলকাঠি নেড়েছেন, সেটা তিনি জাতির সামনে বলে যেতে চান না।

    বইটার মূল ফোকাস ১৯৬২-৭০ সময়কালে তাঁর ভূমিকা কি ছিল তার উপর। ১৯৬২ সালে সিরাজুল আলম খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র। বিশ্বব্যাপী তখন ঔপনিবেশিকবিরোধী জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের সময়। তাঁর ছোঁয়া লাগে সিরাজুল আলম খানের মাঝেও। তিনি তখন ছাত্রলীগের সদস্য।অনেকটা তারুণ্যের ফ্যান্টাসি থেকেই যেন তখন তিনি আব্দুর রাজ্জাক এবং কাজী আরেফ আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রলীগের মাঝে গড়ে তুলেন ‘নিউক্লিয়াস,’ যার লক্ষ্য হবে দেশ স্বাধীন করা।

    এ নিউক্লিয়াসকে পরবর্তীতে তাঁরা ‘স্বাধীন বাঙলা নিউক্লিয়াস’ বলতে থাকেন, যাকে আবার একটা সময় পর ‘বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স’ বা বিএলএফ হিসাবে ডাকা হয়। এ বিএলএফের গেরিলা উইং হিসাবে ১৯৭১ সালে মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ভারতের দেরাদুনে গড়ে তোলেন ‘জয়বাংলা বাহিনী, ’যা সাধারণের কাছে ‘মুজিব বাহিনী’ নামে পরিচিত ছিল।

    ১৯৬২ সালে সিরাজুল আলম খানই যে প্রথম স্বাধীনতার কথা ভাবেননি এটা তাঁর বইয়েই উল্লখ আছে। এতে তিনি জানাচ্ছেন, ১৯৪৮ সালে তোয়াহা একটা প্রবন্ধে প্রথম দেশ স্বাধীন করবার কথা বলেন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানী রাষ্ট্র কাঠামো টিকে থাকবে না। ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে মাওলানা ভাসানী জাতীয় পর্যায়ের নেতা হিসাবে পাকিস্তানকে ‘আসসালাম ওয়ালাইকুম’ বলেন। বস্তুত ১৯৬২ সালের মধ্যেই, গণমানসে না হলেও, সমাজের খুব ক্ষুদ্র একটা অগ্রসর অংশের মাঝে স্বাধীনতার ধারণা জন্মলাভ করে গিয়েছিল।

    ষাটের দশকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের তরুণ সমাজের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ বিশ্বব্যাপী বাম রাজনীতির স্বর্ণ যুগের প্রভাবে বিপ্লবী চিন্তায় আক্রান্ত। সিরাজুল আলম খানও বাম সাহিত্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন। কিন্তু তিনি তাঁর বইতে স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, বাম সাহিত্য তাঁকে টানেনি। ইউরোপে জন্ম লাভ করা মার্কসীয় চিন্তাধারা বরং তার কাছে পূর্ব পাকিস্তানের প্রেক্ষাপটে অবাস্তব মনে হয়েছে। বাম রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র সংগঠনসমূহও বাংলার জনগণের মনন এবং জাতীয়তাবাদী চেতনা বুঝতে অক্ষম বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি আকৃষ্ট হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগের জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারা দ্বারা। স্বাধীনতার পূর্বে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র এবং পুঁজিবাদী পথেই দেশের উন্নয়নের কথা ভাবত। শীতল যুদ্ধকালীন বিশ্বে আওয়ামী লীগকে তখন মার্কিন ঘেঁষা দল হিসাবেই মনে করা হত। সিরাজুল আলম খান সে পথেরই অনুসারী ছিলেন।

    আওয়ামী লীগের জাতীয়তাবাদী চিন্তা দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়েই তিনি নিউক্লিয়াসের বিস্তার ঘটাবার উদ্যোগ নেন। ১৯৭০-৭১ সাল নাগাদ এর সদস্য সংখ্যা কয়েক হাজারে দাঁড়ায়। সিরাজুল আলম খান একে গোপন সংগঠন হিসাবে দাবী করলেও এটি সে অর্থে গোপন সংগঠন ছিল না, যে অর্থে সেসময়কার বাম রাজনৈতিক দলগুলি ছিল। একটি বৈধ সংগঠনের মাঝে আরেকটি সংগঠন গোড়ে তুলে একে গোপন দাবী করবার বিষয়টি হাস্যকর। বরং, তিনি যে কাজটা ১৯৬২ সাল থেকে করেছেন সেটা হল ছাত্রলীগের মাঝে একটি শক্তিশালী, সুশৃঙ্খল উপদল গড়ে তোলা, যার নেতৃত্ব ছিল তাঁর হাতে। এ উপদলটিকে তিনি চেষ্টা করেছেন মূল সংগঠনের মাঝে গোপন রাখতে।

    এখন প্রশ্ন হল, এ উপদল গঠন করবার দরকার হল কেন? এটি প্রথমে বিপ্লবী রোমান্টিসিজম জাত হলেও সেই তরুণ বয়স থেকেই কি একই সাথে তিনি আওয়ামী রাজনীতির নেপথ্য নিয়ামক হয়ে উঠবার স্বপ্ন দেখছিলেন? তিনি কি তখন থেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন, দেশ স্বাধীন হলে তিনিই হয়ে উঠবেন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু?

    উচ্চাভিলাষী সিরাজুল আলম খান রাজনীতির মাঠে নামার সাথে সাথে একটা বিষয় বুঝে গিয়েছিলেন যে, বঙ্গবন্ধু বা মাওলানা ভাসানীর মত নেতা হতে পারা তো দূরের কথা, তাঁর পক্ষে মণি সিংহ বা অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের মত নেতা হওয়াও সম্ভব হবে না। তাই তিনি চিন্তা করেছিলেন ভিন্ন পথ ধরার, যাতে নেতা না হতে পারলেও পর্দার আড়ালে থেকে তিনি মূল নেতৃত্বকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আর এ নিয়ন্ত্রক হবার স্বপ্নে বিভোর হয়েই তিনি স্বয়ং বঙ্গবন্ধুকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবার বিষয়টা ভাবতে থাকেন। বইটি অধ্যয়ন করলেই সিরাজুল আলম খানের এ চিন্তাধারা এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রম স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

    নেপথ্যে থেকে নিয়ন্ত্রক হবার ধারণা কোন নেতার বা বিপ্লবীর থাকে না। বিশ্বের দেশে দেশে জাতীয়তাবাদী নেতাদের বাদ দিলেও; এমনকি, বড় বড় বিপ্লবীরাও কখনোই নেপথ্যে থাকেন নাই। লেনিন, মাও, ক্যাস্ট্রো, চে গুয়েভারা, হো চি মিন, আনোয়ার হোজ্জা থেকে শুরু করে চারু মজুমদার বা সিরাজ শিকদার কেউই নেপথ্যে থেকে রাজনীতি করেননি। রাজনীতির প্রয়োজনে তাঁরা আত্মগোপনে গিয়েছেন, কিন্তু নেপথ্যে কখনো চলে যাননি। গান্ধী, নেহেরু, বঙ্গবন্ধুর মত নেতারা কখনো আত্মগোপনেও যাননি। এর চেয়ে জেলে যাওয়াকে তাঁরা অধিক যৌক্তিক মনে করেছেন।

    ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় নেপথ্যে থেকে নিয়ন্ত্রক হবার অভিপ্রায় আমরা পাই রাশিয়ার রাসপুটিনের মাঝে। তিনি পিছনে থেকে জারের নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছিলেন এবং পরিণতিতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। বইটিতে উল্লেখ না করলেও তাঁর কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করলে একটি বিষয় অত্যন্ত পরিস্কার হয়ে যায় যে, এ রাসপুটিন ছিলেন সিরাজুল আলম খানের আদর্শ। তাঁর মতো তিনিও চেয়েছিলেন সদ্য জন্ম নেয়া বাংলাদেশ নামক রিপাবলিকটির রাসপুটিন হয়ে উঠতে। এ সুদূর প্রসারী লক্ষ্যকে সামনে নিয়েই নিউক্লিয়াস গড়ে তুলবার পর তিনি স্বাধীনতার লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন। আর তাঁর জবানীতেই তিনি বলেছেন, ১৯৬৫ সালে তিনি সিদ্ধান্ত নেন নেপথ্যে চলে যাবার। কেন তিনি এ সিদ্ধান্ত নিলেন, এর ব্যাখ্যা তিনি বইয়ের কোথাও দেননি।

    নিউক্লিয়াসকে বইটিতে এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যেটা পড়লে পাঠকের মনে হবে বঙ্গবন্ধুকে সামনে আইকন হিসাবে রেখে, সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে একমাত্র নিউক্লিয়াসের কার্যক্রমের ফলেই বুঝি ক্রমান্বয়ে পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্র তৈরি এবং মুক্তিযুদ্ধে নিউক্লিয়াস সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ছাত্রলীগের অভ্যন্তরের একটি গোপন উপদল বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের মূল নিয়ামক, এটি ইতিহাসে বস্তুনিষ্ঠ দাবী নয়। ইতিহাসকে এভাবে বিশ্লেষণ করলে, তৎকালীন যেকোন গোপন দলও দাবী করতে পারে, তারাই নেপথ্যে থেকে গণ আন্দোলনগুলো সংগঠিত করেছিল। গণ আন্দোলনগুলোতে গোপন দল, সংগঠন, উপদলগুলোর অংশগ্রহণ থাকে। কিন্তু, গোপন উপদলের উপর নির্ভর করে দুনিয়ার কোথায়ও গণ আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।

    ১৯৭১ সালে মুক্তি সংগ্রাম শুরু হলে সিরাজুল আলম খান এবং তাঁর নিউক্লিয়াসের সদস্যরা ভারত চলে যান। কিন্তু প্রবাসী সরকারের অধীনে মুক্তি বাহিনীতে যোগ না দিয়ে তাঁরা ভারতের উচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সহয়তায় কয়েক হাজার সদস্যের ‘জয় বাংলা’ বাহিনী গড়ে তোলেন। এ বাহিনীকে মুক্তি বাহিনীর চেয়ে উন্নত মানের সমরাস্ত্র এবং ট্রেনিং দেওয়া হয়।

    সিরাজুল আলম খান দাবি করেছেন, এ বাহিনী গড়ে তুলবার আগে এ বিষয় বা অন্য কোনো কিছু নিয়ে ভারতের সাথে তাঁর কোনো যোগাযোগ হয়নি। তাঁর দাবিটি সত্য ধরে নিলেও যে প্রশ্নটি সামনে আসে সেটি হল, নিউক্লিয়াসের সদস্যরা সবাই আওয়ামী লীগের সদস্য হলেও, তাঁরা কেন প্রবাসী সরকারের অধীনে মুক্তি বাহিনীতে যোগ না দিয়ে আলাদা বাহিনী গড়ে তুললেন বা ভারতকে গড়ে তুলতে দিলেন। ভারত যে উদ্দেশ্যেই এ বাহিনী গড়ে তুলুক একটি বিষয় পরিস্কার, সিরাজুল আলম খান এ সুযোগটি নিয়েছেন এ ভেবে যে, এতে তিনি এ বাহিনীর সহযোগীতায় মুক্তিযুদ্ধের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় চলে যেতে পারবেন।

    দেশ স্বাধীন হবার পর যখন তিনি দেখতে পেলেন যে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু থেকে তিনি অনেক দূরে চলে যাচ্ছেন, তখন চাপে রাখবার কৌশল হিসাবে বঙ্গবন্ধুকে তিনি জাতীয় সরকার গড়ে তুলতে বলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, জাতীয় সরকারের ধারণা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রাকারান্তরে এটি মূলত এক দলীয় শাসন।

    একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য হল ছোট, বড় সব দল নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সংবিধানের আওতায় ভূমিকা পালন করা। ভারত বা যুক্তরাষ্ট্রের মত আপাত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলিতে সঙ্কটকালীন সময়ে কখনোই জাতীয় সরকার গঠিত হয়নি। কিন্তু সিরাজুল আলম খান দেশ স্বাধীন হবার অব্যবহিত পর থেকেই বঙ্গবন্ধুকে জাতীয় সরকারের নামে এক দলীয় শাসনের দিকে নিয়ে যাবার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হবার পর বঙ্গবন্ধু সরকারকে বেকায়দায় ফেলবার জন্য তিনি ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের’ শ্লোগান দিয়ে ছাত্রলীগে ভাঙ্গন ধরান এবং জাসদ গঠন করেন।

    বইটিতে তিনি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন, জাসদ গঠনের লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর সরকারকে উৎখাত করা এবং জাসদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় সরকার’ তথা একনায়কতান্ত্রিক শাসন কায়েম করা। এ সরকারের নেপথ্য গুরু হবেন সিরাজুল আলম খান। বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রভাব বিস্তারকারীর ভূমিকায় না থাকতে পেরে তিনি পরিকল্পনা করছিলেন, এ সরকারকে ফেলে দিয়ে নিজেই নেপথ্য থেকে দেশের সর্বেসর্বা হয়ে উঠবার।

    এ লক্ষ্যে শুধু জাসদ গঠন করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। দলটির ‘অঙ্গসংগঠন’ হিসাবে গড়ে তোলেন স্বেচ্ছাসেবক ‘মিলিশিয়া’ বাহিনী, যা জনগণের কাছে ‘গণবাহিনী’ নামে পরিচিত। এ গণবাহিনীর ঢাকা অঞ্চলের প্রধান ছিলেন হাসানুল হক ইনু। এ বাহিনীর মূল লক্ষ্য ছিল সারা দেশে বিশৃংখলা, অরাজকতা, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে বঙ্গবন্ধু সরকারের পতনের পথ তরান্বিত করা। এ বাহিনী সেসময় সারা দেশে ব্যাপক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এসব কাজের জন্য ‘প্রাপাগান্ডা উইং’ হিসাবে তাঁরা প্রতিষ্ঠা করেন ‘গণকণ্ঠ’ পত্রিকা, যার সম্পাদক ছিলেন কবি আল মাহমুদ। এ পত্রিকা সেসময় মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণা চালায়। শেখ কামালের ব্যাংক ডাকাতির গল্প এরাই প্রথম চালু করে।

    তাহলে দেখা যাচ্ছে, এক দিকে কর্নেল ফারুক, রশিদ এবং অপরদিকে সিরাজুল আলম খান, রব ও ইনুরা দুটো ভিন্ন প্লাটফরম থেকে একই লক্ষ্যে কাজ করছিলেন। ফারুক, রশিদরা সফল হয়েছিল, অপর গ্রুপটি হয়নি। ফারুক, রশিদরা মুসলিম জাতীয়াতাবাদের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের কথা মাথায় রেখেই তাঁরা ১৫ অগাস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করেন। অপরদিকে, রাজনৈতিক সুবিধার জন্য চরমতম আদর্শগত পথ ভ্রষ্টতার নজির স্থাপন করেন সিরাজুল আলম খান।

    বামদের ভাষায় ‘বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক’ আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে এক লহমায় তিনি সেই বামদের—যাদের তিনি কিছুদিন আগেও সমালোচনা করেছেন— ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের’ আদর্শের ‘ধারক’ হয়ে উঠেন। এবং সে আদর্শ বাস্তবায়নে হিটলারের ন্যাশনাল সোশালিস্ট পার্টির বাংলা অনুবাদ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল করে, দল গঠন করেন। আদর্শগত ডিগবাজি তাঁর এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। এরশাদ আমলে তাঁকে আবার দেখা যায় মুসলিম জাতীয়তাবাদী এরশাদের সাথে হাত মিলাতে। বইটিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, এরশাদের সাথে তিনি চারবার দেখা করেছেন এবং দাবি করেছেন, উপজেলা ব্যবস্থার ধারণা তাঁর থেকেই এরশাদ নিয়েছেন।

    প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মার্কস তাঁর পূর্ববর্তী সমাজতান্ত্রিক চিন্তকদের চিন্তাধারা বাতিল করে নিজের চিন্তাধারাকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য পূর্বোক্তদের চিন্তাধারাকে ‘ইউটোপীয় সমাজতন্ত্র’ (যার দূরবর্তী দুর্বল বাংলা হল কাল্পনিক সমাজতন্ত্র) আখ্যায়িত করে নিজের ধারণাকে ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন। বাংলাদেশের সিপিবিসহ মার্কস পরবর্তী দুনিয়ার সমস্ত কমিউনিস্ট পার্টির আদর্শই হল এই ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র। কোনো বাম দলই তাদের সমাজতন্ত্র যে বৈজ্ঞানিক, এভাবে আলাদা করে উল্লেখ করে না। কিন্তু, সিরাজুল আলম খান অত্যন্ত চতুরতার সাথে বাম রাজনৈতিক কর্মীদের মাঝে একটা কনফিউশন তৈরির লক্ষ্যে, সমাজতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান না রেখে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক অসততার জায়গা থেকে, তাঁর কর্মী এবং অনুসারীদের সমাজতন্ত্রের আগে বৈজ্ঞানিক শ্লোগান দিতে বলেন।

    ১৫ অগাস্টের নির্মম ঘটনার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর বাকশাল সরকারের অবসান ঘটবার পর সিরাজুল আলম খান সু্যোগ খুঁজতে থাকেন ক্ষমতা দখল করবার। এ সুযোগের ধারাবাহিকতায় তিনি কর্নেল তাহেরকে দিয়ে ৭ নভেম্বরের ব্যর্থ অভ্যুত্থান সংগঠিত করেন, যার ফলশ্রুতি হল জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আসা। এ অভ্যুত্থান পরিচালনা করবার জন্য তাহেরকে দিয়ে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে তিনি গঠন করেন ‘বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা’। এ সংস্থার হাতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন খালেদ মোশাররফ, মেজর হায়দারসহ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সেনাবাহিনীর অনেক প্রতিভাবান অফিসার এবং সৈনিক।

    এদের লাশ যখন ক্যন্টনমেন্টে পড়ে ছিল তখন ইনুসহ জাসদের অনেক নেতাকর্মীকে ঢাকার রাস্তায় উল্লাস করতে দেখে গেছে অভ্যুত্থান সফল হয়েছে এটা ভেবে। অভ্যুত্থানের ক্ষেত্র তৈরি করবার জন্য জাসদ সে সময় ব্যাপক প্রচারণা চালায় খালেদ মোশাররফকে ভারতীয় চর আখ্যা দিয়ে।

    ৭ নভেম্বরের ঘটনার পর সামরিক শাসক এরশাদের সাথে হাত মিলানো ছাড়া সিরাজুল আলম খানের রাজনীতিতে আর কোন উল্লেখ করবার মত ভূমিকা নেই। বর্তমানে আসম রবসহ জাসদের ক্ষুদ্র একটা অনুসারী রাজনীতির এ ব্যর্থ খলনায়ককে গুরু মনে করেন। রব বইটির পরিশিষ্টে এক সাক্ষাৎকারে অকপটে বলেছেন, রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার সময় থেকে আজ পর্যন্ত দাদার নির্দেশের বাইরে এক পাও তিনি ফেলেন নাই এবং দাদা যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন তাঁর নির্দেশ মতই তিনি পরিচালিত হবেন।

    সেই দাদার নির্দেশেই রবসহ সেদিন জাসদ কর্মীরা শ্লোগান দিয়েছিল, ‘মুজিব, মণি, মোজাফফর, বাংলার মীর জাফর’। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর দলের সাথে বেঈমানী করে কারা বাংলার ইতিহাসে মীর জাফরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিল, সেটি আজ জাতির কাছে পরিস্কার।

    [পাদটীকা : দাদা সিরাজুল আলম খানের বাংলাদেশের রাসপুটিন হবার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে যেয়ে জাসদের অনেক নেতা কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন, যা তাদের হিসাবে ৩০ হাজার। এ লক্ষ্যে তাঁরা অনেকের প্রাণ সংহারও করেছেন। পুরো বইটিতে জাতির কাছে না হোক, জাসদের নেতা কর্মীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া বা অনুশোচনার বিষয় তো নেই-ই, এমনকি এত প্রাণ ঝরে পড়বার বিষয়টি একটি লাইনেও উল্লেখ নেই। এ ধরণের ক্ষমা না চাওয়া, অনুশোচনা বিহীন জীবন আরেক জনের ক্ষেত্রে দেখা যায়। তিনি হলেন গোলাম আজম। ]

    https://mknewsmedia.tumblr.com/post/186111523894/%E0%A6%AC%E0%A6%99-%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A6%A8-%E0%A6%A7-%E0%A6%B8-%E0%A6%B0-%E0%A6%9C-%E0%A6%B2-%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%AE-%E0%A6%96-%E0%A6%A8-%E0%A6%93-%E0%A6%A8-%E0%A6%89%E0%A6%95-%E0%A6%B2-%E0%A7%9F-%E0%A6%B8

    https://mknewsmedia.tumblr.com/post/186328890229/%E0%A6%A8-%E0%A6%89%E0%A6%95-%E0%A6%B2-%E0%A7%9F-%E0%A6%B8-%E0%A6%8F%E0%A6%AC-%E0%A6%AF-%E0%A6%AC-%E0%A6%B8%E0%A6%AE-%E0%A6%9C-%E0%A6%B8-%E0%A6%AC-%E0%A6%A7-%E0%A6%A8%E0%A6%A4-%E0%A6%B0-%E0%A6%B8-%E0%A6%AC%E0%A6%AA-%E0%A6%A8

    https://mknewsmedia.tumblr.com/post/186348987499/%E0%A6%A8-%E0%A6%89%E0%A6%95-%E0%A6%B2-%E0%A7%9F-%E0%A6%B8-%E0%A6%B8-%E0%A6%B0-%E0%A6%9C-%E0%A6%93-%E0%A6%B0%E0%A6%AC

  2. মাসুদ করিম - ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (১১:২৮ পূর্বাহ্ণ)

    India leaves 1.9m people of Assam off citizens’ list

    Indian citizens who migrated from BD after March 25, 1971 have not been included

    Nearly 2 million people have been left off a list of citizens released on Saturday in India’s northeastern state of Assam, after a mammoth years-long exercise to check illegal immigration from neighbouring Bangladesh, report agencies.

    Resentment against illegal immigrants has simmered for years in Assam, one of India’s poorest states, with residents blaming outsiders, many said to come from neighbouring Bangladesh, for stealing their jobs and land.

    Officials checked documents submitted by roughly 33 million people for a draft released last year of a National Register of Citizens (NRC) in Assam, which left out more than 4 million residents of the state, many of them Hindu.

    But 31.1 million people now make up the final list, with 1.9 million excluded, said Prateek Hajela, the coordinator of the state’s register.

    “Any person who is not satisfied with the outcome of the claims and objections can file an appeal before the foreigners’ tribunals,” Hajela said in a statement, adding that everyone had received an adequate hearing.

    Those excluded have 120 days to prove their citizenship at hundreds of regional quasi-judicial bodies known as foreigners’ tribunals. If ruled to be illegal immigrants there, they can appeal to higher courts.

    “Everyone in my family is on the list but not me,” said Munwara Khatun, accompanied by two grandchildren and her husband, Sahar Ali, at a registration centre in Assam’s central district of Nagaon. “How can that be?”

    Her 65-year-old spouse, a farmer, said the draft list had also omitted her, prompting them to provide authorities with documents ranging from land records to her voter identification and the Aadhaar of Indian residents.

    Some of the two dozen people at the centre said officials had asked them to go to court to get included on the register.

    Critics accuse Prime Minister Narendra Modi’s ruling Hindu nationalist party of stoking sentiment against illegal immigrants, and misusing the register to target even legal Muslim citizens.

    His close aide, Home Minister Amit Shah, has previously vowed to weed out illegal immigrants, calling them “termites”.

    But Modi’s Bharatiya Janata Party (BJP), which also rules the state, has had to change tack in recent months, because a large number of Hindus figured on the previous list.

    “Names of many Indian citizens who migrated from Bangladesh as refugees prior to 1971 have not been included in the NRC,” Assam’s Finance Minister Himanta Biswa Sarma said in a Twitter post, adding that some illegal migrants had been wrongfully added.

    Another BJP lawmaker, Shiladitya Deb, said he did not expect the list to be fair. “It will not have the names of many Bengali Hindus,” he said.

    The Supreme Court, which has monitored the process after it ordered preparation of the list, this month denied a request for more time from the government, which it said was needed for a partial re-verification after many Bangladeshis produced false or fabricated documents.

    Separately, the BJP has been planning legislation to ease the way for non-Muslim minorities from neighbouring countries to become citizens. Some party members have publicly assured Hindus left off the list India would give them refuge.

    To establish citizenship, people in Assam have had to furnish proof of residence in India going back decades, before March 24, 1971, the year in which hundreds of thousands of people fled Bangladesh, as it split off from Pakistan.

    State officials say they do not know the eventual fate of those finally adjudged foreigners. Bangladesh has not committed to accepting them.

    An MLA from Assam’s second-most powerful opposition party is among the 1.9 million people whose names have been left out of the NRC.

    The centre has said people whose names don’t appear in the NRC cannot be declared foreigners till all legal options are exhausted. Every person left out of the NRC can appeal to the Foreigners Tribunal, and the time limit to file the appeal has been extended from 60 to 120 days.

    At least 1,000 tribunals will be set up in phases to hear disputes, the Home Ministry said.

    A retired Army officer who was detained a few months ago on charges of being an illegal immigrant has been left out of the National Register of Citizens (NRC) list. However, he was not particularly surprised by the development. “I was not expecting my name to be in the list as my case is still pending in the High Court. I have full faith in the judiciary, and I’m confident that I will get justice,” news agency ANI quoted Mohammad Sanaullah as saying.

    BJP’s BD migrants claim busted

    Experts opine after Assam NRC publication

    An analysis of the National Register of Citizens (NRC), published by the Assam State government in India on Saturday, shows that allegation of the Bharatiya Janata Party (BJP) leaders regarding the influx of Bangladeshis into that state is not true, experts opined.

    “Many (of the BJP’s) hard-liners claimed that about five million people, mostly Bangladeshi Muslims, are residing in Assam illegally. But the NRC data shows that only 1.9 million people are excluded from the register, and many of them may be excluded mistakenly,” former ambassador Humayun Kabir told the FE.

    “Interestingly almost half of these 1.9 million are Hindus, which also proves that the BJP leaders’ claim was a political rhetoric.”

    “Moreover, the exclusion rate is only 6.0 per cent in the regions, which have larger concentration of Bengali-speaking people. But in the areas, dominated by Assamese people, the exclusion rate is above 14 per cent,” he pointed out.

    Commenting on the issue Foreign Minister Dr A K Abdul Momen said sometimes political leaders say a lot of things out of their political compulsion.

    “We should not bother about these sayings. In my meeting with the Indian external affairs minister during his recent Dhaka visit, I raised the NRC issue, saying that Bangladesh is already burdened with 1.1 million Rohingyas. Now, many people here are concerned over the Assam situation.”

    “The Indian minister categorically told me that it (NRC) is an internal issue of India, and Bangladesh should not have any concern over it. We trust his words,” the minister noted.

    However, Mr Kabir said the government should keep an eye on the situation, so that whenever required, necessary steps can be taken to address the situation.

    The NRC has excluded over 1.9 million people, who now have to fight their case, and prove that they have been in Assam for decades.

    The government has said these people will not be declared foreigners immediately, and they will have the option of appealing to the foreigners’ tribunals and the courts.

    Former foreign secretary Towhid Hossain said at this stage Bangladesh has nothing to do (regarding NRC).

    “There is a provision of appeal for those who are excluded. They can go to the tribunals concerned, and then to the higher court. So it will be a long process.”

    According to Mr Hossain, repeated threats, made by the hard-liner BJP leaders, caused the public apprehension.

    “Both the governments of India and Bangladesh consider it as an internal affair of India. But when some BJP leaders say that these illegal immigrants are Muslims from Bangladesh, and they will be forced to go back to Bangladesh, then definitely anxiety is created among people,” he opined.

    Interestingly, after the final NRC publication, the ruling BJP leaders, who have been vocal in its favour, are now lashing back against its outcome.

    They even term the NRC publication as a “conspiracy to keep the Hindus out, and help the Muslims.”

    As the NRC was released on Saturday, members of the state’s ruling BJP lashed out, saying that the list left out many genuine citizens, especially the refugees who migrated from Bangladesh before 1971, reports Indian media.

    “The names of many Indian citizens, who migrated from Bangladesh as refugees before 1971, have not been included in the NRC, because the authorities concerned refused to accept refugee certificates,” Assamese Minister Himanta Biswa Sarma said.

    Meanwhile, after the NRC publication, the BJP has indicated that it will bring the citizenship amendment bill soon.

    The BJP MLA Shiladitya Dev alleged that the NRC software was bugged, and the process of preparing the citizens’ list was steeped in corruption.

  3. মাসুদ করিম - ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (১২:৫০ অপরাহ্ণ)

    লোকান্তরিত প্রেরণা

    বাংলাদেশে প্রাচীন ইতিহাস চর্চার একজন দিকপাল পুরোধা ইতিহাসবিদ ড. শাহানারা হোসেন চিরবিদায় নিয়েছেন। যিনি আমাকে মায়ের মত অপার স্নেহ দিয়েছেন, প্রাচীন ইতিহাস চর্চায় নি:স্বার্থভাবে উৎসাহ আর প্রেরণা দিয়েছেন তিনি আজ লোকান্তরিত। তাঁর কাছে ক্লাসরুমে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ আমার হয়নি, কিন্তু তিনি আমার শিক্ষক। তিনি একজন যথার্থই শিক্ষক। উদার এবং বিশাল মনের বিনয়ী একজন মানুষ। আমার দেখা অন্যতম সেরা মানুষ।

    ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত আমার এমএ পরীক্ষার ভাইভা নিয়েছিলেন তিনি। সেই প্রথম দেখা। শিক্ষক হবার পর শুনেছি, ভাইভায় আমাকে ১০০% নম্বর দিতে তিনি নাকি জোর প্রস্তাব করেছিলেন। তারপর থেকে সব সময় সবাইকে আমার ভাইভার গল্প করতেন। আমৃত্যু করেছেন। হাতে গোনা মাত্র কয়েকবার হলেও যখনই দেখা হয়েছে পরম মমতায় আশির্বাদ করেছেন, হয়েছি তাঁর স্নেহধন্য।

    বাংলাদেশে প্রাচীন ইতিহাসচর্চার দীর্ঘদিনের ‘জটিল’ এবং ‘কুটিল’ কাঠামোতে ড. শাহানারা হোসেন ছিলেন আমার জন্য সত্যিকারের প্রেরণা। যেখানেই থাকবেন অনেক ভালো থাকবেন আর আপনার নি:স্বার্থ ভালোবাসার পরশ ও প্রেরণা থেকে আমাকে বন্চিত করবেন না। বাংলাদেশে প্রাচীন ইতিহাসচর্চায় নি:স্বার্থ প্রেরণা লাভের জায়গার যে আমার বড় অভাব!!

    নিচের অংশটুকু Abul Kashem স্যারের status থেকে নেয়া:

    “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. শাহানারা হোসেন চিরবিদায় নিয়েছেন। রাত ৯.০০টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তাঁর জীবনাবসান হয়েছে। শিক্ষক হিসেবে এবং সিনিয়র সহকর্মী হিসেবে তিনি ছিলেন আমাদের কাছে মাতৃপ্রতিম।

    ড. শাহানারা হোসেন ১৯৩৭ সালের ১লা এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আব্দুল হাফিজ ছিলেন পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা। তিনি একজন সুসাহিত্যিকও ছিলেন।
    শাহানারা হোসেন কামরুন্নেসা হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ইডেন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের SOAS থেকে এমএ সম্পন্ন করেন। তিনি ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় নারী ইতিহাসবিদ। বাংলাদেশে যে কয়জন ইতিহাসবিদ প্রাচীন বাংলার ইতিহাস বিষয়ে specialization অর্জন করেন শাহানারা হোসেন তাঁদের মধ্যে প্রথম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ড. আহমদ হাসান দানীর এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতবিশেষজ্ঞ প্রফেসর এ এল ব্যাশামের(A L Basham) ছাত্রী ছিলেন। তিনি ব্যাশামের অধীনে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস বিষয়ে গবেষণা করে School of Oriental and African Studies থেকে এম এ ডিগ্রী লাভ করেন। তাঁর এম এ থিসিসটি Everyday Life of the Pala Empire নামে বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। এটি ছাত্র ও গবেষকদের কাছে বিপুলভাবে সমাদৃত। তিনি ১৯৬৫ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় Early medieval women-এর উপর পিএইচডি করেন এবং থিসিসটি এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে The Social Life of Women in Early Medieval Bangla নামে পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়।

    শাহানারা হোসেন ছিলেন একজন জেন্ডার স্টাডিজ বিশেষজ্ঞ। প্রাচীন বাংলার ইতিহাস এবং History of Ancient Bengal নামে তাঁর দুটি পুস্তক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএস থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমি শাহানারা হোসেনের আত্মজীবনী বেলা শেষের পাঁচালি প্রকাশ করেছে।

    ড. শাহানারা হোসেন ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৬৯ সালে রিডার ও ১৯৭৩ সালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। তিনি বিভাগীয় সভাপতি, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ড. শাহানারা হোসেন রাবি মন্নুজান হলের প্রথম প্রভোস্ট। তিনি বিভিন্ন একাডেমিক প্রোগ্রামে এবং সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ উপলক্ষে পৃথিবীর বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন। ২০১০ সালে বাংলা একাডেমি তাঁকে সম্মানসূচক ফেলোশীপ প্রদান করে। আনুষ্ঠানিকভাবে চাকুরীজীবন শেষ করার কয়েক বছর পর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তাকে ইউজিসি প্রফেসর নিয়োগ করে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ইউজিসি প্রফেসর।

    তাঁর স্বামী অান্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. এ বি এম হোসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ইমেরিটাস প্রফেসর। এই প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছিলেন।

    আমাদের পরম শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক মাতৃসমা শাহানারা হোসেনের আত্মার শান্তি কামনা করি।

  4. মাসুদ করিম - ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (৩:২১ অপরাহ্ণ)

    শূন্যতার সন্ধানে, ন্যূনতার আহ্বানে – The Pursuit of “Nothingness” – Kazi Khaleed Ashraf

    A public lecture by Kazi Khaleed Ashraf on 4th September at Goethe Institute, the last one of the series of three lectures with the overall theme of “Presence of Architecture”

    শূন্যতার সন্ধানে, ন্যূনতার আহ্বানে

    অধিক বনাম ন্যূনতা। প্রসারিত বনাম পরিমিত। এই দ্বৈততা স্থাপত্যে একটা অবিরত বিরোধ। গৌতম বুদ্ধের গন্ধকুটি থেকে শুরু করে জাপানী “টি-হাউস,” গান্ধীর বাপুকুটি থেকে মিজ ভ্যান ডার রোর মিনিমাল বাড়ি─ এসবই স্থাপত্যের একটা অমীমাংসিত বৈপরীত্যের উদাহরণ; আরও সূক্ষ্মভাবে দেখলে এই দ্বন্দ্বটা মনুষ্যত্বে অন্তর্নিহিত। বিনির্মানের ভিতর দিয়ে কেন “কিছু না”-‘র কাছে যেতে চাই, এই নিয়ে আলোচনা।

    The Pursuit of “Nothingness”

    It goes by many names: Minimalism, reductivism, poverty, emptiness, sunnyata. From the Buddha’s house to the Japanese teahouse, and from Gandhi to Mies van der Rohe, architecture is in a perpetual tension between excess and less. The task is perplexing. How does each culture and epoch define the limits of architecture, and the paradox of dwelling?

  5. মাসুদ করিম - ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (২:০৭ অপরাহ্ণ)

    Bangladesh: Approaching the Indian Ocean

    For ages, Bangladesh has been a maritime nation. With around 700 long coastlines, traversed by over 200 rivers and 29 coastal islands and an even gradient to the coastal shelf, Bangladesh people have dynamic engagements with blue waters.

    With contemporary focus on the blue sphere, Bangladesh is engaging in an open-ended manner in articulating an objective narrative on blue economy. Indeed, focussing on the Bay of Bengal, to begin with. So, how to distinguish Bangladesh’s broad approach to the Indian Ocean?

    As a fast-growing economy, Bangladesh foremost believes in stabilising the Indian Ocean in entirety, not merely in terms of securitisation. Viewing the ocean as a space of strategic competition may not essentially bring about crucial amity and stability in the Indian Ocean countries. Given all the diversity that exist across the littorals, getting peace – harmony – stability – pluralism right across our societies and communities has to be the august enterprise, individually as well as collectively. It ought to be about affirming our belief and consolidating the civilisational chords centring the Indian Ocean and the adjoining seas and bays.

    For centuries, our ocean has been nourishing economic, social and cultural connects between and among two billion people around this vast oceanic space. Within the vast blue-sphere, the smaller seas and bays bear distinct identity and features. This distinction needs careful appreciation. As Indian Oceanic routes become busier, slightest political – social – cultural turbulence in one littoral State may create disruptions transcending its shores. Increasing movement of trade in goods and services only warrants much greater interactions through dynamic narratives across our peoples. Therefore, our narratives and thoughts need to be understood beyond the facts that Indian Ocean carries half of global container shipments or, one-third of the global bulk cargo traffic or, two-third of global shipments.

    Bangladesh is both an Indian Ocean as also a Bay of Bengal littoral State. It’s not a dual identity, rather one that complements. Within an aspirational Vision 2041 i.e. of developing Bangladesh, Prime Minister Sheikh Hasina situates blue economy as a cornerstone for accomplishing sustainable development. As all the littorals strives to grow collectively, each of the littorals ought to ensure that development and prosperity in the Indian Ocean region and the adjoining seas and bays is based on mutual trust and respect and with an appreciation of equality of interests.

    Yes, it is just logical that countries will compete with each other in respective development journey, but not undermining others’ growth prospect or discounting others’ circumstances. No country should falter on securing these key principles. Else, attainment of collective security and sustainable development in wider India Ocean region could be at risk. This appreciation in full can help us secure ‘shared prosperity’ through ‘shared responsibility’, as our leaders unequivocally signed to in adopting the universal Agenda 2030 for Sustainable Development.

    The Indian Ocean littorals constitute over 40 developing countries, sharing 40% global population. We offer a vast market, with fast emerging middle and affluent class. Ours is the region that will continue to grow fastest out of all other regions at least for the next one decade. So, it would be important for us to plough the benefits out of economic cooperation. Our rising prosperity or wealth need to reach the bottom.

    In addressing some of the critical commons, over the decades, Indian Ocean has seen emergence of several creatively crafted regional and sub-regional cooperative frameworks e.g. BIMSTEC, BBIN, GMS. In some of these, discussion afoot about concluding Bilateral or Regional FTAs as well. Some of these regional/sub-regional organisations are engaged in advancing result-oriented trade creation, increasingly focussed on services. However, results have been mixed.

    In many instances, in key areas like Trade – Transport – Energy connectivity, countries are yet to materialise low-hanging fruits or, roll out cross-border projects. With modest share successes in our part of the world, Bangladesh believes that the Indian Ocean region ought to creatively engage in regional economic cooperation and integration. We can benefit engaging on practical, collaborative initiatives in agriculture, education, health, hospitality, higher learning, digital technology, SMEs, for instance. Our engagements are expected to catalyse development of regional or sub-regional value chains as well.

    In dealing with many of the challenges or tapping opportunities, robust engagement on technology and innovation hold promise. In countries like India, courtesy creative ideation and Fourth Industrial Revolution (4IR) knowledge – applications, individuals are solving many endemic problems for communities. In dealing with climate change impacts, for instance, Bangladesh Prime Minister Sheikh Hasina has been vigorously asking for collaboration sharing life-saving technologies (e.g. in agriculture, health, water) than financing. Moving beyond the conventional menu of cooperation, Indian Ocean community therefore has much to demonstrate on learning – technology – innovation front.

    A key challenge is to unlock maritime connectivity across the Indian Ocean and all its bays and seas in every possible way. It is indeed an opportunity. Bangladesh, for instance, is vigorously pursuing Coastal Shipping Agreements with close-by littorals. We already have one with India. The one with Sri Lanka is nearing finalisation. We look forward to materialising the BIMSTEC Coastal Shipping Agreement. We foresee that criss-crossing shipping connectivity premised on business principles should unlock opportunities across Bay of Bengal for movement of goods and people, development of supply chains and create new regional political and economic dynamics. More than just connecting our ports and growth centres, it should be to contribute to the desirable narrative for the region. We all are unanimous about ensuring maritime safety and security and rule of law in blue waters. Yet, addressing an issue is often fraught with unease and lack of trust. Bangladesh, for instance, peacefully delimited maritime boundary with her neighbours i.e. India and Myanmar years back. We realised that resolving such intricate issues and consequently engaging on exploring potential in maritime resources within blue economy require wisdom and creative appreciation of issues beyond the horizon. Resolution of certain issues may often require us to look at a given issue as much as through the prism of political sovereignty as also beyond wider national interests.

    There is also the need to strengthen maritime cooperative security architecture based on collective security and shared responsibility across the Indo-Pacific region. So far, we all stand up to ‘zero tolerance’ against terrorism and violent extremism. But, the Indian Ocean remains prone to a range of non-conventional security threats e.g. maritime piracy, armed robbery, maritime terrorism, human trafficking, trafficking of arms and narcotics. To counteract, all need to initiate appropriate national actions to combat all trans-national security challenges across the Indian Ocean, including those posed by non-state actors.

    A comprehensive security architecture in Indian Ocean region calls for mutual cooperation, collaboration and seamless interaction among various public and private institutions and also on intelligence front. This should provide for political and strategic framework to effectively and comprehensively address maritime security challenges through improved cross-sectoral cooperation within and across civilian and military authorities.

    Of late, the Indian Ocean region is seriously challenged by over-exploitation of her oceanic wealth. In the Bay of Bengal, for instance, there is little mapping and observation of oceanic health. Our bay is one of the most unmapped in the world while reached by one seventh of global population. Sizeable part of the bay is threatened by over-fishing. We hear of significant dumping of toxic liquid and solid wastes, plastics in the bay. That is particularly rampant beyond our EEZs.

    Recently, a vast ‘dead zone’ as large as 60,000 square kilometres has been traced in the Bay of Bengal with little trace of life. While adverse effects of climate change in the bay is yet unmapped fully, rising ocean acidification is a reality. Not to speak of rising intensity and incidence of severe weather conditions originating in the bay. All these are certain to risk livelihoods of vast majority of our artisanal fishermen and population along the coasts.

    Our actions have to go well beyond creating maritime domain awareness. As much as in the Bay of Bengal, every country has to concretely engage on all the seas and bays in the Indian Ocean to conserve our common wealth. This is so much evident when we see all kinds of climate change impacts so much evident in countries like Bangladesh, Sri Lanka or Maldives.

    Time is more than ripe for every Indian Ocean littoral to act – in addressing the challenges, in consolidating our strengths, in conserving our wealth, in reaching out to the others. As modest as we may, we need to move on engaging in project-oriented co-operation. Engaging in modest menu of people-people cooperation to develop shared interests, wider networks and reap mutually beneficial results should also merit consideration. In that journey, the interests – needs – circumstances of the countries with distinct disadvantages or, lesser endowment also need to be kept in view.

    The Indian Ocean Region has enough of knowledge – expertise – endowments to re-connect or, connect our peoples – communities – countries. It is time that we make the choices and engage.

  6. মাসুদ করিম - ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (৩:৩০ অপরাহ্ণ)

    Global Asset Registries: a game changer for the fight against inequality and illicit financial flows?

    In July a workshop was held at the Paris School of Economics to start developing the concept for a Global Asset Registry.

    In essence, the point of a Global Asset Registry is to understand (and then tackle) some of the most pressing issues of our times: inequality, and financial crime. The Moldovan Laundromat; the bigger Russian Laundromat; the “Luxleaks” corporate tax cheating scandal, the Danske Bank scandal, or the Cum-Ex “tax theft” affair: new shockers seem to be emerging almost every other day.

    Since the global financial crisis, several new global transparency initiatives have popped up, such as the OECD’s push to promote automatic exchange of banking information across borders, or the ongoing drive for better beneficial ownership registries. Other transparency schemes are older: many countries have long had real estate registries, or asset declarations by public officials. Yet many of these initiatives are patchy in scope, riddled with loopholes, and implemented by only a minority of countries. Worse, authorities often work in silos, without effective national coordination between the areas of tax, money laundering and corruption.

    The Global Asset Registry could tackle all of these problems by centralising all relevant information about assets owned by individuals. This would give two things: first, inform the big picture about global wealth distribution and inequality, and second, give the big picture about a single person’s wealth. Can this person justify their level of wealth given their (low) declared income? Are they under-declaring their income and wealth for in order to cheat on their taxes? Or, if they are able to buy all these mansions, yachts and jets, yet they have only declared a low income – is that because their wealth stems from drugs or bribes?

    An initial discussion about a Global Asset Registry took place at an event of the Independent Commission for the Reform of International Corporate Taxation (ICRICT) in New York in September 2018. On that occasion ICRICT produced a roadmap towards a Global Asset Registry, (including some of the Tax Justice Network’s ideas). In 2019 the game was opened to more players to develop the concept further. The workshop was co-organised by ICRICT, the World Inequality Lab, the Tax Justice Network, Transparency International and the Financial Transparency Coalition. Participants included ICRICT Commissioners Thomas Piketty, Gabriel Zucman and Eva Joly as well as representatives from the OECD, the IMF, the World Bank, the Inter-American Center of Tax Administrations (CIAT), the European Parliament, a former FBI agent, researchers, academia and civil society organisations. The workshop was organised as a closed roundtable to foster dialogue and intervention from everyone on an equal footing, allowing experts to speak at a personal level (not necessarily on behalf of the institution they work for). The agenda, list of participants and a brief of the discussions held is available here.

    We are still some way away from defining a final concept and scope for a Global Asset Registry. The 2019 workshop discussed which assets should be within its scope, and some intermediate steps, such as aggregate statistics on individuals by wealth bracket, and overall taxes paid.

    Many thorny issues are still to be developed. Who should host a Global Asset Registry? Which assets should be in its scope? Who should have access: local or foreign authorities only – or the wider public? What are the data security issues?

    This is just the start of a new initiative that may create synergies within many of the existing transparency initiatives but can also take it one step further: identifying other areas needing more transparency, and centralising information for the fight against inequality and financial crime.

  7. মাসুদ করিম - ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (২:৩৭ অপরাহ্ণ)

    মোশতাক কেন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করতে পারেননি

    ইতিপূর্বে আমরা আমাদের সংগৃহীত তথ্য-প্রমাণাদি ও দলিল-দস্তাবেজ পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখিয়েছি যে, বঙ্গবন্ধু হত্যা চক্রান্তের পেছনে যে আন্তর্জাতিক চক্রটি কাজ করেছে তাদের প্রধান ছিল মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ। এর পরই ছিল পাকিস্তান ও পশ্চিম এশিয়ার দু-একটি মুসলিম দেশ। এই মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে সক্রিয় ছিল সৌদি আরব। এরা বাংলাদেশে তাদের ক্রীতদাসদের মাধ্যমে ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মান্তিক, সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের পালের হাওয়াকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেয়া। অর্থাৎ বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে পরিচালিত করা, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার পরিবর্তে পাকিস্তানি চিন্তা-চেতনা প্রতিষ্ঠা করা। এসবের পাশাপাশি বাংলাদেশকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের তল্পিবাহক করা, তাদের তাঁবেদারে পরিণত করা, তাদের বাজারে রূপান্তরিত করা, তাদের লুটপাটের চারণভূমিতে পরিণত করা। কিন্তু চক্রান্তকারীদের এ উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল হয়নি।

    ১৫ আগস্ট বিয়োগান্ত ঘটনার পর সকালে ঘাতক ডালিম বেতারে ঘোষণা দেয় যে, ‘মুজিবকে’ হত্যা করা হয়েছে এবং খন্দকার মোশতাকের অধীনে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে। ডালিম আরো বলে, ‘দেশে সামরিক শাসন জারি করা হয়েছে এবং এখন থেকে বাংলাদেশ ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে রূপান্তরিত হবে।’ ডালিমের ঘোষণা অনুযায়ী সেদিন অনেকেই বিশ্বাস করেছিল যে, বাংলাদেশ এখন একটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র। কিন্তু খন্দকার মোশতাক এ ব্যাপারে কৌশলী ভূমিকা পালন করেন। একটি বিশেষ কারণে খন্দকার মোশতাক বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রটি পরিবর্তন করতে চাননি। তিনি অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে এই বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে তিনি দ্বিধাহীন চিত্তে তার ভাষণে আল্লাহর নাম নিয়ে শুরু করেন এবং ‘জয় বাংলার’ পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ দিয়ে শেষ করেন। এভাবেই মোশতাক সবাইকে বোকা বানান।

    খন্দকার মোশতাকের ওই দিনের ভাষণে দেশের অনেকেই ধরে নেন যে বাংলাদেশে ইসলামি শাসন কায়েম হয়েছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এতে বিভ্রান্ত হন। ডালিমের ঘোষণা শুনে এ দেশের ‍মুক্তিযুদ্ধবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী আশান্বিত হয়ে উঠেছিল এই ভেবে যে বাংলাদেশে ইসলামি প্রজাতন্ত্র কায়েম হয়েছে। কিন্তু মোশতাকের ভাষণের পর তাদের আশা ভঙ্গ হয়। আসল কারণটা তাহলে কী ছিল? এ সম্পর্কে জানতে চেয়ে লন্ডনস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনে শত শত মানুষ ফোন করে। ডেপুটি হাইকমিশনার ফারুক চৌধুরীর কাছে অনেকেই জানতে চান, দেশে ইসলামি প্রজাতন্ত্র কায়েম হয়েছে কি না? আর না হয়ে থাকলে ‘মুজিব’কে সপরিবারে হত্যা করা হলো কেন?

    মোশতাকের কূটচালে শুধু বাংলাদেশিরাই নন – পাকিস্তান, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের মানুষও বিভ্রান্ত হয়েছিল। বাংলাদেশকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ঘোষণার ব্যাপারে খন্দকার মোশতাক মূলত ভারতের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

    বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের চার দিন পর (২০ আগস্ট) শ্রী সমর সেন মোশতাকের সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান জানান। এ ঘটনার প্রায় তিন মাস পরই সমর সেন অপহরণ প্রচেষ্টার শিকার হন। এসব বিষয়ে শ্রী সেন তাঁর জীবদ্দশায় খুব একটা মুখ খোলেননি। শ্রী সমর সেন ২০০৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে ১৯৯৮ সালের ২১ নভেম্বর ভারতের ফ্রন্টলাইন পত্রিকায় তিনি ১৫ আগস্টের বিয়োগান্ত ঘটনাবলি নিয়ে কথা বলেন। শ্রী সেনের মৃত্যুর পর ২০১১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কোলকাতার ‘দ্য স্টেটসম্যান’-এর তৎকালীন সম্পাদক মানস ঘোষ এক নিবন্ধে খন্দকার মোশতাক আহমদের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে পঁচাত্তরের একটি নাটকীয় পরিস্থিতির বিবরণ দিয়েছেন।

    মানস ঘোষ তার নিবন্ধে বলেছেন, ‘১৫ আগস্টে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ঢাকায় ছিলেন না। ভারতীয় হাইকমিশনার সমর সেন গাড়িতে চেপে কোলকাতা হয়ে ১৬ আগস্ট ঢাকায় পৌঁছান। তিনি কমিশনে তার সহকর্মী এবং ঢাকার বন্ধুদের সঙ্গে অনেকগুলো বৈঠক সেরে ১৮ আগস্ট বঙ্গভবনে যান। গাড়ি থেকে নেমে অপেক্ষমাণ ফটো সাংবাদিকদের সামনে তাকে সহাস্য দেখা যায়। এটা উপস্থিত কর্মকর্তাদের বিস্মিত করে। এরপর একখণ্ড কাগজ হাতে সমর সেনকে সরাসরি খন্দকার মোশতাকের কাছে দেখা যায়। মোশতাক দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ভারতীয় হাইকমিশনার সমর সেন তার কূটনৈতিক নোট পড়ে শোনান। এই নোট শোনার পর খন্দকার মোশতাক বিমর্ষ মুখে ধপ করে চেয়ারে বসে পড়েন।’

    এই কূটনৈতিক নোটে লেখা ছিল : ‘যদি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করা হয় এবং কোনো দেশের সঙ্গে কনফেডারেশন করা হয়, তাহলে ভারতের কাছে থাকা বৈধ চুক্তির আওতায় ভারতের সেনাবাহিনী যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।’ এ থেকে সহজেই বোঝা যায়, খন্দকার মোশতাক এবং পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা পাকিস্তানি কায়দায় দেশ পরিচালিত করলেও ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানের কারণে তারা বাংলাদেশকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করেনি।

    উল্লেখ্য, মানস ঘোষ তার নিবন্ধে খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে শ্রী সমর সেনের সাক্ষাৎকারের তারিখ ১৮ আগস্ট উল্লেখ করেছেন, যা সঠিক নয়। শ্রী সেন খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন ২০ আগস্ট, বুধবার।

    শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর বিবৃতি
    পঁচাত্তরের ২০ আগস্ট শ্রী সমর সেন খন্দকার মোশতাকের সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্রসচিব ফখরুদ্দীন আহমদের সঙ্গেও দেখা করেন। ওইদিনই বিকেলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিস ইউজিন বোস্টার এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের চার্জ-দ্য-অ্যাফেয়ার্স বঙ্গভবনে খন্দকার মোশতাক আহমদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরদিন ২১ আগস্ট বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী কায়রোর দৈনিক আল আহরাম পত্রিকায় একটি সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে শ্রীমতী গান্ধী বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের কূটনৈতিক অব্স্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশ ও অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে সকল আদর্শের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সে সকল আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরে প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দকে কাজ করতে হবে।’ অর্থাৎ বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র বজায় রাখতে হবে। বাংলাদেশেকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না এবং পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো প্রকার কনফেডারেশন করা যাবে না।

    হেনরি বাইরোডের রিপোর্ট
    ১৯৭৫ সালের ২০ আগস্ট পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত হেনরি বাইরোড তাদের পররাষ্ট্র দফতরকে বাংলাদেশের ঘটনাবলি বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠান। এই হেনরি বাইরোড ছিলেন পদমর্যাদার দিক থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। কূটনৈতিক পেশায় যোগদানের জন্য তিনি সামরিক চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। বাইরোড তার প্রতিবেদনে লেখেন :

    ১.
    পাকিস্তানিরা ঢাকার নতুন সরকাকে আবেগাপ্লুত হয়ে স্বীকৃতি ও সমর্থন দেয়ার নেপথ্যে বড় কারণ ছিল বাংলাদেশ ইসলামি প্রজাতন্ত্র হয়ে যাওয়ার বিষয়টি। এ কারণেই ঢাকার অভ্যুত্থান সম্পর্কে পাকিস্তানি প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করার চেষ্টা জটিল ও বিভ্রান্তিকর। কারণ বাংলাদেশের পুনর্নামকরণের খবর দেশটির সরকারি কর্মকর্তা, সংবাদপত্র ও জনমতে বিরাট প্রভাব ফেলেছে। অথচ ১৮ আগস্ট সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রথমেই বিবেচনায় নিয়েছে যে খবরটি হয়তো তথ্যভিত্তিক নয়। এটি ছিল ভুট্টোর ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি’ দেয়ার আড়াই দিন পরের ঘটনা। ২০ আগস্ট সকাল থেকে পাকিস্তানের সংবাদপত্র এ বিষয়টি কোনোমতে উল্লেখ করতে শুরু করেছে।

    ২.
    বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের প্রতি পাকিস্তানের সংবাদপত্র ও জনগণের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল আবেগঘন এবং জোরালোভাবে ইতিবাচক। সব সংবাদপত্র বাংলাদেশের ঘটনাবলি যথেষ্ট ফলাও করে প্রচার করে। বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটি দৃশ্যত মুসলিম বৃত্তে ঢুকে পড়েছে ধরে নিয়েই পাকিস্তানে স্বতঃস্ফূর্ত উল্লাস পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তান এবং মুসলিম বিশ্বের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে দ্রুততার সঙ্গে দেয়া ভুট্টোর উদ্যোগ অগ্রণী পদক্ষেপ বিবেচনায় প্রশংসিত হয়।

    ৩.
    বাংলাদেশের নতুন সরকারের বিরুদ্ধে ভারত কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে, এমন একটা আশঙ্কা তাদের রয়েছে। পাকিস্তানিরা ব্যাপকভাবে এবং সন্তুষ্টির সঙ্গেই বিবেচনা করে যে, বাংলাদেশের এই অভ্যুত্থানের ফলে ভারত একটা বড় রকমের আঘাত পেয়েছে। সম্ভাব্য ভারতীয় অভিযানের বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদপত্রে যেমন ছাপা হচ্ছে, তেমনি এ নিয়ে অন্যত্রও আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। সাংবাদিক এবং অন্যরা ঘরোয়াভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন যে ভারত আকস্মিকভাবে কোনো পদক্ষেপ নিয়ে বসতে পারে। একইসঙ্গে পাকিস্তানে এমন ধারণাও ব্যাপক যে ভারত এই মুহূর্তে নিজস্ব সমস্যা মোকাবিলা করছে। আর ইসলামি দেশগুলোর কাছ থেকে বাঙালিরা ইতিমধ্যেই সমর্থন পেয়েছে। ফলে সেই ধরনের হস্তক্ষেপ এলে সৌদি আরবের মতো ইসলামি দেশগুলোর কাছ থেকে তা প্রতিহত করার ব্যাপারে সহায়তা মিলতে পারে।

    ফ্রন্টলাইনকে যা বলেন শ্রী সেন
    ১৯৯৮ সালের ২১ নভেম্বর ভারতের ফ্রন্টলাইন পত্রিকার পক্ষ থেকে শ্রী সমর সেনের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন সাংবাদিক সুকুমার মুরলিধরন। সাক্ষাৎকারে শ্রী সেন বলেন, ‘ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রদূত হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্তি আমার পছন্দ অনুযায়ীই হয়েছিল। আমার আগ্রহের কারণ, বাংলাদেশে নবযুগের সূচনার সাক্ষী হয়ে থাকা। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর তিনটি চরম উদ্বেগজনক বিষয় আমার চোখে ধরা পড়ে। অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশটিকে তছনছ করে দিয়েছিল। যুদ্ধের কারণে জনগণ চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছিল। এর সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত যোগ হয়ে অবস্থা আরও খারাপ করে তোলে।’

    ‘দ্বিতীয় যে ধাক্কাটি আমি খেলাম তা রাজনৈতিক। সেখানে যেমন ব্যাপক আকারে ভারতের প্রতি প্রীতি বিরাজ করছিল, তেমনি বিপুল বিদ্বেষও কাজ করছিল। কারণগুলো অবশ্য পরে বোঝা যায়। পাকিস্তানপন্থীরা প্রচার চালাচ্ছিল যে, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ নিজের স্বার্থে নয়, ভারতের স্বার্থেই প্ররোচিত হয়ে কাজ করেছিল। ভারত যা করেছে তা নিতান্ত তার আপন স্বার্থেই করেছে। আমি পরে বুঝতে পারি, এ ধরনের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছিল প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও গণমাধ্যমে নিয়োজিত পাকিস্তানপন্থীরা। তাদের অনেকে তখনো এসব জায়গায় ঘাপটি মেরে ছিল।’

    ‘এসব কিছুর সঙ্গে যুক্ত হলো পাকিস্তানের সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর বাংলাদেশ সফরের অভিঘাত। ১৯৭৪ সালের আগস্ট মাসে তাঁর বাংলাদেশে আসা ভারতের ব্যাপারে বাংলাদেশের মোহভঙ্গ ঘটারই আলামত, ভারতের প্রতি ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষ যদি সত্য নাও হয়। এসবই হলো নেতিবাচক দিক। আর ইতিবাচক দিক এই যে, শেখ মুজিব ও তাঁর সহযোগীদের মধ্যে ভারতের প্রতি ঘনিষ্ঠ মৈত্রীর বোধ ছিল। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তাঁরা বরং খুশিই ছিলেন। সুতরাং বুঝতে পারি যে, সমস্যা যা তা রয়েছে দৃশ্যপটের আড়ালে। কিন্তু তা যে কত মারাত্মক গভীরে চলে গেছে, তা আমরা বুঝতেই পারিনি। তাই ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসের ঘটনাবলি আমাদের জন্য ছিল ধাক্কা খেয়ে ঘুম ভাঙার মতো ব্যাপার।’

    ‘এটা পরিষ্কার যে, ওই সমস্যাপূর্ণ বছরগুলোতে শেখ মুজিব রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোকে এক রাখতে পারেননি। অন্যদিকে তিনি বিশ্বাস করতেন, জাতির পিতা হিসেবে তিনি যেকোনো কিছু করতে পারেন। কিন্তু সেটা ছিল নিষ্ফল আশা। তাই অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির দশায় সেনাবাহিনীর মধ্যে সহিংসতা ও অসন্তোষ বাড়তে থাকে। আর তিনি ভাবতে থাকেন, ওরা তো সবাই আমারই সন্তান, আমিই ওদের আবার একত্র করব।’

    ‘সবকিছুর পর, সেটা ছিল ঠান্ডা যুদ্ধের সময়। এর প্রভাবও পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই বাংলাদেশকে নিজ নিজ বলয়ে নেয়ার জন্য সচেষ্ট ছিল। আমার ধারণা, আখেরে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবই ছিল বেশি। কারণ, তারা সেখানে প্রচুর টাকা ঢেলেছিল এবং তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা ছিল বেশি দক্ষ। পাকিস্তানপন্থী মহল যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অর্জন করে।’

    ‘এসব কিছু মিলে দুটি প্রবণতা দেখা যেতে থাকে। একটি এই যে, বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব ক্রমশ খোলামেলা রূপ ধারণ করে। দেশটির যাবতীয় সমস্যা, বিপর্যয় ও ঘাটতির জন্য ভারতকে দায়ী করা হতে থাকে। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা শেখ মুজিবের প্রতি বিমুখ হন এবং তাঁর একচ্ছত্র অবস্থান ক্ষয়ে যেতে থাকে।’

    ‘এ অবস্থায়ই সেনাবাহিনীর ওই মেজররা নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়ে ফেলেন। যতই বিরুদ্ধাচরণ করুক, শেখ মুজিব বাঙালি মাত্রেই তাঁর সন্তান ভাবতেন এবং বিশ্বাস করতেন। নিজের মর্মান্তিক মৃত্যু সেই শিথিলতার চূড়ান্ত প্রতিফল হয়ে এল।’

    ‘আমরা বাংলাদেশের ভেতরকার সব পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখতাম। মুজিববিরোধীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলতাম। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রাখার ব্যাপারটি শেখ মুজিব ভালো চোখে দেখতেন না। তিনি আমাদেরকে ওদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখতে বলেছিলেন। আমরা তা-ই করেছিলাম। আর পরিণামে অভ্যুত্থানের আগে আমরা বুঝতেই পারিনি যে, পরিস্থিতি কী পরিমাণ খারাপ হয়ে গেছে।’

    ‘আমেরিকানরা ছাড়া অন্যদেরও এ নিয়ে পরিষ্কার ধারণা ছিল না। আমি এটা জোর দিয়েই বলছি। গবেষক লরেন্স লিফশুলজ এ বিষয়ে একটি বই লিখেছেন। ভারতের প্রতি তাঁর বিশেষ সহানুভূতি থাকার কথা নয়। তিনি আমাদের দৃষ্টিকোণের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন না এবং তা বোঝার গরজও করতেন না। কিন্তু শেখ মুজিব হত্যার সঙ্গে মার্কিনদের যোগসাজশ প্রমাণে তিনি বদ্ধপরিকর ছিলেন। তিনি দেখিয়েছেন যে, ওই অভ্যুত্থান সংঘটিত করায় আমেরিকার প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছিল। তাঁর এই সন্দেহের যথোপযুক্ত প্রমাণ তিনি তাঁর বইয়ে দিয়েছেন।’

    ‘এই হত্যাকাণ্ডের পর আমরা দেখে যাওয়া ও অপেক্ষা করার পন্থা নিই। তবে একইসঙ্গে নতুন ক্ষমতাসীনদের সঙ্গেও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের এই কৌশল ভারত সরকারের কর্তাব্যক্তিদের অনেকেই পছন্দ করতে পারেননি। তখন আমাদের চালচলন এমন হলো যে, আমরা সব পথই খোলা রাখলাম। আমরা বাস্তবিক পন্থা অবলম্বন করার চেষ্টা করলাম।’

    ‘যদি বিপর্যয় নাও হয়, এক অর্থে শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বেলায় বিরাট ক্ষতি। সভ্য সমাজের রাজনৈতিক রীতির দৃষ্টিকোণ থেকে এবং ব্যক্তিগতভাবেও আমি মনে করি, দৃশ্যপট থেকে শেখ মুজিবের বিদায় এক বিপর্যয়কর ঘটনা। এর পরের মাসগুলোতে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের এক চক্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয়…’

  8. মাসুদ করিম - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (১:২৪ অপরাহ্ণ)

    A 60,000-year-old cure for depression

    There I was, on a cold but bright day in late autumn, wearing nothing but my bathing suit, lying on a pile of kangaroo skins and engulfed in plumes of smouldering leaves from a peppermint tree by the banks of a sacred river.

    Kwoorabup has been a place of ceremony for thousands of years. The river, located near the small town of Denmark, 360km south-east of Western Australia’s capital, Perth, was given its name by the local Noongar people, who believe it was formed by the Wagyl, a giant serpent from the creation period known as the Dreaming.

    Most people journey to this wild coastal stretch of Western Australia’s Great Southern region to visit vineyards, sample delicious produce and holiday by its strip of stunning beaches, but I was there to have my spirit rebalanced by the local medicine man, Joey Williams.

    Australia’s indigenous Aboriginal people have the oldest living culture on Earth. For around 60,000 years, their intricate understanding of ecology ensured survival, and their physical, spiritual, mental and emotional well-being was achieved by maintaining healthy, balanced relationships with all living and non-living things.

    At the heart of their communities were traditional healers. They have been respected and entrusted with the well-being of Aboriginal communities for as long as the culture has been alive, yet still today surprisingly little is known of them. The few healers who remain, of which Williams is one, have extensive knowledge of Aboriginal culture and are believed to possess supernatural abilities. Their role is to treat physical, mental and spiritual ailments using bush medicine, smoking ceremonies and spirit realignment – the latter being a common remedy for depression, or what indigenous Australians call “sickness of the spirit”.

    In 2017, the World Health Organization published a study stating the total number of people living with depression in 2015 was estimated to exceed 300 million – an increase of more than 18.4% since 2005.

    More recently, the Australian Medical Association announced their agreement with other leading global health organisations, declaring climate change a “health emergency” that will cause a higher incidence of mental ill-health, among other health-related issues. With modern living an apparent threat to both mental well-being and the planet ­– and having personally battled with depression myself – I had wondered whether answers could be found by looking back to the wisdom of the world’s oldest continuous civilisation.

    An Aboriginal elder and mubarrn, meaning “medicine” or “lore” man in the local Noongar language, Williams told me his healing ability has been passed down through his ancestral lineage. For him, and other Aboriginal healers, the most important first step in relation to healing is the ability to reconnect to the land, since for indigenous Australians, connection to country represents connection to their culture. For this reason, we’d started the healing ceremony the previous day in the Stirling Range National Park, a 90-minute drive north of Kwoorabup, to experience a reconnection ceremony at an ancient sacred site on the traditional lands of the Koreng tribe to which he belongs.

    Western Australia’s only southern mountain range is an area of extraordinary beauty. It’s one of the few places in the state that gets snow, and spring sees it dotted with an array of brightly coloured wildflowers. Home to 1,500 species, many growing nowhere else, it’s one of the world’s most important areas for flora.

    Many of these native plants have medicinal properties, and because Williams spent his early childhood living off the land with family, it’s no wonder that he, now in his late 50s, refers to the area as his “supermarket” and “pharmacy”.

    Wading through knee-high grass, Williams showed me how to dig for bloodroot (good for numbing toothache) and gather resin formed from the oozing red antiseptic sap of a marri tree, which strangely resembled the very thing it is known for healing – an open wound. “It cures stomach ache too,” he said.

    As we walked, Williams demonstrated that to him and other indigenous Australians, the land is very much alive, with songlines (cultural memory codes that hold knowledge of a place and define the responsibilities attached to kinship and lore) scattered across its skin. After singing the specific songline attached to the spot we were standing, Williams “read” the land to me, pointing out peaks like chapters. “There’s Bulla Meile, the hill of eyes,” he said. More commonly known as Bluff Knoll, southern Western Australia‘s highest peak is where the Koreng people believe they return after death. “And straight out in front of us is Talyuberlup. See her face, breast and stomach?” he asked, tracing curves in the air. “Meaning beautiful woman sleeping. She’s the protector of this range.”

    Following his gaze, the undulating countryside did indeed look like an expecting mother resting, and served as a reminder that Aboriginal people see the land as a “mother” and a guide for reciprocal wellness.

    Back in the car, we continued on to Wickelenup, a semi-dry salt lake that is a “power ground”, a place where the Koreng people have performed ceremonial reconnection rites for thousands of years. Wickelenup means “lake of many colours” and it’s named for the ochre pits resting beside it. These large deposits of clay earth produce pigments ranging from pale yellows to deep reds, which, when painted on the body during a ceremony, represent the important connection that indigenous Australians have with the land.

    Entering Wickelenup, Williams used clapsticks and what he called a “protection song” to summon his ancestors for the protection and blessing of our steps upon the Earth. After crossing a bed of clay that looked as if giant tins of red and yellow paint had been dropped from the sky, he led me to an oddly shaped chunk of volcanic rock that he used as a platform for grinding ochre. Williams stood with his eyes closed and sang the songline belonging to his family, the Kaarl Poorlanger, meaning “people of fire”, before mixing ochre on the stone and painting a russet-coloured pigment onto my skin in a technique known as “smudging”.

    “This is your mark, your connection to this land. You might wash it off later but I know it’s there… and so will you,” he said.

    Looking at the symbol on my arm, I asked why he had chosen what looked like ripples in water. “I didn’t,” he said. “You chose it in your mind.” Sensing my confusion, Williams elaborated. “I only have to listen to you for half an hour and I know you.”

    Whether healers truly possess any psychic ability, it seems a key skill Aboriginal people have honed over thousands of years is an advanced way of listening.

    Elder Miriam-Rose Ungunmerr-Baumann, an Aboriginal activist, educator and artist from Australia’s Northern Territory, believes “dadirri is the Aboriginal gift” the world is thirsting for.

    Meaning “inner deep listening and quiet still awareness” in her Ngangikurungkurr language, dadirri is a form of mindfulness and reciprocal empathy we can develop with the land, each other and ourselves, according to Ungunmerr-Baumann. “We call on it and it calls to us… It is something like what you call ‘contemplation’,” she writes on her website.

    For indigenous Australians, this spiritual listening practice provides a way to observe and act according to the natural seasons and cycles in a way the modern world seems to have forgotten. “We watch the bush foods and wait for them to ripen before we gather them. When a relation dies, we wait a long time with the sorrow. We own our grief and allow it to heal slowly,” she told me.

    While much ancient Aboriginal wisdom and culture has already been lost, elders such as Ungunmerr-Baumann are striving to keep what’s left alive, but it’s not an easy task. When the First Fleet of British settlers arrived in Australia in 1788, Australia’s indigenous population was thought to be around 750,000. Ten years later, it was estimated to have dropped by 90%, due to the introduction of new diseases and violent clashes with the European colonisers. Today, indigenous Australians make up just 3.3% of the population. The forced separation of families and removal of Aboriginal people from their traditional lands, lore and practices affected the passing of cultural knowledge and led to the intergenerational trauma that is still being experienced today.

    But one woman advocating for greater recognition of traditional Aboriginal healing principles, practices and medicine is Dr Francesca Panzironi, a human rights academic from Rome. The CEO of Australia’s first organisation of Aboriginal traditional healers, Panzironi formed Anangu Ngangkari Tjutaku Aboriginal Corporation (ANTAC), with Ngangkari (healers of Australia’s central desert areas) in 2012.

    “For indigenous people, it’s about reconnecting to culture and accessing healing techniques that are different from Western medicine,” Panzironi said. “Western medicine looks at the body from a mechanistic perspective, whereas healers highlight everyone has a spirit that intimately links to the body and emotions.”

    Although traditional Aboriginal medicine is not recognised as an alternative medicine in Australia (due to difficulty regulating spiritual practices and the lack of testing of bush medicines), Ngangkaris are recognised in South Australian legislation through the Mental Health Act of 2009, and ANTAC now has healers working alongside Western doctors and mental health experts in some public hospitals. They provide “complementary” treatments to medical care for indigenous Australians – something especially beneficial for people recovering from intergenerational trauma, stemming from colonisation.

    Panzironi says there has been increased interest from non-indigenous people, too, who are dissatisfied with the mainstream model and are looking for alternatives. “We had a middle-aged woman who reduced her intake of antidepressants significantly over a six-month period of regular pampuni (a massage technique used for spirit realignment by the Ngangkari, particularly in the stomach, which is thought to be connected to the mind), in consultation with her GP. Both the woman and her doctor noticed improvement in her mental health,” she said.

    Currently ANTAC has a mobile clinic allowing Ngangkaris to travel to patients in areas of Australia where access to their services are non-existent, but Panzironi would like to see hospital programmes similar to the one in South Australia rolled out nationwide. “The goal is to have Aboriginal traditional medicine recognised as an alternative medicine and to make healers commonplace, as a viable choice for everyone through Medicare [Australia’s universal health care system],” she told me.

    Back at Kwoorabup, Williams was preparing for the final stage of my spirit realignment ceremony. After using smoke to cleanse and protect our surroundings from bad spirits, as is the traditional ceremonial practice among Aboriginal people, he placed a small stone upon my navel – a tool, he said, to absorb my vibration or spirit.

    “We’re all made up of vibration,” Williams said. “It’s connected at birth through the umbilical cord. It’s the essence of who we are.” Through his water vibrational healing ceremony, something that is unique to mubarrn of the area, he explained that I’d be able hear my spirit amplified when he placed the stone in the river. “High vibration means anxiety,” Williams said. “Low vibration is depression. I’ll take your vibration and balance it by releasing it through a portal I’ll open in your back.”

    I had known the water would be cold, but that still hadn’t prepared me for the shock I felt when it came time to immerse myself in the river. Floating on my back, with Williams holding me, I tried to relax and listen to my “vibration” with the stone now held against my spine, but my shuddering body wouldn’t cooperate.

    Pain from the freezing water intensified and I was also experiencing discomfort because I was unused to feeling supported. An irrational fear came over me – if I didn’t break free, to move by myself in a way I was used to, I might sink. But then I felt a strange force pushing up from under me and realised it wasn’t just Williams supporting me, but the river itself.

    Doing as Williams asked – to relinquish control and acknowledge pain and trust – I tipped my head back and focused on the warmth of the sun’s rays. I remembered something I’d read earlier by Ungunmerr-Baumann. “We cannot hurry the river. We have to move with its current and understand its ways,” she’d written. Moments later, much to my disbelief, my ears filled with a sound like the motor of a distant power boat, growing louder and resonating within – sounding a lot like anxiety, according to Williams’ earlier description. Letting go, I breathed out and went under.

    From my own experience, recovering from depression is a little like resurfacing from a cold river; thoughts like colours and sounds seem brighter, louder, clearer. And even if there’s no magic fix for mental illness, it seems indigenous Australians have much to teach us about developing greater awareness and reciprocity with our planet for our physical and emotional survival – if we only take the time to listen.

    “You need to ask, who you are, why you’re here, where you’re going,” Ungunmerr-Baumann told me. “We know who we are as Aboriginal people. It’s in our language, dreaming, country. We’re waiting for all people to listen and hear what we hear so that we can connect and belong together.”

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.