সুপারিশকৃত লিন্ক: জুন ২০১৬

মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিন্ক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে।
ধন্যবাদ।

আজকের লিন্ক

এখানে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই সুপারিশ করুন এখানে। ধন্যবাদ।

২৫ comments

  1. মাসুদ করিম - ৪ জুন ২০১৬ (১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ)

    Muhammad Ali, Titan of Boxing and the 20th Century, Dies at 74

    Muhammad Ali, the three-time world heavyweight boxing champion who helped define his turbulent times as the most charismatic and controversial sports figure of the 20th century, died on Friday. He was 74.

    His death was confirmed by Bob Gunnell, a family spokesman.

    Ali was the most thrilling if not the best heavyweight ever, carrying into the ring a physically lyrical, unorthodox boxing style that fused speed, agility and power more seamlessly than that of any fighter before him.

    But he was more than the sum of his athletic gifts. An agile mind, a buoyant personality, a brash self-confidence and an evolving set of personal convictions fostered a magnetism that the ring alone could not contain. He entertained as much with his mouth as with his fists, narrating his life with a patter of inventive doggerel. (“Me! Wheeeeee!”)

    Ali was as polarizing a superstar as the sports world has ever produced — both admired and vilified in the 1960s and ’70s for his religious, political and social stances. His refusal to be drafted during the Vietnam War, his rejection of racial integration at the height of the civil rights movement, his conversion from Christianity to Islam and the changing of his “slave” name, Cassius Clay, to one bestowed by the separatist black sect he joined, the Lost-Found Nation of Islam, were perceived as serious threats by the conservative establishment and noble acts of defiance by the liberal opposition.

    Loved or hated, he remained for 50 years one of the most recognizable people on the planet.

    In later life Ali became something of a secular saint, a legend in soft focus. He was respected for having sacrificed more than three years of his boxing prime and untold millions of dollars for his antiwar principles after being banished from the ring; he was extolled for his un-self-conscious gallantry in the face of incurable illness, and he was beloved for his accommodating sweetness in public.

    In 1996, he was trembling and nearly mute as he lit the Olympic caldron in Atlanta.

    That passive image was far removed from the exuberant, talkative, vainglorious 22-year-old who bounded out of Louisville, Ky., and onto the world stage in 1964 with an upset victory over Sonny Liston to become the world champion. The press called him the Louisville Lip. He called himself the Greatest.

    Ali also proved to be a shape-shifter — a public figure who kept reinventing his persona.

    As a bubbly teenage gold medalist at the 1960 Olympics in Rome, he parroted America’s Cold War line, lecturing a Soviet reporter about the superiority of the United States. But he became a critic of his country and a government target in 1966 with his declaration “I ain’t got nothing against them Vietcong.”

    “He lived a lot of lives for a lot of people,” said the comedian and civil rights activist Dick Gregory. “He was able to tell white folks for us to go to hell.”

    But Ali had his hypocrisies, or at least inconsistencies. How could he consider himself a “race man” yet mock the skin color, hair and features of other African-Americans, most notably Joe Frazier, his rival and opponent in three classic matches? Ali called him “the gorilla,” and long afterward Frazier continued to express hurt and bitterness.

    If there was a supertitle to Ali’s operatic life, it was this: “I don’t have to be who you want me to be; I’m free to be who I want.” He made that statement the morning after he won his first heavyweight title. It informed every aspect of his life, including the way he boxed.

    The traditionalist fight crowd was appalled by his style; he kept his hands too low, the critics said, and instead of allowing punches to “slip” past his head by bobbing and weaving, he leaned back from them.

    Eventually his approach prevailed. Over 21 years, he won 56 fights and lost five. His Ali Shuffle may have been pure showboating, but the “rope-a-dope” — in which he rested on the ring’s ropes and let an opponent punch himself out — was the stratagem that won the Rumble in the Jungle against George Foreman in 1974, the fight in Zaire (now the Democratic Republic of Congo) in which he regained his title.

    His personal life was paradoxical. Ali belonged to a sect that emphasized strong families, a subject on which he lectured, yet he had dalliances as casual as autograph sessions. A brief first marriage to Sonji Roi ended in divorce after she refused to dress and behave as a proper Nation wife. (She died in 2005.) While married to Belinda Boyd, his second wife, Ali traveled openly with Veronica Porche, whom he later married. That marriage, too, ended in divorce.

    Ali was politically and socially idiosyncratic as well. After the attacks of Sept. 11, 2001, the television interviewer David Frost asked him if he considered Al Qaeda and the Taliban evil. He replied that terrorism was wrong but that he had to “dodge questions like that” because “I have people who love me.” He said he had “businesses around the country” and an image to consider.

    As a spokesman for the Muhammad Ali Center, a museum dedicated to “respect, hope and understanding,” which opened in his hometown, Louisville, in 2005, he was known to interrupt a fund-raising meeting with an ethnic joke. In one he said: “If a black man, a Mexican and a Puerto Rican are sitting in the back of a car, who’s driving? Give up? The po-lice.”

    But Ali had generated so much good will by then that there was little he could say or do that would change the public’s perception of him.

    “We forgive Muhammad Ali his excesses,” an Ali biographer, Dave Kindred, wrote, “because we see in him the child in us, and if he is foolish or cruel, if he is arrogant, if he is outrageously in love with his reflection, we forgive him because we no more can condemn him than condemn a rainbow for dissolving into the dark. Rainbows are born of thunderstorms, and Muhammad Ali is both.”

    চলে গেলেন সর্বকালের সেরা মুহাম্মাদ আলি

    মারা গেছেন কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মুহাম্মাদ আলি। ‘সর্বকালের সেরা’ বলে বিবেচিত এই বক্সার ফিনিক্সের একটি হাসপাতালে শুক্রবার ৭৪ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

    পরিবারিক মুখপাত্র জানান, শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আলি।

    ১৯৮১ সালে বক্সিং থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর পর থেকেই পারকিনসন্স রোগে ভুগছিলেন তিন বারের বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন আলি। কয়েক বছর ধরে তার অবস্থার আরও অবনতি হয়।

    ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আলি। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে মূত্রঘটিত সংক্রমণের জন্য হাসপাতালে আনা হয় তাকে।

    গত এপ্রিলে মুহাম্মাদ আলি পারকিনসন্স সেন্টারের সহায়তার জন্য অ্যারিজোনায় আয়োজন করা ‘সেলেব্রিটি ফাইট নাইট-এ সবশেষ জনসমক্ষে এসেছিলেন আলি।

    পরিবারের সদস্যরা জানান, আলির জন্মস্থান কেনটাকির লুইসভিলে শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হবে।

    ক্যাসিয়াম মার্সেলাস ক্লে নামে জন্ম নেওয়া আলি বিখ্যাত হয়ে উঠেন ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকে লাইট-হেভিওয়েটে সোনা জিতে।

    ‘দ্য গ্রেটেস্ট’ ডাকনাম পাওয়া আলি ১৯৬৪ সালে সনি লিস্টনকে হারিয়ে প্রথম বিশ্ব খেতাব জেতেন। পরে তিনি প্রথম বক্সার হিসেবে তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট শিরোপা জেতেন।

    ১৯৮১ সালে পেশাদার বক্সিং থেকে অবসর নেওয়ার আগে ৬১টি লড়াইয়ের মধ্যে ৫৬টিতে জেতেন আলি।

    ‘শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াবিদ’ হিসেবে পরিচিত আলি শুধু বক্সিংয়ের রিংয়েই দুর্দান্ত ছিলেন না, ম্যাচের আগে-পরে কথাবার্তাতেও ছিলেন পটু।

    তিনি ছিলেন একজন মানবাধিকার কর্মী যিনি খেলা ও জাতীয়তার সীমা ছাড়িয়ে পুরো বিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

    • মাসুদ করিম - ৫ জুন ২০১৬ (৮:১৩ পূর্বাহ্ণ)

      ঢাকায় আলির স্মৃতিতে কাতর দুই বক্সার

      ১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ সাল। সেদিনের সেই কিশোর মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, টগবগে তরুণ আব্দুল হালিম এখন বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন অনেকটা। কিন্তু মুহাম্মাদ আলির সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো দুজনের স্মৃতিপটে এখনও তরতাজা। শুক্রবার না ফেরার দেশে চলে যাওয়া এই কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধার বাংলাদেশ সফরের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে গিয়াস, হালিম ফিরে গেলেন কৈশরে, তারুণ্যে ভরা দিনগুলোতে।

      একটি বিদেশি সংস্থার প্রচেষ্টায় ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা পা রেখে ২৩ ফেব্রুয়ারি উড়াল দিলেন আলি। এই পাঁচ দিনে ঘুরলেন সিলেটের চা বাগান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার; জাহাজে চেপে নৌবিহারে গেলেন, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে (সে সময় ছিল ঢাকা স্টেডিয়াম) প্রদর্শনী মুষ্টিযুদ্ধেও নামলেন আলি। রিংয়ে নেমে মজা করলেন, নিজে হাসলেন, মানুষকে হাসালেন, বিশ্ব মানচিত্রে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টায় থাকা বাংলাদেশের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় সিক্ত হলেন আলি।

      রিংয়ে সেদিন আলির সঙ্গে মুষ্টিযুদ্ধে নামার কথা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরদিনের জন্য প্রথম হয়ে যাওয়া বক্সার হালিমের। ১৯৭৭ সালে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় এশিয়ান বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ হওয়ার পর এটাই প্রথম পদক জয়ের গল্প। কিন্তু আলির কথা, তরুণ নয়, ক্ষুদে প্রতিপক্ষ চাই তার।

      শনিবার পল্টনে মুহাম্মাদ আলির নামে রাখা বক্সিং স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে ১৯৭৮ সালে ফিরে গেলেন হালিম।

      “তখন আমি টগবগে তরুণ। আলিকে দেখার পর নিজের চোখকেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল, সত্যিই কি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বক্সারের সঙ্গে কথা বলছি? তার সঙ্গে খেলব? তার সঙ্গে আমার বক্সিং করার কথা ছিল। কিন্তু উনি বললেন-আমি তো বড় কারোর সঙ্গে করব না। ছোট কাউকে দেন। শুধু মজা করব। তখন গিয়াসকে আনা হলো।”
      আলির সঙ্গে মুষ্টিযুদ্ধে নামা হলো না ওই সময়ের ২৩ বছর বয়সী হালিমের কিন্তু ছবি তোলার তৃপ্তি মিলেছিল। আরও মিলেছিল অনাবিল আনন্দে ভেসে যাওয়া টুকরো টুকরো মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকাটা।

      “গিয়াসের এক ঘুষিতে আলি পড়ে গেলেন। সেটি ছিল তার অভিনয়। একটি শিশু ও সাধারণ মানুষের মনে আনন্দ দেয়ার জন্য কী করতে হয়, তা তিনি ভালভাবে জানতেন। রিংয়ে ওভাবে কুপোকাত হয়ে তিনি মানুষের হৃদয়ে আরও বেশি জায়গা করে নেন। আমাকে সঙ্গে নিয়ে ছবি তুললেন। ছবি তোলার সময় ফটো সাংবাদিকদের সঙ্গেও মজা করতে ছাড়লেন না-সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে চাইলে মুখের কাছে ঘুষি নিয়ে সবাইকে বললেন-এবার ছবি তোলো।”

      আলির সঙ্গে রিংয়ে নামা কিশোর গিয়াসউদ্দিন সেদিন কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। তবে বাংলাদেশের জুনিয়র চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের তিন রাউন্ডের লড়াই বিনোদনের পসরা মেলেছিল বেশ। আলির না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার কথা ভাবতে বেদনায় ভারি হয়ে উঠল গিয়াসউদ্দিনের কণ্ঠ।

      “তার সঙ্গে রিংয়ে নামা জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। মানুষ জন্ম নেবে, মারা যাবে জানি। কিন্তু এটা কোনোভাবেই মানতে পারছি না আজ তিনি নেই। তার মতো বক্সার পৃথিবীতে আর আসবে না।”
      সেদিন হাজারো ভক্তের সামনে রিংয়ে আলি মজা করতে চাইলেও গিয়াসউদ্দিন ছিলেন ‘সিরিয়াস’। আলির পড়ে যাওয়ার কারণটা তিনি বুঝতে পেরেছেন পরে।

      “তখন আমি জুনিয়রে চ্যাম্পিয়ন ছিলাম। তার সঙ্গে তিন রাউন্ড খেলেছিলাম। সে দিনটি আজও মনে পড়ে। তখন আমার বয়স মাত্র ১২ বছর। তিনি বক্সিংয়ের বরেণ্য প্রতিভা। সারা বিশ্ব বক্সিং বলতে তাকে বোঝে। তো তার সঙ্গে খেলা আমার জীবনের বিরল ঘটনা। আমি উৎফুল্ল ছিলাম। আনন্দিত ছিলাম। এ অনুভূতি আসলে বলার মতো নয়।”

      “দ্বিতীয় রাউন্ডে উনি আমার বক্সিং খেয়ে রিংয়ে পড়ে যান। এটা তিনি কৌতুক করার জন্য করেছিলেন। এটা ছিল খুবই আনন্দের ব্যাপার। তিনি আসলে মানুষকে মজা দেওয়ার জন্যই এটা করেছিলেন।”

      আলি মহাব্যস্ত থাকায় ওই পাঁচ দিনে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি গিয়াসউদ্দিন, হালিমের। টিপসও নেওয়ার সুযোগ মেলেনি। কিন্তু গিয়াসউদ্দিনের কাছে ম্যাচের সেই ১২ মিনিট, হালিমের কাছে ছবি তোলার সেই মিনিট পাঁচেক সময়ই এক কথায়-জীবনের সেরা মুহূর্ত।

  2. মাসুদ করিম - ৫ জুন ২০১৬ (৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ)

    চারপাশে তাকানোর সময় এসেছে

    প্রতি বছরের মতো ৫ জুন এবারও বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে। বিভিন্ন বিষয়ে দিবস পালন করা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর ও এর আধিকারিকদের একটি বার্ষিক কর্মযজ্ঞের অংশ। আমরা ফেব্রুয়ারি মাসে জলাভূমি দিবস, মার্চ মাসে পানি দিবস_ এভাবে বিভিন্ন বিষয়ে দিবস পালন করে থাকি। প্রশ্ন হচ্ছে, এগুলো কি নিছকই আনুষ্ঠানিকতা?

    পরিবেশ দিবসের ইতিহাসের দিকে যদি তাকাই, ১৯৭২ সালে পরিবেশের ওপর প্রথম বৈশ্বিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে। নাম ছিল ‘ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন হিউম্যান এনভায়রনমেন্ট’। বস্তুত সত্তর দশকের শুরুতেই প্রথম বিশ্ব সম্প্রদায় প্রথম অনুধাবন করতে পারে যে উন্নয়নের সঙ্গে সংরক্ষণের যোগ না থাকলে সুন্দর পরিবেশ পাওয়া যাবে না। পরিবেশ ভালো থাকলেই কেবল মানুষ ভালো থাকবে। এখনও পরিবেশ বিষয়ক সব তৎপরতার কেন্দ্রে এই শাশ্বত সত্যই বিরাজমান। ওই সম্মেলনেই গঠিত হয় জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা, সংক্ষেপে ইউএনইপি। কেনিয়ায় অবস্থিত এই সংস্থাটি ইতিমধ্যে পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে দিকনির্দেশনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ১৯৭২ সালে ওই সম্মেলন শুরুর দিনটিই তার পরের বছর থেকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

    বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দিবস পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সার্বিক আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে একটি বিশেষ দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া ও দৃষ্টি আকর্ষণ। অর্থাৎ পরিবেশ দিবসে পরিবেশের সার্বিক উন্নতির কথা চিন্তা করার সঙ্গে সঙ্গে একটি বিশেষ দিকেও দৃষ্টিপাত করতে হবে। এ জন্য প্রতি বছর দিবসটির আকর্ষণীয় প্রতিপাদ্য এবং ছোট্ট ও শ্রুতিমধুর স্লোগান নির্ধারণ করা হয়। যেমন- এবার পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘বন্যপ্রাণী নিয়ে অবৈধ ব্যবসার বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা’। আর স্লোগান হচ্ছে- ‘গো ওয়াইল্ড ফর লাইফ’। বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে এর বাংলা ভাষান্তর করা হয়েছে- ‘বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ, বাঁচায় প্রকৃতি, বাঁচায় দেশ’। তার মানে, এবার বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে বন্যপ্রাণীর সঙ্গে পরিবেশের সম্পর্ক বোঝা এবং সংরক্ষণে উদ্যোগী হওয়ার বিষয়ে।

    পরিবেশ দিবসের বাংলা স্লোগানে যদিও ‘বন্যপ্রাণী’ বলা হয়েছে; এর সঠিক ভাবানুবাদ হতে পারত আসলে ‘বন্যপ্রাণ’। অর্থাৎ ‘ওয়াইল্ড লাইফ’ বলতে আমাদের উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়কেই বুঝতে হবে। আমাদের খাদ্যের বোধকরি লবণ ছাড়া আর সবকিছুই আসে উদ্ভিদ ও প্রাণিজগৎ থেকে। প্রথমেই বলি উদ্ভিদ জগতের কথা। যারা নিরামিষভোজী, তাদেরও দুধ, ঘি, মাখন বাদ দিলে বাকি সবই উদ্ভিদজাত। যে তেলে সবজি রান্না হয়, তাও কিন্তু উদ্ভিদজাত। উদ্ভিদ থেকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ আমরা পেয়ে থাকি, সাধারণ মানুষ যে বিষয়ে ততটা সচেতন থাকেন না, সেটি হচ্ছে চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ। পরিবেশ দিবসের লেখায় আমি মূলত এ বিষয়েই জোর দিতে চাই। বস্তুত একসময় ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসা ব্যবস্থাই ছিল আমাদের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে প্রধান উপায়। পরে এসেছে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থা। কিন্তু একটু ভালোভাবে খোঁজ নিলে দেখা যাবে, অ্যালোপ্যাথি ওষুধ ব্যবস্থারও ৯০ শতাংশ উদ্ভিদনির্ভর। যে উপাদানটি কোনো বিশেষ রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, উদ্ভিদ থেকে সেটি আলাদা করেই বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল তৈরি হয়ে থাকে। আর কবিরাজি বা হেকিমী চিকিৎসার ক্ষেত্রে ওই উদ্ভিদই সরাসরি ব্যবহার করা হয়।

    উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে পড়ানোর সময় আমি প্রায়শই প্রশ্ন করে থাকি যে ‘কোন গাছের ছাল নেই?’ সমস্বরে উত্তর আসে- অর্জুন গাছ। এই গাছের বাকল সত্যিই নানা উপকারে লাগে। এটা প্রমাণিত যে অর্জুনের ছাল পানিতে ডুবিয়ে রেখে সেই পানি পান করলে হৃৎপিণ্ড সুস্থ থাকে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগে আসলে উদ্ভিদের এসব গুণাগুণ নিয়েই গবেষণা চলে। কোন গাছপালা, লতাপাতা ও শিকড়ের কোন উপকরণ কী কাজে আসতে পারে, তা আবিষ্কার, বিশ্লেষণ ও ফর্মুলা নিয়ে গবেষণাই চলে সেখানে।

    আমরা দেখব, এখনও বহু মানুষ সকাল বেলা কিংবা খাবারের আগে নিমপাতা খেয়ে থাকেন। এখনও বাংলাদেশের অধিকাংশ বাড়িতে করলার পাতা যত্নের সঙ্গে খাওয়া হয়। সজনের ডাঁটার ঔষধি গুণাগুণ মেনেই এটি খাওয়ার ভালো প্রচলন রয়েছে আমাদের সমাজে। মনে আছে, নয়নতারা ফুল ডায়াবেটিকের জন্য উপকারী- এমন তথ্য জানার মতো আমার মাকে মাঝে মধ্যে তিন-চারটি নয়নতারা ফুল খেতে দেখেছি। ঘৃতকুমারী দিয়ে দামি প্রসাধন দ্রব্য তৈরি হয়, আমরা জানি। এটি বিভিন্ন রোগের ওষুধও বটে। এখনও এই দৃশ্য বিরল নয় যে কোনো কবিরাজ বনবাদাড়ে, ঝোপ-ঝাড়ে তার প্রয়োজনীয় ঔষধি গাছ-গাছড়া, শিকড়-বাকল, লতাপাতা খুঁজে বেড়াচ্ছেন নিবিষ্ট মনে। পরিবেশ সুরক্ষা মানে, এসব ঔষধি উদ্ভিদ যত্নের সঙ্গে রক্ষা করার ব্যবস্থা, মনে রাখতে হবে।

    আমি একসময় প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ে তৎপর একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় দীর্ঘদিন কাজ করেছি। তখন একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিলাম, যার কথা এই লেখায় প্রাসঙ্গিক হতে পারে। ওই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৈদ্যদের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে গবেষণা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। তখন দেখেছি, অনেক বৈদ্যের দুঃখ ছিল, যে সমস্ত গাছ-গাছড়া সংগ্রহ করে তারা বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা করতেন, সেগুলো ক্রমে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। মনে আছে, বান্দরবানের এক বৃদ্ধ বৈদ্য ধনুষ্টঙ্কার রোগের চিকিৎসায় খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি এমন একজনের এই রোগ নিরাময়ের দাবি করেছিলেন, যিনি আমারও পরিচিত। তাকে যখন বললাম, এখনও ধনুষ্টঙ্কার রোগের চিকিৎসা করতে পারবেন কি-না। তিনি একটি গাছের নাম বললেন। ওই গাছ খুঁজে পেলে চিকিৎসা সম্ভব; কিন্তু গাছটি প্রকৃতি থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে, খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। তখন আমি আরেকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিলাম, যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলের বৈদ্যরা প্রয়োজনীয় ঔষধি গাছ সংরক্ষণ ও পুনরুৎপাদন করতে পারবেন। মনে আছে, মানিকগঞ্জের শিবালয়ের কয়েকটি গ্রামে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত ঔষধি গুণসম্পন্ন গাছ লাগানোর জন্য গ্রামবাসীকে উদ্বুদ্ধ করার কর্মসূচিও হাতে নিয়েছিলাম। ওইসব গাছ থেকে ‘ফসল’ হিসেবে পাতা, কাণ্ড, বাকল বা শিকড় স্থানীয় কবিরাজদের কাছে সরবরাহের একটি ব্যবস্থাও আমরা গড়ে তুলেছিলাম। বান্দরবানের থানচি উপজেলার বলীপাড়ায় স্থানীয় বৌদ্ধ মন্দির বা কিয়াংয়ের জমিতে মন্দিরের শ্রমণের সহায়তায় গড়ে তোলা হয়েছিল ঔষধি বাগান। এমন একটি স্থান বাগানের জন্য নির্বাচনের উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে কেউ গাছগুলো নষ্ট করে না ফেলে। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চলে আসার পর শুনেছি যে বাগানটিতে হারিয়ে যাওয়া অনেক প্রজাতির ঔষধি গাছ লাগানো হয়েছিল।

    বাংলাদেশ সরকার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ তত্ত্বাবধানে আরণ্যক নামে একটি ফাউন্ডেশন রয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আমি এর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলাম দুই মেয়াদে। ফাউন্ডেশনকে সেবামূলক কাজে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলাম, তার একটি হচ্ছে ঔষধি গাছের পুনরুৎপাদন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ। এজন্য দেশজুড়ে বেশ কিছু নার্সারি উদ্যোক্তাকে চিহ্নিত করে, তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলাম এবং বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাওয়ার পথে থাকা ঔষধি গাছ নার্সারিতে উৎপন্ন করে সরবরাহে আগ্রহী করে তুলেছিলাম। এজন্য তাদের আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থাও ছিল। এই ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আমার যোগাযোগ নেই। কিন্তু আমার বিশ্বাস, ওইসব নার্সারি মালিক এখনও ভেষজ উদ্ভিদ উৎপাদন ও সরবরাহ অব্যাহত রেখেছেন।

    আরও আশার কথা হচ্ছে, ভেষজ ওষুধ নিয়ে সচেতনতা বাড়ার কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসকরাও এখন কবিরাজি ওষুধ বা উদ্ভিদ থেকে উৎপাদিত ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকেন। এমন একটি ওষুধ ‘এডোভাস’। কাশি হলে কিংবা গলা খুশখুশ করলে আমরা চিকিৎসকের পরামর্শমতো কয়েক চামচ এডোভাস সেবন করে থাকি। এর দারুণ কার্যকারিতায় আমি সত্যিই চমৎকৃত।

    এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্যে যেহেতু উদ্ভিদের পাশাপাশি জীবজন্তু বিষয়েও আলোকপাত করা হয়েছে, আমি জীবজগৎ নিয়ে দু-একটি কথা বলে লেখার ইতি টানব। প্রকৃতপক্ষে উদ্ভিদ ও জীবজগৎ মিলেই আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। একটি না থাকলে অন্যটি বিপন্ন হয়ে পড়ে। জীবজগতের বড় বড় প্রাণী কীভাবে মানবজাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে, এ বিষয়ে কমবেশি অনেকেই জানেন। কিন্তু পোকামাকড়ও যে উপকার করে থাকে, আমার মতে তার প্রধানটি হচ্ছে পরাগায়ন প্রক্রিয়া। মৌমাছি, প্রজাপতিসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ই মানবজাতির ফলানো বিপুল ফসলের পরাগায়নের প্রধান কর্মী। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, বড় বড় প্রাণীর বিপন্নতা নিয়ে পরিবেশ দিবসগুলোতে অনেক কথা হলেও, ক্ষুদ্র পোকামাকড়ের বিপন্নতার দিকে খুব কমই নজর দেওয়া হয়। আগে ধানক্ষেতের কাছে ছোট ঝোপঝাড় রাখতেন চাষিরা; যাতে করে ছোট পাখিরা সেখানে বাসা বাঁধতে পারে এবং পোকামাকড় খেয়ে ভারসাম্য রাখতে পারে। এখনকার ‘আধুনিক’ চাষিরা প্রাকৃতিক এই পদ্ধতির বদলে রাসায়নিক কীটনাশকের দিকে ঝুঁকছেন এবং পরিবেশ ও প্রাণিজগতের অপূরণীয় ক্ষতি করে চলছেন।

    আমরা উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি, ভৌত পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল নষ্ট করা ছাড়াও এদের নির্বিচারে নিধন যেভাবে চলছে, তাতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য কতদিন টিকে থাকবে, তা নিয়ে উদ্বেগ ক্রমে বাড়ছে। যে কারণে বিশ্বজুড়ে বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ পাচার বন্ধে তৎপরতা বাড়ছে, প্রণীত হয়েছে বৈশ্বিক আইন ‘সাইটেক’। বাংলাদেশও এই আইনে স্বাক্ষরদাতা দেশ। কিন্তু সেই আইনের বাধ্যবাধকতা আমরা মেনে চলছি কি-না, এই পরিবেশ দিবসে তা নতুন করে ভাবার সময় হয়েছে। ভাবার সময় হয়েছে আমরা আমাদের পরিবেশ ও প্রতিবেশ সম্পর্কে কতটা চিনি ও জানি। পরিবেশ দিবসে আমি সবাইকে চারপাশের উদ্ভিদ ও জীবজগৎ নিয়ে চিন্তাভাবনার আহ্বান জানাই। একটু সময় করে নজর দিতে বলি চারপাশে। কারণ আমরা চাই বা না চাই_ এসবের অস্তিত্বের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে মানবজাতির অস্তিত্ব।

  3. মাসুদ করিম - ৭ জুন ২০১৬ (১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ)

    ৭ জুন, একটি প্রেসনোট ও দুঃসাহসী প্রতিবাদ

    পূর্ব বাংলা কিংবা পূর্ব পাকিস্তান তথা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ ভূখণ্ডের স্বায়ত্তশাসনের কর্মসূচি শেখ মুজিবুর রহমান উত্থাপন করেছিলেন ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। তখন তিনি প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ। এ কর্মসূচির প্রেক্ষাপট ছিল দুটি_ পাকিস্তানের পূর্ব অংশ শোষিত ও বঞ্চিত এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নাজুক। মাত্র চার মাস আগে সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান ও ভারতের যুদ্ধ হয়। পাকিস্তানের শাসকরা বাগাড়ম্বর করে বলত, ভারত পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক অভিযান চালালে পশ্চিম পাকিস্তানের ‘মহাবীর সৈন্যরা’ এমন মার দেবে যে তারা পূর্ব পাকিস্তান থেকে দ্রুত পালাবে।

    পাকিস্তানের নীতির কারণে বাঙালিদের মনে বঞ্চনাবোধ প্রবল ছিল। এ বঞ্চনার স্বরূপ কী ছিল? ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৮ পর্যন্ত পাকিস্তানে মোট রাজস্ব আয় ছিল ৪ হাজার ৭৭০ কোটি রুপি। প্রতিরক্ষা ব্যয় ছিল দুই হাজার ৪৭১ কোটি রুপি। রাজস্ব আয়ের অর্ধেকের বেশি ব্যয় সামরিক খাতে। এ ব্যয়ের ৯০ শতাংশ ব্যয় হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। কেন্দ্রীয় সরকারে অফিসারদের মাত্র ২৭ শতাংশ পূর্ব পাকিস্তানি। ১৯৬৪-৬৫ অর্থবছরে পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে রফতানি হয়েছে ৬৫ কোটি রুপি, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানে হয়েছে ১২০ কোটি রুপি।

    স্বায়ত্তশাসনের দাবি ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ২১ দফায় সুনির্দিষ্ট ছিল। ১৯৬৩ সালে সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের প্রধান নেতা হিসেবে সর্বমহলে স্বীকৃত হন। তবে স্বায়ত্তশাসনের কর্মসূচি উত্থাপন করতে গিয়ে তিনি দূরদর্শিতার পরিচয় দেন। সে সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের জনপ্রিয় শিক্ষক নুরুল ইসলাম ও রেহমান সোবহানসহ আরও কয়েকজন তরুণ শিক্ষক পূর্ব পাকিস্তানের বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেন। অধ্যাপক রেহমান সোবহানের লেখা শেখ মুজিবুর রহমান পড়েছেন এবং তার বক্তব্যের সঙ্গে যে তিনি একমত সেটা প্রকাশও করেছেন। ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে লাহোরে বিরোধী দলগুলোর বৈঠকে তিনি স্বায়ত্তশাসনের ইস্যুটি নতুন করে সামনে আনতে মনস্থ করেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খানসহ কয়েকজনের সঙ্গে তিনি আলোচনাও করেন। কিন্তু কেউই ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ এমন কর্মসূচি উত্থাপনে রাজি হননি। পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে স্পষ্ট যে, আতাউর রহমানসহ অন্য নেতাদের ভীতি যথার্থ ছিল। ৬ দফা প্রদানের সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ও পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান এ কর্মসূচিকে পাকিস্তান ভাঙার চক্রান্ত হিসেবে অভিহিত করেন। তারা অস্ত্রের ভাষায় জবাব দেওয়া হবে বলে হুমকি দিতে থাকেন। শেখ মুজিবুর রহমান দ্রুতই বুঝতে পারেন_ ৬ দফা বাঙালিদের মনে গভীর দাগ কেটেছে। এটাও বুঝতে পারেন যে, তাকে বেশিদিন মুক্ত থাকতে দেওয়া হবে না। তাই জেলা সফরে বের হন এবং ছোট-বড় সমাবেশে ভাষণ দিতে থাকেন। একই সঙ্গে তিনি একটি পুস্তিকা লেখেন ‘আমাদের বাঁচার দাবি ৬ দফা’ শিরোনামে। খুব সহজ সাদামাটা ভাষায় লেখা পুস্তিকাটির শেষে ছিল ‘আপনাদের স্নেহধন্য খাদেম শেখ মুজিব’ লেখা। এ সময় দলের মধ্যেও বিরাধিতা হয়। প্রাদেশিক সভাপতি আবদুর রশীদ তর্কবাগীশসহ কয়েকজন নেতা ৬ দফা মেনে নিতে আপত্তি করেন। এ অবস্থায় ১৯৬৬ সালের ১৮ মার্চ ঢাকায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিল শুরু হয়। সেখানে এ কর্মসূচি অনুমোদন পায়। একই সঙ্গে নেতৃত্বেও পরিবর্তন আসে_ শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি, তাজউদ্দীন আহমদ সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি হিসেবে পল্টন ময়দানের জনসভায় দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে, ৬ দফা পূর্ব বাংলার সব মানুষের প্রাণের দাবি হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করবে। ৬ দফার আন্দোলনই এখন থেকে বাঙালির একমাত্র আন্দোলন।’ কী অমোঘ ভবিষদ্বাণী!

    সভাপতি নির্বাচিত হয়ে তিনি পল্টন ময়দানে প্রথম জনসভা করেন। তারপর ২৩ মার্চ থেকে ৮ মে পর্যন্ত বিভিন্ন জেলার জনসভায় বক্তব্য রাখেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করা হতে থাকে। তিনি আদালতে জামিন নিয়েই ছোটেন পরের সমাবেশে। প্রতিটি কর্মসূচিতে বিপুল জনসমাগম ঘটছিল। ৭ মে তিনি বলেন, হয়তো আগামীকালের নারায়ণগঞ্জের জনসভাই শেষ কর্মসূচি হবে। বাস্তবে সেটাই ঘটেছিল। ওই রাতে তাকে দেশ রক্ষা আইনে গ্রেফতার করা হয়। তিনি মুক্ত হন ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের পরিণতিতে। জনগণ তাকে বরণ করে নেয় বঙ্গবন্ধু হিসেবে। এর কয়েক দিন পর সেই লাহোরেই তিনি আইয়ুব খানের গোলটেবিল বৈঠকে ৬ দফা তুলে ধরেন। ইতিহাস বড়ই বিচিত্র।

    ফিরে আসি ৭ জুনের কথায়। শেখ মুজিব ও তাজউদ্দীন আহমদসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বন্দি। তাদের মুক্তির দাবিতে ৭ জুন পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল আহ্বান করে আওয়ামী লীগ। তাতে মেলে অভূতপূর্ব সাড়া। খ্যাতিমান সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ ওই হরতালের প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেছেন, হরতালে রাজপথ ছিল প্রতিবাদী মানুষে পূর্ণ। কিন্তু যানবাহন ছিল না একটিও। রিকশাও চলেনি। তিনি, সৈয়দ আসাফুদ্দৌলা রেজা, মোস্তফা আলী, প্রাণেশ মণ্ডল প্রমুখ হাটখোলা ইত্তেফাক ভবনের পাশে কৃষি তথ্য কেন্দ্রের অফিসে ৭ জুন দিনে হরতালের সাফল্য নিয়ে আলোচনা করেন। জানতে পারেন যে ১৫ জনের মতো পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ছিলেন জিয়াউল হক। তিনি সৈয়দ আবুল মকসুদসহ অন্যদের বলেন_ যেভাবে গুলি করা হয়েছে তাতে তিনিও মর্মাহত।

    হরতালের প্রেসনোটটি নিয়ে কিছু বলি। সরকারি প্রেসনোটে সত্য আড়ালের চেষ্টা প্রকট থাকে। ৭ জুন হরতাল নিয়ে প্রেসনোট ছাড়া কিছু প্রকাশ করা যাবে না_ এটা ছিল সরকারি নির্দেশ। অথচ এ প্রেসনোট পড়ে সহজেই বোঝা যায় কেমন ছিল রাজপথ। এটা আমার কাছে বরাবরই ছিল রহস্য এবং তা উন্মোচন করেন এক ব্যক্তি ২০০০ সালে। আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখি। একই কর্মসূচিতে এক ব্যক্তি বক্তব্য রাখেন, যিনি বলেন_ ১৯৬৬ সালের জুন মাসে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অফিসার ছিলেন। তাকে ৭ জুনের প্রেসনোটের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন_ হরতালের সফলতা এবং গুলি করে অনেক লোক হত্যার ঘটনা আমাদের আলোড়িত করে। সচিবালয়ে আমরা অনেকেই ছিলাম বাঙালির অধিকারের পক্ষে, যা ফুটে উঠেছিল শেখ মুজিবের ৬ দফায়। যখন সরকারি নির্দেশ জানানো হলো যে, পরের দিনের পত্রিকায় কেবল প্রেসনোট ছাপা হবে, তখন আমরা কয়েকজন পরামর্শ করি যে এটা এমনভাবে লিখব যাতে অগি্নগর্ভ চিত্র ফুটিয়ে তোলা যায়। কী ছিল সেই প্রেসনোটে, যা পরের দিন ইত্তেফাকে ছাপা হয়েছিল ‘ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে ১০ জন নিহত’ শিরোনামে।

    প্রেসনোট :আওয়ামী লীগ কর্তৃক আহূত হরতাল অতি প্রত্যুষ হতে পথচারী ও যানবাহনে ব্যাপক বাধা সৃষ্টির মাধ্যমে সংঘটিত করা হয়। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় ছোকরা ও গুণ্ডাদের লেলিয়ে দেওয়া হয়।… নিরীহ জনসাধারণ ও অফিস যাত্রীদের অপমান ও হয়রানি করা হয়। হাইকোর্টের সামনের তিনটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।… তেজগাঁও রেলস্টেশনে আউটার সিগন্যালে আটক করে লাইনচ্যুত করা হয়। ট্রেনটি প্রহরাদানের একদল পুলিশ দ্রুত তথায় গমন করে। জনতা তাদের ঘিরে ফেলে এবং তুমুলভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ফলে বহু পুলিশ কর্মচারী আহত হয়। যখন পুলিশ জনতার কবলে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয় তখন আত্মরক্ষার জন্য তারা গুলিবর্ষণ করে। ফলে চার ব্যক্তির মৃত্যু হয়। পূর্বাহ্নে ১০টায় প্রায় ৩০০ উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক তেজগাঁওস্থ ল্যান্ডরেকর্ড ও সার্ভে ডিরেক্টরের অফিস আক্রান্ত হয়। জনতা তুমুলভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।… নারায়ণগঞ্জে এক উচ্ছৃঙ্খল জনতা সকাল ৬-৩০ মিনিটে রেলওয়ে ক্রসিংয়ের কাছে ঢাকাগামী ট্রেন আটক করে। জনতা নারায়ণগঞ্জগামী ট্রেন আটকিয়ে বিপুল ক্ষতিসাধন করে। … উচ্ছৃঙ্খল জনতা থানা ভবনে প্রবেশ করলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলিবর্ষণ করলে ছয় ব্যক্তি নিহত ও ১৩ ব্যক্তি আহত হয়। ৪৫ জন পুলিশ আহত হয়। পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি নবাব এম.এ. জাহেরের মোটরগাড়ি ভস্মীভূত ও তার বাড়ি লুণ্ঠিত হয়। …টঙ্গীতে বিভিন্ন মিলে শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করে এবং একটি মিছিল বের করে।… ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একশ্রেণীর ছাত্র পিকেটিং করে।… আদমজী, সিদ্ধিরগঞ্জ ও ডেমরা এলাকার শ্রমিকরা ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে শোভাযাত্রা সহকারে ঢাকা অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। অপরাহ্নে জনতা গেণ্ডারিয়ার কাছে একটি ট্রেন আটক করে। সন্ধ্যার পর উচ্ছৃঙ্খল জনতা কালেক্টরেট ও পরে স্টেট ব্যাংক আক্রমণ করে। রক্ষীরা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য গুলিবর্ষণ করে।

    ৮ জুন কেবল প্রেসনোট প্রকাশ করে কয়েকটি পত্রিকা। কিন্তু দৈনিক সংবাদ এ নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ৮ জুন পত্রিকা প্রকাশ বন্ধ রাখে। ৯ জুন আহমদুল কবির প্রকাশিত ও জহুর হোসেন চৌধুরী সম্পাদিত সংবাদ এর কৈফিয়ত হিসেবে প্রথম পৃষ্ঠায় একটি বক্স আইটেম ‘আমাদের নীরব প্রতিবাদ’ শিরোনামে প্রকাশ করে। এতে বলা হয়_ যে মর্মান্তিক বেদনাকে ভাষা দেওয়া যায় না সেখানে নীরবতাই একমাত্র ভাষা। তাই গতকল্য ‘সংবাদ’ প্রকাশিত হইতে পারে নাই। আমাদের এই নীরব প্রতিবাদ একক হইলেও ইহাতে আমাদের পাঠকরাও শরীক হইবেন ইহা আমরা ধরিয়া লইতেছি।_ কর্মাধ্যক্ষ, সংবাদ।

    শুধু সংবাদ পাঠকরা নয়- গোটা বাঙালিই যে এর সঙ্গে একাত্ম হয়, তার প্রমাণ তো ১৯৭১ সাল। এ ধরনের দুঃসাহসী সিদ্ধান্তের জন্য সে সময়ে দৈনিক সংবাদ-এ যুক্ত সবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। বাঙালির মুক্তির পথে কত জন কতভাবেই না অবদান রেখেছেন।

  4. মাসুদ করিম - ৮ জুন ২০১৬ (৫:৪৬ অপরাহ্ণ)

    The Rhinossification Of Israel

    I recently mentioned the German word Gleichschaltung — one of the most typical words in the Nazi vocabulary.

    “Gleich” means “the same”, and “Schaltung” means “wiring”. The long German word means that everything in the state is wired up the same way — the Nazi way.

    This was an essential part of the Nazi transformation of Germany. But it did not happen in any dramatic way. The replacement of people was slow, almost imperceptible. In the end, all important positions in the country were manned by Nazi functionaries.

    We are now witnessing something like this in Israel. We are already well into the middle of the process.

    Position after position is taken over by the far-far right, which is ruling Israel now. Slowly. Very, very slowly.

    IT STARTED right after last year’s election. Binyamin Netanyahu was able to form a coalition of the far right, though only with a slim majority. As has so often happened in the annals of fascism, he needed one “center” party for that. He found it in the form of Moshe Kahlon’s faction. Kahlon, an ex-Likud man, was popular because he promised cheaper housing. Instead, housing prices have continued to rise.

    (Kahlon is the Smiling Man. He is very likeable. One columnist compared him to the Cheshire cat, the cat that disappeared and left only a smile behind. “Not a cat with a smile,” as Alice said, “but a smile with a cat”. But he is the cat that keeps the far right in power, even now.)

    The new government included an assortment of incredible appointments. The most outrageous new minister is Miri Regev, a primitive woman known for her proud vulgarity, who is now Minister of Culture. Well, I suppose even vulgarity has a right to be represented.

    Ms Regev is now in charge of the allocation of government funds to theaters, literature, ballet, opera and such. She has already made it clear that they had better toe the government line, if they want to be funded.

    Her nearest competitor is the new Minister of Justice, Ayelet Shaked (literally: the Almond Gazelle.) Her proclaimed aim is the subjection of the Supreme Court, the pride of Israel. Though quite timid by now, the court sometimes objects to oppressive new laws. So Ms Almond wants to stuff it with new “conservative” judges.

    The most dangerous of the bunch is the Minister of Education — Naftali Bennett, one of the most extreme nationalist-religious politicians. Israel has three religious education systems. The sole “secular” system has already been steadily reduced throughout the years by earlier ministers. Putting Bennett, defined by many as a religious fascist, in charge of education means putting the fox in charge of the poultry house.

    All these ministers, as well as the others of the same ilk, are now busy replacing the senior officials with persons of their convictions, a steady and extremely dangerous process.

    THEN THERE are the keepers of the gate.

    One of the most important persons in Israel bears the title “Legal Counselor to the Government”. He is the highest legal official, superior to the Attorney General and independent of the Minister of Justice. His advice is legally binding, subject only to the Supreme Court.

    Netanyahu has several personal legal problems. He and his family have traveled around the world on other people’s money while in office. This and other affairs have been held up in the legal pipeline for many years, by the decision of the “Advisor”.

    The last legal advisor, an inoffensive former judge appointed to this office by Netanyahu, has just been replaced by Netanyahu with — surprise, surprise — the government secretary, Avichai Mandelblit, a kippa-wearing lawyer who is as close to Netanyahu as can be.

    To make quite sure, the State Comptroller, another very powerful official in Israel, was chosen by the Knesset majority according to the wishes of Netanyahu. Yosef Shapiro is also a former judge.

    Why these two positions are crucial to Netanyahu is being illustrated now. The entire country is fascinated by several court cases in which employees at the Prime Minister’s official residence testified that Sarah Netanyahu is an unbearable, shouting, hysterical shrew, who also pays her private expenses from the official purse.

    To complete this circle, there is the new commander of the police. For years the police high command has been sinking into a morass of sexual scandals, in addition to bribery. One officer has committed suicide, several others have been kicked out.

    What better solution than to bring in an outsider, a high Shin Bet (secret service) officer? Brilliant idea, but now it transpires that the police has sunken even further into the morass. In several cases policemen have brutally and publicly beaten civilians, both Arabs and Jews, for no obvious reason, and received the full backing of Roni Alsheikh, their new supreme commander.

    THE ISRAELI media are decried by the right-wing as “leftist”, a bulwark of the “old elite”, which the rightists have sworn to replace.

    Alas, this description is quite wrong. Of the two major newspapers, one, Israel Hayom (“Israel Today”) belongs to Netanyahu. Or, to put it precisely, to Sheldon Adelson, an American casino mogul, who is the abject voluntary slave and generous patron of “Bibi”. The paper, whose sole object is to serve Netanyahu personally, is distributed in huge quantities gratis.

    The other mass-circulation paper, Yediot Aharonot (“Latest News”), is trying to compete by being even more right-wing.

    The only other important daily paper, Haaretz (“The Country”), which is critical of Netanyahu, is far smaller, and in constant economic danger.

    Israel’s three TV channels are an intellectual desert. Except for the news and a tiny number of quality programs, they are empty of content, devoted mainly to “reality” programs, which have nothing to do with reality.

    Who is in charge? Why, of course the Minister of the Media. And who is that? Again surprise, surprise. No other than a person by the name of Binyamin Netanyahu.

    Under Israeli law, as Prime Minister he can keep to himself as many portfolios as his heart desires. This currently means several of them, including the Foreign Office and the Media.

    For months now, all media people have been finding it difficult to sleep at night. All three TV channels need government support. Some courageous TV personalities still dare to criticize the government openly, and even sharply, but their number is steadily dwindling.

    When I was on TV this week and told my interviewer that in a year’s time he and his colleagues will probably be out of their jobs, he laughed nervously and asked: “What, a whole year?”

    Many TV journalists have already become rhinos (the Israeli nickname for people who have succumbed to the government, because they need thick skins). The process of rhinossification is steadily going on.

    AND NOW comes the coup de grace, in the form of Avigdor Ivett Lieberman.

    Lieberman is a frightening person. In his presence, even a Donald Trump would shrink.

    An immigrant from Soviet Moldova, a former bar bouncer and later close aide to Netanyahu, he is now the most extreme rightist politician on stage. He has proposed the bombing of the Aswan dam in Egypt (which would kill many millions of people). That was one of his more moderate ideas. He has criticized the army as too timid, and called Netanyahu (not so long ago) a cheat, a coward and a charlatan.

    Lieberman (“Nice Man” in German) is very shrewd. It can be assumed that for some months, at least, he will be exceedingly forthcoming, peace-loving and liberal. Already, this week, both he and Netanyahu have declared themselves fervent adherents of the “Two States for Two Peoples” solution. That’s like Benito Mussolini declaring himself in 1939 a devoted pacifist.

    The looming confrontation between the Minister of Defense and the General staff of the army looks like becoming a momentous event. The clash between an irresistible force and an immovable object.

    The “Israel Defense Forces”, which includes the navy and air force, is an almost autonomous institution. Its official Supreme Commander is the government in toto, acting through the Minister of Defense.

    It is an obedient army. Only rarely has it openly defied the government. One such case was in 1967, when the Prime Minister, Levy Eshkol, hesitated in face of the growing Egyptian military threat in the Sinai peninsula. A group of generals threatened him with collective resignation if he did not give the order to attack. He capitulated.

    In face of a unified opposition of the army command, the minister is almost powerless. But he is in charge of a huge budget, by far the largest in Israel. He has a dominant influence over the appointment of the army’s commander (“Chief of Staff”) and superior officers.

    Even worse, the army’s lower officers corps and rank-and-file has been educated by the nationalist school system. Most of them may by now be closer to Lieberman than to the Chief of Staff.

    This was put to the test by the recent case of Elor Azariya, the soldier who shot and killed a severely wounded Palestinian lying on the ground. Many soldiers declared Azariya a national hero.

    Azariya is now standing trial in a military court for manslaughter. The army high command has been obdurate in face of rightist opposition. And lo and behold, who pushed his considerable bulk into the overcrowded courtroom? Avigdor Lieberman. He came to express his support for the soldier.

    Even Netanyahu bowed to pressure and called the soldier’s father to express his support.

    (When we saw the killer in court on TV, we were surprised to see a mere boy, who looked bewildered and disoriented, with his mother sitting behind him and stroking his head. Woe to the state which puts a deadly weapon into the hands of such a primitive, immature boy!)

    So here we are now: the government undermines the army and the peace camp puts its trust in the high command. Some may well be praying fervently to a God they don’t believe in for a military coup they would not really approve of.

  5. মাসুদ করিম - ১০ জুন ২০১৬ (১২:৩৩ অপরাহ্ণ)

    Bangladesh Says It Now Knows Who’s Killing the Bloggers

    The young man, inching past a crowded checkpoint near a truck stand in Bangladesh’s capital, caught the attention of an alert police officer.

    His backpack, together with his appearance, from the unshaven beard to the long Punjabi tunic over baggy pants, set off the suspicion that he was an Islamist militant. The man was arrested after he was found to be carrying a machete, an unregistered pistol and six bullets.

    The discovery of the weapons raised alarms. For the last three years, atheist writers, freethinkers, foreigners, religious minorities, gay rights activists and others have been terrorized and killed in Bangladesh by shadowy figures who have struck with machetes and sped off on motorbikes.

    Little was known about the attackers, except that they were Islamist radicals, and that their assaults have been coming with ever-greater frequency this year.

    The detained man refused to discuss much, saying only that he was Saiful Islam, 23 years old and a teacher at a local madrasa, or Islamic school.

    But the picture filled in six days later, when two 19-year-old men, arrested after running from the site of another fatal attack, identified the madrasa teacher as a fellow conspirator. That touched off a cascade of revelations that, for the first time, has allowed the Bangladeshi authorities to penetrate the murky world of the attackers and answer questions about the planning, execution and purpose of the attacks that have baffled the country — and, indeed, the world — since the violence began.

    At least 39 people have been killed in attacks with machetes, guns and bombs since February 2013. The killings, mostly with machete blows to the back of the victim’s neck, have been accelerating lately, with five people murdered in April, four in May and at least three so far in June.

    On Sunday, a Christian grocer and the wife of a police superintendent who had been cracking down on militant attacks were killed in separate strikes. On Tuesday, a Hindu priest was killed in southwestern Bangladesh.

    In a lengthy interview, the chief of the police counterterrorism unit, Monirul Islam, who assumed his post in February, laid out the findings of his investigation in minute detail.

    The killings were organized by two militant Islamic groups that have gathered volunteers and recruits, trained them and eventually seeded them into cells run by a commander, Mr. Islam said. They have tried to pick their targets with care, with the aim of gaining support from the public, he said, and trained teams of killers. Their goal was to convert Bangladesh’s mixed secular and religious culture to an Islamist one, the chief investigator said.

    The Bangladeshi authorities say that they now believe they have identified the top leadership of the two groups they say are responsible, and that they are preparing to round them up. Only when the leaders are caught, they caution, will the attacks be stopped, and at that, only for a while if the appeal of Islamic fundamentalism is not blunted.

    Secular Versus Islamists

    Bangladesh, a nation with a Muslim majority adjoining eastern India, gained independence from Pakistan in a vicious war in 1971 and established a secular, democratic government. A military coup in 1975 led to more than three decades of mostly military-backed governments sympathetic to Islamic fundamentalists, until a secular government returned to power in 2009 with an overwhelming majority. But secularism is far from universally accepted in Bangladesh, and has always had to contend with a conservative Islamic culture.

    To a surprising extent, the militants have succeeded in their aim of discrediting secularism, the chief investigator said.

    “In general, people think they have done the right thing, that it’s not unjustifiable to kill” the bloggers, gay people and other secularists, he added.

    They have also put the secular government on the defensive. As a result, even as the government has condemned the killings, it has urged writers not to criticize Islam and warned that advocating “unnatural sex” is a criminal offense.

    Some experts say that only a more widespread crackdown will stop the killings, but that the government has held back, fearful of creating a backlash.

    “The politics has been turned into the secular versus the Islamists,” said Abdur Rashid, a retired army major general and executive director of the Institute of Conflict, Law and Development Studies in Dhaka. “Therefore the government is cautious.”

    While the killers’ strikes often appear random, Mr. Islam says the terrorism campaign was conceived by the militant groups quite deliberately as a response to mass protests in early 2013, known collectively as the Shahbag movement. Inspired by a group of bloggers who led the protests, the demonstrators advocated an end to religion-based politics and the prosecution of war crimes dating to the 1971 war for independence.

    War crimes prosecutions have been a particular source of anger for Islamists. They were shelved during the period of military-backed rule but revived under the new democratic government in 2009. Four of the five convicted and executed in the latest round of trials were leaders in the country’s largest Islamist political party, Jamaat-e-Islami, outraging Muslim fundamentalists and others.

    Two groups in particular took up the fight against secularism, Mr. Islam said. One, Ansar al-Islam, is led by a fiery cleric and a charismatic, well-trained operational commander, both of whom Mr. Islam declined to identify because they are being watched. Its leaders command about 25 trained killers, some of whom have been involved in three or four attacks, Mr. Islam said.

    The second, the Jama’atul Mujahedeen Bangladesh, is the reorganized offshoot of a group banned in 2005 for setting off nearly 500 bombs simultaneously around the country.

    While both are radical Islamist groups, Mr. Islam said, neither seems to have direct links to larger terrorist networks like Al Qaeda and the Islamic State, though those groups have occasionally claimed credit for the attacks.

    ‘It Is Your Duty to Kill’

    The Islamist groups appear to have reacted quickly to the Shahbag movement, mounting their first fatal attack on Feb. 15, 2013, against a blogger who wrote critically of Islam under the pseudonym Thaba Baba. It was carried out by a group of students from North South University in Dhaka, who were incited by the sermons of the spiritual leader of Ansar al-Islam at the time, a 45-year-old cleric named Jasim Uddin Rahmani.

    The students used to attend his Friday speeches at a local mosque where Mr. Rahmani, who has since been arrested, declared a fatwa on bloggers critical of Islam, calling for them to be killed, Mr. Islam said.

    As it happened, one of the students, a 32-year-old senior named Redwanul Azad Rana, was also a leader in Ansar al-Islam, Mr. Islam said. He invited the younger students to Mr. Rahmani’s sermons and introduced them to the writings of Thaba Baba.

    “Being a believer, it is your duty to kill” Thaba Baba, Mr. Rana told the students, one of them said in his confession in court. Prodded by Mr. Rana, “we made a plan to kill Islam’s and Prophet Muhammad’s insulter Thaba Baba by identifying him,” the student, Faisal Bin Nayeem, 24, said in the statement.

    He said they found Thaba Baba’s picture on Facebook, then searched for someone matching it at the Shahbag protest, still underway at the time. Eventually, they identified a 32-year-old architect, Ahmed Rajib Haider, as Thaba Baba. After studying Mr. Haider’s routines, three of them surprised him outside his house around 9 p.m. Mr. Nayeem said he drove his machete into the back of Mr. Haider’s neck and hit him twice more as he fell forward.

    Ansar al-Islam, with the help of mainstream Islamist groups, then began to publicize Mr. Haider’s writings, casting the killers as defenders of Islam against “atheist bloggers.”

    The writings, published in at least two national dailies, enraged large segments of the population, who had previously been sympathetic to the Shahbag movement, Mr. Islam said.

    During the next two months, two more bloggers were killed. The police began arresting the North South University students who were involved in killing Mr. Haider, and also caught Mr. Rahmani, the cleric who inspired them. But Mr. Rana, the student leader, remains at large and is thought to have left the country.

    Mr. Islam said he believes these arrests stopped Ansar al-Islam — also known as the Ansarullah Bangla Team — from killing more people in 2013 and 2014. But the group reorganized the terrorist cells, he said, and the killing resumed.

    In February of last year, Mr. Islam said, Ansar attackers killed Avijit Roy, 42, an American citizen of Bangladeshi origin. Mr. Roy worked by day in the biotechnology industry in the United States and by night as a writer of books on science, homosexuality and religion, in addition to founding a website called Mukto-Mona, Bengali for freethinker.

    From the growing number of attackers in detention, the police learned that the newly reconstituted Ansar al-Islam had changed its tactics, now recruiting madrasa students and teachers instead of university students to carry out killings. Mr. Islam said a violent protest by the madrasa students in May 2013 convinced Ansar al-Islam leaders that they were a more promising source of fanatical recruits than their university counterparts.

    The training and indoctrination of the recruits became more rigorous and systematic at that time, Mr. Islam said. The cell that assassinated another blogger, Oyasiqur Rahman Babu, 27, just a month after Mr. Roy’s killing rented an apartment where two senior operatives worked with the group of would-be killers. One, an operations expert, taught them how to kill with a machete and use a pistol to scatter anyone interrupting the attack.

    Armed with Mr. Babu’s picture and his address, the assassins were sent to his home to assess the situation and returned to a barrage of questions from the trainer. “What happens if you are stopped? What will you do?” he asked them, Mr. Islam said.

    Close to the planned date of the attack, the other operative, an ideologist, introduced the killers to Mr. Babu’s writings. The students were given samples calculated to stir them up. “What is the punishment for someone who writes these insults?” the trainer asked them. The group answered in unison, day after day, “Only death,” the arrested students told investigators.

    Mr. Islam said the hardest part for the police was identifying the leaders, who were so concerned about security that they would not give their real names to the madrasa students they were training.

    Still, the police have now identified a trainer involved in planning the attack on Mr. Babu. Last month they printed the suspect’s picture, along with those of five others accused of participating in the killings, in local dailies, offering rewards of up to 500,000 takas, about $6,400, for information leading to their arrests.

    Costly Slip-Ups

    The other militant group, the reorganized Jama’atul Mujahedeen Bangladesh, works independently of Ansar al-Islam and almost exclusively in northern Bangladesh, the chief investigator said. But the group is less professional than Ansar al-Islam, he said, making mistakes that are costing it public support.

    The group has trained 50 to 100 madrasa students as killers, he said, organizing them into cells of four or five. But through shoddy research, many of the victims have turned out to be popular local figures. Among them: a homeopathic doctor who used to give free treatment to villagers, and an English professor at Rajshahi University who was not known to have written critically of Islam.

    When detained militants learned that a 66-year-old Japanese man they had slaughtered had converted to Islam in 2015, they told investigators they were upset over their mistake.

    With all the slip-ups, the communities turned against them. With the public’s support, Mr. Islam said, the police quickly rounded up the suspected hit men and several of their handlers in most of the Jama’atul Mujahedeen Bangladesh killings, and were in pursuit of the senior leadership.

    Many in Bangladesh continue to live in terror. Twenty-five associates of one victim, a gay rights activist, have taken refuge in safe houses provided by diplomatic missions. Several dozen bloggers have fled the country. Those who remain have grown fatalistic.

    “On this journey, we’ll lose our lives,” Arif Jebtik, 39, one of the leaders of the Shahbag movement, said in an interview in his Dhaka apartment, which he rarely leaves. He has quit his job, closed his blog and stopped dropping his children off at school.

    “This is the price we have to pay to history,” he said.

  6. মাসুদ করিম - ১১ জুন ২০১৬ (৪:১৭ অপরাহ্ণ)

    Iranian researchers to build DBS electrode to treat addiction

    Head of Cellular and Molecular Research Center at Iran Uni. of Medical Sciences said a team of researchers are currently working on a project to build Deep brain stimulation (DBS) electrodes for treating Parkinson’s disease and addiction.

    Mohammad Taghi Joghataei, the project manager, told Mehr News that his team is working on a procedure to study a variety of disabling neurological symptoms—most commonly the debilitating symptoms of Parkinson’s disease (PD), as well as addiction in which the base of the brain is altered.

    He noted that the DBS project has three phases including tests on mice, monkeys and finally humans, saying “in the first phase, a team of engineers at the School of Electrical and Computer Engineering of University of Tehran begun building electrodes that cause brain stimulation. Currently, these electrodes which are used in brain surgeries have been tested on small animals such as mice and bigger animals such as monkeys.”

    Joghataei went on to add that the project has been launched two years ago and the third phase includes testing the electrodes on humans; “last year, the experiment on mice was conducted successfully. We began testing on monkeys since March and if the results are reported as successful, we will conclude that the test will also work on humans,” he explained.

    He maintained that the electrode used on the monkeys is of the same kind that will be tested on humans.

    “Since the costs of building and planting electrodes in the brain is very high, we were unable to use them in brain surgeries in Iran, but if the project achieves good results, we can stop the import of electrodes from abroad,” he said.

    The DBS project is currently being conducted by researchers from the School of Electrical and Computer Engineering at University of Tehran and Iran University of Medical Sciences, Hazrat Rasoul Medical Complex.

  7. মাসুদ করিম - ১২ জুন ২০১৬ (৮:৩২ পূর্বাহ্ণ)

    Eric Clapton Struggling to Play Guitar Because of Nerve System Damage

    Nerve damage and age are robbing Eric Clapton’s ability to play the guitar.

    The 71-year-old revealed his condition in an interview with Classic Guitar magazine, saying that he’s “been in a lot of pain the last year.”

    Clapton went on to further describe his condition:

    “It started with lower back pain and turned into what they call peripheral neuropathy, which is where you feel like you have electric shocks going down your leg. And I’ve had to figure out how to deal with some other things from getting old.”

    According to the Mayo Clinic, peripheral neuropathy may be inherited or caused by injury, infection and exposure to toxins.

    Despite these setbacks, the rocker remains prolific, recently releasing “I Still Do,” his 23rd solo album. He even expressed surprise at his own longevity.

    “Because I’m in recovery from alcoholism and addiction to substances, I consider it a great thing to be alive at all,” Clapton said. “By rights I should have kicked the bucket a long time ago. For some reason I was plucked from the jaws of hell and given another chance.”

    Clapton has had a life filled with tragedy. In 1991, his 4-year-old son fell out of open window on the 53rd floor of his New York City apartment and died. One year earlier, Clapton’s agent, bodyguard and tour manager perished in a helicopter crash that also took the life of fellow rocker Stevie Ray Vaughan.

  8. মাসুদ করিম - ১২ জুন ২০১৬ (৭:৩৮ অপরাহ্ণ)

    African rulers of India: That part of our history we choose to forget

    “When your family has been ruling for hundreds of years, people still call you by the title of Nawab,” says Nawab Reza Khan, tenth Nawab of Sachin as he traces his family’s regal history. Reza Khan currently works as a lawyer and lives in the city of Sachin in Gujarat. He says his ancestors came from Abyssinia (present day Ethiopia in East Africa) as part of the forces of Babur. Eventually, they conquered the fort at Janjira and later occupied Sachin and ruled over their own kingdoms.

    The Nawab of Sachin is a personified remnant of a glorious African past in India. Africans have, for centuries been a part of Indian society. While the slave trade from Africa to America and Europe is well documented, the eastward movement of African slaves to India has been left unexplored.

    The systematic transportation of African slaves to India started with the Arabs and Ottomans and later by the Portuguese and the Dutch in the sixteenth -seventeenth centuries. Concrete evidence of African slavery is available from the twelfth-thrirteenth centuries, when a significant portion of the Indian subcontinent was being ruled by Muslims.

    There is, however, a major difference between African slavery in America and Europe and that in India. There was far greater social mobility for Africans in India. In India, they rose along the social ladder to become nobles, rulers or merchants in their own capacities. “In Europe and America, Africans were brought in as slaves for plantation and industry labour. In India on the other hand, African slaves were brought in to serve as military power,” says Dr Suresh Kumar, Professor of African studies in Delhi University.

    These were elite military slaves, who served purely political tasks for their owners. They were expensive slaves, valued for their physical strength. The elite status of the African slaves in India ensured that a number of them had access to political authority and secrets which they could make use of to become rulers in their own right, reigning over parts of India. They came to be known by the name of Siddis or Habshis (Ethiopians or Abyssinians). The term ‘Siddi’ is derived from North Africa, where it was used as a term of respect.

    The Nawab of Sachin and Janjira

    The political power acquired by Africans in the Deccan, in particular in Janjira and Sachin, is best demonstrated in a painting by Abul Hasan, that depicts Emperor Jahangir taking aim at the head of the African slave Malik Ambar. The political career of Malik Ambar can be traced back to a time when he was known as ‘Chapu’. He was initially bought as a slave in Ethiopia by an Arab merchant. Later, after being resold a number of times, he somehow landed in the court of Ahmadnagar as one among the hundreds of Habshi military slaves there.

    By the mid-sixteenth century, the Mughals had increased their appetite for the South and were aggressively trying to encroach upon the Nizam Shahi dynasty that ruled much of Deccan. In 1600 AD, the Ahmadnagar fort finally fell into the hands of the Mughals. However, the presence of the Mughals in the Deccan was still limited and Ahmadnagar’s surrounding countryside still lay with the troops deployed by the Nizam Shahi state of which Malik Ambar was a part.

    It was during this period that the African slave grew to be a political game changer. Commanding a troop of 3000 cavalrymen, he proved to be a major obstacle to the Mughals’ appetite for the Deccan. The painting by Abul Hasan is testimony to what a nuisance the Ethiopian soldier had become to the Mughals.

    Malik Ambar constructed a fort at Janzira, located in the Konkan coast, by the end of the sixteenth century. It still stands intact, currently under protection of the Archaeological Survey of India (ASI). At Janjira, the Africans developed their own kingdom (with their own cavalry, coat of arms and currency) which the Mughals and Marathas failed to occupy despite repeated attacks. Later, the African rulers of Janjira went on to occupy another fort at Sachin in modern day Gujarat. The present Nawab of Sachin, Reza Khan says “the title of Nawab was given to our ancestors by Mughal Emperor Aurangzeb, since they had not allowed his competitor Shivaji to occupy the Janjira fort.”

    The Habshi Sultans of Bengal

    A large number of royal coins found in Bengal tells the story of a time when the region was ruled by Africans who had been originally brought as slaves. Much of Bengal, in the thirteenth century was being ruled by the Muslim Sultans of Delhi. The Bengal Sultanate was established by Shams al-Din Ilyas Shah in 1352. Historian Stan Gordon has recorded that during this period a large number of Abyssinian (inhabitants of Ethiopia in East Africa) slaves had been recruited in the army of the Bengal Sultans. They did not just work in the army, but also rose to get involved in major administrative tasks such as act as court magistrates, collecting tolls and taxes and involved in services of law enforcement.

    Eventually, the Abyssinians in the army managed to seize power from the Sultans under the leadership of Barbak Shahzada, and conquered the throne of the Bengal Sultanate. Barbak Shahzada laid the foundation stone of the Habshi dynasty in Bengal in 1487, and became its first ruler under the name of Ghiyath-al-Din Firuz Shah.

    Ghiyath-al-Din was followed by three other Abyssinian rulers. His successor, Saif al-Din Firuz is considered the best of the Habshi rulers. “He is said to have been a brave and just king, benevolent to the poor and needy, and a patron of art and architecture,” says Stan Gordon. Firuz is believed to have patronised the building of a number of religious and secular structures. Most well known among these is the Firuz Minar at Gaur which still stands tall, in a good state of preservation. The Firuz Minar is often compared to the Qutub Minar in Delhi, both in appearance and also in its significance of a victory tower.

    The Habshi rule of Bengal was very brief and came to an end in 1493 AD, when Sayyid Husain Sharif Makki seized the throne and founded the Husaini dynasty.

    Sidi Masood of Adoni

    Adoni is situated in Kurnool district of Andhra Pradesh. In the fifteenth century it was part of the Vijayanagar empire. With the decline of the Vijayanagar empire, the city came in the hands of the Bijapur Sultanate. As part of the Bijapur Sultanate, Adoni got one of its most important governors by the name of Siddi Masood Khan. Masood was a wealthy merchant from Abyssinia.

    Siddi Masood was the vizier of Bijapur and was virtually the ruler of Adoni. He improved upon the Adoni fort and also built the Shahi Jamia Masjid. Apart from architectural constructions, he is known to have patronised a sizeable number of paintings under his reign. It is possible that he also founded the school of painting at Adoni, which is a variant of the Bijapuri style.

    The Abyssinian ruler’s reign at Adoni came to an end when Aurangzeb captured Bijapur in 1686. Records suggest that a dramatic fight took place on the banks of the mosque built by Siddi Masood, following which he surrendered since the mosque was very dear to him. Aurangzeb appointed Ghazi ud-din Khan as governor of Adoni, replacing Siddi Masood.

    Apart from the above rulers, historians are still trying to recover more about African elites in the past. It is possible that the first ruler of the Sharqui dynasty in Jaunpur in the fourteenth century was an Abyssinian. African rulership was perhaps also a part of Sind’s history. However, not enough documentary evidence has been unearthed to make these claims.

    Presence of Siddis in Contemporary India

    Today, approximately 20,000 to 50,000 Siddis are residing in India and Pakistan, with the majority concentrated in Karnataka, Gujarat, Hyderabad, Makaran and Karachi. In contrast to their part of royal privileges, most of them live in conditions of abject poverty.

    Anthropologist Kiran Kamal has been working on the Siddi presence in India for the past couple of decades. He lived amongst a group of them in Mundgod Taluk (Karnataka) for a year. “They live in dense forest areas, literally cut off from everyone.” says Kamal. He observed the way Siddis interacted with people in a market place and says that “they would always maintain a distance. There is a strong fear of Non-African Indians. Indians also have a very disrespectful attitude towards them, despite using them for all the hard labour.”

    Poverty, lack of access to education and racism are some of the reasons why the Siddis live in solitude today. “They did not even know they originated from Africa,” says Kamal. On being asked about how an awareness of their history might help them, Kiran Kamal says that, “it does help in spurring a motivation from within. But substantially it does not have much value. What is mainly required is that all the Siddis come up socioeconomically and are well integrated into the larger society.”

    Dr. Kenneth Robbins, author of “African elites in India”, is of the opinion that it is necessary to shed light on the ruling status of Africans in India. “The purpose is to see India in a different light, to understand social mobility in India. It is important for Indians to take note of the place that Africans had at one point secured in the country.”

    “A major difference in the history of African presence in the rest of the world and that in India is that racial discrimination was not a feature. Nowhere else in the world had they ruled. However, I do not know why, this part of their history has been ignored,” says Dr. Suresh Kumar. He goes on to explain that the elite history of Africans in India is particularly significant in today’s times considering that instances of racial prejudices keep occurring in various parts of the country.

    Readers insights

    Below are some valuable contributions made by our readers to this story. While we cannot authenticate each of them, they definitely provide essential food for thought and material for further research.

    VIVJPhD : I cover them in my book Uganda Asians to show the Indian Ocean crossings were two-way – Indians coming to east Africa from the first century on and Africans going/taken there. As the article says it was mostly Ethiopians. The king up there is clearly from Et. When I was stationed there I was astounded to see peasants wearing jodhpurs and playing the lute. They still do.

    Ramesh Kumar: There is a colony in Hyderabad known as A C Guards (African Cavalry Guards). This is is small Cavalry regiment of Africans (probably slaves) gifted by Raja of Gadwal to the then Nizam. Even today the community lives there and there is Mosque established exclusively for them. It shows that they enjoyed considerable freedom from slavery in Hyderabad. There are known as Siddis.

    chandar krishna: This makes for fascinating study. Prof.Sanjay Subramanian has made an extensive research on some aspect of this. Were they partly Jewish too? there are references to Jewish settlements in Cochin in the 15th century. M.G.Vassanji,novelist, describes his encounter with the Siddis in Gujarat in his travelogue, ‘A Place Within: Rediscovering India’. In Karnataka, many of the Siddis are making a mark in athletics.

    syncretism has always been a characteristic feature of the Indian consciousness. more research needs to be done on this, many thanks, Chanda

  9. মাসুদ করিম - ১৩ জুন ২০১৬ (১০:০২ পূর্বাহ্ণ)

    Why the Orlando Shooting Was So Deadly

    The attack at an Orlando nightclub early Sunday was the deadliest mass shooting in United States history. One out of every three people at the Pulse nightclub was killed or injured after the shooter, Omar Mateen, opened fire.

    The Nightclub Was Loud and Crowded

    Mass shooting fatalities are often higher in large, crowded spaces that are somewhat confined, making it hard for people to escape, said J. Pete Blair, a Texas State University professor who trains law enforcement officers to respond to shooters. The noise may have also played a factor: When Mr. Mateen started shooting, one patron said he first thought the gunfire was firecrackers; others said they thought it was part of the music. “Without available avenues of egress, it seems like they didn’t have an easy way of getting out,” Mr. Blair said.

    The Shooter Was at the Nightclub for Three Hours

    The police did not stop the gunman until three hours after Mr. Mateen started shooting, an unusually long time, Adam Lankford, a professor at the University of Alabama who studies mass shootings, said. At some point after the first shots were fired, Mr. Mateen went outside the club and later returned, creating “a hostage situation,” Chief John Mina of the Orlando police said. It is unknown if the shooter killed more people as the police prepared for a confrontation.

    The amount of time it takes law enforcement to respond can be a strong predictor of the number of fatalities, Mr. Lankford said. He pointed to the mass shooting at Columbine High School in 1999, when police needed more than three hours to reach injured people, resulting in the deaths of some who desperately needed medical assistance.

    The Shooter Had a Powerful Rifle and High-Capacity Magazines

    The gunman was armed with an AR-15-type semiautomatic rifle and a 9 millimeter handgun, Chief Mina said.

    AR-15s, which were first developed for the military and used extensively in the Vietnam War, are widely owned by assault-rifle enthusiasts. The rifle, which can rapidly fire multiple high-velocity rounds, has been used in a number of mass shootings, including those in Aurora, Colo.; Newtown, Conn.; and San Bernardino, Calif.

    The rifle is legal to buy in most states, including Florida. In 1994, Congress passed an assault weapons ban, which expired in 2004, that prohibited manufacturing the AR-15 for civilian sale with large-capacity magazines, bayonets or pistol grips.

    In a video taken by a bystander at the Orlando shooting, more than 20 rounds can be heard being fired in rapid succession. Like most states, Florida does not restrict the capacity of magazines. State bans have been ineffective: purchasers can cross state lines and AR-15s with limited-capacity magazines can easily be modified to accept larger magazines. The shooters in San Bernardino used high-capacity magazines despite California’s ban on semiautomatic rifles with magazines of more than 10 bullets.

    The Orlando Shooting Is the Third-Highest Known Toll

    Only two mass shootings are known to have killed more people: a 2011 attack at a Norwegian summer camp, and shootings by a lone gunman in South Korea in 1982, according to research by Mr. Lankford. The research includes attacks dating back to a massacre at the University of Texas in 1966 that is often considered the first modern mass shooting.

    Fifteen Deadliest Mass Shootings Worldwide

    2011 Norway attacks 69 Norway
    1982 South Korea shootings 58 South Korea
    2016 Orlando nightclub shooting 50 United States
    2015 Tunisia attack 38 Tunisia
    1996 Port Arthur massacre 35 Australia
    1999 Mikenskaya shooting 34 Russia
    2007 Virginia Tech shooting 32 United States
    1986 Bogotá shooting 29 Colombia
    1994 Cave of the Patriarchs massacre 29 West Bank
    2012 Sandy Hook shooting 27 United States
    1994 Kampala wedding massacre 26 Uganda
    1994 Tian Mingjian incident 23 China
    1991 Luby’s shooting 23 United States
    2000 Jarafa mosque massacre 22 Sudan
    1984 San Ysidro McDonald’s massacre 21 United States

  10. মাসুদ করিম - ১৪ জুন ২০১৬ (১:৪৪ অপরাহ্ণ)

    পাকিস্তানে মুসলিমদের চাঁদায় গির্জা

    বিরল সম্প্রীতির নিদর্শন পাকিস্তানের খাকসাবাদে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের এই গ্রামের মুসলিম বাসিন্দারা তাঁদের খ্রিস্টান প্রতিবেশীদের জন্য তৈরি করছেন একটি গির্জা। কট্টরপন্থীদের হুমকি সত্ত্বেও গির্জা তৈরির কাজ থামাতে রাজি নন তাঁরা। ছ’‌বছর ধরে চাঁদা তোলা হচ্ছে, গতবছরের বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নির্মীয়মাণ গির্জার একটা বড় অংশ। তারপরেও নতুন উদ্যমে কাজ চালিয়ে গেছেন তাঁরা। কেন হঠাৎ গির্জা তৈরি করার কথা ভাবলেন গ্রামবাসীরা?‌ গ্রামের ব্যবসায়ী দিলওয়ার হোসেন বলছেন, ‘‌২০০৯ সালে আমাদের গ্রামের কাছের শহর গোজরায় দাঙ্গা হয়েছিল। দাঙ্গায় ৪টি গির্জা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। খ্রিস্টান–অধ্যুষিত এলাকায় সঙ্ঘর্ষে ২০ জন মারা গিয়েছিলেন। ঘটনার পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, সব ধর্মকে সম্মান দিতে উদ্যোগী হব। গির্জা বানানোর ভাবনা শুরু হয় তখনই।’‌ দিলওয়ারদের সিদ্ধান্তে দারুণ খুশি খ্রিস্টান প্রতিবেশীরা। একজন বললেন, ‘পরিকল্পনা শুনে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারিনি। আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে!‌’‌‌‌‌‌

  11. মাসুদ করিম - ১৫ জুন ২০১৬ (৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ)

    Gregory Rabassa, Translator of Gabriel Garcia Marquez, Dies

    Gregory Rabassa, a translator of worldwide influence and esteem who helped introduce Gabriel Garcia Marquez, Julio Cortazar and other Latin American authors to millions of English-language readers, has died.

    A longtime professor at Queens College, Rabassa died Monday at a hospice in Branford, Connecticut. He was 94 and died after a brief illness, according to his daughter, Kate Rabassa Wallen.

    Rabassa was an essential gateway to the 1960s Latin American “boom,” when such authors as Garcia Marquez, Cortazar and Mario Vargas Llosa became widely known internationally. He worked on the novel that helped start the boom, Cortazar’s “Hopscotch,” for which Rabassa won a National Book Award for translation. He also worked on the novel which defined the boom, Garcia Marquez’s “One Hundred Years of Solitude,” a monument of 20th century literature.

    Garcia Marquez often praised Rabassa, saying he regarded the translation of “Solitude” as a work of art in its own right.

    “He’s the godfather of us all,” Edith Grossman, the acclaimed translator of “Don Quixote” and several Garcia Marquez books, told The Associated Press on Tuesday. “He’s the one who introduced Latin-American literature in a serious way to the English speaking world.”

    Rabassa’s other translations included Garcia Marquez’s “The Autumn of the Patriarch,” Vargas Llosa’s “Conversation in the Cathedral” and Jorge Amado’s “Captains of the Sand.” In 2001, Rabassa received a lifetime achievement award from the PEN American Center for contributions to Hispanic literature. He was presented a National Medal of Arts in 2006 for translations which “continue to enhance our cultural understanding and enrich our lives.”

    Survivors include his second wife, Clementine; daughters Kate Rabassa Wallen and Clara Rabassa, and granddaughters Jennifer Wallen and Sarah Wallen.

    Language was a lifelong fascination for Rabassa, whose father was Cuban and mother from New York City’s Hell’s Kitchen. He was born in Yonkers, New York, in 1922, and raised on a farm in Hanover, New Hampshire, near Dartmouth College, where Rabassa majored in romance languages. Fitting for the future translator, he served as a cryptographer during World War II, later joking that in deciphering secret messages it was his job to change English into English.

    After the war, Rabassa studied Spanish and Portuguese as a graduate student at Columbia University and translated Spanish- and Portuguese-language works for the magazine Odyssey. He broke into mainstream publishing in the 1960s when an editor at Pantheon Books asked him to translate Cortazar’s “Hopscotch,” a stream-of-consciousness novel that had the Spanish title “Rayuela.”

    Around the same time “Hopscotch” won the National Book Award, in 1967, Garcia Marquez was finishing his masterpiece of magical realism, “One Hundred Years of Solitude.” Rabassa’s reputation was so high that Garcia Marquez waited three years for the English version so that the translator’s schedule could clear.

    “A good translation is always a re-creation in another language. That’s why I have such great admiration for Gregory Rabassa,” the Colombian author told The Paris Review in 1981. “My books have been translated into 21 languages and Rabassa is the only translator who has never asked for something to be clarified so he can put a footnote in. I think that my work has been completely re-created in English.”

    Rabassa’s contribution to “One Hundred Years of Solitude” was sealed immediately, through what became the novel’s immortal, English-language opening sentence: “Many years later, as he faced the firing squad, Colonel Aureliano Buendia was to remember that distant afternoon when his father took him to discover ice.”

    As Rabassa recalled in his 2005 memoir “If This Be Treason,” several words needed interpretation. “Firing squad” could have easily been translated into “firing party,” but Rabassa thought “squad” a better word for American readers. He acknowledged receiving some criticism for turning the Spanish word “conocer,” which technically means to be familiar with or to have experienced, into “discover.”

    “What is happening here is a first-time meeting, or learning,” Rabassa explained.

    Even translating the title, “Cien Anos de Soledad,” required precision and poetry. “Cien” can mean “one hundred” or “a hundred.” Rabassa decided on “one hundred,” because he believed Garcia Marquez had a specific time frame in mind. A choice also was needed for “soledad,” which can mean “loneliness” or “solitude.”

    “I went for ‘solitude’ because it’s a touch more conclusive and also can carry the germ of ‘loneliness’ if pushed along those lines, as Billie Holiday so eloquently demonstrated,” Rabassa recalled.

    Rabassa’s approach was unorthodox. He would often agree to take on a book before having seen the text and then translate as he read it for the first time. In his memoir, Rabassa acknowledged laziness might have been a reason for not reading the book twice, but he also believed “by doing things this way I was birthing something new and natural.”

    His work with Garcia Marquez made him famous, but he was much closer personally to Cortazar, the Argentine author and opponent of the Peron regime. They shared, Rabassa recalled, a warmth for “jazz, humor, liberal politics, and inventive art and writing.”

    Friendship meant that Cortazar not only forgave the occasional error by his translator, but sometimes welcomed it. Rabassa remembered working on a sentence about an egg left too long in a frying pan and inadvertently reversed two letters. A correction was unnecessary, Cortazar declared. The mistake was an improvement.

    And so, in tribute to the ceramic state of stale food, “fried eggs” remained “fired eggs.”

  12. মাসুদ করিম - ১৫ জুন ২০১৬ (১২:৪২ অপরাহ্ণ)

    ইট ছাড়াই পরিবেশবান্ধব বহুতল ভবন

    কোনো রকম ইটের ব্যবহার ছাড়াই বহুতল ভবন গড়ে উঠবে। সেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করবে নগরবাসী। শীত মৌসুমে ভেতরের পরিবেশ থাকবে উষ্ণ। গ্রীষ্মকালে অনেকটাই শীতল। সাধারণ ভবনের মতোই হবে স্থায়িত্বকাল। ভূমিকম্পেও ভেঙে পড়বে না। ইট-কংক্রিটের জঞ্জালে ভরা এই নগরীতে এমনটা কেউ ভাবতেই পারেন না। কিন্তু সেই স্বপ্নকেই সম্ভব করেছে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট। আর সেটা খোদ রাজধানীতেই। পাঁচতলা একটি ভবনের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। শিগগির সেখানে বসবাসও শুরু হবে। আরেকটি চারতলা ভবন তৈরির কাজও শুরু করার প্রস্তুতি সম্পন্নপ্রায়।

    রাজধানীর ১২০/৩, দারুস সালাম রোডে অবস্থিত হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ভেতরেই তৈরি করা হয়েছে ওই পাঁচতলা ভবনটি। দেখতে অবিকল ইট-কংক্রিটের ভবনের মতোই। কিন্তু সেখানে কোনো পোড়া ইটের ব্যবহার নেই। তবে সিমেন্ট, বালু, সোলা ও তারের

    ব্যবহার আছে। কেবল কলামগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে স্বল্প পরিমাণ লোহার রড।

    কেবল ইটছাড়া ভবনই নয়, র‌্যাংগস ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকেও একটি দোতলা ভবন তৈরি করে সেখানে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা বসবাস করছেন। পাশাপাশি হাওর, বিল, জলাশয় ও উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য তৈরি করেছে ভাসমান বাড়ি। এ ছাড়া বাজারজাত করছে আগুনবিহীন ইট। ভরাট হয়ে যাওয়া নদীর মাটি (ড্রেজিং সয়েল) দিয়েও ব্যতিক্রমধর্মী ইট তৈরি করছে এই প্রতিষ্ঠানটি। আর এ সবকিছুই হচ্ছে পরিবেশবান্ধব।

    ১৯৭৫ সালের ১৩ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হলেও দীর্ঘদিন ছিল অবহেলিত। চলতি দশকেই প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। একের পর এক তৈরি করে নিত্যনতুন প্রযুক্তি।

    হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবু সাদেক পিইঞ্জ বলেন, কাঠ দিয়ে বহুতল ভবনের নজির অনেক আছে। সেগুলোতেও কম-বেশি ইটের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটা একেবারেই ইটবিহীন। বাংলাদেশে এ ধরনের বহুতল ভবন এটিই প্রথম। তিনি জানান, ইট তৈরি করতে হলে ফসলি জমির মাটির প্রয়োজন হয়। সেগুলো পোড়াতে লাগে কয়লা ও কাঠ। এতে পরিবেশের উষ্ণতা বাড়ে। পাশাপাশি বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। সব মিলিয়ে পরিবেশের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বর্তমানে ইটের জন্য মাটি কাটতে হয় বলে প্রতি বছর ফসলি জমির পরিমাণ ১ শতাংশ কমে যায়। ২০৪১ সালে বাংলাদেশের লোকসংখ্যা হবে ২৩ কোটি। এভাবে ফসলি জমি কমলে পাঁচ কোটি লোকের খাবারে ঘাটতি পড়বে। এ জন্য এখন থেকেই এ ধরনের ভবন তৈরির কথা ভাবতে হবে।

    যেভাবে এই ভবন :সরেজমিনে পাঁচতলা ভবনটি দেখে ও নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনের দু’পাশের ১৬টি কলাম তৈরি করা হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। এ ছাড়া যে ব্লক ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো তৈরি করা হয়েছে শুকিয়ে যাওয়া নদীর পলি মাটি দিয়ে। এর সঙ্গে মেশানো হয়েছে সিলেটের বালু ও কিছু সিমেন্ট। এখানে সিমেন্টের সঙ্গে অন্য উপকরণের মাত্রা_ সিমেন্ট একটি, বালু ও মাটি দুটি করে। এভাবে তৈরি করা হয়েছে ব্লকগুলো। কিছু ব্লকের ভেতর কিছুটা ফাঁপা। এ ছাড়া দেয়ালে ব্যবহার করা হয়েছে শোলার ব্লক। শোলার ব্লকগুলোর চারপাশে রয়েছে আধা ইঞ্চি পুরু বালু-সিমেন্টের আস্তরণ। দেখতে অনেকটা কাঁচা ইটের মতো। শোলার ইট বাইরের তাপ শোষণ করে না। ফলে গরমকালে ভবনের ভেতরের পরিবেশ থাকে অপেক্ষাকৃত শীতল। একইভাবে শীতকালে ভেতরে অনুভূত হয় উষ্ণতা। ছাদে ব্যবহার করা হয়েছে প্রিকাস্ট ফেলো সিমেন্ট চ্যানেল (সিমেন্ট-বালু-তারের সমন্বয়ে তৈরি এক ধরনের পাত)। এটার পুরুত্ব মাত্র পৌনে দুই ইঞ্চি। এই পাতের সঙ্গে দুই ফুট তিন ইঞ্চি পর পর দেওয়া হয়েছে চার ইঞ্চির রিপ (বিমের মতো)। এতে ছাদের শক্তি অনেক বেড়ে যায়। সিঁড়িও তৈরি করা হয়েছে প্রিকাস্ট ফেলো সিমেন্ট দিয়ে। ভবনটির প্রতিটি তলায় ব্যবহারযোগ্য আয়তন এক হাজার ৪০০ বর্গফুট। দুটি করে ছোট ফ্ল্যাট তৈরি করা যাবে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের সঙ্গে রয়েছে একটি করে বারান্দা। এ ধরনের ভবনের কোনো পলেস্তারার প্রয়োজন নেই। ব্যবহৃত উপকরণগুলো রিসার্চ ইনস্টিটিউটেরই প্ল্যান্টে তৈরি করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের ভেতরেই রয়েছে জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির প্রকল্প। বর্তমানে বাজারে তৈরি আগুনে পোড়া একটি ইটের দাম পড়ে ৭ থেকে ৮ টাকা। অথচ পরিবেশবান্ধব এই ইটের দাম পড়ে ৬ থেকে ৭ টাকা। ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানান, বর্তমানে সাধারণ ভবনে এক বর্গফুটের নির্মাণ খরচ পড়ে এক হাজার ৮০০ টাকা। অথচ এ ধরনের ডেমোনেস্ট্রেশন বিল্ডিং তৈরি করতে প্রতি বর্গফুটে খরচ হয় মাত্র ১ হাজার ১৫০ টাকা। পাশাপাশি সাধারণ বহুতল ভবনগুলো ভূমিকম্প সহায়ক নয়। অথচ এ ভবনগুলো ভূমিকম্প সহায়ক। এটা রিখটার স্কেলে ১০-১২ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাতে প্রাণহানির কোনো শঙ্কা নেই।

    ইটবিহীন পাঁচতলা ভবনের নির্মাণকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট সিরাজউদ্দৌলা ভূইয়া বলেন, পাঁচতলা ভবনটি তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে ৮৩ লাখ টাকা। তৈরিতে সময় লেগেছে মাত্র নয় মাস। অথচ সাধারণ একটি ইটের ভবন তৈরি করতে এত কম সময়ে ও এত কম খরচে করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তিনি জানান, কেউ এ ধরনের ভবন তৈরি করতে চাইলে ইনস্টিটিউট থেকে এক-দু’জন প্রকৌশলী দিয়েও সহযোগিতা করা হবে। সেই প্রকৌশলীর সহযোগিতায় দেশের যে কোনো স্থানে এ ধরনের ভবন তৈরি করতে পারবেন আগ্রহী ব্যক্তিরা।

    ধ্বংসাবশেষ দিয়ে ভবন :২০০৮ সালে রাজধানীর বিজয় সরণিতে ভেঙে ফেলা সেই বহুতল ভবনের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে একটি দোতলা আধুনিক ভবনও তৈরি করেছে রিসার্চ ইনস্টিটিউট। সংশ্লিষ্টরা জানান, র‌্যাংগস ভবনের কংক্রিটগুলো সংগ্রহ করে সেগুলো ক্র্যাশার মেশিনে গুঁড়া করা হয়। এর সঙ্গে কিছু সিমেন্ট মিশিয়ে তৈরি করা হয় ইটের আকৃতির ব্লক। সেসব ব্লক ব্যবহার করেই তৈরি করা হয় দোতলা ভবনটি। এটাতেও ব্যবহার করা হয়নি কোনো পোড়ানো ইট। কোনো রডেরও ব্যবহার নেই। রঙেরও ব্যবহার করা হয়নি। সরেজমিন ভবনটিতে গিয়ে দেখা যায়, এরই মধ্যে ভবনটির ব্যবহার শুরু হয়েছে। ইনস্টিটিউটের কর্মচারীদের বেশ কয়েকটি পরিবার বর্তমানে বসবাস করছেন। বসবাস করে তারাও তুষ্ট।

    এদিকে ড্রেজিং সয়েল দিয়ে তৈরি ইটের গুণগত মানও পোড়ানো ইটের চেয়ে বেশ ভালো। দামও বেশ কম। কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা রয়েছে চারতলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ডেমোনেস্ট্রেশন ভবনটি এভাবে পরিবেশবান্ধব ইট দিয়ে তৈরির। বগুড়াতে আরডিএ ভবন ও সাতটি গ্রামকে এক জায়গায় নিয়ে আসার কাজ চলছে। এসব গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য তৈরি হবে পরিবেশবান্ধব বহুতল ভবন।

  13. মাসুদ করিম - ১৫ জুন ২০১৬ (১:০৬ অপরাহ্ণ)

    বাজেটের জেন্ডার সংবেদনশীলতা

    জাতীয় বাজেট একটি দেশের প্রস্তাবিত বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের দলিল। বাজেটে অর্থের বণ্টন, করারোপ বা রাজস্ব নীতি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনযাত্রা যেমন বিভিন্ন মাত্রায় প্রভাবিত করে, তেমনি নারী ও পুরুষের উপরও এর প্রভাব ভিন্ন ভিন্নভাবে পড়ে। একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে নারীর অবদান উপেক্ষা করে একটি টেকসই অর্থনৈতিক অবকাঠামো কখনও চিন্তা করা যায় না।

    নারীর ক্ষমতায়ন কিংবা নারীর অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার জন্য অপরিহার্য নিয়ামক হচ্ছে, নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক বরাদ্দ। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে নারীরা যেহেতু সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিবিধ সুবিধাবঞ্চিত, সেহেতু সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তাদের একীভূত করার জন্য প্রয়োজন আলাদা আর্থিক বরাদ্দ। আর জেন্ডার-সংবেদনশীল বাজেটের মাধ্যমে সরকার পর্যাপ্ত বরাদ্দ ও করারোপণ নীতির মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।

    বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা বিশ্লেষণ করতে গেলে সব থেকে আগে বলা দরকার জেন্ডার বাজেট সম্পর্কে। ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ৪টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে শুরু করে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৪০টি মন্ত্রণালয়কে জেন্ডার বাজেটের আওতায় আনা হয়েছে যা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

    এখানে মনে রাখতে হবে যে, জেন্ডার বাজেট কিন্তু নারীর জন্য আলাদা কোনো বাজেট নয়, বরং এটি একটি বিশেষ পদ্ধতি যার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় হিসাব-নিকাশের সাহায্যে জাতীয় বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা বিশ্লেষণ করা যায়। জেন্ডার বাজেটের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা চিহ্নিত করা যাতে বাজেটে সম্পদের বণ্টনের মাধ্যমে নারী-পুরুষের সমতা বৃদ্ধি বা অসমতা হ্রাস করা যায়। সুতরাং জেন্ডার বাজেট বলতে নারীর উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নের সহায়ক একটি বাজেট-প্রক্রিয়া বুঝায় যা কিনা নারী ইস্যুগুলোর প্রতি সংবেদনশীল।

    ২০১৬-১৭এর প্রস্তাবিত জেন্ডার বাজেটে ৪০টি মন্ত্রণালয়ে মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৯২,৭৬৫ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ২৭.২৫ শতাংশ এবং জাতীয় আয়ের (জিডিপির) ৪.৭৩ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জেন্ডার বাজেটে এই ৪০টি মন্ত্রণালয়কে ৩টি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে:

    (১) নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি (৭টি মন্ত্রণালয়: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, কৃষি, মৎস ও প্রাণিসম্পদ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়);

    (২) উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রমবাজার ও আয়বর্ধক কাজে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ (৯টি মন্ত্রণালয়: সমাজ কল্যাণ, শ্রম ও কর্মসংস্থান, যুব ও ক্রীড়া, স্থানীয় সরকার, বস্ত্র ও পাট, পানি সম্পদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়);

    (৩) সরকারি সেবাপ্রাপ্তিতে নারীর সুযোগ বৃদ্ধি (২৪ টি মন্ত্রণালয়: জনপ্রশাসন, বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র, বিদ্যুৎ, ভূমি, খাদ্য, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, রেলপথ, নৌ পরিবহন ইত্যাদি) (জেন্ডার বাজেট ২০১৬-১৭)।

    এখানে উল্লেখ্য যে, চলতি অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের তুলনায় প্রস্তাবিত জেন্ডার বাজেটের বরাদ্দ ২৯ শতাংশ বেশি। ২০০৯-১০ অর্থবছরে অর্থাৎ জেন্ডার বাজেটিংএর প্রথম বছরে এই বরাদ্দ ছিল ২৭,২৪৮ কোটি টাকা যা তৎকালীন জাতীয় বাজেটের ২৪.৬৫ শতাংশ বা তৎকালীন জিডিপির ৩.৯৫ শতাংশ। সুতরাং পরিসংখ্যানের বিচারে বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা বেড়েছে এবং টাকার অংকে ৪০টি মন্ত্রণালয়ের জেন্ডার বাজেটের প্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত বাজেটটি নারী উন্নয়ন-বান্ধব বলা যেতে পারে।

    তবে শুধুমাত্র সংখ্যার বিচারে জেন্ডার বাজেটের বিশ্লেষণ যুক্তিযুক্ত নয়। প্রথমত, অনেক সময় এডহক ভিত্তিতে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তের ব্যবহার ছাড়াই সরকারি প্রকল্পগুলোর জেন্ডার-সংবেদনশীলতা হিসাব করা হয় যা বেশিরভাগ সময় সঠিক চিত্র দেখায় না। এসব ক্ষেত্রে প্রকল্পের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা বাস্তবের চেয়ে বেশি হবার সম্ভাবনা থাকে।

    দ্বিতীয়ত, জাতীয় বাজেটের মতো জেন্ডার বাজেটের প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকে এবং বরাদ্দকৃত অর্থ অনেক সময় খরচ হয় না বা হলেও নির্দিষ্ট সময়ে হয় না।

    তৃতীয়ত, প্রশাসনিক দুর্বলতা ও দুর্নীতির কারণে প্রকল্পগুলোর সুবিধা থেকে অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা বঞ্চিত হন।

    সর্বোপরি, জেন্ডার বাজেটে অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন (monitoring and evaluation) ছাড়া বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা সঠিকভাবে বোঝা সম্ভব নয়। এর জন্য আর্থিক মূল্যায়ন অর্থাৎ অর্থের বরাদ্দ ও খরচের হিসাব শুধু নয়, বরং দরকার ফলাফলভিত্তিক মূল্যায়ন। কারণ একটি নীতি, দলিল বা প্রকল্প তখনই সফল বলা যাবে যখন তা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছাতে সাহায্য করবে।

    একটি দেশের বাজেট নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীর অধিকার রক্ষায় কতটা ভূমিকা পালন করছে তা সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা না গেলে জেন্ডার বাজেটিংএর প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধিত হয় না। তবে জ়েন্ডার-বিভাজিত উপাত্তের অভাবে ও প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে বাজেট কতটা জ়েন্ডার-সংবেদনশীলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, তা নিরূপণ করা অনেক সময় অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কাগজে-কলমে নীতিমালা বা অর্থ-বণ্টনের ব্যবস্থা থাকলেও তা যদি নারীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা (condition) ও অবস্থানের (position) উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম না হয় তবে সেই অর্থ-বণ্টন বা নীতিমালা প্রণয়নের যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

    জেন্ডার বাজেট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে ও নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের প্রকৃত সুফল পেতে হলে দরকার সুনির্দিষ্ট পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন এবং এর ভিত্তিতে বাজেটের পরিমার্জন। এসব সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বলা চলে যে, উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জেন্ডার-বিভাজিত বিশ্লেষণের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে এবং জেন্ডার বাজেটিং কিছুটা হলেও লিঙ্গভিত্তিক সমতা আনয়নের পথ সুগম করবে।

    বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা বোঝার জন্য জেন্ডার বাজেটের পাশাপাশি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ পর্যালোচনা করা যেতে পারে। এ প্রেক্ষিতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, প্রস্তাবিত বাজেটে উপরোক্ত মন্ত্রণালয়ের জন্য মোট বরাদ্দ হচ্ছে ২,১৫০ কোটি টাকা যার মধ্যে অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১,৯৮২ কোটি টাকা। সুতরাং উন্নয়ন ব্যয় মাত্র ১৬৮ কোটি টাকা। তিন কোটি চল্লিশ হাজার ছয়শ কোটি টাকার বাজেটের তুলনায় এই বরাদ্দ তাই অপ্রতুল। নারীর জন্য উন্নয়ন বাজেটে সরাসরি বরাদ্দের পরিমাণ বাংলাদেশের নারী-পুরুষের মধ্যকার বিদ্যমান অসমতার প্রেক্ষিতে নগণ্য।

    বিগত বছরগুলোর বাজেট বরাদ্দ দেখলেও আমরা মোটামুটি একই ধরনের চিত্র দেখতে পাই। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ সব সময় প্রস্তাবিত বাজেটের ১ শতাংশেরও কম যার সিংহভাগ হচ্ছে অনুন্নয়ন খাতে ব্যয়। আরও মনে রাখতে হবে যে, এই বরাদ্দ কিন্তু নারী ও শিশু উভয়ের জন্য লক্ষীভূত। সুতরাং আলাদা করে শুধুমাত্র নারীর জন্য বরাদ্দ এর চেয়েও কম।

    তবে নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জনের ক্ষেত্রে বাজেটের ভূমিকা শুধুমাত্র মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা একেবারেই ঠিক হবে না। কারণ নারীকে অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্রদানের জন্য বাজেটে অন্যান্য মন্ত্রণালয়েও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা করলে এ ধরনের বেশ কিছু বরাদ্দের প্রস্তাবনা বা নীতিমালা দেখা যায়। সামাজিক সুরক্ষা ক্ষেত্রে বেশ কিছু কর্মসূচীর আওতা ও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে যার অনেকগুলো প্রান্তিক নারীকে আর্থিক সুবিধা দেবে। এ প্রেক্ষিতে–

    ১) বিধবা, স্বামী-নিগৃহীতা, দুস্থ মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা ১১ লক্ষ ৫০ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে এবং ভাতার হার মাসিক ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করার প্রস্তাবনা করা হয়েছে;

    (২) মাতৃত্বকালীন ভাতার আওতা ৫ লক্ষ করার প্রস্তাব করা হয়েছে;

    (৩) ভিজিডির আওতাধীন দুস্থ মহিলার সংখ্যা ১০ লক্ষে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে যা পূর্বের চেয়ে ২ লক্ষ ৫০ হাজার বেশি;

    (৪) সকল পৌরসভায় স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য কর্মসূচী ১ লক্ষ ৮০ হাজার ৩০০ জনে আনার প্রস্তাবনা রয়েছে;

    (৫) বয়স্ক ভাতা যার একটি বড় অংশের প্রাপকই মহিলা, তার হার ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় বাড়ানো ও আওতা ৩১ লক্ষ ৫০ হাজারে বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে।

    এগুলো ছাড়াও সামাজিক সুরক্ষার অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর বেশ কটি প্রান্তিক নারীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য সহায়ক। আশার কথা হল যে, ২০১৬-১৭এর প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ আগের বছরগুলোর চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। এ বছরের বরাদ্দ ৪৩,৫০০ কোটি টাকা যা জিডিপির ২.২ শতাংশ (বাজেটের ৫.৮ শতাংশ) যা গতবারের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি।

    তবে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের প্রকল্পগুলো অনেক ক্ষেত্রে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে সমালোচিত হয়ে থাকে যার ফলে প্রকল্পের সুফল থেকে অনেক মহিলা বঞ্চিত হন। এছাড়া প্রকল্পগুলোর আওতা ও মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়লেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল।

    ২০১৬-১৭ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ উৎসাহিত করার জন্য বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে যা প্রশংসার দাবি রাখে। এই প্রণোদনার বেশ কিছু পূর্ববতী কর্মসূচীগুলোর ধারাবাহিকতায় প্রস্তাবিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

    (১) বিভিন্ন শহরে নারীর জন্য কর্মজীবী হোস্টেল নির্মাণ;

    (২) ক্ষুদ্র ও কৃষিঋণ বিতরণে অগ্রাধিকার প্রদান;

    (৩) নারী উদ্দোক্তাদের জন্য ‘জয়িতা’র কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা ইত্যাদি।

    প্রস্তাবিত বাজেটে নারী উদ্যো ক্তাদের প্রণোদনা দেবার জন্য চলমান বিভিন্ন কর্মসূচীর পাশাপাশি নতুন কিছু কর্মসূচীও নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি ব্যাংক ও নন-ব্যাংকে বিশেষ নারী উদ্দোক্তা উন্নয়ন ইউনিট খোলার পদক্ষেপ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের পরিকল্পনা অন্যতম।

    তবে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে, সুবিধাবঞ্চিত ও গ্রামের নারীদের জন্য গঠিত ১০০ কোটি টাকার চ্যালেঞ্জ ফান্ড। উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় গঠিত এই ফান্ড ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে নারী উদ্যোক্তাদের প্রণোদনার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

    এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় বলা জরুরি যে, ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, প্রশাসনিক জটিলতা ও তথ্যের অভাবে অনেক সময়ই আগ্রহী উদ্যোক্তার কাছে ঋণ পৌঁছায় না। অপরপক্ষে, আমাদের দেশের রক্ষণশীল সামাজিক কাঠামোয় অনেক ক্ষেত্রে মহিলাদের ঘরের বাইরের কাজ বা ব্যবসায় সক্রিয় অংশগ্রহণ ভালোভাবে দেখা হয় না। তাই আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও মহিলারা ঋণের আবেদন করতে পারছেন না।

    এছাড়া ব্যবসায়-সংক্রান্ত জ্ঞান ও তথ্য না থাকায়, প্রয়োজনীয় কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতার অভাব ইত্যাদি কারণেও এ ধরনের প্রণোদনাকারী কর্মসূচীর সুবিধা নারী উদ্যোক্তারা নিতে পারছেন না। যেমন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন পরিকল্পনার (refinancing scheme) আওতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্প সুদের ঋণের ১৫ শতাংশ নারীদের জন্য বরাদ্দের পদক্ষেপ থাকলেও বাস্তবে দেখা গেছে যে, এই ঋণের একটি অংশ অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। একই সমস্যা চ্যালেঞ্জ ফান্ডের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

    এছাড়া ২০১৬-১৭ বাজেটের আরও কিছু প্রস্তাবনা বা কর্মসূচী, যেমন, মাল্টি-সেক্টরাল কর্মসূচীর মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচী, নারী নির্যাতন প্রতিরোধের অংশ হিসেবে সাত বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি নারীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও অবস্থান উভয় ক্ষেত্রেই ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা যেতে পারে।

    এছাড়া খাতওয়ারি বিবেচনায় দেখা যায় যে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বাজেটের ১৫.৬ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে যা গত বছরের তুলনায় ৩৪.৫৫ শতাংশ বেশি। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে বাজেটের ৫.১ শতাংশ ও ২০১৫-১৬এর প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় যা ১৮.০৩ শতাংশ বেশি। মানবসম্পদ উন্নয়নে এই বরাদ্দ নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করা যায়।

    তবে সার্বিক প্রয়োজনের তুলনায় এই বরাদ্দ অত্যন্ত অপ্রতুল এবং দক্ষিণ এশিয়াসহ বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় অনেক কম। তাই নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ মানবসম্পদের সার্বিক উৎকর্ষের জন্য এ দুই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।

    বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতার ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, করের আওতা ও হার। প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে বলা চলে যে, প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সীমিত এবং অংশগ্রহণ স্বল্প বেতনের কাজে সীমাবদ্ধ হবার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মহিলাদের আয় করযোগ্য হয় না। প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে মহিলাদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা পুরুষদের চেয়ে বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মহিলাদের (এবং ৬৫ বছরের তদ্দুর্ধ্ব) জন্য এই আয় ৩ লক্ষ টাকা যা পুরুষদের জন্য ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বিদ্যমান প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থা তাই জেন্ডার-সংবেদনশীল বলা যেতে পারে।

    খাতভিত্তিক করের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেটের কিছু কিছু প্রস্তাবনা শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াবে বলে মনে করা যায়:

    (১) ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের কর অব্যাহতির সীমা বার্ষিক ৩৬ লক্ষ টাকা টার্নওভার করা হয়েছে আগে যা ছিল ৩০ লক্ষ টাকা;

    (২) হাঁস-মুরগীর আমদানি করা খাদ্যের উপর পূর্ববর্তী বছরের মতো ২০১৬-১৭ অর্থবছরেও শুল্ক ও কর রেয়াত দেওয়া হয়েছে;

    (৩) নিট পরিসম্পদের প্রদর্শিত মূল্যের ওপর আরোপিত সারচার্জের হার পুনর্বিন্যাস করার প্রস্তাবনা যা আয়বৈষম্য কমানোর মাধ্যমে নারীদের জন্য সহায়ক হবে;

    (৪) এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর শুল্ক হ্রাস ইত্যাদি।

    অপরপক্ষে মোবাইল ফোনের সিমের মাধ্যমে প্রদানকৃত সেবার উপর সম্পূরক শুল্ক ৩ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশতে বৃদ্ধির প্রস্তাব নারীর তথ্য-আহরণের প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে। এছাড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠ্যবইয়ের ওপর আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাবনা বা আমদানি করা চালের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ করার পদক্ষেপ দরিদ্র পরিবারের শিশু ও প্রান্তিক নারীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

    জাতীয় বাজেটে নারীর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ-বরাদ্দ, নারীবান্ধব কর ও রাজস্ব নীতির মাধ্যমে নারীর অবস্থার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সম্ভব। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, নারীর ক্ষমতায়ন কেবল বাজেটের বরাদ্দ, উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর প্রকৃতি এবং ধরনের উপরই নির্ভর করে না, বরং বাজেট বরাদ্দ কতটা দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহৃত হয়েছে এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কত সঠিকভাবে কার্যকর হয়েছে তার উপরও এটা নির্ভরশীল।

    তাই শুধুমাত্র আর্থিক বণ্টন নয়, বরং নারী উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে বাজ়েট কতটা সফল হয়েছে তার বিশ্লেষণের মাধ্যমেই বাজ়েটের জ়েন্ডার-সংবেদনশীলতা বোঝা সম্ভব যার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত প্রকল্পভিত্তিক খাতওয়ারি পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন।

  14. মাসুদ করিম - ১৫ জুন ২০১৬ (১:১২ অপরাহ্ণ)

    Indian transit through Bangladesh begins formally
    1,000t consignment due to reach Ashuganj this morning

    A ship carrying 1,000 tonnes of steel and iron sheets, bound for Tripura, is scheduled to reach Ashuganj river port on Wednesday morning as Bangladesh and India are ready to launch formal transit trade and transportation.

    According to officials, with transshipment of this consignment to India’s northeastern state, the formal transit between the two neighbours will become fully operational, with provision of third-country access.

    Shipping Minister Md. Shahjahan Khan MP will formally inaugurate the transit facility by unloading the cargos from the ship tomorrow (June 16) at a function on the port premises.

    Prime Minister’s Economic Adviser Dr Mashiur Rahman, Indian High Commissioner in Bangladesh Harsh Vardhan Shringla, Commerce Secretary Hedayetullah Al Mamoon and Shipping Secretary Ashok Madhab Roy would also attend the programme.

    The government had earlier allowed transshipment of 10,000 tonnes of Indian food-grains to Tripura via Ashuganj river port on humanitarian grounds, without levying any charge. This time around, they have to pay transshipment fee of about Tk 192.22 per tonne in addition to other charges. Bangladesh also had allowed use of the route for transshipment of heavy machinery to Palatana power plant in Tripura.

    Under the formal transit now, India has to pay all charges, like transshipment fee, berthing fee, landing fee, pilot fee, channel charge, labour hauling etc.

    Goods in transit will be brought from Kolkata to Ashuganj through a river route and then from Ashuganj to Agartala, the capital of Tripura, on land route.

    A Bangladeshi ship, Newtech-6, loaded with about 1,000 tonnes of corrugated iron sheets, sailed from Kolkata on June 3 and reached the port in Khulna’s Angtihara on June 7. The crew made payment to the NBR office there and got clearance for the onward voyage. The vessel finally set out for Ashuganj on June 11 and it is expected to reach the port Tuesday morning.

    The cargos will be unloaded at the port of Ashuganj and then loaded onto Bangladeshi trucks, which will ferry the goods up to the Indo-Bangla border in Akhaura. The vehicles would travel about 52-kilometre road from Ashuganj river port to Akhaura.

    With the arrival of the consignment, India’s request to Bangladesh for providing transit facilities is getting fulfilled. To make the transshipment a reality, the two countries signed a revised river protocol on Inland Water Transit and Trade under Bilateral Trade Agreement in Dhaka in June last year during Prime Minister Narendra Modi’s visit to Dhaka .

    Under the revised agreement both India and Bangladesh would use each other’s territories for transiting goods to a third country.

    The modified deal would enable Bangladesh to use Indian territories for transporting goods to Nepal and Bhutan. Similarly, India would access Myanmar by crossing over Bangladesh.

    India had been provided transshipment facility to carry goods to its northeastern states on a trial basis thrice since September 29 last year. The facility was suspended on October 26 last year as the government decided not to allow any more Indian container transport without developing the infrastructure at Ashuganj port to the requisite level.

    India is eager for quick construction of the proposed container port to facilitate transportation of goods to Agartala, only 50 kms from Ashuganj. But construction of Ashuganj inland container terminal (ICT) faces recurrent delays due to dispute over land, officials said. Some 30 acres of land will be needed to build the ICT.

    The road infrastructure is also not suitable for cargo vehicles to ply. About 25 kms of the 51-km Ashuganj-Akhaura road is narrow and potholed. Besides, as many as 19 bridges and culverts along the stretch have become risky for plying heavy-duty vehicles.

    India also agreed to spend Rs 15.73 billion to upgrade the 51-km stretch of road from Akhaura zero point on the Indo-Bangla border to Ashuganj river port to a four-lane route to facilitate communications between Agartala and Dhaka.

    Former Indian High Commissioner Pankaj Saran had asked the government to provide land and logistic support for early completion of connectivity projects to facilitate overall development of trade and commerce in Southeast Asia.

    India wants to get the transit and transshipment facility mainly for carrying cargos to its ‘seven-sister states’ of Arunachal Pradesh, Assam, Manipur, Meghalaya, Mizoram, Nagaland and Tripura.

    According to sources, the cost of transporting goods to Agartala from Kolkata now is US$ 67 per tonne and it takes 30 days for trucks to reach there. But if the trucks travel through the Kolkata-Ashuganj-Agartala route, the cost would be a maximum of $35 per tonne and travel time around 10 days.

    Chairman of Bangladesh Inland Water Transport Authority (BIWTA) Mozammel Haque told the FE that permission would be given on any such application for transit or transshipment as soon as BIWTA gets it.

    “We are committed to offering transshipment facility under the India- Bangladesh Trade Agreement,” said Mr Haque.

    Against per-tonne goods Bangladesh will get Tk 192.22 as transit fee. Of the total sum the NBR will collect Tk 130 per tonne as customs-related charges, the Road Transport and Highways Division will collect Tk 52.22 per tonne, and BIWTA will take Tk 10 a tonne as supervision charge. An additional Tk 100 per tonne will be charged as escort fee if a vessel owner seeks special security for the goods in transit.

  15. মাসুদ করিম - ১৬ জুন ২০১৬ (৮:০৩ অপরাহ্ণ)

    The danger of anonymous terror

    While it is apparent that some local militant groups have established contact with the Islamic State group and al-Qaeda who have between them claimed responsibility for 35 attacks that have left 31 people dead since 2013, at least 24 other similar attacks conducted during the same period have not been claimed by anyone.

    Law enforcement agencies, security analysts and our correspondents suspect that the unclaimed attacks were perpetrated by the supporters of Jamaat-e-Islami and its student wing Islami Chhatra Shibir, Hefazat-e-Islam, Jama’atul Mujahideen Bangladesh (JMB), Ansarullah Bangla Team and Hilful Fuzul.

    The police are yet to complete their investigations and press specific charges against the suspects in the 24 cases that saw the murder of 22 persons including war crimes trial campaigners; Muslim, Hindu and Christian spiritual leaders and followers; and secularists and teachers.

    Detectives suspect that JMB and Ansarullah may have already established ties with international militant groups. They also say the home-grown militant groups have been working in concert since 2013 to establish Islamic law in Bangladesh by eliminating atheists, secularists and whoever else opposes their style of armed jihad.

    The militants’ proposed “state” includes parts of Buddhist-dominated Myanmar and Hindu-majority India while they also mull attacking those countries to “avenge the persecution of Muslims in the region.”

    The enthusiasm of local militants and Islamist parties increased after the al-Qaeda chief in 2014 declared its new wing for the South Asian region, styled al-Qaeda in the Indian Subcontinent (AQIS). Banned outfit Ansarullah or Ansar al-Islam represents AQIS, whose prime targets have been atheists and liberals.

    Another outlawed group JMB joined international militant networks in 2012, according to SITE Intelligence Group, is suspected of working as the representative of Islamic State in Bangladesh. IS targets include non-Muslim and non-Sunni preachers, foreigners and security personnel.

    Meanwhile, many members of the banned militant groups have joined little known organisations or formed new outfits to escape harsh legal action. They also change names and locations frequently to evade arrest.

    IS-style attacks

    The murder of police officer Babul Akter’s wife Mahbuba Khanam Mitu by three men on a motorcyle has still remained a mystery as neither IS nor AQIS claimed responsibility for the killing in Chittagong on June 5.

    Police suspect that she was killed by militants, especially JMB, for Babul’s active participation and leading role in special operations against its members in the Chittagong region.

    The death of a Hindu rickshaw-van puller named Subidh Chandra, 34, who was building a temple beside his house is also considered an act of militants. He was hacked to death near Malirkura Bridge of Polashbari Upazila under Nilphamari on June 3.

    Septuagenarian Hindu priest Poromanondo Roy was stabbed at a village haat under Tungipara in Gopalganj on April 21 and succumbed to his injuries the following day. Locals caught the killer Shariful Sheikh, 25, immediately. Police said that he might have ties to extremist groups.

    The grenade attack on several mosques inside a Navy base in Chittagong that left at least six people injured on December 18 last year created much hype at home and abroad as it is a strictly restricted area. Authorities said they had arrested one of the would-be suicide attackers who survived. Investigation updates are yet to be disclosed.

    Earlier, in September, the Times of India had published a report citing Bangladeshi intelligence sources that a little-known militant group Hilful Fuzul al-Islam had planned to carry out bomb explosions on over 100 installations in the Chittagong Port area in retaliation for an escalated security clampdown against militants.

    The attack came only two months after IS claimed responsibility for the grenade attack on a Shia procession at Dhaka’s Hussaini Dalan. The same group later launched bomb and gun attacks on three mosques of the Shia and Ahmadiyya communities.

    On December 10, the organiser of a Baul festival, Zakaria Hossain Zakir, was hacked to death by a group of 10-12 people at Akundabaria in Chuadanga.

    It is widely reported that followers of mystic Baul songs have long been subjected to torture and harassment by extremists in different parts of the country.

    Police suspect JMB members for the bomb and gun attack on an Iskcon temple in Dinajpur on December 10 and a grenade attack on Kantaji temple in the same district on December 4. At least 12 Hindu devotees were injured in the attacks perpetrated during religious programmes at the two temples.

    In November, a Shia member in Saidpur and an Iskcon temple organiser in Dinajpur came under attack by suspected militants. Both survived.

    On October 5, Christian priest Luke Sarker was attacked by unidentified people who wanted to slaughter him with machetes. He too survived the attack.

    Self-proclaimed Pir Khijir Khan was slaughtered on October 5 by unidentified assailants at his residence in the capital’s Badda area. Police think JMB members might have killed him for his liberal views.

    Investigators also accuse JMB for the murder of Rahmat Ullah alias Nengta Fakir and his assistant Abdul Kader at the shrine at Bayezid of Chittagong on September 4 last year.

    Ahle Sunnat Wal Jamaat leader and popular TV anchor Sheikh Nurul Islam Faruqi was slaughtered at his house in Dhaka’s East Rajabazar area on August 27, 2014. Family members and party colleagues blame some Jamaat-e-Islami leaders for the murder as Faruqi was vocal against radical Islam, but the police point the finger at JMB members.

    Notorious for collecting ex-Jamaat-Shibir operatives, JMB is also blamed for the murders of Pir Lutfar Rahman and five others at Gopibagh in Dhaka on December 21, 2013; and Pir Toiyobur Rahman and his son Monirul Islam at Khalishpur of Khulna on August 3 the same year.

    AQIS-style attacks

    After pro-liberation youths launched an unprecedented movement at Dhaka’s Shahbagh in 2013 demanding capital punishment for the war criminals, it was Jamaat that reacted harshly on the streets and on social media platforms inciting attacks on its organisers.

    Jamaat and its leaders had collaborated with the Pakistani Army during the 1971 Liberation War and most of its top leaders were under trial at that time.

    Soon, radical Islamist platform Hefazat-e-Islam waged a counter-movement against the Shahbagh organisers terming them atheists, apparently for raising voice against Jamaat, and professed that atheists should be killed.

    Agrani Bank staff Zafar Munshi was beaten and hacked to death in broad daylight in Motijheel area on February 14, 2013, only a week after the Shahbagh movement commenced. It is alleged that he was killed by Shibir activists for putting a banner in front of the bank’s branch demanding death penalty for war criminals.

    Shahbagh activist and architect Ahmed Rajeeb Haider Shovon was killed near his Pallabi house on February 15. After the killing, Jamaat-Shibir-dominated media and their supporters campaigned labelling him as an atheist to justify the murder. AQIS claimed responsibility for the murder much later alleging that he was an atheist. In the verdict pronounced last year, the court said that it was Ansarullah members from North South University who carried out the attack.

    On March 2, leader of Bangladesh Chhatra League and organiser of Gonojagoron Moncho in Sylhet Jagatjyoti Talukder was brutally killed in the city allegedly by Shibir men.

    Cartoonist and engineer Sunnyur Rahman came under attack at Mirpur in Dhaka on March 9 in the midst of the Shahbagh movement. Even though AQIS did not claim responsibility for the attack, members of Ansarullah and like-minded groups confirmed that they attacked Sunnyur.

    Buet student and Chhatra League activist Arif Raihan Dwip was stabbed in a dormitory of the university on April 9 the same year for opposing the Hefazat movement. He succumbed to his injuries on July 2. The lone accused is a suspected Shibir member sympathetic to the Hefazat demands.

    Hefazat supporters were caught as they fled after hacking secularist activist Oyasiqur Rahman Babu to death in Dhaka’s Tejgaon area on March 30, 2015.

    Another Buet student and blogger Tanmoy Ahmed Moon survived a fatal attack carried out allegedly by Shibir operatives in Gaibandha on August 11. Three months later, a college teacher and Bogra Gonojagoron Moncho organiser Zia Uddin Zakaria was hacked to death on December 9 the same year. Shibir has been blamed for the murder of Zakaria.

    On October 9, 2014, police detained three suspected Ansarullah members during an attempt to kill a teacher of Dhaka’s Monipur school whom they labelled an atheist.

    Music teacher and student of Shanto Mariam University Riyadh Morshed Babu was hacked to death in front of his house in Savar on January 4 last year. Police recently declared a bounty for two Ansarullah leaders for their direct involvement in the murder.

    Chittagong Nursing Institute teacher Anjali Devi Chowdhury was hacked to death in Chittagong on January 11, 2015 allegedly by Shibir men for her involvement in the authorities’ decision to impose a ban on wearing the burqa on campus several years ago.

    Differences over veiling practices, especially in classes or examinations halls, remains a contentious and violent issue. A Dhaka University teacher has been the subject of an Islamist agitation for nearly a year. He received a death threat recently.

    At Rajshahi University, Prof AKM Shafiul Islam was killed in November 2014, in a murder claimed by AQIS. He was hacked to death following a Shibir campaign against him for opposing the use of the veil during exams. He was also known to be an avid afficionado of Baul music and philosophy.

  16. মাসুদ করিম - ২০ জুন ২০১৬ (৯:৪১ পূর্বাহ্ণ)

    ‘‌স্বাধীন চলচ্চিত্রকার’‌ পল কক্স প্রয়াত

    ৭৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অস্ট্রেলিয় চলচ্চিত্রকার পল কক্স। রবিবার, অস্ট্রেলিয় ডিরেক্টরস গিল্ডের পক্ষ থেকে টুইটারে প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্রকারের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, স্বল্প খরচায়, একক ভাবে সিনেমা তৈরির ধারাকে জনপ্রিয় করেছিলেন পল। আদর্শগত ভাবে বানিজ্যিক ছবির জনপ্রিয়তার চর্চার বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে সাফল্যের সঙ্গে একাধিক পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি তৈরি করে গেছেন তিনি। কেতাবি ভাষায় ‘‌ফিল্ম নোয়া’‌ বা ‘‌ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম’‌ বলতে যে বোঝায়, বিশ্বের কাছে সেই সংরুপের ছবির উদাহরণ তৈরি করেছিলেন পল কক্স। ৭০ দশকে একটি স্বপ্ল দৈর্ঘ্যের ছবি দিয়ে পরিচালক হিসেবে জীবন শুরু করেন পল, ১৯৭৬ সালে তৈরি করেন প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি ‘‌ইলুমিনেশন’‌। ১৯৮২ সালের তৈরি ‘‌দি লোনলি হার্টস’‌ ছবির জন্য বিশ্ব জোড়া খ্যাতি পান পল। অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার, এ এফ আই অ্যাওয়ার্ড আসে এই ছবির জন্য। পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি এর পর। পরের ছবি ‘‌ ম্যান অফ ফ্লাওয়ারস’‌ মুক্তি পায় ১৯৮৪ সালে, স্থান পায় কান চলচ্চিত্র উৎসবে। দীর্ঘদিন ধরে যকৃতের রোগে ভুগছিলেন, শেষ দিকে তাই অস্ত্রোপচার করে বদল করেন যকৃত। তবে অস্ত্রোপচার পরেই জানা যায়, নতুন যকৃতেও রয়েছে ক্যান্সারের জীবানু। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়লেও, নিজের জীবন নিয়েই ২০১৫ সালে তৈরি করেন ‘‌ফোর্স অফ ডেস্টিনি’‌। বার বার স্বাধীন ছবি তৈরির পক্ষে সওয়াল করে গেছেন, বানিজ্যিক সাফল্যের পিছনে না দৌড়ে তৈরি করতে চেয়েছেন নিজের ছবির ভাষা। শেষ পর্যন্ত স্বাধীন ছবি করিয়েদের কাছে এখনও শৈল্পিক আদর্শের পিতৃসম হয়ে আছেন পল কক্স।‌

  17. মাসুদ করিম - ২০ জুন ২০১৬ (৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ)

    Rajshahi: the city that took on air pollution – and won

    In Bangladesh, one of the world’s most polluted cities has led the way globally in ridding itself of harmful PM10 particles

    Once, Rajshahi’s sweltering summers were made worse by a familiar problem on the Asian subcontinent: windows would have to be shut, not because of the wind or monsoon, but because of the smog.

    Dust blown up from dry riverbeds, fields and roads, and choking smog from ranks of brick kilns on the edge of town helped to secure the place a spot in the top tier of the world’s most polluted cities.

    Then suddenly Rajshahi, in Bangladesh, hit a turning point so dramatic that it earned a spot in the record books: last year, according to UN data, the town did more than any other worldwide to rid itself of air particles so harmful to human health.

    “We didn’t know about this,” admits Ashraful Haque, the city’s chief engineer, who like some of his fellow residents is rather bemused by the achievement.

    Rajshahi does not have a large industrial area, and it is too poor to have streets clogged with cars. Instead, Haque believes it was the campaign to clean up the brick kilns, as well as efforts to make the city greener, that have turned the tide.

    Levels of larger PM10 particles went from 195 micrograms per cubic metre in 2014, to just 63.9 in 2016, a reduction of about two-thirds, and the largest in the world in absolute terms. Smaller PM2.5 particles have been nearly halved to 37 micrograms per cubic metre from 70.

    Haque, who was born and educated in the city, remembers as a child having to close windows and doors to shut out a thin film of dirt that would settle across every surface in the house when a wind swept in from outside.

    Nowadays it’s a different city, thanks to the campaign that began with a tree-planting drive more than 15 years ago, and now encompasses everything from transport to rubbish collection. Dust still hangs heavy in the air on occasions, but the transformation has been welcomed by local residents in a country where urban authorities more often generate frustration and resentment.

    “Things have got better for my classmates with asthma,” said Fatema Tuzzohra, a 13-year-old enjoying a riverside park after school. “I love the city, it is really clean and green.”

    The city began tackling transport issues in 2004, importing a fleet of battery-powered rickshaws from China, and banning large lorries from the city centre in daytime. The three-wheelers are the main form of public transport, and their batteries keep the air free of the petrol and diesel fumes that hang over other cities.

    Upgrades to the brick kilns, such as changing chimneys and fuel, have reduced the amount of pollution they spew out around the city, Haque says. And he has personally designed and overseen a project to make the city centre greener while reducing the amount of dust kicked up by people and vehicles.

    “We have a ‘zero soil’ programme in the city, with lots of planting and green intervention. When it works, there should be no part of the road that will be dirt. It will be all grass, flower or pavement,” says Haque.

    He became convinced that the city needed more pavements after trips to study urban planning abroad. At the time the asphalt surfacing of the city roads mostly ended in a dusty verge, sometimes with open drains, dangerous and unappealing for walking along, he said.

    “In 2010, after a visit to London, I started creating pavements. I couldn’t believe it, everyone has to walk at least 2km a day [in London], but here people finish lunch and look for a rickshaw. Even in the good neighbourhoods, there are no pavements.”

    Apart from encouraging a healthier lifestyle, they are vital for controlling dust in the air, he says. “If you have them, no soil will fly during the summer seasons.” So far they have built about 9 miles (15km) of pavements, but soon hope to expand to 30, he said.

    The road transformation will go beyond pedestrians this month, when city workers start building the city’s – and the country’s – very first cycle lane.

    Take-up is likely to be slow in a city already sweltering in the summer heat, and where the only people on bicycles are those too poor to afford other transport, Haque admits. But inspired by trips abroad, he hopes to sow the first seeds of change.

    “I went to the river Thames and saw people riding bikes, I got the idea from Japan and China as well. We don’t have enough land for a separate lane in many places, but where we can we will separate with a border, making a pavement and a cycle lane beside it.”

    People are proud of their town, and have started looking after it more closely after the transformation, says restaurateur SM Shihab Uddin, who spent nearly a decade working in Cyprus before returning to open his own chain of eating spots for the growing middle class.

    “It has changed so much,” he said. “I came back in 2009, and I was worried that I would find it hard to live here after so much time abroad. But it was already transformed.”

    India’s cleanest city

    The small city of Tezpur in east India has traditionally had little to brag about. The holy Brahmaputra river roars at its edges and the mighty Himalayan mountains adorn its skyline, but couched between these geographical marvels, Tezpur itself is little more than a layover stop for travellers in the state of Assam.

    But while many of India’s industrial towns have reached peak pollution levels, Tezpur’s air is getting cleaner. Since the last WHO air-quality report in 2014, Tezpur’s PM10 pollution, caused by dust particles, has reduced more than any other Indian city to close to 15% of the level it was.

    Tezpur’s PM10 levels now stand at 11mg per cubic metre. According to WHO guidelines, the permissible limit for PM10s is 20mg per cubic metre.

    Tezpur’s air-quality improvement stands out in India, where focus on industrial development and rapid urbanisation in recent years has driven pollution levels up in most other cities. According to the WHO report, six of the 10 most polluted cities in the world are in India, putting millions of people at serious risk of cardiac and respiratory infections.

    M Nath, senior environmental engineer at the Pollution Control Board, says Tezpur’s clean air is noticeable to travellers from other cities. “When we have visitors from other cities like Delhi or Guwahati, they immediately feel the difference in the air quality here,” Nath says. “But we’re a small city, we don’t have any major industries that cause a lot of pollution and people are conscious [about the environment]. It may not be so easy in other places.”

    It is difficult to single out one reason for Tezpur’s improvement , but Nath explains that heightened awareness means people are making conscious efforts to go green. “People in Tezpur are very conscious about the environment,” Nath says.

    In recent years, rising incomes and greater awareness about the environment means people have started buying cars that meet the latest emission standards, and discarded older, polluting vehicles.

    Last year, more than 800 trees were planted by students in the city, as part of a massive environmental campaign at Tezpur University.

    Activists such as Jadav Payeng, nicknamed “India’s forest man”, have also made significant efforts to improve the environment in regions near Tezpur. For the last 30 years, Payeng has planted a forest’s worth of trees, covering 550 hectares (2.1 sq miles) of land.

    Industrial efforts to cut back on coal-powered machines have also helped significantly. “The supply of liquefied petroleum gas [LPG] has improved a lot, and so many tea plantations are using it now,” he says. LPG is produced from fossil fuels, but produces virtually no particulate pollution compared with burning coal.

    Assam’s hundreds of plantations produce nearly 700,000kg of tea a year, mostly exported around the world. Until recently, many of them depended solely on coal to fuel their machines.

    Nath says LPG has now reached even more remote village areas near Tezpur. Access to LPG and subsidies from the government have prompted many villagers to use cleaner fuel for cooking and burning waste. “People don’t need to use wood fires any more; most of them have access to LPG.”

    Sanjiv Eastment, a manager for McLeod Russel, the world’s biggest tea producer, says he can feel the improvement in air quality since the company started using LPG in their incinerators. “Not just outside, you can feel it in the factory itself,” he says. “There’s no more dust, no more breathing problems.”

    Eastment estimates that better technology and more easily available LPG have saved thousands of tonnes of coal in recent years. “We make around 100m kilos of tea a year, and for each kilo of tea we burn around 1kg of coal. But it used to be much more – 1.6, 1.8 kilos a few years ago. Now we have new boilers that are more energy efficient and our incinerators are fuelled by LPG,” he says. “We still need to use coal for our tea dryers though.”

    According to Eastment, the company switched from coal to LPG because it was cheaper. “After all we’re in the business of tea to make money,” he says.

    Strong regulation and demands from foreign countries to meet production standards have also contributed to the change. Foreign countries have become less willing to accept tea imports unless they are certified by the Rainforest Alliance. “It means that all open fires have stopped – even in the workers’ quarters, to cook or burn waste,” Eastment says. “That makes a really big difference.”

    For Nath though, it is adopting the right attitude to the problem that is key. The Pollution Control Board has run campaigns in schools and villages to encourage people to adopt greener lifestyles. “People have been very enthusiastic,” Nath says. “They are really proud about the environment here … We look after our city.”

    This article has been amended to correct air pollution measurements of PM10 and PM2.5 particles mistakenly given in terms of square metres rather than cubic metres. Miles were also misspelled as mines.

  18. মাসুদ করিম - ২১ জুন ২০১৬ (৮:২৬ পূর্বাহ্ণ)

    বন্ধ হল বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ড

    শুধু ভারতের নয়, কলকাতার বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ড সারা বিশ্বের প্রাচীনতম ফোটোগ্রাফি স্টুডিওগুলোর অন্যতম ছিল। ১৭৬ বছরের পুরনো, ঐতিহাসিক এই প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছা অবসরে চলে গেল গত বৃহস্পতিবার। উনিশ এবং বিশ শতকে বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ডের শাখা ছিল ভারতের সব বড় শহরে, এবং লন্ডন ও প্যারিসে। ব্রিটিশ ভারতের প্রামাণ্য জীবন–ছবির এক বিপুল, অসাধারণ সংগ্রহ ছিল এই স্টুডিওর নিজস্ব আর্কাইভের সম্পদ। ঐতিহাসিক, গবেষক থেকে শুরু করে সত্যজিৎ রায়ের মতো ডিটেলসনিষ্ঠ চলচ্চিত্রকার ভরসা করতেন সেই ফটো আর্কাইভের ওপর। ২৫ বছর আগে এক আচমকা অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে খাক হয়ে যায় সেই ঐতিহাসিক সংগ্রহ। এবার ঝাঁপই বন্ধ হয়ে গেল। স্টুডিও‌র মালিক জয়ন্ত গান্ধী জানিয়েছেন, বার্ধক্যজনিত কারণে কিছুটা বাধ্য হয়েই বন্ধ করে দিচ্ছেন স্টুডিওটি। তাঁর আপশোস, এরকম ঐতিহ্যশালী স্টুডিওকে বাঁচিয়ে রাখতে ভালভাবে রক্ষণানাবেক্ষণের প্রয়োজন। সেটা সম্ভব হচ্ছে না। দোকানের ৩০ বছরের পুরনো কর্মী প্রেম শঙ্কর প্রসাদের মতে, ২৫ বছর আগের ওই বিধ্বংসী আগুনই সব শেষ করে দিয়েছিল।‌

    Lights go out at world’s longest-running studio

    Bourne & Shepherd, the world’s longest-running photographic studio, has called it a day after 176 years during which it not only chronicled Kolkata’s history but also captured defining moments of the Raj.

    Some of its photographs hang from the Smithsonian Institution, National Gallery of Portraits in London, the Cambridge University library -and just about every home that worships Rama Krishna Paramhansa. B&S took the only known portraits of the mystic, and had the sole charter for the Delhi Durbar in 1911.

    In the end, the 65gram memory card weighed heavy on a stockpile of history . Jayant Gandhi, the current owner of the studio, told TOI on Wednesday that it is not possible for him to “run the studio any more” because of his advanced age. The studio never recovered from a devastating fire in February 1991 and the shift of photography from film to digital format drove the final nail.The studio’s renowned skill in converting a ‘photo-sensitive film’ to ‘negative’ and from there to a print on bromide paper became completely irrelevant. B&S lost almost its entire treasure trove in the 1991inferno. It marked the beginning of the end. “Everything was destroyed in the fire and the loss became irreversible. We had the finest collection of photographs, but the treasure vanished in smoke,” said Gandhi. Does he have any plans to revive it in a different avatar? “Right now I don’t have any such plan. LIC is its owner. I am only a leasee,” he added.

    The four-storeyed structure, which is a landmark in Kolkata, is a spectre of its past. Youngsters call it “that haunted building”. It’s hard for this generation to believe that the studio rooms upstairs once buzzed with activity , the likes of Rabindranath Tagore and Satyajit Ray flitted in and out, and British sahibs and memsahibs came in their finery to have their portraits taken here.

    The blackened elevator shaft today stands as a charred frame of history .The lift was never restored. The massive rooms on the fourth floor, where the studio and the library used to be, are now open to the sky . Beside the staircase lies a big, rusty iron safe, which is literally a treasure chest. “We used to keep our most precious glass negatives in this safe. But the fire almost melted the metal and we could never open it thereafter,” said Gandhi, adding that antique equipment have been shifted.

    The iconic building still had an old functional studio till Wednesday . The camera used by the legendary Samuel Bourne exists. But more like a sideshow in the digital age.

    Among the most iconic photographs the studio took is the 1886 portrait of Shri Ramakrishna, a few months before his death at the insistence of Swami Vivekananda. An apprentice dropped the glass negative and a semi-circular crack developed just above the spiritualist’s head. The halo you see in the photograph of Sri Ramakrishna comes from this crack.

    “The studio has been shut for a month. Most of the old employees have retired. On the ground floor, there was a photography equipment shop but that too closed suddenly ,” said a vendor who runs a shop opposite the studio.

    ‘কলকাতা তোমায় অমন করে বন্দী করবে কে?’

    ‘কিন্তু বর্ন অ্যান্ড শেফার্ড উঠে যাবে তার আলো তার আঁধার নিয়ে’

  19. মাসুদ করিম - ২১ জুন ২০১৬ (১:৩৮ অপরাহ্ণ)

    জুট জিওটেক্সটাইল :উন্নয়ন ঝুড়িতে নতুন সংযোজন

    ২০১০ সাল থেকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জুট ডাইভার্সিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) দক্ষ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি), সড়ক ও জনপথ বিভাগ (আরএইচডি), বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বিডবিল্গউডিবি), সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন (এসডবিল্গউও), মৃত্তিকা গবেষণা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) এবং বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) সম্মিলিতভাবে পাটজাত জিওটেক্সটাইল বা জুট জিওটেক্সটাইল উদ্ভাবন করা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে এর উপযোগিতা নির্ণয় করার উদ্দেশ্যে পাঁচ বছরব্যাপী একটি গবেষণাধর্মী পরীক্ষামূলক প্রকল্প হাতে নেয়। এই প্রকল্পের অর্থায়ন করে জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন কমন ফান্ড ফর কমোডিটিস (সিএফসি), বাংলাদেশ সরকার এবং ভারত সরকার। প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য ছিল পরিবেশবান্ধব জুট জিওটেক্সটাইল উদ্ভাবন করা এবং এর সম্ভাব্য প্রয়োগ ক্ষেত্রগুলো সুচিহ্নিত করা।

    ‘জিওটেক্সটাইল’ হলো এক ধরনের টেকনিক্যাল টেক্সটাইল (দেখতে অনেকটা চালের বস্তার মতো), যা মাটির উপরিভাগে বা অভ্যন্তরে ব্যবহার করে পুরকৌশলগত (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং) সুবিধা পাওয়া যায়। আমাদের দেশে নদীভাঙন রোধে বা রাস্তার ঢাল সংরক্ষণের জন্য বিপুল পরিমাণে সিনথেটিক জিওটেক্সটাইল ব্যবহার করা হচ্ছে বেশ অনেক বছর ধরে। পলিমার থেকে তৈরি এসব সিনথেটিক জিওটেক্সটাইল যতদিন পর্যন্ত সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে না আসছে অর্থাৎ যতদিন পর্যন্ত এরা মাটির নিচে চাপা থাকে, ততদিন পর্যন্ত এদের কোনো ক্ষয় হয় না। তাই সিনথেটিক জিওটেক্সটাইল পরিবেশবান্ধব নয় বলা যেতে পারে। আবার প্রাকৃতিক তন্তু পাট থেকে উৎপন্ন জুট জিওটেক্সটাইল পানির সংস্পর্শে থাকলে ছয় মাস থেকে বারো মাসের মধ্যেই তার শক্তি হারায়। এটি জুট জিওটেক্সটাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে একদিক থেকে যেমন দুশ্চিন্তার কারণ আবার অন্যদিকে পরিবেশবান্ধবতার দিক থেকে এই বৈশিষ্ট্যটি একটি আশীর্বাদ। তাই বর্তমান প্রকল্পের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দুটি_ এক. ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে পাটের স্থায়িত্ব (নন-বায়োডিগ্রেডিবিলিটি) বাড়ানো এবং দুই. এমন কিছু পুরকৌশলগত প্রয়োগক্ষেত্র চিহ্নিত করা, যেখানে কোনো ট্রিটমেন্ট না করেই প্রাকৃতিক পাটজাত জুট জিওটেক্সটাইল সরাসরি ব্যবহার করা যায়।

    বুয়েট, বিজেআরআই ও বিজেএমসির গবেষকরা প্রয়োজন এবং বাস্তবতা বিবেচনা করে তিন ধরনের জুট জিওটেক্সটাইল (জেজিটি) উদ্ভাবন করেন_ এক. ঘন বুননের ৬২৭ গ্রাম ওজনের জেজিটি; দুই. ঘন বুননের ৭২৪ গ্রাম ওজনের জেজিটি এবং তিন, জালের মতো দেখতে ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের জেজিটি। প্রতি বর্গমিটারে ৬২৭ গ্রাম এবং ৭২৪ গ্রাম ওজনের জেজিটি কোনো ট্রিটমেন্ট ছাড়াই সরাসরি ব্যবহার করা যাবে গ্রামীণ সড়ক তৈরির ক্ষেত্রে। নদীর পাড় ভাঙন রোধের লক্ষ্যে পাড়ের ঢালের ওপর যে জেজিটি ব্যবহার করতে হবে, তা হচ্ছে ৬২৭ গ্রাম ওজনের। তবে এ ক্ষেত্রে একে ট্রিটমেন্ট করে নিতে হবে। বিজেআরআই উদ্ভাবিত ট্রিটমেন্ট পদ্ধতিতে এই জেজিটির স্থায়িত্ব পাঁচ বছর পর্যন্ত নিশ্চিত করা যায়। আর জালের মতো দেখতে ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের জেজিটি, যাকে অনেক সময় ‘সয়েল সেভার’ বলা হয়, ব্যবহার করা যাবে পাহাড়ের উপরিভাগের উর্বর মাটির ক্ষয়রোধের জন্য অথবা রাস্তার পাশের ঢালের মাটির ক্ষয়রোধ করার জন্য। এই জেজিটিগুলো চওড়ায় ১.২২ মিটার এবং লম্বায় অন্তত ৩০ মিটার হয়ে থাকে।

    পাহাড়ের উপরিভাগের মাটি ক্ষয়রোধে জেজিটি কীভাবে কাজ করে সেটি ব্যাখ্যা করি। পাহাড়ের উপরিভাগের মাটির যে ক্ষয় বা ধস হয় সেটি ঘটে মূলত পাহাড় ন্যাড়া হওয়ার ফলে। সেটি প্রাকৃতিকভাবে হোক আর মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট হোক। পাহাড়ের ওপর যখন ঘাস বা গাছপালা থাকে না, তখন বৃষ্টির পানি সরাসরি আঘাত করে মাটিকে সহজেই আলগা করে ফেলে এবং অল্প বৃষ্টিতেই মাটির ভেতরে পানি তাড়াতাড়ি ঢুকে পড়ে। এতে করে মাটি ভারি হয়ে যায় এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে আমরা মাটির ক্ষয় বা ধস দেখতে পাই। অথচ পাহাড়গুলো যদি ন্যাড়া না হতো অর্থাৎ এই পাহাড়গুলোর ওপর যদি যথেষ্ট পরিমাণ গাছগাছালি থাকত, তাহলে বৃষ্টির পানি সরাসরি মাটিতে আঘাত হানতে পারত না এবং গাছের শিকড় মাটিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে থাকত বলে এত দ্রুত ধস নামাতে পারত না। তার মানে, পাহাড়ের ধস রোধ করার জন্য মূলত প্রয়োজন এমন গাছগাছালি, যাদের ডালপালা একটা ছাউনির মতো কাজ করবে এবং যাদের শিকড় হবে গভীর ও সুবিস্তৃত।

    সমস্যা হলো, একটি ন্যাড়া পাহাড়ের ওপর নতুন করে গাছগাছালি গজাতে ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে বৃষ্টি হলে তখন পাহাড়ের ধস রোধ করার জন্য কোনো ব্যবস্থা থাকছে না। এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়টাতে পাহাড়ের ধস রোধ করার জন্যই জুট জিওটেক্সটাইল ব্যবহার করা হয়।বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার ঠিক আগে আগে ন্যাড়া পাহাড়ের গায়ে সয়েল সেইভার জেজিটি বিছিয়ে দেওয়া হয়। সয়েল সেইভারের বিশেষত্ব হলো, এটি প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ মাটিকে আবৃত করে রাখে এবং এর পানি শোষণ ক্ষমতাও প্রতি বর্গমিটারে ৩-৪ লিটার। এটি একদিকে যেমন বৃষ্টির পানি শোষণ করে মাটির প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়; অন্যদিকে সরাসরি বৃষ্টির ফোঁটার আঘাত থেকেও অনাবৃত মাটিকে রক্ষা করে। ফলে অনেক দীর্ঘ সময় ধরে টানা বৃষ্টি হলেও পাহাড়ধস ঘটে না। বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি পাওয়ার কারণে আস্তে আস্তে এই সয়েল সেইভারের ফাঁকা অংশগুলো দিয়ে গাছ এবং ঘাস গজিয়ে গেলে তখন এটির আর প্রয়োজন হয় না অর্থাৎ তখন জুট জিওটেক্সটাইল পচে গেলেও গজিয়ে ওঠা ঘাস আর গাছের ছাউনিই পাহাড়কে বৃষ্টির পানির আঘাত থেকে রক্ষা করে আর গাছ-ঘাসের গভীর এবং সুবিস্তৃত শিকড় পাহাড়ের মাটিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে রাখে। তাই এ ক্ষেত্রে পাটের পচনশীলতা কোনো বাধার কারণ তো নয়ই বরং একে আমরা প্রকৃতির আশীর্বাদ বলতে পারি। বলা প্রয়োজন, প্রাকৃতিক তন্তু পাটের তৈরি এই জুট জিওটেক্সটাইল পচে গিয়ে মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং মাটির পুষ্টিগুণ বাড়ায়, যা আমাদের পার্বত্য এলাকার কৃষির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

    উপরিউক্ত প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশনের তত্ত্বাবধানে রাঙামাটিতে একটি এবং আলীকদম-থানচি রোডে তিনটি পাহাড় সংরক্ষণের কাজ করা হয়েছে এই জুট জিওটেক্সটাইল ব্যবহারের মাধ্যমে। এই চারটি পাহাড়ে প্রতি বর্ষা মৌসুমেই যেখানে পাহাড়ধস হতো, ‘সয়েল সেইভার’ ব্যবহারের পর থেকে গত তিন বছর ধরে এই পাহাড়গুলোতে নতুনভাবে কোনো ধস হয়নি।

    এবার গ্রামীণ রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে জেজিটি কীভাবে কাজ করে, সেটি ব্যাখ্যা করছি। আমাদের দেশে এলজিইডি বছরে প্রায় ৩০০০-৪০০০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করে। অনেক ক্ষেত্রেই টেকনিক্যাল কারণে এবং বাস্তব সীমাবদ্ধতার কারণে শক্ত মাটির স্তরের (সাবগ্রেড) ওপর দিয়ে এই রাস্তাগুলো তৈরি করা সম্ভব হয় না। এসব ক্ষেত্রে আমরা সাবগ্রেডের ওপর সাধারণত যে বালুর স্তর বা ইম্প্রুভড সাবগ্রেড ব্যবহার করি, তার মাঝখানে জুট জিওটেক্সটাইলের একটি পাতলা স্তরকে স্যান্ডউইচ স্লাইসের মতো করে ব্যবহার করতে পারি। তারপর বালুর স্তরের ওপরে আমরা যথারীতি ইটের খোয়া দিয়ে যথাক্রমে সাব-বেইস এবং বেইস লেয়ার তৈরি করে রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারি। এই প্রায়োগিক গবেষণা প্রকল্পের আওতায় ৬২৭ গ্রাম এবং ৭২৪ গ্রাম ওজনের জেজিটি ব্যবহার করে এলজিইডি এবং সওজের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।

    বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, যেসব সাবগ্রেডের ভার বহন ক্ষমতা ছিল ২-৩, জুট জিওটেক্সটাইল ব্যবহারের ফলে সেসব সাবগ্রেডের ভার বহন ক্ষমতা ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে অন্ততপক্ষে আড়াইগুণ বেড়ে হয়েছে ৫-৭.৫। এর মানে হলো, জুট জিওটেক্সটাইল ব্যবহার করে আমরা রাস্তার পুরুত্ব কমাতে সক্ষম হবো। ফলে রাস্তা নির্মাণে অর্থ ও সময় দুই-ই সাশ্রয় হবে। আরও মজার ব্যাপার হলো, একবার মাটির এই ভার বহন ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার পর, পরীক্ষা-নিরীক্ষার তিন বছর সময়কালের মধ্যে কখনও কমে যেতে দেখা যায়নি । এ থেকে বোঝা যায় যে, জুট জিওটেক্সটাইল পচে মাটির সঙ্গে মিশে গেলেও কারিগরি দিকে থেকে কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। বরং পচে গিয়ে মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ার ফলে এটিকে পরিবেশবান্ধব একটি নির্মাণসামগ্রী হিসেবেই ভাবা যেতে পারে।

    নদীর পাড় ভাঙন রোধে জুট জিওটেক্সটাইলে একটু অন্যভাবে কাজ করে। প্রিয় পাঠক, নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন, আমাদের দেশে নদীর পাড় ভাঙন রোধের লক্ষ্যে প্রথমে নদীর পাড়কে মাটি ভরাট করে অথবা ছেঁচে একটি নির্দিষ্ট ঢালে আনা হয়। তারপর এর ওপর একটি পাতলা বালুর স্তর দেওয়া হয়। এই বালুর স্তরের ওপর যথাক্রমে দেওয়া হয় সিনথেটিক জিওটেক্সটাইল, ইটের খোয়া এবং কংক্রিটের বল্গক। এখানে জিওটেক্সটাইলের কাজ হচ্ছে মূলত মাটিকে ধরে রাখা এবং পানিকে বেরিয়ে যেতে দেওয়া অর্থাৎ এটি একটি ছাঁকনির কাজ করে। এই যে ছাঁকনি হিসেবে জিওটেক্সটাইল কাজ করে, এটিও আসলে খুব বেশি দিনের জন্য প্রয়োজন হয় না। বছরতিনেক পরেই জিওটেক্সটাইলের নিচের নদীর পাড়ের মাটি এবং জিওটেক্সটাইলের ওপরের ইটের খোয়া মিলে একটি প্রাকৃতিক ছাঁকনি (ন্যাচারাল ফিল্টার) তৈরি হয়। এই পর্যায়ে সেখানে জিওটেক্সটাইল থাকল কি থাকল না সেটি অর্থহীন হয়ে পড়ে। এ কারণেই বলা হচ্ছে যে, নদীর পাড় ভাঙন রোধের ক্ষেত্রে সিনথেটিক জিওটেক্সটাইলের পরিবর্তে জুট জিওটেক্সটাইল ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যেহেতু জুট জিওটেক্সটাইলকে পানির সংস্পর্শে অন্তত তিন বছর টিকে থাকতে হবে। তাই এক জুট জিওটেক্সটাইলের ট্রিটমেন্ট করে নিতে হবে। বাংলাদেশ জুট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) গবেষণার মাধ্যমে জুট জিওটেক্সটাইলের পচনশীলতা পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়াবার জন্য নানা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। এসব পদ্ধতিতে ট্রিটমেন্ট করে জুট জিওটেক্সটাইলে ব্যবহার করা হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাঁচটি নদীর পাড় সংরক্ষণের জন্য। এই সংরক্ষণ কাজের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় তিন কিলোমিটার এবং ১,১০,০০০ বর্গমিটার। তুলনামূলক বিশেল্গষণের জন্য এসব নদীর পাড়ে সিনথেটিক জিওটেক্সটাইলও ব্যবহার করা হয়েছে। প্রায় ৫ বছর ধরে এই নদীগুলোর পাড় এখনও সুরক্ষিত রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ভারতেও ১৬টি ট্রায়ালের মাধ্যমে জুট জিওটেক্সটাইলের উপযোগিতা যাচাইয়ের কাজ চলছে গত ৫ বছর ধরে। তাদের কাছ থেকেও একই ধরনের আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া গেছে।

    উলেল্গখ্য, সাধারণত পাট ভালোভাবে জন্মাতে ১২০ দিন মতো সময় লাগে। এই সময়ে প্রতি হেক্টর জমিতে যে পাট উৎপন্ন হয় তা প্রায় ১১ টন অক্সিজেন নিঃসরণ করে এবং ১২ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। কাজেই এর পরিবেশবান্ধবতার শুরু জন্ম থেকেই। এছাড়াও রাস্তা নির্মাণ, পাহাড়ধস রোধ বা নদীভাঙন রোধের কাজে যখন এটি ব্যবহার হচ্ছে, তখন এক পর্যায়ে এটি পচে গিয়ে মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। কাজেই এটি নিঃসন্দেহে পরিবেশবান্ধব।

    একটি সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে যে, এলজিইডি, সওজ, পাউবো এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে উলিল্গখিত তিনটি প্রায়োগিক ক্ষেত্রে যদি জুট জিওটেক্সটাইলের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়, তাহলে বছরে প্রায় ১২৭ মিলিয়ন বর্গমিটার জুট জিওটেক্সটাইলের চাহিদা তৈরি হবে। এই চাহিদার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। জুট জিওটেক্সটাইলের আন্তর্জাতিক বাজারের কোনো শেষ সীমারেখা নেই। কারণ, বহির্বিশ্বে পরিবেশবান্ধব প্রাকৃতিক তন্তুজাত দ্রব্যসামগ্রীর প্রতি আকর্ষণ সীমাহীন। বলাই বাহুল্য, আমাদের রাষ্ট্রায়ত্ত এবং প্রাইভেট পাটকলগুলো এই বিপুল পরিমাণ জুট জিওটেক্সটাইল প্রস্তুত ও সরবরাহ করার জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে।

    এই গবেষণা প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিউটশন (বিএসটিআই) জুট জিওটেক্সটাইলের স্পেসিফিকেশন বিডিএস ১৯০৯ :২০১৬ মান হিসেবে অবমুক্ত করেছে। এলজিইডি, বিডবিল্গউডিবি এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে জেজিটিকে তাদের সিডিউলভুক্ত করেছে। বুয়েট ও জেডিপিসি সম্মিলিতভাবে ডিজাউন মেথোডলজি এবং মাঠে পর্যায়ে প্রয়োগের জন্য রূপরেখা প্রস্তুত করে দিয়েছে। এসব কিছুর ফলে আমাদের প্রকৌশলী এবং ঠিকাদাররা এখন সহজেই জুট জিওটেক্সটাইল বাস্তব প্রকল্পে ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন।

    জিওটেক্সটাইল যে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তার মূল কারণ বর্তমান সরকারের নিরলস এবং আন্তরিক পৃষ্ঠপোষকতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে তার সাম্প্রতিক পরিদর্শনের সময় পাট ও পাটজাত দ্রব্যের প্রচার-প্রসারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী ২০১৫ সালের বাজেট বক্তৃতায়ও জুট জিওটেক্সটাইলের সম্ভাবনার কথা উলেল্গখ করেন। দেশীয় প্রকল্পগুলোতে ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত জুট জিওটেক্সটাইলকে এখন বিশ্ববাজারে নিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। কাজটি করার জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বিজেএমসিকেই মুখ্য ভূমিকা রাখতে হবে। সেই সঙ্গে জেজিটির আরও নতুন নতুন ভ্যারাইটি উদ্ভাবনে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার ধারাবাহিকতাও অব্যাহত রাখতে হবে। গবেষক এবং প্রকৌশলীদের দীর্ঘ পাঁচ বছরের গবেষণা ও সুচিন্তার ফলে উদ্ভাবিত জুট জিওটেক্সটাইল বাংলাদেশের উন্নয়ন ঝুড়িতে গুরুত্বপূর্ণ নতুন একটি সংযোজন হিসেবে স্থান পাবে_ এটিই এখন আগামীর প্রত্যাশা।

  20. মাসুদ করিম - ২৩ জুন ২০১৬ (১:৫৯ পূর্বাহ্ণ)

    প্রয়াত সমীর রায়চৌধুরি

    প্রয়াত হলেন ছয়ের দশকের হাংরি জেনারেশন সাহিত্য আন্দোলনের পুরোধা তাত্ত্বিক, বিশিষ্ট লেখক সমীর রায়চৌধুরি। বুধবার সকালে ই এম বাইপাসে এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৮৪। রেখে গেছেন স্ত্রী বেলা রায়চৌধুরি, দুই ছেলে, এক মেয়েকে। পাঁচের দশকে ‘‌কৃত্তিবাস’‌ পত্রিকার সূচনার টগবগে সময়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের বন্ধু সমীর সে–সময়ের রঙিন বহু ঘটনার ঝলমলে চরিত্র। সমীরদের চাইবাসার বাড়িতে আমন্ত্রণে গিয়েই কৃত্তিবাস কবিকুলের চাইবাসা পর্ব। সুনীলের প্রথম বই ‘‌একা এবং কয়েকজন’‌ সমীরই প্রকাশ করেছিলেন, নিজের পকেটের পয়সা দিয়ে। কারণ, তখন বন্ধুদের ভেতর সমীরই ছিলেন চাকরিজীবী। কৃত্তিবাস পত্রিকা থেকে যে ধারাটি সাহিত্যে মুক্তির নতুন উল্লাস জাগাতে হাংরি আন্দোলনের পথ নিল সেই তরুণ দলের তাত্ত্বিক ছিলেন সমীর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এই আন্দোলনের আরেক পুরোধা ভাই মলয় রায়চৌধুরি। পরে সমীর, মলয় কলকাতায় চলে এলেন। সমীর রায়চৌধুরি সম্পাদনা করতেন ‘‌হাওয়া ৪৯’‌ পত্রিকাটি। তাঁদের ব্রহ্মপুরের বাড়ির বারান্দায় রোজ এসে বসে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় একটু একটু করে লিখেছিলেন শাহজাদা দারাশুকো উপন্যাসটি। সমীর রায়চৌধুরির উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বইয়ের মধ্যে রয়েছে— খুল যা শিম শিম। এ বইয়ে রয়েছে কয়েকটি গল্প আর কিছু গদ্য। ‌শিলিগুড়ির গল্পবিশ্ব পত্রিকা বের করেছিল সমীর রায়চৌধুরি বিশেষ সংখ্যা।‌

  21. মাসুদ করিম - ২৫ জুন ২০১৬ (১১:০৩ পূর্বাহ্ণ)

    The sky has not fallen after Brexit but we face years of hard labour

    It is time for Project Grit. We warned over the final weeks of the campaign that a vote to leave the EU would be traumatic, and that is what the country now faces as markets shudder and Westminster is thrown into turmoil.

    The stunning upset last night marks a point of rupture for the post-war European order. It will be a Herculean task to extract Britain from the EU after 43 years enmeshed in a far-reaching legal and constitutional structure. Scotland and Northern Ireland will now be ejected from the EU against their will, a ghastly state of affairs that could all too easily lead to the internal fragmentation of the Kingdom unless handled with extreme care.

    The rating agencies are already pricing in a different British destiny. Standard & Poor’s declared that Brexit “spells the end” of the UK’s AAA status. The only question is whether the downgrade is one notch or two, and that hangs on Holyrood. Moody’s has cocked the trigger too.

    Just how traumatic Brexit will be depends on whether Parliament can rise to the challenge and fashion a credible trade policy – so far glaringly absent – to safeguard access to European markets and ensure the viability of the City, and it depends exactly how Brussels, Berlin, Paris, Rome, Madrid, and Warsaw react once the dust settles. Both sides are handling nitroglycerin.

    Angry reproaches are flying in all directions, but let us not forget that the root cause of this unhappy divorce is the conduct of the EU elites themselves. It is they who have pushed Utopian ventures, and mismanaged the consequences disastrously. It is they who have laid siege to the historic nation states, and who fatally crossed the line of democratic legitimacy with the Lisbon Treaty. This was bound to come to a head, and now it has.

    The wild moves in stocks, bonds, and currencies this morning were unavoidable, given the positioning of major players in the market, and given that the Treasury, the International Monetary Fund, and the Davos brotherhood have been deliberately – in some cases recklessly – stirring up a mood of generalized fear.

    But let us separate the noise from what matters. This is not a ‘Lehman moment’. The sterling rout has not been as bad as some feared. You could almost say that we have had a miraculous reprieve, at least for now.

    The pound has fallen by 6pc to €1.23 against the euro, slightly below where it was in April. This is a far cry from warnings of parity, never credible since the eurozone itself faces an existential risk if Brexit is bungled.

    The slide against the US dollar has been steeper, but at $1.37 ‘cable’ is only down 4pc from its trading range over the last four months. The apparent violence of the drop was amplified by the upward spike hours earlier.

    The FTSE 100 is down just 3.15pc, cushioned of course by the effects of devaluation on repatriated earnings. The broader FTSE 250 index has fallen 7pc. There are horror stories: house-builders Persimmon and Taylor Wimpey have crashed by more than 25pc; Barclays is off 17.7pc.

    It is unpleasant but it is not a systemic financial crisis, and it is not global. The S&P 500 index of Wall Street stocks opened down 2.6pc, a bad day but not a drama. The warnings of inter-galactic destruction already look like a campaign hoax.

    The yield on 10-year Gilts has dropped almost 29 basis points to an historic low of 1.08pc, the result of flight to safety, recession fears, and hopes of more quantitative easing. These collapsing borrowing costs expose the fallacy behind George Osborne’s ‘punishment Budget’.

    There was never any chance that Parliament would enacted his demented plan to crash the economy with a violent fiscal squeeze when macro-economic logic called for the exact opposite. His credibility is shattered. He must go immediately.

    The proper policy is to take advantage of these rates for a ‘growth Budget’, a fiscal investment stimulus of 2pc of GDP to carry Britain through the next two years of pain. We need trade experts. Recruit them.

    Dangers certainly abound. Italian bank shares have crashed – Intesa Sanpaolo and Unicredit are down more than 22pc – and this may matter more than the parallel dive in UK bank stocks. Events of recent months have shown how hard it is for the Italian state to shore up its banking system under the constraints of EMU. It is no surprise that the bourses in Milan and Madrid have both dropped by around 11pc.

    Yet the same voices of authority that so frightened us before the vote are now bathing us with words of soothing calm. Everything will be alright after all, said the Bank of England’s Mark Carney. British banks are stress-tested for Armageddon.

    Capital buffers are ten times higher than before the Lehman crisis. Banks have raised £130bn of equity, and are sitting on £600bn of high-grade liquid assets. Mr Carney is ready with £250bn of liquidity, and foreign currency on demand. The ECB, the Fed, and the central banking fraternity are joining forces to douse the fire, as we all knew they would have to do.

    The pro-Remain group TheCityUK already has a plan to limit the damage, insisting that the City can prosper outside the EU, provided the post-Brexit government launches a bonfire of red-tape, keeps the door open to foreign talent, and takes the lead in the G20, the IMF, the global Financial Stability Board and the Basel Committee.

    They want unfettered access to the EU single market and passporting rights for the City, and this means either pushing for the Norway option of the European Economic Area (EEA), or a hybrid variant.

    This safe-exit is a compromise, and an olive-branch to the EU since we would continue paying into the EU budget and accepting the EU Acquis. It would last until we have negotiated our bilateral trade deals with the rest of the world. It also means accepting the free flow of EU migrants for a while. This is incendiary, of course.

    If Parliament imposes such an option, the UKIP base will erupt in fury. But UKIP has only one seat in Westminster and cannot dictate the outcome. Nor is it beyond the wit of man to come up with a formula to manage the scale of migration into the EEA. If EU leaders have any sense they will seek to find a way out of this imbroglio.

    Precisely because the political mood is so tense, my preference is for a national unity government of all parties, especially the Scots and the Ulster Catholics, to come up with a negotiating plan. Since David Cameron has honourably offered to stay on as a care-taker, he should lead this emergency administration.

    Some in Europe accuse the British people of strategic nihilism, of setting in motion the disintegration of the EU. It is true that French, Dutch, Italian, and Swedish eurosceptics are now agitating even more loudly for their own referenda, but voters are rising up across the EU in defence of national self-government and cultural ‘terroir’ for parallel reasons.

    Brexit is not the cause and this is not contagion. The latest PEW survey shows that anger with Brussels is just as great in most of Northwest Europe as it is Britain, and in France it is higher at 61pc.

    This referendum was never a fight between Britain and Europe, as so widely depicted. It was the first episode of a pan-Europe uprising against the Caesaropapism of the EU Project and its technocrat priesthood. It will not be the last.

  22. মাসুদ করিম - ২৮ জুন ২০১৬ (১২:৪৮ অপরাহ্ণ)

    আমার মা – শৈবাল চৌধূরী

    পত্রিকায় এবং ফেসবুকে আমার মায়ের মৃত্যু সংবাদ জানার পর অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেছেন, আমি এতজনকে নিয়ে ডকুমেন্টরি ছবি বানালাম, আমার মাকে নিয়ে কেন একটা বানালাম না? তারা এ কথাটি বলার কারণ, তারা জেনেছেন ১৯৭১ সালে আমার অভাগিনী মা ভারতের মিজোরাম রাজ্যের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে তাঁর তিনটি শিশু পুত্র ও দুটি শিশু কন্যাকে হারিয়েছেন। এ কারণে একটি পত্রিকা তাঁকে ‘একাত্তরের জননী’ বলে অভিহিত করেছে। একজন জিজ্ঞেস করেছেন, এখন তাঁরা আমার মায়ের স্মৃতি রক্ষার জন্য কি করতে পারেন?

    কিন্তু আমার মা শ্রীমতি শান্তিরানী চৌধূরী সবকিছুর ঊর্ধ্বে চলে গেছেন। দীর্ঘদিনের শোক, তাপ, রোগ যন্ত্রণা ভোগের শেষে এ পৃথিবীর মায়া কাটিয়েছেন ৭ জুন, ২০১৬, রাত ৯টা ৪০ মিনিটে, ৭৫ বছর বয়সে। এই পৃথিবীতে নাকি সবচেয়ে ভারি জিনিস আপন সন্তানের মৃতদেহ। সেই ভারি জিনিসটি আমার মাকে পাঁচবার বহন করতে হয়েছে ১৯৭১ সালে। আক্ষরিক অর্থেই। কারণ আমি সবার বড় হয়েও তখন মৃতপ্রায়। আমার বাবাও ভীষণ অসুস্থ। একমাত্র সুস্থ ছিলেন আমার মা। আমার অভাগিনী মা তাঁর পাঁচ পাঁচটি অবোধ শিশু পুত্র কন্যার লাশ নিজ হাতে বয়ে নিয়ে গিয়ে গর্ত খুঁড়ে মাটি চাপা দিতেন কর্ণফুলীর তীরে লুসাই পাহাড়ের পাদদেশে স্থাপিত শরণার্থীদের জন্য সৎকার স্থলে। ওখানে কোনো কবর কিংবা চিতা ছিল না। অত সময় কোথায়? অহরহ মরছে! কোনোমতে মাটি চাপা দেওয়া। আমার মায়ের পিছু পিছু বাবা যেতেন হতভম্বের মতো একটা ছোট দা নিয়ে। গর্তটাও খুঁড়তেন আমার মা। আমি বিছানায় আধমরা হয়ে শুয়ে শুয়ে সব দেখতাম। মাটিচাপা দিয়ে এসে দু’জনে মিলে কাঁদতেন। কর্ণফুলী মিজোরামের লুসাই পাহাড় থেকে নেমে আসা নদী। তার পাড়ে পাড়ে আমার তিনটি ভাই আর দুটি বোন; কল্লোল, রাজীব, বিপ্লব, রিনি ও রিতা ঘুমিয়ে আছে।

    আজ ভাবি, আমার মা সে সময় এত শক্তি পেয়েছিলেন কোথা থেকে? শাস্ত্রমতে পুরুষের শক্তি তিনগুণ আর নারীর নয়গুণ। আমার মা যেন নয়গুণেরও বেশি শক্তি ধারণ করেছিলেন সেই সময়। এতগুলো সন্তানকে মাটিচাপা দিয়ে শোককে আক্ষরিকভাবেই শক্তিতে রূপান্তরিত করে নজর দেন মৃত প্রায় স্বামী ও বেঁচে থাকা পুত্রটির ওপর। একা হতে সব সামলে আসামের শিলচর পৌঁছে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সারিয়ে তোলেন। কিন্তু এরপর ধীরে ধীরে নিজে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আক্রান্ত হন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগে। সে অবস্থায় জন্ম দেন আরেকটি কন্যার স্বাধীন বাংলাদেশে। আমার একমাত্র বোন-রাখি। বোনের জন্মের পর থেকে তাঁর অসুস্থতা বাড়তে থাকে। কিন্তু মনোবল হারান নি। আমাদের অত্যন্ত সাধারণ ছোট পরিবারটিকে পাখির মতো পালক দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। আত্মীয় স্বজনের শত বঞ্চনা, অবহেলা, শঠতা আর উপেক্ষাকে অতিক্রম করে পরিবারটিকে ছায়া দিয়ে গেছেন। পাঁচটি সন্তানের শোক সহ্য করে ১৯৭১ এর পর আরো ৪৫টি বছর কাটিয়ে দিয়েছেন।

    আত্মীয়-স্বজন ও পড়শিরা আমার মাকে অপয়া জ্ঞান করতেন যেহেতু তাঁর এতগুলো ছেলেমেয়ে মারা গেছে। কোনো শুভ কাজে কেউ তাঁকে ডাকতেন না বা দেখে যেতেন না। আমার মা এটা বুঝতেন বলে নিজেকে আড়াল করে রাখতেন যদিও এত বড় দুর্ঘটনায় তাঁর কোনো হাত নেই। ১৯৯০ পর্যন্ত আমার মা কিংবা আমিও ওপরের ঘটনাগুলো কাউকে বলতাম না। বললে সবাই কেমন যেন ঘৃণা নিয়ে তাকাতো। আমার মাকে বিজয় মেলা থেকে একবার (১৯৯০) সংবর্ধনা দিতে চেয়েছিল, আমার অল্প শিক্ষিত মা রাজি হন নি। তাঁর বক্তব্য; সন্তান হারানোতে তাঁর তো কোনো কৃতিত্ব নেই, তাঁর সন্তানেরা শহীদ হয়েছে দেশের জন্যে, স্মরণ করতে হলে তাদের করা উচিত। অনেকে সাক্ষাতকার ইত্যাদি নিতে চাইলেও তিনি রাজি হতেন না। একমাত্র দীর্ঘ সাক্ষাতকারটি দিয়েছিলেন কবি সাংবাদিক আহমেদ মুনিরকে। মুনিরকে পুত্রজ্ঞান করতেন, কারণ তার ডাক নাম ‘রাজীব’।

    ১৯৭২ এ যখন শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন আমার মা চাইছিলেন না আসাম থেকে ফিরতে। তিনি বরং আমার বাবাকে বলেছিলেন মিজোরামে ফিরে যেতে, যেখানে তাঁদের ছেলেমেয়েরা ঘুমোচ্ছে। আমার বাবা মিজোরামের তৈচং শহরে একটি স্কুলে ইংরেজি পড়ানোর চাকরিও পেয়েছিলেন। পরে আমার বাবার জোরাজুরিতে আমার মাকে জীবিত একমাত্র পুত্রটিকে নিয়ে ফিরে আসতে হয়। আমার বাবার যুক্তি ছিল, যে দেশটির স্বাধীনতার জন্যে তাঁর ছেলেমেয়েরা মারা গেল, স্বাধীন সেই দেশটিতে তিনি ফিরে যাবেন। আমার মা ফিরে আসার সেই ছয়দিন কেবল অঝোর নয়নে কেঁদে গেছেন। কেঁদেছেন তো একাত্তরের পুরো নয় মাস। এর ফল হলো, ১৯৭২-এ তাঁর একটি চোখ প্রায় নষ্ট হয়ে যায়। অস্ত্রোপচারেও তেমন উন্নতি হয় নি আর সে চোখের!

    আমার বাবা মায়ের ১৯৭১-এ শরণার্থী হওয়ারও দুঃখ ও অপমানজনক কারণ ছিল। সদ্য চাকরি হারানো আমার বাবা আশ্রয় নিয়েছিলেন আমার মামার বাড়ি সাতকানিয়ায়। সেখানে নানান অসহযোগিতা সহ্য করলেও একটা অপমান তাঁদের সহ্য হয় নি। তাঁদেরকে সাতকানিয়ার কেউচিয়া গ্রামের মেম্বার যিনি শান্তি কমিটির গ্রাম্য চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি বলেন, ‘আপনারা হাটহাজারী থানার লোক, অর্থাৎ আপনারা বিদেশি, আপনাদের আমরা নিরাপত্তা দিতে পারব না। এখানে থাকতে হলে আপনাদের মুসলমান হতে হবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, না হলে চলে যান’। আমার অপমানিত বাবা মা পরদিন ভোরে ভারতের পথে রওনা দেন এতগুলো অপোগণ্ড শিশু সন্তান নিয়ে। সাতকানিয়া থেকে বান্দরবান হয়ে থানচি সীমান্ত দিয়ে আমরা মিজোরামের জারুয়ালছড়ি রিফিউজি ক্যাম্পে পৌঁছুই ২১ দিন অবিরাম হেঁটে। এই অমানবিক যাত্রার কারণে আমরা সবাই সাংঘাতিক অসুস্থ হয়ে পড়ি, যার করুণ পরিণতি মৃত্যু।

    কিন্তু এতসব দুঃখজনক ঘটনাই কি আমার মায়ের পরিচয় নির্ধারণ করে? আমার মায়ের পড়াশোনা ছিল পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। গ্রামে হাইস্কুল না থাকায় আর পড়তে পারেন নি। কিন্তু আমার ক্লাস ফাইভ পাস মা নিয়মিত খবরের কাগজ পড়তেন, রেডিও টিভিতে নিয়ম করে খবর শুনতেন। উনার রুমে আলাদা টিভি সেট ছিল। বিশ্বের নানা খবর নিয়ে রীতিমত আলাপ আলোচনা করতেন। আমার মার আরেকটা বড় গুণ, যে কোনো কিছু যুক্তি দিয়ে বিচার করতেন, সমাজ কিংবা প্রচলিত ধর্ম ব্যবস্থার অনেক সংস্কার তিনি মানতেন না। এজন্য একটু বিতর্কিতও ছিলেন বটে। গান শুনতেন নিয়মিত। রুনা লায়লা ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। মৃত্যু শয্যায় তিনি যখন অবচেতন অবস্থায়, তখনো আমি এই দুই শিল্পীর গান বাজিয়ে খেয়াল করেছি, উনি চোখ মেলে তাকিয়ে তাঁদের গান শুনছেন। একটা সময় পর্যন্ত নিয়মিত উপন্যাস পড়তেন। শরৎচন্দ্র ছিল অত্যন্ত প্রিয় লেখক। বেগম ও বিচিত্রার ছিলেন নিয়মিত পাঠক।

    আমি যে ছিটেফোঁটা আজ লিখি, এটা আমি পেয়েছি আমার মায়ের কাছে। তা তিনি কোনো গল্প উপন্যাস লিখতেন না। কিন্তু খুব বড় বড় আকারের চিঠি লিখতেন আত্মীয় স্বজনদের, যেখানে প্রচুর ঘটনা কিংবা প্রসঙ্গের অবতারণা করতেন তিনি গল্পের মতো করে বিস্তারিতভাবে। ভীষণ মজার হতো চিঠিগুলো। সিনেমার নেশাটাও আমার মায়ের কাছ থেকে পাওয়া। প্রতি সপ্তাহে একটি সিনেমা দেখতেন। প্রিয় প্রেক্ষাগৃহ ছিল সিনেমা প্যালেস ও লায়ন। সঙ্গী আমি। শৈশবেই এভাবে আমার মধ্যে চলচ্চিত্র প্রীতি সঞ্চারিত করেছেন তিনি।

    সত্যজিৎ রায়ের কথা আমি প্রথম শুনি আমার মায়ের কাছে। ষাটের দশকে তিনি একটি ছবি দেখেছিলেন ‘অপুর সংসার’। প্রায় সময় এই ছবি নিয়ে বলতেন। বলতেন সত্যজিতের কথা। উনার দেখা প্রথম ছবি ‘বাবলা’। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এই ছবিটিরও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। বড় হয়ে আমি তা জানলেও আমার মা তো আর তা জানতেন না। কিন্তু প্রায়ই তিনি ‘অপুর সংসার’ আর ‘বাবলা’র কথা বলতেন। বাবলা ছবিতে উৎপলা সেনের গাওয়া গন ‘দুঃখের কাছে হার মেনেছি হৃদয় তবু ভাঙবে না’, তাঁর খুব প্রিয় ছিল। গুনগুন করে প্রায় গাইতেন। অনেক পরে ছবিটা আমি দেখেছি। গানটিও শুনেছি। খেয়াল করে দেখেছি, গানটির কথার সঙ্গে আমার দুঃখিনী মায়ের জীবনের অনেক মিল।

    আমার অনেক লেখার প্রথম পাঠক আমার মা। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত আমার লেখাগুলো তিনি পড়তেন নিয়মিত। আমি বুঝতে পারতাম সব লেখা তিনি বুঝতে পারছেন না। কিন্তু তিনি এমনভাবে আমাকে প্রশংসা করতেন যেন তিনি প্রতিটি অক্ষর বুঝেছেন। আমার সকল কর্মকাণ্ডে ছিল তাঁর অকুণ্ঠ সমর্থন। আমার প্রত্যেক বন্ধু এবং সতীর্থ চলচ্চিত্র কর্মীদের তিনি অত্যন্ত ভালোবাসতেন এবং তিনিও ছিলেন তাঁদের সকলের প্রিয়ভাজন। যখনই আমরা বাংলা সিনেমার প্রদর্শনী করতাম, একটা সময় পর্যন্ত তিনি নিয়মিত দেখতে যেতেন। তাঁর এতসব খেয়ালিপনার নেপথ্যে ছিল আমার বাবার পরোক্ষ প্রশ্রয়। আমার এই মাকে নিয়ে আরো অনেক কিছু বলার আছে। সবকথা আজ বলা গেল না। বললামও না।

    কিন্তু কেন তিনি এত কষ্ট পেলেন মৃত্যুর আগে? ২৭ মার্চ তাঁর ব্রেন স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক হয়। ২ মাস ১০ দিন তিনি ছিলেন নির্বাক। অসহায় হয়ে বিছানায় শুয়ে থাকতেন অচেতনে অবচেতনে। যে মানুষ এক মিনিট নিঃসঙ্গ সময় কাটাতে পারতেন না, কথা না বলে থাকতে পারতেন না বেশিক্ষণ, সে মানুষ কেন এরকম যন্ত্রণা পেলেন মৃত্যুর আগেও। এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর আমি পাই না।

  23. মাসুদ করিম - ২৯ জুন ২০১৬ (১২:৪১ অপরাহ্ণ)

    নদীর লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম আত্মঘাতী

    ভারতীয় নদী বিশেষজ্ঞ ড. কল্যাণ রুদ্র ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের চেয়ারম্যান। ২০১১ সালে বাংলাদেশ-ভারত তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর ভেস্তে যাওয়ার পর নদীটির প্রবাহ যাচাইয়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার তার নেতৃত্বে তিস্তা কমিশন গঠন করে। তারও আগে তাকে গঙ্গাদূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য নিযুক্ত করেন কলকাতা হাইকোর্ট। ২০০৭ সালে তিনি ভারতের জাতীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ কোরগ্রুপের সদস্য মনোনীত হন। দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন হাবড়া শ্রীচৈতন্য মহাবিদ্যালয়ে। কাজ করেছেন ব্রিটেনের ল্যাঙ্কেস্টার ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোলশাস্ত্রে স্নাতকোত্তর ও ভাগীরথী-হুগলী নদী বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তার জন্ম ১৯৫২ সালে মুর্শিদাবাদে। গত ১৬ জুন পশ্চিমবঙ্গের ভাগীরথী নদীতে একটি নৌযানে বসে সমকালের সহকারী সম্পাদককে তিনি এই সাক্ষাৎকার দেন

    সমকাল :তিস্তা কমিশনের নেতৃত্ব পাওয়ার পর থেকে কল্যাণ রুদ্র তো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছেও ব্যাপক পরিচিত একটি নাম। যদিও আপনাকে সরাসরি দেখেছে সেখানকার খুব কম মানুষই। কতবার গিয়েছেন বাংলাদেশে?

    কল্যাণ রুদ্র :বাংলাদেশের সঙ্গে কিন্তু আমার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। আমার ঠাকুরদা বিক্রমপুরের মানুষ; আমার স্ত্রীর পরিবার এসেছে চট্টগ্রাম থেকে। কিন্তু সেখানে আমার খুবই কম যাওয়া হয়েছে। মাত্র দু’বার গিয়েছিলাম খুবই অল্প সময়ের জন্য, একাডেমিক কাজে। প্রথমবার ১৯৮১ সালে, দ্বিতীয়বার ২০০২-০৩ সালের দিকে। আমি আসলে পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদী বিষয়ক কাজেই বেশি মনোযোগী। এখানেই বেশি সময় দেই।

    সমকাল :এ কারণেই কি আপনার বইগুলোতে বিভিন্ন নদীর প্রসঙ্গ বাংলাদেশ সীমান্তে গিয়েই শেষ হয়েছে? আপনার ‘এটলাস অব চেঞ্জিং রিভার কোর্সেস ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল’ বইটি সীমান্তে গিয়ে শেষ হয়েছে। যদি গোটা বঙ্গীয় ব-দ্বীপের নদীগুলো নিয়ে হতো, তাহলে সেটা বাংলাদেশের নদীগুলোর চরিত্র বোঝার জন্যও কাজে লাগত।

    কল্যাণ রুদ্র :আমার বইগুলো সীমান্তে গিয়ে শেষ হয় আসলে তথ্যের অভাবে। আমি তো একাডেমিশিয়ান, নিজে ভালোভাবে না জেনে, ভাসা তথ্যের ওপর নির্ভর করে বই লিখতে পারি না। নদী নিয়ে বই লিখতে হলে অবশ্যই বেজ ম্যাপ জানতে হবে। বাংলাদেশের অংশ সম্পর্কে আমার কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। এটলাসটি সম্প্রসারণ করাই যেত, যদি ওপার বাংলা থেকে কেউ আমার সঙ্গে যোগ দিতেন। দুই অংশের কেস যোগ করে একটি অভিন্ন বই হতেই পারে।

    সমকাল :আপনার অন্যান্য বইও কিন্তু বাংলাদেশে বহুল পঠিত। বিশেষত ‘বাংলার নদীকথা’ বইটি ঢাকার বইপাড়া শাহবাগের দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। আমি বিক্রেতাদের জিজ্ঞেস করে জেনেছি, বইটি বেশ চলে। আপনার খুবই ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ একটি বই ‘গঙ্গা ভাঙন কথা’ বইটি আমার বিশেষ পছন্দের।

    কল্যাণ রুদ্র :বই লিখি মূলত ছাত্রছাত্রীদের জন্য। তাদের কাজে লাগলে নিজেকে সার্থক মনে করি। আপনার কাছে শুনে আনন্দ লাগছে যে বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমার বই পেঁৗছেছে, তাদেরও কাজে লাগছে। আপনি এত আগে লেখা একটি বইয়ের রেফারেন্স দিলেন যে আমার খুব ভালো লাগছে।

    সমকাল :বাংলাদেশ ও ভারত ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিকভাবে আসলে খুবই ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী, আপনি জানেন। কিন্তু অভিন্ন নদীগুলোর প্রশ্নে সেই নৈকট্য আর বজায় থাকছে না। এটাকে কীভাবে দেখবেন?

    কল্যাণ রুদ্র :দেখুন, এটা একটা ঐতিহাসিক ত্রুটি। র‌্যাটক্লিফ সাহেবকে যখন বলা হলো বাংলাকে হিন্দু ও মুসলিম অঞ্চলে ভাগ করতে হবে, আমরা অনেকে জানি না যে তিনি তখন আপত্তি করেছিলেন নদীগুলোর প্রশ্নেই। তিনি বলেছিলেন, ভৌগোলিকভাবে ভাগ না করে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করা হলে নদীগুলো নিয়ে ভবিষ্যতে বড় সংকট তৈরি হবে। তার মনে এই প্রশ্নটি এসেছিল। কিন্তু তখন যারা আমাদের দুই দেশের ভাগ্য নির্ধারণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তারা নদীর বিষয়টি বুঝতে চাননি। ফলে খুব দ্রুতই নদী নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছিল। এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। কারণ নদী তো রাজনৈতিক সীমানা মেনে চলে না। গঙ্গা নদী তো নেপাল, ভারত, বাংলাদেশ বোঝে না।

    সমকাল :ঐতিহাসিক এই ত্রুটি কি এখন চাইলে এই অঞ্চলের দেশগুলো মিলে শুধরে নিতে পারে না?

    কল্যাণ রুদ্র :দেখুন, এতদিনে গোটা নদী ব্যবস্থার চরিত্রেই পরিবর্তন এসেছে। আমাদের বুঝতে হবে, নদী মানে শুধু নদী নয়, এটা জলপ্রবাহের ব্যাপার। সেই জল কোথা থেকে আসে? ধরা যাক গঙ্গা নদী। এর জল আসে তিনটি উৎস থেকে। প্রধান উৎস হচ্ছে বর্ষাকালের বৃষ্টি। বর্ষাকাল চলে গেলে? তখন বর্ষাকালে ভূগর্ভে জমা হওয়া জল চুঁইয়ে নদীতে নেমে প্রবাহ ঠিক রাখে। সেই জল যখন ক্রমে শেষ হয়ে যেতে থাকে, তখন নদীতে থাকে কেবল হিমালয়ের হিমবাহ গলা জল। এখন গত কয়েক দশকে বৃষ্টিপাতের ধরনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মোট বৃষ্টিপাতও কমছে। বর্ষাকালে এখন অল্প সময়ে অনেক বৃষ্টিপাত হয়। ফলে ভূগর্ভস্থ ভরণপ্রক্রিয়া আগের মতো সময় নিয়ে ঠিকমতো সম্পন্ন হয় না। এখন যখন বর্ষাকাল শেষ হয়, তখন ভূগর্ভ থেকে চোয়ানো জল ঠিকমতো পায় না নদী। আবার উপমহাদেশজুড়েই ভূগর্ভস্থ জলনির্ভর কৃষি ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে নদী ব্যবস্থায়।

    সমকাল :তার মানে, আপনি বলতে চাইছেন নদী সংকটের মূলে রয়েছে ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক পরিবর্তন ও ভূগর্ভস্থ পানিনির্ভর কৃষি ব্যবস্থা?

    কল্যাণ রুদ্র :বহুলাংশে। আপনাকে বুঝতে হবে, উপমহাদেশেজুড়ে ভিন্ন ভিন্ন কৃষি ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল কেন। কেন বাংলা ধানচাষপ্রধান অঞ্চল। এর কারণ বাংলায় ধানের জন্য পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা ভূপৃষ্ঠেই ছিল। এই অঞ্চল ছিল নদী ও জলাশয়ে সমৃদ্ধ। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সেই কৃষি ব্যবস্থা আমরা পরিবর্তন করেছি। যেমন পশ্চিমবঙ্গে, তেমনই পূর্ববঙ্গে বা আজকের বাংলাদেশে। আমরা ধারণা করে বসে রয়েছি যে ভূগর্ভ থেকে সবসময়ই একইভাবে জল পাওয়া যাবে। অথচ ভূগর্ভে এই জল জমা হয়েছে কয়েক হাজার বছর ধরে। কয়েক হাজার বছরের জমা জল আমরা মাত্র কয়েক দশকে শেষ করে ফেলেছি। কৃষি ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে নদীনির্ভর সেচপ্রধান করে তুলতে না পারলে ভূগর্ভস্থ জল শেষ হয়ে যাবে। আর ভূগর্ভস্থ জল শেষ হলে বর্ষাকালের বাইরে নদীগুলোও আর সজীব থাকবে না।

    সমকাল :আমরা দেখছি, ফারাক্কা ব্যারাজের মাধ্যমে পানি সরিয়ে নেওয়ার পরও এপাশে গঙ্গা বা ভাগীরথী সংকটে পড়ছে। পানি সংকটের কথা আপনি আপনার আজকের প্রেজেন্টেশনেও বলেছেন। এর কারণ কী?

    কল্যাণ রুদ্র :এই যে প্রাকৃতিক পরিবর্তন এবং ভূগর্ভস্থ জলে ঘাটতি দেখা দেওয়া, এর ফলে গঙ্গা নদী পর্যাপ্ত জল পাচ্ছে না। আবার পশ্চিমবঙ্গের উজানে বিভিন্ন রাজ্যে যে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে, এর ফলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ভাটিতে। একই সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশে জলের চাহিদা বেড়েছে, আপনাকে স্বীকার করতে হবে। সেই চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা শুধু গঙ্গার কেন, কোনো নদীরই নেই। আপাতত চলছে, গঙ্গা থেকে জল সরিয়ে এনে। কলকাতা বন্দরকে সচল রাখতে হলে, নৌ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হলে সেটা করতেই হবে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে রাজমহলের ভাটিতে গঙ্গায় যে জল প্রবেশ করে, তা দুই দেশের জন্য পর্যাপ্ত নয়। ভূগর্ভস্থ জল তোলা বন্ধ হলে জলের সরবরাহ খানিকটা বাড়তে পারে। আমাদের দুই দেশেই অবশ্যই সারফেস ওয়াটার ব্যবহার বাড়াতে হবে।

    সমকাল :পশ্চিমবঙ্গে যে সংকট সেটা দীর্ঘমেয়াদে দেখা দেবে। কিন্তু বাংলাদেশ তো এখনই তীব্র পানি সংকটে। গঙ্গায় পানি প্রত্যাহারের কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী ও নৌ ব্যবস্থা সংকটে পড়েছে। সুন্দরবনে সংকট দেখা দিয়েছে।

    কল্যাণ রুদ্র :গঙ্গার জল বণ্টন নিয়ে তো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। আমি যতদূর জানি, সেই চুক্তি অনুযায়ী ফারাক্কা পয়েন্টে বাংলাদেশ জল পাচ্ছে। এর বাইরে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে বৃষ্টিপাতের ধরন ও ভূগর্ভস্থ জলের স্তর। নদী সচল রাখতে হলে উজানের প্রবাহের পাশাপাশি স্থানীয় বৃষ্টিপাত ও ভূগর্ভ থেকে চোয়ানো জলের পরিমাণ ও ধরনও গুরুত্বপূর্ণ।

    সমকাল :আপনি ‘গঙ্গা ভাঙন কথা’ বইয়ে দেখিয়েছেন যে ফারাক্কা ব্যারাজের কারণে গঙ্গার উজানেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। চর পড়ছে, ভাঙন বেড়েছে তীব্রভাবে। বলেছিলেন যে ফারাক্কার কারণে গঙ্গা নদী প্রবাহ পাগলার সঙ্গে মিলে পাগলা-মহানন্দা হয়ে ফারাক্কা এড়িয়ে ফের বাংলাদেশের গঙ্গা বা পদ্মায় পতিত হতে পারে…

    কল্যাণ রুদ্র :এটা শুধু আমার কথা ছিল না। তখনকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও আশঙ্কা ছিল। তখনকার মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব বসু কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই মর্মে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। আমার বইতে সে বিষয়টিই উদ্ধৃত করেছি। আর চর পড়া এবং ভাঙন বাড়ার বিষয়টি আমি নিজেও সরেজমিন পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে দেখিয়েছি।

    সমকাল :অভিযোগ রয়েছে যে, আপনি আগে একাডেমিশিয়ান হিসেবে এসব ইস্যুতে যতটা মুক্তকণ্ঠ ছিলেন, এখন ততটা নেই। সেটা কি রাজ্য সরকারের অবস্থান এবং আপনার সরকারি দায়িত্বের কারণে?

    কল্যাণ রুদ্র :দেখুন, আমি বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান মেশাই না। আমি যেসব বই লিখেছি, লিখি, তা খাঁটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে। এ ক্ষেত্রে অন্য কারও অবস্থান আমার কাছে বিবেচিত নয়। এই অবস্থানে আমার কোনো আড়াল নেই যে, নদী থেকে জল নিতে হবে সীমার মধ্যে থেকে। নদীকেও বইতে দিতে হবে। একটি মাত্রার বেশি জল উত্তোলন করলে নদী টিকে থাকতে পারবে না। আমাদের উন্নয়ন করতে হবে প্রকৃতিকে রক্ষা করেই। এটা বলতে তো কোনো দ্বিধা নেই আমার।

    সমকাল :ভারত সরকার নতুন করে উদ্যোগী হয়েছে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে। বাংলাদেশে এর প্রভাব কী হতে পারে বলে মনে করেন?

    কল্যাণ রুদ্র :এটা তো স্বাভাবিক অঙ্কের ব্যাপার। উজানে স্থাপনা হলে ভাটিতে এর প্রভাব পড়বে। এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প এখন অতীত। ২০০২ সালে যখন ভারত সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিল, তখন এখানেও অনেক বিতর্ক ও প্রতিবাদ হয়েছে। তখন সরকার প্রকল্পটি নিয়ে আর অগ্রসর হয়নি।

    সমকাল :কিন্তু সম্প্রতি পানিসম্পদমন্ত্রী উমা ভারতী বলেছেন যে, তারা প্রকল্পটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে রেখেছেন। বিশেষ করে মানস, সঙ্কোশ, তিস্তা সংযোগ প্রকল্প।

    কল্যাণ রুদ্র :এটা তো সামগ্রিক আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প নয়! একটি অংশের কথা বলেছেন তিনি। কিন্তু আমি যতদূর বুঝি, বিষয়টি সহজ নয়। সেখানে অভয়ারণ্যের ব্যাপার রয়েছে, রাজ্য সরকারগুলোর মতামতের ব্যাপার রয়েছে। আমার ধারণা, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সহজ হবে না।

    সমকাল :আপনি আগেই বলেছেন তিস্তা কমিশনের প্রতিবেদন বিষয়ে কিছু বলবেন না। তিস্তা চুক্তির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কি কিছু বলবেন?

    কল্যাণ রুদ্র :দেখুন, এটা এখন সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়, দুই দেশের সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিষয়। আমার কাজ ছিল প্রতিবেদন প্রস্তুত ও জমা দেওয়া। সেটা দিয়েছি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ঢাকায় গিয়ে বলেও এসেছেন যে, হতাশ হবেন না। আমিও সেটাই মনে করি। সমাধান একটা বের হবেই। আর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন, যতদিন আলোচনা চলবে, মিডিয়ায় কিছু না বলতে। কারণ তাতে করে মানুষ বিভ্রান্ত হবে। আমি তাকে কথা দিয়েছি ওই প্রতিবেদনের ব্যাপারে কিছু বলব না।

    সমকাল :সামগ্রিকভাবে বড় প্রকল্প না হলেও ছোট ছোট ড্যাম তৈরি হচ্ছে অভিন্ন নদীগুলোর উজানে ভারতীয় অংশে। পানি প্রত্যাহারও চলছে কোথাও কোথাও। ভাটির বাংলাদেশে এগুলোর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে বলুন।

    কল্যাণ রুদ্র :দেখুন, উন্নয়ন বড় বালাই। বাংলাদেশেও কি এ ধরনের প্রকল্প হচ্ছে না? কর্ণফুলী নদীতে কাপ্তাই ড্যাম হয়েছে। ডালিয়া ব্যারাজের পরেও একশ’ কিলোমিটার তিস্তা নদী যে শুকনো রাখছেন, সেটার কী হবে? কথা হচ্ছে, সবকিছুর একটি সীমা আছে, লক্ষ্মণরেখা আছে। নদীরও লক্ষ্মণরেখা আছে। সেটা অতিক্রম করা হবে আত্মঘাতী। নদী আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্নেই নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

    সমকাল :হ্যাঁ, সবাই মিলে নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আমাদের সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

    কল্যাণ রুদ্র :আপনাদেরও ধন্যবাদ। বাংলাদেশের জন্য শুভকামনা।

  24. মাসুদ করিম - ৩০ জুন ২০১৬ (৯:৩১ পূর্বাহ্ণ)

    Senior artist K.G. Subramanyan passes away

    Subramanyan was a modernist, who studied art under stalwarts such as Nandlal Boss, Ramkinkar Baij and Benode Bihari Mukherjee in Shantiniketan.

    Senior artist K.G. Subramanyan (92) passed away in Vadodara on Wednesday.

    Subramanyan, who was recovering from a recent surgery, was a modernist, having studied art under stalwarts like Nandlal Bose, Ramkinkar Baij and Benode Bihari Mukherjee in Shantiniketan.

    When he turned 90, Seagull Foundation For The Arts decided to celebrate the occasion with a year-long travelling exhibition of the master’s latest works.

    ‘I am an artist activist, not an activist artist’: Why KG Subramanyan (1924-2016) and his art matter

    Startlingly modern and intrinsically Indian, his work was both deeply engaging and vastly influential. More than an era passes with his death.

    KG Subramanyan, who died in Baroda on Wednesday at the age of 92, was one of India’s most senior artists, working with diverse media and materials, and exhibiting extensively both within and outside the country. Known as much for his wide-ranging scholarship as for his artworks which are full of wit, subversion, eroticism and critical social commentary, Subramanyan was a towering figure in modern Indian art. Excerpts from an interview conducted in 2014.

    From the mid-1980s, icons and mythical characters figure in your paintings. You do not use them as conventional symbols but set them up in juxtaposition to real-life animals or figures, like a monkey against Hanuman or a modern girl against Durga. Or you use them as metaphors in order to articulate your vision of the world. Could you explain this a little?
    My works have always sought to move between the real and the imaginary. True, what we call real is itself an image of a kind. My main interest was once in the passage of the objective to the abstract. Abstract to mean here an image of relative anonymity. Which allowed it a variety of interpretations. Gave it the ability to play various visual roles.

    Now the cross-connections I am interested in are more complicated. The images are more than visual. They have a complex identity, diverse cultural associations and background lore.

    The image of Hanuman has a whole line of characters behind it. An intrepid monkey who ventures to capture the sun, who has the god of wind as father and gets from him speed, power, agility, volatility and the ability to change in size. Later, a staunch devotee of Rama, his emissary and worshipful vehicle.

    His role changing from the playful and comic to the heroic. In a Kathakali act, he delights his audience with his monkey tricks. In an iconic painting, he flies through the air, carrying a mountain on which grow life-saving herbs.

    Similarly, Durga has various versions, ranging from an elegant household deity, almost like a member of the family, to a multi-armed war goddess who rides a lion or tiger and fights and slays the buffalo demon. The lion or the tiger, even the monkey, symbolise the positive powers that fire and support our initiatives; the buffalo, on the other hand, represents a negative power or inertia.

    These images certainly have their origins in common scenes observed in town or village. The vision of an able-bodied woman in a Jat village trying to control a runaway buffalo calf or a wiry Bengali villager doing the same, though with more physical skill than strength, give you two image sources for Durga.

    What I have an eye for are these sources, where the icon unfolds from the actual. And holds within it hidden implications – of the divinities inherent in human beings and their powers. And the need of the human being to be constantly aware of the conflict between benevolent and malevolent forces, or the angel and the demon, within himself.

    In a way it allows you to retrieve the past, at least fragments of it, in a certain way, as a counterpoint if not as a continuity. Similarly, one can also notice resonances of imagery or styles from other traditions coming into your work and nuancing your statements.
    You are probably right. My work, so to say, deconstructs an old concept and sees its similarities with others. In our multicultural society, there are many versions of these. The popular ones as outlined in mass media are simplistic; they counterpose good and evil on either side of a clearly marked line. But it is rarely so.

    In a culture where the gods have to incarnate themselves as human beings (sometimes even as animals) to come to the aid of fellow humans, they are rarely perfect; they too have their weaknesses and vulnerabilities. This then gives one ground on which to speculate about a human being’s ascent from beast to divinity and the possible alternatives. Hence the colour and variety of our mythologies. And the kind of sanguine earthiness to the narratives and theatricals these mythologies inspire in which the human characters can be remarkably heroic and the divinities open to criticism and caricature.

    In a lot of modern art, especially in India, artists are almost out of touch with the historical arts of their own country. Of course, we cannot expect a changeless continuity, but Indian art could still provide us with metaphors – it need not be entirely inaccessible.
    Strangely enough, a lot of our modern artists have a divided choice. To keep up with the world at large. And, at the same time, to preserve their cultural identity. This has kept them tied to the externals, meaning, to methods of statement or styles and their rapprochements. They have not gone deep into the traditional lore or their imagery; they have left it to the traditional artists. Even those who chose to represent them in their individual styles.

    Ravi Varma, for example, chose the realistic style made popular by European professionals. Abanindranath Tagore plumped for a narrative style based partly on the practices of the late Mughal ateliers, partly on Far Eastern anecdotal painting. Rabindranath Tagore doodled and experimented with various art forms before finally settling for an individualistic expressionist manner. Even Jamini Roy, who made a conscious effort to forge a link with traditional practices, was more involved with the stylistic minutiare of Kalighat pats than with cultivating a familiarity with their visual language that holds together sensuousness and irony in delectable ways.

    The artists who trained in the government art schools were more concerned with object representation and their variables; they shied off multi-focal narratives. Their responses to the traditional arts of India (and this includes certain responses by Rabindranath and Abanindranath) were influenced by the responses of some Western scholars of that time. This is understandable, for we all are subject to some of the attitudes of our times.

    But, in the literary sphere, Rabindranath and Abanindranath made amends; they were deeply sensitive to traditional lore and their inner meanings and they were soundly informed of traditional literary practices. I wonder how many have used or reconstructed traditional themes and forms in the way these two have in their writing.

    And both realised, at one stage, the pressing need to persuade the artists and writers of their day to familiarise themselves with the various creative levels in each field, to broaden their response spectra and to enrich their means of expression. I presume we are inheritors of this attitude, through Nandalal Bose and his illustrious followers. Part of our new attitudes have emerged from our rediscovery of our old root streams.

    While we see this clearly in your art, we see little of it in the rest of modern Indian art. The revivalist went back to traditional art but in the hope of reviving or creating continuity with the past. But you don’t want to revive old art – you only want to use it to add breadth to your statement. Has this happened spontaneously or was it planned?

    Each tradition has areas that grew in response to the needs and aspirations of a society, its ideas and sensibilities. Each tradition comes to have an inner code of discipline or grammar which prevents radical extensions. But it also has certain take-off points that accommodate innovation and thus allow a new vision and dimension to its expression. And that is the point where we each read our basic facts differently and invent new devices to represent them.

    Some of the images that the Meena women of Rajasthan paint on their walls surprise you with their innovations. The simplicity of their means allow them a freedom that a more structured method of practice would have denied. But there are always means to loosen a structure and find there a foothold for innovation. All growing traditions have this resilience.

    I am by nature a fabulist. I transform images, change their character, make them float, fly, perform, tell a visual story. To that extent my pictures are playful and spontaneous. I do occasionally build round a well-known theme, and give it new implications. The matsya avatar motif, for example, generates the vision of a fish goddess. Symbolising elegance and grace or a conference of mermaids. It will be unproductive to explain each image as it will destroy the mystery of its birth.

    So there are a lot of things in our literature and our art which can lend themselves to new imagination and new expression?
    There certainly are. Benodebehari Mukherjee had many interesting things to say in this regard. He often used to point out that the living tree of tradition had many sensitive points from which new offshoots could grow. He also used to point to the breadth of our traditional lore.

    When he had lost his eyesight, he had engaged a young lady to read to him from books and periodicals. But what he found most profitable and diverting were readings from the Mahabharata, which he thought gave us as extensive a picture of human life as only an epic can. Its hopes and fears, its conflicts and crises, their analyses and resolutions. There was hardly any contemporary situation that it did not have a sampling of. Let alone the main narrative, which is of fratricidal strife and of which our modern world has so many distressing instances. And its final lesson, where the hard-won victory is bitter with the taste of defeat.

    Most developed cultures have stories of this kind that unmask the contradictions inherent in human life and indicate a way of resolving them, of facing them with dignity. To focus our attention upon various contemporary problems, Rabindranath used the armature of old legends very effectively. I am sure that many other writers and playwrights have done this just as well.

    Modern Indian writers, especially in the regional languages, and theatre practitioners have used ancient legends and myths to a certain extent. But painters have on the whole failed to use this material. Do you think this is because of the notions of modernism that they cultivated?

    You are right. The visual artists have not been equally forthcoming. This could be because literary themes can be adjusted more readily to varied cultural proscenia while visual representations come with a marked period reference.

    Nandalal did Natir Puja based on a Tagore play in Kirti Mandir, Baroda. He also did a dynamic Mahabharata piece. Ramachandran has used the story of Yayati. I have used the theme of the “King of the Dark Chamber” in Rabindralaya, Lucknow. But their function and relevance need to be explained as they are limited by their visual reference.

    Literary texts or plays do not need such mediation or interference and can easily be given contemporary colour. In truth, all thematic art expression has to grow out of current practices or cultures. Even the performing arts, especially their traditional forms, which appear artificial as soon as the actions they represent vanish from use.

    This has affected the abhinaya areas of dance forms such as Bharatanatyam, Kuchipudi and Odissi. Where the acts they portray are no more prevalent in village or town, like drawing water from a well, milking a cow, churning butter or carrying water pitchers on the head. Besides, the language of these dances are connected to a certain kind of physical structure and deportment. Drastic changes in these also affect their communicative efficacy and rhythm.

    And readable texts, plays and performing arts have the advantage of narration. As does film but the scope is limited when it comes to painting and sculpture. Much more so when the message is complicated. When I did the The War of the Relics piece for the Delhi Art Summit, I had a complicated message – all religions seek to unite humanity and keep them in peace but the symbols and relics they come up with divide them and encourage confrontations.

    In the process, the human being becomes a warring beast or an arrant monster with many heads and arms. It was too large a message for a concise statement and could not be condensed into a single dramatic scene. Though it has many frames of drama that link up into a serial tapestry.

    And that is perhaps more visible in the folk traditions?
    True. Folk art has a certain kind of mobility that more structured and sophisticated systems of expression do not. But in our art tradition they often live close together and interact and become part of a larger fluid language system.

    You have from time to time commented on contemporary events or social attitudes but seldom painted images that address them directly. Is this because you think that painting is not the right medium for commenting on such things or is this because you do not want to be didactic?

    I am actually aware that a painting cannot do all that a written text can. It can depict a scene but not analyse or comment with ease. Often the topical events depicted by artists – like the conquest of space, a nuclear explosion, etc. – end up looking rather trite. Like sorry attempts by artists to say that they are aware of the larger world; that they are not closed up in the company of their own selves.

    I am also rather bored by the blatant didacticism of many young artists who choose to comment on the pressures and banalities of present-day life, and their persistent irony while keeping their eyes firmly fixed on the market rates. I think our response to events should come out of a deeply felt emotional reaction which ties up, in turn, with earlier experiences or reactions.

    Like Picasso’s Guernica, which moves from his response to the brutality of the bullfight to his response to war. I could at one time move in some of my terracotta reliefs from my response to the devastation of a flood to my response to the brutalities of the war in Bangladesh which eventually led to its liberation. Trying to underline the fact that the massacre of a group of human beings and their body count became marks of achievement for another group.

    But this can come about only when an outside event is perceived as an assault on one’s being. Superficial topicality and didacticism is something I choose to keep away from.

    So you do not wish to be an activist artist?
    There are many things happening in this world that force you to react against them and be an activist, to speak against them or take other measures depending upon your competence and ability. Just painting against them is a poor gesture. I do not however disapprove of those who do. My choice will be to be an artist activist – not an activist artist.

    When one looks at your work over the years, one sees that you have been trying to achieve a kind of freedom.
    I have always been. I do not want to be oppressed by the feeling that art is long, life is short. Life is certainly short – even a long life is not long enough for us to achieve what all we want. But the language of art should emerge naturally, with ease and spontaneity, out of our responses to our environment and out of our inner vision.

    Each artist is tuned in a special way for this emergence and his initial effort must be to discover how he is so. Once he discovers it, he is bound to have a sense of freedom.

    The problem arises when you go against your grain and try to achieve things that strain your competence. In the modern world, each artist is credited with a vision and genius of his own; his achievement norms are individual; he is outside the race track. Pablo Picasso and Douanier Rousseau are both artists of the same time – the former informed and versatile and individual, the latter naive and limited and individual. Both are influential pioneers of a kind.

    You have from time to time pointed to the imperfections of the world but you continue to be passionate about it and, in spite of all its blemishes, celebrate it.
    There are many things in our lives that throw us into a state of anger. There are many things in our environment that irritate us. There are round us various social pressures we want to rebel against. Our lives are hemmed in with restrictions and frustrations of various kinds.

    In this over-inhabited world, there are various conflicts of interests which cannot be fully resolved. Administrators, social scientists, philosophers, priests – they all try in their own ways to contain the conflicts. But the best incentive for civilised living can come only from loving the world. This alone will force everyone to live in peace, to care for the environment like it was a common park.

    I remember hearing in my childhood a prayer my father used to sing. It had a line that went: “Lord, let each day of mine be a festival, a celebration.”

    R Siva Kumar, educated in Kerala and Santiniketan, is Professor of Art History at Visva Bharati, Santiniketan. He has curated several important exhibitions and written extensively on modern Indian art. His publications include The Santiniketan Murals (1995), KG Subramanyan: The Painted Platters (2007) and Paintings of Abanindranath Tagore (2008).

    This interview is excerpted from the catalogue for KG Subramanyan’s 2014 exhibition in Kolkata, titled New Works, presented by the Seagull Foundation of the Arts, Calcutta.

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.