২০ জানুয়ারি ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রোনাল্ড রিগ্যান তাঁর অভিষেক ভাষণে যা বলেছিলেন, এখনও তা আমাদের কানে বাজে। মুক্তবাজারের একনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ফ্রিডম্যানের বই হাতে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণাকারী রিগান তাঁর সেদিনের ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমাদের সমস্যার সমাধান সরকার নয়; সরকার হলো সমস্যা… আমার পরিকল্পনা হলো ফেডারেল এস্টাবলিসমেন্টের আকার আর প্রভাবের লাগাম টেনে ধরা।’ তারপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীব্যাপী মুক্তবাজার প্রতিষ্ঠার যে তাণ্ডব শুরু করেছিল কালক্রমে তা খ্যাতি পেয়েছিল রিগান বিপ্লব হিসেবে। ক্ষুদ্রাবয়বের সরকার, নিম্ন কর, ডি-রেগুলেশান এসবই ছিল সেই বিপ্লবের অন্তর্গত এবং এই সেদিন সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির প্লাটফরম থেকেও পুনরায় ঘোষণা করা হয়েছিল রিগানের পুরানো অঙ্গীকার। খুব জোরালো গলায় বলা হয়েছিল, ‘ব্যক্তিপ্রতিষ্ঠানে সরকারের হস্তক্ষেপ আমরা সমর্থন করি না। বাজারের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপ সেটির সমস্যাগুলিকে আরও তাঁতিয়ে তোলে এবং মুক্তবাজারের স্বসংশোধনের দীর্ঘসূত্রিতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’ রিপাবলিকান ম্যাককেইন গর্বিত ভঙ্গীতে তখন নিজেকে ঘোষণা করেছিলেন, ‘রিগান-বিপ্লবের গর্বিত পদাতিক সৈনিক’ হিসেবে।
শুধু রিগান কেন, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য রাজনীতিকও এইসব কথাকে শিরোধার্য করে এতদিন বাগাড়ম্বর করে এসেছেন। তারা বলেছেন, জাতীয়করণ খারাপ, নিয়ন্ত্রিত বাজার খারাপ, বাজারের কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ, সেটা তো রীতিমতো পাপ। আর বলার অপেক্ষা রাখে না, সমাজতান্ত্রিকরা যেহেতু বাজারের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের পক্ষপাতি সেহেতু তারা হলো সেই পাপের কাণ্ডারী! গত ৪০ বছরের মধ্যে ২৮ বছর হোয়াইট হাউসে বসবাস করেছে রিপাবলিকানরা, বাদবাকি সময় বসবাস করেছে ডেমোক্র্যাটরা; কিন্তু কি ডেমোক্র্যাট কি রিপাবলিকান, সবাই এই খোলা বাজারের বন্দনা করেছে।
কিন্তু ম্যাককেইন নিজেকে ‘রিগান-বিপ্লবের গর্বিত পদাতিক সৈনিক’ ঘোষণার পরের সপ্তাহ পার না হতেই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, সেই সূত্রে বিশ্বঅর্থনীতিও, এমন এক মহাবিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে যে ম্যাককেইন এখন নিজের নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করে নিজের সম্মান বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের সেই খোলা বাজারের খোলা হাওয়ায় এমন এক অর্থনৈতিক মন্দার বাতাস ঘুরপাক তুলছে, যাকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন ১৯২৯ সালের মহাবিপর্যয় পরবর্তী আর এক মহাবিপর্যয়। আর এ মহাবিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে বাজারে, জাতীয়করণ করতে হচ্ছে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে! অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যিই এ-ঘটনা ঘটছে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের বুকে। এই গত ১৬ সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও হাউজিং বাজারকে রক্ষার জন্যে বাজারে ধারাবাহিক হস্তক্ষেপের অংশ হিসেবে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যমানে জাতীয়করণ করেছেন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি দি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ- এআইজি’কে!
তবে তারা অতীতের ওইসব বাণীর কথা ভুলে যাননি। তাই দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করে তুলতে ট্রেজারী সেক্রেটারি হ্যাঙ্ক পলসন এবং ফেডারেল রিজার্ভ চিফ বেন বারনানকির মতো যারা রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন, তারা সবাই চাতুর্যের সঙ্গে এড়িয়ে চলেছেন ‘জাতীয়করণ’ শব্দটিকে। তারা বলছেন কিনে নেয়ার কথা, অধিগ্রহণ করার কথা। বাড়ির পাশেই যখন ভেনিজুয়েলার মতো আরশীনগর, সেই আরশীনগরে যখন হুগো শ্যাভেজ একবিংশ শতাব্দীর সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যে সব কোম্পানি একের পর এক জাতীয়করণ করে চলেছেন তখন তারা নিজেরা জাতীয়করণ শব্দটি মুখে নিয়ে তো রিগান-বিপ্লবের কৌমার্যহানী করতে পারেন না।
কিন্তু তারা না বললে কী হবে, বহুলপঠিত নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার বাণিজ্যিক রিপোর্টার ফ্লয়েড নোরিস তাঁর এক ব্লগের শিরোনাম দিয়েছেন, ‘সোশ্যালিজম, টুয়েন্টিফার্স্ট সেঞ্চুরি স্টাইল।’ আর ২০০১ সালের নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির জোসেফ স্টিগলিজ-এর মতো ব্যক্তিত্ব এই প্রচেষ্টাকে অভিহিত করেছেন ‘কর্পোরেট ওয়েলফেয়ার’ হিসেবে! গার্ডিয়ান পত্রিকার ল্যারি ইলিয়ট তাঁর মন্তব্যপ্রতিবেদনে ২০ সেপ্টেম্বর লিখেছেন, ‘মার্কস এবং এঙ্গেলসের পর ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান বেন বারনানকে, ইউএস ট্রেজারী সেক্রেটারি এবং গোল্ডম্যান সাশ টাইকুন হ্যাঙ্ক পলসন বিগত সাতদিনে অন্য যে-কারও চেয়ে সমাজতন্ত্রের জন্যে অনেক বেশি করেছেন।’
রীতিমতো শ্লেষের ব্যাপার হলো, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংকট যখন একেবারে খাঁদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে, তখনও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইকনোমিক অ্যান্ড মনিটারী অ্যাফেয়ার্স কমিশনার জোয়াকুইন আলমুনিয়াকে দেখা গেছে ইউরোপের প্রতি হুশিয়ারী উচ্চারণ করতে, ইউরোপের উচিত হবে না পতনশীল কোম্পানীগুলিতে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ‘ফাইন্যান্সল সোশ্যালিজম’ প্রয়োগ করা। বলেছিলেন তিনি, ‘আমার মতো, আমাদের মতো সোশ্যালিস্টরা বাণিজ্যিক সমাজতন্ত্রের বিপক্ষে।’ অথচ ইউরোপের আগেই যুক্তরাষ্ট্র চোখকান বুজে বাণিজ্যিক সমাজতন্ত্রের পাল উড়িয়ে দিলো!
সমাজতান্ত্রিক উপায়ে পুঁজিতান্ত্রিক সমস্যাসমাধানের এই যুক্তরাষ্ট্রীয় খেলা দেখে কেউ আবার ভাববেন না, সত্যিই যুক্তরাষ্ট্র নথ খসাচ্ছে; এখন লাজুক লাজুক কণ্ঠে কোম্পানি অধিগ্রহণের কথা বলছে বটে, কিন্তু কয়েকদিন পর এই খোলা বাজারপন্থীরা খোলা মুখে জাতীয়করণের কথা বললেও বলতে পারে।
কিন্তু ঘটনা মোটেও সেরকম নয়। ‘ইরাকে ধংসাত্মক মারণাস্ত্র আছে’, যুক্তরাষ্ট্রের চরমতম এই মিথ্যা কথাটির চেয়েও বড় মিথ্যা হলো, ‘বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং মার্কিন পরিবার ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে’ মার্কিন সরকার ৭০০ ডলার বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। আসলে জনগণের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করা হবে এবং তা ব্যয় করা হবে ওয়াল স্ট্রিটের কর্পোরেট ফাইন্যান্সল টাইটনদের বিষাক্ত ঋণের দায় থেকে উদ্ধারের কাজে। ইরাকের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যত অর্থ ব্যয় করেছে, তার চেয়েও অনেক বেশি অর্থ তারা এবার জনগণের গাঁট কেটে আদায় করার উদ্যোগ নিয়েছে। সাংবাদিক নাওমী ক্লেইন কিছুদিন আগে তাঁর এক নিবন্ধে বর্ণনা করেছেন, এই অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোত্তম কী করতে পারে সে-সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে প্রাক্তন এক রিপাবলিকান হাউজ স্পিকার নিউট গিংগরিচের একটি লেখা থেকে। ২১ সেপ্টেম্বর রবিবার গিংগরিচ ”মৌলিক সংস্কারের মধ্যে দিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের রিগান-থ্যাচার নীতিতে” প্রত্যাবর্তনের জন্যে এই লেখার মাধ্যমে কংগ্রেসের কাছে তুলে ধরেছেন ১৮টি নীতিপ্রস্তাবনা। অর্থনৈতিক সংকটের এই পর্বে, গিংগরিচ আসলে দাবি তুলেছেন সারবানেস-অক্সলে অ্যাক্টটিকে বাতিল করে দেয়ার। কিন্তু শুধু নাওমী ক্লেইন কেন, যে-কেউই অ্যাক্টটির দিকে তাকালে বুঝবেন, এটি বাতিল করে দেয়ার অর্থ হলো বাণিজ্যশিল্পকে আবারও ডি-রেগুলেশানের দিকে পরিচালনা করা। গিংগরিচ প্রস্তাব রেখেছেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও বেশি করে সংস্কার করার, যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে দেখা দেয় আরও বেশি ”প্রতিযোগিতা।” তিনি চাইছেন সীমান্ত কার্যকরীকরণকে আরও শক্তিশালী করতে, কর্পোরেট ট্যাক্সকে কর্তন করতে। আর তাঁর সর্বশেষ আকাঙক্ষা হলো, সমুদ্র উপকূলবর্তী ড্রিলিং-এর অনুমোদন আদায় করা।
লেখাই বাহুল্য, এই সমুদ্র উপকূলবর্তী ড্রিলিং-এর পক্ষে খুব সুদক্ষতার সঙ্গে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন গিংগরিচ। এবং গত চার মাস আগেও এটি রাজনৈতিকভাবে কোনও বিবেচ্য বিষয় ছিল না। কিন্তু অবস্থা পাল্টেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভকে দেখা যাচ্ছে এর সমর্থনমূলক আইনের অনুমোদন দিতে। এরকম একটি বিতর্কমূলক বিষয়ে জনসমর্থনকে পক্ষে আনার জন্যে ২৭ সেপ্টেম্বর গিংগরিচকে দেখা গেছে স্যাটেলাইট টেলিভিশনে একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে।
গিংগরিচের এসব বক্তব্য বিশ্লেষণ করে নাওমী ক্লেইন বলছেন, ব্যক্তিঋণকে এভাবে জনগণের তফিলে ঢুকিয়ে দেয়া বর্তমান সংকটের প্রথম ধাপ মাত্র। এর দ্বিতীয় ধাপ আসবে তখনই যখন এই হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ঋণসংকটকে সামাজিক নিরাপত্তাকে ব্যক্তিগতকরণের, কর্পোরেট কর আরও কমিয়ে আনার এবং দারিদ্র্যখাতে ব্যয় কমানোর অজুহাত করে তোলা যাবে। একজন রাষ্ট্রপতি ম্যাককেইন এ-কাজটি হাসিমুখেই করবেন, তা তাঁর নির্বাচনী ঘোষণাতেই সুস্পষ্ট। আর একজন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা তার উপদেষ্টা পর্ষদ ও কর্পোরেট মিডিয়ার কাছ থেকে নির্বাচনী প্রচারণার সময় উচ্চারিত প্রতিশ্রুতিগুলি চুপচাপ ভুলে যাবার পরামর্শ পাবেন ও মুক্ত বাজারকে উদ্দীপ্ত করতে ঝাপিয়ে পড়বেন।
এসবের গড় ফল হিসেবে যা দেখা যাচ্ছে, তা হলো ওয়াল স্ট্রিট ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ যাতে অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকে সেটিই এরকম সব অধিগ্রহণের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। এ প্রক্রিয়ায় কর্পোরেটদের কর আরও কমবে, কিন্তু বাড়বে জনগণের কর। পুঁজিতন্ত্রের একটি দিক খুব স্পষ্ট করে তুলেছেন জর্জ বুশ সকলের সামনে। সেটি হলো, এখানে মুনাফা যখন হবে তখন তা ব্যক্তিমালিকের ঘরে যাবে, আর যখন লোকসান হতে থাকবে তখন তা সামাজিকভাবে ভাগাভাগি করে নিতে হবে। সোজা ভাষায় বলতে গেলে, ক্ষুদ্রাবয়বের সরকার কর্পোরেটদের লোকসান সামলাতে জনগণের পকেট থেকে তা বিভিন্ন উপায়ে আদায় করে নেবেন!
কিন্তু না, এখানেই শেষ নয়। কেননা সামাজিকভাবে সকল লোকসান আদায় করার ব্যবস্থা করেও পুঁজিতান্ত্রিক দেশগুলির পক্ষে সম্ভব নয় এরকম অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ধার পাওয়া। তাই যদি হতো, তা হলে চক্রাকারে ঘুরে ঘুরে বার বার অর্থনৈতিক মন্দাভাব দেখা দিতো না। এরকম ক্ষেত্রে পুঁজিতন্ত্রকে আরও একটি পথ অনুসরণ করতে হয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হলো,ণ্ড সেটি হলো যুদ্ধের পথ। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ার বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করেছিল আর এবার ২০০৮ সালে সে ওয়াল স্ট্রিট বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে প্রত্যক্ষ অর্থনৈতিক একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করতে চলেছে। ব্যক্তিপুঁজি-লোকসানের মাশুল দিতে হবে এবার সারা পৃথিবীকে। আরও একটি ইরাক কিংবা আফগানিস্তান খুঁজে নিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে, তার মিত্রপক্ষকে। পুঁজিতন্ত্রের এ-খেলার সেই অসহায় শিকার কোন বা কোন-কোন রাষ্ট্র হবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৮
সেইসব দিন স্মরণে,- যখন কলামিস্টরা ছদ্মনামে লিখতেন; এমন নয় যে তাদের সাহসের অভাব ছিল, তারপরও তারা নামটিকে অনুক্ত রাখতেন। হতে পারে তাৎক্ষণিক ঝড়-ঝাপটার হাত থেকে বাঁচতেই তারা এরকম করতেন। আবার এ-ও হতে পারে, সাহসকেও বিনয়-ভুষণে সজ্জিত করেছিলেন তারা। আমারও খুব ইচ্ছে দেখার, নামহীন গোত্রহীন হলে মানুষ তাকে কী চোখে দেখে… কাঙালের কথা বাসী হলে কাঙালকে কি মানুষ আদৌ মনে করে!