হিন্দি-উর্দুতে যারা গান লেখেন তাদের একটি অত্যন্ত প্রিয় শব্দ ‘বেশুমার’ – বিশেষণটি গীতিকাররা প্রেমের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করেন – সেপ্রেম অপরিমেয়, তাকে সংখ্যায় ব্যক্ত করা যায় না। প্রেম ‘বেশুমার’ হোক আমাদের আপত্তি নেই, এবং আমরাও বাংলায় গাই ‘আমি এতো যে তোমায় ভালবেসেছি’। কিন্তু বাংলাদেশের মসজিদ ‘বেশুমার’ হোক আমরা চাই না। মসজিদশুমারি বাংলাদেশে হয়েছে কিনা আমরা জানি না, না হয়ে থাকলে খুব শীঘ্রই বাংলাদেশে মসজিদশুমারি হওয়া প্রয়োজন। সেসাথে মসজিদ নির্মাণের আগে শহর বা গ্রামের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এর অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন – একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কয়টি মসজিদ থাকতে পারবে তার নির্দেশনাও রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা উচিত। কিছু দিন আগে ঢাকায় বুদ্ধিজীবি স্মৃতি সৌধে গিয়ে, স্মৃতি সৌধের পেছনেই একটি সাইনবোর্ড দেখতে পেলাম – সেখানে এলাকাবাসী একটি প্রস্তাবিত মসজিদের জন্য জায়গার দখল নিয়েছেন। এবং যেহেতু রায়েরবাজারের এই জলাভূমি আজ সম্পূর্ণ মজে গিয়ে প্রায় নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে এবং সেখানে মাটি ভরাট করে এরমধ্যেই বেশ কিছু স্থাপনা উঠতে শুরু করেছে – কাজেই সহসাই যে সেখানে এই মসজিটিও স্থাপিত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু একটি স্মৃতি সৌধের সীমানায় বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য কীর্তির পেছনে এভাবে একটি মসজিদ তার নির্দোষ ও পবিত্র মিনার ও আজান দিয়ে সৌধের পরিবেশকে কলুষিত করবে – আর আমাদের রাষ্ট্র ও সরকার তার কোনো প্রতিরোধ সৃষ্টি করবে না? রায়েরবাজারের মুসলিমদেরও বড় কর্তব্য আছে – তাদের এখনই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বুদ্ধিজীবি স্মৃতি সৌধের সৌন্দর্য্য ও মর্যাদা ব্যাহত হয় এমন কোনো অংশে মসজিদ বাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা তারা গড়ে উঠতে দিতে চায় না। মসজিদ ভাঙ্গা চূড়ান্ত অধর্মের কাজ, তাই মসজিদ গড়ার সময় যাতে কোনো অধর্ম না হয় সেদিকে মুসলমান নাগরিক ও জনতার লক্ষ্য রাখা উচিত। সারাদেশে মুসলমানদের ভাবা উচিত তাদের মসজিদ যেন কারো পথের কাঁটা না হয়, ব্যাঙের ছাতার মতো মসজিদগুলো যেন চারিদিকে না গজায়, মসজিদ যেন তার সৌন্দর্য্য ও মর্যাদা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়।
কিছু দিন আগে ঢাকায় বুদ্ধিজীবি স্মৃতি সৌধে গিয়ে, স্মৃতি সৌধের পেছনেই একটি সাইনবোর্ড দেখতে পেলাম – সেখানে এলাকাবাসী একটি প্রস্তাবিত মসজিদের জন্য জায়গার দখল নিয়েছেন।[...]