গতকালের রায়ের পর, বিদেশি বিভিন্ন পত্রিকায় নিজামীকে যুদ্ধাপরাধীর বদলে ইসলামিস্ট নেতা হিসেবে পরিচয় দেয়া হয়েছে। এই যেমন ধরুন, বিবিসিতে শিরোনাম হয়েছে ‘বাংলাদেশ ইসলামিস্ট লিডার মতিউর রহমান নিজামী সেন্টেন্স্‌ড্ টু ডেথ’, ভাবখানা এমন যেন যুদ্ধাপরাধের দায়ে নয় বরং ইসলামিস্ট নেতা হবার অপরাধেই তার এই শাস্তি। [. . .]

গতকালের (২৯ অক্টোবর ২০১৪) রায়ের পর, বিদেশি বিভিন্ন পত্রিকায় নিজামীকে যুদ্ধাপরাধীর বদলে ইসলামিস্ট নেতা হিসেবে পরিচয় দেয়া হয়েছে। এই যেমন ধরুন, বিবিসিতে শিরোনাম হয়েছে ‘বাংলাদেশ ইসলামিস্ট লিডার মতিউর রহমান নিজামী সেন্টেন্স্‌ড্ টু ডেথ’, ভাবখানা এমন যেন যুদ্ধাপরাধের দায়ে নয় বরং ইসলামিস্ট নেতা হবার অপরাধেই তার এই শাস্তি। আমাদের এই বিচার নিয়ে বিদেশি পত্রিকাগুলি শুরু থেকেই এক ধরণের উন্নাসিকতা দেখিয়ে আসছে, তার উপর যোগ হয়েছে জামাতিদের কোটি কোটি টাকার লবিং। ফলত আমাদের এই বিচার প্রক্রিয়াকে 'অকার্যকর', এবং তার চেয়েও বড় কথা, 'অবৈধ' প্রমাণ করার একটা প্রয়াস বিদেশি মহলগুলিতে বরাবরই ছিল; তাই গত কয়েক বছর ধরেই বহির্বিশ্বে আমাদের সার্বক্ষণিক যুদ্ধ চলছিল এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে। তাদের প্রতিবেদনগুলির খুঁত ধরিয়ে দেয়া থেকে শুরু করে, নিজেরা প্রতিবেদন লেখা ও সেগুলো প্রচার করা; বিদেশি এই কলাম-লেখকদের তথ্যগত ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে টুইটার, ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি তাদের চ্যালেঞ্জ করেছি আমরা প্রতিনিয়ত। হাতে-গোনা কজন যোদ্ধার নিরলস চেষ্টায় ধীরে ধীরে আমরা ফল পেতে শুরু করি। বিদেশি এসব কলাম-লেখকেরা হাড়ে হাড়ে টের পেতে শুরু করেন যে যা ইচ্ছে তা-ই লিখে পার পাবার দিন শেষ, কেননা দিনদিন তাঁদের বস্তুনিষ্ঠতা, গ্রহণযোগ্যতা ও প্রফেশনাল ক্রেডিবিলিটি প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছিল। এরপর এলো শাহবাগ, আমাদের অনলাইন কর্মীর সংখ্যা মুহূর্তে বেড়ে গেল কয়েক গুণ, সাথে সাথে গ্লোবাল মিডিয়াও বাংলাদেশের লক্ষ মানুষের দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বাধ্য হলো, কয়েক দিনের ব্যবধানেই আমূল পাল্টে গেল বিদেশি পত্রিকাগুলির অবস্থান। আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা আমাদের সেই অর্জন ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছি। সমমনা গোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন এবং স্বার্থান্বেষী বিভিন্ন মহলের কার্যকলাপের সুযোগে আবারও শুরু হয়েছে এসব অপপ্রচার। প্রকৃতপক্ষে, আমরা যারা নিজেদের এই বিচারের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করি, আমরাই কিন্তু তাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছি। সঙ্গত কারণেই বিদেশি পত্রপত্রিকার এ ধরণের শিরোনামে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং তা প্রকাশও করেছেন। তবে অবাক হয়েছি যখন তাঁদের মধ্যে এমন কজনকে পেলাম যাঁরা কিনা সাঈদীর রায়ের পর, এই কিছুদিন আগেও, সরকারের সাথে জামাতের আঁতাত নিয়ে কথা বলেছেন, শ্লোগান তুলেছেন, লেখালেখি করেছেন, বা সেসব লেখা ফলাও করে শেয়ার দিয়েছেন — প্রচার করেছেন। এখানে লক্ষণীয় যে, অনভিপ্রেত কোনো রায়ের প্রতিবাদে প্রসিকিউশন, তদন্ত দল, তদুপরি সরকারের প্রশাসনিক…

অপরাধের সাথে সামমঞ্জস্যহীন লঘু দণ্ড প্রদানের এই দৃষ্টান্ত ভবিষ্যতে বিচারাধীন অন্যান্য মামলাগুলোর রায়ে শাস্তি প্রদানের মানদন্ডের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আইসিএসএফ এর পক্ষ থেকে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। আইসিএসএফ আশা প্রকাশ করে যে, নিন্ম আদালতে অপরাধীর অপরাধের মাত্রা প্রমাণে কোন দূর্বলতা থেকে থাকলে উচ্চতর আদালতে আপিল শুনানিতে সেটি সংশোধিত হবে এবং উচ্চ আদালতে যথার্থ সর্বোচ্চ দণ্ড প্রদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারে সাধারণ মানুষ এবং ১৯৭১ এর অগণিত ভিকটিমদের ন্যায়বিচারের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে। [...]

গত ৫ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ কর্তৃক আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়ে অপরাধীর লঘু শাস্তিতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত এবং নির্যাতিত মানুষ এবং তাঁদের স্বজনদের আশার প্রতিফলন হয়নি বলে মনে করে বিচারের পক্ষের নাগরিকদের দ্বারা সংগঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক কোয়ালিশন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ)। জনাব আব্দুল কাদের মোল্লা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল যিনি ১৯৭১ সালে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, হত্যা, হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা, ধর্ষন ইত্যাদি অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে বিচারের মুখোমুখি হয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-২ এ তার বিরুদ্ধে আনা ৬ টি অভিযোগের ৫ টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ার পরও তাকে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে আইসিএসএফ এর পক্ষ থেকে। আইসিএসএফ বিশ্বব্যাপী ১৩টি ভিন্ন সংগঠন ও বিভিন্ন ব্যক্তির সমন্বয়ে ২০০৯ সালে গঠিত একটি ফোরাম, যারা ১৯৭১ সালে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান, আইনের শাসন ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা এবং ১৯৭১ সালে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সক্রিয়। একাত্তরে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী, এবং তাদের দ্বারা সৃষ্ট রাজাকার আলবদর এবং আল-শামস বাহিনী কর্তৃক সংঘঠিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধসমূহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারের এখতিয়াভুক্ত, যা একটি স্বাধীন আদালত। তবে আইসিএসএফ মনে করে যে ট্রাইবুনালে তথ্য-প্রমাণসহ কাদের মোল্লার প্রমাণীত অপরাধসমূহের ভয়াবহতা, নৃশংসতা এবং ব্যাপ্তির সাথে তাকে প্রদত্ত যাবজ্জীবন কারাদন্ড সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি। ফলে উক্ত রায়ে প্রদত্ত এই লঘু দণ্ডে সাধারণ মানুষ এবং একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ ও নির্যাতিত মানুষ এবং তাঁদের স্বজনদের আশার প্রতিফলন ঘটেনি। আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারকে এগিয়ে নিতে যত ব্যক্তি, গোষ্ঠী এবং সংগঠন সোচ্চার ভূমিকা রেখেছেন তাঁদেরকেও এই রায় হতাশ করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পূর্বে অপর পলাতক অপরাধী আবুল কালাম আযাদের বিচারে ঘোষিত মৃত্যুদন্ড এবং সেখানে এই একই ট্রাইবুনাল কর্তৃক অনুসৃত শাস্তি প্রদানের মানদন্ডের সাথে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায়ে ঘোষিত শাস্তি সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে আইসিএসএফ মনে করে। অপরাধের সাথে সামমঞ্জস্যহীন লঘু দণ্ড প্রদানের এই দৃষ্টান্ত ভবিষ্যতে বিচারাধীন অন্যান্য মামলাগুলোর রায়ে শাস্তি প্রদানের মানদন্ডের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আইসিএসএফ এর পক্ষ থেকে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। আইসিএসএফ আশা প্রকাশ করে যে, নিন্ম আদালতে অপরাধীর অপরাধের মাত্রা…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.