শিক্ষক হিসেবে নয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মো. আনোয়ার হোসেন যোগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়-প্রশাসনের সর্বপ্রধান নির্বাহী হিসেবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ২০১২ সালে ভয়াবহ সংকটে পড়েছিল, প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিল অতল খাদের কিনারে; তখন ওই ভয়ানক সংকট থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ই উদ্যোগী হয়েছিল তাকে সেখানে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের ব্যাপারে। কিন্তু মনোনীত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করার ঝুঁকি সম্পর্কে নিশ্চয়ই আনোয়ার হোসেনের ধারণা ছিল। তাই অল্প সময়ের মধ্যেই তার উদ্যোগে উপাচার্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, যে-প্রক্রিয়ার সরাসরি বিরোধিতা করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।...

শিক্ষক হিসেবে নয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মো. আনোয়ার হোসেন যোগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়-প্রশাসনের সর্বপ্রধান নির্বাহী হিসেবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ২০১২ সালে ভয়াবহ সংকটে পড়েছিল, প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিল অতল খাদের কিনারে; তখন ওই ভয়ানক সংকট থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ই উদ্যোগী হয়েছিল তাকে সেখানে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের ব্যাপারে। কিন্তু মনোনীত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করার ঝুঁকি সম্পর্কে নিশ্চয়ই আনোয়ার হোসেনের ধারণা ছিল। তাই অল্প সময়ের মধ্যেই তার উদ্যোগে উপাচার্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, যে-প্রক্রিয়ার সরাসরি বিরোধিতা করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অদ্ভূত ব্যাপার হলো, শিক্ষকরাও অনীহ ছিলেন নির্বাচিত উপাচার্যের ব্যাপারে। কিন্তু রিটের প্রেক্ষিতে রুলনিশি দিয়ে হাইকোর্ট এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। ওই নির্বাচনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক না হওয়ার পরও ভোট পাওয়ার দিক থেকে তিনি দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন, তারপর নিয়োগ পেয়েছিলেন উপাচার্য হিসেবে। কিন্তু খুব বেশি দিন দায়িত্বে থাকতে পারেননি- আমাদের কথিত শিক্ষিত শিক্ষকরা ১৯৭৩ সালের স্বায়ত্তশাসন অধ্যাদেশের অপব্যবহার করে তার বিদায়ের ঘন্টা বাজিয়েছেন। ২০১৩ সালেই তাকে ফিরে আসতে হয়েছে তার আগের কর্মস্থলে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। গেল ফাল্গুনে মো. আনোয়ার হোসেন ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : অবাঞ্ছিত একজন’ নামে যে-বই লিখেছেন, সে-বইয়ের উপজীব্য এই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অর্জিত তার অভিজ্ঞান, উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতা। এই অর্জনের পরিপ্রেক্ষিত-ভাবনা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ, রাজনৈতিক অতীত, পারিবারিক আবহ, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সংগ্রামের বিভিন্ন ঘটনাপঞ্জী, ব্যক্তিগত অনুভূতি ইত্যাদি বিষয়গুলো এলেও বইয়ের নামই বলে দেয়, এ বই আসলে অন্তর্গত রক্তক্ষরণের দলিল, যে-দর্শন তিনি অর্জন করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষক হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াতে সেই দর্শনের ওপর আঘাত আসায় তার জ্বলে ওঠার দলিল। ২. আমি জানি না, আর কারও কাছে এরকম মনে হয় কি না- তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার আনোয়ার হোসেনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই যোগদান ও প্রস্থানের প্রসঙ্গ উঠলেই মনে পড়ে স্পেনের পোর্ট সিটি বিলবাওয়ের মিগুয়েল ডি উনামুনোর কথা। ১৯৩৬ সালের শেষ দিনটিতে মৃত্যু ঘটেছে তার। চোখের সামনে আনোয়ার হোসেনের এই আসা-যাওয়ার ঘটনা না ঘটলে হয়তো আমার মনেও হতো না, এতদিন পরেও মিগুয়েল ডি উনামুনো প্রাসঙ্গিক কোনও কোনও পরিস্থিতিতে। মিগুয়েল ডি উনামুনো-ও, আপনারা জানেন, শিক্ষক ছিলেন। তা ছাড়াও ছিলেন প্রাবন্ধিক, কবি, নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক। এ নিয়ে অবশ্য বিতর্ক আছে যে…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.