যে-মানুষ গান শুনে সাড়া দেয় না, যার হৃদয়ে সঙ্গীত নেই, তাকে বিশ্বাস করা যায় না। এরকম মানুষ শীতল ও শূন্য, একেবারে মর্মমূল অবধি শূন্য।

সঙ্গীত আমার বয়স যখন আঠারো কি উনিশ তখন আমার বাবার এক খদ্দের, আলফ্রেড পাক নামধারী একজন ক্ষ্যাপাটে আলোকচিত্রশিল্পীর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয় যিনি টাকার বিনিময়ে কোনকিছু কিনতে পছন্দ করতেন না। তিনি বরং তাঁর কোন আলোকচিত্র কী কোন ধরণের সেবার বিনিময়ে তাঁর প্রয়োজন মেটাতেন। তিনি যখন শুনলেন আমি গান খুব ভালোবাসি, এতটাই যে ভালো কোন অপেরা কী সিম্ফনী শোনার জন্য আমি লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনতেও দ্বিধা করি না, তখন তিনি আমাকে পছন্দ করতে শুরু করলেন। তিনি আমাকে বললেন যে আমি যখনই কোন গানের অনুষ্ঠান দেখতে যাই তিনি নিশ্চিত করবেন যেন আমি ভালো সীট পাই। অপেরা থেকে শুরু করে জনপ্রিয় সঙ্গীতে আমি আমার সময়ের সবচেয়ে ভালো গায়ক ও সঙ্গীতজ্ঞদের অনুষ্ঠান দেখেছি: কারুসো, মেলবা, গালি-কুর্চি, শুমান-হাইন্ক, জেরাল্ডিন ফারার, জন ম্যাক্করমক, অল্প কজনের নাম মাত্র বললাম। বিস্ময়কর হলেও সত্যি এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় শিল্পী ছিলেন কান্টর সিরোটা। যতবারই আমি তাঁর গান শুনেছি ততবারই আমি অশ্রু সংবরণ করতে ব্যর্থ হয়েছি। তাঁর কন্ঠ একাই আমাকে ইহুদিধর্মে দীক্ষিত করার জন্য যথেষ্ট ছিল। ওস্তাদ বেহালাবাদক জাচা হাইফেজ ও জনি কুবেলিক-এর বাজনা শোনার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। এবং পাদেরিউস্কি, রুবিনস্টাইন ও কর্তোর মত গুরু পিয়ানোবাদকদেরও শুনেছি আমি। তারপর রয়েছেন চেলোবাদক পাবলো কাসাল যিনি আমার মনে শুধু একজন ভালো সঙ্গীতজ্ঞ হিসাবেই নন, একজন অতি উত্তম মানুষ হিসাবেও আসীন আছেন। ধ্রুপদী সঙ্গীতের ক্ষেত্রে আমার সুনির্দিষ্ট পছন্দ-অপছন্দ রয়েছে। লোকেরা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় যখন আমি বলি যে বিথোভেন কিংবা বাখ-কে নিয়ে আমার কোন মাথাব্যথা নেই। ভাগনার, শোপাঁ, স্ট্রাভিন্সকি, রাভেল কিংবা স্ক্রিয়াবিন-এর মত সঙ্গীত রচয়িতাদের কাছে তাঁরা নিতান্তই ফ্যাকাশে । আমি আপনাদের শুধু এটুকুই বলতে পারি যে বিথোভেন-এর মুনলাইট সোনাটা শ'দুয়েকবার শোনার পর আমি সঙ্গীতের সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলি। আর বাখের ব্যাপারে বলি, তিনি আমার পছন্দের কাছাকাছিও আসতে পারেন নি। আমি এ-কথা বলতে দ্বিধা করি না যে তাঁর সঙ্গীতকে আমার কাছে আঙুলের কসরত বলে মনে হয়, যেখানে অধিকাংশ মানুষ তাঁকে মনে করে শুদ্ধতার পরাকাষ্ঠা বলে। আমার প্রিয় সঙ্গীতরচয়িতা স্ক্রিয়াবিন, আধুনিক ধ্রুপদীদের মধ্যে যাঁকে এক নম্বর বলা যেতে পারে। তাঁর সঙ্গীতই শুধু বৈপ্লবিক ছিল না মানুষ হিসাবেও তিনি ছিলেন ক্ষ্যাপাটে ধরণের, তাঁর বন্ধুরা যাঁকে বেমানান…

একসময় যে-বিষয়গুলোকে এমন জগৎবিদারী, এমন মহাপ্লাবনিক বলে মনে হয়েছিল, বয়স বাড়ার সঙ্গে সেগুলোকে কীরকম ফ্যাকাশে দেখায়। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে সেগুলো কেমন বামনাকৃতি ও খর্বকায় হয়ে যায়[..]

কামসাহিত্য স্যুরা ভিলায় থাকার সময় রবের নামে একজনের সঙ্গে আমার দারুণ বন্ধুত্ব হয়। সে আমার খুব প্রশংসা করতো এবং আমাকে প্রায় ঈশ্বরতুল্য মনে করতো। আমাদের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া ছিল। আমরা জগতের প্রায় সব বিষয় নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত উন্মাদের মত কথা বলতাম। আমার বন্ধু জোয়ি তখন রবের ও তার সুন্দরী বউ মিরেলের সঙ্গে থাকতো। তাদের বাড়িতে ছোট্ট একটি ঘর ভাড়া নিয়েছিল সে। মিরেলকে দেখলে আমরা দুজনেই ভেতরে ভেতরে উষ্ণ হয়ে উঠতাম। সে ছিল খুবই যৌনাবেদনময়ী নারী। প্রত্যেক সুযোগেই তাকে জাপটে ধরা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে এই উষ্ণতার অনুভবটুকুই ছিল আমাদের একমাত্র রক্ষাকবচ। সে ছিল এক সত্যিকারের ছেনালি। তার ইঙ্গিতপূর্ণভাবে তাকানো, কারণে অকারণে আমাদের সামনে উবু হয়ে স্তনজোড়া প্রদর্শন করা, নিতম্বের প্রবল দুলুনি এবং ইত্যাকার উত্তেজক ভঙ্গিতে আমাদের মাথা ঠিক রাখা আসলেই কঠিন ছিল। রবেরের নানী মারা গেলে তাকে শহরের বাইরে যেতে হয় শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার জন্য। সে যাওয়ার আগে জোয়িকে বলে যায় মিরেলের দেখভাল করতে, আর সেও দেরি মাত্র না করে তাকে নিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসে ডিনারে। ভালোই খাওয়াদাওয়া করি আমরা এবং প্রচুর পান করি সেইসাথে। আমরা সবাই ছিলাম খুব উল্লসিত চিত্তে এবং এটা খুব স্পষ্ট ছিল যে আমাদের সবার মনেই একটা জিনিষ খেলা করছিল, সেটা হচ্ছে কামেচ্ছা। আমরা প্রতি মুহূর্তে উত্তেজিত হয়ে উঠছিলাম এবং খুব দ্রুতই আমরা সবাইকে এক সঙ্গে এক সোফাতে আবিষ্কার করি। আমি তাকে চুমু খেতে শুরু করি, প্রবল ও প্রলম্বিত চুমু, সেইসঙ্গে স্তনমর্দন, সে এমন ঢিলেঢালা একটা ব্লাউজ পরেছিল যে তার ভেতর দিয়ে হাত চালিয়ে দেওয়া খুব সহজ ছিল। হঠাৎ জোয়ি বলে, "চলো হেনরি আমরা বেডরুমে গিয়ে সবাই মিলে খুব মজা করি।" মিরেল তাতে আপত্তি জানায়, আমিও তার সাথে যোগ দিই। "ঠিক আছে", জোয়ি বলে, "তাহলে তোমরা দুজন আগে যাও, আমি পরে আসবো। শত হলেও এটা তোমার বাড়ি"। এটা ভাবতেই আমার হাসি পাচ্ছিল। আমরা বেডরুমে যাই, মিরেল নিজেকে বিছানায় মেলে দেয়, আদ্যোপান্ত নগ্ন, সুন্দর! আমার কী হয় জানি না, আমি কিছুতেই উত্থিত হতে পারছিলাম না। খুবই বিচ্ছিরি ছিল ব্যাপারটা। আমাকে তার কাছে মাফ চাইতে হয়। আমার খুব খারাপ লাগছিল কেননা আমি এই মুহূর্তটার জন্য দীর্ঘদিন…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.