পৃথিবীতে শনাক্তকৃত জীব প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। অচেনা-অজানা আছে আরও ৫০ লাখ, হতে পারে ৫ কোটি। ক্রান্তীয় বৃষ্টিবনে আরও ৩ কোটি পতঙ্গ ও ১৫-২০ হাজার নলবাহী (ভ্যাসকুলার) উদ্ভিদ প্রজাতি থাকা সম্ভব। [...]

পৃথিবীতে শনাক্তকৃত জীব প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। অচেনা-অজানা আছে আরও ৫০ লাখ, হতে পারে ৫ কোটি। ক্রান্তীয় বৃষ্টিবনে আরও ৩ কোটি পতঙ্গ ও ১৫-২০ হাজার নলবাহী (ভ্যাসকুলার) উদ্ভিদ প্রজাতি থাকা সম্ভব। ছত্রাক ও মাকড়সার অনেক প্রজাতি শনাক্তকরণ এখনও বাকি। বিগত ৫ বছরে আমাজান বনাঞ্চলে আবিষ্কৃত হয়েছে ৩০০ নতুন প্রজাতির মাছ এবং ৪ প্রজাতির নতুন বানর জাতীয় প্রাণী। সবকিছু শনাক্ত করতে প্রয়োজন ২৫ হাজার বিজ্ঞানীর বহু বছরের শ্রম আর তাতেও জানা যাবে না ওইসব জীবের জীবনচক্র ও বাস্তু পরিবেশ। বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত জ্ঞাত উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা যথাক্রমে ৬৬৩৪ ও ৫৩৫১। সীমিত আয়তনের এ ভূখণ্ডে বিগত কয়েক বছরে পাওয়া গেছে সপুষ্পক উদ্ভিদের ১২টি নতুন প্রজাতি। এখানকার নলবাহী উদ্ভিদের ১০৬ ও প্রাণীর ১৩৭ প্রজাতি নানা পর্যায়ে বিপন্ন, বিলুপ্ত হয়ে গেছে মেরুদণ্ডী প্রাণীর ১৩ প্রজাতি। বাংলাদেশের নিজস্ব বা একান্ত সপুষ্পক উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা ৬। এ হিসাব থেকে বাদ গেছে অণুজীব, ছত্রাক, শৈবাল এবং নিম্নবর্গীয় উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতিগুলো। বলা বাহুল্য, খতিয়ান ক্রমেই দীর্ঘতর হবে এবং বিলুপ্ত, বিপন্ন ও নতুন প্রজাতির সংখ্যা বাড়বে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রজাতির বিপন্নতা ও বিলুপ্তির কারণ প্রাকৃতিক নয়, মানুষী কর্মকাণ্ডের ফল। তবে আশার কথা, হিসাবটি নির্বিশেষ নয়। জীব প্রজাতির ভূগোল রাজনৈতিক ভূগোল থেকে পৃথক। বাংলাদেশের জীবকুল ইন্দো-মালয়ীয় জীবাঞ্চলের অন্তর্গত, এখানে না থাকলেও আশপাশের দেশে কোনো কোনোটি টিকে থাকা সম্ভব। সমস্যাটি কোনো একক দেশের নয়, গোটা বিশ্বের। জীববৈচিত্র্য একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, প্রকৃতি ও পরিবেশ বিপর্যস্ত হলে জীববৈচিত্র্যেরও অবক্ষয় ঘটে। জীবজগৎ বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রে বসবাস করে। প্রাকৃতিক নিয়মে এ বাস্তুতন্ত্রে পরিবর্তন ঘটলে বিবর্তনক্রিয়া সক্রিয় হয়ে ওঠে, ধ্বংস ও সৃষ্টির মধ্যে জীবকুলের পুনর্জনন ঘটে, উৎপন্ন হয় নতুন নতুন প্রজাতি। অক্সিজেনহীন পৃথিবীতে এক সময় অবায়ুজীবী জীবকুলের উৎপত্তি ও বিকাশ ঘটেছিল, বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন আসার পর এসব জীবের গণবিলুপ্তি ঘটে, কিন্তু উৎপন্ন হয় বায়ুজীবী জীবকুল এবং আজকের সব উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি। এটাই বিবর্তন। কিন্তু মানুষ বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তন ঘটালে প্রকৃতি পশ্চাদপসরণ করে, প্রহত হয় বিবর্তনক্রিয়া, লোপ পায় জীববৈচিত্র্য। প্রকৃতি ও মানুষের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মধ্যে গুণগত পার্থক্য দুস্তর। মানুষ যখন থেকে জেনেছে, সে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম জীব, গোটা প্রকৃতি তার ভোগ্যবস্তু তখন থেকেই প্রকৃতির ওপর মানুষের অমিত…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.