যখন “তাব্বাত ইয়াদা আবী লাহাবিউ ওয়াতাব্ব” পড়তে শিখেছিলাম আমরা, তখন আমরা আবু লাহাবকে ঘৃণা করতে শিখেছি, চৌদ্দশত বছর আগের অপকীর্তিকে ক্ষমা না করে অভিশাপ দিতে শিখেছি।
যখন অযুর সময় আমরা পড়ি “আল ইসলামু হাক্কুন ওয়াল কুফরু বাতিল/আল ইসলামু নুরুন ওয়াল কুফরু জুলমাত” তখন আমরা মুসলিম নরনারী, মু’মিনিনা ওয়াল মু’মিনাআতি, মুসলিম বস্তি-শহর-নগরকে আপনার ধরে বলি, আমরা জ্যোতির্ময় তারা অন্ধকারাচ্ছন্ন। তখন কি আমরা অমুসলিমদের অমুসলিম হবার সুবাদে ক্ষমা করে দিই?
এই সবই ধর্মের কথা, যা আমাদের অত্যন্ত যত্নের সাথে ছোটবেলায় শিক্ষা দেয়া হয়, পরিণত বয়েসে আমরা কেউ কেউ এর থেকে বের হয়ে আসি, কেউ কেউ স্মৃতিকাতরতা-অভ্যাস-বিশ্বাস ইত্যাদি বহু কারণে বের হই না। এই ব্যক্তিগত জায়গাটা নিয়ে তর্কের কিছু নেই, তর্কের হাত হৃদয় অব্দি পৌঁছে না। মানুষ কেন ইলিনয় ইউনিভার্সিটিতে পড়তে না গিয়ে দেশের জন্যে বস্তাবন্দী হয়ে মার খেতে খেতে মরে যায় তা নিয়ে যেমন তর্ক চলে না।
শিখাইবে/পারিবে না করিতে প্রয়োগ
ফেইসবুকে ফাহাম আবদুস সালাম একটি নোট দিয়েছেন।
তিনি শুরু করেছেন এইভাবে,
ক্ষমা করুন এজন্যে না যে ক্ষমা দুর্বলের সান্তনা, বরং ক্ষমা শক্তিমানের শ্রেষ্ঠ রায়। ক্ষমা করে দেখুন আপনার ভাল লাগবে।
নতুন ট্যালকম পাউডার ব্যবহারের অনুরোধের মতন করে ক্ষমা করবার অনুরোধ শুনে আমার ভাল লাগে।
আমি আরেকটু পড়ি —
জামাতের যে ছেলেটা মাত্র বিশ বছর বয়েসে মারা যাচ্ছে তাকে বাঁচার সুযোগ দিন- চল্লিশ বছর বয়েসে সে হয়তো বুঝতে পারবে যে সহিংসতায় কোনো আদর্শবাদ মানুষের মনে জায়গা পায় না। যে পুলিশ গতকাল ঘরে ফেরেনি, সে হয়তো আগামী বছর বুঝতে পারতো- অনেক বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছিল। রাজীব হয়তো আর পাঁচ বছর পরেই বুঝতে পারতো মুহাম্মাদ (সঃ)কে এভাবে তার আক্রমণ করা উচিত হয়নি।
জামাত দিয়ে শুরু করে ভারসাম্য আনবার জন্যে ব্লগার রাজীবের প্রসঙ্গ আনাটা বেশ মজার, আমিও এইভাবে মনে মনে লাইন জুড়তে থাকি- ইয়র্কশায়ার রিপার তার চৌদ্দ নম্বর খুনের বেলায়ই সিদ্ধান্ত নিতে পারতো, আহা মেয়েটার চোখে কত মায়া, ওকে না মারি…ইত্যাদি। এইসব খুনিয়াদের নামধাম লিখে অবশেষে অকালে মরে যাওয়া লোরকা বেঁচে থাকলে কি হতেন তা দিয়ে শেষ করলেই হবে! পুরোটাই শুনতে হবে এমন যে আমি কেবল মানুষের মরে যাওয়ায় বিচলিত।ভুলে গেলেই চলবে যে জামাতের বিশ বছরের ছেলেটা চল্লিশে পৌঁছতে পৌঁছতে অনেক অ-জামাতির ধমনী কাটবে, অনেক অমুসলিমের প্রাণ নিধন করবে, অবশেষে জামাত করবার সুবাদে কোনো নাসারা দেশে স্কলারশিপ নিয়ে গিয়ে সার্বিক নিরাপত্তায় দিন গুজরান করবে।
তিনি লিখেছেন শাহবাগের তরুন হলে আপনি বঙ্গবন্ধুর কথা মনে করে ক্ষমা করুন, আপনি ইসলামিস্ট হয়ে থাকলে রাসুল সাঃ এর কথা স্মরণ করে এই সরকার ও পুলিশকে ক্ষমা করুন। এখানে বিবেচ্য এই যে, শাহবাগের তরুন রাসুল সাঃ এর ক্ষমার নমুনা বা ইসলামিস্টরা বঙ্গবন্ধুর ক্ষমার নমুনা নিতে পারেন না, এইরকম একটা সম্পাদ্য ভাবা যায়।
আমিও খুব মোটাদাগে ভাববার চেষ্টা করি এবার।
নিজের হাত-পা-মা-বাপ-ভাই-বোন-আত্মীয়স্বজন হারাবার নাম ব্যক্তিগত ক্ষতি, ব্যক্তিগত শোক যা থেকে উৎসারিত হয়।
অন্যের হাত-পা-মাথা-চোখ-সম্ভ্রম-স্বস্তি-রক্তমাংস-অস্থি হারানোয় শোকাকুল হবার নাম সহমর্মিতা, সমবেদনা, মানবিকতা, প্রেম ইত্যাদি।
ক্ষমা করবার ব্যবস্থাপত্র দেয়া সহজ যখন মানবিকতার প্রসঙ্গ আসে। ব্যক্তিগত শোকের বেলায় নয়।
ব্যক্তিগত শোক এমন বিপুল অন্ধকারে মানুষকে ঢেকে দিতে পারে যে তখন ক্ষমা-করুণা-সহানুভূতি ইত্যাদির বিভাময় পীড়ন মানুষ আর অনুভব করে না। মাসলোর পিরামিডের তলার দিকেই তখন পড়ে থাকতে হয়, ত্রিভুজশীর্ষের স্বর্ণালী অনুভূতিগুলির দিকে চাইবার অবকাশ মেলে না।
এ লড়াইয়ে তুমি নও প্রসন্ন
আজকে যাঁরা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে মানবাধিকারের ধুয়া তুলছেন, ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের বিরুদ্ধে কথা বলতে বলতে চোখে পানি আর মুখে ফেনা এনে ফেলছেন, তাঁদের নাকের ডগা দিয়ে ক’দিন আগেই সৌদি সরকার কয়েকজন বাঙালিকে ডি-ক্যাপিটেট করেছিল, শরিয়া ল’ অনুসারে। এই বাঙালিরা প্রায় সবাই সম্ভবতঃ মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাত ছিলেন, এবং সেসময় মানবাধিকার বা মৃত্যুদণ্ড বিষয়ে অধুনা-মুখররা কেউ টুঁ-শব্দ করেননি।
আমার এক আত্মীয় আইভরি কোস্টে কর্মরত ছিলেন কয়েক বছর আগে। সেখানে একদিন তাঁরা এক ধর্ষককে সারাদিন পিঁপড়ার চাক ভরা গাছের কান্ডের সাথে বেঁধে রেখেছিলেন। আমি শুনে বলেছিলাম — মাত্র এই?” উনি বলেছিলেন- আর কি চাস? সন্ধ্যাবেলা ঐ ব্যাডার বাপ আইসা মাইয়ার বাপরে দুইটা মোরগা কিনা দিয়া গেল, মামলা ডিসমিস। তারপর হেরা গেল গিয়া…
সাদ্দাম হুসেনকে ফাঁসি দেয়ার বিষয়ে স্টিফেন জে র্যাপ-এর কথা শুনে (We have to remember that this is a national system. It is theirs. These are their national norms.) আজকে মনে পড়ে গেল ভুলে যাওয়া গল্পটা। যস্মিন দেশে যদাচার বুঝলাম, কিন্তু র আড়াল নিয়ে এর ওজর তুলে মানবতার ধ্বজাধারীরা কত কি করে যান!
যাই হোক, ফাহামের নোটে ফিরে আসি। তিনি ইসলামিস্ট ভাইবোনদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন- তাঁর বন্ধু অমির হয়তো ইসলামিস্টদের মতনই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্যে মন কাঁদে। তাঁর অগ্রজপ্রতিম রফিকুল্লা সানা কিংবা বিদিত দে’রা মনের কোণে এই দেশের মানুষগুলিকে ইসলামিস্টদের মতো করেই ভালবাসেন। এবং তিনি জিজ্ঞেস করেছেন- “আপনি কি নিশ্চিত এই তরুণরা কোনোদিনও আপনার পক্ষে এসে দাঁড়াবে না?” কারণ তিনি বলেই দিচ্ছেন — আমাদের আদর্শ আলাদা, কিন্তু ভালবাসা অভিন্ন। এই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে তিনি এও বলছেন- এদেশে এখনও অনেক মানুষ আছে যারা ইসলামিস্টদের ওপর সংঘটিত নিপীড়নের বিরুদ্ধে। সরকারের অত্যাচারে গত কয়েকদিনে কয়েকবছরে মারা যাওয়া ইসলামিস্ট কর্মীদের সহকর্মীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন — রাসুলের কথা মনে করে শাহবাগের তরুনদের ক্ষমা করে দিতে, রেগে না থাকতে।
অতঃপর তেল-ঘি’র এক দর দেখাতে তিনি শাহবাগের তরুনদের বলছেন — তাঁরা (শাহবাগের তরুণরা) রাজাকারদের-জামাতিদের-ইসলামিস্টদের উপরে রেগে (!) আছেন (অভিমান যে বলেন নাই!), রাজাকারদের অপরাধগুলিকে ক্ষমার অযোগ্য ধরে নেয়ায় তাঁরা নিজেদের সীমাবদ্ধ করে ফেলেছেন। ক্ষমা শ্রেয় শক্তি, শক্তিমানের লক্ষণ, অতএব ক্ষমা কেন নয়।
যা অপরাধ, তার ক্ষমাই কেন গন্তব্য হতে হবে আমি তা বুঝতে অক্ষম। অপরাধ মানে, রাষ্ট্রের নীতিমালায় অপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, অপরাপরের সম্ভ্রম ও অস্থির বিরুদ্ধে অপরাধ।
বঙ্গবন্ধুর ক্ষমার উপজাত হিসেবে বহু রাষ্ট্রীয় অপরাধ এবং অপরাধপ্রবণতাকে আমরা পেয়েছি এবং শিরোধার্য করতে বাধ্য হয়েছি, ইতিহাস খুঁজে দেখুন, আমাদের মহানবীর ক্ষমার অবশেষ হিসেবে তাঁর মৃত্যুর পরের এবং খোলাফায়ে রাশেদিনের সময়কার নৈরাজ্যগুলি জন্মেছে কি না। ক্ষমা করতে পারাটাই মানবিকতার নিদর্শন আর ক্ষমা না করতে পারাটা নয়, এটাও মানা যায় না। অনেক বড় বড় নবীরাসুল ক্ষমা করতে না পেরে শহর গুঁড়িয়ে দিয়েছেন, আবাবিল পাখির বাহিনী এনেছেন, মহাপ্লাবনে ভেসে গেছে কত কী। আমি ভালবাসবো এইটি যেমন মানবিক, আমি ঘৃণা করবো — এবং সর্বস্ব দিয়ে, সেটাও মানবিক।
ক্ষমার প্রসঙ্গে ফাহাম ইসলামিস্টদের প্রশংসা করতে ভোলেননি, তাঁর মতে এঁদের/এঁদের সমমনা অনেকেই দেশটাকে বঙ্গবন্ধুর মতো করে ভালবাসেন। ভালবাসার অভিন্নতা প্রমাণের মত্ততায় ফাহাম ভুলে গেছেন জন্ম-গঠন ও বিকাশগত দিক থেকে এই ভালবাসাগুলি আদৌ অভিন্ন নয়। যে যাকে যত ভালবাসে, বুঝতে হবে সে তাকে তত জানে। মা এমন করে সন্তানকে ভালবাসতে পারেন কারণ তাঁর মতো করে সন্তানকে কেউ চেনে না। দেশটাকে তার ঐতিহ্য-রক্তক্ষয়-সংস্কৃতি-পার্বণকে জেনে যারা ভালবাসে তাদের সাথে ফ্যাসিস্ট একটি দলের তরুনদের ভালবাসা কেমন করে অভিন্ন হবে? দেশ মানে কি শুধু পতাকার চিহ্ন? পতাকা অর্জনের পেছনের অশ্রুবারিচয় নয়? দেশ মানে কি শুধু মিনার? মিনারের পেছনে বর্বরভাবে মেরে ফেলা মানুষের হাড়ের সৌধ নয়?
এই দেশটার শোষণের ইতিহাসের সাথে স্বপ্নের দ্বৈরথের নাম ছিল মুক্তিযুদ্ধ। এই স্বপ্ন ছিল সাধারণ মানুষের, শোষণমুক্ত-উদার-শোভন-সচ্ছল জীবনের স্বপ্ন, পৃথিবীর বহু দেশের সাধারণ মানুষ যেমন স্বপ্ন দ্যাখে। নিজের করে কিছু পাওয়ার মানবিক ইচ্ছা। নিজের ঘরে নিজের ক্ষেতের ফসল তুলে আনবার ইচ্ছা, নিজের বুলি-নিজের গান-নিজের প্রাণ নিয়ে থাকবার ইচ্ছা। সীমানা-রাষ্ট্র-পতাকা-জাতিসত্তা এইসব খুব ভাল করে না বোঝা অঘা মানুষের মনকেও যেসব ইচ্ছা আমূল নাড়া দিতে পারে। এই ইচ্ছাবলীর জীবন্ত সমাধি দেয়ার চেষ্টা করা লোকগুলিকে নেতা মেনে যে দলের উত্থান, সেই দলের লোকেরা কেমন করে এইসব ইচ্ছাকে প্রাণে ধারণ করবে জানতে পারি?
ভরসা যেন পড়ায় এবং ভরসা যেন পড়তে আসে…
ফাহাম শেষ করেছেন এই বলে — এই দেশ বড় দুঃখী দেশ। এই দেশে কে ভিকটিম নয়? রাগ আর ঘৃণার প্ল্যাটফর্ম না বানিয়ে আমরা যেন মনুষ্যত্বকে উপরে স্থান দিই, কারণ বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র, এইরকম একটা আর্তি দিয়ে নোটটা শেষ হয়েছে।
দেশটা দুঃখী তাতে সন্দেহ কি! গণমানুষের পাশে আসলে কে আছে? আওয়ামী লীগের দ্বিচারিতা খুব স্পষ্ট করে দেখা যায়, যখন আপনি দেখতে পান- রাষ্ট্রের বিচারবিভাগের সিদ্ধান্তবিরোধী একটি আন্দোলনে রাষ্ট্রচালনাকারী শক্তি হয়েও দলটি মদত দিচ্ছে। এরকম ইন্ধনের তো প্রয়োজন ছিল না, শাহবাগের হাজার তরুন-তরুনী যা সোচ্চার হয়ে বলছে- তাতে যদি তাদের আদর্শিক সায় থাকে- তার নির্ভান-নির্জলা-নির্লজ্জ প্রকাশ কই? বিএনপির দশা বাহ্যদ্বারে ঘা হওয়া সেই মানুষের মতো, যে আর সোজা হয়ে বসতে পারে না — জন্মলগ্ন থেকে যে অসংলগ্নতা নিয়ে দলটির বিকাশ, তাকে সংশোধন বা পুনর্বিবেচনা করবার কোনো প্রয়াসই তারা এবার দেখাতে পারেনি। সুযোগ ছিল।
আমরা সবাই যে যার প্রহরী উঠুক ডাক
এই আন্দোলন আমার মনে হয়না কেবল স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে — পূর্ণাঙ্গ চিত্রটি খুব সম্ভব আরেকটু বড়। এইটি বাংলাদেশের সাধারণ-সেক্যুলার মানুষের রাজনৈতিক চেতনা-বুদ্ধিবৃত্তি এবং ক্ষোভের প্রকাশ। অরাজনৈতিক প্রকাশ (ভেতরে যত রাজনীতিই থাকুক না কেন)। তলিয়ে দেখতে গেলে, এইরকম বিপুল মাত্রার ক্ষোভের প্রকাশ অরাজনৈতিক হবার অর্থই হলো- রাজনৈতিক দলগুলি ব্যর্থ এবং পরিত্যক্ত হয়েছে। বহুকাল ধরে তারা জনতার বিশ্বাস হারিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলি — দলের নেতারা — নেতৃত্বের পন্থাগুলি কেউই গণমানুষের চিন্তা-মেধা বা শুভবুদ্ধির কোনো পরিমাপ করে দেখেনি। ফলে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্তিত্ব/পরিচয় বিপন্ন করে দিয়ে মানুষের মনের এই বৈরীভাব দীর্ঘকাল ধরে বেড়ে উঠেছে। পাভলভের থিওরির কুকুরটাকে মনে করে দেখুন, বারবার আশাহত হবার পরে পশুও আর খাদ্যের নিষ্ফল আহ্বানে সাড়া দেয় না। একটিবার ক্ষুন্নিবৃত্তি হবার পরেই কেবল ক্ষীণ করে আশা জাগে। আমরা তো মানুষ, কতবার ঘন্টি বাজিয়ে কতরকম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের সাড়া আদায় করা হয়েছে একবার ভাবুন তো! নিঃস্ব মানুষটিও একপর্যায়ে এসে আর কপালকে দোষারোপ করে ঘুমাতে যায় না, জেগে ওঠে, রুখে দাঁড়ায়। তার সেই জেগে ওঠা, তার সেই কোটি-করাঘাত বড় ভয়াবহ।
১৮ মার্চ, ২০১৩