"আমরাও পারি": গণহত্যা আর্কাইভের জন্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন

বাংলাদেশ গণহত্যা আর্কাইভ একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক সম্মিলিত উদ্যোগ। আপনারা হয়ত প্রশ্ন করতে পারেন এই আর্কাইভের কেন দরকার। আমাদের চারপাশে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত প্রচুর ম্যাটেরিয়াল আছে, আছে বই, দলিলপত্র। কিন্তু সেগুলো কি সহজে আপনারা পান যখন আপনার দরকার? অনলাইনে তথ্য থাকার একটি সুবিধা হচ্ছে আপনি মুহূর্তেই কোন তথ্য সম্পর্কে জানতে পারেন। এই সাইটে আমরা শক্তিশালী সার্চ ফিচার এবং ট্যাগিং যোগ করেছি (এর প্রয়োগ পরবর্তীতে দেখতে পাবেন) যার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ তথ্য থেকে আকাঙ্খিত বিষয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে। এই সাইটটিকে আরও তথ্যবহুল করার জন্যে আপনাদের সকলের সাহায্য প্রয়োজন।

বাংলাদেশ গণহত্যা আর্কাইভ একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক সম্মিলিত উদ্যোগ।

আপনারা হয়ত প্রশ্ন করতে পারেন এই আর্কাইভের কেন দরকার। আমাদের চারপাশে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত প্রচুর ম্যাটেরিয়াল আছে, আছে বই, দলিলপত্র। কিন্তু সেগুলো কি সহজে আপনারা পান যখন আপনাদের দরকার? অনলাইনে তথ্য থাকার একটি সুবিধা হচ্ছে আপনি মুহূর্তেই কোন তথ্য সম্পর্কে জানতে পারেন। এই সাইটে আমরা শক্তিশালী সার্চ ফিচার এবং ট্যাগিং যোগ করেছি (এর প্রয়োগ পরবর্তীকালে দেখতে পাবেন) যার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ তথ্য থেকে কাঙ্ক্ষিত বিষয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে।

এই সাইটটিকে আরও তথ্যবহুল করার জন্যে আপনাদের সকলের সাহায্য প্রয়োজন। যে যে ক্ষেত্রে আরও কাজ করা দরকার তা হলো:

  • প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ যোগাড় করে লিপিবদ্ধ করা।
  • বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও সাময়িকীতে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত লেখার স্ক্যান্ড কপি বা (অনলাইনে হলে) লিন্ক যোগ করা।
  • আরও ছবি যোগ করা, ফটোগ্রাফারদের পরিচয় সহ। ইতিমধ্যে প্রকাশিত ছবিগুলোর ফটোগ্রাফারদের পরিচয় জেনে তা যোগ করা।
  • বিভিন্ন টিভিতে প্রচারিত ডকুমেন্টারির ভিডিও যোগ করা। চলচ্চিত্রের ট্রেইলার যোগ করা।
  • বিভিন্ন তথ্যবহুল সাইটের লিন্ক আছে এতে। কিন্তু সাইটের মালিকদের সাথে অনেক ক্ষেত্রে যোগাযোগ করা যায় নি। আমরা চাই যে তাদের অনুমতি নিয়ে ঐসব সাইটে প্রকাশিত তথ্যগুলোর ব্যাকআপ রাখা যাতে ডোমেইন এক্সপায়ার হয়ে তাদের তথ্য হারিয়ে না যায়। পারলে এই সাইটে তাদের জন্যে হোস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা। এ জন্যে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করলে খুব উপকার হয়।
  • আমাদের দরকার ইতিহাসবিদ, সমালোচক, যারা এই সাইটের কন্টেন্ট বিশ্লেষন করে ত্রুটিমুক্ত করবে এবং যে সব তথ্য অনুপস্থিত তা যোগ করবে।
  • বিতর্কিত বিষয়গুলো সম্পর্কে আরও গবেষণা এবং বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে সত্য তথ্য উপস্থাপন।
  • এর প্রচারের জন্যে আপনাদের সহায়তা দরকার। পত্রিকায় সংযোগ আছে যাদের তারা এটি নিয়ে আর্টিকেল ছাপাতে পারেন।
  • এই গণহত্যা আর্কাইভটি ক্রিয়েটিভ কমন্সের আওতায় প্রকাশ করা। সূত্র উল্লেখ করে এর অবাণিজ্যিক ব্যবহার যে কোন খানে যে কোন ভাবে করা যাবে।
  • এই আর্কাইভটি কিন্তু শুধু বাংলাদেশীদের লক্ষ্য করে নয়। সেজন্যেই ইংরেজীর উপর জোর দেয়া হয়েছে (এটিতে বাংলাও থাকবে)। অনেক ভারতীয়দের ধারণা তারা একাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানে তো গণহত্যার ব্যাপারটি অস্বীকার করাই হয়। পরবর্তীতে ভারত ও পাকিস্তানে এর প্রচার চালানো হবে যাতে তারা সত্যি ঘটনা জানতে পারে।

    এই সাইটটি যেন ভবিষ্যতের গবেষকদের, সত্যান্বেষীদের জন্যে একটি তথ্য ভান্ডার হয়ে উঠতে পারে সেটিই আমাদের লক্ষ্য। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত বিতর্ক এত রাজনীতি সম্ভব হয় কারন একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডারের অভাবে যে কেউ নতুন নতুন তথ্য প্রচার করে সবাইকে বোকা বানাতে পারে। পরবর্তীতে কোন প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা পেলে ইচ্ছে আছে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহতদের একটি সমৃদ্ধ ডাটাবেজ তৈরি করার।

    আপনারা আপনাদের বক্তব্য ও উপদেশ মন্তব্যের স্থানে জানাতে পারেন। অথবা দয়া করে এই ফর্মটির মাধ্যমে আপনাদের ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য জানিয়ে দিতে পারেন। আমরা একটি গ্রুপমেইলের মাধ্যমে জানব ও আলোচনা করব এ সংক্রান্ত আপনার সাজেশন ও সবাই মিলে কি করে কাজগুলোকে এগিয়ে নেয়া যায় তা।

    আমেরিকার রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ওবামার জনপ্রিয় স্লোগানটি আমি ধার নিচ্ছি এই দৃঢ় আশা প্রকাশ করার জন্যে যে ‘আমরাও পারব’। এই বিশ্বাসটিই আসল। আশা করছি আপনাদের সাথে পাব। ধন্যবাদ।

    রেজওয়ান

    আমি তোমাদেরই কোন একজন। সাহিত্যিক নই তবে সাহিত্য পড়তে ভালবাসি। টেকি নই তবে টেকনলজি পছন্দ করি। গাইতে পারিনা তবে সঙ্গীতে ভেসে থাকি। জীবনের এক সন্ধিক্ষনে অবস্থান করছি।

    ৩ comments

    1. সৈকত আচার্য - ৩১ জুলাই ২০০৮ (১০:৪৩ অপরাহ্ণ)

      ‘বাংলাদেশ গণহত্যা আর্কাইভ’ যারা নির্মান করেছেন তাদের কাউকে জানি না। আটত্রিশ বছরের প্রাতিষ্টানিক ব্যর্থতার গ্লানির বিপরীতে অসাধারণ এক অপ্রাতিষ্টানিক উদ্যোগ-ই বটে। এই আর্কাইভ দেখার পর মনে হয়েছে এটা যারা তৈরী করতে পারেন তাদের স্পর্ধা আছে। বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হলে গনহত্যাকারী ও তাদের এদেশীয় সহযোগি-দালালদের বিরুদ্ধে কঠিন রাষ্ট্রীয় অবস্থান নিতে হবে। এই মৌলিক প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন এ পর্যন্ত সব সরকার। সবাই compromise এবং adjust করতে চেয়েছেন। এই খেলা এখন ও চলছে। সমাজের সব চাইতে বড় অন্যায় মেনে নিলে বাকী অন্যায়ের প্রতিকার করার নৈতিক সাহস থাকে না। ফলে সামাজিক অস্থিরতা অরাজকতায় রুপ নেয়।এই অরাজকতাই আজ দেখছি চারদিকে।ফলে এই প্রশ্নের ফয়সালা হওয়া জরুরী।

      এই আর্কাইভ চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়েছে কি ভাবে কথা কম বলে কাজ করতে হয় এবং জরুরী প্রশ্নকে সামনে আনতে হয়। ব্যক্তিগত পর্যায়ে আসুন আমরা সবাই অন্ততঃ এর প্রচার কাজটা করে যাই।

    2. রায়হান রশিদ - ২ আগস্ট ২০০৮ (৯:২৮ পূর্বাহ্ণ)

      রেজওয়ান ভাইকে মুক্তাঙ্গনে স্বাগতম। সেইসাথে ধন্যবাদ গণহত্যা আর্কাইভ বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক এই পোস্টটি লেখার জন্য। যেভাবে আমাদের ইতিহাস নিয়ে মিথ্যার বেসাতী চলছে, এই আর্কাইভটির মত কিছু সময়োপযোগী সাহসী উদ্যোগই পারে এখন আমাদের এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে পথ দেখাতে।

      বিভিন্ন মহাদেশে বসবাসকারী রেজওয়ান ভাইয়ের মত কিছু উদ্যোগী মানুষ শুরু করেছেন আর্কাইভটি নির্মাণের কাজ। তবে একটি ‘সম্মিলিত উদ্যোগ’ হিসেবে এখন একে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায় আমাদের সবার। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরামর্শ দিয়ে, শ্রম দিয়ে, সময় দিয়ে, ম্যাটেরিয়ালস দিয়ে আমাদেরই নিশ্চিত করতে হবে এই আর্কাইভের গুণগত মান। যতদূর সম্ভব নিশ্চিত করতে হবে এতে যেন কোন ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা না থাকে, এমনকি বানান ভুলের মত সাধারণ ব্যপারও। তা না করতে পারলে ‘৭১ এর গণহত্যার এই অমিমাংসিত ইস্যুটির প্রতি আমাদের নিষ্ঠা এবং একাগ্রতার অভাবই প্রমাণিত হবে। তাতে করে যে সব মানুষ নিজেদের জীবন দিয়ে আমাদেরকে একটি দেশ এবং পতাকা এনে দিয়েছেন, তাদের স্মৃতির প্রতিও অশ্রদ্ধা দেখানো হবে। তাই মুক্তাঙ্গনের ব্লগারদের আহ্বান করবো – এই আর্কাইভের কাজকে যেন তাঁরা নিজের কাজ মনে করে নিষ্ঠার সাথে এর মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখেন।

      ব্লগাকাশের বাসিন্দা হিসেবে রেজওয়ান ভাইকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। “Dean of Bangladeshi bloggers” হিসেবে অনেকের কাছে পরিচিত এই ইউরোপবাসী বাংলাদেশী ব্লগার ইতোমধ্যেই অনেকগুলো ইন্টারনেট নির্ভর উদ্যোগের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: গণহত্যা আর্কাইভ, গ্লোবাল ভয়েসেস (বাংলা) ইত্যাদি।

    3. ইমতিয়ার - ২ আগস্ট ২০০৮ (১:০৫ অপরাহ্ণ)

      বাংলাদেশ গণহত্যা আর্কাইভটি নির্মাণের মধ্যে দিয়ে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। উদ্যোক্তাদের এ জন্যে জানাই শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা।
      তবে এ কাজটা করার জন্যে ওবামার শ্লোগান ধার করার সত্যিই কোনও প্রয়োজন আছে কি?! আমেরিকা একাত্তরে এই গণহত্যাকে প্রকারান্তরে সমর্থন করেছে; এখন তাদের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাবিষয়ক কোনও একাডেমিক পরিসর যতই যুক্ত হোক, তাদের মূল লক্ষ্য আসলে শর্মিলা বোসদের তত্ত্বাবধান করা, বিতর্ক জিইয়ে রাখা, গণহত্যাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং এইভাবে তাদের অতীতের ভূমিকাকে হালকা করা।

    Have your say

    • Sign up
    Password Strength Very Weak
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    We do not share your personal details with anyone.