বেইজিং থেকে হংকং : পর্ব ৪

প্রদর্শনীর উদ্বোধনের দুদিন পরেই মক ভাই তাঁর দল নিয়ে ক্যান্টন চলে গেলেন জরুরি কাজে। আমার মাল্টিপল ভিসা নেই, তাই আমি যেতে পারলাম না। তাতে আমার অসুবিধা হলো না; হংকং যেহেতু আমার পরিচিত জায়গা, ভাবলাম একা একা ঘুরব। [...]

লকের সাথে হংকং পরিভ্রমণ

প্রদর্শনীর উদ্বোধনের দুদিন পরেই মক ভাই তাঁর দল নিয়ে ক্যান্টন চলে গেলেন জরুরি কাজে। আমার মাল্টিপল ভিসা নেই, তাই আমি যেতে পারলাম না। তাতে আমার অসুবিধা হলো না; হংকং যেহেতু আমার পরিচিত জায়গা, ভাবলাম একা একা ঘুরব। কাউকে বিরক্ত করতে চাই না। আর হংকং-এর সবাই মহাব্যস্ত। ঘড়ির কাঁটায় কাঁটায় যেন জীবনের ছন্দ মেলানো।

হংকং শহর

এখানে একমাত্র ব্যতিক্রম লক। লকের সাথে পরিচয় হয়েছিল মক ভাইয়ের অফিসে। হংকঙ্গিজ চীনা, সস্ত্রীক জাপানে থাকে। হংকং এসেছে ছুটি কাটাতে। নাটক, গবেষণা, সাংবাদিকতা — নানা ধরনের পেশায় যুক্ত থেকেছে; এখন জাপানে ঠিক কোন্ পেশায় যুক্ত তা পরিষ্কার হলো না। তবে আমার সাথে ভাব হয়ে গেল, এবং যে কয়দিন হংকং-এ ছিলাম প্রতিদিনই সে আমাকে ভালোই সঙ্গ দিয়েছে। মক ভাইরা চলে যাওয়ার সময় বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন কে আমাকে সঙ্গ দেবে। অবশ্য শুধু দুই দিনের জন্য, তার পরেই তো ফিরে আসবেন। লক এগিয়ে এল আমাকে সঙ্গ দিতে। মক ভাই আশ্বস্ত হয়ে ক্যান্টন চলে গেলেন।

লকের অবশ্য তেমন কাজ নেই এই সময়ে। ছুটি কাটাতে এসেছে, একজন সঙ্গী পেয়ে সেও খুশি। আমরা ঠিক করলাম পরদিন সকালে বের হব একটু সাইট সিয়িং করতে। আমাদের গন্তব্য হংকং বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান আর্ট আর্কাইভ এবং হলিউড রোড। লকের সাথে ঠিক করে নিলাম যে, আগামীকাল সকাল দশটায় আমরা হংকং আর্ট সেন্টারে মিলিত হব। ইতিমধ্যে আমি আমার ডেরা পরিবর্তন করেছি; মকচাইয়ের আরেকটি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট আছে শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে এডমিরাল্টি নামের জায়গায়, সেখানে উঠে এসেছি। সাবওয়ে লাইন খুব কাছে, উপরন্তু শহরের প্রাণকেন্দ্র, সে-কারণেই মকচাই আমাকে এখানে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আর নিজে উঠে গেছে আপলেইছাও-এর বাড়িতে। এখান থেকে বিখ্যাত হংকং আর্ট সেন্টার কাছে বলে আগামীকাল লকের সাথে সেখানেই মিলিত হব।

পরের দিন আমি হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে পৌঁছলাম হংকং আর্ট সেন্টারে। লক তখনও এসে পৌঁছয়নি। এই ফাঁকে আমি ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম আমার স্মৃতি বিজড়িত হংকং আর্ট সেন্টার চত্বরটি। ১৯৯৩ সালে এখানে এসেছিলাম ঢাকা প্রিন্ট মেকার্স-এর ছাপচিত্র প্রদর্শনী নিয়ে। ১৯৯২ সালে বেইজিং থেকে চারুকলার ডিগ্রি শেষ করে দেশে ফিরে এই সংগঠনটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সৌভাগ্যক্রমে ১৯৯৩ সালেই আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম হংকং ‘এশিয়ান আর্ট এক্টিভিজম’-এ দলগত প্রদর্শনীর জন্য। সেই সময়ের ঢাকা প্রিন্ট মেকার্স-এর সদস্যদের সবাই এখন দেশে স্বনামখ্যাত। রোকেয়া সুলতানা, আহমেদ নাজির, রফি হক, মুস্তাফা জামান ছিলেন এই দলের সভ্য। হংকং প্রদর্শনীতে এঁদের সবার কাজ ছিল। এই হংকং আর্ট সেন্টারের গ্যালারিতেই প্রদর্শনীর আয়োজন হয়েছিল। জায়গাটি সেই আগের মতোই আছে, বহুতল ভবনটির পুরোটা জুড়ে কোথাও গ্যালারি, কোথাওবা সিনেমা হল, আর্কাইভ, লাইব্রেরি, বুকস্টল। সব মিলিয়ে এক জমজমাট সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। কিছুক্ষণ পর লক চলে এল, আমরা বেড়িয়ে পড়লাম।

হংকং পার্ক

আমাদের মূল গন্তব্য হংকং বিশ্ববিদ্যালয়। লকের ইচ্ছা হাঁটতে হাঁটতে দেখতে দেখতে যাওয়া। আমারও তাই ইচ্ছা। পাহাড় কেটে তৈরি করা রাস্তাগুলোর একটির ফুটপাত ধরে হাঁটতে থাকলাম। কথা উঠল হংকং আর্ট সেন্টারের বিষয়ে। আমার আগে ধারণা ছিল এটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, কিন্তু লক বলল, এটি বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা নন-প্রফিট একটি প্রতিষ্ঠান। হংকং-এর ব্রিটিশ প্রভুরা একসময় হংকং-এর সাংস্কৃতিক ব্যাপারে বড্ড উদাসীন ছিল; তারা ভাবত, হংকং একটি মুক্ত বন্দর, বাণিজ্যই এখানে মূল লক্ষ্য, সংস্কৃতি চর্চা করে কী হবে! তবে হংকং-এর মানুষ তা মেনে নেয়নি। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার লক্ষ্যে বড়ো বড়ো ব্যাবসায়ীরা চাঁদা তুলে গড়ে তুলেছেন আর্ট সেন্টার। (সম্প্রতি ঢাকায় গড়ে উঠেছে এই রকম একটি সেন্টার।)

আমরা হাঁটছিলাম কখনো পাহাড়ের গা ঘেঁষে ফুটপাত দিয়ে, আবার কখনোবা ওভার ব্রিজ পার হয়ে জনবহুল এলাকা দিয়ে। এখানে মানুষজনের হাঁটার অভ্যাস আছে। তাই ব্যস্ত এলাকাগুলোতে দেখা যায় ফুটপাতে প্রচুর মানুষের ভিড়। এখানে বড়ো বড়ো শপিংমল্‌গুলোর একটির সাথে আরেকটির সংযোগ স্থাপন করে যোগাযোগের পথ সুগম করে দেওয়া হয়েছে, শপিং মল্‌গুলোর ভিতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেকদূর চলে যাওয়া যায়। আমরা পৌঁছে গেলাম একটি বড়ো বাণিজ্যিক ভবন কাম শপিং মলের কাছে। লক হংকঙ্গিজ, তাই তার রাস্তাঘাট সবই চেনা। বাণিজ্যিক ভবনের একদিক দিয়ে ঢুকে আরেক দিক দিয়ে বেড়িয়ে কিছুদূর হাঁটলেই হংকং পার্ক। আমরা সেদিকেই হাঁটতে থাকলাম। রাস্তায় একটি কুইক লাঞ্চ-এর দোকান চোখে পড়ল। সেখান থেকে আমরা দুপুরের খাবার কিনে নিলাম; হংকং পার্কে বসে খাব। কিছুদূর হাঁটতেই আমরা পৌঁছে গেলাম সুন্দর গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ হংকং পার্কে। গাছের ছায়ার নীচে একটি বেঞ্চে বসে আমরা দুপুরের খাবার খেতে খেতে কিছক্ষণের জন্য আড্ডায় মিলিত হলাম। এই যান্ত্রিক শহরে এসে এই প্রথম একটু স্বস্তি পেলাম। আমাদের সামনেই যেন পাখিদের এক অভয়ারণ্য, সেখানে নানান ধরনের পাখি কিচিরমিচির করছে। ট্রপিক্যাল আবহাওয়ার পরশে প্রাণটা সত্যি জুড়িয়ে গেল।

লক তার কিছু ব্যক্তিগত প্রসঙ্গের অবতারণা করল। ছেলের উপর খুব খিঁচিয়ে আছে, কানাডায় বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া। বাবার খোঁজখবর নেয় না। স্ত্রীও জাপান ছেড়ে আসবে না। মোটা টাকার লোভে ওখানেই পড়ে থাকবে। লকের মা এখনো বেঁচে আছেন, তাই মাঝে মাঝে ছুটি কাটাতে এখানে চলে আসেন। বোঝা গেল লক যথেষ্ট মাতৃভক্ত। আমরা দুপুরের আহার সেরে আবার হাঁটতে শুরু করলাম। হংকং পার্কের ছোট্ট পরিমণ্ডল পেরোতে আমাদের বেশি সময় লাগল না। যাত্রা শুরু করলাম হলিউড রোডের দিকে। পথিমধ্যে লক আমাকে হংকং পার্কের গা গেঁষে অবস্থিত গভর্নর হাউসটি দেখাল। আগে এখানে শোভা পেত ব্রিটিশ পতাকা, এখন চীনা পতাকা। কেউ কেউ মজা করে বলে আগে ছিল ব্রিটিশ উপনিবেশ, এখন চীনা উপনিবেশ। আমরা বেশ চড়াই উতরাই পার হয়ে হলিউড রোডে পৌঁছলাম।

হলিউড রোড

এটি মূলত গ্যালারি ও অ্যান্টিক শপের পাড়া, বেশ কিছু কমার্শিয়াল গ্যালারি আছে। বেশিরভাগ গ্যালারিতে খুব সস্তা ধরনের ছবি ঝোলানো, আমাকে খুব একটা টানল না। ভারতীয় নামের একটা গ্যালারিতে ঢুকলাম (মালিকানা ভারতীয়দেরই হবে), এখানে চীনা ধারার পাহাড় ও জলধারা শৈলীর একটি প্রদর্শনী চলছে। ভারতীয় গ্যালারিতে চীনা শৈলী, মন্দ নয়! গ্যালারির এক কোনায় ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে মেরিলিন মনরোর মতো এক শ্বেতাঙ্গ ব্লন্ড তরুণী। আমি ছবি তোলার অনুমতি চাইলাম, স্মিতহাস্যে সম্মতি দিল। একতলা দোতলা নিয়ে গ্যালারিটি বেশ ভালোই। বেশ নামকরা গ্যালারি, বোঝাই যাচ্ছে। আমি ঘুরে ঘুরে কাজগুলো দেখলাম। গ্যালারি থেকে বেরিয়ে আবার হাঁটতে থাকলাম। পাশাপাশি অনেকগুলো গ্যালারি, আমরা ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে হাঁটতেই বিশালাকৃতির স্বচ্ছ কাচের জানালা দিয়ে গ্যালারিগুলোর ছবি দেখছিলাম। বেইজিংকেন্দ্রিক নামকরা শিল্পীদের কাজের দুর্বল কপিগুলো দেখে আর ভালো লাগছিল না, যেমন ফাং লি চুন-এর ন্যাড়া মাথা আর ইয়ে মিন চুন-এর দন্তবিগলিত হাসি মুখগুলো। হংকং ছবির একটি বড় বিপণন কেন্দ্র, বিশেষ করে এখানে বড়ো বড়ো সব ছবির অকশন হয়ে থাকে; কিন্ত হংকং-এর নিজস্ব শিল্পীর সংখ্যা বেশি নয়। অবশ্য মারপিট মার্কা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের জন্য হংকং-এর খ্যাতি বিশ্বজোড়া। সেই ব্রুসলি অথবা জ্যাকি চ্যান। কিছুদূর যেতেই লক পুরোনো একটি দালান দেখিয়ে বলল, এটিই ছিল হংকং-এ ব্রিটিশদের স্থাপিত প্রথম জেলখানা। এখন পরিত্যক্ত। চিন্তাভাবনা চলছে এখানে আরেকটি আর্টিস্ট ভিলেজ বানানোর। আমার কাছে বেশ মজাই লাগল বিষয়টি। জেলখান হবে শিল্পীনিবাস! হলিউড রোডের গ্যালারি পাড়ায় যেমন অনেক সস্তা গ্যালারি আছে তেমনি বেশ কিছু নামকরা গ্যালারিও আছে। অনেক বিদেশি শিল্পীর কাজের প্রদর্শনী হয়ে থাকে এখানে। এশিয়ান আর্ট আর্কাইভ (AAA) এখান থেকে কাছেই। আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে গিয়ে পৌঁছলাম। চমৎকার আয়োজন, বলা যেতে পারে এশিয়ার সর্ববৃহৎ শিল্পবিষয়ক তথ্য ভাণ্ডার। বাংলাদেশের বিস্তর তথ্য সেখানে সংরক্ষিত আছে। কম্পিউটারে সার্চ দিলে সব একে একে বেরিয়ে আসে। বুকশেলফ নাম্বার ও বইয়ের নাম্বার খুঁজে পাওয়া যায়, অতঃপর বইটি সেখান থেকে সংগ্রহ করে নিজে ফটোকপি করে নেয়া যায়। আমার ছাপচিত্র বিষয়ক গবেষণার জন্য বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা গেল। ফটোকপি বাবদ অর্থব্যয় হলো সামান্যই। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বেরিয়ে এলাম। এবার আমাদের শেষ গন্তব্য হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে পা বাড়ালাম।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়

বাসে উঠতে হবে, কারণ দূরত্ব আর হাঁটাপথের মধ্যে নয়। কিছুদূর যেতেই বাস পেয়ে গেলাম, আরামদায়ক দোতলা বাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পৌঁছলাম ততক্ষণে দুপুর গড়িয়ে বিকেল। এখানে আসার আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল লকের যে-ভাইপোটি এখানকার তরুণ প্রভাষক, আবার নানাবিধ গবেষণায় লিপ্ত, তার সাথে পরিচিত হওয়া। ফোনে তার সাথে যোগাযোগ করা হলো; দুর্ভাগ্য, সে ক্যাম্পাসে নেই, বেইজিং চলে গেছে এক সেমিনারে যোগ দিতে। যাই হোক আমরা আমাদের মতো ঘুরে বেড়ালাম। একটি ট্র্যাডিশনাল টি হাউসে ঢুকলাম কিছু খেতে, ঘুরতে ঘুরতে বেশ ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছি।

আলমন্ড সহযোগে বেশ কিছুক্ষণ সবুজ চা পান করলাম। ক্লান্তি কিছুটা দূর হলে আমরা আবার বেরিয়ে পরলাম। ঘুরে ঘুরে দেখালাম ক্যাম্পাসটি। আকারে খুব একটা বড়ো নয়। ব্রিটিশদের তৈরি বিশ্ববিদ্যালয়, তাই ভিক্টোরীয় স্থাপত্যের প্রভাব সর্বত্র, আমাদের ঢাকার কার্জন হলের সাথে কোথায় যেন মিল খুঁজে পেলাম। বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় আকারে কিছুই না, কিন্তু লেখাপড়ায় খুবই ভালো, এশিয়ায় প্রথম দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি। বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ও অনেক নীচে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়তে আসে, তাই নানা বর্ণের ছেলেমেয়েদের ঘুরতে দেখলাম। সবাই ব্যস্ত, দৌড়ে কেউ ক্লাসে যাচ্ছে, আবার কারো-বা ক্লাস শেষ হলো, মিলিত হচ্ছে ক্ষণিকের আড্ডায়। দেখেই বোঝা যায় পড়াশোনাই এদের ধ্যানজ্ঞান। আমরা যখন হংকং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হলাম ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। এবার ঘরে ফেরার তাড়া; লক বাসায় ফিরে মায়ের সাথে ডিনার সারবে। তাই ফিরতি পথে সাবওয়ে নিলাম যেন দ্রুত ফেরা যায়।

(পাঁচ পর্বে সমাপ্য)

[প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব, তৃতীয় পর্ব]

রশীদ আমিন

জ়ীবনের এই রহস্য কে করিতে পারে ভেদ, ভুবনডাঙ্গায় ঘোরা-ফিরা ক্ষণিকের বিচ্ছেদ

৫ comments

  1. রেজওয়ান - ১১ ডিসেম্বর ২০১০ (৮:৪৭ অপরাহ্ণ)

    আপনার এই দীর্ঘ বিরতি দিয়ে লেখা সিরিজটি আনন্দের সাথে পড়ে যাচ্ছি। কিছুটা খারাপ লাগছে এই ভেবে যে আগামী পর্বে আপনি সিরিজটির ইতি টানবেন। ১৯৮৯ সালের সেই থিয়ানানমেন স্কয়ারের ঘটনাটা যখন ঘটেছিল তখন আপনি চীনে ছিলেন! ব্যাপারটি জেনে একই সাথে আনন্দিত এবং শিহরিত হচ্ছি। না জানি সেই সময়কার কত না গল্প আপনার ঝুলিতে লুকিয়ে আছে। শুনতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে। বাংলাদেশে বসে আমরা চীন সম্পর্কিত গল্প খুব কমই শুনি। রশীদ ভাই, আপনার প্রতি অনুরোধ রইলো এই ব্লগের পাশাপাশি আপনি সচলায়তনেও লেখালেখি করুন। চীন বিষয়ে সচল লেখক ষষ্ঠ পান্ডবের সিরিজ আকারে বেশ কয়েকটা বিশ্লেষণ মূলক এবং সুখপাঠ্য লেখা আছে। লেখাগুলো একটু দেখতে পারেন।
    পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। 🙂

  2. ইমতিয়ার - ২৬ ডিসেম্বর ২০১০ (৭:৩২ অপরাহ্ণ)

    লকের সঙ্গে কি এখনো যোগাযোগ আছে আপনার? বড়ই কষ্ট হলো বেচারার অবস্থা দেখে। অবশ্য যাদের বিরুদ্ধে তার এত অভিযোগ তাদের কারও কথাই তাদের বয়ানে জানিনি আমরা, কিন্তু তারপরও…জীবন তো অনেক সময়ই রশোমন-এর মতো…
    আমি জানি না, হংকং-এর ট্রাডিশনাল টিশপগুলি কেমন, কিন্তু বাংলাদেশের রাস্তার ধারের চায়ের দোকানগুলিই আমার সবচেয়ে প্রিয় (আমার নজর কখনোই উচু হলো না),ওদের বানানো চা খেতে খেতে, চায়ে চিনি কিংবা কনডেন্সড মিল্ক বেশি হয়েছে এসব নিন্দা করার মধ্যেও আলাদা একটা মজা আছে-চায়ের দোকানদারও জানে, যত নিন্দাই করুক, আবার ফিরে আসতে হবে, ফিরে না আসা পর্যন্ত শান্তিই পাব না…
    যাই হোক, এই ট্রাডিশনাল টি-শপের বিবরণটা একটু বড় করলে ভাল লাগত।

  3. রশীদ আমিন - ২৮ ডিসেম্বর ২০১০ (৫:১৫ অপরাহ্ণ)

    @ রেজওয়ান

    ধন্যবাদ। আমি আমার কিছু ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ব্লগ-বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে চেয়েছি; আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। আসলে লেখার সময় পাই না, আঁকাআঁকি নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়। দেশে ফিরলে আশা করি আপনার সাথে দেখা হবে। ভালো থাকবেন।

  4. রশীদ আমিন - ২৮ ডিসেম্বর ২০১০ (৫:৩০ অপরাহ্ণ)

    শামীম ভাই, খুব খুশি হলাম আপনার মন্তব্য পেয়ে। লকের সাথে পরে আরো যোগাযোগ হয়েছে। মাস দুয়েক আগে বেইজিং এসেছিল হুট করেই। বেইজিং হয়ে ফিরে যাচ্ছে জাপানে। আমরা একসাথে ডিনার সারলাম, যাওয়ার সময় দিয়ে গেল এক প্যাকেট হারবাল ওষুধ (আমাদের দেশে যাকে বলে গাছন্ত), আমার গাউট-এর দাওয়াই হিসাবে।

    বিদেশে ফুটপাতের চা বড্ড মিস করি। ধানমন্ডি লেকের পারের আপনার সাথে আডডাগুলি মনে পড়ে গেল। আবার কি জমবে মেলা সেইখানে? দেশে ফিরে গিয়ে আবার যে কোন্ বাস্তবতায় পড়ে যাই গড নোজ।

  5. Pingback: মুক্তাঙ্গন | বেইজিং থেকে হংকং : পর্ব ৫ | রশীদ আমিন

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.