পুরনো বইপ্রস্থ
বইপ্রস্থ ২৫ আগস্ট ২০০৯
বইপ্রস্থ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০
বইপ্রস্থ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০
বইপ্রস্থ ২৬ জুন ২০১২
বইপ্রস্থ ২৩ এপ্রিল ২০১৩
বইপ্রস্থ ১৮ নভেম্বর ২০১৩
গদ্যপদ্য পরিসর
গদ্য ও পদ্যের দ্বন্দ্ব ।। শিশিরকুমার দাশ ।। ২১-২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত ১৯৮৩ সালের শরৎ-স্মৃতি বক্তৃতা ।। প্রকাশক : দে’জ পাবলিশিং ।। মূল্য : ৫০ ভারতীয় টাকা
মানুষ কথা বলে তাই তার বাচন আছে। কিন্তু তাতে কী? মানুষ দাগ কাটতে চায় তাই তার লিপি আছে। কিন্তু তাতে কী? মানুষের মন আছে স্মৃতি আছে মস্তিষ্ক আছে তাই প্রতীকের অরণ্য ধরে রাখার তার ক্ষমতা আছে। কিন্তু তাতে কী?
পদ্য আছে যার গদ্য আছে যার তার আর কী আছে যে তার গদ্যপদ্য আছে?
সৃষ্টিশীলতা মানুষকে পদ্যে ও গদ্যে আসক্ত করেছে। তাই লিপির আর বাচনের কোড হয়ে ওঠেনি কোনোদিন কারো পদ্য অথবা আজ পর্যন্ত কারো গদ্য। চিঠি কড়চা থেকে দর্শন বিজ্ঞান পদ্যেগদ্যে শুধু সৃষ্টিমুখরতাই মানুষের অস্তিত্বকে মর্মরিত রেখেছে।
মানুষ বলেছে এক আর লিখেছে আরেক। কখনো বিপর্যস্ত হয়েছে পদ্যে তো কখনো বিপর্যস্ত হয়েছে গদ্যে। কোনো সন্দেহ নেই দুটোই সমান উচ্চতার দুটোই সমান সৃষ্টিশীলতার।
এবং মহত্তম, স্বীকার করে কোনো ক্ষতি নেই আদ্যন্ত কোনো লাভও নেই, প্রকাশের কত কঠিন পথ পেরিয়ে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে আজকের গদ্য আজকের পদ্য। আমাদের যা কিছু আছে তা নিয়ে মহত্তম গদ্যপদ্যের পরিসরে প্রস্তুত থাকা বা হতে থাকাই সব লেখকের প্রতি মুহূর্তের মুক্তিযুদ্ধ।
বক্তৃতাটি যিনি দিয়েছেন তিনি বাংলা পদ্য ও গদ্যের সুপরিসর পরিক্রমাকে বিশ্লেষণ করেছেন, পদ্যের ও গদ্যের নানান উদাহরণ উঠে এসেছে। বক্তৃতাটি শুনতে কেমন উপভোগ্য ছিল তা আমার দ্বারা জানানো সম্ভব হচ্ছে না, কিন্তু বক্তৃতাটি পড়তে আমার ভাল লেগেছে – শরীর খারাপের সুযোগে হালকা কিছু পড়ার উদ্দেশে এবই আমার হাতে উঠেছিল, সেটা পূর্ণ মাত্রায় রক্ষা করে আমার শরীর ও তার প্রেক্ষিত মনকে বইটি ভারী করে তোলেনি একেবারেই। পদ্য ও গদ্যের আলোচনায় রবীন্দ্রনাথের গদ্যকবিতার জন্মের কথা উঠেছে, কথা উঠেছে বঙ্কিমের গদ্যপদ্য প্রবন্ধের কথা – কিন্তু গদ্যকবিতার কোনো নিদর্শন যেহেতু আমি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে দেখি না এবং বঙ্কিমের এবিষয়ক প্রচেষ্টাকে আমরা যেহেতু চিন্তার একটুখানি উসকানি ছাড়া কিছুই ভাবি না – আমি বলতে কোনো দ্বিধা রাখছি না শিশিরকুমার দাশ আদতে গদ্যকবিতা কাকে বলে বুঝতেন কিনা।