নিজের গ্রামে যাই না প্রায় এক যুগ হতে চলল। আগে প্রতিবছর ২/৩ বার গ্রামের বাড়ি যাওয়া হতোই। কর্মসূত্রে সমবয়সীদের গ্রামছাড়ার কারণেই আমার গ্রামে যাওয়া কমতে কমতে বন্ধই হয়ে গেল। কিন্তু আমার সব সময়ের ভালো লাগা ভাষা রয়ে গেল আজো আমার মনে। আক্ষেপ, নিয়মিত যাওয়া আসা থাকলে আরো ভালোভাবে আরো বেশী নোয়াখাইল্যা শব্দ এখানে উপস্থাপন ও ব্যাখ্যা করতে পারতাম। প্রতিটি ভাষার বিশেষ্য, বিশেষণ ও ক্রিয়াপদই তার মূল ভিত্তি। তবে ভাষার সুন্দরতম অংশ বিশেষ্য পদগুলো : আমার এ পোস্টের মূল লক্ষ্য, সবাইকে আহবান জানাব সবাই যেন তার আঞ্চলিক ভাষার কিছু না কিছু শব্দ ও তার ব্যাখ্যা মন্তব্যে তুলে দেন। ব্যাখ্যা না করতে পারলেও কোনো শব্দ জানা থাকলে শুধু শব্দটাই তুলে দিতে পারেন, তাতে অন্য কেউ তার ব্যাখ্যা দিতে পারবে—অথবা তিনি নিজেও পরে জেনে ব্যাখ্যা দিতে পারেন।
নোয়াখাইল্যা শব্দ
উরুম মুড়ি।
হগার ~ পগার ~ প্রাকার। প্রাকার মানে দূর্গের দেয়াল হলেও, নোয়াখাইল্যা ভাষায় এ অর্থে ব্যবহৃত হয় না। রাস্তা থেকে বাড়ি আলাদা করতে যে গাছপালার দেয়াল বানানো হয় তাকেই হগার বলে। দুই বাড়িকে আলাদা রাখতেও হগার গড়ে তোলা হয়।
হাঁনখ হাঁপ গোখরো সাপ।
মাইডগা হাঁপ ছোট্ট নির্বিষ সাপ। ধান খেতে বেশী পাওয়া যায়। ধান কাটা হয়ে গেলে খালি ধান খেতে সহজে দেখা যায় বলে সকলের আক্রমণের শিকার হয়ে অকাতরে প্রাণ হারায়।
এরিও দূর থেকে কেউ কাউকে ডাকতে এ ধ্বনি ব্যবহৃত হয়। হাট বাজার খেত খামারে খুব শোনা যায়। শুধু দূর থেকে কাউকে ডাকতে নয় কাছাকাছি কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এ ধ্বনি ব্যবহৃত হয়।
হাঁছা* সত্য। (Six-সিক্স, এখানে S-এর উচ্চারণের মতো।)
আন্তা ছোট মাছ ধরার এক ধরনের বাক্সের মতো ফাঁদ। একটি খুবই সরল ল্যাবেরিন্থ। দেখতে ট্রানজিস্টারের মতো বলে নোয়াখালিতে ট্রানজিস্টারকে মজা করে আন্তা বলা হয়।
বইছা* বিভিন্ন ধরনের ছোট মাছকে একসাথে এ নামে ডাকা হয়।(Six-সিক্স, এখানে S-এর উচ্চারণের মতো।)
লোব ~ Loaves, পাউরুটি।
ছৈঁ* শিম। (Six-সিক্স, এখানে S-এর উচ্চারণের মতো।)
হিডা ~ পিঠা।
হ্যানকারচিফ ~ Handkerchief, রুমাল
রসি ঘর ~ রসই ঘর, রান্না ঘর।
কঁইডা সব্জী বিশেষ। ঠিক কী রকম বোঝাতে পারছি না। পরে ব্যাখ্যা করব।
[* ‘ছ’ ব্যবহার করেছি। চট্টগ্রামে ‘ছালাম’ ‘ইছলাম’ এভাবে লেখা হয়, এ দৃষ্টান্তকে মাথায় রেখে। ]
যেহেতু চট্টগ্রামে থাকি সেহেতু চট্টগ্রামের অনেক শব্দও এখানে তুলে দিতে পারব আশা করি। তবে চট্টগ্রামের কেউ সে কাজ নি:সন্দেহে আরো অনকে ভালো পারবেন। আমি চট্টগ্রামের সামুদ্রিক মাছের নামগুলোর ভীষন ভক্ত, জানি না নামগুলো কি চট্টগ্রামের নিজের না অন্য কোনো ভাষার অপভ্রংশ।
চাঁটগাঁইয়া শব্দ
লইট্টা মাছ বিশেষ।
ফাইস্যা মাছ বিশেষ।
ছুরি মাছ বিশেষ। (Six-সিক্স, এখানে S-এর উচ্চারণের মতো।)
পোয়া মাছ বিশেষ।
লাক্ষ্যা মাছ বিশেষ।
গুদাম মাটির ঘর।

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
