আজ একটি যুগের অবসান হল, আমার ব্যক্তিগত সংবাদপাঠের অভ্যাসে, যেসামান্য জায়গাটুকুও ছিল প্রথম আলোর তার পরিসমাপ্তি ঘটল। এই ৫ নভেম্বর ২০১০ থেকে আমি আর একেবারেই প্রথম আলো পড়ছি না। প্রথম আলোর যুগপূর্তির উৎসবে মতিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের মৌল আদর্শগুলো লিখছেন এরকম
গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সামাজিক সাম্য ও ন্যায়বিচার এবং অসাম্প্রদায়িকতা
লিখেছেন এখানে। আইনের শাসন, সামাজিক সাম্য ও ন্যায়বিচার এবং অসাম্প্রদায়িকতা ! ভালো, প্রথম আলো।
বাংলাদেশে এখন একটি স্বতন্ত্র পথ তৈরি হয়েছে, কিছু প্রগতিওয়ালা এখন প্রমতির অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এই পথ এই লক্ষ্য অনেক আগেই মতিউর রহমান প্রথম আলোর পথচলা শুরু করতেই নির্ধারণ করেছেন। আমার স্মৃতি আছে স্মৃতিশক্তি নেই – ওয়াহিদুল হক মারা যাবার কয়েকদিন পর, ৪ নভেম্বর ২০১০এ প্রথম আলোর সম্পাদকীয় পাতায় যেখানে তপন মাহমুদের কলিম শরাফী শ্রদ্ধাঞ্জলি ছাপা হয়েছে, সেখানটায় মতিউর রহমান লিখেছিলেন ওয়াহিদুল হক শ্রদ্ধাঞ্জলি, সেই লেখায় ওয়াহিদুল হকের চেয়ে বেশি কথা ছিল মতিউর রহমানের মাকে নিয়ে কারণ ওই একই হাসপাতালে যেখানে ওয়াহিদুল হক মৃত্যুবরণ করেছিলেন সেখানে বছর কয়েক আগে মতিউর রহমানের মায়েরও মৃত্যু হয়েছিল, সেই লেখায় এমন এক উদ্দেশ্যের কথা ইঙ্গিতে বলা ছিল যেমহান উদ্দেশ্যের সাথে ওয়াহিদুল হক সম্মিলিত হতে ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু মতিউর ও প্রথম আলো সেপথে হাঁটবেন ঠিক করে রেখেছেন – এক এলিটিস্ট সিভিল ‘মিডিয়া’ তারা গড়ে তুলবেন, আর যখন ওই ওয়াহিদুল হক শ্রদ্ধাঞ্জলি তিনি লিখছিলেন তখন তো ফসল তোলার সময়, দেশে তখন সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত ‘এলিটিস্ট সিভিল’ সরকার, যেসরকারকে কিছুদিন হল এখন তিনি বলতে শুরু করেছেন ‘সশস্ত্র বাহিনী সমর্থিত অস্বাভাবিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ – প্রমতির খেয়াল হল যেকোনো নিকট অতীতও নিজের প্রয়োজনে নিমেষে বদলে ফেলা। তাই তো তিনি বলেন, যা কিছু আমার জন্য ভালো তার সঙ্গে প্রথম আলো – এখন তিনি আরো এগিয়ে গিয়ে বলেন, যত খুশি যত পার বদলে যাও বদলে দাও।
আমি ওই পুরনো প্রগতির পথেই হাঁটতে চাই, প্রমতির সঙ্গে কখনো হাঁটিনি তবে খবরাখবর রেখেছি, আজ থেকে খবর রাখাও বন্ধ করে দিলাম।
বিভিন্ন সময়ে ‘মুক্তাঙ্গন’এ প্রথম আলো নিয়ে আমার পোস্ট ও মন্তব্যের লিন্ক।
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৪০ comments
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ৬ নভেম্বর ২০১০ (৮:১৩ পূর্বাহ্ণ)
আপনার লেখাটি একটা আবেগ থেকেই লেখা। এদেশের সংবাদপত্র একেবারে কোনো সুনির্দিষ্ট চরিত্রের ভিতর নেয়। কারণ এটি কোনো সম্পাদকীয় মাধ্যম হিসাবে ডেভলপ করেছে বলে মনে হয় না। একজন সম্পাদক তো সেই পত্রিকার সাংবাদিকদের মুরুব্বি মাত্র, একজন চাকুরে। সে তার চাকুরির স্বার্থে, মধ্যচিত্তীয় তাড়নায়, যা যা করার তা করতে থাকে। তার মগজের ভিতর বিরাজ করে মালিক, সরকার, পরজীবীপুঁজি। আমি একবার বলেওছিলাম মগজে কারফিউ জারি রেখে বিশুদ্ধ সংবাদ হয় না।
আর একজন মতিউর রহমান একটা সিস্টেমের প্রডাক্ট। ইনকিলাব, সংগ্রাম, নয়া দিগন্ত, এমনকি প্রথম আলোকে আপনি না হয় ধরে নিলেন আস্থাহীন পত্রিকা। তো, দৈনিক সংবাদ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যখন একজন সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী সহাস্যে (তার হাসির ধরনটা নিশ্চয়ই আপনার নজরে এসেছে) পদচারণা দেন তখন কী বলবেন? কথা হচ্ছে, এখানে পুজিঁর খেলা চলে।
আর মুক্তিযুদ্ধের ভিতর কি রাজনৈতিকভাবে স্বীকৃত একক কোনো আদর্শ ছিল? মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বরূপ এক-একজন এক-একভাবে হাজির করেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে ধারণা রাখি, এটি ছিল একটা জনযুদ্ধ, এতে জনসংস্কৃতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়, আশা জাগে; কিন্তু রাজনৈতিক শক্তি অতি প্রয়োজনেই তাকে পদদলিত করতে থাকে এবং ক্রমাগত শাসন-পেষণ জারি রাখছে।
মোদ্দা কথা, একজন সম্পাদকের উপর গোস্বা করে একটা সংবাদপত্র না-পড়ার সিদ্ধান্ত নেয়াটা কদ্দূর সঠিক তা ভেবে দেখার বিষয়। ‘প্রথম আলো’ কিন্তু ক্লাসিক বুর্জোয়ার পর্যায়ে থেকে অনেক মানবিক কাজ করে যাচ্ছে।
মাসুদ করিম - ১৫ জুলাই ২০১১ (১০:৩০ পূর্বাহ্ণ)
এখন লেখেন
যখন ওই সরকার ক্ষমতায় ছিল তখন লিখতেন
যেকোনো বর্তমান অপসৃত হওয়া মাত্র তাকে অস্বাভাবিক ঘোষণার বিকট ‘ব্যক্তিত্ব বিভ্রান্তি’র অসুস্থতায় দীর্ঘদিন থেকে সাহসের সঙ্গে চিকিৎসাহীনভবে ভুগছেন তিনি।
মাসুদ করিম - ২৫ মার্চ ২০১২ (১০:২৯ পূর্বাহ্ণ)
বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষমতাবান দৈনিকের সম্পাদকের এই প্রথম কথা শুনলাম, ভেবেছিলাম বক্তা হিসাবে তিনি তার কর্তা মাহফুজ আনামের মতো পরিশীলিত না হলেও তার অধস্তন মিজানুর রহমান খানের মতো গুছানো হবেন — কিন্তু না তিনি একবারেই হতাশাব্যঞ্জক বক্তা, সত্যিই আরো ভাল আশা করেছিলাম। তবে একটা শব্দের ব্যবহার দেখে খুব মজা লাগল, ‘সন’, বছরের উল্লেখে তিনি এই শব্দটি ব্যবহার করেন, এবং খুবই সচেতনভাবে করেন, মুখ ফসকে একবারও ‘সাল’ বলেন না, নিজেকে কঠোর নিয়মে গেঁথে নিয়েছেন। ১৯৭১ সন, যু্দ্ধের সন — কেন এত সন, সন কে জানে! তিনি কি ‘নামাজ’কে ‘সালাত’ বলেন? ‘খোদা’কে ‘আল্লাহ’ — কঠোর নিয়মের অধীন হয়ে? আমরা তো যখন যেটা মন চায় সেটাই বলি।
মাসুদ করিম - ১৭ জুন ২০১৩ (১১:৪১ পূর্বাহ্ণ)
মজা পুকুর, মজা নালা, মজা খাল, মজা নদী দেখেছেন — কেন মজা আলো দেখেননি? — প্রথম আলো দেখুন ‘মজা আলো’ দেখা হয়ে যাবে।
মাসুদ করিম - ১২ অক্টোবর ২০১৩ (১০:১৭ পূর্বাহ্ণ)
বিস্তারিত এখানে।
মাসুদ করিম - ২ নভেম্বর ২০১৩ (৬:০৭ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২১ নভেম্বর ২০১৩ (২:৫২ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ (৮:৫৪ অপরাহ্ণ)
মতিউর রহমানের খেলনা গাড়ির স্টোরকিপার অবকবি* তব সাংবাদিক সোহরাব হাসান নিজের মাথার খুলি ছাড়া আর কিছুই কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না, কারণ ওটা ছাড়া আর সবকিছুই তিনি প্রমতিকে দান করেছেন।
*
মাসুদ করিম - ৩ জানুয়ারি ২০১৪ (১২:২১ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৭ জানুয়ারি ২০১৪ (১২:১৬ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৭ জানুয়ারি ২০১৪ (৪:৪০ অপরাহ্ণ)
সুধাংশু তুই পালা
মাসুদ করিম - ৮ জানুয়ারি ২০১৪ (১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৮ জানুয়ারি ২০১৪ (১১:৫৩ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৩১ মার্চ ২০১৪ (৫:২০ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১৮ মে ২০১৪ (৫:৪৫ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২২ মে ২০১৪ (১২:০১ অপরাহ্ণ)
মারদাঙ্গা রিপোর্ট ‘থম আলো’র
মাসুদ করিম - ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ (১২:০৭ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২৭ জানুয়ারি ২০১৫ (৬:২৯ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ (১২:০৩ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১৮ জুন ২০১৫ (১০:১৯ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৪ আগস্ট ২০১৫ (৯:৫১ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২ জুলাই ২০১৫ (১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ)
ভারতীয় ক্রিকেট টিমকে ব্যঙ্গ করতে গিয়ে মুস্তাফিজের বোলিং বিশেষত্ব অফট্র্যাক কাটারকেই ব্যঙ্গ করল প্রথম আলোর নাকে খত দেয়া* পাল্টে দাও বেঞ্চমার্ক ‘রসআলো’।
* নাকে খত দেয়ার আগে নাম ছিল – ‘আলপিন’।
মাসুদ করিম - ১৪ জুলাই ২০১৫ (১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২৮ জুলাই ২০১৫ (৬:৫১ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৩০ আগস্ট ২০১৫ (৮:২১ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৩১ আগস্ট ২০১৫ (১২:২০ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ (১২:০৮ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ (৩:৫১ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ (২:৩০ অপরাহ্ণ)
দেশের একজন শিক্ষামন্ত্রী কীভাবে এ রকম আজগুবি একটা বিষয় বিশ্বাস করতে পারেন সেটা অবশ্যি আমি পরদিন ভোরবেলাতেই বুঝতে পেরেছিলাম। অনলাইনে খবরটি নিশ্চয়ই আগেই ছাপা হয়েছে, আমি দেখিনি। সারা দেশের সকল পত্রপত্রিকা যখন ছাত্রলীগের এই হামলার নিন্দা করে খবর ছাপিয়েছে, সকল টিভি চ্যানেল যখন খুব গুরুত্ব দিয়ে খবরটি প্রচার করেছে, তখন ‘প্রথম আলো’ তাদের খবরের শিরোনাম করেছে এভাবে: ‘ছাত্রলীগের হাতে শিক্ষক এবং শিক্ষকের হাতে উপাচার্য লাঞ্ছিত’।
‘প্রথম আলো’ এই দেশের মূলধারার পত্রিকা। এই দেশের মূলধারার অনেক মানুষ এই পত্রিকা পড়েন, তাদের সার্কুলেশন বিশাল। কাজেই ঘটনার পরের দিন বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ জেনে গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এতই নিকৃষ্ট শ্রেণির প্রজাতি যে, তারা ভাইস চ্যান্সেলরকে লাঞ্ছনা করতে সংকোচ বোধ করেন না। ‘প্রথম আলো’র ইতিহাসে এই প্রথমবার ছাত্রলীগের দুস্কর্মের বর্ণনা ‘হা বিতং’ করে ছাপা হল না!
মাসুদ করিম - ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ (৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ (৫:৪৮ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১৮ মার্চ ২০১৬ (৮:১৪ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২ ডিসেম্বর ২০১৮ (৭:৩২ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৬ ডিসেম্বর ২০১৮ (৯:২৮ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৩ ডিসেম্বর ২০১৮ (১২:৪৮ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (৪:২৮ পূর্বাহ্ণ)
//”আপনি বেশ সেক্সিস্ট” বললে এককালে কেউ কেউ খুশি হতো, লজ্জা পেত। ভাবত তাকে সেক্সি বলছি। কারণ সেক্সিস্ট শব্দটার মানে জানত না। সেক্স শুনেই অজ্ঞান। একবার তাও এক কলিগ জিজ্ঞেস করেছিল, “আপু, সেক্সিস্ট কি নতুন কোনো শব্দ?” সেক্সিস্টের অর্থ শুনে উনি শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন।
তো, সেক্সিস্ট মানে কী?
যে ব্যক্তি মানুষের সেক্স অর্থাৎ জৈবিকভাবে প্রাপ্ত লিঙ্গপরিচয়ের ভিত্তিতে বৈষম্যমূলক/অবমাননাকর মতপ্রকাশ/আচরণ করে সে সেক্সিস্ট।
যারা এতকাল নারীর শরীরের ভাঁজে ম্যাগনিফাইং গ্লাস নিয়ে রহস্য খুঁজেছেন, তা নিয়ে লিখেটিখে ভেবেছেন খুব সাহিত্য হচ্ছে, তাদের এখন জানতে হবে যে সেই দিন শেষ। এগুলো সেক্সিস্ট আচরণ। এগুলো করলে আপনাকে দুয়ো দেওয়া হবে। নারীর রহস্য আর কিছুই না, আপনার নিজের চিন্তার সংকীর্ণ গলির অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া আপনার শুভবুদ্ধি। এটা এখন বুদ্ধিবৃত্তির আস্তাকুঁড়ে যাবে।//Trishia Nashtaran
মাসুদ করিম - ৩১ জুলাই ২০২০ (৪:১২ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৭ এপ্রিল ২০২৩ (৬:১১ অপরাহ্ণ)
প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল চেয়ে শহীদ মিনারে মানববন্ধন
https://www.banglanews24.com/national/news/bd/1089082.details
প্রথম আলো পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল ও চক্রান্তকারীদের শাস্তি চেয়ে মানববন্ধন করেছে স্বাধীনতা-সচেতন নাগিরক সমাজ।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়।
এতে সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতাজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। উন্নত দেশগুলোতে বাংলাদেশের নাম উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বারবার উচ্চারিত হয়। একই সঙ্গে একটি নির্বাচিত সরকারের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এ সময়ে নানা অপকৌশল শুরু হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মৌলিক দায়িত্ব। একটি বিশেষ পটভূমির উদ্দেশ্যে আমাদের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। যেসব পত্রিকা এসব অপকর্মে যুক্ত আছে, তাদের বিরুদ্ধে সবার সম্মিলিত সোচ্চার হওয়াই সময়ের দাবি।
মহান স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে এ ধরনের প্রয়াস অব্যহত থাকবে বলে জানান ঢাবি উপাচার্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, প্রথম আলো এখন স্বাধীনতা বিরোধীদের মুখপত্র। তারা আমাদের নাম ছাপায় না। যেখানে অন্য পত্রিকায় আমাদের বিবৃতি ছাপায়। খলনায়ক হওয়ার চেষ্টা করবেন না।
সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, বাংলাদেশ বিরোধী যে অপশক্তি তাদেরকে জানিয়ে দেওর জন্য এখানে সমবেত হয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
নাট্যব্যক্তিত্ব পিযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, বঙ্গবন্ধুর সময়ে বাসন্তীকে জাল পরিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছিল তৎকালীন জাতীয় দৈনিক। ঠিক তেমনি স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে প্রথম আলোর অর্বাচীন সাংবাদিক ষড়যন্ত্রের জাল তৈরি করল। এটি হঠাৎ করেই হয়নি। একজন মফস্বল সাংবাদিক সংবাদ পাঠাল, এটি হঠাৎ করেই পাবলিশড হয়ে গেছে এরকম না। ওই গোষ্ঠি সুপরিকল্পিতভাবে এটি করেছে। এসময় তিনি প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
প্রথম আলোর বিরুদ্ধে রমনা থানায় করা মামলার বাদী আইনজীবী মশিউর মালেক প্রথম আলো পত্রিকাকে কালো তালিকাভুক্ত করে পত্রিকা বাতিলের দাবি জানান।
কর্মসূচিতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, জোট ও সংগঠন অংশ নেয়। সেগুলো হলো- স্লোগান ৭১, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, জাতীয় ওলামা সমাজ, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক জোট, আন্তর্জাতিক শিল্পী সাহিত্যিক সম্মিলিত পরিষদ, বাংলার মুখ, বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগার, বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ আন্তর্জাতিক পরিষদ, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংঘ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম ব্রিগেড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ, বিচ্চু বাহিনী, মুক্তিযোদ্ধা ঐক্যমঞ্চ, বৃত্তান্ত ৭১ ফাউন্ডেশন।
মাসুদ করিম - ৭ এপ্রিল ২০২৩ (৬:১৩ অপরাহ্ণ)
প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল চাওয়া এখন ভুল। প্রথম আলো বন্ধ বিষয়ে আমার টুইট, //প্রথম আলো বন্ধ করে দেয়ার সবচেয়ে ভাল সময় ছিল ২০০৯, প্রথম আলো বন্ধ করে দেয়ার সবচেয়ে ভাল সময় আবার আসবে ২০২৮এ, আর প্রথম আলো নিজে নিজে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সবচেয়ে ভাল সময় প্রতিদিন।//
https://twitter.com/urumurum/status/1644386676289175552
মাসুদ করিম - ১০ এপ্রিল ২০২৩ (৪:৩৭ অপরাহ্ণ)
প্রথম আলো আওয়ামী লীগের, গণতন্ত্রের, দেশের মানুষের ‘শত্রু’: প্রধানমন্ত্রী
https://bangla.bdnews24.com/media_bn/3n41iqolfg
সংসদ নেতার বক্তব্যের সমর্থনে সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে ‘ঠিক, ঠিক’ আওয়াজ তোলেন। কেউ কেউ বলতে থাকেন, ‘শেইম, শেইম’।
জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে দৈনিক প্রথম আলোর কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “প্রথম আলো আওয়ামী লীগের শত্রু, প্রথম আলো গণতন্ত্রের শত্রু, প্রথম আলো দেশের মানুষের শত্রু।”
জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অধিবেশনে সোমবার সমাপনী ভাষণ দিচ্ছিলেন শেখ হাসিনা। সেখানেই প্রথম আলোর প্রসঙ্গ আসে।
স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ও ফটো কার্ড নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানা বক্তব্য ও কর্মসূচির মধ্যে প্রথমবারের মত বিষয়টি নিয়ে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী।
তার অভিযোগ, কিছু বুদ্ধিজীবী, ও যারা ‘বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন’ তারা, ‘সামান্য কিছু পয়সার লোভে’ অগণতান্ত্রিক ধারা আনতে এদের (প্রথম আলো) তাবেদারি ও পদলেহন করে।
সংসদ নেতা বলেন, “(প্রথম আলো) দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। এখন দেখা যায়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাজাপ্রাপ্ত তাদের পক্ষ হয়ে তারা ওকালতি করে যাচ্ছে। গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে তারা এমন একটা সরকার আনতে চাচ্ছে যার কোনো গণতান্ত্রিক অস্তিত্বই থাকবে না।”
প্রথম আলো নিয়ে যা হয়েছে
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে একজন শ্রমজীবী মানুষকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।”
ওই মন্তব্য ধরে শিরোনাম করা হলেও ছবি দেওয়া হয় আরেক শিশুর, যার কথা প্রতিবেদনের ভেতরে ছিল।
ওই ছবি ও শিরোনাম দিয়ে সোশাল মিডিয়ায় একটি কার্ড পোস্ট করা হয়, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা ওই প্রতিবেদনে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ উপাদান থাকার কথা বলেন।
পরে প্রথম আলো প্রতিবেদনটি থেকে ছবি সরিয়ে শিরোনাম বদলে দেয়। পাশাপাশি তাদের সোশাল মিডিয়ায় দেওয়া পোস্টও প্রত্যাহার করা হয়।
পরদিন একাত্তর টিভি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে দাবি করা হয়, দিনমজুর জাকির হোসেনের নামে যে বক্তব্যটি প্রকাশ করা হয়, সেটি আসলে একটি শিশুর মুখ দিয়ে বলানো হয়েছে। সে জন্য শিশুটিকে ১০ টাকা ‘ঘুষ’ও দেওয়া হয়েছে। তবে যার নামে বক্তব্য ছাপা হয়েছে, সেই ‘জাকির হোসেনের’ তালাশ করেনি টেলিভিশনটি।
প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদনের প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে ২৯ মার্চ ভোরে তার সাভারের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা-সিআইডি। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর তাকে আদালতে তোলা হয়।
এর মধ্যে এক যুবলীগ নেতা এবং এক আইনজীবী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন শামসের বিরুদ্ধে। আইনজীবীর করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদককেও আসামি করা হয়।
ওই মামলায় জামিন আবেদন নাকচ করে শামসকে পাঠানো হয় কারাগারে। ২ এপ্রিল উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর। পরদিন জামিন হয় শামসের। মুক্তি পাওয়ার ছয় দিন পর অন্য মামলাতেও জামিন হয় তার।
তবে সেই সংবাদের রেশ এখনও রয়ে গেছে। প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে সরকার সমর্থক বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা নানা কর্মসূচি পালন করছেন। প্রথম আলোর পক্ষেও নানা বক্তব্য বিবৃতি আসছে।
‘শেইম শেইম’
প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদনের সমালোচনা করে সংসদে শেখ হাসিনা বলেন, “মাত্র একটা ছোট্ট শিশুর হাতে ১০টা টাকা দিয়ে, তাকে দিয়ে একটা মিথ্যা বলানো, শিশুর মুখ থেকে কিছু কথা বলানো… কী কথা? ভাত মাংসের স্বাধীনতা চাই।
“একটা ৭ বছরের শিশু, তার হাতে ১০টা টাকা তুলে দেওয়া এবং তার কথা রেকর্ড করে তা প্রচার করা, স্বনামধন্য একটা পত্রিকা, খুবই পপুলার, নাম তার প্রথম আলো। কিন্তু কাজ করে অন্ধকারে।”
সংসদ নেতার বক্তব্যের সমর্থনে সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে ‘ঠিক, ঠিক’ উচ্চারণ করেন। কেউ কেউ বলতে থাকেন, ‘শেইম, শেইম’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি এটা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলি- এরা এদেশে কখনও স্থিতিশীলতা থাকতে দিতে চায় না।”
ড. ইউনূসের অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রথম আলোর অবস্থান নিয়েও সমালোচনা উঠে আসে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যে।
তিনি বলেন, “২০০৭ সালে যখন ইমার্জেন্সি (জরুরি অবস্থা) হয়, তখন তারা উৎফুল্ল। দুটি পত্রিকা আদাজল খেয়ে নেমে গেল। তার সঙ্গে আসেন একজন সুদখোর (ড. মুহম্মদ ইউনূস)। বড়ই প্রিয় আমেরিকার।”
ড. ইউনূসের অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটা ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক, একটা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। সরকারের বেতন তুলতেন যে এমডি, তিনি মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার কোথা থেকে পেলেন যে আমেরিকার মত জায়গায় সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগ করলেন? দেশে বিদেশে এ অর্থ কোথা থেকে আসে, এটা জিজ্ঞেস করেছে কখনও তারা?
“এদের কাছ থেকে দুর্নীতির কথা শুনতে হয়! দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ, এদের কাছ থেকে মানবতার কথা শুনতে হয়!
“গরিবের রক্ত চোষা টাকা পাচার করে বিদেশে বিনিয়োগ করে শত কোটি টাকার মালিক হয়ে আবার আন্তর্জাতিক পুরষ্কারও পেয়ে যায় এবং এসব লোক এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।”
‘আমেরিকা যে কোনো দেশে ক্ষমতা উল্টাতে পাল্টাতে পারে’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতন্ত্র ও উন্নয়ন’ নিয়ে এ দেশের মানুষের অভিজ্ঞতা ‘খুবই বিচিত্র’।
“আমরা আইয়ুব আমল দেখেছি। ইয়াহিয়া আমল দেখেছি। জিয়ার আমল দেখেছি। জেনারেল এরশাদের আমল দেখেছি। খালেদা জিয়ার আমলও দেখেছি।”
যুক্তরাষ্ট্র সফরে একটি বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, “আমেরিকায় যখন প্রথমবার যাই, সেখানকার আন্ডার সেক্রেটারির সাথে আমার মিটিং হয়েছিল। বলেছিলাম, আমি একটি মনুমেন্ট দেখে এসেছি। সেখানে লেখা আছে গভমেন্ট অব দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল। আমি এমন একটি দেশ থেকে এসেছি, সে দেশটি হচ্ছে গভমেন্ট অব দ্য আর্মি, বাই দ্য আর্মি, ফর দ্য জেনারেল।
“বলেছিলাম, আমেরিকা গণতন্ত্র চর্চা করে তাদের আটলান্টিকের পাড় পর্যন্ত। এটা যখন পার হয়ে যায় তখন কী আপনাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটা বদলে যায়? কেন আপনারা একটা মিলিটারি ডিকটেটরকে সমর্থন দিচ্ছেন? আমি এই প্রশ্নটি করেছিলাম।”
সংসদ নেতা বলেন, “আজকেও বলি…। যে দেশটা আমাদের কথায় কথায় গনতন্ত্রের সবক দেয়, আমাদের বিরোধী দল থেকে শুরু করে কিছু কিছু লোক তাদের কথায় খুব নাচন কোদন করছেন, ওঠবস করছেন, উৎফুল্ল হচ্ছেন। হ্যাঁ, তারা যে কোনো দেশে ক্ষমতা উল্টাতে পারে, পাল্টাতে পারে। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে আরও বেশি কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে…।
তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের আমাদের যে এত জ্ঞান দিচ্ছে, কথায় কথায় ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস এর কথা বলে, তাদের দেশের অবস্থাটা কি…?”
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দণ্ডিত রাশেদ চৌধুরী যে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়ে আছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “সেখানে যতটা প্রেসিডেন্ট এসেছে সকলের কাছে আমি আবেদন করেছি। আইনগতভাবে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। আমরা ডিপ্লোমেসির মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালিয়েছি।
“রাষ্ট্রপতির (যুক্তরাষ্ট্রের) কাছে আবেদন করেছি যে এই খুনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তাকে আপনারা আশ্রয় দেবেন না। শিশু হত্যাকারী, নারী হত্যাকারী, রাষ্ট্রপতি হত্যাকারী, মন্ত্রী হত্যাকারী। এটা মানবতা লঙ্ঘন। এদেরকে আপনারা আশ্রয় দিয়েন না। ফেরত দেন। কই তারা তো তাকে ফেরত দিচ্ছে না। খুনিদেরকে লালন পালন করেই রেখে দিচ্ছে।”
‘৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে কেন এত আপত্তি’
সংসদে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার সুযোগ যে বিধানের কারণে বন্ধ, বাংলাদেশের সংবিধানের সেই ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের দাবির বিপক্ষে নিজের অবস্থান প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, “৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে অনেকেরই আপত্তি। যারা এই আপত্তির কথা তুলছেন, তাদের বোধহয় অভিজ্ঞতার অভাব আছে। এই ৭০ অনুচ্ছেদটাই কিন্তু আমাদের দেশে সরকারের একটা স্থায়ীত্বের সুযোগ এনে দিয়েছে। যার ফলে দেশটা উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ফ্লোর ক্রস করার কারণে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকার টিকতে পারেনি।
“এর আগে ১৯৪৬ সালেও একই খেলা হয়েছিল। যার কারণে আমাদের পূর্ব বাংলাটা যেভাবে গঠন হওয়ার কথা সেভাবে হয়নি। এটা ১৯৫৬ সালের নির্বাচনেও হয়েছিল। পরে মার্শাল ল এসে ক্ষমতা দখল করে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “কাজেই এ ৭০ অনুচ্ছেদটাই একটি সুরক্ষা দেয় গণতন্ত্রকে সংহত করতে। আর এর সুফল জনগণ পেতে পারে। জানি না কেন কিছু কিছু সদস্যের এর ওপর এত রাগ। কারণ হচ্ছে সরকার ভাঙতে গড়তে বা খেলাটা খেলতে তারা সক্ষম হচ্ছে না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।”
‘সকলের দিকে দৃষ্টি আছে’
আওয়ামী লীগ সরকারে এসে কী করেছে, আর তার আগে কী ছিল- তার কিছু হিসাব শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, দেশের মানুষও বিশ্বাস করে, ১৪ বছর একটানা ক্ষমতায় আছি বলেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছি। হ্যাঁ ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তারপরও আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশের মানুষের জন্য অতিরিক্ত দামে জিনিস কিনে এনেও আমরা খাদ্য নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছি।
“নিম্ন আয়, মধ্যম আয়, সকলের দিকে আমাদের দৃষ্টি আছে। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের ভাগ্য গড়তে। এখন গ্রাম আর শহরের পার্থক্য কমে গেছে। শহরের মাঝখানে আরেকটা শহর গড়ে উঠছে। প্রত্যেকটি গ্রামে আমরা নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছি।”
‘বিএনপি এতবড় দল কোত্থেকে হয়ে গেল’
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এখন নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। যে বিরোধী দলকে বড় বিরোধী দল বলা হয়, তারা ২০০৮ সালে ২৯টি সিট পেয়েছিল। তারা যদি এত বড় বিরোধী দলই হয়ে থাকে, তাহলে ২৯টি সিট পেল কেন? তারা এতবড় দল কোত্থেকে হয়ে গেল?
“আর সাজাপ্রাপ্ত আসামি হচ্ছে সেই দলের চেয়ারপার্সন। হত্যা-গুম-খুন-দুর্নীতি-জঙ্গিবাদ-সবকিছুতেই যারা পারদর্শী ছিল। তাদের জন্য দেশের মানুষ আতঙ্কে থাকত। এখন তাদেরকে নিয়ে এত উৎফুল্লতা শুরু করছে। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।”
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশের ইতিহাস যে বিকৃত করা হয়েছিল, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস যেমনভাবে বিতর্কিত করা হয়েছিল। দেশের অনেক প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধ ও লাখো শহীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস বদলানো হয়েছিল। অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনি। আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই উন্নয়নটা সম্ভব হয়েছে।
“এছাড়া যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। তারা দেশ ও জাতিকে কী দিতে পেরেছে? কিছুই দিতে পারেনি। নিজেদের ভাগ্য গড়তে পেরেছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, আজকে তাদের কাছে থেকেও আমাদের গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়। তাদের থেকে আমাদের গণতন্ত্রের শিক্ষা নিতে হয়।”
https://twitter.com/urumurum/status/1645449382874198017