বলার মতো করে সরাসরি লেখা যায় না। লেখার মতো করে সরাসরি বলা যায় না। অনেক দূর যেতে হয়। অনেক সময় পেতে হয়। অভিনিবেশ লাগে। উৎসাহ লাগে। সন্তপ্ত হতে হয়। কাছে যেতে হয়। চট্টগ্রামে এখন আর রাজনীতি নেই। রেষারেষি আছে। ঘেঁষাঘেঁষি আছে। তাই ঠিক করেছি কিছু বলব না। এবারের মেয়র নির্বাচনে চুপ থাকব।
চট্টগ্রাম শহরে বসবাস অনেক দিন – সেই ছোট থেকে আজ অব্দি – এশহরের উল্লেখযোগ্য তিনটি দিক : প্রকৃতি, খেলাধুলা, সংস্কৃতি – প্রতিটি একে একে যেতে বসেছে – কারো কোনো দায় নেই – সব দায় আমাদের, নাগরিকদের। নেতারা, আমলারা, ফটকাবাজ ব্যবসায়ীরা ও অক্লান্ত বুদ্ধিজীবিরা যে যার আদায় ঘুষ লুট ফায়দা নিয়ে ব্যস্ত – কিন্তু যখনই পরিষেবার কথা উঠেছে – যখনই প্রয়োজন পড়েছে নাগরিকদের সহায়তার, তখনই সবাই দূরে সরে গেছে। বিস্ময়করভাবে পশ্চাদপদ এক নগর – জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতিতে একজন বড় মাপের নেতা আজ পর্যন্ত দিতে পারল না – প্রকৃতির এতো সৌন্দর্য নিয়েও এনগর ‘রমনা’র সাথে তুলনা করা যায় এমন একটা পার্ক দিতে পারল না – ভাল ভাল সব টুর্নামেন্ট একে একে ধ্বংস করল – সাংস্কৃতিক জগতে এতো অবদানের পরও, আজ পর্যন্ত এখানে একটা ভাল অডিটরিয়াম কমপ্লেক্স ও মিউজিয়াম নেই। দুঃখের শেষ নেই চট্টগ্রামে – বন্দর নগরী – এমন জড় হতোদ্যম বন্দর নগরী পৃথিবীতে আর আছে কি না সন্দেহ আছে।
যেনগর নিজের গুরুত্ব নিজে বুঝে নিতে পারে না, যেনগর সিটি কর্পোরেশন ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অসমন্বয়ে দ্বিখণ্ডিত থাকে – সেনগর সত্যিই পিছিয়ে পড়েছে – তার এগিয়ে যাওয়ার পথ অবরুদ্ধ, চট্টগ্রামের আর কোনো আশা নেই। চট্টগ্রাম নির্বাপিত।
তাই ১৭ জুনের নির্বাচনের কোনো তাৎপর্য নেই। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন এখনই গুরুত্বহীন। ধড়িবাজ ক্ষমতার খ্যামটার আসর ভেঙ্গে দিতে হবে চট্টগ্রামে। রেষারেষি ঘেঁষাঘেঁষি নিপাত যাক। রাজনীতি ফিরে আসুক চট্টগ্রামে।
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৮ comments
বিনয়ভূষণ ধর - ৩১ মে ২০১০ (৪:০৪ অপরাহ্ণ)
মাসুদ ভাই!
আপনার লেখার উল্লেখিত লাইনগুলো কি নির্মম সত্য!!!…
মাসুদ করিম - ৮ জুন ২০১০ (৬:০৩ অপরাহ্ণ)
সমকালে চসিক নির্বাচন ২০১০-এর বিশেষ আয়োজনে আজ ছিল বর্ষীয়ান সাংবাদিক অরুণ দাশগুপ্তের সাক্ষাৎকার। দুই মেয়র প্রার্থী সম্বন্ধে তিনি বলছেন
মহিউদ্দিন চৌধুরী
মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু
বিস্তারিত পড়ুন।
মাসুদ করিম - ১৩ জুন ২০১০ (১১:০৩ অপরাহ্ণ)
ভাবছি আমাদের মেয়র নির্বাচনগুলো রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির কেন? হওয়া তো উচিত ছিল সংসদীয় পদ্ধতির। প্রতিটি ওয়ার্ডে সংসদীয় আসনের মতো ভোট হয়ে, সেই ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে মেজরিটির বোর্ড, সেই বোর্ডকে নেতৃত্ব দিতেন কোনো ওয়ার্ড কমিশনার, তিনিই হতেন মেয়র, যেমন হয় আমাদের সংসদে প্রধানমন্ত্রী। এতে প্রতিটি সিটি কর্পোরেশনে একক ক্ষমতার দাপট অনেকটুকু কমত, রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের ভবিষ্যৎ এমপিদের এখান থেকেই খুজেঁ পেতেন। আর এখনকার মতো নাগরিক কমিটি ধরনের কিছু মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার কিছু দিনের সাংগঠনিক তৎপরতা থেকে আমরা মুক্তি পেতাম, সেসাথে এবারের মতো ভাড়া করা মেয়র প্রার্থীর ঘটনাও ঘটত না। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলো হয়ে উঠত আমাদের নাগরিক রাজনীতির আতুঁড়ঘর। সংসদীয় পদ্ধতি এতে আরো বলিষ্ঠ হত। সেসাথে কর্পোরেশনের কাজকর্মও একক ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল না হয়ে একটা বোর্ডের হাতে থাকত। আর ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোও আরো উৎসাহের সাথে রাজনীতির চর্চা করতে পারত। ছোট খরচের ওয়ার্ড নির্বাচনের গন্ডিতে কাজ করে কয়েকটি ওয়ার্ড জিতে নিয়ে তাদের রাজনীতির ভিত শক্ত ও কার্যকর করতে পারত। এবং নগর বোর্ডের সদস্য হয়ে ছোট দলের এই ওয়ার্ড জিতে আসা নেতাদের অনেক বেশি জনসম্পৃক্ততা বাড়ত। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অবস্থান আরো দৃঢ় হত রাজনৈতিক দলগুলোর। আর মেয়র নির্বাচন অরাজনৈতিক হতে হবে এসব বিরাজনীতিকরণে আলাপ আলোচনাও বন্ধ হত।
মাসুদ করিম - ১৬ জুন ২০১০ (৩:০০ অপরাহ্ণ)
চট্টগ্রাম বিএনপির বড় নেতাদের ভোটে দাঁড়ানোর সব ভয় কাঁধে নিয়ে অনেক করলেন মঞ্জু, এখন সবকিছু চুপচাপ। একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হল, এখন থেকে যারই ভোটে দাঁড়াতে ভয় লাগবে, তিনি এরকম ভাড়া করা টাকাওয়ালা ক্যাম্পেইনপাগল লোক নিয়ে দাপিয়ে বেড়াতে পারেন। চট্টগ্রাম বিএনপির রাজনীতি এখন চূড়ান্ত ভীতুদের রাজনীতি, পরিণতি একটাই — ঘরে গিয়ে অঘোরে ঘুমানো। কিন্তু ওদের ভয়ের শিকার মঞ্জু কি পারবেন ঘুমাতে?
মাসুদ করিম - ১৯ জুন ২০১০ (৩:৪৫ অপরাহ্ণ)
মেজবানমিয়ার মেজবান শেষ হল, শুরু হচ্ছে অকর্মার ঢেঁকির মেয়রগিরি।
মাসুদ করিম - ২৪ জুন ২০১০ (৪:০৫ অপরাহ্ণ)
হ্যাঁ, Absentee বা অনুপস্থিত ভোটাররাই এবার চট্টগ্রাম মেয়র নির্বাচনের প্রধান চরিত্র ছিল। আমার মতো যারা ভোট দিতে মোটেই উৎসাহ বোধ করেনি তারাই আসলে ফলাফলে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। আজ জনকণ্ঠে স্বদেশ রায় লিখছেন
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে স্বদেশ রায়ের বিশ্লেষণ বিস্তারিত পড়ুন এখানে।
মাসুদ করিম - ২ জুলাই ২০১০ (৪:৩২ অপরাহ্ণ)
মাহমুদুর রহমান মান্নার বিশ্লেষণ চসিক নির্বাচন ২০১০ নিয়ে। এক জায়গায় তিনি লিখছেন
ঠিকই বলেছেন মান্না, হ্যাঁ, এই হাসি মহিউদ্দিনের সম্পদ ছিল সবসময়, এখনো আছে এবং আছে অসাধারণ হিউমার, তার জন্য তার খ্যাতি অনেকদিন থাকবে সহকর্মী ও সহনাগরিকদের মধ্যে।
কলামের শেষে এসে মান্না লিখছেন
হ্যাঁ, বর্তমানে যারা শুধু মহিউদ্দিনের ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন তারা একপেশে বিশ্লেষণই করছেন। আর এটা আরো গুরুত্বপূর্ণ কথা যখন মান্না বলছেন, আমরা সবাই কি একেকজন মহিউদ্দিন নই?
বিস্তারিত পড়ুন এখানে।
মাসুদ করিম - ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ (১০:২৩ পূর্বাহ্ণ)