একুশ মানে ভাষাকে বিপন্ন না করা এবং

মাতৃভাষা...আণবিক বোমা[...]

ভাষা একধরনের বর্ণবাদ। মাতৃত্ব একধরনের অস্তিবাদী সংকট। মাতৃভাষা একধরনের বর্ণবাদী অস্তিবাদী সংকট। মায়ের ভাষা, আমার মা যেভাষায় কথা বলে, আমার মায়ের সাথে আমি যেভাষা শিখতে থাকি, যেভাষা আমার ইন্দ্রিয়ের ভাষা, সেভাষা যদি আমার অস্তিত্বের চিন্তার ভাষাও হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে আমার ভাষা, তখনই ভাষা আমাকে যেখানে দাঁড় করায়, সেখানে আমি যদি বর্ণবাদী না হয়ে উঠি, আমি যদি মাতৃত্বের অস্তিবাদী সংকটের অভিমুখ বুঝতে পারি, তাহলে ভাষা আমার যেমাধ্যম হয়ে ওঠে, সেমাধ্যম বিপন্ন করতে ও বিপন্ন হতে দিতে আমার মন সায় দেবে না। ভাষাকে, কথার এ মাধ্যমকে – ভালবাসা, শ্রদ্ধা করা, প্রাণবন্ত রাখা – আমাদের সারাজীবনের কাজ হয়ে উঠলেই – মাধ্যমের বৈচিত্র্যে, এ পৃথিবী নবনবউন্মেষশালিনী বুদ্ধিতে উজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারে।
আণবিক মানে অণুতে অণুতে অসীম ক্রিয়া। বোমা মানে বিস্ফোরণে বস্তুরাশি ধ্বংস করা। আণবিক বোমা মানে অণুতে অণুতে অসীম ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিস্ফোরণে অপার বস্তুরাশি ধ্বংস করা। মানুষের এ কোন খেয়াল, কোথায় যেতে চায় মানুষ – হয়তো ওরা চলে যেতে চায় ভিনগ্রহে – এই বিকট বিভৎস কার্যক্রমের সীমাহীন উল্লম্ফনে। আমরা বাংলাদেশের মানুষ বিষণ্ন বিপদাপন্ন বদ্ধ বদ্বীপে বসবাস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের চেয়ে বড় আতঙ্কে, বার্মা ভারত পাকিস্তান চীন এ দেশগুলোর আণবিক উচ্চাশার ভেতর আমরা কতটুকু নিরাপদ, আমরা জানি না। এই বিপন্নতা, ধ্বংসযজ্ঞের দিকে এগিয়ে যাওয়া আমরা ঠেকাতে পারব কি?
একুশে ফেব্রুয়ারি ও ছয়ই আগস্ট – এ দুটি দিবস আরো বড় বিস্তৃত পরিসরে পালন করা উচিত সারা পৃথিবীর। ভাষাকে বিপন্ন করার প্রচেষ্টা, হিরোশিমা নাগাসাকিতে আণবিক বোমা হামলায় গণমানুষকে বিপন্ন করার প্রচেষ্টা – এ দুইয়ের বিরুদ্ধে আরো জনমত, আরো জনমত, আরো জনমত চাই।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

৩ comments

  1. বিনয়ভূষণ ধর - ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (১২:০৮ অপরাহ্ণ)

    @মাসুদ ভাই!
    আপনার এই চমৎকার পোষ্টখানার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ…

    একুশে ফেব্রুয়ারি ও ছয়ই আগস্ট – এ দুটি দিবস আরো বড় বিস্তৃত পরিসরে পালন করা উচিত সারা পৃথিবীর। ভাষাকে বিপন্ন করার প্রচেষ্টা, হিরোশিমা নাগাসাকিতে আণবিক বোমা হামলায় গণমানুষকে বিপন্ন করার প্রচেষ্টা – এ দুইয়ের বিরুদ্ধে আরো জনমত, আরো জনমত, আরো জনমত চাই।

    …এবং আপনার সাথে আমিও একমত পোষণ করছি এখানে যে আমাদের আসলে এ দুটি দিবস আরও ব্যাপক পরিসরে পালন করা উচিত। জনমত ছাড়াও আমি এখানে আরও একটি শব্দ যোগ করতে চাই সেটা হচ্ছে আমাদের পৃথিবীর সকল মানুষের সচেতনতা।
    আপনার প্রতি আমার শুভেচ্ছা রইলো…

  2. মাসুদ করিম - ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৩:৩১ অপরাহ্ণ)

    বেহালার কল্যাণী চট্টোপাধ্যায় ৫৮ বছর আগে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী হিসেবে রাজনৈতিক বন্দী ছিলেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন যখন চলছে , তখন রাজশাহী জেলের জেনানা ওয়ার্ডে তিনি বন্দী। তার তখনকার ডায়েরির দুটি দিনলিপি তিনি পাঠিয়েছেন ‘গণশক্তি’তে ছাপাতে। এখানে পড়ুন বিস্তারিত

  3. ব্লাডি সিভিলিয়ান - ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (১:০৫ অপরাহ্ণ)

    দুটি তথ্যগত ভুল আছে। বোমাটি ‘আণবিক’ নয়, ‘পারমাণবিক’ বোমা। ইংরেজিটা লক্ষ্য করুন-‘এটম’ বোমা, ‘মলিক্যুলার’ বোমা নয়। আপনার আণবিক বোমার ব্যাপারে তথ্যটিও ভুল। অণু নয়, পারমাণবিক শক্তি দিয়ে বোমাটি তৈরি হয়, বস্তুত, পরমাণু বিভাজনের মাধ্যমে।
    ধন্যবাদ।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.