মানুষের যৌন ইচ্ছার অনুভব ও কর্মকাণ্ডই যৌনতা। নারী পুরুষের বিষমকামকেই আমরা স্বভাবকাম বা স্বাভাবিক যৌনতা বলি। কিন্তু এর বাইরেও মানুষের যৌন অনুভব ও কর্মকাণ্ড ক্রিয়াশীল।
উপযৌনতা : পুরুষ সমকাম, নারী সমকাম, উভকাম, পরিবর্তকাম, পশুকাম।
অপযৌনতা : শিশুকাম, ধর্ষকাম, মর্ষকাম, বিভিন্ন ধরনের মাদক নির্ভর যৌনতা, সার্বক্ষণিক যৌনাচ্ছন্নতা।
অবযৌনতা : যৌনকর্মীর ভোক্তা, পর্নোগ্রাফির দর্শক ও সেক্সশপের ভোক্তা।
এর মধ্যে উপযৌনতা মানুষের স্বীকৃত কামানুভূতি ও কর্মকাণ্ড। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবেই তার এই অনুভব ও কর্মকাণ্ডগুলোকে প্রকাশ করে।
অপযৌনতা পুরোপুরিই মানুষের যৌনতার বিকট প্রকাশ। এই অপযৌনতা মানুষের যৌন অনুভব ও কর্মকাণ্ডকে বিকৃত ও বিভৎস করে তোলে।
অবযৌনতা মানুষের বিকল্প যৌনতা। এই যৌনতাই আবার তৈরি করে আছে এক বিশাল শিল্পসাম্রাজ্য। যৌনশিল্প এই অবযৌনতার চাহিদাই মিটিয়ে থাকে। যেমন অবসংস্কৃতি* – স্থূল গানবাজনা, স্থূল বইপত্র, স্থূল সিনেমা, মাদকাসক্তি মানুষকে গ্রাস করেছে এবং এক বিশাল বাণিজ্যশক্তি হয়ে উঠেছে, আর এই বাণিজ্যশক্তির নিরন্তর প্রচেষ্টা প্রতিনিয়ত এর ভোক্তার সংখ্যা বাড়াচ্ছে – একই ভাবে অবযৌনতাকে ঘিরে যে যৌনশিল্প সাম্রাজ্য সেটাও অত্যন্ত আগ্রাসী মোহ বিস্তার করে এর ভোক্তা বাড়িয়ে চলেছে। যৌনচাহিদা আছে তাই যৌনশিল্পের রমরমা, একথা বলে পৃথিবীর সব জায়গায় যে নৈতিক দুর্যোগের সৃষ্টি করা হয়েছে –অর্থনৈতিক রাজনৈতিক কোনো দুর্যোগই আজ আর অবযৌনতা ও অবসংস্কৃতির মাধ্যমে সৃষ্ট নৈতিক দুর্যোগের সঙ্গে তুলনীয় নয়। অবযৌনতাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে সারা পৃথিবী জুড়ে যৌন উদ্দেশ্যে মানুষ পাচারের এক ভয়ংকর চক্র। এ চক্রের হাত ধরেই আজ মধ্যপ্রাচ্যে, ভারতে, নেপালে, পাকিস্তানে, বাংলাদেশে যৌনকর্মে পর্নোছবিতে ক্যাবারেক্লাবে কখনো বাংলাদেশের কোনো পাড়াগাঁয়ের মেয়ের দেখা পাওয়া যায় দুবাইয়ের অভিজাত হোটেলে, কেরালা বোম্বের কোনো মেয়েকে দেখা যায় নেপালের ক্যাসিনোতে, মধ্যপ্রাচ্যের কোনো মেয়ের দেখা মেলে করাচির পাঁচতারা মেসেজ পার্লারে, ভারতের শ্রমিক অধ্যুষিত কোনো বাজারের ‘মান্ডি’-তে কত জাত-উপজাতের কত দেশ কত অঞ্চলের মেয়ে যে পাওয়া যায় তার সঠিক হিসেব আজ আর কারো কাছেই নেই মনে হয়। মানুষের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থানের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অবযৌনতার আকর্ষণীয় বাজার হাতে রাখতে যৌনশিল্পের অপ্রতিরোধ্য পুঁজির মালিকেরা আজ আর কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না। কিভাবে আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলব? যেমন অপসংস্কৃতি অবসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে রেহাই পেতে হলে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চার কথা বলা হয়, এক্ষেত্রেও কি আমরা শুধু সুস্থ যৌনতার কথা বলব? সুস্থ সংস্কৃতির কথা বলে বলে আমরা কি পেরেছি অপসংস্কৃতি অবসংস্কৃতির আগ্রাসনের হাত থেকে বাঁচতে? তাহলে অপযৌনতা অবযৌনতার হাত থেকেই বা আমরা কিভাবে সুস্থ যৌনতার কথা বলে বাঁচব? মনে হয় দুক্ষেত্রেই এই কাঁচাপয়সার ভয়ংকর বলয়ের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে ব্যর্থ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রশাসনই এর জন্য দায়ী। জানি না এ দুষ্টচক্র থেকে ভাগ্যাহত অগণিত মানুষ, বিশেষত নারী ও শিশুরা কখনো রেহাই পাবে কিনা।
* সংস্কৃতিরও আছে উপ- অপ- অব- স্তর।
উপসংস্কৃতি : পপ, র্যাপ , রক-অ্যান্ড-রোল, টেকনো, ওয়ার্ল্ড মিউজিক ও ওয়ার্ল্ড ড্যান্স নামে যা-ইচ্ছা-তা গাওয়ার ও নাচার নাইটক্লাব ও কারাওকে সংর্স্কতি।
অপসংস্কৃতি : ধর্মের নামে নারী-পুরুষের তথাকথিত ধর্মগুরু ভজনার নামে নাচ গান ধর্মসভার বিবিধ আচার-অনুষ্ঠান। যেমন লোকনাথবাবা এবং বিভিন্ন পীরের ভজনা।
অবসংস্কৃতি : স্থূল গানবাজনা, স্থূল বইপত্র, স্থূল সিনেমা, মাদকাসক্তি।
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
এধরনের শ্রেণিবিভাগের ভিত্তি কি? সমর্থন কোন সমাজতাত্ত্বিকের বা ভাষাবিদের? নাকি আপনার একান্ত ব্যক্তিগত মত?
লেখাটি খুব ভালো। এটি সত্যিই ভেবে দেখার বিষয়। আপনাকে সাধুবাদ জানাই গুরুতর এ বিষয়ে লিখে, ভাবনাটিকে উস্কে দেয়ার জন্য। তাহলে অপযৌনতা অবযৌনতার হাত থেকেই বা আমরা কিভাবে সুস্থ যৌনতার কথা বলে বাঁচব? মনে হয় দুক্ষেত্রেই এই কাঁচাপয়সার ভয়ংকর বলয়ের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে ব্যর্থ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রশাসনই এর জন্য দায়ী। জানি না এ দুষ্টচক্র থেকে ভাগ্যাহত অগণিত মানুষ, বিশেষত নারী ও শিশুরা কখনো রেহাই পাবে কিনা। ঠিক। পুঁজির রাহুগ্রাস থেকে বুঝি অসহায় মানুষের কোনো মুক্তি নেই। আর বিজ্ঞাপনেও যৌনতার কী রমরমা ব্যবসা! কয়েক বছর আগেও ‘ভার্জিন’ নামে একটি কোমল পানীয় বাংলাদেশের বাজারে এক চেটিয়া চলেছে; পত্রিকার প্রথম পাতায় স্কুল… বাকিটুকু পড়ুন »
জানি না এ দুষ্টচক্র থেকে ভাগ্যাহত অগণিত মানুষ, বিশেষত নারী ও শিশুরা কখনো রেহাই পাবে কিনা।
এই লাইনটি ছুঁয়ে গেলো।
ভালো লাগলো লেখাটি।
মাসুদ ভাই!!! প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এধরনের একটি বিষয় নিয়ে বিশ্লেষনধর্মী লেখা লেখার জন্যে…আপনি, আমি এবং আমরা সবাই একটি বিষয়ের সাথে আশা করি পুরোপুরি একমত যে নিষিদ্ধ কোনকিছুর প্রতি আমাদের পৃথিবীর সব মানুষের একধরনের সহজাত আগ্রহ কাজ করে…সেখানে যৌনতা, মাদকদ্রব্য নিয়ে তো পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে মানুষের সীমাহীন আগ্রহ কাজ করে আসছে…আর এটার পুরো ফায়দা নিচ্ছে তথাকথিত বেনিয়ার জাত…আমার মনে হয় এই বিষয়গুলো এতো সহজে পৃথিবী থেকে দূর হবেনা…
জানি না এ দুষ্টচক্র থেকে ভাগ্যাহত অগণিত মানুষ, বিশেষত নারী ও শিশুরা কখনো রেহাই পাবে কিনা।
—আপনার এই শেষ লাইনটি আসলেই একেবারে হৃদয় ছুঁয়ে গেছে…
Li Yinhe 李银河 Often described as ‘China’s first sexologist’, Li Yinhe 李银河 is a sociologist who is widely admired as a pioneer of Gender Studies in mainland China. She is also a public intellectual well known for defending the rights of women, gays, lesbians and transgendered people. As an undergraduate, Li Yinhe studied history at Shanxi University from 1974 to 1977. After a brief stint as an editor at Guangming Daily, she was assigned to a research position in the newly-founded Institute of Marxism-Leninism-Mao Zedong Thought at the Chinese Academy of Social Sciences (CASS), where she pursued research on marriage… বাকিটুকু পড়ুন »
Sexual performance: Theatre works tackle internet porn How is the wide availability of internet pornography changing society? Several new stage works in the UK and US are exploring this question – and the results are thought-provoking, writes Holly Williams. For theatre to be relevant, it can’t ignore technological developments and their impact on our lives. Yet staging technology is famously hard to do well – people staring at computer screens is theatrically inert, but go too hard on the techno-wizardry and you risk no longer feeling theatrical at all. The problem, you might imagine, would only be compounded when dealing… বাকিটুকু পড়ুন »
অখিলকাম অখিলকামী