বামন হয়ে হরতালে হাত

তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ, বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি সোমবার ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছে। কেন এই হরতাল, এবং ইদের পুজোর লম্বা ছুটির আগে যে সপ্তাহটি শেষ পূর্ণ কর্মসপ্তাহ তার দ্বিতীয়দিনের অর্ধেক হরতালের মতো বহুপরীক্ষিত স্বতঃস্ফূর্ততাহীন কর্মসূচী দিতে জাতীয় কমিটিকে কারা প্ররোচিত করেছে? আমরা প্ররোচনাকারীদের মধ্যে যাদের নাম দেখতে পাচ্ছি তারা হল: বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, গণসংহতি আন্দোলনসহ কয়েকটি বামন রাজনৈতিক সংগঠন। কী এদের জনভিত্তি যে জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনকে হরতালের মতো একটি নষ্ট কর্মসূচী দিয়ে জনগণের কাছে হাসির পাত্র হচ্ছেন? অবশ্য উল্লেখিত প্রত্যেকটি বামন রাজনৈতিক দলের শিষ্যনেতৃত্ব এমনই হাস্যকর তাদের কাছ থেকে এরচেয়ে বেশি কিছু আশা করাই ভুল হবে। আমাদের আশা সরকারের দিকে হরতালের মতো একটা জনক্ষতিকর ব্যয়বহুল পঁচাডিম ছোঁড়ার এই সিদ্ধান্ত থেকে আপনারা সরে আসুন, অন্তত এই বামন সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদলের কাছে আহ্বান: আপনাদের হাস্যকর শীর্ষনেতৃত্বকে একটু সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে চাপপ্রয়োগ করুন, আন্দোলনে থাকুন কিন্তু হরতাল পরিহার করুন। আর রাজনীতি করতে হলে মানুষের মনোভাবটা বুঝতে হয় সবার আগে, আপনাদের আগে আপনাদের দৃষ্টিতে বুর্জোয়া জুটি চোরডাকাত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যেরকম সর্দিকাশির মতো হরতাল করে গণআন্দোলনের এই মানবিক অস্ত্রটিকে পুরোপুরি ধারহীন করে গেছেন—তারাও ইদের আগের সপ্তাহে এরকম হরতাল ডাকতেন না, আর আপনারা মানুষের মনোভাবের পুরো বিপরীতে যে হরতাল ডাকলেন—এতে আপনাদের বিপ্লবী রাজনীতি আরো একবার প্রমাণ করল, যে কথা শুনলে ঘোড়াও হাসবে সেধরনের কথার প্রতি আপনাদের রক্তের প্রবল টানে হয়তো কোনোদিনই ভাটা পড়বে না।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

১৮ comments

  1. মনজুরাউল - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (২:০৫ পূর্বাহ্ণ)

    হরতাল ইতিমধ্যেই আংশিক সফল। বাকিটা আজ সফল হোক। অন্তত স্টাবলিশমেন্টের দালালেরা দেখুক কত কম শক্তি নিয়েও ঝঁপিয়ে পড়া যায়।

  2. nizam udin - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৭:০৬ অপরাহ্ণ)

    masud vai,nomosskaar.
    apni jebhabe baam rajnoitik dolguloke BAMON tokhmaa diye berachchen tatey ruchi o chintaar chhap prokash pachche ki ? kauke liliput kore nijey hoyto galiver hotey paren.hortal j bhota osstrow,se apni kibhabe janlen.ami jani apni jatiyo sompod rokhkhar pokhkhey,tahole teel gas bondor biddyut rokkha jatiyo committee’r bokktobbyer sathe apner dimot korar kotha na.torrko’ta holo andolon’er koushol niye.likhun,aro kibhabe,koun pothey hatle porey,ai sob chokkrantow thekano jabe.ai bhaasa bebohar korun tader biruddhe jara apnar amar sokoler sarrther hani ghotachche,nijeder kacherr manusher jonno na.emnitai awami league khomotay ese jono-o-jatio sarrthow birodhi korrmokando suru korle,ai desher odhikangshow buddhijibi kichuta bibbroto o oshosstitey poren.tader dikei apnar dharalow joban taak korun,taghole ai desher manush o porobortee projonmo upokkritow hoben.

    ami jotodin baam rajniti’r saathey achi,prayee sunechee rabindranath’er GORA chorittyer kotha.uponnash er ek jaigay gora’r maa bolche,jokhon chaarpaas ondhokaar thakey,tokhon tumi kisher vorrsay path cholbe?gora uttor’e bolechilow,oi j onek durer dip shikh’ti timtim korey jolche,taar upor vorrsa korbo.karon se bole dichchey chaarpas ondhokaar.

    • রায়হান রশিদ - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৮:২৭ অপরাহ্ণ)

      @ নিজামউদ্দিন
      কম্পিউটারে বাংলা লেখা কিন্তু অতোটা কষ্টের না, যতোটা আপনি মনে করছেন। একটু চেষ্টা করে দেখবেন? সাহায্য লাগলে নির্দ্বিধায় বলুন। আমি নিশ্চিত আরও অনেকে এই ব্লগে আছেন যাঁরা আপনাকে সহায়তা করতে খুশী মনে এগিয়ে আসবেন। তবে শুরুটা কিন্তু আপনাকেই করতে হবে।

    • সৈকত আচার্য - ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (২:২৮ পূর্বাহ্ণ)

      @ নিজামউদ্দিনঃ
      হরতালের যৌক্তিকতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলবেন, এটাই স্বাভাবিক। বিভিন্ন রকমের পরষ্পর বিরোধী চিন্তা সমাজে আছে, থাকবে। ফলে, তার প্রতিফলনও ব্লগে থাকবে। প্রত্যেকেই তার নিজের চিন্তার পক্ষে তীক্ষ্ণ যুক্তি তুলে ধরুন, এটাই তো আশা।

      মাসুদ করিমের হরতাল ভালো লাগছে না। যদিও তার মতের স্বপক্ষে যুক্তিগুলো তিনি গুছিয়ে বলেননি এবং কিছুটা একপেশে ধরনের আলোচনা হয়েছে এটি। যারা এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে চান তাদের মধ্যেও হরতালের পক্ষে বিপক্ষে একটা অবস্থান আছে। অনেকে মনে করেন, আরো জনমত সংঘটিত করে, নিজেরা আরো কিছুটা সংঘটিত হয়ে এ ধরনের একটা কর্মসূচি দিলে আরো ভালো ফল পাওয়া যেত। এই ব্লগেই “অবিশ্রুত” তার একটা পোষ্টে এই বিষয়ে সুন্দর একটা আলোচনা দাঁড় করিয়েছিলেন।

      কথা হলো, মাসুদ করিমের লেখা আপনার পছন্দ হয়নি। তা হতেই পারে। কিন্ত কোন প্রেক্ষাপটে এই হরতাল দিতে হলো, কি কি রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছিলো, আরো কোনো বিকল্প ছিল কিনা, থাকলে কোন বিবেচনা থেকে সেই বিকল্পের পথে যাওয়া হলো না, এনিয়ে আপনি ধারাবাহিক একটা আলোচনা দাঁড় করালে উপকৃত হতাম। সেই পথে না গিয়ে আপনি মাসুদ করিমকেই বলছেন, “likhun,aro kibhabe,koun pothey hatle porey,ai sob chokkrantow thekano jabe”. কেন? তাকেই কেন বলছেন, এই পথের সন্ধান দিতে? আপনি নিজে কেন লিখেন না? আপনার নিজের মতটা/যুক্তিগুলো কেন আমাদের জানান না? বামপন্থী দলের একজন নেতা/কর্মী হিসেবে সেই দায়িত্ব আপনার অন্যদের চাইতে কিছু কম নয়, বরং বেশি।

      মাসুদ করিমের মতো করে ভাবেন এ রকম হাজারো মানুষ আপনি চারপাশে পাবেন। তাদেরকে কিভাবে আপনার মতের পক্ষে আনবেন, সেটাই তো আপনার প্রায়োরিটি হওয়া ঊচিত, তাই না?

      এই ব্লগও তো হাজারো পাঠক পড়েন, দেশে বিদেশে। তাদেরকে আপনার সুচিন্তিত মতামত জানানোর জন্যও তো আপনি লিখতে পারেন। তা না করে “গালিভার” বলে তাকে কিছুটা বিদ্রুপ করেছেন বলে মনে হলো। শুধু আবেগতাড়িত মন্তব্য দিয়ে দায়িত্ব এড়ানো যায় না।

  3. nizam udin - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৭:১২ অপরাহ্ণ)

    tel gas bondor biddyut rokkha committee’k ami sei dip shikha mone kori.

  4. রায়হান রশিদ - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৮:১৭ অপরাহ্ণ)

    @ মাসুদ ভাই,
    তেল গ্যাস রক্ষার আন্দোলনে হরতালই এখন সময়ের দাবী নাকি আরও মাঠ পর্যায়ে কর্মকান্ড শেষ করে এসে এই পথে জাতীয় কমিটির পা বাড়ানো উচিত ছিল, তা নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত থাকতেই পারে। সে সব ভিন্ন মতের কিংবা সমালোচনার স্বাস্থ্যকর চর্চাটার দরকার রয়েছে। সেটা যে কোন প্লাটফর্মের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু পুরো আন্দোলনের ব্যাপারে ঢালাও বক্রোক্তিটা মনে হয় না ঠিক হল। তেল-গ্যাস-বিদ্যুত-কয়লা-বন্দর ইস্যুতে আমাদের তো সবেধন নীলমনি এই একটাই জাতীয় প্লাটফর্ম, কলেবর তার যেমনই হোক! ঠিক করুক ভুল করুক কিছু একটা করার চেষ্টাটা তো একমাত্র এদের মধ্যেই আছে। তাই না মাসুদ ভাই? প্রতিরোধের আর কোন শক্তি তো রাজপথে চোখে পড়ছে না।

    কেন যেন মনে হচ্ছে কোন কারণে আপনি খুবই বিরক্ত, তাই হয়তো এভাবে বলে ফেলেছেন। আর কিছু কিছু বাম দলের (সবাই না কিন্তু) অকর্মণ্যতা আর গতবাঁধা বুলিসর্বস্ব কর্মকান্ডে কেউ যদি বিরক্তিবোধ করেন, সেটা তাঁর অধিকার। কিন্তু তেল-গ্যাসের আন্দোলনকে ঢালাওভাবে বাম লেবেল এঁটে দিয়ে আক্রমণ কি যুক্তিযুক্ত? অনেকগুলো বাম দল এই প্লাটফর্মে রয়েছে, সেটা ঠিক। কিন্তু তেল-গ্যাসের এই আন্দোলনটা বামদের কেন, কারোরই একচ্ছত্র আন্দোলন বলে মানতে রাজি নই। যদি ভুল না বুঝে থাকি – এটা মূলত একধরণের জাতীয়বাদী চেতনার আন্দোলন। আর এতে সামিল তারাই যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবহারে সুবিচার আর স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী; সে সম্পদ যাতে দেশের মানুষের কল্যাণে লাগে তা নিশ্চিতকল্পে বদ্ধপরিকর।

    সারা বিশ্বব্যাপী, মূলতঃ তেল গ্যাসে সমৃদ্ধ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে প্রায় একই সময়ে (৬০ এবং ৭০ এর দশক জুড়ে) এই ধারার আন্দোলন-চেতনার জন্ম এবং বিকাশ। রাষ্ট্রসমূহের “Permanent Sovereignty over Natural Resources” এর ধারণা ৬০ আর ৭০ দশকের সেই সময়টাতে এতটাই নৈতিক সমর্থন আদায়ে সমর্থ হয়েছিল‍‍ যে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান আর মোর্চা একে (প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর সার্বভৌমত্ব) মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। আরেকটু বিস্তারিত জানতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত এই রেজোল্যুশনটা পড়ে নেয়া যেতে পারে এই লিন্ক থেকে। সেখান থেকে মূল অংশটি উদ্ধৃত করছি নিচে:

    1. The right of peoples and nations to permanent sovereignty over their natural wealth and resources must be exercised in the interest of their national development and of the well-being of the people of the State concerned.

    2. The exploration, development and disposition of such resources, as well as the import of the foreign capital required for these purposes, should be in conformity with the rules and conditions which the peoples and nations freely consider to be necessary or desirable with regard to the authorization, restriction or prohibition of such activities.

    3. In cases where authorization is granted, the capital imported and the earnings on that capital shall be governed by the terms thereof, by the national legislation in force, and by international law. The profits derived must be shared in the proportions freely agreed upon, in each case, between the investors and the recipient State, due care being taken to ensure that there is no impairment, for any reason, of that State’s sovereignty over its natural wealth and resources.

    4. Nationalization, expropriation or requisitioning shall be based on grounds or reasons of public utility, security or the national interest which are recognized as overriding purely individual or private interests, both domestic and foreign. In such cases the owner shall be paid appropriate compensation, in accordance with the rules in force in the State taking such measures in the exercise of its sovereignty and in accordance with international law. In any case where the question of compensation gives rise to a controversy, the national jurisdiction of the State taking such measures shall be exhausted. However, upon agreement by sovereign States and other parties concerned, settlement of the dispute should be made through arbitration or international adjudication.

    5. The free and beneficial exercise of the sovereignty of peoples and nations over their natural resources must be furthered by the mutual respect of States based on their sovereign equality.

    6. International co-operation for the economic development of developing countries, whether in the form of public or private capital investments, exchange of goods and services, technical assistance, or exchange of scientific information, shall be such as to further their independent national development and shall be based upon respect for their sovereignty over their natural wealth and resources.

    7. Violation of the rights of peoples and nations to sovereignty over their natural wealth and resources is contrary to the spirit and principles of the Charter of the United Nations and hinders the development of international co-operation and the maintenance of peace.

    8. Foreign investment agreements freely entered into by or between sovereign States shall be observed in good faith; States and international organizations shall strictly and conscientiously respect the sovereignty of peoples and nations over their natural wealth and resources in accordance with the Charter and the principles set forth in the present resolution.

    আর সবার মতো সকাল বিকাল সুযোগ পেলেই আমিও ‘জাতিসংঘ’ নামের এই প্রতিষ্ঠানটাকে গাল দেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এদের হাত দিয়েও মাঝে মাঝে ভাল কিছু দলিল বেরোয়!!

  5. nizam udin - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ)

    ekti lekharr somorrthon’e arekti lekha,odhbhut taina masud bhai!!
    shibram beche thakle bolten,

    bhar-bhar buli jar
    tar naam galiver…

  6. আহমেদ মুনির - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১০:১৫ পূর্বাহ্ণ)

    ‘বামন হয়ে হরতালে হাত’? বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘উত্তরা’ চলচ্চিত্রের কথা মনে পড়ে গেল। উত্তরা নামের সহজ-সরল একটি গ্রাম্য মেয়ের কাহিনি ‘উত্তরা’। দুই ভাইয়ের সংসারে উত্তরাকে নিয়ে ঝগড়া। সারাক্ষণই কুস্তি লড়ে তারা। এর মধ্যে যাকে তার মানুষ মনে হয়, সেই গির্জার ফাদারকেও অসহায়ভাবে খুন হতে দেখে সে। বেঁচে থাকার আশা-আকাঙ্ক্ষা কার কাছে জানাবে উত্তরা? দুই ভাই তো লড়ছে সারাক্ষণ। ঠিক এমন সময় এক বামন বিয়ের প্রস্তাব দেয় তাকে। সংলাপগুলো ঠিক হুবহু মনে নেই, তবে মুল কথাটা মনে আছে অনেকটা এই রকম : ‘যাবে উত্তরা আমাদের সঙ্গে? আমার মা বামন, বাবা বামন, আমাদের সবাই বামন। দেখবে একদিন বামনরাই সব পাল্টে দেবে। লম্বা মানুষরা তো অনেক কিছুই করল, কই তারা তো পৃথিবীটা বদলাতে পারল না!’ মাসুদ করিমকে ধন্যবাদ, কথা ক’টি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। আসলে বামন হয়েই তো ওরা হরতালে হাত দিয়েছে। যারা দেশের কথা ভাবে, দেশের গ্যাস-সম্পদকে লুটের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পুলিশের লাঠির দিকে পিঠ পেতে দেয়, তারা তো বামনই!

    এদেশে বামনদের সংখ্যাই তো শতকরা নব্বইভাগ। অথচ প্রত্যেকেই নিজের উচ্চতা নিয়ে লজ্জিত — পাছে সকলে জেনে যায়, এই ভয়ে তারা অন্যের কাছে নকল এক উচ্চতা তুলে ধরে। আমি প্রতিদিন যে-রিকশায় কিংবা ট্যাক্সিতে করে অফিসে আসি, বাড়ি যাই, তার চালক ও যাত্রীর আসনে বসা দু’জনই বামন; অথচ আমি তাকে প্রতিমুহূর্তেই বোঝাতে চাই আমি বামন নই, বামন ব্যাটা তুই। তোর সামর্থ্যের হাত কখনওই মাটির খুব বেশি উপরে উঠবে না! অথচ সেই আমিই আবার বামনে পরিণত হই যখন অফিসে আসি। অন্যের নির্দেশ পালনের যন্ত্রণাটাকে উপভোগ্য করে তোলার চেষ্টা করি।

    আজকাল আমি নিজের উচ্চতা নিয়ে লজ্জিত নই, যদিও শরীরে আমি প্রায় ছ’ফুট লম্বা, তবু আমার প্রকৃত উচ্চতা অনেক কম। বস্তুত আমি একটা তেলাপোকার চেয়ে বেশি লম্বা নই। আমার কোনো উচ্চাশা নেই। কিন্তু স্বপ্ন আছে। দাবি-দাওয়া আছে। মাঝে-মাঝে মনে হয়, এসব কিছু থাকাটা আমাদের জন্য স্পর্ধা! অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। আমি বামনদের হরতালের সমর্থক। এদেশের সব বামনরা এক হয়ে দেখাক বামনরাও বদলে দিতে পারে। আসলে যে যা-ই বলুক, পৃথিবীটা আমাদের বামনদেরই!

    • রায়হান রশিদ - ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৭:৩৫ অপরাহ্ণ)

      ধন্যবাদ মুনির। এমন মন্তব্য প্রতিদিন পড়ার সুযোগ হবে সেজন্যই মুক্তাঙ্গনের জন্ম হয়েছিল। প্রতিদিন না হলেও পুরো ছ’মাস-বছরে অন্তত একটা মন্তব্যামৃত পাওয়া যাচ্ছে তোর কাছ থেকে, এই দুঃসময়ে তাও বা কম কি!
      সেইসাথে অভিনন্দন বাংলা টাইপিং পুরোপুরি আয়ত্ব করে ফেলার জন্য। মুখে মুখে ভাষাপ্রেমী-সংস্কৃতিপ্রেমী-দেশপ্রেমী লেখকদের অভাব তো কোন কালেই তেমন ছিল না, কিন্তু তাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যকেরই কম্পিউটারে বাংলা টাইপ শিখে নেয়ার ফুরসত বা সদিচ্ছা হয়। হায় একুশ, হায় বাংলা ভাষা! কিন্তু জেনে খুশী হলাম তুই তাদের থেকে আলাদা। আমাদের সৌভাগ্য।

  7. মাহতাব - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৩:৩৭ অপরাহ্ণ)

    আমার পিতা একজন অতি সাধারণ মানুষ, সারাজীবন অফিস বাসা আত্মীয়-স্বজন — এই নিয়ে দিনযাপন করছেন। গতকাল সকালে তিনি ঘুম থেকে জেগেই বললেন টিভিতে খবর ধরার জন্য। আমি বললাম, এত সকালে কী খবর দেখবেন? তিনি বললেন, তেল-গ্যাসের হরতালের কী খবর একটু দেখি। তৎক্ষণাৎ মনে হল, তেল-গ্যাসের হরতাল এবং তার আন্দোলনকারীরা সফল এবং তারা সঠিক পথেই আছে।

  8. মাসুদ করিম - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৬:২৯ অপরাহ্ণ)

    ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ এর হরতালের পক্ষে সবচেয়ে বিকট বিশুদ্ধ যৌক্তিক প্রেক্ষাপটটি উপস্থাপন করেছেন শীতনিদ্রার মেধাবী নেতা মুজাহিদ ইসলাম সেলিম। তার ভাষ্য মতে, আওয়ামী লীগ বিএনপির হরতালের কোটা শেষ হয়ে গেছে। এর মানে তাহলে, তাদের হরতালের কোটা শুরু হয়েছে। কী জানি এ কোটা নির্ধারনের মহান কাজটি কে করছেন? এবং তাদের জন্য নির্ধারিত কোটাই বা কত? তিনি আরো বলেছেন, তারা ক্ষমতায় যাওয়ার কামড়াকামড়ির হরতাল করছেন না। হ্যাঁ, তাতো আমরা সবাই জানি, কিন্তু হরতালের ক্ষতির কামড় যে সবার গায়েই লাগে তা হয়তো তিনি এখন জানেন না।তবে তিনি এও বলতে পারতেন তাদের হরতাল লোকে অতো মানে না, মানবে না, তাই তাদের হরতাল হবে মানববান্ধব। যেমন অসুস্থতার মধ্যে সর্দি কাশি—আহা, বেঁচে থাকুক সর্দি কাশি!

  9. ফিরোজ আহমেদ - ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:৩০ অপরাহ্ণ)

    ঠিকই আছে।

    “মুসলিম বাম” শীর্ষক অভিসন্দর্ভ লেখকে উপযুক্ত রাজনৈতিক বিশ্লেষণই বটে।

    অভিনন্দন।

  10. মোরশেদ উদ্দিন - ২৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ)

    @মুনির ভাই
    আপনার লেখাটা মনে ধরেছে। ভাল।

    @মাসুদ ভাই
    যাহাদের বামন বলিয়া গালিগালাজ করলেন তাহাদের দলে আপনি নিজেকে রাখেন নাই সেটা দৃশ্যত। এক অর্থে কমিটির পক্ষে আপনার অবস্থান নিয়েও আমার একটু সন্দেহ হইল। সন্দেহ না করে পারিনা। কারণ কমিটির মধ্যে লেফট অরগানাইজেশন ছাড়াও যারা আসছে এখন পর্যন্ত তারা বাম ঘরানারই। এবং একসময় সাধারণ মানুষই এর মধ্যে আসবে (ফুলবাড়ীর ঘটনাটি মনে করা যেতে পারে)। বস্তুত বলা যায় আপনার ঘোষিত বামনরাই গনমানুষের প্রতিনিধি।
    বামন না হইয়াই কী যে করল আপনাদের লম্বা লম্বা হাত-পা’ওয়ালা দানবেরা! কী করলেন হতভাগা সম্পদগুলার লাইগা, একটু যদি দয়া কইরা বাৎলাইতেন, অনেক উপকৃত হইতাম। তাইলে আপনার লেখার জোরটাও আরো বাড়ে এবং আমরাও গালি খাইয়া আরেকটু ভাল পীড়িত হইতাম। আমি বুঝিনা আপনার অভিযোগ, আপনার লেখায় উদাহরণস্বরূপ উল্লিখিত দলগুলার মাথায় যারা বসে আছে তাদের চেয়ে আনু কিংবা শহিদুল্লাহ’র মাথার ঘিলু কি কম নাকি! তারা সরাসরি রাজনীতি করেনা বলে কি রাজনীতি বুঝেনা! তারা কেন এই সিদ্ধান্ত নেয় অই গর্ধভ(!) বামনদের সাথে এক হয়ে! কী কইতে চাইলেন? আনু স্যারদেরও অসুখ হয় আজকাল, উনিও হাঁচি মারেন, কাশি মারেন!
    কী লাভ ওই বামনদের! তারা এই হরতাল দিয়ে কি ক্ষমতায় চলে যাবে!! আপনি বলতে পারেননি এই হরতালের ক্ষতির প্রকৃ্ত বর্ণনা। কেবল গতানুগতিক হরতাল সংস্কৃতির পুরাতন ধারণা নিয়ে এর বিপক্ষে সাফাই গেয়েছেন সেটা প্রতীয়মান।
    এই সমালোচিত হরতালের সমালোচনার কিছু যুক্তিযুক্ততা আছে, এবং এটাও ঠিক এই হরতালের উদ্দেশ্য ছিল যে এই সমালোচনার জায়গাটাই তৈরি হোক। নাহলে মানুষ এতো দ্রুত এতো কিছু জানত কিভাবে? জানাইত কে এই দেশে? আপনারা? বলুনতো?
    অথচ এই পন্থা অবলম্বন করায় কিছু মানুষ আছে যারা এইসব ঝুটঝামেলার নামই শুনতে চায়নি বা চায়না। যারা রাত দিন খেটেখুটে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে গালমন্দ খেয়েও মানুষকে জাতীয় সম্পদের কথা শুনাইল তারা এখন আপনাদের চোখে পীড়িত! স্পেসিফিকভাবে আপনাকে বলছিনা। কারণ আপনি কী করেন আমি জানিনা। সাধারণত ঐ অফিস ফেরত মেদ-ভুঁড়িওয়ালা বুদ্ধি-পরজীবী্রাই এই হরতালের বিরোধিতা করেছে।
    আপনার এই জাতীয় লেখা নিবেদিত প্রানের মানুষদের জন্য অপমানসুচক। আমার ধারনা…এই বামনদের ভালটা স্বীকার না করাটা একধরনের পেটের অসুখ, এই কারণে এই জাতীয় ‘পাদ’ বের হয়, মাগার পেটের অসুখ ভালও হয়না কেন সেটাও বুঝিনা।…সত্য এইভাবে শুনতে কি ভাল লাগবে, দাদা? পুরাতন হরতাল সংস্কৃতির কারণে এই হরতালের কিছু সমালোচনা অগ্রাহ্য ছিল না, সেটাকি বামেরা স্বীকার করে না? কিন্তু আনুপাতিক হারে ফলপ্রসূর জায়গার পাল্লাটা যেই দিকে ভারি তা কৌশলী হলেও কেন বিবেচনায় আনা হবেনা? (আমার লেখা একপেশে হয়ে গেছে। আপনার ভাল লাগার কারণ নাই। কিন্তু এ বিষয়ে অবিশ্রুত’এর লেখায় নিরপেক্ষতা নিয়ে চমৎকার আলোচনা হয়েছে যেখানে আপনি অংশগ্রহণ করতে পারতেন!)

  11. মাসুদ করিম - ১৩ অক্টোবর ২০০৯ (৭:২২ অপরাহ্ণ)

    তেল-গ্যাস-বন্দর রক্ষা কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে ২/১ সপ্তাহ আগে আমি প্রথম দেখলাম, তাও টিভিতে, কথা বলছিলেন, কিন্তু কী যুদ্বংদেহী মনোভাব, অনেক দিন ঠিক এরকম লোক দেখিনি। তারপর কী ভাষা – এক পর্যায়ে বললেন, আমার সম্পদ তুই তুলবি তুই এনে দিবি, বুঝতে পারলাম তিনি বিদেশী তেল কোম্পানিগুলোকে তুই সর্বনামে ভূষিত করছেন। এরকমটি ঠিক অনেক দিন দেখিনি।
    আজ চট্টগ্রামের পত্রিকা ‘আজাদী’তে দেখলাম গতকাল সোমবার তেল-গ্যাস-বন্দর রক্ষা কমিটির ‘চট্টগ্রাম বিভাগীয় কনভেনশন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম কমিটির আহবায়ক হিসেবে দেখলাম আবুল মোমেনের নাম। দুই বড় শহরের দুই আহবায়ককেই খুব পছন্দ হল – কথার ঢঙ্গে ঢাকার বা জাতীয় জনকে তো ‘অসম সাহসী সৈনিক’ই মনে হয় – আর চট্টগ্রামের জন কবি সাংবাদিক আবুল মোমেন তো এ অঞ্চলের ‘বুদ্ধিজীবিদের বুদ্ধিজীবি’। ভয়ে আছি, এই আন্দোলনে সাহস আর বুদ্ধির মেলবন্ধনে শেষ পর্যন্ত কী উঠে আসবে কে জানে? আর আজাদীর খবর পড়ে তো ঠিক খবরটা ঠিক মতো পাওয়া যায় না, তাই ‘প্রথম আলো’টা নিয়ে নিজের সাধ্যমত খবরটি পুরো পত্রিকা খুঁজে কোথাও পেলাম না। চট্টগ্রামের ‘প্রথম আলো’র আবাসিক সম্পাদক একটা সভায় ছিলেন, কিন্তু খবরটি ‘প্রথম আলো’তে এলো না! ঠিক বুঝতে পারলাম না।

  12. মাসুদ করিম - ২৭ অক্টোবর ২০০৯ (৩:২৬ অপরাহ্ণ)

    তেল-গ্যাস রক্ষা আন্দোলনকে এরমধ্যেই বদরুদ্দীন উমর ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি আন্দোলন’ তকমা দিয়ে ফেলেছেন। বহুজাতিক কোম্পানির বিরুদ্ধে শুধু নয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিরই বিরুদ্ধে ও জনগণকে সচেতন করা শুধু নয় সরকারেরই বিরুদ্ধে — ‘উমরকথিত’ এই পথে বামদলগুলো কি আদতেই তাদের আন্দোলনকে আগাতে পারবে? উমর সংশয় প্রকাশ করছেন! আর আমরা?

    তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির অবস্থান থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, এরা আন্দোলন করছেন, এদের আন্দোলনের ফলে জনগণের মধ্যে এ বিষয়ে একটা সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু এই সচেতনতাকে রাজনৈতিক লক্ষ্যবস্তু থেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা এদের আছে। ফলে দেখা যাচ্ছে যে, এই কমিটি একদিকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কথা বললেও সাম্রাজ্যবাদকে, বিশেষত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে আড়াল করে তাকে লক্ষ্যবস্তু না করে এবং অন্যদিকে সরকারকেও লক্ষ্যবস্তু না করে প্রকৃতপক্ষে নিজেদের আন্দোলনের কোনো লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছে। যে কোনো আন্দোলনের ক্ষেত্রে এ অবস্থা শুধু বড় ধরনের দুর্বলতাই নয়, রীতিমতো সংকটজনক।
    তেল-গ্যাস ক্ষেত্র ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে দুর্নীতির কোনো সম্পর্ক নেই, এটা যদি কেউ মনে করেন তাহলে বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে তার কোনো পরিচয় আছে একথা বলা যাবে না। আসলে বাংলাদেশে ছোটখাটো সামান্য ব্যাপার থেকে নিয়ে বড় বড় কারবার যেখানেই হচ্ছে, সেগুলোর সঙ্গে দুর্নীতির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। বাংলাদেশে যে কোনো সরকারের নেতা-নেত্রীরাই নিজেদের সাধুতার জন্য ঢেঁড়ি পিটিয়ে দেশে দুর্নীতি দমনের জন্য লম্বা-চওড়া কথা বলুন তারা সবাই দুর্নীতিবাজ। ‘দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক, তাদের রেহাই নেই’ এই গালভরা কথা বলা সত্ত্বেও দুর্নীতিবাজদের রক্ষাকবচ বর্তমান শাসনব্যবস্থার মধ্যেই আছে। এবং এই শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান সরকার কর্তৃকই সবসময় পরিচালিত হয়ে থাকে। এখনও তাই হচ্ছে। কাজেই সমুদ্রে তেল-গ্যাস ক্ষেত্র ইজারা দেওয়ার মতো এক বিশাল কারবার যে দুর্নীতিমুক্ত, এটি মনে করা হয় মূর্খতা, নয় তো শঠতা।
    তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি এ বিষয়টির প্রতি এমনভাবে উদাসীন, যা বাহ্যত বর্তমান পরিস্থিতিতে রীতিমতো বিস্ময়কর। কিন্তু আমরা পূর্ব আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি দেখলে এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কমিটির আন্দোলনে সরকার যদি লক্ষ্যবস্তু না হয় এবং সরকারি লোকদের দ্বারা ঘেরাও হয়ে যদি কমিটি তার বক্তব্য নির্ধারণ করে তাহলে সরকারের দুর্নীতির কথা তাতে ঠাঁই পাওয়ার কথা নয়। কাজেই সমুদ্রে তেল-গ্যাস ক্ষেত্র ইজারা সাম্রাজ্যবাদী কোম্পানিগুলোকে কেন দেওয়া হচ্ছে, এ বিষয়ে কমিটির কোনো বক্তব্য নেই। কিন্তু এ কাজ যে করা হচ্ছে একদিকে সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে গাঁটছাড়া বাঁধা থাকার কারণে এবং অন্যদিকে সরকারি নেতা-নেত্রীদের চরম দুর্নীতির কারণে, এ বিষয়টি সামনে না আনলে এই আন্দোলনের মেরুদণ্ড বলে কিছুই থাকে না। এটা শেষ পর্যন্ত আন্দোলন আন্দোলন খেলায় পরিণত হওয়া ছাড়া এর আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই। এ ধরনের আন্দোলন তাই সাম্রাজ্যবাদ ও বিদ্যমান সরকারের সুবিধাবাদী অবস্থান রক্ষার ক্ষেত্রে অনুকূল শর্তই পূর্ণ করে থাকে। তেল-গ্যাস, কয়লা-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির বর্তমান আন্দোলন এ পথ ধরেই অগ্রসর হচ্ছে।

    আজকের সমকালে বদরুদ্দীন উমরের কলামটি পড়ুন। ২৭ অক্টোবর ২০০৯ বদরুদ্দীন উমর-এর আর্কাইভে। না, পুরো লেখাটাই এখানে তুলে দিতে হচ্ছে, সমকালের পুরো লিন্কটা দেখছি আসছে না।

    ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ আন্দোলন
    জাতীয় সম্পদ
    বদরুদ্দীন উমর
    বাংলাদেশের স্থলভাগে ২৩টি ব্লক চিহ্নিত করে প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট (পিএসসি) নামক চুক্তির মাধ্যমে কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কাছে এই ব্লকগুলো ইজারা দিতে শুরু করার সময় ১৯৯৮ সালে এই সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ‘জাতীয় স্বার্থে তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি’ গঠিত হয়। তখন থেকে কয়েকটি রাজনৈতিক দলসহ এই কমিটি, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা এবং অংশগ্রহণের মাধ্যমেই গঠিত হয়েছিল, ধারাবাহিকভাবে চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যদিয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
    তেল-গ্যাস রক্ষার এই আন্দোলন পরে কয়লা, বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয়ে দাঁড়ায় তেল, গ্যাস, কয়লা, বিদ্যুৎ, বন্দর রক্ষা আন্দোলন। এর থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায়, বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন করা গেলেও দেশের এসব সমস্যা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যাপার নয়। এগুলো সবই দেশের অখণ্ড কাঠামোগত অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত। শাসকশ্রেণীর চরিত্রের কারণেই যে কোনো দেশে একেক ধরনের ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের উদ্ভব ঘটে।
    কাজেই ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন একেকটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে জন্মলাভ, গঠিত এবং অগ্রসর হতে থাকলেও এবং ক্ষেত্রবিশেষে এগুলোর অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক দিক গুরুত্বপূর্ণ হলেও, যেহেতু এগুলো সবই শেষ বিশ্লেষণে শাসকশ্রেণী ও তাদের শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়, সে কারণে এদের কোনোটিকেই রাজনীতি ও রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা ঠিক নয়। উপরন্তু এগুলোর রাজনৈতিক চরিত্রের বিষয়ে স্পষ্ট উপলব্ধি না থাকলে এবং এগুলোকে রাজনৈতিক বিবেচনাবহির্ভূত রাখলে কোনো ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনেরই পরিপূর্ণ সাফল্য আসতে পারে না। যা হতে পারে তা হলো, সীমাবদ্ধ সাফল্য এবং সীমাবদ্ধ সাফল্য হলো পরিপূর্ণ সাফল্য অর্জনে ব্যর্থতা এবং শেষ পর্যন্ত লাভের থেকে ক্ষতির পাল্লা ভারি করার ব্যাপার। তেল-গ্যাস আন্দোলন যেভাবে পরিচালিত হয়ে এসেছে এবং এখন হচ্ছে তার মধ্যে এই সংকটের প্রতিফলন ভালোভাবেই আছে।
    এখন বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের চিহ্নিত তেল-গ্যাস ক্ষেত্রগুলো একাধিক বহুজাতিক কোম্পানিকে সরকার কর্তৃক ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটি আন্দোলন করছে। যেহেতু সরকার এবং সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর মধ্যে চুক্তি হচ্ছে, সে কারণে এ আন্দোলন এ দুইয়ের বিরুদ্ধেই পরিচালিত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে এই কমিটির বেশ বড় ধরনের দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে। প্রথমত এরা বহুজাতিক কোম্পানির বিরুদ্ধে কথা বলছেন, আন্দোলন করছেন, যেমন তারা করেছিলেন এশিয়া এনার্জির বিরুদ্ধে, কিন্তু এই কোম্পানিগুলো যে নিছক নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, এগুলো যে সাম্রাজ্যবাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং সাম্রাজ্যবাদের রাষ্ট্রীয় শক্তি এবং আধিপত্যের ওপর নির্ভর করেই যে এরা অন্য দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করছে এর কোনো স্বীকৃতি তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির আন্দোলনের মধ্যে নেই। এরা সাম্রাজ্যবাদের কথা বলেন না, যদিও কেউ কেউ তাদের বক্তৃতায় কদাচিৎ সাম্রাজ্যবাদ শব্দটি ব্যবহার করেন। এদের আন্দোলন বহুজাতিক কোম্পানির বিরুদ্ধে! এই কোম্পানিগুলো সাম্রাজ্যবাদীদেরই কোম্পানি, তা সত্ত্বেও তেল-গ্যাস কমিটি কেন এগুলোকে সাম্রাজ্যবাদী কোম্পানি হিসেবে আখ্যায়িত না করে, এদেশে তাদের আন্দোলন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে না দেখে, তার সঙ্গে যুক্ত না করে আন্দোলন করছেন_ এটা তারাই জানেন। কিন্তু আমরা জানি যে, এভাবে আন্দোলন পরিচালনা করার কারণে আন্দোলনের অবস্থা অন্তর্নিহিতভাবে দুর্বল থাকছে এবং এভাবে চললে গড্ডলিকা প্রবাহের মতো আন্দোলন গড়িয়ে চললেও এর দ্বারা বিশেষ সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়।
    এই আন্দোলনের দ্বিতীয় দুর্বলতা হচ্ছে সরকার বিরোধিতার ক্ষেত্রে এদের ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’র মতো অবস্থা। এরা সাম্রাজ্যবাদের ক্ষেত্রে যেমন, সরকারের ক্ষেত্রেও তেমনি আসল লক্ষ্যবস্তুকে পাশ কাটিয়ে আন্দোলনের পক্ষপাতী। এ কারণে যে সরকার সাম্রাজ্যবাদী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে সরাসরি এদের কোনো বক্তব্য নেই। এর জন্য সরকারকে দায়ী করে তেল-গ্যাস রক্ষার আন্দোলনকে সামগ্রিকভাবে শাসকশ্রেণী ও সরকারের বিভিন্ন গণবিরোধী এবং শোষণ ও নির্যাতনমূলক নীতির বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তভাবে দেখার কোনো লাইন বা প্রচেষ্টাও এদের নেই। এদিক দিয়ে দেখলে মনে হয়, দেশের তেল-গ্যাস রক্ষার আন্দোলন করলেও সরকারের ‘অনুগত বিরোধিতার’ মাধ্যমেই এরা নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টায় নিযুক্ত!
    এসব যে সুবিধাবাদিতার লক্ষণ এতে সন্দেহ নেই। এ কারণে রাজনীতির বিষয়ে এরা বিশেষ উৎসাহী না হলেও চরম রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেই এরা আন্দোলন করছেন। কাজেই এদের নেতৃত্বের মধ্যে সরকারি লোকরা বেশ শক্ত অবস্থানেই আছেন। এদিক দিয়ে আবার বলা চলে, সরকারকে আন্দোলনের লক্ষ্যবস্তু না করে এবং সরকারি লোকদের নেতৃত্বে সমাসীন রেখে এই কমিটি যেভাবে আন্দোলন করছে তার মধ্যে রাজনীতি আছে। এবং এ রাজনীতি কোনো প্রশংসাযোগ্য ব্যাপার নয়। এই রাজনীতি নিয়ে দেশের সম্পদ সাম্রাজ্যবাদী লুটতরাজের হাত থেকে রক্ষা করা যায় না, সে কাজ করার আওয়াজ তোলা যায় মাত্র।
    তেল-গ্যাস কমিটির এই অবস্থায় বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ এ কমিটি আসলে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের লোকদের দ্বারাই গঠিত। এই দলগুলো দেশের অন্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা এবং জনগণের সংকটাপন্ন জীবনের দিকে না তাকিয়ে, সেগুলো নিয়ে কোনো আন্দোলনের ধারে-কাছে না গিয়ে এখন তেল-গ্যাস রক্ষা আন্দোলনের মধ্যে নিজেদের কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রেখেছে। এ কারণে এদের সুবিধাবাদী রাজনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে তেল-গ্যাস রক্ষার আন্দোলন স্বাভাবিকভাবেই জড়িত হয়েছে। এবং এভাবে জড়িত হয়ে এই কমিটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হওয়ার পরিবর্তে এক বিশেষ রাজনৈতিক খাতে প্রবাহিত হচ্ছে যার লক্ষ্য হলো, তেল-গ্যাস-কয়লা-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষার জন্য আওয়াজ তোলা এবং এমনভাবে এ আওয়াজ তোলা, যাতে সরকার সরাসরিভাবে এ আন্দোলনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত না হয়।
    তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির অবস্থান থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, এরা আন্দোলন করছেন, এদের আন্দোলনের ফলে জনগণের মধ্যে এ বিষয়ে একটা সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু এই সচেতনতাকে রাজনৈতিক লক্ষ্যবস্তু থেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা এদের আছে। ফলে দেখা যাচ্ছে যে, এই কমিটি একদিকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কথা বললেও সাম্রাজ্যবাদকে, বিশেষত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে আড়াল করে তাকে লক্ষ্যবস্তু না করে এবং অন্যদিকে সরকারকেও লক্ষ্যবস্তু না করে প্রকৃতপক্ষে নিজেদের আন্দোলনের কোনো লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছে। যে কোনো আন্দোলনের ক্ষেত্রে এ অবস্থা শুধু বড় ধরনের দুর্বলতাই নয়, রীতিমতো সংকটজনক।
    তেল-গ্যাস ক্ষেত্র ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে দুর্নীতির কোনো সম্পর্ক নেই, এটা যদি কেউ মনে করেন তাহলে বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে তার কোনো পরিচয় আছে একথা বলা যাবে না। আসলে বাংলাদেশে ছোটখাটো সামান্য ব্যাপার থেকে নিয়ে বড় বড় কারবার যেখানেই হচ্ছে, সেগুলোর সঙ্গে দুর্নীতির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। বাংলাদেশে যে কোনো সরকারের নেতা-নেত্রীরাই নিজেদের সাধুতার জন্য ঢেঁড়ি পিটিয়ে দেশে দুর্নীতি দমনের জন্য লম্বা-চওড়া কথা বলুন তারা সবাই দুর্নীতিবাজ। ‘দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক, তাদের রেহাই নেই’ এই গালভরা কথা বলা সত্ত্বেও দুর্নীতিবাজদের রক্ষাকবচ বর্তমান শাসনব্যবস্থার মধ্যেই আছে। এবং এই শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান সরকার কর্তৃকই সবসময় পরিচালিত হয়ে থাকে। এখনও তাই হচ্ছে। কাজেই সমুদ্রে তেল-গ্যাস ক্ষেত্র ইজারা দেওয়ার মতো এক বিশাল কারবার যে দুর্নীতিমুক্ত, এটি মনে করা হয় মূর্খতা, নয় তো শঠতা।
    তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি এ বিষয়টির প্রতি এমনভাবে উদাসীন, যা বাহ্যত বর্তমান পরিস্থিতিতে রীতিমতো বিস্ময়কর। কিন্তু আমরা পূর্ব আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি দেখলে এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কমিটির আন্দোলনে সরকার যদি লক্ষ্যবস্তু না হয় এবং সরকারি লোকদের দ্বারা ঘেরাও হয়ে যদি কমিটি তার বক্তব্য নির্ধারণ করে তাহলে সরকারের দুর্নীতির কথা তাতে ঠাঁই পাওয়ার কথা নয়। কাজেই সমুদ্রে তেল-গ্যাস ক্ষেত্র ইজারা সাম্রাজ্যবাদী কোম্পানিগুলোকে কেন দেওয়া হচ্ছে, এ বিষয়ে কমিটির কোনো বক্তব্য নেই। কিন্তু এ কাজ যে করা হচ্ছে একদিকে সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে গাঁটছাড়া বাঁধা থাকার কারণে এবং অন্যদিকে সরকারি নেতা-নেত্রীদের চরম দুর্নীতির কারণে, এ বিষয়টি সামনে না আনলে এই আন্দোলনের মেরুদণ্ড বলে কিছুই থাকে না। এটা শেষ পর্যন্ত আন্দোলন আন্দোলন খেলায় পরিণত হওয়া ছাড়া এর আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই। এ ধরনের আন্দোলন তাই সাম্রাজ্যবাদ ও বিদ্যমান সরকারের সুবিধাবাদী অবস্থান রক্ষার ক্ষেত্রে অনুকূল শর্তই পূর্ণ করে থাকে। তেল-গ্যাস, কয়লা-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির বর্তমান আন্দোলন এ পথ ধরেই অগ্রসর হচ্ছে।
    এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের তেল-গ্যাস ইত্যাদি রক্ষার আন্দোলন সাফল্যের দিকে পরিচালনার জন্য এর লক্ষ্যবস্তু সঠিকভাবে নির্ধারণ করেই আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে। কার্যকর আন্দোলনের ক্ষেত্রে এর কোনো বিকল্প নেই।
    ২৬.১০.২০০৯

  13. মাসুদ করিম - ১৪ জানুয়ারি ২০১৩ (২:১০ পূর্বাহ্ণ)

    বেতালহরতালরোগারোগ্য
    =========

    বাস্তবরাজনীতির বাস্তবসমরনীতির ধারায় – ভাল তালেবান খারাপ তালেবানের মতো, ভাল মুসলমান খারাপ মুসলমানের মতো, ভাল হিন্দু খারাপ হিন্দুর মতো, এখন ভাল হরতাল খারাপ হরতালও শোনা যাচ্ছে, বলা হচ্ছে। কিন্তু হরতাল, হরতালই – বংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে হরতাল সম্পূর্ণ অকার্যকর একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি। হরতালের কারো কারো বরাদ্ধ শেষ হয়ে গেছে, কারো কারো বরাদ্ধ মাত্র শুরু হয়েছে – এগুলো রাজনৈতিক প্রলাপ ছাড়া কিছুই নয়। অসহযোগ, ধর্মঘট, ঘেরাও, মানববন্ধন, জেলভরো, মিছিল, গণসংযোগ এসব রাজনৈতিক কর্মসূচি রেখে রাজনৈতিকভাবে হরতালকে অনুৎসাহিত করা হোক, আইন করে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা যাবে না, কিন্তু হরতাল পালন না করার অধিকার নাগরিককে দেয়া হোক, হরতাল সফল করতে সহিংস পিকেটিং, গাড়ি-সম্পদ জ্বালানো পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হোক।

    সাপ্তাহিক ছুটির আগে পরে হরতাল ডাকা হচ্ছে আরেকটি মহাবিড়ম্বনা, এটা নিয়ে তো আর আইন করা যাবে না, সব বালখিল্যতা নিয়ে আইন করতে গেলে তো আইনের মাহাত্ম্যই আর থাকে না। কিন্তু রাজনৈতিক দলের এসব বালখিল্যতা পরিহার করতে হবে। যেমন এবার ১৬ জানুয়ারি ২০১৩ সিপিবি-বাসদের হরতাল ডাকা হয়েছে বুধবার, যাক অন্তত বৃহষ্পতিবার ডাকা হয়নি, এটা অন্তত একটা উল্লেখযোগ্য শুভবুদ্ধি।

  14. মাসুদ করিম - ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ (১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ)

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.