হুইস্কি
কোন গ্লাসে পরিবেশিত হচ্ছে হুইস্কি সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্লাসের চেহারা যদি হয় টিউলিপ ফুলের মতো, অথবা বৃন্তযুক্ত সুগোল পাত্রে ঢেলে দেওয়া যায় এই পরম রমনীয় পানীয়টিকে, তবে কোনো কথাই নেই। তাকিয়ে দেখুন এর সৌন্দর্য, ধীরে ধীরে আঙুলের মৃদু আন্দোলনে পানীয়টিকে নাড়ান গ্লাসের মধ্যে। মদের সুবাস ঘন হয়ে উঠুক পাত্রের মধ্যাংশে। সামান্য জল মিশিয়ে নিন, আঘ্রাণ করুন পানীয়টি। এবার হাল্কা চুমুক দিন। মুখের মধ্যে ধরে রাখুন গৃহীত পানীয়টুকু। অনুভব করুন জিহ্বায় চারিয়ে সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম স্বাদ, পাত্রের ঘ্রাণের মতো নিজের ভেতরেও ঘ্রাণের আমেজ টের পাবেন।
রাম
বহু রূপে পাওয়া যায় এ মদ। ‘লাইট’ বা ‘হোয়াইট’ রামে পাবেন মৃদু মিষ্টত্ব, কিন্তু স্বাদে গন্ধে এমন কিছু অনবদ্য নয় এ বস্তু—মূলত, ককটেলে এর ব্যবহার। ‘গোল্ড’ রামে পাবেন এক প্রাচীন সুবাস। অনেক বছর কাঠের পিপেতে রেখে তারপর বোতলে ঢোকানো হয় এই রাম। এর সোনালী রঙের কারণ ওই কাঠের পিপে। গোল্ড রামের চেয়েও এক পরত বেশি গাঢ় রঙের ডার্ক রাম তৈরি হয়ে ওঠে পুড়ে ঝামা হওয়া পিপেতে। স্বাদে গন্ধে অত্যন্ত কড়া—আঘ্রাণ করলে মিলতে পারে ঝোলাগুড় অথবা ক্যারামেলের গন্ধ। রামের বিবিধ মিশ্রণে ডার্ক রাম ব্যবহৃত হয় রঙ আর গন্ধে মিশ্রণটিকে সবল করে তুলতে। টাইপ করছিলাম, নিজেকে সামলাতে পারলাম না, দূর্গাপুজোর নবমীর রাতে প্রচণ্ড উল্লসিত উন্মত্ততার পর বিছানায় এলিয়ে যাবার আগে যদি নিখাদ ‘গোল্ড রাম’ কয়েক ঢোক গলায় ঢেলে দিতে পারেন, আহ! কী মোহনীয় পাতালবাস হয় ভরদুপুর পর্যন্ত।(এটুকু অস্বাস্থ্য)।
ওয়াইন
দ্রাক্ষাফলের অমোঘ আহ্বান নিয়ে বিরাজমান বহুবর্ণের, বহু স্বাদের, বহুরূপী ওয়াইন। নিস্পিষ্ট আঙুরের রসে ‘ইস্ট’ মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয় ওয়াইন।
ওয়াইনের যথার্থ স্বাদগ্রহণ সাধনা ছাড়া সম্ভব নয়। বর্তুলাকার, বড়-পরিধির বৃন্তযুক্ত পাত্রে ঢেলে নিন আপনার পছন্দের ওয়াইন। দেখুন তার রঙ। নাসারন্ধ্রের খুব কাছে নিয়ে এসে গ্লাসের তরলটিকে সামান্য আন্দোলিত করুন গভীর শ্বাসে। মুখে নিন সামান্য ওয়াইন। গিলবেন না, জিভে-টাগরায় অনুভব করুন জটিল, দুরূহ সব স্বাদ-গন্ধের মায়াজাল বিস্তার। এবার গিলে নিন। সাধনায় হয়তো এমনও দিন আসতে পারে, যেদিন এক-চুমুকে বুঝে নেবেন কোন বছরের, কোন বাগানের দ্রাক্ষাজাত ওয়াইন রয়েছে আপনার গ্লাসে।
বিয়ার
স্টার্চ থেকে প্রস্তুত হয় বিয়ার। ‘মল্টেড বার্লি’ এ পানীয়ের সর্বপ্রধান উৎস। ‘হপ’ গাছের ফুল যোগ করা হয় বিয়ার প্রস্তুতকালে—তার ফলে আসে পানীয়টির তিক্ত স্বাদ। নানাজাতের, হরেক প্রকারের বিয়ার মেলে বাজারে। যেমন “এল”—শ্রেষ্ঠ ইস্টে জারানো এই বিয়ার। পাবেন “লাগার” বিয়ার — সাত থেকে বারো ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডে এ বিয়ারের প্রথম দফার প্রস্তুতি। তারপরেও শূন্য থেকে চার ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডে রাখা হয় এই বিয়ার প্রস্তুত করার সময়।
বিয়ার পান করতে গেলে সচেতন হতে হবে পানীয়ের তাপমাত্রা সম্বন্ধে। হাল্কা লাগার বিয়ার পান করুন আট ডিগ্রীর কম তাপমাত্রায়। ডার্ক লাগারের তাপমাত্রা যেন না ছড়ায় নয় ডিগ্রী। আবার একটু টাইপ থেকে বেরতে হল। বিয়ার খেতে পাই না কতদিন! এখানে পড়ুন : এই অসম্মান।
ভদকা
ভুট্টা থেকে তৈরি হয় ভদকা, হয় আলু থেকেও। ময়দা থেকে নির্মিত হয় এ পানীয়, আবার “রাই” নামক শস্যও ব্যবহৃত হয় এর নির্মাণে। এর ফলে এক ভদকার থেকে অন্যের তফাৎ প্রায় আলোকবর্ষী। যে রকম ভদকা কিনুন না কেন, গুণগত মানে তা যেন হয় প্রথম শ্রেণীর।
পানীয়টিকে সযত্নে রাখুন ফ্রিজে। ঠান্ডা অবস্থায় এ সুরার সূক্ষ্ম মিষ্টত্ব প্রকট হয়ে ওঠে। ঢালুন ঠান্ডা গ্লাসে, ছোট ছোট চুমুকে পান করুন এই পানীয়। মন-প্রাণ জুড়িয়ে যাবে।
জিন
জুনিপারের গন্ধ পাবেন জিনে। ডিস্টিলড জিন প্রস্তুত করা হয় “হোয়াইট গ্রেন স্পিরিট” থেকে, তারপর তাতে মেশে জুনিপার ফল।
জিনের ব্যবহার আছে বিভিন্ন মিশ্র পানীয়ে, ইংরেজিতে যাকে বলে mixed drink। জিন ব্যবহার করুন ককটেল বানাতে। এ পানীয়, যাকে বলে, বেশ “ড্রাই”। জিন পান করলে পিপাসার্ত বোধ করতে পারেন। যথেষ্ট “টনিক ওয়াটার” অথবা “ওয়াইন” মেশান জিনের ককটেলে। বিশুষ্ক জিনকে আর্দ্র করার এ এক পদ্ধতি।
**দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার বাংলা সাময়িকী “সময়” থেকে সংকলিত।
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৪২ comments
বিনয়ভূষণ ধর - ২৮ আগস্ট ২০০৯ (১১:১৩ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম! আমার ভাই বারো মাসই ভদ্কা প্রিয় লাগে। কিছুদিন আগে ‘বাতিঘর”-এ কিছু পকেট সাইজের বই দেখলাম। যেখানে Wine//Whiskey-র উপর লেখা ছিলো। সংগ্রহে না থাকলে নিয়ে নিতে পারেন কপিগুলো। প্রথম শ্রেণীর জিনিস কোথায় আর পাবো বলুন! আমাদের দর্শনা’র “কেরু এ্যান্ড কোং”-এর Vodka কিন্তু খারাপ নয় একেবারে।
Tokon Thaakoor - ২৯ আগস্ট ২০০৯ (১:২১ অপরাহ্ণ)
ami comred, Artist Rashid Aminer songe ekmot poshon korcchi, ji, banglar ghore ghore poucche deowa dorkar.
Tokon Thaakoor - ২৯ আগস্ট ২০০৯ (১:২৪ অপরাহ্ণ)
eta abar ki kotha je, nete montobbo kore wait korte hobe! train ki ekhaneo late kore asbe?
মুক্তাঙ্গন - ২৯ আগস্ট ২০০৯ (৩:২৭ অপরাহ্ণ)
@ টোকন ঠাকুর,
মন্তব্য কিন্তু সরাসরিই প্রকাশিত হয়ে থাকে এখন। আপনার কেন অপেক্ষা করতে হল বুঝতে পারছি না। মন্তব্য দেয়ার ঠিক পর পরই পাতাটি রিফ্রেশ/রিলোড করলেই সেটা দেখতে পাবার কথা। আপনি রিলোড করে দেখেছিলেন? এই বিষয়টা নিয়ে মন্তব্যকারীরা যেন বিভ্রান্ত না হন সেজন্য প্রতিটি মন্তব্য পেশের পর ধন্যবাদ জানিয়ে একটি স্বয়ংক্রিয় বার্তা দেখানো হয় (সবুজ বর্ডার এর ভেতর)। বার্তাটি এরকম:
বিনয়ভূষণ ধর - ৩০ আগস্ট ২০০৯ (৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ)
@টোকন ঠাকুর!
প্রণাম ঠাকুরদা! আমাদের ভুবনে আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি। আপনার লেখা বা মন্তব্য এখন থেকে এখানে নিয়মিত পাবো বলে আশা করছি।
মুয়িন পার্ভেজ - ২২ অক্টোবর ২০০৯ (১:৪৪ পূর্বাহ্ণ)
মদ্যবিষয়ক তৃষ্ণাজাগানিয়া এই গদ্য বেশ ভালো লাগল। সুরারসিকেরা নিশ্চয়ই এর মর্ম আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন। পড়তে পড়তে আমার মনে প’ড়ে গেল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি সংলাপময় প্রেমাতুর কবিতাংশ :
( ‘ভালোবাসা! ভালোবাসা!’, সানন্দা, বর্ষ ১১, সংখ্যা ১৭, ১১ এপ্রিল ১৯৯৭, কলকাতা, পৃ. ১০৫)
নেহরু-জ্যোতির পানীয় সংক্রান্ত কোনো ‘এলাহাবাদ প্রশস্তি’ পাইনি, তবে নীরদচন্দ্র চৌধুরীর (১৮৯৭-১৯৯৯) মদ্যপ্রীতি ও আতিথেয়তার কৌতুকপ্রদ বিশদ বিবরণ দিয়েছেন নবনীতা দেবসেন :
( ‘একাই একশো’, দেশ, বর্ষ ৬৫, সংখ্যা ১, ১ নভেম্বর ১৯৯৭, কলকাতা, পৃ. ৪০, ৪১)
নীরদচন্দ্র নিজেই তাঁর ‘মদ্যপানের সাফাই’ লিপিবদ্ধ করেছেন সবিস্তারে, ‘আমি কেন বিলাতে আছি’ নামের ‘কৈফিয়তমূলক’ রচনায় :
(দেশ, শারদীয় ১৩৯৯, কলকাতা, পৃ. ১৬৮)
নবনীতা নীরদচন্দ্রের ‘মহার্ঘ ওয়াইন’-এর সঙ্গে তাঁর মহার্ঘ স্মৃতিশক্তিরও প্রশংসা করেছেন দৃষ্টান্তসহ। আমরা মনে রাখতে পারি, নীরদচন্দ্র তাঁর শেষ বইটি (Three Horsemen of the New Apocalypse) লেখেন নিরানব্বই বছর বয়সে — একেই বোধহয় বলা যায় মনসিজ মজুমদারের ভাষায় ‘প্রতিস্পর্ধী বার্ধক্য’ (দেশ, বর্ষ ৬৫, সংখ্যা ১, ১ নভেম্বর ১৯৯৭, কলকাতা)! পরিমিত মাত্রায় মদ্যসেবন কি তাহলে স্মৃতিশক্তি বা সৃজনশীলতার পক্ষেই কাজ করে মৃতসঞ্জীবনীর মতো? অন্যদিকে, অপরিমিত পানীয়ব্যসনের মাত্রাও বা কেমন হতে পারে তার একটি নমুনা দেখা যাক। এক সাক্ষাৎকারে, ‘আপনি কি মদ্যপান করেন?’ — শরীফা বুলবুলের এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন হুমায়ুন আজাদ, ‘করি। মানুষ গত কয়েক হাজার বছরে যত রকম খাদ্য এবং পানীয় উদ্ভাবন করেছে তার মধ্যে মদ্য একটি অসাধারণ বস্তু।’ এরপর তিনি শোনান এক দীর্ঘ পান-অভিজ্ঞতার মনোহর গল্প :
(হুমায়ুন আজাদ : এই বাঙলার সক্রেটিস, জামাল উদ্দিন ও শরীফা বুলবুল সম্পাদিত, ফেব্রুয়ারি ২০০৪, বলাকা প্রকাশন, চট্টগ্রাম, পৃ. ১০৫, ১০৬)
পরিমিত-অপরিমিত যা-ই হোক, সুরসিক ব্যক্তিরা সুরাপানে সম্ভবত সে-পর্যায়ে যান না যাকে মাতলামি বলা যায়, কিন্তু সাধারণ অসচ্ছল মানুষেরা মদ্যপ হয়ে উঠলে তা কত ভয়ঙ্কর হতে পারে, তার সাক্ষ্য সাম্প্রতিক একটি খবর থেকে নেওয়া যাক :
(ভোরের কাগজ, বর্ষ ১৮, সংখ্যা ২৩৭, ১৬ অক্টোবর ২০০৯, ঢাকা, পৃ. ৮)
মাসুদ করিম - ২৪ ডিসেম্বর ২০০৯ (৫:৪৬ অপরাহ্ণ)
এক পাইন্ট বিয়ারে যে এত আনন্দ পাই, তা তো এমনি এমনি নয়, এতো সভ্যতার প্রথম আনন্দ, রুটির আগেই এসেছিল বিয়ার, কৃষির শুরু এলকোহলিক পানীয় তৈরির দানা সংগ্রহেরই উদ্দেশ্যে — মার্কিন প্রত্নতত্ত্ববিদ প্যাট্রিক ম্যাকগভার্নের গবেষণা নিয়ে লিখছেন Frank Thadeusz, Alcohol’s Neolithic Origins।
ইমতিয়ার - ২৪ ডিসেম্বর ২০০৯ (৬:২০ অপরাহ্ণ)
সীমাহীন আনন্দ পেলাম মাসুদ ভাই। যদিও আবুল হাসানের ওই কবিতার মতো বলতে হয়, ‘এখন পারি না। একসময় আমিও পারতাম/ আমারও প্রিয় ছিল…’। আমাদের পূর্বপুরুষগণ সত্যিই সমঝদার ছিলেন। এ যে কত বড় শিল্প, ক্রমশই আমরা বিস্মৃত হচ্ছি, দুঃখ এই।
তো হয়ে যাক না হয়, এই পুনরাবিষ্কার উপলক্ষে বড়দিনের আগেই…
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ২৫ ডিসেম্বর ২০০৯ (১০:৫১ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম,
গুরু আমার, আপনাকে শাদামাটা প্রণাম নয়, ষাষ্টাঙ্গে প্রণাক করণের স্বাদ হয় (আরে ধুর, গ্যাঞ্জাইম্যে-দুনিয়ায় বয়স নিয়া অত ভাবলে চলে?)। খোদার কসম, আপনি যে ২৭ অগাস্ট ২০০৯-এ নেশা জাগানিয়া কাজ-কর্ম শুরু করলেন, তা তো এখনও থামল না।
একবার আমার আপন বড়োভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, রাশিয়াতে ভদকা ভক্ষণের এত গল্প শোনা যায়, তা কি সত্যি? রাশিয়াতে পড়াশুনা করতে থাকা (তা ১৯৮১-৮২ সালের কথা) ভাইজান বললেন, আমাদের দেশে কাউকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি পানি পান করেন কিনা- তা যেমন হাস্যকর একটা কথা প্রশ্ন, তেমনি রাশিয়াতে ভদকাও পানি-ভাত আর-কী! তো, তখন থেকেই আমি বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম, পৃথিবীর স্বর্গ আসলে কাশ্মির নয়, রাশিয়া। সমাজতন্ত্রের সাথে ভদকার এমন সহমিলন- তাহলে রাশিয়া কেন ভূস্বর্গ নয় হাহাহা!
এখন মাসুদ করিমের পোস্টটি ঠোটস্থ, জিবস্থ, গলাস্থ, পেটস্থ, এমনকি মলস্থ করতে করতে মনে হচ্ছে, আহারে যদি বেহেশত থাকত, আর আমি যদি তার বাসিন্দা হতাম, তবে শ্রীমান সৃষ্টিকর্তাকে মাসুদ করিমের পোস্টটি ধরিয়ে দিয়ে বলতাম, গুরু. আমি আর কিচ্ছু চাই না। আমি যা চাই, তা এই লিস্টে বিস্তারিত লিপিব্দ্ধ আছে। দুনিয়ায় আপনার পেয়ারের মোল্লাদের যন্ত্রণায় অনেক কষ্টে নিজেরে কন্ট্রোল করছি। এইখানে তো আপনিই রাজা, আর হেথায় ত নিষেধ মালই ফরজ করা আছে – নাকি?
রেজাউল করিম সুমন - ৩০ ডিসেম্বর ২০০৯ (৮:৩৫ অপরাহ্ণ)
আমাদের এক সোমরসিক অগ্রজ একটি পানশালার নতুন নাম দিয়েছিলেন ‘দাগেস্তান’। কেন এই নামকরণ? ‘On Wine Horns’ শিরোনামের অনবদ্য কবিতিকা-গুচ্ছটি তো দাগেস্তানেরই এক কবির লেখা! কয়েকটি কবিতিকা পড়া যাক –
অঞ্জন সরকার জিমি - ৩ জানুয়ারি ২০১০ (৬:১৮ পূর্বাহ্ণ)
মদ্য নিয়ে অনবদ্য গদ্যটি সদ্য পড়ে শেষ করলাম। মাসুদ ভাই, অদ্য এই অভাজনের গ্রহণ করুন লাল সালাম।
মাসুদ করিম - ২০ সেপ্টেম্বর ২০১০ (১০:১৩ অপরাহ্ণ)
বিয়ারউৎসব, অক্টোবারফেস্ট ২০১০, ছবি দেখুন এখানে।
রায়হান রশিদ - ২০ সেপ্টেম্বর ২০১০ (১১:১৯ অপরাহ্ণ)
পোস্টটি আবার পড়তে পড়তে মন অস্থির হল। খোঁজাখুঁজি করে ঘরেই গোটা তিন বোতল বিয়ার আর দু’বোতল ভদকা লাইম পাওয়া গেল; কয়েক সপ্তাহ আগের এক আড্ডা থেকে বেঁচে গিয়েছিল। ভাগ্যিস! সৈকত আচার্যের রয়েছে ক্যানারি ওয়ার্রফ এর জলাধার, আর সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধুর সাথে একত্র হয়ে লন্ডনের নিভু নিভু হয়ে আসা রাতের তারার নিচে বসে পানের সৌভাগ্য। শত শত মাইল দূরের জনবিচ্ছিন্ন গ্রামের মেঠো প্রান্তরের পাশে আমরা সবাই তেমন সৌভাগ্যবান নই। কিন্তু ঘরে আপাতত বিয়ার এবং ভদকা-লাইম আছে, আছে গোটা দু’প্যাকেট সিগারেট। ধূ ধূ ফসলের মাঠের পাশের বারান্দায় গিয়ে বসছি এখনি। সন্ধ্যা নামছে। মনে পড়ছে রাঙামাটি আর বিজুর সময়কার মসলার সুগন্ধিমাখা দোচোয়ানীর কথা, আর ছড়িয়ে থাকা বন্ধুদের। দীর্ঘশ্বাস!
বিনয়ভূষণ ধর - ২১ সেপ্টেম্বর ২০১০ (৯:০৫ অপরাহ্ণ)
@রায়হান!!! আমাদের দেশের পার্বত্য এলাকায় নাকি বিন্নি ধানের চাল থেকে একধরনের সুস্বাদু বিয়ার তৈরী হয়। যার রং অবিকল বিয়ারের মতো। আমার এখনো পেটে পড়েনি এই জিনিস। তোমাদের কারও কি কপাল হয়েছে এই জিনিস পান করার???
মাসুদ করিম - ২২ সেপ্টেম্বর ২০১০ (১০:০০ পূর্বাহ্ণ)
এক প্রণালীতে খুব সরলভাবে তৈরি হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের মদ। স্মৃতি থেকে লিখছি, আমার সে চাকমা বন্ধু এখন অভিবাসী — যোগাযোগ নেই অনেকদিন, সেই বলে ছিল প্রথম চোয়ানির মদটাই আমরা যাকে বিয়ার বলছি তা, আমি পান করেছি আমাদের বাজারের বিয়ারের চেয়ে ভাল সেই বিয়ার, এর মজা আবার অন্য জায়গায় — এই বিয়ার বিশেষ অতিথি ছাড়া কাউকে ওরা খেতে দেয় না — বিশেষত বিজুতে কোনো স্বচ্ছল আদিবাসীর বন্ধু হিসেবে তাদের ঘরের অন্দরে যাওয়ার সুযোগ হলেই আপনি পাবেন এই মহার্ঘ একচোয়ানি — একচোয়ানির খরচ বেশি, এতে আঙ্গুর বা কমলা একসাথে তন্ডুলের (চালের জাগ) সাথে চোয়ানো হয়, খুব কম পরিবারেই আজ এই পানীয় তৈরি হয়। এক-দুই-তিন-চার: এই চারটি চোয়ানির সরল পদ্ধতিই পার্বত্য মদ তৈরির পদ্ধতি। বেশিরভাগ তন্ডুল দোচোয়ানির জন্য রেখে বাকিগুলো খুব অল্প পরিমাণে করা হয়, তিনচোয়ানি কখনো পরিবেশিত হয় না — চারচোয়ানিতে নিয়েই তবে পরিবেশিত হয় শুদ্ধতম এই মদ। শিল্পবিনিয়োগ ছাড়া পার্বত্য মদশিল্পের বিকাশ আর সম্ভব নয়, বোতলজাত করে বিক্রি করার মতো এই পানীয় অবহেলায় অবহেলায় এর মধ্যেই বিকট ভেজালের শিকার হয়ে পড়েছে।
বিনয়ভূষণ ধর - ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ (৫:০৩ অপরাহ্ণ)
@মাসুদ ভাই!!!
এক চোয়ানি যে বিয়ার তা আমি এই প্রথম জানলাম! আমার এখনই খুব লোভ হচ্ছে পান করে দেখার!!!…:)
আমার দৌড় এখন অবদি দো-চোয়ানী পর্যন্ত! তিন ও চার চোয়ানি’র কথা আপনার লেখা থেকে জানতে পারলাম। কখনো পান করা হয়নি। তবে সামনে আশা রাখছি পান করে দেখার।
তিন চোয়ানি কেনা কখনো পরিবেশিত হয় না ???
আপনার দেয়া তথ্যের জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি…
মাসুদ করিম - ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ (৮:৩৮ অপরাহ্ণ)
পার্বত্য চট্টগ্রামের মদ নিয়ে কি আর কিছু হবে। কিন্তু চীনের গুইজু প্রদেশের প্রায় একই ধরনের মদ তো বিশ্ব জয় করে ফেলল।
অস্মিতা - ২০ সেপ্টেম্বর ২০১০ (১১:৩৭ অপরাহ্ণ)
পশ্চিমে এসে এক জাতীয় ওয়াইন আমার হৃদয় হরণ করেছিল। মীড (Mead)। মধু থেকে তৈরী এবং সুমিষ্ট। মধ্যযুগে সদ্যবিবাহিতদের মধ্যে পানের রেওয়াজ ছিল, সুখী দাম্পত্য জীবনের সূচনা হবে – এই আশায়। তেমন সহজলভ্য নয়, সর্বত্র মেলে না। কদাচিত কোথাও পেয়ে গেলে দু’এক বোতল কিনে রাখার চেষ্টা করি। ভাবছিলাম, মধু খাওয়া যদি সুন্নত হয় (প্রাচীন মোল্লা প্রবাদ), মীডকে তারা কি বলবেন?
মাসুদ করিম - ২০ সেপ্টেম্বর ২০১০ (১১:৫১ অপরাহ্ণ)
@ অস্মিতা ভিয়েতনামেরটা খেলে আপনার অসাধারণ লাগবে, মধু থেকেই হয়…কিন্তু খুবই এলকোহলিক… অবশ্য বোতলে পাবেন না, কিনতে পাবেন না, গ্রামের দিকে যেখানে মধুর চাষ হয় সেখানে পাবেন @রায়হান রশিদ এই ভিয়েতনামের মধুআরক দোচোয়ানির মতোই কড়া আর নিরতিশয় বিশুদ্ধ…
ফতোয়া মধুপান সুন্নত হলে সুরাপান ফরজ।
রায়হান রশিদ - ২১ সেপ্টেম্বর ২০১০ (৭:৫৬ অপরাহ্ণ)
মাসুদ ভাই,
ভিয়েতনামের মধু-আরক এর কোন সুনির্দিষ্ট নাম আছে? ‘আরক’ এর প্রসঙ্গ যখন এলোই, তখন উল্লেখ না করে পারছি না। লেবানিজ এক রেস্তোরায় এই নামের একটি পানীয়ের সাথে পরিচয় ঘটেছিল। অসাধারণ এই তরলটির রং একটু ঘোলাটে সাদা রংয়ের, তৈরী হয় মৌরী (মিষ্টি জিরে) থেকে।
অস্মিতা,
মীড এর প্রস্তুতপ্রণালী দেয়া হল। নিজ দায়িত্বে প্রস্তুত এবং সেবন করার চ্যালেঞ্জ থাকলো। বেঁচে ফিরলে মুক্তাঙ্গনে আবার দেখা হবে।
(সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এই লিন্ক প্রদানকারীকে কোনো ধরণের অনভিপ্রেত ঘটনার জন্য দায়ী করা চলিবে না)
রায়হান রশিদ - ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ (৮:০০ অপরাহ্ণ)
আলোচনাটায় গালিব প্রসঙ্গ উত্থাপিত হওয়ার প্রতীক্ষায় …
@ মাসুদ ভাই #৯.১.১
এতো বিস্তারিত জানা ছিল না। অনেক ধন্যবাদ।
বিনয়ভূষণ ধর - ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ (৮:৩৭ অপরাহ্ণ)
@রায়হান!!!…
তুমি ঠিক ধরেছো। আলোচনাটায় মির্জা গালিব একেবারেই উপেক্ষিত হয়ে আছে এখন পর্যন্ত।
রেজাউল করিম সুমন - ১১ জুলাই ২০১১ (১২:১৫ পূর্বাহ্ণ)
গালিবের কথা অন্য কেউ বলবেন নিশ্চয়ই; আপাতত পড়া যাক ‘Ode To Wine’! কেবল একজনই লিখতে পারেন এই কবিতা — পাবলো নেরুদা!
মাসুদ করিম - ৯ জানুয়ারি ২০১২ (৩:২০ অপরাহ্ণ)
পান করুন এবং সেসাথে ভাবুন যকৃতটাকেও বাঁচাতে হবে — তাই বৃটিশ এমপিরা অনুরোধ করেছেন সবাইকে সপ্তাহে দুদিন ‘শুষ্ক’দিন পালন করতে।
বিস্তারিত পড়ুন : MPs call for two alcohol-free days each week and clearer guidelines on drinking।
সানাউল্লাহ - ৯ জানুয়ারি ২০১২ (৯:৫৯ অপরাহ্ণ)
আমার পক্ষপাত অবশ্য হুইস্কির প্রতি মাসুদ করিম।
এক. গ্লাসে বরফের তিন-চার টুকরো কিউব বিছিয়ে তার উপর হুইস্কি আস্তে ধীরে ঢেলে নিন। বরফের গা বেয়ে হুইস্কি নেমে নিজের জায়গা করে নেবে। তারপর সময় নিয়ে চুমুক দিন ‘হুইস্কি অন দ্য রকস’-এ।
দুই. গ্লাসে হুইস্কি ঢেলে তিন-চার টুকরো বরফ আর পরিমান মতো সোডা। এটাও মন্দ নয়।
তিন. আর সহজ সরল রেসিপি হচ্ছে: হুইস্কি সঙ্গে পরিমান মতো পানি ও বরফ।
তবে সুরা বিশেষত ককটেল নিয়ে দারুণ কিছু ব্লগ পড়তে পারেন ক্যাডেট কলেজ ব্লগে। নূপুর কান্তি দাশ কিছুদিন পরপর “ব্যক্তিগত রেসিপি” নামে (http://www.cadetcollegeblog.com/nupurkanti/33031) এই লেখাগুলো নামায়। আর আমরা তা ভালোই উপভোগ করি।
মাসুদ করিম - ৯ জানুয়ারি ২০১২ (১০:২৪ অপরাহ্ণ)
আপনি যা বললেন তার কিছুই আমি পরিবর্তন করতে চাই না — কিন্তু আমি প্রথম কথাটা অন্যভাবে বলতে চাই হুইস্কি আমার দুর্বলতা।
মাসুদ করিম - ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ (১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ)
উ! লা! লা! মাইক্রোস্কোপের নীচে এতই সুন্দর পানীয়সমূহ, বিশেষত এলকোহল! থ্রি চিয়ার্স মাইকেল ডেভিডসন, নিঃসন্দেহে অসাধারণ তোমার গবেষণা।
স্কচ হুইস্কি
হোয়াইট ওয়াইন
ভদকা
শ্যাম্পেন
হুইস্কি, ভদকা, শ্যাম্পেন কেমন দেখায় মাইক্রোস্কোপের নীচে, দেখুন পড়ুন, ছবিসহ বিস্তারিত : How Researcher Michael Davidson Discovered The Beauty Of Alcohol।
মাসুদ করিম - ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ (১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ)
না, গির্জার প্রার্থনার হল নয়, বিসিএসের মতো কোনো সাধারণ পরীক্ষার হলও নয় — পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লোক উৎসব অক্টোবারফেস্টের বিয়ার উৎসবের প্রস্তুতিপর্ব, তাঁবু প্রস্তুত তার ভেতরে সিট পাতা হয়েছে বিয়ারপ্রেমীরা দলে দলে এসে কাড়ি কাড়ি বিয়ার গিলবে তাই। বেঁচে থাক Oktoberfest আমি কখন আসব সেই অপেক্ষায়।
দেখুন ফটোগ্যালারি। পড়ুন : Ode to Oktoberfest।
মাসুদ করিম - ১০ অক্টোবর ২০১২ (১০:০৬ পূর্বাহ্ণ)
কড়ি কোমলে মধুর সঙ্গীত, সেভাবে আমরা এও জানি মাংসে মদ্যে (লাল/সাদা মদ) মানিকজোড়। কিন্তু সে তো আমরা শুধু জানতাম, মাংসে মদ্যে কেন মানিকজোড়, এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। আমাদের মুখে মাংসের পিচ্ছিল স্নেহস্বাদ এবং লাল/সাদা মদের কষাকণ্ডূয়ন কাম্য উপভোগ্যতার আনন্দ সৃষ্টি করে।
লিন্ক : Scientists discover why wine and meat pair so well।
মাসুদ করিম - ১৩ নভেম্বর ২০১২ (১০:২৬ পূর্বাহ্ণ)
তো মিষ্টি আমার খুব প্রিয় আবার হুইস্কি আমার দুর্বলতা, এদুয়ের মিলন গোপন রেখেছিলাম, যদি কেউ হাসে এই ভয়ে। কিন্তু ভয় দূর করে দিয়ে গেলেন বিক্রম শেঠ গত শনিবার বাতিঘরে। এখন বলা যায়, আমি কাঁচাগোল্লা আর সন্দেশকে বেছে নিয়েছিলাম মিষ্টি সহযোগে হুইস্কি পান করার জন্য — আমার নিভৃত পানে এটা আমার খুব প্রিয় : কাঁচাগোল্লা-হুইস্কি মোটামুটি কিন্তু সন্দেশ-হুইস্কি অমৃত। এবং বিক্রম শেঠ তাই বললেন, একমাত্র মিষ্টি যা হুইস্কি সহযোগে আস্বাদনযোগ্য তা হল সন্দেশ। অবশ্য ইদানিং আমি সন্দেশ-হুইস্কি অমৃত স্বাদ থেকে বঞ্চিত, খেদ বাড়িয়ে লাভ নেই, কারণ আমাদের অনেক অসাধারণ পণ্যের মতো এটিও এখন ভেজালবণিকদের জাঁকজমকের দখলে।
নবরস মুন্সি - ৩০ জুলাই ২০১৩ (১২:৫৭ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২৯ নভেম্বর ২০১৩ (১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ)
চমৎকার ইনফোগ্রাফিক্স, এক নজরে ‘ওয়াইন’কে জানার অসাধারণ আয়োজন।
মাসুদ করিম - ৫ ডিসেম্বর ২০১৩ (১০:১৬ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২৫ মার্চ ২০১৪ (১১:১৭ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২২ অক্টোবর ২০১৪ (৮:৩১ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১৬ আগস্ট ২০১৫ (৬:১৯ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৩০ অক্টোবর ২০১৫ (৭:০৯ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১২ নভেম্বর ২০১৫ (৯:২৯ পূর্বাহ্ণ)
একদিন তাহলে রেডওয়াইন হোয়াইটওয়াইন উৎপাদন আশা করতে পারি বাংলাদেশ থেকে!
মাসুদ করিম - ২ জানুয়ারি ২০১৬ (৫:১৪ অপরাহ্ণ)
আসিফ - ২৫ এপ্রিল ২০১৬ (৩:৫০ পূর্বাহ্ণ)
স্কচ হুইস্কির বোতল খুলে কয়েক পেগ পান শেষে ফ্রিজে রাখলে কি ঠিকঠাক থাকে? মাসখানেক ঠিক থাকে? নাকি থাকে না? আমি মাঝে মধ্যে দেখেছি, রেখে দিলে পরিমাণে খুব সামান্য কমে যায়!
মাসুদ করিম - ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ (৪:৩৩ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৫ জানুয়ারি ২০১৮ (৪:৩৩ অপরাহ্ণ)