প্রতিটি বিনিয়োগ শ্রম খোঁজে। শ্রমের কাছ থেকেই বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি খরচ বাঁচাতে চায়। তাই সস্তা শ্রমের এত কদর বাজারে। আবার বিনিয়োগ আক্রান্ত হলেও সবার আগে সে যাকে ছেঁটে ফেলতে চায় সেও শ্রম। বিনিয়োগ আর শ্রমে কেন এই বিরোধ? তাহলে আমরা এই তৃতীয় বিশ্বের মানুষ বাঁচব কী করে? বিশেষ করে এই আগুয়ান মহামন্দায়, আমাদেরকে কি শ্রমশোষনের নতুন ফাঁদে ফেলবে পৃথিবীর জি-৮,জি-২০… এরকরম আরো আরো ধনী-জি-রা? আমরা তো আমাদের দেশের বৃহৎ দর্জি শক্তিকেই বাগে আনতে পারছি না। বাইরের ওই আরো লোলুপ শক্তিকে কিভাবে মোকাবেলা করব? প্রতিদিন ৬টি হারে লাশ এসেছে ঢাকা বিমান বন্দরে, বলা হয়েছে গুরুতর অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়েছে, বিদেশে শ্রম দিতে যাওয়া আমাদের এই লোকগুলোর,কিন্তু আসলে কী হয়েছে আমরা আজো জানতে পারিনি। আমাদের শ্রমিকরা কি কোনোভাবেই প্রথাগত ট্রেড ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের শ্রমের বিকাশ ঘটাতে পারবে না? কেন আমাদের দেশের সমাজতান্ত্রিক দলগুলো কৃষক শ্রমিক আন্দোলনে নিজেদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে পারছে না? কেন আজো আওয়ামী লীগ বিএনপির হাতে পড়ে আছে শ্রমিকেরা? তার চেয়েও উদ্বেগজনক গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে জামায়াত শক্তিশালী অবস্থান নিয়েছে গত বেশ কয়েক বছর, বিশেষ করে ২০০৭-২০০৮ সামরিক সমর্থিত তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে প্রতিটি গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনে জামায়াতের শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়নের তৎপরতা ছিল খুবই আশঙ্কাজনক। গণতন্ত্র আপনাকে সবার অধিকার সংরক্ষণের কথা বলে কিন্তু গণতান্ত্রিক দলগুলোর হাতে শ্রমিক স্বার্থ নিরাপদ নয়, আর সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় দলগুলোর হাতে তো অবশ্যই নয়। আজ নিরুপায়ভাবে এই আশা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছি, যেহেতু শ্রমই কৃষি শিল্প ও সেবার একমাত্র নির্ণায়ক শক্তি, কাজেই এই শক্তির ভেতর থেকেই নতুন সমাজতান্ত্রিক শক্তির উন্মেষ অবশ্যই হবে, আমাদের বাংলাদেশে তেমন দিনের আবাহন জানাতেই প্রতিটি পহেলা মে অন্তরে এক শ্রমঘন দিনযাপন করি।
পহেলা মে ২০০৯
চট্টগ্রাম
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৫ comments
ডাবলু - ২ মে ২০০৯ (৬:০২ অপরাহ্ণ)
জনাব মাসুদ করিমের লেখাটি বেশ তেজোদ্দীপ্ত বটে! তবে তা কতটা শ্রমিক বান্ধব তা ভেবে দেখার অবকাশ আছে!
শ্রমিকের বাজারদর যে-কোন পণ্যর মত প্রতিযোগিতার মুখামুখী, সুতরাং আমাদেরটা সস্তা না হল বিনিয়োগ আসবে না !
Enough Bangla for today! What I want to say is, our labor should be both competitive and qualitatively better than others. Good and productive labour doesn’t come very cheap. So if our labour can attain both these attributes, they will be far from being exploited. No investor will exploit good labour and ruin their productivity. It doesn’t make sense.
So good training and good productivity should be the motto of our labour day celebration.
মাসুদ করিম - ৯ মে ২০০৯ (৩:৩৮ পূর্বাহ্ণ)
গতকাল ৮ মে ২০০৯ আরো ১২ শ্রমিক লাশ হয়ে ফিরল। সব মিলে এবছর ৮৮১ জন শ্রমিক লাশ হয়ে ফিরলেন। এরমধ্যে ৩২ জন নারী শ্রমিক। সবচেয়ে বেশি শ্রমিক লাশ হয়ে ফিরেছেন সৌদিআরব থেকে ২৫৪ জন, এরপর মালেশিয়া থেকে ১৫৭ জন, দুবাই থেকে ১০০জন, কুয়েত থেকে ৫৫জন, ওমান থেকে ৩৪জন, আবুধাবি থেকে ২৪জন, কাতার থেকে ২১জন, আমেরিকা থেকে ২৭জন, বাহরাইন থেকে ১৭জন, ইতালি থেকে ১৫জন, ইংল্যান্ড থেকে ১৬জন, সিঙ্গাপুর থেকে ১৬জন, লেবানন থেকে ৬জন, দক্ষিণআফ্রিকা থেকে ১১জন, গ্রিস থেকে ৫জন, পাকিস্তান থেকে ৬জন এবং অন্যান্য দেশ থেকে ৫২জন।
বিস্তারিত পড়ুন আজকের সমকালে।
মাসুদ করিম - ৯ মে ২০০৯ (৯:১৮ পূর্বাহ্ণ)
পড়ুন আজকের প্রথম আলো।
মাসুদ করিম - ১ মে ২০১৩ (১২:৫৭ অপরাহ্ণ)
যেদেশে শ্রমিকের অনেক অধিকার স্বীকৃত সেদেশে শ্রমিকেরা উল্লেখযোগ্যহারে বেকার, যেদেশে শ্রমিকের অধিকার চূড়ান্ত প্রশ্নবিদ্ধ সেদেশে শ্রমিকের হাতে প্রচুর কাজ খাঁটুনি ও বাজে মজুরি — এই দুই দুরাবস্থা থেকে উত্তরণের পথে পুঁজিবাদ, কমিউনিজম, মধ্যপন্থা ও কল্যাণবাদ তাদের সাফল্য-ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত গড্ডালিকায় কুক্ষিগত। শ্রমিকের অধিকার ও শ্রমের মূল্যের ক্ষেত্রে উদারতার সাংগঠনিক চর্চার পরিসর বাড়াতে হবে।
মাসুদ করিম - ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ (৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ)
থমাস পিকেটি-র সূত্র দেখাচ্ছে এই একবিংশ শতাব্দীতে বৈষম্য কুক্ষিগত হয়ে আছে