আজ ২৫ চৈত্র ১৪১৫, ০৮ এপ্রিল ২০০৯, রাত ৯-৪১ পূর্ণিমা লেগেছে। চৈতি পূর্ণিমা আমার ব্যক্তিগত বিশেষ রাত। বছরের শেষ পূর্ণিমায় আগামী বছরের উল্লেখযোগ্য কোনো আশঙ্কা বা আশা আমাকে ভাবিত করে। এবছর আশঙ্কা। ভাবছি এই প্রায় একঘণ্টা ধরে। ভাবছি এমন একটি ভাবনা পোস্টে দেব কি না, চন্দ্রাহত ভাবনা কি এটা, বুঝে উঠতে পারছি না। তবে মনে হচ্ছে এই আশঙ্কার কথা সবাইকে বলা যায়, ব্লগ তো এক অর্থে দিনপঞ্জি, তবে বলি : আওয়ামী লীগ ভাঙবে আগামী বছরে, হতে পারে আষাঢ়-শ্রাবণে (জুলাই-অগাস্ট ২০০৯) বা বাংলার রাজনৈতিক ঋতুতে অগ্রহায়ণ-পৌষে (নভেম্বর-ডিসেম্বর ২০০৯)। নতুন দলের চরিত্র হতে পারে মধ্যপন্থার, ডান নয় বামও নয়। আগের মতো বিছিন্ন দু-একজনের ভাঙন নয়—বড় সফল ভাঙন। শেক্সপিয়রের ‘চৈতালি রাতের স্বপ্ন’ আমার পড়া নেই, কিন্তু জানি এ নাটকের অভিকরণ (performance) লন্ডনে আমেরিকায় সফল মিউজিকাল, নাচে গানে ভরপুর দুর্দান্ত শো। চৈতি পূর্ণিমা এলেই আমার Midsummer Night’s Dream পড়তে ইচ্ছে করে, কিন্তু এতগুলো চৈতি পূর্ণিমা পার হয়ে গেল, কেন যেন আজো পড়া হলো না!
চৈতি পূর্ণিমা ১৪১৫
সমুদ্রবন্দরচট্টগ্রাম।
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৩ comments
সান্ত্বনা - ১০ এপ্রিল ২০০৯ (৬:০৯ পূর্বাহ্ণ)
চৈতালি রাতের স্বপ্ন কি উৎপল দত্তর অনুবাদ?
আপনার এই আশঙ্কার ভিত্তি কী — ব্যাখ্যা করে বলবেন?
মাসুদ করিম - ১০ এপ্রিল ২০০৯ (৫:৪৬ অপরাহ্ণ)
হ্যাঁ উৎপল দত্তের অনুবাদ।
ভিত্তি থেকে আশংকা জাগেনি। ব্যাপারটাকে এভাবে দেখতে পারেন, আমরা যেমন বলি, আমার মনে হচ্ছে… সেরকম কিছু। আর ২০০৬-২০০৮ এ দুবছর আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দিক থেকে আমার খুবই দুর্বল মনে হয়েছে, যদিও দলটি ২০০৬-এর অক্টোবরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিয়ে আন্দোলন করেছে, এবং ২০০৮-এর সংসদ নির্বাচনে অভূতপূর্ব ফলাফল অর্জন করেছে; তারপরও গত দুবছর রাজনৈতিক দল হিসেবে দলটিকে মোটেই আত্মস্থ মনে হয়নি। দলটিতে সর্বোচ্চ পদাধিকারীদের ছন্নছাড়া মনে হচ্ছে এবং নিজেদের মধ্যে দলীয় কোন্দল আশংকাজনকভাবে বেড়েছে। আমি যে শহরটিতে থাকি, চট্টগ্রামে, নির্বাচনের আগ থেকেই দলীয় কোন্দল এতোই জঘন্য পর্যায়ে গিয়েছিল, যার ফলশ্রুতি আমরা পেয়েছি লতিফের মতো এমপি; আর চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের মতিভ্রষ্ট সভাপতি মেয়র চৌধুরীর কথাতো বলার প্রয়োজন নেই, তার কার্যকলাপ তো এখন চট্টগ্রামের সবচেয়ে মুখরোচক সংবাদ। সারাদেশে এরকম আরো অনেক নেতা আওয়ামী লীগে আছেন যারা শুধুই সময় পার করছেন, তাদের অনেকেই এখন আর আওয়ামী লীগকে নিয়ে ভাবেন না, কিন্তু এধরনের নেতাদের নিয়ে যদি আওয়ামী লীগ কোনো সিদ্ধান্তে আসতে না পারে–তাহলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কর্মীই স্বাভাবিকভাবে বিক্ষুব্ধ হবেন, সেই বিক্ষোভ নতুন দল সৃষ্টির দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এই আমার আশংকা, শুধুই আশংকা। ভবিষ্যত ভবিষ্যতের মতোই হবে, আমরা তো এগিয়েই যাব।
অবিশ্রুত - ১০ এপ্রিল ২০০৯ (১১:০৪ অপরাহ্ণ)
তবে আপনার আশঙ্কাকে আমার মোটেও অমূলক মনে হয় না। পাকিস্তান যেমন ভেঙে যাবে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ভাঙনও অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে। সুশীলদের প্রকল্প তো এখনও শেষ হয়নি। অধ্যাপক মোজাফফর খুবই ব্যথিত খালেদা জিয়ার বাসভবনের বরাদ্দ বাতিল হওয়ায়। সালাহউদ্দিন কাদেররা সবার চোখের সামনে সামরিক বাহিনীকে ছবক দিচ্ছেন কী করতে হবে। এসব সামাল দেয়ার জন্যে যে আন্তরিক নেতা ও কর্মীবাহিনী দরকার, আওয়ামী লীগের এখন তা নেই।
আপনি লতিফের কথা বলেছেন, তাজুলই বা কম কিসের?
এই প্রতিমন্ত্রী তাজুলের কারণে যুদ্ধাপরাধী বিল পণ্ড হতে বসেছিল। আর এখন তিনি বলছেন রাজাকাররা খারাপ ছিল না, অনেক জায়গাতেই তাদের সাহায্য নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছে এবং তাজুল ইসলাম নিজে সেই সাহায্যপ্রাপ্ত এক সৌভাগ্যবান মুক্তিযোদ্ধা।
আর খালেদা জিয়ার বাসভবনের বরাদ্দ বাতিল যুক্তিসঙ্গত বুঝলাম, কিন্তু এ সময়ে এ বিষয়টি সামনে নিয়ে আসা কেন? পিলখানা হত্যাকাণ্ড তদন্ত রিপোর্টকে আড়াল করা? এই খেলা আওয়ামী লীগের সাজে না, এসব তো বিএনপি-জামাতের খেলাধুলার রীতিনীতি। অনেক সময় যৌক্তিক বিষয়গুলিকে এইভাবে হাস্যকর করে তোলা হয়। আওয়ামী লীগ সে পথেই পা বাড়াচ্ছে।
যেমন, বিডিআর-এর ডিজি বিডিআর-এর পোশাক পরছেন না, নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেখানে কর্মরত সামরিক কর্মকর্তারা ইচ্ছেমতো পোশাক পরতে পারবেন। কেন? কারণ ডিজির ভাষায়, ওই পোশাকে রক্তের দাগ, সহকর্মীদের রক্তের দাগ…
তাই যদি কারণ হয়, তা হলে সবিনয়ে একটা কথা কি জিজ্ঞেস করতে পারি? এ দেশের সামরিক বাহিনীর পোশাকে দু’ দু’ জন রাষ্ট্রপতির রক্তের দাগ লেগে আছে,- এদের মধ্যে একজন আবার এ দেশটির স্থপতি এবং মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা। কোনও দিন তো আপনাদের কাউকে বলতে শুনলাম না, ওই পোশাক পরব না, ওতে দেশের স্থপতির রক্তের দাগ, দু’জন রাষ্ট্রপতির রক্তের দাগ!
এই কথার সূত্র ধরে, কেউ যদি বলেন এবং দাবি তোলেন, সামরিক বাহিনীর নাম এবং পোশাকও পরিবর্তন করা হোক, তাদের পুনর্গঠন করা হোক, তা কি একেবারেই অযৌক্তিক হবে?
চৈতালী রাতের সঙ্গে হয়তো এসব ভাবনা বেমানান। কিন্তু চারপাশে যা ঘটছে তখন কখন কী চিন্তা জাগে, কী হয়, কে জানে!