মাস দুয়েক আগে খুশবন্ত সিংয়ের কলামে এই কবিতাটি পড়েছিলাম। দিল্লীর হিন্দী কবি কুলদীপ সলিলের একটি কবিতার খুশবন্ত সিংয়ের করা ইংরেজি অনুবাদ। যদিও একে ঠিক আমি কবিতা বলব না, বলব একটি ছোট্ট সুন্দর প্রতিবেদন।
Fruits and pulses, rice and ghee
Vegetables and flour, sugar and tea
Were once upon a time in greater
or smaller measure
Used by everybody
In a certain country,
The farmers were happy
And the consumers felt easy.
And then a species called blackmarketer
And hoarder
And their cousin forward trader
And airy-fairy wealth producer
In the name of economy,free
Took over the country
Leaving behind only a
Sweet memory.
(kuldip salil, hindi poet from delhi,translated in english by khushbant singh)
এখানে আমি কবিতাটি বাংলায় অনুবাদ করছি। যদিও কবিতাটি হিন্দীতে পেলে পাঠের অভিজ্ঞতা যেমন সঠিকতম মাত্রা পেত তেমনি আমার অনুবাদও আরো মূলানুগ হতে পারত।
ফলমূল ডাল চাল আর ঘি
সবজি ময়দা চা আর চিনি
সবদেশে সবাই তখন
এগুলো কম বেশি যে যার মতো কিনতেন
কৃষকরা ছিলেন খুশি
আরামে ক্রেতা সাধারণ
একদিন এসে পড়ল সেখানে চোরাকারবারি
মজুতদার দাদনদার ফটকাবাজ
এদের নিয়েই শুরু হলো উন্মুক্ত অর্থনীতি
দেশ নেই সব বাজার আজ
পড়ে থাকল অতীতের সুখের স্মৃতি
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১৬ comments
রেজাউল করিম সুমন - ৯ জুলাই ২০০৮ (১:৪৫ অপরাহ্ণ)
ভালো লাগল এই ‘কবিতা-প্রতিবেদন’। খুবই প্রাসঙ্গিক।
রায়হান রশিদ - ৯ জুলাই ২০০৮ (৩:০০ অপরাহ্ণ)
চমৎকার অনুবাদ করেছেন, বিশেষ করে শেষ অংশটা, যেখানে লিখেছেন: “দেশ নেই সব বাজার আজ।” রাষ্ট্র পর্যায়ে
মানবসৃষ্ট অব্যবস্থাপনা ও অদূরদর্শিতাজনিত সংকট তো রয়েছেই এর পেছনে। তার ওপর এ সপ্তাহে বিশ্ব ব্যাংকের এক গোপন প্রতিবেদন প্রকাশ হয়ে পড়ায় পরিবেশবাদীরাও কিছুটা বিব্রত। প্রতিবেদনটিতে বিশ্বজুড়ে এ খাদ্য সংকটের অন্যতম কারণ হিসেবে জৈব জ্বালানীর অপরিকল্পিত উৎপাদনকে দায়ী করা হয়েছে। (এখানেও দেখুন)।
এ প্রসঙ্গে মনে পড়ছে, কয়েক মাস আগে আমাদের শহরের নিকটবর্তী এক খামার বাড়ীতে থামতে হয়েছিল। কথায় কথায় খামারের মালিক বলছিলেন কিভাবে তিনি এবং তার প্রতিবেশী আর সব খামার মালিকরা এ বছর অধিক মুনাফার জন্য সব জমিতে সাধারণ ফসলের পরিবর্তে ভুট্টা এবং rape seed এর চাষ করেছেন, যা থেকে পরিবেশবান্ধব জৈব জ্বালানী (bio fuel) তৈরী করা হয়। যে কারণে, যখনই ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চলের দিকে গিয়েছি লক্ষ্য করেছি যতদূর চোখ যায় বেশীর ভাগ ফসলের মাঠই ছিল “হলুদ” বছরের বেশ অনেকটা জুড়ে। ইদানিং একে অনেকে বর্ণনা করছেন “yellow peril” হিসেবে, সম্ভবত ফসলের ক্ষেতের হলুদ রঙের কারণে। কি বিচিত্র, একসময় পশ্চিমাবিশ্বে এই উপমাটি চীনা-জাপানীদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আক্রমণের নিমিত্তে ব্যবহার করা হোতো!
মাসুদ করিম - ১০ জুলাই ২০০৮ (২:৪৪ পূর্বাহ্ণ)
আমার একটি আশংকা যে কৃষিক্ষেত্রে বড় পুঁজি ঢুকতে চাইছে।এই বিছিন্ন চোরাকারবারি, মজুতদার, দাদনদার, ফটকাবাজ এদের চেয়েও আরো সংগঠিত ও সুসংগত কারো অপেক্ষায় আছে খাদ্যবাজার। কর্পোরেট ও বহুজাতিকরা বহুদিন ধরে শিল্পক্ষেত্রে চোরাকারবার,মজুতদারি,দাদনদারি,ফটকাবাজি করে এসেছে দক্ষতার সাথে। এরাই নতুন ব্যবসায়িক লক্ষ্যে একমেবাদ্বীতিয়ম(one stop)শক্তিরূপে দখল করবে কৃষিক্ষেত্র ও খাদ্যবাজার।বায়োফুয়েল তো আছেই কিন্তু সেসাথে যদি দখলে আনা যায় কৃষিক্ষেত্র ও খাদ্যবাজার, তাহলে ভাবুন কী ভয়ংকর হবে সামনের দিনগুলো !
নূপুর - ১০ আগস্ট ২০০৮ (৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ ভাই,
আমার মনে হয়, পানি নিয়ে আরো জল ঘোলা হবে।
মাসুদ করিম - ১৪ আগস্ট ২০০৮ (১২:৫৮ পূর্বাহ্ণ)
কয়েকদিন নেটে ছিলাম না।পানি নিয়ে জল ঘোলা অবশ্যই হবে।কিন্তু পানিকে পানীয় এবং নিত্য ব্যবহার্য উপাদান হিসেবে না দেখে যদি মিথেন উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে দেখি,অর্থাৎ শক্তির উৎস,তাহলে পানিযুদ্ধের আশংকাই প্রকট বলে মনে হয়।
অসিত রায় - ২৭ জুলাই ২০০৮ (১০:২২ পূর্বাহ্ণ)
অতীতের সুখস্মৃতি জেগে থাকুক শায়েস্তা খাঁর নামে।
nupur - ২ আগস্ট ২০০৮ (৬:৪৮ অপরাহ্ণ)
ফাটাফাটি অনু্বাদ মা ক
ধন্যবাদ
মাসুদ করিম - ১ জুলাই ২০০৯ (৩:০০ পূর্বাহ্ণ)
গণশক্তি পত্রিকার আজকের সম্পাদকীয় ‘ক্ষুধার ছবি’। এবছর পৃথিবীতে একশ কোটির বেশি মানুষ অনাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হবেন। সেসাথে আছে ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে মন্তব্য। আমাদের দেশে গণবণ্টন নিয়ে কোনো প্রয়াস তো দেখা যাচ্ছে না, তার ওপর ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র যা অবস্থা তার কাছ থেকে কোনো তথ্য-উপাত্ত পাওয়াই তো দিনে দিনে অসম্ভব হয়ে উঠছে। এবার অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে কাজ করবেন বলে বিভিন্ন সংস্থাকে আস্বস্থ করেছেন। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কতটুকু সফল তিনি হতে পারেন। আর আশা করছি আমাদের দেশের ক্ষুধার তথ্য-উপাত্ত কেউ যদি কোনো সূত্রে পান আশা করি এখানে তুলে দেবেন।
মাসুদ করিম - ১০ অক্টোবর ২০০৯ (৪:৫৫ অপরাহ্ণ)
বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপে খাদ্য সংকট হয়ে উঠবে ভয়ংকর। শিশুরাই হবে এর সবচেয়ে বড় শিকার : অবশ্যই আমাদের শিশুরা, তৃতীয় বিশ্বের শিশুরা, মানে সব গরীব শিশুরা।
মাসুদ করিম - ২০ অক্টোবর ২০১১ (৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ)
সবখানেই ‘দ্যাশের লাগি পরান দিল যারা’ তারা পেল একটা রাষ্ট্র, সবখানে রাষ্ট্র ও বাজার একে অপরের দুর্বলতাকে খোঁচাতে গিয়ে বাজারকে করে তুলল সর্বেসর্বা। এখন আমাদের কাছে বাজারটা কী? বাজার বা জার?
মাসুদ করিম - ২১ জানুয়ারি ২০১২ (১:৫৯ পূর্বাহ্ণ)
খাদ্য সংকটের একটা নতুন দিক এখন সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষক যদি তার উৎপাদিত পণ্যের দাম ঠিকমত না পান, তাহলে তার চাষে অনুৎসাহ খাদ্য সংকট বাড়াবে। ২০১০ সালে প্রথম আমরা বাংলাদেশের পেঁয়াজ উল্লেখযোগ্যভাবে বাজারে উঠতে দেখি। সেবার ভারতীয় পেঁয়াজের ভারতের দিক থেকে কয়েক মাসের জন্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় বাংলাদেশি পেঁয়াজ আমরা বাজারে উঠতে দেখি। আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম এবং ভাবছিলাম এই সুযোগে বাংলাদেশের পেঁয়াজ চাষীরা ভাল দাম পাবে এবং পেঁয়াজ চাষে উৎসাহী হয়ে আরো বেশি আবাদ করবে — হয়েছিলও তাই তারা গতবছর প্রচুর আবাদ করেছে — কিন্তু এখন এই পেঁয়াজ বিক্রি করতে গিয়ে যখন কেজি প্রতি তারা ৭/৮ টাকা লোকসান দিচ্ছে তখন সামনে তারা কিভাবে একই উৎসাহ নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করবে? আজকে ভারতীয় পেঁয়াজের একেবারে পাড়ার দোকানের দাম ছিল ২৩ টাকা কেজি।
আমরা বাসস-এর এই খবরে দেখতে পাচ্ছি রাজশাহীর এক কৃষকের কেজি প্রতি পেঁয়াজ চাষের খরচ পড়েছে ১২.৫০টাকা এখন (২৩ – ১২.৫০ = ১০.৫০) চাষী থেকে সর্বশেষ খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত অন্তত কেজি প্রতি এই ১০.৫০টাকার বন্টন বুঝি হতে পারে না? যদিও দেশি পেঁয়াজের বাজার দর ভারতীয় পেঁয়াজের বাজার দরের চেয়ে বেশি তারপরও কৃষককে কেন এক কেজি পেঁয়াজ ৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে? ৯০০০ টাকা খরচ করে ও শ্রম দিয়ে এরপর যদি ৫৪০০ টাকাই উধাও হয়ে যায় তাহলে এই সর্বস্ব খোয়ানোর পথে উপায়হীনভাবে চাষীর জীবন মেনে তাকে চলতেই হবে? আর লাভের গুড় কয়েকগুণ জমবে আড়তদার আর পরিবহনকারী, পরিবেশক আর খুচরা বিক্রেতার ঘরে?
মাসুদ করিম - ৫ জুন ২০১৩ (১০:০৬ পূর্বাহ্ণ)
খাদ্য সংকটের আরেকটি বড় কারণ খাদ্যের অপচয়। এবারের বিশ্বপরিবেশ দিবসে এই অপচয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোই মূল লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে : Think Eat Save।
মাসুদ করিম - ২০ মার্চ ২০১৪ (৩:২৩ অপরাহ্ণ)
খুশবন্ত সিং চলে গেলেন ৯৯তে।
মাসুদ করিম - ৩০ নভেম্বর ২০১৫ (১২:৩৯ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২৩ নভেম্বর ২০১৮ (১:১৫ অপরাহ্ণ)
Pingback: দশকপ্রবেশ | প্রাত্যহিক পাঠ