আমার এ লেখা কোনো প্রস্তাবনা, বিজ্ঞপ্তি, হুকুমনামা কিংবা বিজ্ঞাপনের মালমশল্লা দাবি করে না। এটি নিতান্তই এককধরনের হতচকিত অবস্থার সারাংশ। মুশকিল হচ্ছে, আমরা যে মধ্যবিত্তীয় শহুরে বাস্তবতায় জীবনযাপন করি, তাতে নির্জনতা, হতবিহ্বল অবস্থা, এমনকি লাজ-শরমও দিনকে দিন উঠে যাচ্ছে। সেলফোন, ইন্টারনেট, সর্বোপরি বিভিন্ন ধরনের মিডিয়া আমাদের মানসিক অবস্থাকে ধুয়ে-মুছে দিচ্ছে। এতসব কথাবার্তা মূলত একটা সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের সমগ্র চৈতন্যকে একেবারে নাড়িয়ে দিচ্ছে।
ঘটনাটি মাত্র গতকালকের- সমাজ সমীক্ষা সংঘ আয়োজিত অক্টোবর বিপ্লব বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মিলনায়তনে তা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এম এম আকাশ একটি প্রবন্ধ পাঠান্তে তার আসনে বসতেই মঞ্চটিতে মৃদৃ নড়াচড়া, মানুষের চলাচল একধরনের হুলস্থূলে রূপ নেয়া শুরু করে। ঘটনা আর কিছুই নয়, ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার বাজারে একধরনের কোলাহল শুরু হয়েছে। মার্কেট ইকোনমির এই যুগে বাজারতো বাজার চিনবেই। সেই বাজারটা হচ্ছে, মঞ্চে বসা বক্তাদের ভিতর যাদের বাজারমূল্য আছে,হায়দার আকবর খান রনো, রতন খাসনবিশকে অযথাই মাইকের সামনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। আলোর উল্লাস শুরু হয়ে গেল। তারা তাদের মৃদু আপত্তিসহযোগে দুই-চার কথা বলে যার-তার আসনে বসে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে মঞ্চের সাড়া বাড়তে থাকে। বন্দুক-পিস্তল-রাইফেল সহযোগে যেন বিকল্প ক্রসফায়ার প্রত্যক্ষ করছি। একধরনের রক্তক্ষরণের স্বাদ পাই আমি। নুন-নুন তাপে শরীর ঘেমে যেতে থাকে। রনো ভাইও মাইকের সামনে দাঁড়ান। তিনি এই সময় নেতা থেকে অভিনেতা হওয়ার কথা জানালেন, তার আপত্তির কথাও আমরা শুনলাম। কিন্তু মিডিয়ার বাজারী-ব্যবস্থাকে তিনি তো মেনেই নিলেন! আনু মুহাম্মদের বাজারতো কম নয়। কিন্তু তিনি আবার অসুস্থজনিত কারণে চেয়ারে বসে তার মূল বক্তব্যই শুরু করলেন। রাজনীতি ক্রমেই এখন সেলফোন, ইন্টারনেট আর মিডিয়া বিশেষত প্রিন্ট মিডিয়ার কোলাজ-মন্তাজে ভরপুর হয়ে যাচ্ছে। একসময় হয়ত তা-বিবৃতি, শ্লোগান, লড়াই-সংগ্রামের আশ্রয়স্থল হয়ে যাবে।
কিছু কিছু চরিত্র থাকে যাদেরকে আমি একধরনের সাধনাই করেছি। রনো ভাই তেমনই একজন। তার রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে আমি যদ্দূর জানি তাতে তিনি বরাবরই একজন প্রখর সমাজতন্ত্রী, গ্রন্থবিমুখ রাজনীতিকের এই দেশে তিনি বই-পুস্তকে তিনি রীতিমতো নাক ডুবিয়ে থাকতেই পছন্দ করেন। সশস্ত্র বিপ্লব, মাও চিন্তাধারা, স্ট্যালিনের প্রতি পক্ষপাত যেমন তার আছে, তেমনি মাওলানা ভাসানির মতো রহস্যময় দেশপ্রেমিকের সাহচর্যও নিয়েছেন। বুর্জুয়া রাজনীতি, ভোটের জবরধ্বস্তিমূলক কারসাজিতে তাকে কখনো পাওয়া যায়নি। মেনন-রনোর বন্ধুত্বকে অনেকেই আল্লা-রসুলের বন্ধুত্বের সাথে তুলনা করলেও অনেকেই অবাক হয়ে দেখলেন বিশুদ্ধ প্রগতিশীল রাজনীতির স্বার্থে তাও দূরে সরিয়ে রাখতে পারছেন তিনি। ওঁর জীবনকে লড়াই-সংগ্রামের উর্বরস্থল ভাবতেই ভালো লাগে আমার। তার সাথে আমার সরাসরি কথা হয়নি কোনোদিন, কিন্তু আমার মনে হয় তার সাথে সেই কবে থেকেই যেন যুক্ত হয়ে আছি। সেই মানুষটি অবয়ব প্রদর্শনের কাছে নিজেকে সঁপে দিলেন? মানুষ দেখা আমার শেষ হবার নয়। এ যেন আমার এক পেশা, এ আমার সারাজীবনের এক ধ্যান যেন- দূর থেকে রনো ভাইকেও দেখছি। কিন্তু আমার একধরনের আকাঙক্ষা কেবলই যেন রক্তাক্ত হয়ে যাচ্ছে।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর
কথাসাহিত্য চর্চার সঙ্গে যুক্ত। পেশায় চিকিৎসক। মানুষকে পাঠ করতে পছন্দ করি। আমি মানুষ এবং মানব-সমাজের যাবতীয় অনুষঙ্গে লিপ্ত থাকার বাসনা রাখি।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১১ comments
নুর নবী দুলাল - ১৫ নভেম্বর ২০০৯ (১:০৮ পূর্বাহ্ণ)
জাহাঙ্গীর ভাই,
আপনার অনুভুতিটি মনে হয় আমরা সবাই বুঝি। তার পরও খ্যাতির প্রত্যাশায় একসময়ের প্রচার বিমুখী মানুষগুলোও কেমন জানি যান্ত্রিকতার বিষণ্ণতায় ভুগছে, প্রচারমুখী হয়ে উঠছে। এ হচ্ছে মুক্তবাজার অর্থনীতির ছোবল। আমরা যারা মুক্তবাজার অর্থনীতির বিরুদ্ধে বুলি কপচাই…..তারাই আবার এর রাহুগ্রাসে আবদ্ধ হয়ে পড়ি, নিজেকে সঁপে দেই আমাদের চিন্তা ও বিশ্বাসের প্রতিকুলতায়।………..নিমগ্ন হয়ে পড়ি নিজের তুষ্টিতে……..ধন্যবাদ আপনার সাহসী নিবন্ধের জন্য।………তবে আপনার সাথে চট্টগ্রামে একটি মেজবান খাওয়ার ইচ্ছেটি এখনও আমার আছে…..আজ চট্টগ্রামে ছিলাম। কাল আবার চলে যাচ্ছি ঢাকাতে, আপনার facebook-এ account থাকলে আমাকে add করে নিবেন আশা করছি : nndulal@yahoo.com, Nur Nobi Dulal ভাল থাকবেন, আরো নতুন লিখার প্রত্যাশায় রইলাম।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ১৫ নভেম্বর ২০০৯ (৩:৩৯ অপরাহ্ণ)
আপনার মন্তব্যে ভালোবাসা আছে।
সরি, ফেইসবুক আমার ঠিক ভালো লাগছে না।
বিনয়ভূষণ ধর - ১৫ নভেম্বর ২০০৯ (১:২০ অপরাহ্ণ)
@জাহাঙ্গীর ভাই!
আপনাকে ধন্যবাদ গত ১৩ নভেম্বর ‘সমাজ সমীক্ষা সংঘ‘ আয়োজিত অক্টোবর বিপ্লব বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সংঘটিত উক্ত হাস্যকর ঘটনাটি আপনার লেখায় উল্লেখ করার জন্যে। অন্য অনেকের মতো আমিও উক্ত অনুষ্ঠানটিতে উপস্হিত ছিলাম। আমি, আপনি, সুমন আমরা একসারিতেই বসা ছিলাম। আমার কাছে ব্যাপারটি যতটা না এম. এম. আকাশ, আনু মোহাম্মদ বা হায়দার আকবর খাঁন রনো ভাইয়ের দোষ মনে হয়েছে তারচেয়ে অনেক বেশী দোষে দুষ্ট আয়োজকরা এটাই মনে হয়েছে। কারণ তাঁরা অনুষ্ঠান শুরু করতে অনেক দেরী করে ফেলেছেন প্রথমে। আর এই সংগঠনটির আয়োজকদের ব্যাপারে আমাদের অনেকেরই নানারকম বিচিত্র অভিজ্ঞতা আছে।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ১৫ নভেম্বর ২০০৯ (৩:৩৫ অপরাহ্ণ)
আপনাকে ধন্যবাদ। সমাজ সমীক্ষা সংঘ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো যাবে? আসলে আমাদের চারপাশ এতবেশি ঝাপসা-কুয়াশাময় যে, মনে হয়, আমরা দারুণ দুঃসময় যাপন করছি।
রেজাউল করিম সুমন - ১৭ নভেম্বর ২০০৯ (৮:২১ অপরাহ্ণ)
@ কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর
‘সমাজ সমীক্ষা সংঘ’ কোনো ভূতলাশ্রয়ী সংগঠন নয়, এর সম্পর্কে ‘বিস্তারিত’ জানার জন্য সংগঠনের কোনো সদস্যের সঙ্গে কথা বলাই শ্রেয়। আমার পরিচিত দু-একজনও এর সঙ্গে যুক্ত, আপনি চাইলে তাঁদের সঙ্গে সামনাসামনি আলাপ করিয়ে দিতে পারি।
রেজাউল করিম সুমন - ১৭ নভেম্বর ২০০৯ (৮:১৯ অপরাহ্ণ)
@ বিনয়ভূষণ ধর
ঠিক, অনুষ্ঠান শুরু করতে সেদিন দেরি হয়েছিল আর তারই পরিণামে অপ্রস্তুত হতে হয়েছিল বক্তা ও দর্শকদের। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা ধরেই ক’জন আয়োজক এদেশে অনুষ্ঠান শুরু করতে পারেন! (পারা উচিত নিশ্চয়ই — সে-বিষয়ে আমারও দ্বিমত নেই।) আর সংগঠনটির আয়োজকদের ব্যাপারে ‘অনেকেরই নানারকম বিচিত্র অভিজ্ঞতা’-র বিবরণ আশা করি এখানে শুনতে হবে না আমাদের। ভালো হয় আয়োজকদের কারো সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলাপ করলে। সেটাই হবে প্রকৃত শুভানুধ্যায়ীর কাজ।
মনিরুল মনির - ১৬ নভেম্বর ২০০৯ (২:৪০ পূর্বাহ্ণ)
ভঙ্গিমা- চলন বাঁকা, স্বভাবে নাক উঁচু ভাব…
জাহাঙ্গীর ভাই, অংশ নিতে নিতে, অংশে পরিণত হতে হতে
প্রগতির অবস্থা ছির এই…
আপনার আমার ভঙ্গিমার মোচড়ে কোন অংশ নেই…
এইটুকু এই ব্লগ আমার এবং আপনার কিংবা সবার
হয়তো অনেকের
কলম আছে আমাদের… আমরা সামনেও লিখবে এখনও লিখতে পারি…
বাংলাদেশের এহেনক পরিণতিতে আমাদের চিন্তা সঠিক জবাবটি দেবে কলমে…
শক্তি আমাদের আশা দেখায়…
মঞ্চের অভিনেতারা আর আশা দেখাতে পারবে না…
হয়তো আরো কিছু হতাশার জন্ম দিয়ে দলে দলে বিভক্ত হয়ে
পরাজিত বিপ্লবের সংজ্ঞা নিয়ে অংশে অংশে উপস্থিত হবেন ওনারা…
নেতা, অভিনেতা, প্রণেতাগণ….
হা হা হা…
আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে…
রেজাউল করিম সুমন - ১৭ নভেম্বর ২০০৯ (৮:১২ অপরাহ্ণ)
@ মনিরুল মনির
কার ‘ভঙ্গিমা-চলন বাঁকা, স্বভাবে নাক উঁচু ভাব’? ঠিক বুঝে ওঠা গেল না। সাহায্য প্রার্থনা করছি।
মনিরুল মনির - ১৮ নভেম্বর ২০০৯ (২:৫৯ পূর্বাহ্ণ)
@সুমন ভাই
নিশ্চয়ই বুঝেন। এগুলো সরাসরি আঙুল উচিয়ে দেখানোর মধ্যে মহত্ব নেই। সুতরাং ইশারাই কাফি। যারা হম্বি-তম্বি করেন। অক্টোবর বিপ্লব এলেই নাক-উঁচু ভাব করেন যেন এই মুহূর্তে বিপ্লব আসন্ন। আমরা এর আগে আমাদের দেশিয় জাতীয়তাবাদী কায়দা নভেম্বর বিপ্লব শব্দ নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে দেখেছি। আর বাম পকেটের বিপ্লব নিয়ে বিস্তর অবতারণা করা যায়। পরে কোন একসময় যোগ্যতর ও উপযুক্ত গদ্যে অবতারণা করবো। সেদিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে সকলের…
আরও একটি কথা অনেক অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে অযথা বিষয়টি দীর্ঘায়ু বাড়িয়ে লাভ কি…
আরো একটি বিষয় দৃষ্টি এড়িয়ে যায় নি আমাদের- যে মুহূর্তে দেশের নানা ইস্যু নিয়ে আমাদের মধ্যে নানামত তৈরি হয়েছে, সংকটের পর সংকট নিয়ে দেশ এগুচ্ছে সে মুহূর্তে অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কি করছে। তাঁদের পুঁজির পতাকা নিয়ে মানুষের মননে উন্মাতাল ঢেউয়ের অবতারণা করছে। সমাজ সমীক্ষা কেন্দ্র কি করলো?
অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সকলের মুঠোফোনে ২ কিংবা তারও অধিক ম্যাসেজ পাঠিয়েছে। ফোনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্যে আবেদন করেছেন। চকচকে কিছু নিমন্ত্রণ পত্র করেছেন। কলকাতা-ঢাকা থেকে বক্তা নিয়ে এসেছেন। তাদের খরচ কাদের কাছ থেকে নিল। তারা কি সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী প্রতিষ্ঠান কিনা। পরিষ্কার নয়। বক্তাদের দেখেছি লাক্সারী গাড়ী নিয়ে ঘুরতে। দেখুন, সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী শব্দগুলো এরা ব্যবহার করতে করতে আমাদের কান পচিয়ে ফেলেছেন ওনারা। আমরাও মাঝে মাঝে এ শব্দ ব্যবহার করতে আতকে উঠি। পচনের পর গণ্ধ বের হয়।
রেজাউল করিম সুমন - ১৮ নভেম্বর ২০০৯ (৮:০০ অপরাহ্ণ)
ধন্যবাদ, মনিরুল মনির। এখন পরিষ্কার হলো বক্তব্য।
রেজাউল করিম সুমন - ১৭ নভেম্বর ২০০৯ (৮:১১ অপরাহ্ণ)
এই পোস্টে অন্যতম মন্তব্যকারী নুর নবী দুলাল ঘটনাস্থলে (চট্টগ্রামের লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে) সেদিন উপস্থিত ছিলেন না; তবে আরো অনেকের সঙ্গে কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, বিনয়ভূষণ ধর, মনিরুল মনির ও আমি সে-অনুষ্ঠানে ছিলাম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর সাংবাদিকদের অনুরোধে আয়োজকদের পক্ষ থেকে কয়েকজন আলোচককে আলোচনা-পর্বে প্রবেশের আগেই শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদানের জন্য সবিনয়ে অনুরোধ করা হয়, যাতে তাঁরা (সাংবাদিকরা) বক্তাদের ছবি তুলে নিয়ে নিজ নিজ অফিসে জমা দিতে পারেন। এসব সাংবাদিকরা এসেছিলেন বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল থেকে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা অতিথি-আলোচক রতন খাসনবিশ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। হায়দার আকবর খান রনো শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদানের জন্য আহূত হয়ে জানান, তিনি রাজনৈতিক কর্মী – নেতা নন, অভিনেতা তো ননই। এভাবে ক্যামেরার সামনে অভিনয়ের জন্য তিনি প্রস্তুত নন, ইত্যাদি। বলা বাহুল্য, তাঁর সরস সংক্ষিপ্ত বক্তব্য অনেকেই উপভোগ করেন। মূল বক্তব্য দেয়ার আগেই সাংবাদিকদের ছবি তোলার সুবিধার জন্য এভাবে ‘শুভেচ্ছা বক্তব্য’ দেয়ার অনুরোধ যে তাঁর মনঃপূত হয়নি তা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট; কিন্তু এও ঠিক যে, আয়োজকদের অনুরোধ তিনি ফেলতে পারেননি। আনু মুহাম্মদ এভাবে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদানে নিঃশব্দে অস্বীকৃতি জানিয়ে মূল বক্তব্য প্রদানের ইচ্ছা প্রকাশ করলে উপস্থাপক তাঁকে মূল বক্তব্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। তাঁর বক্তৃতা শুরু হলে চিত্রগ্রহণ পর্বের পরিসমাপ্তি হয়। আনু মুহাম্মদের আলোচনা শেষে আমরা কেউ কেউ অন্যত্র একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শনী দেখতে চলে যাই। এর পরের আলোচনা শোনার বা ঘটনা প্রত্যক্ষ করার সুযোগ থেকে স্বাভাবিকভাবেই আমি বঞ্চিত হয়েছি।
সেদিনের ওই ‘ফটো সেশন’-এর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ এই পোস্টে লেখা হয়েছে :
২
সাংবাদিকরা নিজেদের (কর্মক্ষেত্রের) সুবিধার জন্য এভাবে আগেভাগে ছবি তোলার অনুরোধ জানাতে পারেন কি না – সে-প্রশ্ন তুলতেই পারেন কেউ। আয়োজকরা সাংবাদিকদের কথায় কান না দিলেও হয়তো পারতেন। কিন্তু আয়োজকরাও বোধকরি চাইছিলেন অনুষ্ঠানটির খবর যথাশীঘ্র সংবাদপত্রে ছাপা হোক, টিভিতে দেখানো হোক। সে-চাওয়াকে সবাই যে ভালো চোখে দেখবেন না, তাও তো স্বাভাবিক। কিন্তু একান্ত নিজস্ব ভাষাভঙ্গি ব্যবহার করে জাহাঙ্গীর ভাই যখন লেখেন,
কিংবা
— তখন ভাবতে হয় – এই পোস্টে লেখকের ‘হতচকিত অবস্থার সারাংশ’-র বয়ানকে সেদিনের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত পাঠকরা কীভাবে পাঠ করবেন।