বিদেশের ইকোনমিস্ট আর দেশের আমারদেশ পত্রিকা সম্প্রতি একটি কথোপকথনের খবর জানিয়েছে আমাদের। আমারদেশ পত্রিকার প্রকাশিত খবর থেকে জানতে পারলাম যে পত্রিকা কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী এই কথোপকথনগুলো সংগঠিত হয়েছে ট্রাইবুনালের বিচারপতি নিজামুল হক (নাসিম) এবং আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের মাঝে। তো, এমনিতে আমারদেশ পত্রিকাটি নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই, পত্রিকার সম্পাদকীয় নীতিটি পরিষ্কারভাবেই বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রতি সমর্থনসূচক, একথা সচেতন পাঠক মাত্রই স্বীকার করতে বাধ্য হবেন। সুতরাং এই পত্রিকায় প্রকাশিত খবর দেখলেই অনেকে পূর্ব ধারণার বশবর্তী হয়ে ধরেই নেন যে এটি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ। কিন্তু এই খবরটির বেলায় এমনটি ধরে নেয়া সমীচীন হবে না।
কথোপকথনটি প্রকাশিত হওয়ার পরে আমি ইন্টারনেট জগতে বেশ কয়েকটি ছোটবড় প্রতিক্রিয়া পড়লাম। অধিকাংশ জনই জোর দিয়েছেন এরকম কথোপকথন সংগ্রহ এবং প্রকাশের ব্যাপারে আইনি ও নৈতিক ব্যাপারগুলোর উপর। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টায় তাদের লোকজন যে বিশাল কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন গোটা বিশ্বজুড়ে, তাতে করে তারা বিচারপতির অফিস-গাড়ি-বেডরুম-বাথরুমে যে আড়ি পাতা যন্ত্র স্থাপন করে রাখতে পারে, এটা বাস্তবতা। তারা রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের ব্যাপারে একেবারে নিখুঁত গবেষণা করছে এটাও ধরে নেয়া যেতে পারে। তাদের বিভিন্ন প্রভাব, হুমকি ধামকি কিংবা প্রলোভনে সাক্ষীদেরকে প্রভাবিত করার চেষ্টার জন্য তারা যতদূর সম্ভব ভেতরের তথ্য জানতে চেষ্টা করবে এবং যেহেতু তারা একটি অনৈতিক অশুভ শক্তির প্রতিনিধিত্ব করছে সুতরাং সেটি করতে গিয়ে তারা রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী সুখময়কে গুম করবে কিংবা প্রয়োজনমতো আবার তাদের উকিলদের গাড়ি থেকে নামিয়ে গুমের নাটক করবে -এসব বিষয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এসব সাক্ষীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্যই যদি তারা কম্পিউটার হ্যাক করা থেকে শুরু করে ট্রাইবুনালের গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের বিছানার নিচে আড়ি পেতে বসে থাকে, তাহলে চমকে ওঠার কিছু নেই। আইনিভাবে কীভাবে ট্রাইবুনাল সংশ্লিষ্টরা প্রটেকশন পেতে পারেন, সেটি নিশ্চয়ই অন্যরা বিবেচনা করবেন, আমি আজকের আলোচনায় সেদিকে যাব না।
আমি বরং আমারদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত কথোপকথন থেকে যেসব বিষয় বুঝলাম, সেগুলো নিয়ে এখানে আলোচনা করি।
১. প্রথমেই বুঝলাম যে আইনি প্রক্রিয়া শুধু যথাযথভাবে এগুচ্ছে এমন নয়, একেবারে ‘আন্তর্জাতিক মান’ বলে যে বিষয়টি নিয়ে একপক্ষ হইচই করছেন, সেরকম গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এগুচ্ছে। আমারদেশ পত্রিকার খবর অনুযায়ী কথোপকথনে অংশ নেয়া ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন হলেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ল’ইয়ার এবং ‘সেন্টার ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড স্টাডিজ ইন বেলজিয়াম’-এর ল’ইয়ার এবং ‘সেন্টার ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড স্টাডিজ ইন বেলজিয়াম’-এর পরিচালক। তিনি ব্রাসেলস ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করেন।
-এখানে দেখা যাচ্ছে যে ড.জিয়াউদ্দিন কোনো দলের নেতা কিংবা কর্মী নন, একেবারে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন একজন আইনজীবী যার মূল এক্সপার্টিজ ও আগ্রহের জায়গা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধ। তিনি যদি আদৌ এরকম কথোপকথনে অংশ নিয়ে থাকেন, তাহলে সেটি ট্রাইবুনালকে আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং সঠিক মান অর্জনে সহায়তা করার উদ্দেশ্য থেকেই করেছেন- এজন্য তিনি সাধুবাদ প্রাপ্য।
২. দ্বিতীয়ত বুঝলাম যে এই মামলার রায়ের ব্যাপারে সরকারের তাড়াহুড়োর একটা ব্যাপার আছে। সংলাপে উল্লেখ আছে যে ‘গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া, তারা একটি রায় চায়।’ এতে অবাক হওয়ারও কিছু নাই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এ বিষয়ে তারা জনগণের কাছে রায় চেয়েছেন এবং পেয়েছেনও। সরকারের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছর, সুতরাং সরকার চাইবে যে একটি সফল বিচার কাজ শেষ করে জনগণের কাছে তাদের দেয়া ওয়াদা সম্পূর্ণ করে পরবর্তী মেয়াদের জন্য রায় চাইবে। এর চাইতে বড় বিষয় হচ্ছে এই বিচার কাজটি নির্বিঘ্নে করা যাচ্ছে না। অভিযুক্ত পক্ষ এটি নিয়ে দেশে বিদেশে ব্যাপক তোড়জোড় করছেন। আন্তর্জাতিক মিডিয়া কেনা হচ্ছে, দামি দামি লবিস্ট এবং আইনজীবীরা তোলপাড় করছেন। দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি, নাশকতা, আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর হামলা চলছে অব্যাহতভাবে। সরকারের একটা বড় শক্তি নিয়োগ করে রাখতে হচ্ছে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলায়। সুতরাং সরকারপক্ষ অবশ্যই চাইবেন যাতে করে বিচারটি শেষ হয়ে যায় এবং তারা এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে যেতে পারেন।
কিন্তু এই আলোচনার স্ক্রিপ্ট পড়ে প্রণিধানযোগ্য যে, বিচারপতি নিজে এই চাপকে আমলে নিচ্ছেন না। তিনি বরং বিরক্তি প্রকাশ করে বলছেন, ‘একটা জাজমেন্ট না পাইলে ১৬ই ডিসেম্বর… ১৬ই ডিসেম্বর কইরা ডাহাডাহি করতেছে। এটা কোনো অর্থ হয় না। তারা একটা জাজমেন্ট চাচ্ছে, সোজা হিসাব।’
বরং দেখা যাচ্ছে যে তিনি সঠিক পথে বিচার চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সরকারের তাড়াহুড়োর তাগিদেও বিচার কাজে নিরপেক্ষতা নিয়ে আপোষ করছেন না। একই কথার প্রতিধ্বনি আছে ড. জিয়ার কথাতেও, তিনি সরকারের চাপ প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন। এক জায়গায় তিনি বলছেন, ”‘আর সরকারের ওই চাপটা আমাদেরকে সহ্য করতেই হবে। কীভাবে করব দ্যাট উই ডোন্ট নো। বাট, এইটা তাদেরকে বোঝাইতে হবে ওইভাবে এইটা চাপচাপি না করা। এইটা ইয়ে না। প্রডাক্ট না যে, জাস্ট আপনে কইলেন আর মেশিন না যে, বাইর হয়া গেল। আর এইগুলা উনাদের বুঝার মতোও অবস্থা নাই। তারপরও বুঝাইতে হবে, তারপরও উনাদের সাথেই তো কথা বলতে হবে। “
৩. তৃতীয় ব্যাপার যেটা বুঝলাম যে বিচারপতি এবং ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন দুজনেই বিচারকাজের নিরপেক্ষতার পাশাপাশি এর আইনি দিক এবং আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে সচেতন। ড. জিয়া এসব রায় যাতে আন্তর্জাতিক মানের হয় এজন্য এই ধরনের রায়ের একটা স্ট্রাকচার বা নমুনা দিয়েও ট্রাইবুনালকে সহায়তা করতে চাইছেন। তিনি বলছেন,’এই জিসিগুলো কিন্তু আমাদের লোকগুলা বেশি দেখবে না। আমাদের লোকেরা দেখবে, সে আপনার কনক্লিউশনটা কী হইছে এবং বড় বড় ফ্যাক্ট কী হইছে। কিন্তু যারা এই জিনিসটা ক্রিটিক্যালি দেখবে এবং রেফার করবে এবং পরবর্তীকালে এটাকে আন্ডারমাইন্ড করার চেষ্টা করতে পারে এবং সেইটা না করার জন্য এইটাকে ফরম্যাটের দিক থেকে…, এইটাকে ওই স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে আসতে হবে আমাদেরকে।”
তিনি বিচারকাজের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পেইড লবিস্টদের প্রোপাগান্ডা বিষয়েও সচতেন হয়ে আরেক জায়গায় সচেতন বিদেশিদের সম্পর্কে বলছেন,’ওদের যে চিন্তা-ভাবনা, আর ওরা যে জাজমেন্টগুলো পড়ে, দেখা যাবে কি একেবারে ওই জাজমেন্টের সাথে অলমোস্ট খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে। এবং ওরাও দেখবে ঠিকই আমরা একই স্ট্রাকচার ফলো করছি। আমরা যে বাংলাদেশের ট্র্যাডিশনাল ওয়েটা ফলো করি, সেই হিসাবে এটা নেওয়া যাবে না। কারণ, এই কেসটা সেই কেসগুলা না এবং এই কেসগুলাকে ইভেন কি ছোট কেস, সাঈদীর কেসটা আনুপাতিক হারে লেস লিগ্যালি কমপ্লিকেটেড, কিন্তু সেটা হচ্ছে লিগ্যাল আলোচনাটা কম হবে সেখানে ওই সেন্সে। কিন্তু তারপরও তো ডিগ্রি অব লিগ্যাল আলোচনা থাকতেই হবে। কারণ এখানে কিন্তু, ওই ইস্যুগুলা সেটেল হয়ে যাবে।’
এটা প্রশংসনীয় একটা ব্যাপার।
গোটা আলোচনার স্ক্রিপ্ট নামে যে দীর্ঘ লেখাটি আমারদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তার অধিকাংশই ব্যক্তিগত আলোচনায় ভরপুর। একই সঙ্গে দুই আইনের মানুষ নিজেদের মধ্যে দেশের এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইন আদালতের খবর নিয়ে আলোচনা করেছেন। এরকম আলাপের মাঝে আমি দোষ দেখি না। দুই আইনজ্ঞের আলোচনার মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় এসেছে যে ট্রাইবুনাল সরকারের যথাযথ সহায়তা পাচ্ছে না এবং অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের কাজকর্মের সঙ্গে ট্রাইবুনালের বিচারপতি এবং ড. জিয়া অসন্তোষই প্রকাশ করছেন। এগুলোও ব্যক্তিগত ব্যাপার।
এই আলোচনার স্ক্রিপ্টটি যদি সত্যি হয় আমি তাহলে আমি আশ্বস্থ হয়েছি যে এই ট্রাইবুনাল একেবারে আন্তর্জাতিক মান রক্ষায় তৎপর আছে, এই ট্রাইবুনাল এবং এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সহায়তাকারীরা বিচারের মান নিয়ে আপোষ করবেন না, তারা দীর্ঘমেয়াদে এসব বিচারের প্রতিক্রিয়াটিকে আমলে নিয়েই নিজেদের মতো করে এগুচ্ছেন। আমারদেশের এই রিপোর্টটি ( যদি সত্যি হয়) ট্রাইবুনাল বিরোধীপক্ষের প্রচারণা ‘এটি সরকারের ট্রাইবুনাল’ এমন অপপ্রচারের বিরুদ্ধে একটি শক্ত দলিল।
আমি অভিনন্দন জানাই বিচারপতি বিচারপতি নিজামুল হক (নাসিম)কে যিনি সরকারপক্ষ কিংবা আসামীপক্ষের কারো দ্বারাই প্রভাবিত নন বলে নিজেকে প্রমাণিত করতে পারায়। আশা করি তার এই নিরপেক্ষতার প্রমাণ তার রায়কে আরো গ্রহণযোগ্য করে তুলবে।
আমি অভিনন্দন জানাই ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ বিশেষজ্ঞকে। আমরা জানি কত শত জ্ঞানপাপী সোনার মোহরের কাছে বিক্রি হয়েছে এখানে ওখানে, কিন্তু ড. জিয়ার মতো নিঃস্বার্থ মানুষরা নিজেদের তাগিদ থেকে বিদেশের মূল্যবান সময় ব্যয় করে এই বিচারের মান উঁচু করতে, সঠিক ও নিরপেক্ষ বিচার কাজ চালাতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। জাতির ইতিহাস যখন টার্নিং পয়েন্টে দাঁড়ানো তখন অনেকেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। ড. জিয়ার মতো মানুষের সার্ভিস পেতে জামায়াত এমন টাকা খরচ করতে পারবে যাতে করে তাঁর চৌদ্দগুষ্ঠিতে আর কাউকে রোজগার করে খেতে না হয়। আমি আনন্দিত যে ড. জিয়া আমার প্রতিপক্ষ দলে নন, বরং জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ড. জিয়া আমার স্বপক্ষেই আছেন।
আর পরিশেষে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই দৈনিক আমারদেশকে। সাংবাদিকতার নৈতিকতা বিচার, আইনি বিচারে এরকম আড়িপাতা খবর প্রকাশ কতটুকু যৌক্তিক সে বিচার আমি আজকের আলোচনায় তুলে রাখলাম; কিন্তু ট্রাইবুনাল যে নিরেপক্ষ, বিচারকাজ যে আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে হচ্ছে, সরকার আর ট্রাইবুনাল যে সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়-আমারদেশ সে খবর প্রমাণ করে আমাদের অনেককেই আশ্বস্থ করেছে। থ্যাংক ইউ আমারদেশ।
লিন্ক এখানে।
[‘উন্মোচন‘এ প্রকাশিত আরিফ জেবতিক-এর ব্লগ থেকে]
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (ICSF)
১৯৭১ এ সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহের বিচারের মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতির নিরসন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত স্বাধীন বিশেষজ্ঞ, কর্মী এবং সংগঠনসমূহের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (ICSF)। বাংলাদেশে বর্তমানে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে পর্যবেক্ষণ, অনুশীলন এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যেই এই নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠা। এই সব উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এবং এর বিভিন্ন অঙ্গসমূহকে দালিলিক, আর্কাইভ এবং গবেষণা সহায়তা প্রদান করা ছাড়াও ট্রাইবুনালের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং দফতরসমূহের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ, মতামত এবং পরামর্শ বিনিময়, এবং ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ এই নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের অংশ। আইসিএসএফ এর কার্যক্রম, এর প্রকল্পসমূহ, এর সাংগঠনিক ইউনিটসমূহ এবং সাংগঠনিক নীতিমালাসমূহ সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত জানতে ঘুরে আসুন: http://icsforum.org