‘বিদেশী আইনজীবি নিয়োগ’ প্রসঙ্গ: ১ম দফা প্রশ্নোত্তর

এই ধরনের আইন মোটামুটি পৃথিবীর সব জায়গাতেই রয়েছে। খোদ ওই বিদেশী আইনজীবিদের দেশ ইংল্যান্ডেও বাইরের দেশের কেউ চাইলেই আদালতে দাঁড়াতে পারবে না তাদের আইন অনুযায়ী। তাদেরও এই ব্যাপারে বিভিন্ন নিয়ম-কানুনের কড়াকড়ি রয়েছে [..]

[গত ৩০ জুলাই, এই প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তরের প্রথম দফা প্রকাশিত হয় আইসিএসএফ এর ফেসবুক পেজে]

❖❖ প্রশ্নঃ ট্রাইবুনালে কি বিদেশী আইনজীবিরা অংশগ্রহন করতে পারবে? যদি না পারে, তবে কেন পারবে না?

❖উত্তরঃ ট্রাইবুনালে যে কোনো পক্ষের হয়ে কোন বিদেশী আইনজীবি লড়ার বিষয়টি বার কাউন্সিল আদেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আইনটি এক্ষেত্রে একেবারেই স্পষ্ট – আইনজীবিকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। এই কথাটি বলা রয়েছে বাংলাদেশ লিগাল প্র্যাক্টিশনার্স এন্ড বার কাউন্সিল অর্ডার – ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২৭(১)(ক) তে। বাংলাদেশের আইন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। দেশের আইনকে সমুন্নত রাখা দেশের প্রতি শ্রদ্ধারই আরেক নিদর্শন।

❖❖ প্রশ্নঃ তাহলে বার কাউন্সিল যদি বিশেষ বিবেচনা (ডিস্ক্রেশনারী) ক্ষমতা প্রয়োগ করে, তাহলেও কি পারবে না?

❖ উত্তরঃ না পারবে না। ‘ডিস্ক্রেশনারী’ পাওয়ার তখনই প্রয়োগ করা হয় যখন মূল আইনে অস্পষ্টতা বা এই ধরনের ইঙ্গিত থাকে। আমাদের আইনে স্পষ্ট করে এই ব্যাপারে বিধি নিষেধ দেয়া আছে। সুতরাং ডিস্ক্রেশন ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ ০%

❖❖ প্রশ্নঃ তাহলে আগরতলা মামলা তে কিভাবে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বিদেশী আইনজীবি এসেছিলেন এবং শেখ হাসিনার পক্ষে ২০০৭ সালে কিভাবে চেরী ব্লেয়ার মামলা লড়েছিলেন?

❖ উত্তরঃ আগরতলা মামলা হয়েছিলো ৬৭-৬৮ সালের দিকে। সেই সময় তৎকালীন পাকিস্তান বার কাউন্সিল আইনের সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের আইনের পার্থক্য রয়েছে। কেননা স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে এই ব্যাপারে আইন হয়েছে ১৯৭২ সালে (বাংলাদেশ লিগাল প্র্যাক্টিশনার্স এন্ড বার কাউন্সিল অর্ডার – ১৯৭২)। এইখানে বিদেশী আইনজীবি আসতে হলে তাকে প্রথমেই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। আর শেখ হাসিনার পক্ষে চেরী ব্লেয়ার কোনোদিন কোর্টে লড়েনি। তিনি শুধু হাসিনার পরামর্শক হিসেবে দেশে এসেছিলেন, কখনোই আদালতে দাঁড়াননি।

❖❖ প্রশ্নঃ এ ধরণের বিধান কি শুধু বাংলাদেশেই বিদ্যমান?

❖ উত্তরঃ না। এই ধরনের আইন মোটামুটি পৃথিবীর সব জায়গাতেই রয়েছে। খোদ ওই বিদেশী আইনজীবিদের দেশ ইংল্যান্ডেও বাইরের দেশের কেউ চাইলেই আদালতে দাঁড়াতে পারবে না তাদের আইন অনুযায়ী। তাদেরও এই ব্যাপারে বিভিন্ন নিয়ম-কানুনের কড়াকড়ি রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, অভিযুক্তদের পক্ষে পরামর্শ দানের জন্য বিদেশী আইনজীবিরা এরই মধ্যে বাংলাদেশে মোট ১৫ বার প্রবেশ করেছেন।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (ICSF)

১৯৭১ এ সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহের বিচারের মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতির নিরসন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত স্বাধীন বিশেষজ্ঞ, কর্মী এবং সংগঠনসমূহের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (ICSF)। বাংলাদেশে বর্তমানে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে পর্যবেক্ষণ, অনুশীলন এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যেই এই নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠা। এই সব উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এবং এর বিভিন্ন অঙ্গসমূহকে দালিলিক, আর্কাইভ এবং গবেষণা সহায়তা প্রদান করা ছাড়াও ট্রাইবুনালের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং দফতরসমূহের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ, মতামত এবং পরামর্শ বিনিময়, এবং ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ এই নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের অংশ। আইসিএসএফ এর কার্যক্রম, এর প্রকল্পসমূহ, এর সাংগঠনিক ইউনিটসমূহ এবং সাংগঠনিক নীতিমালাসমূহ সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত জানতে ঘুরে আসুন: http://icsforum.org

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.