আজ সেই দিন। বছরে একবার ক্ষমাপ্রার্থনাপূর্বক তোমাদের স্মরন করি এই ১৪ ডিসেম্বরে। এবারও করছি।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সূর্যের লালিমা যখন পূর্বাকাশে প্রজ্জ্বলিত হবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল, তখন শেষ রাতের আধো ঘুমের আলোয়ান উপড়ে ফেলে তোমাদের হাত-পা-চোখ-মুখ পিছমোড়া বেঁধে বধ্যভুমিতে নিয়ে যায় জাতিকে মেধাহীন অন্ধকার রাজ্যে পরিনত করার পাকিস্তানী বাসনার দেশীয় রূপকার রাজাকার-আলবদর চক্র। তোমরা আর ফিরে আসোনি তোমাদের সেই প্রিয় গৃহকোনে, হারিয়ে গিয়েছো চিরঘুমের দেশে।
কিন্তু সেই ঘাতকেরা ফিরে এসেছে, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমাজে। আমরা তাদের বিচার করার বদলে পুনর্বাসিত করেছি রাজনীতিতে, ক্ষমতার মসনদে বসিয়েছি। শাস্তি দেয়ার বদলে ক্ষমতার হাতবদলের হাতিয়ার করেছি, নির্বাচনের পার্টনার করেছি।
আজ হয়তো সেই ঘাতকেরাও তোমাদের স্মরনে সভা করবে, মিলাদ পড়াবে, আত্মার মাগফেরাত কামনা করবে। তোমাদের ব্যথিত আত্মা হয়তো নিশ্চুপ চেয়ে থাকবে বধ্যভুমির আকাশ থেকে। আর আমরা অক্ষম-ক্লীব জনগন নিজামী-মুজাহিদের সেই স্মরন-তামাশা চেয়ে চেয়ে দেখবো টেলিভিশনের পর্দায়।
আজ ১৪ই ডিসেম্বর ২০০৮। জাতির পক্ষ হতে আমার ৩৬তম ক্ষমা প্রার্থনা তোমাদের আত্মার কাছে।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
২ comments
মুয়িন পার্ভেজ - ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯ (২:৩০ পূর্বাহ্ণ)
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত শহিদ বুদ্ধিজীবীদের ‘ব্যথিত আত্মা’ শান্তি পাবে না ব’লেই মনে করি। আমাদের উচিত যুদ্ধাপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন ক’রে দেওয়া (যেমন রায়হান আবীর করেছেন), প্রাসঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা এবং জনমত তৈরিতে ভূমিকা রাখা। কথাটি অবশ্য ব’লে ফেলা অনেক সহজ — কাজ করার যথোপযুক্ত ক্ষেত্র (যেমন ‘WCSF’) থাকতেও নিঃসাড়তা অবলম্বন ক’রে অন্তত আমার পক্ষে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের কাছে ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ করা অন্যায়।
রেজাউল করিম সুমন - ১৫ ডিসেম্বর ২০০৯ (৫:৪৭ অপরাহ্ণ)
ঠিক এক বছর পর একটি মাত্র মন্তব্য! বিস্ময়কর। মুয়িনকে ধন্যবাদ দিকনির্দেশক মন্তব্যের জন্য। ধন্যবাদ পোস্টলেখক নীড় সন্ধানীকেও।