Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর
প্রাচীনকালপরবর্তী কাব্য
গোটা মধ্যযুগ ধরে লোকে লাতিন ব্যবহার করে গেছে, এমনকি কাব্য রচনা করার জন্যেও। অধিকাংশই লেখা হয়েছে সেই একই শৈলী আর একই মাত্রা ব্যবহার করে যা প্রাচীন কালের বড় বড় কবিরা ব্যবহার করেছেন। সেই প্রথা মধ্যযুগের পরেও শেষ হলো না। বরং রেনেসাঁর কালে তা আরো বেড়েছিল, এবং ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে বিপুল পরিমাণ লাতিন কাব্য রচিত হয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে ভার্জিলের শৈলীর অনুকরণে লেখা কিছু মহাকাব্য। ইউরোপজুড়েই এই প্রথা অনুসরণ করেছেন লেখকেরা; এক ইংল্যান্ডেই রয়েছে এ-সময়ের লেখা শত শত লাতিন কবিতা। কিন্তু সম্ভবত অল্প কিছু মানুষ-ই পড়েছে সেগুলো, যার বেশির ভাগই, প্রধানত, ভাষার পাণ্ডিত্যপূর্ণ অনুশীলন মাত্র, যদিও তারপরেও সেখানে সংস্কৃতি ও সমাজ বিষয়ক ইতিহাসবিদদের আগ্রহের প্রচুর খোরাক রয়েছে।
লাতিন ভাষায় এবং ধ্রুপদী শৈলীতে কেবল যে দ্বিতীয় সারির লেখকরাই লিখতেন তা নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, চতুর্দশ শতকে ইতালীয় মহান মানবতাবাদী কবি পেত্রার্ক ‘আফ্রিকা’ নামের এক চমৎকার মহাকাব্য রচনা করেন লাতিন ভাষায়। রোমক ও কার্থেজীয়দের মধ্যে সংঘটিত দ্বিতীয় পিউনিক যুদ্ধ নিয়ে লেখা এটি; এবং সেসময়ে সঙ্গত কারণেই যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছিল বইটি, যদিও আজ আর কেউ পড়ে না সেটি। সে তুলনায় ইতালীয় ভাষায় লেখা পেত্রার্কের প্রেমের কবিতাগুলো বরং এখনও রীতিমত সজীব ও বহুলপঠিত। একই কথা প্রযোজ্য জন মিল্টনের বেলাতেও, যিনি কিনা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কবিতা রচনা করেছিলেন লাতিন ভাষায়, যেগুলোর কথা আজ কেবল মুষ্টিমেয় বিশেষজ্ঞই জানেন। অন্যদিকে, ‘প্যারাডাইয লস্ট’ আজ একটি ইংরেজি ধ্রুপদী গ্রন্থ হিসেবে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তারপরেও, প্রাচীনকালপরবর্তী লাতিন কাব্য কেবলই স্রেফ প্রাচীন টেক্সটগুলোর অনুকরণ নয়। মধ্যযুগে এক নতুন ধরনের লাতিন কবিতা জন্ম লাভ করে, বিষয়বস্তু এবং আঙ্গিকের দিক থেকে যা ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। এই নতুন বিষয়বস্তু এলো খৃষ্টধর্মের হাত ধরে। মধ্যযুগে লিখিত কাব্যের বৃহত্তর অংশ খৃষ্টীয় বিষয় বস্তুকে কেন্দ্র করে আবর্তিত, আর সেটা যথেষ্ট স্বাভাবিক কারণেই, কারণ লাতিন ভাষা শেখা লোকজনের অধিকাংশই ছিল গির্জার অন্তর্ভুক্ত। সর্বোপরি ছিল স্তোত্র, সেই সব সহজ-সরল টেক্সট যা গির্জায় সমবত মানুষজন গাইতে পারে। কিন্তু সেই সঙ্গে ঈশ্বর ও সন্তদের বন্দনা করা বা মানুষকে আরো ভালো জীবনের দিকে চালিত করার জন্য রচিত অন্যান্য ধরনের কবিতাও ছিল বিস্তর।
আমরা আগেই দেখেছি, প্রাচীন ছন্দ ছিল দীর্ঘ আর হ্রস্ব দল (syllable)-এর পর্যায়ক্রমিকতা ভিত্তিক। কিন্তু লাতিন বদলে গিয়েছিল, এবং প্রাচীনকালের শেষ দিকে সেই ফারাকটা আর ছিল না কথ্য লাতিনে। খৃষ্টীয় কাব্যে তখন আরেকটি নীতি চালু করা হয়, আর তা নির্দিষ্ট স্বরাঘাত বা স্ট্রেস আর নির্দিষ্ট সংখ্যক দলের (syllable) ওপর ভিত্তি ক’রে। প্রাচীন ইংরেজি কবিতায় মোটামুটি একই মৌলিক নীতি পাওয়া যাবে, এবং সেটাই এখন কম-বেশি সাফল্যের সঙ্গে জনপ্রিয় সঙ্গীতের কথায় (lyrics) ব্যবহৃত হয়।
মধ্যযুগের টেক্সট আরো নিবিড়ভাবে আধুনিক টেক্সটের সদৃশ হয়ে ওঠে একটা কৌশল আবিষ্কারের কারণে যা কিনা চালু হয়েছিল প্রায় এক হাজার বছর আগে। প্রাচীনকালে সুসম্বদ্ধভাবে প্রতি চরণের শেষ শব্দের মিল ঘটানোর কোনো রীতি ছিল না, কিন্তু মধ্য যুগের গোড়ার দিকে এই কৌশলটি আবিষ্কৃত এবং ধীরে ধীরে বিকশিত হয় লাতিন এবং ফরাসি, জার্মান ও প্রোভেসাঁলের মতো নতুন জাতীয় ভাষাগুলোতে। অন্ত্যমিলের স্বভাবটি সম্ভবত লাতিন থেকে নব্য লিখিত ভাষাগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছিল, যদিও পরে শত শত বছর ধরে এই ভাষাগুলোতেই সেটা অব্যাহত থেকেছে। দলমাত্রিক গণনা (syllabic count), সুনির্দিষ্ট স্বরাঘাত, ও ছন্দকে কাজে লাগানো এসব নতুন লাতিন কাব্যিক কৌশলগুলোর উদাহরণ হিসেবে সবচাইতে সুপরিচিত খৃষ্টীয় স্তোত্রগুলোর একটির কথা বিবেচনা করতে পারি আমরা, যেটা ত্রয়োদশ শতকে সেলানোর টমাস নামে একজন ব্যক্তি রচনা করেছিলেন। এটা লঘু বা চপল কোনো রচনা নয় বরং শেষ বিচারের এক ভয়ংকর চিত্র আঁকা হয়েছে এখানে। আধুনিক স্তোত্রের বইগুলোতে এটা পাওয়া না গেলেও এমনকি আজও সঙ্গীত হিসেবে শোনা যায় এটি, কারণ এটা রেকুইয়াম মাস (Requiem Mass)-এর একটি অংশ। অনুবাদটি ইংরেজ ভিকার (চার্চ অভ ইংল্যান্ডের অধীন স্থানীয় গির্জার ভারপ্রাপ্ত যাজক) ও স্তোত্র রচয়িতা উইলিয়াম জোশিয়া আয়রন্স -এর, এবং এটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৪৮ খৃষ্টাব্দে।
Day of wrath and doom impending,
David’s word with Sibyl’s blending!
Heaven and earth in ashes ending!
O what fear man’s bosom rendeth
When from heaven the judge descendeth.
On whose sentence all dependeth!
Wondrous sound the trumpet flingeth,
Through earth’s sepulchres it ringeth,
All before the throne it bringeth.
অনুবাদটি মূলের চরণ ও ছন্দ বিন্যাসের যথেষ্ট কাছাকাছি; মূল লাতিনের সঙ্গে তুলনা করলেই আমরা তা বুঝতে পারি।
Dies irae, dies illa
solvet saeclum in favilla
teste David cum Sibylla.
Quantus tremor est futurus
quando iudex est venturus
cuncta stricte discussurus.
Tuba, mirum spargens sonum
per sepulchra regionum,
coget omnes ante thronum.
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১ comment
Pingback: লাতিন ভাষার কথা : ৩৭ | জি এইচ হাবীব