গেল ৯ ডিসেম্বর ছিল বাংলার নারীজাগরণের অগ্রদূত, সুসাহিত্যিক ও অগ্রসর চিন্তাবিদ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম এবং প্রয়াণ দিবস। ঘটনাক্রমে এই দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার, ‘বিশদ বাঙলা’র নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানের দিন। অতএব এই দিনটিতে রোকেয়াকে নিয়ে কিছু একটা করা আমাদের তরফে প্রায় অপরিহার্য হয়ে পড়ে। কিন্তু আমরা আর সবার মত গতবাঁধা কোনো আলোচনা অনুষ্ঠান কী স্মরণসভা-জাতীয় কিছু করতে চাই নি। রোকেয়াকে নিয়ে ভিন্নধর্মী কী করা যায় ভাবতে ভাবতেই মনে হল এই উপলক্ষে ‘ট্রিবিউট টু রোকেয়া’ শিরোনামে চট্টগ্রামের নারীশিল্পীদের একটা যৌথ প্রদর্শনী করতে পারলে চমৎকার হত। কিন্তু হাতে সময় খুব কম, সাকুল্যে সপ্তাহখানেক। তবু সাহস করে কথাটা পাড়ি আমাদের সকলের প্রিয় ও শ্রদ্ধাভাজন শিল্পী নাজলী লায়লা মনসুরের কাছে। তিনি অভয় দিয়ে বললেন শিল্পীদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করতে এবং সেইসাথে কয়েকজন সম্ভাব্য শিল্পীর নাম ও জরুরি কিছু পরামর্শও দিলেন। সেইমত কাজ করতে নেমে শিল্পীদের কাছ থেক অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেল এবং অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে এক সপ্তাহের মধ্যেই নবীন প্রবীণ দশজন শিল্পীর কাজ যোগাড় হয়ে গেল, যার মধ্যে কয়েকটি কাজ তো একেবারে আনকোরা নতুন এবং অন্তত তিনটি কাজ সরাসরি রোকেয়াকে নিয়েই করা। এই দশজন শিল্পী হলেন নাজলী লায়লা মনসুর, নাসিমা মাসুদ রুবী, দিলারা বেগম জলি, নিলুফার চামান, সুফিয়া বেগম, শায়লা শারমিন, হাসনাহেনা পরশ, শতাব্দী সোম, তানিয়া ইসলাম ও তাসলিমা আক্তার বাঁধন। এঁদেরই দশটি বৈচিত্র্যময় শিল্পকর্ম, যার মধ্যে দুটো স্থাপনাকর্ম ও একটি পটচিত্র, নিয়ে রোকেয়া দিবসে বিশদ বাঙলা-র ছোট্ট ও অন্তরঙ্গ চিত্রশালায় যথাসময়েই শুরু হল ‘ট্রিবিউট টু রোকেয়া’ নামের এই সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী। প্রদর্শনী উদ্বোধন করার জন্য বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও রোকেয়া-বিশেষজ্ঞ ফেরদৌস আরা আলিমকে অনুরোধ করলে তিনি সানন্দে সম্মতি জানান এবং উদ্বোধনী দিনে একটা অসাধারণ বক্তৃতা দিয়ে উপস্থিত সকলকে চমৎকৃত করেন। তো ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় সেই প্রদর্শনীটির একটি বৈদ্যুতিন সংস্করণ মুক্তাঙ্গনের আন্তর্জালিক দর্শকদের জন্য উপস্থাপিত হল এখানে।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৪ comments
ডাঃ আতিকুল হক - ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ (২:০৭ অপরাহ্ণ)
চমৎকার লাগল আপনাদের প্রচেষ্টা। ভীন্নধর্মী সন্দেহ নেই। প্রনর্শনীর অনলাইন সংস্করন দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা। আপনাদের মত উদ্যোগী মানুষদের প্রচেষ্টায় সরগরম থাকুক চট্টোগ্রামের সাংস্কৃতিক অঙ্গন সারাবছর। শুভ কামনা রইল।
ডাঃ আতিকুল হক - ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ (২:১০ অপরাহ্ণ)
অনিচ্ছাকৃত কিছু বানান ভুল হয়েছে। সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, লজ্জার হাত থেকে বাঁচব।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ (৩:১০ অপরাহ্ণ)
অতি চমৎকার আয়োজন, আমার আরও ভালো লাগছে যে উদ্ভোধনী-দিনেই এ প্রদর্শনী দেখার সুযোগ হয়েছিল।
নুর নবী দুলাল - ১৫ ডিসেম্বর ২০১০ (৩:৪৬ পূর্বাহ্ণ)
চমৎকার এই উদ্দ্যেগের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ দিতেই হয়। ব্যাক্তিগত কাজে ঢাকায় থাকার কারনে, চট্টগ্রামের বাসিন্দা হয়েও এমন একটি আয়োজন স্বচক্ষে দেখার অভাবটি কিছুটা হলেও নিবারন করলেন আলম খোরশেদ-এর পোষ্টটি। শিল্পকর্মের ছবিগুলো দেখে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালেও, স্বচক্ষে প্রদর্শনী দেখার দায়বোধ থেকে পরিত্রান পেলাম।