প্রয়োজনে ঘৃণা করার দুঃসাহস দেখাব

ইদানীং দেশের একজন বড় আইনজীবী প্রায়শই বলেন, চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযান সফল করতে এবং সমাজকে দুর্নীতির রাহুমুক্ত করতে তিনি প্রয়োজনে জীবন দেবেন। জীবন দেয়া সহজ কাজ নয়। জলপাই-আশ্রিত কেউ জীবন দেয় না। ফলে, এটা তাঁর কথার কথা। মানে বাজে কথা। ইদানীং তিনি আরো একটি কাজ প্রায়ই করেন। বেশ রেগে যান, ধমক-ধামক দেন, চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন বক্তৃতা-সভায়। বলেন, “যথেষ্ট হয়েছে — আসুন, এই সরকারের সাথে একযোগে কাজ করি।” তিনি বলেন, “এ সরকারের কোনো মেয়াদ নেই। ইলেকশন না হলে তার দায়ভার নেই।” প্রয়োজনে তিনি সাংবিধানিক ব্যাখ্যা দেবেন। কারণ, জনগণ সকল ক্ষমতার মালিক হলেও সংবিধানের মালিক হতে পারেনি। আজ অবধি নয়। এটার মালিক তিনি। এটা বোঝেন কেবল তিনি এবং আরো কিছু স্বঘোষিত সংবিধান বিশেষজ্ঞ। আর কিছু চাটুকার এঁদের মহান করে তোলেন, প্রতিনিয়ত।

সুপ্রীম কোর্ট সংবিধানের অভিভাবক। এতদিন এটাই জানতাম। কিন্তু বর্তমান সরকারের মেয়াদ প্রশ্নে, স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে, দুদক-এর কার্যক্রম প্রশ্নে এবং আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ আইনগত প্রশ্নে সুপ্রীমকোর্টের মতামত নেয়ার বদলে বড় আইনজীবীর মতামত চাওয়া হচ্ছে। তিনি বিধান দিয়ে চলেছেন, শাস্ত্র বিচার করে। তাঁর এই বিধান যেন ইতিহাসের অমোঘ নিয়ম। রাষ্ট্রীয় প্রচার চালানো হচ্ছে এভাবেই। সন্তানের করুণ পরিণতি দেখছেন অভিভাভক, অসহায়-স্বাধীন চোখে!

অনেক আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালিকে সতর্ক করেছিলেন — শাস্ত্রবেত্তা এই ব্রাহ্মণকুল অনেক রকম বিধান দিয়ে থাকেন, দক্ষিণার জোরে। কোত্থেকে দক্ষিণা আসছে, জানতে চাই, মনে সন্দেহ বাড়ছে। এবং তা জোরালো হচ্ছে। মানুষের ধনসম্পদ যারা লুণ্ঠন করে তারা তস্কর। সংবিধান লংঘন করে দেশ যারা শাসন করে তারা ডাকাত। সবচেয়ে বড় দুর্বৃত্ত। একটা জাতির সম্মিলিত ইচ্ছার দলিল সংবিধান। এই দলিলের তোয়াক্কা না করে দেশ চালানো শুধু দুর্নীতিই নয়, দেশদ্রোহিতাও বটে। এই দেশদ্রোহীদের সাথে একই ছাতার তলে বসে দুর্নীতি নির্মূলের ডাক দেয়া এবং জীবন বলিদান করার ঘোষণা দেয়া জাতির সাথে প্রতারণার শামিল। ১৬৬ জনকে ক্রস ফায়ার করে, আদিবাসী হত্যা করে, তাদের জীবন বিষিয়ে তুলে, সাংবাদিক নির্যাতন করে, শিক্ষকদের অপমান করে, জনগণের মৌলিক মানবিক অধিকার বছরের পর বছর শিকেয় তুলে রেখে, শ্রমিক অসন্তোষ ও মূল্য সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিয়ে জীবনের সর্বক্ষেত্রে চূড়ান্ত ধস নামানোর আয়োজন যারা আজ করছে — তারা দেশদ্রোহী, সন্ত্রাসী, বর্বর। এদের সহযোগী শাস্ত্রবিশারদগণ। এখনও সম্মান দিতে চাই, যেমনটা সবসময় দিয়েছি। জাতিকে বিভ্রান্ত করা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। নইলে ঘৃণা করার দুঃসাহস দেখাব।

সৈকত আচার্য

আইনজীবি। ব্লগার।

১৩ comments

  1. রেজাউল করিম সুমন - ২৭ জুন ২০০৮ (১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ)

    কেবল ঘৃণা দিয়ে বুদ্ধিজীবিতার এই পরাভব আর দেশ ও জাতির এই নিরুদ্দেশ যাত্রা ঠেকানো যাবে না…

  2. মাসুদ করিম - ১০ জুলাই ২০০৮ (৩:০০ পূর্বাহ্ণ)

    বাংলাদেশে লুটেরাদের সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি সুশীলকান্তরা, যেমনি বাংলাদেশে জঙ্গীদের সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি মৌলবাদী প্রতিষ্ঠিত মাওলানারা। হ্যাঁ এদেরকে ঘৃণা করাই উচিত, কিন্তু একে কী দুঃসাহস বলা যায়।

  3. মাসুদ করিম - ৪ জানুয়ারি ২০১২ (২:১০ অপরাহ্ণ)

    আজকের সমকালে রাহাত খানের কলামে কামাল হোসেন নিয়ে কিছু কথা এখানে উদ্ধৃত করে রাখা প্রয়োজনীয় মনে হল।

    মহামান্য রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান কর্তৃক আহূত ইসি সংলাপে যোগ দিয়ে আরও দুটি ক্ষুদ্র দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গত ২ জানুয়ারি তাদের আলাদা প্রস্তাবে জাতীয় নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে। এর আগের দিন সংলাপে বসে বর্ষীয়ান আইনজীবী ও রাজনীতিক ড. কামাল হোসেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে।
    ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যটি উল্লেখ ও পর্যালোচনার দাবি রাখে। তিনি তো শুধু একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী নন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি। আইন পেশা থেকে বঙ্গবন্ধুই তাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসেন। তবে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অধিকাংশ সময় তিনি কাটিয়েছেন তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানে। শ্বশুরবাড়ির নিরাপদ আশ্রয়ে। ১৯৭১ সালে বাঙালির সেই জান-তোলপাড় মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে দেশে বা বিদেশে টুঁ শব্দটিও করেননি। করেছেন এমন কোনো প্রমাণ কোথাও নেই।
    এরপরও যৌথ বাহিনীর হাতে বর্বর পাকিস্তান বাহিনীর পরাজয়, আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ এবং দেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পর বিশ্ব জনমতের চাপে দুঃসহ কারাবাস থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যখন মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার, তখন সৌজন্যবশে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান সরকারের কাছে বন্ধুত্বসুলভ কোনো উপহার আশা করেন কিনা। বঙ্গবন্ধুর তাৎক্ষণিক জবাব ছিল : আমার কামালকে (ড. কামাল হোসেন) আমার সঙ্গে বাংলাদেশে যেতে দিন।
    বঙ্গবন্ধুর সেই স্নেহধন্য কামাল হোসেন লন্ডন ও দিলি্ল হয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেই ১০ জানুয়ারি (১৯৭২) একই প্লেনে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। আইনজীবী ও কূটনীতিক বিবেচনায় অযোগ্য লোক ছিলেন না ড. কামাল হোসেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে বৃত হন।
    তারপর রাজনীতিতে বহু রহস্যজনক এবং কোনোদিনই জবাব না পাওয়া বহু ঘটনা ঘটেছে। বঙ্গবন্ধুর নৃশংস ঘটনার ঠিক আগে আগে হঠাৎ উচ্চ পর্যায়ের একটি স্কলারশিপ নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন কেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেলেন সে এক দুর্জ্ঞেয় রহস্য। ১৯৮০ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং রাজনীতিতে তাকে সংস্থিত করার ব্যাপারে ড. কামাল হোসেনের একটা ইতিবাচক সক্রিয় ভূমিকা ছিল। অস্বীকার করার উপায় নেই, সে সময় আওয়ামী লীগের একজন গর্ব করার মতো নেতা তিনি ছিলেন। কিন্তু তারপর কী ঘটল? কী ঘটেছিল? এরশাদবিরোধী আন্দোলন যখন সাফল্যের তুঙ্গে, হঠাৎ আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হলেন বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য ‘আমার কামাল’, রাজনীতিবিদ ড. কামাল হোসেন।
    বিষয়টি সে সময়ে আমাকে এবং দেশের দল নির্বিশেষে বহু লোককে বিচলিত করেছিল। দুঃখ পেয়েছিলাম খুব। সেই দুঃখের কথা জানিয়েও ছিলাম জাতীয় নির্বাচনে পরাজিত এবং মনের দিক দিয়ে একটুও ভেঙে না পড়া আওয়ামী লীগ নেত্রী, বর্তমানের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এর তাৎক্ষণিক জবাবও আমাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনটি ফটোগ্রাফ দেখানো হয় আমাকে। একটি ফটোগ্রাফে দেখা যায়, কামাল হোসেন ও ঢাকায় পাকিস্তানের তদানীন্তন রাষ্ট্রদূতকে নিচু টেবিলে খুব কাছাকাছি মুখোমুখি বসে কথা বলতে। দ্বিতীয় ছবিতে খুবই কাছাকাছি এবং মুখোমুখি বসা অবস্থায় দেখা যায় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এবং তখনও আওয়ামী লীগের খুবই প্রভাবশালী নেতা ড. কামাল হোসেনকে। তৃতীয় ফটোগ্রাফটি খুব কাছাকাছি গোল হয়ে বসে আলাপরত অবস্থায় দেখা যায় ঢাকার তদানীন্তন পাকিস্তানি হাইকমিশনার, ড. কামাল হোসেন ও খালেদা জিয়াকে। একই রকম নিচু টেবিলে। একই পোশাকে।
    জীবনানন্দ দাশের কবিতার ভাষায় বলতে হয় : কি কথা তার সাথে? তাহার সাথে! তবে জীবনানন্দ দাশ প্রসঙ্গের ইতি টেনে বলি, আওয়ামী লীগ থেকে ড. কামাল হোসেনের বহিষ্কারের জবাব আমি পেয়ে গিয়েছিলাম। পলাশী যুদ্ধের আগে মেহেরপুরের নীলকুঠিতে নদীপথে বিশেষ বজরায় করে ঘসেটি বেগম, জগৎ সিং, রাজবল্লভ প্রমুখ লোকজন আসতেন রবার্ট ক্লাইভ এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের সঙ্গে দেখা করতে। এ ঘসেটি বেগমরা নিশ্চয় মেহেরপুর নীলকুঠিতে শুধু সুস্বাদু আম খেতে যেতেন না!
    তবু এই আইনজীবী ও পার্টটাইম রাজনীতিকের নাম ড. কামাল হোসেন। এখনও বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক নন। খ্যাতির শীর্ষে ওঠা একজন আইনজীবী তো বটেই, গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিকও বটে। অত্যন্ত সম্মানিত। অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়। গত ১ জানুয়ারি সংলাপে বসে মহামান্য রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছেন তিনি। বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি শুধু বিএনপির নয়, গোটা জাতির। গোটা জাতি বলতে ড. কামাল হোসেন কী বোঝাতে চান, তা তিনিই জানেন।

    লিন্ক এখানে

  4. মাসুদ করিম - ১৮ মে ২০১৭ (৯:১৯ পূর্বাহ্ণ)

    অ্যাটর্নি জেনারেলকে ‘জারজ’ বললেন কামাল হোসেন

    দেশের সর্বোচ্চ আদালতে প্রধান বিচারপতির এজলাসে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলমকে ‘জারজ’ বলেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল হোসেন।

    বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নিয়োগপ্রাপ্ত ১৩৮ জন চিকিৎসকের নিয়োগের বৈধতা নিয়ে এক মামলার শুনানিতে বুধবার এই ভাষা ব্যবহার করেন তিনি।

    আদালতে চিকিৎসকদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল হোসেন, এম আমীর উল ইসলাম ও কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া ও তানিম হোসেইন শাওন।

    অপরদিকে বিএসএমএমইউর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও আইনজীবী তানজিব উল আলম।

    মাহবুবে আলম বক্তব্য উপস্থাপনের পর আদালত কামাল হোসেনের বক্তব্য জানতে চান।

    কামাল হোসেন তখন বলেন, “সিন্ডিকেটে এক সময় (বিএনপি-জামায়াত জোটের সময়) ডাক্তারদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এখন ওনারা সেই সিন্ডিকেটের বিপক্ষে স্ট্যান্ড নিচ্ছে। এগুলো হলো ইন্টেলেকচুয়াল প্রস্টিটিউশন।”

    এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল দাঁড়িয়ে এ ধরনের শব্দ চয়নে আপত্তি জানান। তখন তাকে উদ্দেশ্য করে কামাল হোসেন বলেন, “শাটআপ, বাস্টার্ড। ইউ টেক ইউর সিট।”

    প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “ইউ ক্যান নট আটার দিজ ওয়ার্ড।”

    এ সময় প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপে কামাল হোসেন তার আসনে বসে পড়েন।

    ওই সময় প্রধান বিচারপতি ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, “আপনি একজন সিনিয়র আইনজীবী, এ ধরনের শব্দ চয়ন ঠিক না।”

    তখন অ্যাটর্নি জেনারেল প্রধান বিচারপতিকে বলেন, “আপনিতো ওনাকে তোষামোদ করলেন। একজন সিনিয়র অ্যাডভোকেট যেভাবে আমাকে গালি দিল এটার কী হবে?”

    এই পর্যায়ে আদালত বিরতিতে যায়। পুনরায় আদালত বসার পর কামাল হোসেন এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে ক্ষমা চান।

    পরে এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য সুপ্রিম কোর্টে কামাল হোসেনের চেম্বারে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

    মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৮ অক্টোবর চিকিৎসক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। ওই বছর ডিসেম্বর থেকে ২০০৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত কয়েকশ চিকিৎসককে নিয়োগ দেওয়া হয়।

    ওই বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) বর্তামান সভাপতি অধ্যাপক এম ইকবাল আর্সলান।

    ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাই কোর্ট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা আপিলের অনুমতি (লিভ টু আপিল) চেয়ে আবেদন করেন।

    শুনানির পর আপিল বিভাগ গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে হাই কোর্টের রায় বহাল রাখে।

    এই খারিজের আদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১১০ জন চিকিৎসক আবেদন (রিভিউ) করেন। এই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ রিভিউ গ্রহণ করে আপিল করার অনুমতি দেয়।

    এরপর ওই চিকিৎসকরা পৃথক পাঁচটি আপিল করেন, যার ওপর শুনানি বুধবার শেষ হল।

    আগামী ২১ মে আপিল বিভাগ আবেদনগুলোর ওপর আদেশের দিন রেখেছেন বলে আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন জানান।

    তিনি বলেন, ২০১৬ সালের মার্চ থেকে ওই চিকিৎসকরা বেতন পাচ্ছেন না। ওই বছরের এপ্রিল থেকে তাদের হাজিরায় সই করতে দেওয়া হচ্ছে না।

  5. মাসুদ করিম - ৫ নভেম্বর ২০১৮ (১০:০৭ অপরাহ্ণ)

  6. মাসুদ করিম - ১৭ নভেম্বর ২০১৮ (৮:০৬ অপরাহ্ণ)

    খেসারত অনেক হয়েছে, আর ভোট বর্জন নয়: কামাল

    একবার ভোট বর্জন করায় অনেক খেসারত দিতে হয়েছে মন্তব্য করে আর নির্বাচন বয়কটের আওয়াজ না তুলতে জোট নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন।

    পাশাপাশি সরকারের প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

    এই দাবির পক্ষে যুক্তি দিয়ে কামাল হোসেন বলেছেন, দীর্ঘ দিন পরে দেশে একটি ‘গ্রহণযোগ্য’ নির্বাচন হতে চলায় প্রধান বিরোধী দলের নেত্রীকে কারাগারে রাখা সমীচীন হবে না, যেখানে অপর প্রধান দলের নেত্রী সরকার প্রধান থাকছেন।

    পাঁচ বছর আগে জাতীয় নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহতের ডাক দিয়ে ব্যর্থ হওয়া বিএনপিকে নিয়ে এবার ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তুলেছেন কামাল হোসেন। এই জোট থেকেই এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি।

    নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ও খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিএনপির দাবিগুলো পূরণ না হলেও দলটি নির্বাচনে আসায় দীর্ঘ দিন পর সরগরম হয়েছে রাজনীতির মাঠ। প্রার্থী বাছাইয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও জমা ঘিরে প্রতিদিন নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে ঘটছে হাজারো নেতাকর্মীর সমাবেশ।

    তবে এর মধ্যে গত বুধবার নয়া পল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর নির্বাচন কমিশনে গিয়ে এর জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির নির্বাচনে থাকা না থাকা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আচরণের ওপর নির্ভর করবে বলেও হুমকি দেন তিনি।

    এই প্রেক্ষাপটে শনিবার ঢাকায় এক সমাবেশে কামাল হোসেন বলেন, “আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠ নির্বাচন চাই। আর আমি সবাইকে হাতজোড় করে বলব, বয়কট বয়কট আমরা করব না।

    “একবার করে আমাদের যে খেসারত দিতে হয়েছে। এটা যাতে কোনো দিন আর না দিতে হয়।”

    সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিতে ‍তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান তিনি বলেন, “যত রকমের দশনম্বরি তারা করে, আমরা ভোট দেব। আপনারা তৈরি হন। আমরা হাজারে হাজারে গিয়ে ভোট দেব। আপনারা ঘরে ঘরে যাবেন। ভোট চাইবেন। এর জন্য দুই কোটি তরুণ ভোটারদেরও এগিয়ে আসতে হবে।”

    রাজধানীর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে বিকেলে জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত আইনজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পেশায় আইনজীবী কামাল হোসেন।

    খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি ‘খুবই ন্যায়সঙ্গত’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দেশের একটি বিরোধী দলের প্রধান ছিলেন তিনি। যেহেতু একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এতদিন পরে হতে যাচ্ছে, তাতে একটা দলের নেত্রী সরকারের প্রধান থাকবেন, আর আরেক দলের নেত্রীকে সেই সেন্ট্রাল জেলে রেখে অপমান করা হবে-এটা একদমই মেনে নেওয়া যায় না।

    “উনাকে (খালেদা জিয়া) মুক্ত করা দরকার, যাতে উনি তার নেতাদের নিয়ে দেশের মানুষের কাছে গিয়ে নির্বাচনে ভোট চাইতে পারেন।”

    খালেদা জিয়া ছাড়াও হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাবন্দি করা হয়েছে অভিযোগ তুলে কামাল হোসেন বলেন, প্রতিদিনই নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের তথ্য পাচ্ছেন তিনি।
    “এভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না, সাংবিধানিক শাসনও থাকবে না। দেশ একটা অরাজকতার মধ্যে পড়বে। এজন্য তার (খালেদা) মুক্তি দেওয়া দরকার।”

    ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “সকলের মতামত উপেক্ষা করে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে কেন ইভিএম ব্যবহার করা হবে? এই সরকারের বড় ঘাটতি হল- এরা পাচঁজন যা মনে করে, তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। জাতীয় নীতির তোয়াক্কা না করে তারা এসব করছে।”

    সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের প্রসঙ্গ টেনে এই আইনজীবী বলেন, “সাতজন বিচারপতি মিলে একটা রায় দিলেন কিন্তু কথা শুনতে হলো সিনহা সাহেবকে। এতো লজ্জা আমি জীবনে পাইনি, যেদিন দেখলাম কোনো একজন মন্ত্রী যখন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে বলেছিলেন, ‘তোকে কে নিয়োগ দিয়েছিল?’

    “একজন প্রধান বিচারপতিকে কেউ এভাবে বলতে পারে না। সে যে-ই হোক। যে এসব কথা বলেছে তার আদালত অবমাননা এখনো হতে পারে বলে আমি মনে করি।”

    এই ঔদ্ধত্য দেখানোর ফল ভোগ করতেই হবে বলে মনে করেন কামাল হোসেন: “আজকে হোক, কালকে হোক- কেউ পার পাবে না। ক্ষমতায় থাকলে যে কেউ, যা খুশি করে পার পাবে না- এটাই বাংলাদেশ।”

    ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকার গঠনের সমালোচনা করে কামাল হোসেন বলেন, “দুঃখজনক হলেও সত্যি গত পাঁচ বছর দেশ যেভাবে শাসিত হয়েছে এটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে আমি জানি না।

    “২০১৪ তে একটা নির্বাচন হয়েছিল। পরে বিষয়টা যখন কোর্টে আসলো অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আমাকে ডেকেছিল। কোর্ট জিজ্ঞেস করেছিল, আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন। আমি বললাম যে, মূল্যায়ন করলে তো দুই মিনিটেই বলা যায় যে এটা কোনো নির্বাচনই ছিল না। আরেকটা নির্বাচন করতে হবে।

    “সরকার তো বলছে, দ্রুত আরেকটা নির্বাচন করবে। সরকারের পক্ষের লোকই সেখানে বলেছে, তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য একটা সরকার করে নেওয়া হয়েছে, সকলের সঙ্গে আলোচনা করছি যেন দ্রুত একটা নির্বাচন করা যায়।”

    ওই কথায় তিনিও আশ্বস্ত হয়েছিলেন জানিয়ে প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, “তখন আমি কোর্টকে বললাম, আমার কিছু বলতে হবে না, তারা তো নিজেরাই বলছে যে, একটি পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য করেছে, তারাও এটাকে ডিফাইন করতে পারছে না, বলছে দ্রুত আরেকটা নির্বাচন দেবে।”

    এই দ্রুত মানে কি পাঁচ বছর?-প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “সরকার এত হালকা হয়ে গেছে যে, তারা এ রকম কথা বলে যে, তার অর্থও তারা বোঝে না। দ্রুত মানে কি পাঁচ বছর? আমি জানতে চাই। যারা আজ সরকারের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তারা দেখেন ২০১৪ তে দাঁড়িয়ে আপনারা কী বলেছিলেন। যদি কথাগুলো মনে না থাকে তাহলে কোর্টের অর্ডার বের করে দেখেন।

    “১৬ কোটি মানুষের দেশ। এই দেশে সরকার যদি কোনো কথা বলে তবে দায়িত্ব নিয়ে কথা বলতে হয়। ষোলো কোটি মানুষকে যা-তা বলে পাঁচ বছর এ ধরনের শাসন বজায় রেখেছে।”

    বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান কামাল বলেন, “সংবিধানের মৌলিক কথা হচ্ছে, জনগণ ক্ষমতার মালিক। কিন্তু জনগণ যদি তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে তাদের ক্ষমতা না প্রয়োগ করাতে পারে তাহলে স্বাধীনতার উপরে আঘাত দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন থাকে না। এই দেশটাকে পরাধীন দেশ বানাতে দিতে পারি না। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতার অর্থ হলো জনগণ এই ক্ষমতার মালিক।

    “কিন্তু এই পাঁচ বছরে মূলত এই দেশকে যেভাবে শাসন করা হয়েছে,তা জনগণের সাথে ভাওতাবাজি ছাড়া কিছু না।”

    সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের কঠোর সমালোচনা করে গণফোরাম সভাপতি বলেন, “মন্ত্রী যে বলা হচ্ছে, এরা কারা? উপদেষ্টা, এরা কারা? তারপর যাদেরকে মেম্বার বলা হচ্ছে তারা কারা? আলহামদুলিল্লাহ, অবৈধ ১৫৪ জন মনোনীত। তারা বলে এমপি। এই এমপি মানে মনোনীত প্রার্থী। এমপি যে মেম্বার অব পার্লামেন্ট- এটা কোনোভাবেই বলা যাবে না।

    “আমি বলি কিছু না, একটু লজ্জাবোধ ফিরে আসুক আমাদের যারা এগুলো করেন লজ্জাহীনভাবে। আমাদের মহামান্য যারা আছেন, এমপি, মন্ত্রীদের একটু লজ্জাবোধ ফিরে আসুক। মানুষের সন্তানের লজ্জাবোধ থাকে। আপনারা লজ্জাহীনভাবে এগুলো করে যাবেন, এটা হয় না। পাঁচ বছর চালিয়ে গেছেন। বলছেন, আমি এমপি। আপনি কাদের এমপি? কে আপনাকে নির্বাচিত করেছে?

    “এটার জন্য নতুন কোনো শব্দ বের করতে হবে। বলতে হবে জিপি, ঘোষিত প্রতিনিধি। এখন থেকে আমাদের এমপি না লিখে জিপি লেখা শুরু করতে হবে। ঘোষণার কত জোর? ঘোষণা করে দিল এমপি হয়ে গেল? ঘোষণা করে দিলাম মন্ত্রী হয়ে গেল? এই ঘোষণার শক্তিটা কোথা থেকে আসে, সংবিধনের কোথায় লেখা আছে?”

    মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক জয়নুল আবেদীন। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    এছাড়াও আইনজীবী সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, গণফোরাম ও আইনজীবী নেতা সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, বিনেপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খালেদা জিয়ার আইনজীবী ছানাউল্লাহ মিয়া প্রমুখ।

    এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা বার থেকে আসা বিএনপিপন্থি আইনজীবীরাও সমাবেশে বক্তব্য দেন।

    সভাপতির বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বিএনপির নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তিসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।

  7. মাসুদ করিম - ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ (৯:১৭ অপরাহ্ণ)

    জামায়াত নিয়ে প্রশ্নে কামাল বললেন ‘খামোশ’

    শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে ক্ষেপে গেলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা কামাল হোসেন।

    প্রশ্নকারী সাংবাদিকদের ‘চিনে রাখার’ কথাও বলেছেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ।

    গণফোরাম সভাপতি কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়ে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান।

    জোটের নেতাদের মধ্যে জেএসডির আসম আবদুর রব, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক ও রেজা কিবরিয়া, বিএনপির আবদুস সালাম এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।

    শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কামাল বলেন, “স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে, লোভ লালসা নিয়ে লুটপাট করছে, তাদের হাত থেকে এই দেশকে মুক্ত আমরা করবই। যত শক্তিধর হোক তারা, দেশের মালিক জনগণের কাছে তাদের নত হতে হবে, তাদের পরাজয় হবেই।”

    সাংবাদিকরা এ সময় স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কামাল বলেন, শহীদ মিনারে এসব বিষয়ে কোনো কথা তিনি বলবেন না।

    এরপরও সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে থাকেন। একজন বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। তারপরও তারা ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে নির্বাচন করছে।

    ৮১ বছর বয়সী কামাল এসময় ক্ষেপে ওঠেন। তিনি বলেন, “প্রশ্নই ওঠে না। বেহুদা কথা বল। কত পয়সা পেয়েছ এই প্রশ্নগুলো করতে? কার কাছ থেকে পয়সা পেয়েছ? তোমার নাম কি? জেনে রাখব তোমাকে। চিনে রাখব। পয়সা পেয়ে শহীদ মিনারকে অশ্রদ্ধা কর তোমরা। আশ্চর্য!

    পাশে থাকা দুই একজন নেতা এ সময় কামাল হোসেনকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আরেকজন সাংবাদিক এ সময় প্রশ্ন চালিয়ে গেলে ধমকে ওঠেন কামাল।

    “শহীদদের কথা চিন্তা কর। হে হে হে হে করছে! শহীদদের কথা চিন্তা কর। চূপ কর। চুপ কর। খামোশ।”

    পরে তিনি হাপাতে হাপাতে প্রশ্ন করেন, “আশ্চর্য! তোমার নাম কি?… কোন পত্রিকার?… টেলিভিশন, জেনে রাখলাম।

    নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরোধিতায় বিএনপিকে নিয়ে যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়, আওয়ামী লীগ নেতারা তখন একে ‘সাম্প্রদায়িক জোট’ আখ্যায়িত করেছিলেন জোটের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সখ্যের কারণে।

    তবে কামাল সে সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে কোনো ‘বৃহত্তর ঐক্যে’ তিনি যাবেন না।

    সারা জীবন যেটা করেননি, শেষ জীবনে তা কেন করতে যাবে- সেই প্রশ্ন তখন রেখেছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা কামাল।

    তবে এবারের নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের চেয়ে জামায়াতই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বিএনপি কাছে। নিবন্ধন হারানোয় জামায়াতের ২২ জন প্রার্থী এবার ভোট করছেন বিএনপির মনোনয়নে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে। এই হিসেবে তারা কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টেরও প্রার্থী।

  8. মাসুদ করিম - ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ (১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ)

    ডঃ কামাল হোসেন বড় ঘরের ছেলে, ইউটিউবের এক ভিডিওতে দেখলাম তাঁর বাবা ডাক্তার এবং জমিদার পরিবারের সন্তান, তিনি বাল্যকালে কলিকাতায় বড় হয়েছেন। বিলাতি আমলের কলিকাতা কেন্দ্রিক এলিট মুসলমান পরিবার, তার মানে বাড়িতে বাংলা চলতো না, চলতো উর্দু আর ইংরেজি। ৪৭ এ দেশ ভাগের পরে তাঁরা পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। কলিকাতার রোশনাই ছেড়ে ঢাকায় এসে মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু কি আর করা, মানিয়ে তো নিতেই হবে। পূর্ব পাকিস্তানের চাষা ভুষোরা বাংলা উর্দু কিছুই বোঝে না, এদের সাথে মিলতে গিয়ে এরা খানিকটা বাংলাও শিখে ফেলেন। তবে কলিকাতায় মনের ভুলে হিন্দু পাড়ায় ঢুকে পড়লে চড় থাপ্পড় খাওয়ার যে অভিজ্ঞতা ছিল, সেটা থেকে তাঁরা মুক্তি পান। সব মিলিয়ে তাঁরা ভবিষ্যৎ ভালই দেখছিলেন, ওপারে পশ্চিম পাকিস্তানের এলিট মুসলমান, এপারে পূর্ব পাকিস্তানের এলিট মুসলমান। এনাদের ছেলেমেয়েরা দেশে মিশনারি স্কুলে বারো ক্লাস পর্যন্ত পড়ে অক্সফোর্ডে ওকালতি পড়তে যাবে, দুয়েকবছর বিলাতে ওকালতি করে এসে দেশে ফিরে এসে ব্যারিস্টারি বা জজিয়তি করা, এদের মধ্য থেকেই যাদের মন জনগণের তকলিফ দেখে ব্যথিত হবে, তারা রাজনীতিতে যোগ দিবে। তবে সে রাজনীতি বিশেষ খাটা খাটনির নয়, সারাদিন যাই ঘটুক, সন্ধ্যার পর বিলাতি মদে চুমুক দিতে দিতে জাস্টিস কায়ানীর কন্যা নিলোফারের সাথে ফ্লার্ট করা চাইই চাই। এই অল্প কিছু এলিট বাদে বাকি লোকজনের কোনরকমে আট দশ ক্লাস পর্যন্ত পড়লেই চলবে, আর্দালি আর পিয়নের কাজে আর কিই বা লাগে।
    সবকিছু সেভাবেই হতো, কিন্তু মুজিবর নামে এক চাষার ছেলে, সবকিছুতে গোলমাল লাগিয়ে দিল। রাজনীতিতে এসেছিল এক এলিটের হাত ধরেই, লম্বা চওড়া ছেলে, সাথে থাকলে এলিটেরও রাস্তাঘাটে চলতে সুবিধা হয়। গ্রামের ছেলে, একটা এমএলএ, না হলে প্রাদেশিক মন্ত্রী, এর বেশি কিছু নয়। কিন্তু দেখা গেল এই ছেলে সময়ের সাথে সাথে এলিটদের চেয়েও উঁচুতে উঠে যাচ্ছে। চাষার ছেলে মুজিবর এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু হয়ে গেলেন, সবার চেয়েই বড় হয়ে গেলেন, প্রকৃতির অমোঘ নিয়মেই শক্তিমানের আশেপাশে অসংখ্য স্যাটেলাইট জুটে যায়। বঙ্গবন্ধুও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না, তাঁর স্যাটেলাইটদের মাঝে সেই কলিকাতা কেন্দ্রিক মুসলমান এলিটরাও ছিল। স্বাধীনতার লড়াই, দেশ গড়ার কাজ, এলিট এন-এলিট, যিনিই এসেছেন, বঙ্গবন্ধু কেউকেই ফেরাননি। কিন্তু এদের কারুর জন্যই কিছু আটকে থাকতো না, শুধু বঙ্গবন্ধু স্বয়ং ছিলেন অপরিহার্য।
    বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরে যে যার রাস্তায় ফিরে যান, ডঃ কামাল বঙ্গবন্ধুর পুত্রসম হওয়াতে সাথে সাথে প্রাণে ধরে আওয়ামী লীগ ছাড়তে পারেননি বটে, তবে সেই ‘ভদ্রলোকের’ রাজনীতিতে ফিরে যান। দু পাতা পড়াশোনা করলে আইনের শাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এইসব কথা বলে যায় বটে, কিন্তু বাংলাদেশের মাঠের রাজনীতি এর ধারে কাছেও নেই। ৮৮ এর গুলি-বৃষ্টি, ২০০৪ সালের গ্রেনেড বৃষ্টি, এর মাঝে আর কিছু ছোট খাটো বৃষ্টি থেকে শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে অগণিত নেতা কর্মী প্রাণ দিয়েছেন। এই আইনের শাসন, জবাবদিহিতা বিহীন বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখতেও বিপুল আত্মত্যাগের প্রয়োজন পড়ে।
    বঙ্গবন্ধু খুব অল্প সংখ্যক মানুষকেই ‘আপনি’ বলতেন, তাঁর চেয়ে বয়সে কম হলে, পরিচয়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘তুমি’ আর অল্প কয়েকদিনের মাঝেই ‘তুই’য়ে নেমে আসতেন। তবে এই যাদের তুই করে বলতেন, তাঁদের কেউই অপমানিত বোধ করতেন না, কারণ এই তুইয়ের মাঝে কোন এলিটিসিসম ছিল না। এর মাঝে অপার স্নেহ-শীলতা ছিল, পৃথিবী ইতিহাসে আর কোন জাতীয় নেতাই সম্ভবত এতটা স্নেহের প্রকাশ ঘটাতে পারেননি।
    ডঃ কামাল হোসেন ৪৭ সালে যে রোশনাই ভরা কলিকাতা ছেড়ে অন্ধকার ঢাকায় এসেছিলেন, সে ঢাকার রোশনাই কালে কালে অনেক বেড়েছে, কলিকাতার রোশনাই কেউ ছাড়িয়ে গেছে। সে রোশনাই এতটাই বেড়েছে যে পাকিস্তানীরাও আজকার ঢাকার রোশনাইয়ের স্বপ্ন দেখে। ঢাকার আজকের এই রোশনাই কোন কলিকাতা কেন্দ্রিক মুসলমান এলিটের অং বং য়ের জোরে হয়নি, এর পিছনে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত আছে, দু লক্ষ ইজ্জত হারা মা বোনের কান্না আছে, বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর কন্যার বাংলার মানুষের প্রতি অপার ভালবাসা আছে।
    মেজাজ চড়ে গেলে ইংরেজি বা উর্দুতে ‘খামোশ’ বা ‘বাস্টার্ড’ বলে গালি দেওয়া ডঃ কামালের একটা নিয়মিত অভ্যাস বলেই মনে হচ্ছে। ‘সংবিধান প্রণেতা’ বলে একটা তকমা জুটে গেছে, তাই লোকজন গালি খেয়েও হজম করে নেয়। তবে একটা ব্যাপার তাঁর মনে রাখা উচিত যে ঢাকার রোশনাই বাড়ার সাথে সাথে পূর্ব পাকিস্তানের চাষার বংশধরদের আত্মমর্যাদাও বেড়েছে, গালি গালাজ খেয়ে সেদিনকার কোন ছোকরা ‘পোঁদে লাথি মেরে ওপারে পাঠিয়ে দেব” এমন কথাও বলে ফেলতে পারে। এই বয়সে এতটা অপমান সইবে কি?

  9. মাসুদ করিম - ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ (২:২২ অপরাহ্ণ)

    স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে প্রশ্নে কামাল বললেন ঐক্যের কথা

    দুইদিন আগে জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে প্রশ্নে সাংবাদিকের ওপর ক্ষিপ্ত হলেও বিজয় দিবসে একই ধরনের প্রশ্নে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন ঐক্য সুসংহত করার কথা বলেছেন।

    বুদ্ধিজীবী দিবসে গত শুক্রবার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়া কামাল হোসেনকে জামায়াত বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এক সাংবাদিককে ‘খামোশ’ বলে সমালোচনার মুখে পড়েন। প্রশ্নকারী সাংবাদিককে চিনে রাখারও হুমকি দেন তিনি।

    ওই ঘটনায় বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদ-সমালোচনার মুখে শনিবার দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন তিনি।

    রোববার সাভারে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরও স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে রাজনীতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে এবার কৌশলী পথে হাঁটেন কামাল হোসেন।

    তিনি বলেন, “আমরা যদি ঐক্য করি, সে ঐক্যকে সুসংহত করি- ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে।

    “যে কোনো দিক থেকে যদি কাজে লাগে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই জনগণের সে শক্তি আছে, আমরা স্বাধীনতাকে রক্ষা করব।”

    একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন।

    ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ড. কামালের গণফোরামসহ বিভিন্ন দল বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছে। একই প্রতীক নিয়ে ভোটে আছে বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর প্রায় দুই ডজন নেতাও।

    ধানের শীষ প্রতীকে স্বাধীনতাবিরোধী দলের সঙ্গে একীভূত হওয়ায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করে আসছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

    স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কামাল হোসেন স্বাধীনতার মূল্যবোধ ধরে রাখার পাশাপাশি সন্ত্রাস ও লাঠিয়ালদের রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান।

    তিনি বলেন, “আমাদের লাখো লাখো শহীদ জীবন দিয়েছিল। তাদের মূল্যবোধে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সাথে সাথে বলতে হবে, এখানে কোনো রকমের সন্ত্রাস, জোরজবরদস্তি ও লাঠিয়ালদের ভূমিকা মেনে নেওয়া যায় না।”

    কামাল হোসেন আরও বলেন, “যারা রুগ্ন রাজনীতি করে, লাঠিয়াল ব্যবহার করে, যারা কালোটাকা ব্যবহার করে, তারা জনগণকে মর্যাদা দেয় না- এগুলোর ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

    “ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা অবশ্যই স্বাধীনতা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ- সবকিছুকে রক্ষা করব, এগিয়ে নিয়ে যাব। ঐক্যবদ্ধ জনগণের বিজয় অনিবার্য।”

    জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টুও ছিলেন।

  10. মাসুদ করিম - ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ (৫:৪৬ অপরাহ্ণ)

    অনির্বাচিতদের শাসন মেনে নিতে পারি না: কামাল

    যারা জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চায়, তাদেরকে স্বাধীনতার শত্রু ও ইয়াহিয়া খানের উত্তসূরী বলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

    সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “সংবিধানে লেখা আছে এদেশের মালিক জনগণ। আমরা ভোট দিতে পারব এই স্বপ্ন শহীদরা দেখেছিল, এদেশের মালিক হবে জনগণ- এই স্বপ্ন দেখেছিল।

    “আজকে ভোট দেবার জন্য আমরা যারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদেরকে যারা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চায়, তারা স্বাধীনতার শত্রু, এরা হলে ইয়াহিয়া খানের উত্তরসূরি।”

    কামাল হোসেন বলেন, “ভোট দেয়াটা শুধু না, শহীদরা যেটা আমাদেরকে আমানত হিসেবে দিয়ে গেছে.. এদেশের স্বাধীনতা.. আমরা এনেছি। এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার পথ হলে ভোট দেওয়া। ভোট দিয়ে তোমাদের সত্যিকারের যে প্রতিনিধি, তারা দেশ শাসন করবে।”

    “অনির্বাচিতরা দেশ শাসন করবে- এর চেয়ে লজ্জার বিষয় কী হতে পারে? এখানে ভাইয়েরা বলেছেন, অনির্বাচিতরা এখন দেশ শাসন করছে। এটা আমরা মেনে নিতে পারি না।”

    প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিরেপক্ষভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
    “আমি মনে করতে চাই না, যারা ভোট পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন, তারা দেশদ্রোহিতা করবেন, তারা দেশের জনগণের মালিকানার বিরুদ্ধে সেই ধরনের কাজ করবেন, যেটাতে তারা সারাজীবন লজ্জা পাবেন।”

    গণফোরাম সভাপতি বলেন, “যারা বলে দেশ বিভক্ত, আমি বলি আরে মিয়া তোমাদের মাথা উন্মুক্ত, দেখ আমাদের ঐক্য দেখ। আমরা একাত্তরে দেখেছি, বাহাত্তরে দেখেছি, পঁচাত্তরের পরে যখন আমরা ভেবেছিলাম সব বুঝি হারিয়ে গেল। বঙ্গবন্ধু আক্রান্ত হলেন, তাজউদ্দিন ভাই আক্রান্ত হলেন। কিন্তু কে বাঁচিয়েছে? ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা বাঁচিয়েছি। আমার পাশে যে বসে আছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।

    “এদেশে যারা মনে করে আমাদের ভয় দেখালে আমরা ভীত হয়ে যাব, তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করে। বাঙালি ভীত না, বাঙালিকে ভয় দেখানো যাবে না। আসো সামনা-সামনি। বন্দুক নিয়ে, তোমরা গুণ্ডা-পাণ্ডা তৈরি করেছ, লাঠি-সোটা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পিটানির চেষ্টা করে, তাদের বলছি আসো সামনা-সামনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি। যারা গুণ্ডা-পাণ্ডা নিয়ে নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণ করে তারা কাপুরুষ। ১৭/১৮ কোটি মানুষকে মেরে ফেলা অসম্ভব, অসম্ভব।”

    সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পেশাজীবীদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, “অবৈধ সরকার বার বার বলছে আমরা স্বাধীনতার পক্ষে। আওয়ামী লীগ সরকার ভোট না নিয়ে সরকার গঠন করেছে। তারা অবৈধ সরকার, তারা স্বাধীনতার পক্ষের সরকার না।”

    নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “আজকে আমাদের এই লড়াইয়ে জিততে হবে। আমাদের পরাজিত হওয়ার সুযোগ নেই। আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, এই লড়াইয়ে আমরা জিতব, যদি আমরা সবাই দৃঢ় থাকতে পারি।

    “এই যে সামরিক বাহিনী মাঠে নেমেছে, মানুষ জিজ্ঞাসা করেছে- সবই তো দেখি সরকারের দালালি করে ওরা ঠিক থাকবে তো? আমরাও আবেদন করি, ড. কামাল আবেদন করেছেন, আমাদের শেষ জায়গায় এই নির্বাচনের লড়াইয়ে সামরিক বাহিনী যেন নিরপেক্ষ থাকে।”

    সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাংবাদিক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু বক্তব্য রাখেন।

    পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক আখতার হোসেন, চিকিৎসক একেএম আজিজুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।

    এছঅড়া অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ছড়াকার আবু সালেহ, সাংবাদিক এরশাদ মজুমদার, মাহফুজউল্লাহ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, আইনজীবী জগলুল হায়দার আফ্রিকসহ পেশাজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

    Why tolerate unelected rulers, asks Oikya Front chief Kamal

    Leaders who conspire to take away people’s right to vote are the enemies of freedom, Jatiya Oikya Front chief Kamal Hossain has said.

    Such politicians are descendants of Yahya Khan, the Pakistani president infamous for directing atrocities during Bangladesh’s Liberation War.

    “The constitution declares that the nation belongs to the people. Our martyrs (of the Liberation War) dreamed that one day we would be able to vote,” Kamal said at a meeting at Dhaka’s National Press Club on Monday

    Kamal, a top lawyer who led the drafting of Bangladesh’s first constitution, is leading the anti-government alliance competing in the Dec 30 election.

    “It’s not just about voting, we have brought forward the freedom bestowed to us by the martyrs of our war. Voting can protect our freedom. So vote for the true representatives of your nation.”

    “It is not acceptable that unelected persons will run our nation. That’s what our brothers are saying here, they’re saying unelected people are in government. Can we truly accept this?” he asked.

    Kamal urged election officials, police and army personnel to be neutral in carrying out their duties.

    “I don’t like to imagine that those tasked with organising our voting will betray their nation and commit acts for which they’ll be ashamed all their lives.”

    “As for the people who claim our nation is divided, I tell them they’ve lost their minds. I tell them to see our unity. We have seen the Liberation War, the difficult year after that and also 1975, when we felt we lost everything we had.”

    “Bangabandhu was afflicted, so was Tajuddin Bhai. But who saved the day? We saved it with our unity. Bangabir Kader Siddique, who is seated next to me, has fought oppression,” said Kamal.

    “Those who think they can shut us up with threats live in a fool’s paradise. Bengalees are unafraid by nature. Come and meet us face to face. Bring your goons, guns and the weapons you have been using to beat up opposition supporters across the nation,” Kamal said.

    “Those who harass ordinary people are cowards. It is simply impossible to kill off 170 million people.”

    ‘ARMY TO ENSURE FAIR POLLS’
    The Oikya Front chief has hoped that the deployment of the army will create an atmosphere favourable to fair polls.

    He expressed his view at a news conference hours after the troops were deployed at key points across the country as a strike force.

    Dr Kamal said, “The nation expects the army to play the role it did in the past to ensure fair polls joined by all. They have a tough duty of creating election atmosphere to fulfil.”

    The Oikya Front leaders also alleged “armed attacks” on their candidates and supporters continued on Monday.

    They slated the Election Commission for its “failure to prevent the attacks” even after complaints.

    Chief Election Commissioner KM Nurul Huda earlier in the day said army deployment would boost the polls spirits.
    The army will be able to act on their volition to calm the situation if any develops, according to Huda.

    The army, however, has not been given magisterial powers as demanded by the Oikya Front and its key component the BNP.

  11. মাসুদ করিম - ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ (১০:৫০ অপরাহ্ণ)

    ওই অর্থে জানোয়ার বলিনি: ড. কামাল

    পুলিশকে ওই অর্থে জানোয়ার বলিনি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ইসির বৈঠকে পুলিশকে জানোয়ার বলেছেন কিনা—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওই অর্থে তো বলেনি। তারা মানুষ হিসেবে ভূমিকা রাখবে, আমরা সেটা আশা করি। বলেছি, পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখবে। আমরা তো পুলিশের প্রশংসাও করেছি।’

    বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মতিঝিলে নিজের চেম্বারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠককালে তিনি পুলিশকে জানোয়ার বলেন।

    পুলিশ কেন এসেছিল জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ এসেছিল কারণ তারা আমার নিরাপত্তার বিষয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। তারা জানতে চেয়েছেন, যদি আপনার নিরাপত্তা প্রয়োজন হয়, সেটা আমাদের জানালে সেভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো। আপনি বাড়িতে যাওয়ার সময় নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে সেই নিরাপত্তাও আমরা দিতে পারি।’

    ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে ফোনে কী কথা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কারণ, তারও আসার কথা ছিল।’

    আসন্ন সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কী- এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. কামাল বলেন, ‘আশঙ্কা তো অবশ্যই হচ্ছে। কারণ, সারাদেশে ধরপাকড় চলছে। জেলায় জেলায় ফোন করে বলা হচ্ছে, প্রার্থীদের ওপর হামলা ও আটক করা হচ্ছে। এটা অস্বাভাবিকভাবে হচ্ছে।’

    নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার আশা দেখছেন কিনা জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক বলেন, ‘আশা তো আমরা সব সময়ই করবো। কিন্তু আশঙ্কাও আছে। কারণ, যেভাবে হামলা ও গ্রেফতার করা হচ্ছে।’

    কারচুপি হলে নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্ট থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, ‘আমার কথা ধরে রাখতে হবে। ওরা যেন না বলতে পারে সরে গেছে। এটা আমাদের অধিকার। আমাদের অধিকার থেকে কেন আমরা সরে যাবো। যদি শেষ পর্যন্ত অসম্ভব করে দেয় তখন মানুষজন দেখবে, তারা অসম্ভব করে দিয়েছে।’

    নির্বাচনের ফলাফল ঐক্যফ্রন্ট মানবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি দেখে এর উত্তর দেওয়া যেতে পারে।’

  12. মাসুদ করিম - ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ (১০:৪০ পূর্বাহ্ণ)

    Bangladesh election: I am no challenger… just working to restore rule of law, democracy in Bangladesh, says Kamal Hossain


    But, over the hour-long conversation, Hossain, a widely regarded secular icon, also expressed his discomfort towards the BNP’s track record with India as well its decision to field 22 members of the Bangladesh Jamaat-e-Islami, a banned fundamentalist political outfit.

    “I am sorry to say that fielding ex-Jamaat people is stupid. I had given it in writing that there will be no support to Jamaat, no bringing in religion, fundamentalism, extremism etc,” he says, with a sense of frustration at realpolitik. BNP-Jamaat alliance has been accused of attacks on minorities in 2001, which is a sensitive and key issue in the elections.

    “Had I known (that Jamaat leaders will be given BNP tickets), I would not have been part of it, but I will not stay a single day if these people have any role in the future government,” he told The Indian Express on Wednesday.

    On BNP’s poor track record with India, he says, “BNP has told India that we have been wrong. When Khaleda Zia went to India, she told them. It was part of their rehabilitation process, she began to correct (the position).”

    On politics in Bangladesh and other parts of South Asia, he says, “Why should we have dynasties ruling our part of the world. Look at Bangladesh, Pakistan, India, Sri Lanka.”

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.