জাতীয় সংসদের রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি-বান্দরবান এবং কক্সবাজার নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত মহিলা আসনে গত আটটি জাতীয় সংসদের পাঁচটিতেই জাতীয় সংসদে তিন পার্বত্য জেলা থেকে কোন প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এমনকি ভৌগলিকভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর কক্সবাজারকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এনিয়ে নানান ক্ষোভ পার্বত্যবাসীর। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেত্রী সুদীপ্তা দেওয়ান মহিলা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর বিগত আটটি জাতীয় সংসদের মধ্যে সামরিক শাসক এরশাদের আমলের ছিয়াশির সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার মালতী রাণী তনচংগ্যা। ১৯৭৩ এবং ১৯৮৬ এই দুটি সংসদ ছাড়াও ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ গণতন্ত্রে পুনপ্রবর্তনের পর পঞ্চম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে তিন পার্বত্য জেলা থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ম্যাম্যাচিং লিলি কে মহিলা সাংসদ করা হয়। এরপর আর কোন সংসদেই সংরক্ষিত মহিলা আসনে পার্বত্য জেলা গুলি থেকে কাউকে সদস্য হিসেবে নির্বচন করা হয়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেই পার্লামেন্টে কক্সবাজারের এথিন রাখাইনকে এই কোটায় নির্বাচন করা হয়। আর সর্বশেষ ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে এই আসনে মহিলা সংসদ নির্বাচিত হন বেগম নূরে হাস্না লিলি। এই প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম মহিলা সাংসদ সুদীপ্তা দেওয়ান বলেন-তিন পার্বত্য জেলার জন্য আলাদাভাবেই একজন মহিলা সাংসদ থাকা উচিত,কক্সবাজারকে কোনভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রামের সাথে সম্পৃক্ত করা উচিত নয়। এই বিষয়টি পার্বত্যবাসী পছন্দ করেনা। কারণ কক্সবাজারের লোকজন চট্টগ্রামের সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে, কেবল মহিলা সাংসদের বেলায় কেনো কক্সবাজার পার্বত্য চট্টগ্রামের সাথে সম্পৃক্ত হবে?? সম্প্রতি তিন পার্বত্য জেলার জন্য পৃথক মহিলা আসন সংরক্ষনের দাবীতে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসুচি পালিত হয়েছে। শহরের আদালত সড়কের জজকোর্ট ও প্রেসক্লাব এলাকায় আধঘন্টার মানববন্ধনে জেলার বিভিন্ন শ্রেনীপেশার নারী পুরুষরা অংশ নিয়েছেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন, বিকশিত নারী নেটওয়ার্ক ও স্বেচ্ছাব্রতী উজ্জীবক ফোরাম যৌথভাবে মানববন্ধন আয়োজন করে। মানববন্ধনের সমাবেশে বক্তারা বলেন, এমনিতেই তিন পার্বত্য জেলার নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য জেলা পরিষদ ও উন্নয়ন বোর্ডের কোথাও নারী প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি। বক্তারা পার্বত্য এলাকার নারীর ক্ষমতা ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান সংসদেই তিন পার্বত্য জেলার জন্য পৃথক নারী আসন সংরক্ষনের দাবী করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম…