কুইনাইন-আবিষ্কারের তারিখ কারও মনে আছে কি? না থাকলেও ক্ষতি নেই কোনও, আজ ছাত্রহিতৈষী শিক্ষক কাজেম আলী মাস্টারের মৃত্যুদিবসে (১২ ফেব্রুয়ারি) অন্তত তাঁকে স্মরণ করা যাক একবার।

মোমেনের জবানবন্দী, মফিজন বা কোরবাণী-র মতো সংবেদনশীল গল্পের স্রষ্টা মাহবুব-উল আলম (১৮৯৮-১৯৮১) ইতিহাসমগ্ন ছিলেন আমৃত্যু। খণ্ডে-খণ্ডে তিনি যে-চট্টগ্রামের ইতিহাস (১৯৬৭) লিপিবদ্ধ করেছেন তার সপ্তম বা শেষ খণ্ডের ভূমিকায় বলেছেন : ‘চট্টগ্রামের ইতিহাস’-এর শেষ (সপ্তম) খণ্ডে ‘আমরা কতিপয় বিশিষ্ট পরিবার, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও আন্দোলন’-এর বিবরণ লিপিবদ্ধ করিতেছি। ইহার ফলে নিজেদের ইতিহাস জানিয়া লইয়া আত্ম-সম্বিৎ লাভে চট্টগ্রামবাসীদের সাহায্য হইবে, ইহাই আমাদের আশা। অধুনাবিলুপ্ত বইটির পৃষ্ঠাসজ্জা একটু অভিনব : ধারাবাহিকভাবে পৃষ্ঠাঙ্ক না দিয়ে প্রত্যেক অধ্যায়কে অ্যালবামের মতো সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল যাতে পরবর্তীকালে নতুন-নতুন তথ্য যুক্ত করে নিতে পারেন ইতিহাসসন্ধানীরা, যদিও লেখকের সে-ইচ্ছে অপূর্ণই থেকে গেছে আজও। চট্টগ্রামের অনেক প্রসিদ্ধ পরিবারের সতথ্য বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন লেখক প্রায় নিঃসঙ্গ পরিশ্রমে; তথ্যবিশ্লেষণে হয়তো-বা সর্বত্র ইতিহাসপদ্ধতি অনুসৃত হয়নি, এমনকী বিভ্রান্তিও থাকতে পারে কোথাও-কোথাও, কিন্তু লেখকের কলম যে কাঠখোট্টা ছিল না তা স্বীকার করতেই হয়। বইটির দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের নাম ‘শেখ-এ-চাট্‌গাম কাযেম আলী’। কাজেম আলী হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ শিক্ষাব্রতী কাজেম আলী (১৮৫২-১৯২৬) সম্পর্কে মাহবুব-উল আলম লিখছেন : কাযেম আলী কিরূপে তাঁহার স্কুলে একটা পারিবারিক আবহাওয়া বজায় রাখিতেন সে সম্বন্ধে ঐ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ভূপেন্দ্র কুমার রক্ষিত বলেন : তিনি প্রতিদিন স্কুলে আসিতেন না। তখন ১৯১৭ সাল। একদিন হঠাৎ স্কুলে আসিলেন। সে দিন আমাদের ইংরেজী-শিক্ষক স্কুলে আসেন নাই। তিনি বলিলেন : পড়া আমিই নিব। আমরা ভয়ে তটস্থ হইয়া গেলাম। পড়া ছিল ‘আলেকজাণ্ডার য়্যাণ্ড দি রবার।’ তিনি আমাদের ইংরেজীতে প্রশ্ন করিলেন : ফিলিপ কে ছিলেন? আমি ফস্ করিয়া উত্তর দিলাম : কিং অব ইণ্ডিয়া। তিনি ধমক দিয়া আবৃত্তি করিলেন : অব্ ইণ্ডিয়া? আমি থতমত খাইয়া শুদ্ধ করিলাম : কিং অব ম্যাসেডন। তিনি খপ্ করিয়া আমার একখানি হাত ধরিয়া ফেলিলেন। অতঃপর গর্জন করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন : প্রথমে ইণ্ডিয়া বলেছিলে কেন? কিন্তু ইতিমধ্যে তিনি অনুভব করিলেন, আমার হাত বেশ গরম। তখন বলিলেন : তুমিত ম্যালেরিয়ায় ভুগ্‌ছ মনে হচ্ছে। অতঃপর শার্ট তুলিয়া পেটে হাত দিয়া বলিলেন : এই যে পিলে বেশ বড় হয়েছে। অতঃপর এইরূপ কথোপকথন হইল : : তুমি কার ছেলে? : আমার বাবার নাম যোগেশ চন্দ্র রক্ষিৎ। : কি করেন? : কলেক্টরীর কর্মচারী। : তুমি ছুটির আগে লাইব্রেরীতে আমার সঙ্গে…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.