ল্যু সুন এবং চীনের ছাপচিত্র আন্দোলন

[...] চলতি বছর ২০১১ সালে চীনে উদ্‌যাপিত হচ্ছে ল্যু সুনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা নতুন কাঠখোদাই আন্দোলনের ৮০তম বার্ষিকী, 'দ্য চাইনিজ আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশান' এ বছরকে অভিহিত করেছেন ‘চায়না প্রিন্টস ইয়ার’ হিসেবে। [...]

চীন — প্রাচীন এই দেশটির প্রাচীনত্বকে আরও গৌরবময় করেছে তার ছাপচিত্রের ইতিহাস। কেবল প্রাচীনই নয় এই ইতিহাস, বলা ভালো চীনারাই ছাপচিত্র মাধ্যমের আবিষ্কারক। অষ্টম শতাব্দীতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বুদ্ধের বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্যে তা কাঠের পাটায় খোদাই করে কাগজে ছেপে প্রথম ছাপছবির আবিষ্কার ও প্রচলন ঘটিয়েছিল। সেটিই ছিল ইতিহাসের প্রথম ‘ব্লক বুক’। ছবি এবং লেখা ছাপা হতো একটি ব্লকের উপর খোদাই করে। এ বইতে স্থান পেয়েছিল বুদ্ধের নানা ভঙ্গিমার চিত্র এবং সেই সাথে বৌদ্ধ শাস্ত্রের নানা সূত্রাবলী। এই বইটিই ‘হীরকসূত্র’ নামে খ্যাত এবং বলা হয়ে থাকে এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে আদি পুস্তক। অবশ্য ছাপাই প্রযুক্তির উদ্ভাবক হিসাবে চীনের নাম ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হলেও আধুনিক ছাপচিত্রের প্রচলন চীন দেশে একটু দেরিতেই ঘটেছে। এবং চীনদেশের এই আধুনিক ছাপচিত্রের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে অনিবার্যভাবেই এসে যায় ল্যু সুনের নাম। চীনদেশের ছাপচিত্র-ইতিহাসবিদেরা মনে করেন, বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে সাংহাইকেন্দ্রিক যে আধুনিক ছাপচিত্রের আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তার প্রধান রূপকার হলেন ল্যু সুন (১৮৮১-১৯৩৬)।

ল্যু সুনের প্রতিকৃতি, শিল্পী : লি কুয়ান

একজন লেখক যখন একটি চিত্র-আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন, নিঃসন্দেহে বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং তাতে ভিন্ন একটি মাত্রারও যোগ ঘটে। চীনের এই পরিস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রাচীনকালের কথা, যখন ছাপছবি এবং সাহিত্যের নিবিড় সখ্য গড়ে উঠেছিল, সাহিত্য আর ছাপচিত্র বিকশিত হচ্ছিল একে অপরের হাতে হাত রেখে। তখন কাঠের পাটায় যেমন শব্দের পর শব্দ খোদাই করে সাজিয়ে তোলা হতো কাব্য ও কাহিনি, তেমনি তার সাথে যোগ রেখেই আঁকা হতো ছবি, তারপর একই পাটায় তা খোদাই করে ছাপের কারিশমায় জীবন্ত হয়ে উঠতো কাগজের বুকে। এইভাবে ছাপচিত্রের সূচনা ঘটে এবং তা এগিয়ে চলে মূলত সাহিত্যেরই হাত ধরে। তবে ল্যু সুনের প্রেক্ষাপট ছিল এসব থেকে একেবারে ভিন্ন। কেননা শুধু সাহিত্যের অলংকরণ হিসাবে তিনি ছাপচিত্রকে বিবেচনা করেননি, বরং এই মাধ্যমটিকে তিনি দেখেছিলেন এক ভিন্ন শক্তির প্রকাশ হিসাবে, সমাজ পরিবর্তনের এক শক্তিশালী হাতিয়ার হিসাবে।

বিংশ শতাব্দীর শুরুতে যখন চীন পরিণত হয়েছে এক ক্ষতবিক্ষত রাষ্ট্রে, পশ্চাৎপদ সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা আর সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিক শক্তি চীনাদের ওপর চেপে বসেছে জগদ্দল পাথরের মতো, ঠিক এরকম সময়েই আবির্ভাব ঘটেছিল লেখক ল্যু সুনের। শুধু ল্যু সুন নয়, চীনে সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই বোধকরি আবির্ভূত হয়েছিলেন অনেক মানুষ, যাঁরা চাইতেন পুরানো সমাজব্যবস্থার অবসান ঘটাতে। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে চীনের শিল্পীরা যেসব গ্রাফিক আর্ট সৃজন করেন, তার প্রায় সবই ছিল রাজনৈতিক চেতনাজাত। এরকম এক প্রেক্ষাপটে ১৯৩০ ও ১৯৪০-এর দশকে চীনে নতুন করে ছাপচিত্র আন্দোলন শুরু হয় ল্যু সুনের নেতৃত্বে। ‘আকিউ-এর সত্য ঘটনা’র লেখক ল্যু সুন তাঁর কথাসাহিত্যের মধ্যে দিয়ে বিম্বিত করেছিলেন চীনের মানুষ ও সমাজকে; পাশাপাশি শিল্পসংস্কৃতির নানা প্রান্তের মানুষদেরকে সংগঠিত করেছিলেন, সমাজ ভাঙার মন্ত্রে দীক্ষিত ও উজ্জীবিত করেছিলেন।

ল্যু সুনের মধ্যে শিল্পচেতনা সঞ্চারিত হওয়ার একটি বড় কারণ ছিল জাপানে অধ্যয়নের সময় তাঁর মধ্যে সঞ্চারিত রাজনৈতিক ও শিল্পসাংস্কৃতিক চেতনা। ১৯০২ সাল থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত ল্যু সুন জাপানের টোকিওতে ডাক্তারিবিদ্যা ও সাহিত্য বিষয়ে পড়াশোনা করেন। এই সময় ল্যু সুন যেমন বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হয়ে ওঠেন তেমনি ব্যাপক ইউরোপীয় সাহিত্যপাঠের মধ্য দিয়ে মুক্ত, মানবিক ও সাম্যবাদী সমাজদর্শনের একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে ওঠেন। চিত্রকলাও ছিল তাঁর আগ্রহের বিষয়। ল্যু সুন ছিলেন পাশ্চাত্য চিত্রকলার একজন গুণমুগ্ধ সমঝদার এবং পাশ্চাত্যের বেশ কিছু চিত্রকর্ম ব্যক্তিগতভাবে সংগ্রহও করেছিলেন তিনি। জাপানে অবস্থানকালেই তিনি শিল্পকলার বিভিন্ন মাধ্যম সম্পর্কে উৎসুক হয়ে ওঠেন এবং এসব মাধ্যমের মধ্যে ছাপচিত্র সম্পর্কে তাঁর বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়।

বলাবাহুল্য, ল্যু সুন যখন জাপানে অবস্থান করছিলেন, ঠিক সে সময়েই ব্যাপক এক সৃজনজোয়ার এসেছিল জাপানের ছাপচিত্রে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধনে জাপানের ছাপচিত্র খুঁজে পেয়েছিল নতুন ভাষা, নতুন প্রকাশভঙ্গিমা। ল্যু সুন তাঁর পুস্তক ব্যবসায়ী বন্ধু উচিমায়া কানজোর মাধ্যমে আবিষ্কার করেছিলেন আধুনিক জাপানি ছাপচিত্রের এক বিশাল ভুবন। এবং কাকতালীয়ভাবে কানজোর অনুজ একজন ছাপচিত্রী হওয়ায়, ল্যু সুনের ছাপচিত্র বিষয়ে আগ্রহে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। বিশ শতকের তিরিশের দশকে ল্যু সুন যখন সাংহাইকেন্দ্রিক ছাপচিত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তখন কানজোর ভ্রাতৃদ্বয় নানাভাবে ল্যু সুনকে সহযোগিতা করেছিলেন। এই সহযোগিতার প্রতিফলন হিসেবে আমরা দেখি, ১৯৩০ সালে উচিমায়া কানজোর ব্যক্তিগত ছাপচিত্র সংগ্রহের একটি প্রদর্শনী হয়েছিল সাংহাইতে। এরকম আরেকটি ঘটনা ঘটে ১৯৩১ সালে। ওই বছর কানজোর-অনুজের তত্ত্বাবধানে নবীন ছাপচিত্রীদের একটি কর্মশালা পরিচালিত হয়, যার মাধ্যমে চীনের তরুণ শিল্পীরা ছাপচিত্রের নানা আধুনিক করণকৌশল রপ্ত করার সুযোগ পেয়েছিলেন।

ততদিন ল্যু সুন চীন থেকে ফিরে এসেছেন এবং সাহিত্যচর্চা ও সংস্কৃতিচর্চায় পুরো মনযোগ দিয়েছেন। জাপানে পড়ার সময়েই ল্যু সুন সিদ্ধান্ত নেন, ডাক্তার হবেন না, বরং হবেন সাহিত্যিক; চারপাশের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা থেকে ল্যু সুনের মধ্যে নতুন এক উপলব্ধির জন্ম নেয়। তিনি উপলব্ধি করেন, একটি পশ্চাৎপদ, শ্রেণিবিভক্ত সমাজে একজন ডাক্তারের চেয়েও একজন সাহিত্যিক হলেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি তাই ডাক্তার হওয়ার বদলে একজন সাহিত্যিক হওয়ার প্রস্তুতি নেন এবং জাপান থেকে চীনে ফিরে আসেন। এরপর তিনি ১৯১২ সালে জাতীয়তাবাদী সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯২৬ সাল পর্যন্ত বেইজিং-এ কাটিয়ে ল্যু সুন থিতু হন সাংহাইতে। এর মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে — চীনের জাতীয়তাবাদী সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের শিকার হন চীনের মানুষ, বিশেষ করে কমিউনিস্ট নেতাকর্মীরা। জাতীয়তাবাদীদের ফ্যাসিবাদী হামলায় প্রাণ হারান অনেক তরুণ, ল্যু সুনের এক প্রিয় ছাত্রও নিহত হন তাদের হাতে। এ ঘটনায় বামদের প্রতি ল্যু সুনের সহমর্মিতা আরো বেড়ে যায়।

সাংহাই-এ থিতু হওয়ার পর ল্যু সুনের অন্যতম কাজই ছিল ইউরোপীয় শিল্পকে শিল্পানুরাগীদের সামনে ব্যাপকভাবে তুলে ধরা। জীবনকে তুলে ধরার বিশেষ শিল্পভঙ্গিমার প্রতি ল্যু সুনের আগ্রহ ছিল অপরিসীম। যে শিল্প মানুষের জীবন ও জীবনের সংগ্রামকে প্রতিফলিত করে, তা ল্যু সুনকে অনুপ্রাণিত করত এবং তিনি মনে করতেন, ব্যাপক মানুষকেও তা নতুন চিন্তার দিকে ধাবিত করবে। এ পর্যায়ে ল্যু সুন অনেকগুলো বক্তৃতার আয়োজন করেন, নবীন চিত্রীরা এই বক্তৃতাগুলো শুনতে ভিড় জমায় এবং ল্যু সুনের বক্তৃতায় উদ্বুদ্ধ হয়।

'উডকাট ডিসকাশন গ্রুপ'-এর সভ্যদের সঙ্গে আলোচনারত ল্যু সুন

এই সময় চীনদেশে যে বাম সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন দানা বেধে উঠেছিল তার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল সাংহাই। কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখতেন বাম রাজনীতিকরা। বহু তরুণ নিজেদের সম্পৃক্ত করেন এই আন্দোলনে, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই এসেছিলেন শিল্পাঙ্গন থেকে। তরুণ শিল্পীরা নিজেদের শামিল করেছিলেন কমিউনিস্টদের সমাজ বদলের মিছিলে। ল্যু সুনকে কেন্দ্র করে এই শিল্পীরা গড়ে তোলেন বেশ কয়েকটি শিল্পী সংঘ, সমাজ বদলের লক্ষ্যে সমাজতান্ত্রিক আদর্শকে ধারণ করে শিল্পীরা সংঘবদ্ধভাবে কাজ শুরু করেন। শিল্পীরা তাঁদের চিত্রকর্মে সমাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরতে সচেষ্ট হন, সমাজের নানা অবিচার নিষ্পেষণ শিল্পীর তুলিতে ফুটে উঠে, চিত্রকর্ম যেন হয়ে ওঠে সমাজেরই প্রতিবিম্ব। আর এক্ষেত্রে সাদাকালো কাঠখোদাই চিত্রই হয়ে ওঠে প্রধান হাতিয়ার। সাদাকালোর বিপ্রতীপ তীব্রতায় এবং রেখার বলিষ্ঠতায় একে একে মূর্ত হতে থাকে সমাজের নানা দৃশ্যপট। কাঠখোদাই চিত্রের বিশুদ্ধ চরিত্র যেন সমার্থক হয়ে ওঠে এই আন্দোলনের সাথে। কাঠে খোদাই করে দ্রুত ছাপ নিয়ে শ’ শ’ কপি করে যে-কোনো বার্তা সমাজে পৌঁছে দেয়া যায়। মানুষকে বিপ্লবে দীক্ষিত করে তোলার এটাই হয়ে ওঠে মোক্ষম উপায়।

ল্যু সুন এই শিল্পীদের সামনে দৃষ্টান্ত হিসাবে তুলে ধরেন তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের শিল্পীদের সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতার আদর্শে আঁকা চিত্রাবলী, এবং জার্মান এক্সপ্রেশনিস্টদের, বিশেষত ছাপচিত্রী ক্যাথে কোলভিট্‌জের (১৮৬৭-১৯৪৫) জীবনঘনিষ্ঠ ছাপচিত্রসমূহ। ল্যু সুনের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত চীনের শিল্পীরাও সামাজিক বৈষম্যের শিকার নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনের চালচিত্র তুলে ধরার কার্যকর উপকরণ হিসেবে বেছে নেন জার্মানশিল্পীদের হাতে বিকশিত কাঠখোদাই শিল্পকে।

বিপ্লবকালীন চীনের বিভিন্ন শিল্পীর চিন্তা ও কর্মে রয়েছে জার্মান শিল্পী ক্যাথে কোলভিট্‌জের ব্যাপক প্রভাব। সমাজতান্ত্রিক আদর্শে দীক্ষিত এই শিল্পী তাঁর ছাপচিত্রে যেন এক মানবিক আকুতির কথাই যেন এঁকে গেছেন, বিশ্বযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত জার্মান সমাজের ছবি এঁকে গেছেন কোলভিট্‌জ আর এই ছবির মধ্য দিয়ে যুদ্ধবিরোধী বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। ল্যু সুনের উদ্যোগে ১৯৩৬ সালে ক্যাথে কোলভিট্‌জের ছাপচিত্রের অ্যালবাম প্রকাশিত হয় সাংহাই-এ।

'উওম্যান উইদ ডেড চাইল্ড', ক্যাথে কোলভিট্‌জ, এচিং, ১৯০৩

এই বইয়ের ভুমিকা লেখেন ল্যু সুন, যা কোলভিট্‌জের ছবি সম্পর্কে এক অনবদ্য মূল্যায়ন। এতে তিনি প্রসঙ্গক্রমে লিখেছেন,

আমি একাকী বইটির পাতা উল্টাচ্ছিলাম আর দেখছিলাম ইমেজগুলো। এর মধ্যে খুঁজে পেলাম দারিদ্র্য, ব্যাধি, ক্ষুধা, মৃত্যু এবং অবশ্যই সেই সাথে সংগ্রাম এবং রক্তপাত… শিল্পীর আত্মপ্রতিকৃতিগুলো যেন পৃথিবীর সমস্ত মায়েদেরই প্রতিচ্ছবি, যারা প্রতিনিয়ত অপমানে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছেন। চীনদেশের গ্রামেগঞ্জে প্রতিনিয়ত এই ধরনের মায়েদের দেখা যায়, যাঁদের হাতের নখ কখনই মসৃণ বলে প্রতীয়মান হয় না।

উল্লেখ্য, একইভাবে মেক্সিকোতেও শিল্পী দিয়েগো রিভেরার নেতৃত্বে শিল্পীরা ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে ছাপচিত্র আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দেন। রিভেরা এই আর্টকে তখন বিবৃত করেন ‘সামাজিক হাতিয়ার’ হিসেবে। চীনের শিল্পীরাও একইভাবে আর্টকে, বিশেষ করে ছাপচিত্রকে, ‘সামাজিক হাতিয়ার’ হিসেবে কাজে লাগান। ওই সময় চীনের প্রখ্যাত ছাত্রচিত্র শিল্পী থেন থিয়েকেং, লি হুয়া, লি কুয়ান প্রমুখ শিল্পী তাঁদের ছাপচিত্রে যে স্টাইল ব্যবহার করেন মেক্সিকোর টিজিপি বা পপুলার গ্রাফিক আর্টস ওয়ার্কশপের শিল্পীদের কাজেও একই স্টাইলের প্রকাশ ঘটে।

শিল্পী : হু ইথুয়ান

ল্যু সুনকে কেন্দ্র করে সাংহাইতে যে ছাপচিত্র অথবা কাঠখোদাই চিত্রের আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তার মূল বৈশিষ্ট্য ছিল শিল্পীদের সংঘবদ্ধতা, এবং বেশ কিছু শিল্পীর একত্রিত হয়ে কাজ করার প্রবণতা। মূলত এই পর্বকেই চিহ্নিত করা যেতে পারে চীনের ‘আভাঁগার্দ’ পর্ব হিসেবে। এই সময় বেশ কিছু সংগঠন গড়ে ওঠে, যেমন ‘এইটিন আর্ট সোসাইটি’, ‘হোয়াইট গুজ ওয়েস্টার্ন পেইন্টিং ক্লাব’, ‘মর্নি ফ্লাওয়ার সোসাইটি’, ‘স্টর্ম সোসাইটি’, ‘স্প্রিং আর্থ সোসাইটি’, ‘ওয়াইল্ড গ্রেইন উডকাট সোসাইটি’, ‘নেমলেস উডকাট সোসাইটি’ ইত্যাদি। এই সংগঠনগুলির সভ্যরা নানা সময় দল বেঁধে বিভিন্ন প্রদর্শনী আয়োজন করতেন এবং একইসঙ্গে শিল্পকলা বিষয়ক প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘দ্য ক্রিয়েশান সোসাইটি’র সদস্যরা ১৯২৭ সাল থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে একের পর এক এমন সব প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখেন যেগুলি সেসময় প্রলেতারীয় শিল্প আন্দোলনের তাত্ত্বিক ভিত্তি স্থাপন করে।

শিল্পী : লিউ সিয়েন

শিল্পীদের এই কর্মকাণ্ড মোটেই সহজসাধ্য ছিল না, নানা ঝড়ঝাপটার মধ্য দিয়ে এগোতে হয়েছে, ফ্যাসিবাদী সরকারের নানা অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। অনেক শিল্পীকে জেলে যেতে হয়েছে, কেউ-বা জেলেই মারা গেছেন। এই সময়ের উল্লেখযোগ্য শিল্পী হচ্ছেন হু ইথুয়ান, লি হুয়া, লিউ সিয়েন, থেন থিয়েকেং প্রমুখ। ল্যু সুন এই শিল্পীদের নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, নিজে অনেক শিল্পীর কাঠখোদাই চিত্র কিনে নিজের সংগ্রহে রেখেছেন, এই ছবিগুলো এখনো সাংহাই-এর ল্যু সুন মিউজিয়ামে শোভা পাচ্ছে।

শিল্পী : লি হুয়া

শিল্পী : লি হুয়া

শিল্পী : লি হুয়া

শিল্পী : লি হুয়া

শিল্পী : লি হুয়া

ল্যু সুন কখনোই চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আনুষ্ঠানিক সদস্য ছিলেন না। কিন্তু কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষদের সামাজিক অসমতা থেকে মুক্ত করার প্রশ্নে ল্যু সুন ও কমিউনিস্ট পার্টির অবস্থানে কোনও দূরত্ব ছিল না। তাই ১৯৩৭ সালে ল্যু সুনের মৃত্যুর পর কম্যুনিস্ট-অধ্যুষিত ইয়েনানে চীন কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে স্থাপন করা হয় ল্যু সুন একাডেমি অব আর্টস। বুদ্ধের বাণী প্রচারের জন্যে চীনে ছাপচিত্র মাধ্যমকে যথোপযুক্তভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা, একইভাবে চল্লিশের দশকে ইয়েনানে সূত্রপাত ঘটে নতুন এক প্রচারণাশিল্পের — কমিউনিস্টদের বার্তা নিয়ে ছাপচিত্রীরা ছড়িয়ে পড়েন গ্রামেগঞ্জে।

চলতি বছর ২০১১ সালে চীনে উদ্‌যাপিত হচ্ছে ল্যু সুনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা নতুন কাঠখোদাই আন্দোলনের ৮০তম বার্ষিকী, ‘দ্য চাইনিজ আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশান’ এ বছরকে অভিহিত করেছেন ‘চায়না প্রিন্টস ইয়ার’ হিসেবে।

রশীদ আমিন

জ়ীবনের এই রহস্য কে করিতে পারে ভেদ, ভুবনডাঙ্গায় ঘোরা-ফিরা ক্ষণিকের বিচ্ছেদ

৪ comments

  1. সন্জয় - ২৫ নভেম্বর ২০১১ (৭:৩২ অপরাহ্ণ)

    রশীদ আমিন
    আপনার লেখাটি পড়ে ভাল লাগল।ল্যু সুন সমপরকে জানতে পারলাম। কিনতু ল্যু সুনের কোন ছবি নেটে পেলামনা। কিভাবে ল্যু সুন কোলভিজের ছবির থেকে অনুপ্রনিত হচছে, সেটা জানার ইচছে ছিল। লেখার সাথে শিল্পীর ছবিও দেখার আর্জি রইলো। লেখাটির জন্য আবারও ধন্যবাদ।

    • রশীদ আমিন - ৭ ডিসেম্বর ২০১১ (১২:০৩ পূর্বাহ্ণ)

      ধন্যবাদ সঞ্জয়, আশা করি ছবিগুলো দেখে তোমার কিছু নতুন ধারণা জন্ম নেবে।

      ল্যু সুন আসলে শিল্পী ছিলেন না, লেখক ছিলেন। তবে শখের প্রচ্ছদ-আঁকিয়ে ছিলেন এবং ডিজাইন ধরনের কাজে তাঁর আগ্রহ ছিল।

  2. রেজাউল করিম সুমন - ৫ ডিসেম্বর ২০১১ (১২:৫২ পূর্বাহ্ণ)

    বছর দুই আগে লু স্যুনকে নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে রশীদ আমিন মন্তব্য করেছিলেন,

    লু সুনের আরেকটি বড় অবদান হচ্ছে ইউরোপের জীবনঘনিষ্ঠ ছাপচিত্রীদের চীনদেশে পরিচয় করিয়ে দেয়া, বিশেষ করে সাদাকালো কাঠখোদাইয়ে যে অসাধারণ কাজ হচ্ছিল তার বার্তা চীনদেশে পৌঁছে দেয়া। জার্মানীর প্রখ্যাত নারী ছাপচিত্রী ক্যাথে কোলভিট্‌জের ছবিগুলো চীনে জনপ্রিয় হওয়ার পিছনে লু সুনের অবদান অনেক।

    এ বিষয়ে অল্পস্বল্প জানা ছিল; তাঁর কাছ থেকে বিশদে জানবার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। তথ্যসমৃদ্ধ এই নতুন পোস্টের জন্য রশীদ আমিনকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

    পোস্টের অন্তিম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,

    চলতি বছর ২০১১ সালে চীনে উদ্‌যাপিত হচ্ছে ল্যু সুনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা নতুন কাঠখোদাই আন্দোলনের ৮০তম বার্ষিকী, ‘দ্য চাইনিজ আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশান’ এ বছরকে অভিহিত করেছেন ‘চায়না প্রিন্টস ইয়ার’ হিসেবে।

    আরো জানা যাচ্ছে, লু স্যুনের ১৩০তম জন্মজয়ন্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে এ বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত বেইজিং-এর লু স্যুন জাদুঘরে ক্যাটে কোলভিট্‌জের একটি একক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। এতে প্রদর্শিত হয়েছে ছাপাই ছবি ও ভাস্কর্য মিলিয়ে মোট ৫৮টি শিল্পকর্ম। প্রদর্শনীর জন্য কোলভিট্‌জের এই কাজগুলো ধার দিয়েছিল জাপানের ওকিনাওয়ায় অবস্থিত ‘সাকিমা আর্ট মিউজিয়াম’। প্রদর্শনীর সম্পূরক অনুষ্ঠান হিসেবে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের শিল্পবিশারদদের অংশগ্রহণে একটি সিম্পোজিয়ামও অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

    আর গত বছরের (২০১০) ৬ মার্চ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বেইজিং-এরই ‘আর্ট্‌মিয়া ফাউন্ডেশন’-এর গ্যালারিতে আয়োজিত হয়েছিল একটি প্রদর্শনী — ‘Kathe Kollwitz: Her art and her influence on Chinese art’:

    This exhibition takes a new look at the graphic works of Käthe Kollwitz in respect to her influence on the development of Chinese graphic art, as well as her traces in Chinese contemporary art, which have been strongly engraved onto the creative spirit of Chinese artists ever since her acceptance and widespread popularity in China in the early 1930‘s through the respected literate Lu Xun.

    Accordingly, the exhibition consists of three parts: partpartpartpart oneoneoneone focuses exclusively on the most representative works of Käthe Kollwitz, including the 3 cycles (Weavers’revolt, Peasant War, and War), self-portraits, works with the mother-child motif, and death motif, which plays a significant role in her life as a female artist. The bronze sculpture, Mother with two children, with its remarkable size in comparison to her small-scale statuettes takes its places in the middle of the main hall. On the one hand, it arouses astonishment of the visitors with the delicate and temperate simplicity in its form and shape and, on the other hand, dominates the exihibition spaces with its expressive force.The second and third part of the exhibition refer to the influence of Käthe Kollwitz on Chinese graphic art and Chinese contemporary art with her artistic skills and themes.
    The second part includes graphics which originated beween 1930 and 1950.

    The third part of the exhibition, shows Käthe Kollwitz’s influence on Chinese contemporary art, and provided the most ponderous challenge in finding artists and works from Chinese contemporary art in which the influence of Käthe Kollwitz is clearly present. Even though her importance and influence on Chinese contemporary art has slightly paled in comparison to the works showed in the second part of the exhibition, prints and paintings exhibited in the third part provide inevitable evidence to the timelessness of ongoing traces of Kollwitz‘s master pieces in new Chinese art.

    প্রদর্শনী উপলক্ষে মুদ্রিত হয়েছিল Käthe Kollwitz নামে একটি ১৫৪ পৃষ্ঠার একটি অ্যালবাম। এই প্রদর্শনীর সূত্রে রচিত ন্যাশনাল আর্ট মিউজিয়াম অব চায়না-র পরিচালক Di’an Fan-এর প্রবন্ধ ‘Käthe Kollwitz and China New Graphic Art Movement’-এর অংশবিশেষ উদ্ধৃত করা যাক :

    Graphic art could be found in ancient China, however, it has a brand new beginning in modern China, initiated by the new woodcutting art done not by traditional artisans but by artists independently. In the first half of the 20th century, China new graphic movement was originated in the midst of social and political chaos. With profound western impression, it embedded itself into China modern history of national liberation, and was influential in directing with new orientation China art history of decades to come. The originator of this movement was Lu Xun, one of the greatest poets in China. He detected in western graphic art the “beauty of strength” which could shaken human heart, and intended to introduce this form of art into China by all means. He was accordingly considered the spiritual mentor of China modern graphic art.

    In the summer of 1931, Lu Xun held a “Woodcutting Seminar” in Shanghai. Mr. Uchiyama Kakechi an art tutor from Japan, was invited to give lectures on theory of skill of modern woodcutting, Lu Xun being the interpreter in person. This seminar has long been recognized as the very beginning of China new woodcutting movement. Lu Xun displayed in this seminar his collection of western graphic works to the young students. Among the displayed collection, one could find Käthe Kollwitz.

    Of all the 2000 pieces of foreign graphic artworks in Lu Xun’s collection, Kollwitz’s are his most recommended. In 1936, the year before Lu Xun’s death, he edited and published Käthe Kollwitz’s Prints Florilegium. In the Preface, he pointed out that of all contemporary female artists, only Kollwitz had shaken the world…With her maternal compassion, She lamented, protested, and fought for the insulted and humiliated. Her subjects are misery, hunger, disease, death on the one hand and, on the other, struggling, uniting and uprising.

    […]

    On February 7, 1931, Rou Shi was killed with other four left-wing youths. For this tragedy, Lu Xun was very sorry. Meanwhile, he came across in a German bookstore’s art catalogue Kollwitz’s Sacrifice. In that print, Lu Xun found all the sorrow and anger of his own were well expressed. He then sent it to the left-wing journal Bei Dou, and asked Ding Ling, the editor-in-chief, to have it published in memory of five martyrs. This story was recorded in Lu Xun’s famous prose “Memory for the sake of forgetting”.
    According to Lu Xun’s diary, around 1930, with the assistance of his student Xu Shiquan and loyal friend Agnes Smedley, Lu Xun purchased seven collections of Kollwitz’s works and 23 original prints with Kollwitz’s signature. The seven collections are Käthe Kollwitz’s prints, Make a cry, Mother and child, Works of Käthe Kollwitz, A weavers’ revolt, peasants’ war, war, Biography of Käthe Kollwitz, and New selection of Käthe Kollwitz. Of the 23 original prints, only 17 are extant, which are two Self portrait, A weavers’ revolt in six sheets, Peasants war in seven sheets, Bread and German children in hunger. All but two sheets in Peasants’ war were signed by Kollwitz. In addition to all these collections, Lu Xun kept another set of A weavers’ revolt with Kollwitz’s signature. This set he offered to the Japanese art tutor Uchiyama Kakechi for appreciating his courses given about woodcutting. It was known unfortunately that this set was destroyed in the Pacific War.

    In Lu Xun’s opinion, the Kollwitz-led modern graphic art was the only form of art that was close to the social reality in China. With its own strength to move human heart and its silent voice of the sacrificed poor, it could be used as weapon to fight with. This art with its powerful life was the very thing China was in need of at that age. Lu Xun tried to displayed and spreaded Kollwitz’s arts by all means, for examples, by correspondences, book-lending, exhibition, publishing, commentaries, and so forth. In the 1936 edition of Käthe Kollwitz’s Prints Florilegium, which Lu Xun published on his own, he explicitly encouraged people to make copy freely. For the advertisement, he chose German children in hunger. All these reflected Lu Xun’s eagerness in introducing Kollwitz into China.

    Lu Xun’s Kollwitz collection was displayed in German Graphic Show (Shanghai, 1932) and in German-Russian Graphic Show (Shanghai, 1933). Thanks to him, Kollwitz found large audience among Chinese young people, and exerted an important influence upon woodcutting practice in the country. Almost no one among the graphic artists would not imitate Kollwitz at that age. They learned from Kollwitz expressionist’s skill, language as well as her compassion for the miserables, by which they transformed their tool into weapon, created a lot of realistic works, and expressed their sympathy, anger, and critique. They rendered alive the depression and cries of the poor, and added a revolutionary page in the art history of the country. Since the 1940s, some changes had taken place in China graphic art in accordance with the new reality, nonetheless, Kollwitz’s trace were still well remained and could still be detected in the new graphic works.

    Li Hua, the prestigious graphic artist and one of the pioneers of China new graphic art movement, finished his masterpiece Cry, my China in 1935. This piece presents a man bound and blind-folded as an imagery of the social reality. This man, though deprived of freedom and fallen into darkness, is depicted as full of strength by bold black-white representation. This skill is totally absent in traditional graphic art, and its effect is revolutionary. Li Hua’s cycle Flood in rage (1946) also inherits Kollwitz both in narrative method and skill of representation. The Passion: December 1 tragedy in Kunming (1945) was done by Chen Wang. It is similar to Kollwitz’s Liebknecht in structure as both have grasped the moment of mourning for the dead heroes. Their appearance yield a sense of tranquility and grief, while in their depth are looming passion and persevere determinedness.

    Romain Rolland, the French critical-realist writer, once said of Kollwitz as a “manly woman.” Her graphic art is “the greatest poetry of modern Germany, which reflects the misery and sorrow of the poor and the common people.” Kollwitz turned to sculpture in her old age, nonetheless, her traditional themes dominated as always, such as the death, mother and children. His art was products of her time, and this made it possible for Lu Xun to transplant them into the earth of China. Kollwitz perhaps never knew about her influence in China, however, this does not prevent us from studying her and remembering her. She is an integral chapter in the modern art history of China.

    ক্যাটে কোলভিট্‌জ-এর ছাপচিত্রের সঙ্গে লু স্যুনের পরিচয়, তাঁর নিজস্ব সংগ্রহ ইত্যাদি বিষয়েও প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া গেল এই লেখা থেকে। আমাদের কৌতূহল ছিল আরো একটা বিষয়ে — গত শতাব্দীর তিরিশ-চল্লিশের দশকে চীনে লু স্যুনের নেতৃত্বে ছাপচিত্র আন্দোলন গড়ে তোলার পেছনে তাঁর কাজের প্রত্যক্ষ প্রভাবের কথা কোলভিট্জ নিজে জানতেন কি না। উপরে উদ্ধৃত অংশ থেকে জানা গেল, সম্ভবত এর বিন্দুবিসর্গও তাঁর গোচরে আসেনি কখনো!

    • রশীদ আমিন - ৭ ডিসেম্বর ২০১১ (১১:৫২ অপরাহ্ণ)

      চীন এবং ল্যু সুনকে নিয়ে তোমার আগ্রহ অসীম, তোমার অনেক ধারণাও আছে।
      তোমার এই মন্তব্যের ছলে নানাবিধ সত্য যুক্ত করে দেয়ায় এই পোস্টটি অনেক সমৃদ্ধ হলো।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.