তিনি মারা গেছেন এখনো একবছরও হয়নি অথচ এর মধ্যেই মহান মে মাসের শেষ দিকে এসে বিখ্যাত সুরজিৎপন্থায় গঠিত হলো ভারতের প্রথম সমাজতান্ত্রিক সরকার, এই ২০০৯-এর ভারত লোকসভার তৃতীয় ফ্রন্ট সরকার। এমনই হতে পারে মে ২০০৯-এর শেষদিকে কোনো ভারতীয় পত্রিকায় পঞ্চদশ লোকসভার ফলাফল নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শুরুর ভাষ্য। বাংলা বিহার উড়িষ্যা অন্ধ্র ও কেরালা এই পাঁচ রাজ্যের লোকসভা ফলাফল ভিত তৈরি করবে তৃতীয় ফ্রন্ট সরকারের এবং তাকে সফলতায় নিয়ে আসবে উত্তরপ্রদেশসহ ভারতের অন্যান্য প্রদেশের আঞ্চলিক দলগুলোর বিজয়ী সদস্যদের সমর্থন। এই হলো সম্ভাব্য প্রক্রিয়া কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি কী ঘটবে এখনই বলা যাচ্ছে না, কারণ এবারের লোকসভা নির্বাচন হবে চরম বহুমাত্রিকতার নির্বাচন, সে নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ১৬ মে ২০০৯ ঘোষণা হওয়ার মধ্য দিয়ে অনেক সম্ভাবনা ও অনেক যোগবিয়োগের পরই কিন্তু বেরিয়ে আসবে আরাধ্য সরকার গঠনের ফলাফল। তাই সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাতের সেই মন্তব্য ‘ফলাফল ঘোষণার পরই বোঝা যাবে তৃতীয় ফ্রন্টের গুরুত্ব’ –এটাই হতে পারে আপাতত শেষ কথা। ভারতের বামফ্রন্ট এখন নিজের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করছে সুরজিৎপন্থার বাস্তবায়ন, আর তার পরিণতিতে সফলতা আসলে, সে সফলতার উপহারটি তুলে দিতে চাইছে একসময় যাকে প্রধানমন্ত্রী হতে দিতে চায়নি সিপিএম পলিটব্যুরো, সুরজিতের সহকর্মী ভারতের সতর্কতম রাজনীতিক জ্যোতি বসুকে। আমরা সবাই অপেক্ষা করছি, বিশেষত আমরা যারা ভারতের প্রতিবেশী, আমরাও চাই অ-কংগ্রেস অ-বিজেপি সরকার, একমাত্র এরকম সরকারের মধ্য দিয়েই, যাকে আমি বারবার বলছি প্রথম ভারতীয় সমাজতান্ত্রিক সরকার, সম্ভব অনেক বেশী ধর্মনিরপেক্ষ উপমহাদেশ গড়া, যা এখন খুবই প্রয়োজন, এবং যা না হলে উপমহাদেশের পরিস্থিতি দিনের পর দিন আরো খারাপ হবে। কিন্তু একথা আমরা সবাই জানি এই তৃতীয় ফ্রন্ট সরকার ভারতের রাজনীতির কঠিনতম প্রকল্পগুলোর একটি, কিন্তু অসম্ভব কখনো নয়, এবং এবার না হলে যে আর কখনো হবে না তাও নয়, ভবিষ্যৎ তৃতীয় ফ্রন্টের।