খেল্

তাহলে অক্টোপাসের ক্ষেত্রে নিশ্চয় আরো বড় কোনো বাণিজ্য পেছনে আছে। ইউরোপে এই 'মিডিয়া কভারেজ' কী শুধু এমনি এমনি হচ্ছে![...]

সিদ্ধান্ত নিতে হবে — খেলা দেখব না ভবিষ্যদ্বাণী শুনব। গত কয়েকদিন থেকে অক্টোপাস নিয়ে যা হচ্ছে তা বড় বেশি হচ্ছে। কোথাও এর অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে, অবশ্যই সেউদ্দেশ্য টাকা কামানোর সাথে জড়িত। ওই যে পাখির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ গণনা করেন যে মুনিয়া পান সিঙ্গাপুরে, তার কয়েকটি ফুটবল ম্যাচে ভবিষ্যদ্বাণী মিলে যাওয়ায় যে তার আয় বেড়ে গেছে, সে সহজ হিসাবটা খুব সহজে চোখে দেখছি। তাহলে অক্টোপাসের ক্ষেত্রে নিশ্চয় আরো বড় কোনো বাণিজ্য পেছনে আছে। ইউরোপে এই ‘মিডিয়া কভারেজ’ কী শুধু এমনি এমনি হচ্ছে!

সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে খেলা দেখার। বেশির ভাগ দর্শক খেয়ালই করেননি, কী কৌশলে বলের দখল রেখে গতিকে স্তব্ধ করে দিল স্পেন। কিন্তু তারপরও গোল পেতে তার কষ্ট হচ্ছিল, কারণ স্পেনের কোনো গোলদাতাই সে অর্থে ‘ক্লিনিক্যাল’ নন, এবারের স্পেনের অসাধারণ খেলোয়াড় পেদ্রো ও পিকে, ভিয়া নন। আর ওই খেলায় অপ্রতিরোধ্য গতির জার্মান এমন মুষড়ে পড়ল কেন? তারা বলের দখল নিয়ে তার গতি বাড়িয়ে দিয়ে স্পেনকে কাবু করতে পারেনি। প্রথমত এই তরুণ দলে সে অভিজ্ঞতার অভাব ছিল আর দ্বিতীয়ত এবারের জার্মান দলের সবচেয়ে অসাধারণ খেলোয়াড় মুলারের অনুপস্থিতি, — শোয়াইনস্টাইগার, ওৎসিল ও মুলার, যেকোনো একজনকে হারালেই এই জার্মানির আক্রমণ ভোঁতা হবেই। জার্মান তরুণ দল তাদের আরো আরো আক্রমণভাগে এমন খেলোয়াড় চাই। তাহলেই স্পেনের ‘অগতির গতি’ আর তাদের এতো সহজে কাবু করতে পারবে না।

আশা করি ফাইনালটা, আমরা একটা ফুটবল ফাইনাল হিসাবেই দেখব। ভবিষ্যদ্বাণীর খেল্ না দেখে বিশ্বকাপ ২০১০-এর শেষ খেলা হিসাবে দেখব। গতি নিয়ে, বলের দখল নিয়ে, খেলার কৌশল নিয়ে দুদল আমাদের কী দেখায় তা দেখব। সেসাথে কেউ অপকৌশলে খেলা জেতার চেষ্টা করে কিনা তাও দেখব। বিশেষ করে আমার আঙ্গুল ‘রবেন’- এর দিকে তোলা থাকবেই কারণ আমি নিশ্চিত, সুযোগ পেলেই সে অপকৌশলের আশ্রয় নেবেই।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

৩ comments

  1. মাসুদ করিম - ১২ জুলাই ২০১০ (১১:১০ পূর্বাহ্ণ)

    হল্যান্ড এখন আর ‘টোটাল ফুটবল’ খেলে না, ওরা এখন ‘হলুদ ফুটবল’ খেলে। তারপরও শান্তি এই হলুদ ফুটবলের করতলগত হয়নি বিশ্বকাপ। অবশ্য হতে পারত স্পেনের স্ট্রাইকারদের ‘ভেদবুদ্ধি’র অভাবে হয়েও যেতে পারত, ধন্যবাদ ইনিয়েস্তা-ফাব্রেগাস। তাহলে স্পেনই !! la campeona!! পড়ুন এখানে এখানে

  2. মাসুদ করিম - ১২ জুলাই ২০১০ (১২:৪৬ অপরাহ্ণ)

    তাহলে অক্টোপাসের ক্ষেত্রে নিশ্চয় আরো বড় কোনো বাণিজ্য পেছনে আছে।

    শোনা যাচ্ছে ভারতের এক বিনোদনমোগল আসছে ৪র্থ ‘ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ’এ বাজি ধরার ‘গণক’ হিসাবে ‘পল দি অক্টোপাস’কে কিনতে যাচ্ছে। তাহলে খেল্ হয়তো এখানে!

  3. অবিশ্রুত - ২১ জুলাই ২০১০ (৪:৫০ অপরাহ্ণ)

    গত বছরের একটি আলোচিত চলচ্চিত্র ছিল ডিস্ট্রিক্ট নাইন, যার পটভূমি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গ। সায়েন্স ফিকশন হলেও ডিস্ট্রিক্ট নাইনের অন্তর্তলে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতীকী উপস্থিতি। সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় যে বিশ্বকাপ ফুটবল হয়ে গেল, অপরাধের মাত্রা একটুও না কমার পরও যে সফল একটি আয়োজন সম্পন্ন হলো, কীভাবে এই অসম্ভব সম্ভব হলো বাণিজ্যের সমীকরণের দিকে তাকিয়েই কেবল তার উত্তর দেয়া সম্ভব। এই বাণিজ্য আমাদের অক্টোপাস হয়ে আঁকড়ে ধরছে এবং আমরা কোনও কিছুই উপভোগ করতে পারছি না, আবার ভূ ভূ আওয়াজ বের করার মোহও ছাড়তে পারছি না। দক্ষিণ আফ্রিকার এইসব বিষয় আশয় নিয়ে চলতি সংখ্যা জি-ম্যাগাজিনে লিখেছেন জেমস ম্যাকইন্টার। তিনি লিখেছেন,

    South Africa hoped that by staging one of the planet’s premiere sporting events, the country would receive a financial windfall and lots of favorable international publicity. Germany made a tidy profit hosting the 2006 World Cup, but South Africa will find it harder to duplicate that feat. The long, expensive flights, the recent economic downturn, and inflated ticket prices have caused a revision downward in the number of visitors.

    According to Bloomsburg’s Mike Cohen, “South Africa has spent 34 billion rand ($4.6 billion) to host the soccer World Cup.” So who stands to benefit? “The big secret about the World Cup is that only the rich will get richer from it,” in the words of South African playwright Mpumelelo Paul Grootboom. The lion’s share of World Cup income will benefit sponsors and international media. Some owners of four star hotels and restaurants will no doubt reap benefits. Also profiting are the government officials who got kickbacks from the contractors awarded the construction contracts. Ordinary people, some of whom have been football fans for years, were excluded. As journalist Claire Byrne notes: “The stadium…women from townships who serve up cheap local fast-food at games are being moved out to make way for FIFA sponsors, such as McDonald’s.”

    পুরো লেখাটি পড়া যাবে জি-ম্যাগাজিনের এখানকার এই লিংকটি থেকে।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.