হবি কমিউনিস্ট, ইউরোপে আজকাল অনেক বামপন্থীকে, এনামেই ডাকে অনেকে। এরা কী করেন? সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, নানা রকম ফোরাম, মানবন্ধন, এসব অপেক্ষাকৃত ‘সাদাকলার’ কার্যক্রমের সাথেই এদের যত যোগসাজশ। কী আছে এদের? স্টাইল, এক অসাধারণ বামপন্থী জীবনযাপনের লাইফস্টাইল আয়ত্বে আছে এদের, আছে নিশ্চিত জীবিকা এবং পার্টিকে দেয়ার মতো অপর্যাপ্ত সময়, আর এক যাযাবরপ্রথা — বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের সহজলভ্যতার যুগে একে ব্যবহারে খুবই সচেতন এরা। এই হবি কমিউনিস্টরা শিল্পোন্নত ইউরোপীয় দেশগুলোর সোসালিস্ট ও কমিউনিস্ট পার্টিগুলোর একটা উল্লেখযোগ্য অংশ হয়ে উঠেছে এখন। ইউরোপে মধ্য-বাম রাজনীতি বা সোসালিস্ট রাজনীতির অবসান হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন, এবং ইউরোপীয় রাজনীতির প্রধান তিন দেশ জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালিতে এবং আরো বড় পরিসর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে সোসালিস্ট দলগুলোর ভরাডুবি এই আশঙ্কাকে অনেকটুকু বিশ্বাসযোগ্য করে তুলছে। আর ইউরোপের বাম রাজনীতির এই দুরাবস্থার অনেকগুলো কারণের মধ্যে দলের সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে হবি কমিউনিস্টদের প্রাদুর্ভাবকেও অনেকে দায়ী করছেন।

লাতিন আমেরিকা ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে হবি কমিউনিস্টদের প্রাদুর্ভাব না হলেও এখানে যে এদের অস্তিত্ব নেই তা ঠিক নয়। আমাদের দেশেও বাম রাজনৈতিক দলগুলোতে এরকম অনেক সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীরা আছেন যাদেরকে সহজেই হবি কমিউনিস্ট ডাকা যেতে পারে।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

১৬ comments

  1. ফারুক ওয়াসিফ - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৪:৫৩ অপরাহ্ণ)

    ধন্যবাদ।
    আপনার মুসলিম বাম-এর পর এই লেখাটা এল। আগেরটার উদ্দেশ্য ও উদ্দিষ্টর মতো এই লেখাতেও তাদের খুঁজছিলাম, শেষ প্যারায় এসে সেটা পেলাম এবং বুঝলাম।

    আমাদের দেশেও বাম রাজনৈতিক দলগুলোতে এরকম অনেক সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীরা আছেন যাদেরকে সহজেই হবি কমিউনিস্ট ডাকা যেতে পারে।

    তবে এঁরা অতিনগণ্য সংখ্যক, নইলে আর কিছু না হোক ডিজিটাল দিন বদলের এই যুগে ডিজিটাল মার্সেনারিদের তারা চ্যালেঞ্জ করতেন।

    ২.

    ইউরোপে মধ্য-বাম রাজনীতি বা সোসালিস্ট রাজনীতির অবসান হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন

    খোদ মার্কসের কাল থেকে অজস্রবার এই অবসান ঘোষিত হয়েছে, আবার নাহয় হলো!

    ৩.

    জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালিতে এবং আরো বড় পরিসর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে সোসালিস্ট দলগুলোর ভরাডুবি এই আশঙ্কাকে অনেকটুকু বিশ্বাসযোগ্য করে তুলছে।

    পশ্চিম ইউরোপের সংকটগ্রস্থ পুঁজি আরো ডানে যাবে, যেমন গিয়েছিল নাৎসী-ফ্যাসিস্ট-চার্চিল জমানায়। আমেরিকা এরই ভ্যানগার্ড। পূর্ব ইউরোপ হবে এর শিকার আর ইউরোপীয় মুসলিমরা হবে এর অভ্যন্তরীণ উপনিবেশিত শিকার, যেমনটা হয়েছিল ইহুদীদের বেলায়।

    ৫.

    আর ইউরোপের বাম রাজনীতির এই দুরাবস্থার অনেকগুলো কারণের মধ্যে দলের সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে হবি কমিউনিস্টদের প্রাদুর্ভাবকেও অনেকে দায়ী করছেন।

    বুদ্ধিজীবীদের লেজ বলে জানি, আজকাল তাহলে গরু আর লেজ নাড়াচ্ছে না, লেজই গরুকে নাড়াচ্ছে!!!
    সবে তো কলির সন্ধে! আরো দেখা যাবে…

    অভিনন্দন আপনাকে।

  2. ফিরোজ আহমেদ - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৫:১০ অপরাহ্ণ)

    মাসুদ করিম

    সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
    লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের

  3. রায়হান রশিদ - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৫:২৫ অপরাহ্ণ)

    @ প্রিয় মাসুদ ভাই,

    প্রচলিত জনপ্রিয় ধারার চিন্তার বিপরীতে যে কোন ধরণের বক্র বা বিরুদ্ধ চিন্তার চর্চার ওপরই শ্রদ্ধা রাখতে ইচ্ছে করে। ভরসা রাখতে ইচ্ছে করে, কারণ তাতে নতুন কিছু বেরিয়ে আসার আশ্বাসটুকু অন্তত থাকে। এ তো ঠিকই যে – অ-জনপ্রিয়, কম-হাততালিযোগ্য মতামত দিতেও এক ধরণের “সাহস” এর প্রয়োজন হয়। খুব কম লেখকের মধ্যেই তা লক্ষ্য করেছি।

    এবার আপনার পোস্টের বিষয়ে বিনীতভাবে কিছু কথা বলতে চাই। আপনার সাম্প্রতিক কয়েকটি পোস্ট (যেমন: ‘মুসলিম বাম’, ‘বামন হয়ে..’) বেশ আগ্রহ নিয়েই পড়া শুরু করেছিলাম। এই পোস্টগুলোতে বক্রচিন্তার স্ফলিঙ্গের উপস্থিতি লক্ষনীয় ছিল, তাই-ই হয়তো আশাবাদী হয়ে উঠছিলাম যে একটা শিক্ষনীয় (নিদেন পক্ষে উপভোগ্য) আলোচনার সূত্রপাত হতে যাচ্ছে। বক্তব্যের ঠিক বেঠিক বিবেচনা দ্বারা ভারাক্রান্ত না হবার চেষ্টা করেছি। কারণ সে চূড়ান্ত বিচারের এখতিয়ার কারোরই হাতে নেই, এমনকি চিন্তার মাস্টারদেরও না; আছে কেবল সময়ের হাতে। কারণ পারসেপশনের সাথে কারেক্টনেস কথাটা যায় না বলেই মনে করি।

    হতাশ হইনি এখনো, তবে বুঝতে পারছি না এ আশাবাদ আর কতক্ষণ টিকিয়ে রাখা সম্ভব। যে কারণে এই কথাগুলো বললাম, তা হল – একই এবং কাছাকাছি বিষয়ের ওপর আপনার পক্ষ থেকে পর পর তিনটি পোস্ট আসাতে আলোচনাটা কেন্দ্রীভূত হওয়ারই সুযোগ পাচ্ছে না। আবার এককভাবে পোস্ট তিনটির কোনটিতেই কিন্তু আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো যথেষ্ট তথ্যগত এবং বিশ্লেষণগত উপাদানের উপস্থিতি নেই (আমার বিনীত মতামত)। সেটাও হয়তো পুষিয়ে নেওয়া যেতো (যেমনটা প্রায়ই হয়ে থাকে মুক্তাঙ্গনের আলোচনাগুলোতে) যদি লেখকের পক্ষ থেকে আলোচনায় সম্পূরক মতামত, তথ্য, বিশ্লেষণ হাজির করা হোতো। মতামত প্রদানকারীরাও তখন উৎসাহ খুঁজে পেতেন অংশগ্রহণের। আপনার পোস্টগুলোতে কয়েকজন মতামত প্রদানকারীর মন্তব্যে আলোচনাকে আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ কিন্তু ঠিকই তৈরী হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে, একই ধরণের বিষয় নিয়ে পর পর তিনটি আলাদা পোস্ট দিয়ে হয়তো (সম্ভাবনাময়) এই আলোচনাটারই ক্ষতি করা হল! সংক্ষিপ্ত “স্ফুলিঙ্গ চিন্তা” যে সম্ভাবনা তৈরী করে না তা কিন্তু বলছি না। কিন্তু সেই “স্ফুলিঙ্গ” যদি পরবর্তী ধাপগুলোতে বিবর্তিত না হয় নিরীক্ষা-বিশ্লেষণের মাধ্যমে, তাহলে অর্জনটা কোথায় বলতে পারেন? তিনটি পোস্টের দু’টোই হয়তো অন্য যে কোন একটি পোস্টে “মন্তব্য” আকারেই অনেক বেশী প্রাসঙ্গিক হোতো, আমার অভিমত। আপনি নিশ্চয়ই একমত হবেন মুক্তাঙ্গনে এমন মন্তব্যকারীর সংখ্যা কম নয় যাঁরা তাঁদের সাধ্যমত অনেক পরিশ্রম ও চিন্তা দিয়ে বিশ্লেষণ এবং তথ্যবহুল মন্তব্য লেখার চেষ্টাটুকু অন্তত করেন। বিষয়বস্তুর এবং তাকে উপস্থাপনের প্রতি একই পর্যায়ের নিষ্ঠা যখন মূল পোস্টে খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন তাঁদেরই দমে যেতে হয়।

    বিষয়গুলো ভেবে দেখার বিনীত অনুরোধ করবো।

  4. অবিশ্রুত - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৮:১৬ অপরাহ্ণ)

    তা ঠিক, যেদিন থেকে কেউ কেউ কম্যুনিজমের ভূত দেখেছে, সেদিন থেকেই কেউ কেউ সৌখিন কম্যুনিস্ট হওয়ার মিশন নিয়েছেন, যাতে কম্যুনিজমের বারোটা বাজানো যায়। হবি কম্যুনিস্ট টিকিয়ে রাখাটা পুঁজিবাদেরই অন্যতম দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আর এদের সামাল দিতে গিয়ে কখনও দলে বিভ্রান্তি আসে, বিভাজনও আসে। কম্যুনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাসে তা অনেকবারই দেখা গেছে।
    তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো, কম্যুনিস্ট-বিরোধিতা কারও হবি নয়, সেটি তারা আন্তরিকভাবেই করে থাকেন। ফ্রান্স, ইতালি ও জার্মানীতে বাম-বিপর্যয়ের মাসুদ-করিমীয় ব্যাখ্যা এরই এক নমুনা।
    অচিরেই এখানে এ-নিয়ে মন্তব্য করতে আসার আশা রাখি। ব্যস্ততার কারণে মন্তব্য শেষ করতে পারছি না বলে দুঃখিত।

    • অবিশ্রুত - ৩ অক্টোবর ২০০৯ (৭:০৩ পূর্বাহ্ণ)

      ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর ভেঙে পড়েছিল, দুই জার্মানি এক হয়েছিল। একত্রিত জার্মানীর প্রথম নির্বাচনেই কমিউনিস্ট দল পিডিএস পাঁচ ভাগের বেশি ভোট পেয়ে সংসদে উঠে এসেছিল। বর্তমানে পিডিএস-এর বিলোপ ঘটেছে, সে স্থান নিয়েছে ডি লিংকে। গত ৩০ আগস্ট জার্মানীর তিনটি রাজ্যে নির্বাচন হয় এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে সব কটি রাজ্যেই ডি লিংকে বিজয়ী হয়।
      ২৬ সেপ্টেম্বরের ফেডারেল নির্বাচনে ডি লিংকে যে জিতবে না, সে হিসাব দলটি এবং পর্যবেক্ষক সবাই করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে দলটির অবস্থান বলে দিচ্ছে, বামরা জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন। এ নির্বাচনে মোট ভোটের ৩২ শতাংশ পেয়েছে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক দল,২৭.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক দল, আর ১১.২ শতাংশ পেয়েছে বামরা। জার্মানীর ২০০৯-এর নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল পাওয়া যাবে এখান থেকে
      ১৯৮৯ সালের পর সবাই মনে করেছিল, গেছে, বামরা গেছে। সেদিক থেকে আমি বলব, জার্মানীতে বামদের অবস্থান খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। পশ্চিমা বিশ্লেষকরা বলছিলেন, ৫০টির মতো আসন পেলেই ডি-লিংকে জার্মানীর রাজনীতির জন্যে ‘ভয়াবহ’ ফ্যাক্টর হয়ে উঠবে, অ্যাঙ্গেলা মার্কেল আওয়াজ তুলেছিলেন, ডি-লিংকে ঠেকাও। কিন্তু ডি-লিংকে পেয়েছে তারও বেশি – ৭৬টি আসন। এই ক্ষেত্রে (জার্মানীর নির্বাচনে) হবি কমিউনিস্টদের অবস্থান বা ভূমিকা কি সে ব্যাপারে আমি একেবারেই অন্ধকারে আছি। কেউ জানাবেন কি?

      • মাসুদ করিম - ৩ অক্টোবর ২০০৯ (৩:২৮ অপরাহ্ণ)

        নির্বাচন হয়েছিল ২৭ সেপ্টেম্বর আর সোসালিস্ট দলের ভোট ২৩.৫ শতাংশ: দুটোই মনে হচ্ছে কিবোর্ডস্লিপ। গতবারের ভোটে সোসালিস্ট দলের ভোট ছিল ৩৪.২ শতাংশ, এই যে প্রায় ১১ শতাংশ ভোট কমে যাওয়া, এটাই মধ্য-বাম রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কার কারণ। আর ‘ডি লিন্কে’ বা ‘দি লেফ্ট’ -এর গতবারের চেয়ে ভোট বেড়েছে সাড়ে তিন শতাংশ। তার মানে সব মিলে বাম ভোট কমে গেল প্রায় সাড়ে সাত শতাংশ, সংখ্যার হিসেবে প্রায় ৩২ লক্ষ ভোট। হ্যাঁ, ‘ডি লিন্কে’-এর ভোট যদি আগামী দুই নির্বাচনে ৭ শতাংশের মতো বাড়ে তাহলে ২০১৭ সালে গিয়ে দলটি ২০ শতাংশ ভোটের অধিকারী হয়ে একটি আশাব্যাঞ্জক অবস্থানে গিয়ে পৌঁছবে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে এটি একটি মার্জ করা রাজনৈতিক দল ( পার্টি অফ ডেমোক্রেটিক সোসালিজম, পিডিএস + সোসালিস্ট ইউনিটি পার্টি অফ জার্মানি, এসইডি= ডি লিন্কে) কাজেই ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এই দলটিতে খুবই স্বাভাবিক, সেসাথে নেতার সংকটও আছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটি তাদের আগামীতে মোকাবেলা করতে, সেটা হচ্ছে ‘ডি লিন্ক’-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে সারা পৃথিবীতে অনেক উগ্র বাম সংগঠনের সাথে এদের যোগসাজশ আছে। সবকিছু মিলিয়ে কঠিন পথেই আছে ‘ডি লিন্ক’-এর উত্তরণ, এবং অনেকে আশা করছেন তারা পারবেন এগিয়ে যেতে। আমরাও চাই তারা যেন এগিয়ে যেতে পারে, কিন্তু বাকিটা ভবিষ্যতই বলতে পারবে।

        এখানে আমার অভ্যাস মতো একটা ভাবনার প্রস্তাবনা রাখি: ‘ডি লিন্ক’-এর মার্জটা দেখে ভাবছি, আমাদের দেশে যদি সিপিবি ও বাসদ মার্জ করে একটা দল হয়, সে দলটায় ক্ষমতা ও নেতৃত্বের ভারসাম্য কি থাকবে? কী মনে হয় আপনার, আপনাদের?

      • মোহাম্মদ মুনিম - ৩ অক্টোবর ২০০৯ (৮:১৪ অপরাহ্ণ)

        জার্মানীর সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ নিয়ে একটি লিঙ্ক

  5. রশীদ আমিন - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৮:৪৯ অপরাহ্ণ)

    আরেকটি টার্ম ইউরোপে প্রচলিত আছে বোধ হয় – সামার ভ্যাকেশন রেভ্যুলিউশনারী । গদারের একটা ছবি দেখেছিলাম এই বিষয়ে ।

  6. মনজুরাউল - ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:৩৩ অপরাহ্ণ)

    সুপ্রিয় মাসুদ করিম,
    পর পর আপনার তিনটি লেখা পড়লাম। একটিতে কোন মন্তব্য করিনি। আপনার ‘মুসলিম বাম’, ‘বামন হয়ে..’লেখার পর ঠিক একই ঘরানার আর একটি এটা। অনেকটা প্রবচনধর্মী। আবার “লিফলেট”ও বললে ভুল হবে না! এই লেখাগুলি পড়তে শুরু করে শেষ না করেই ধরে নেওয়া যায় শেষে কি বলতে চাইছেন। অর্থাৎ শেষের সারসংকলনটুকু বলবার জন্যই যেন প্রথমে কিছুটা ভূমিকা বলে নেওয়া হয়। ব্লগ ভেদে ঠিক এই কাজটিই হয়ে চলেছে বেশ কিছুদিন ধরে। তবে সে সব ক্ষেত্রে তারা কুৎসিত গালাগালি, বক্র আক্রমণ এবং নিম্নরুচির উপমা ব্যবহার করে। আপনাকে ধন্যবাদ “বামপন্থা বা কমিউনিজম নিধন কিংবা খেলোকরণ” এর প্রচেষ্টাটি যথেষ্ট শালীনতা সম্পন্ন!!

    অনেক আগে এডগার স্নো’র সাথে শেষ স্বাক্ষাৎকারে স্নো মাও কে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ “আপনাদের প্রজন্ম গত হলে পরের প্রজন্ম সমাজতন্ত্রকে কি ভাবে দেখবে বলে আপনার মনে হয়?” এর উত্তরে মাও বলেছিলেনঃ “ঠিক আমাদের পরের প্রজন্ম কি ভাবে নেবে বলতে পারবনা, তবে তারও অনেক পরের প্রজন্ম কি ভাবে নেবে বা ভাববে তা বলতে পারি! তারা ভাববে-কমিউনিজমের মত একটি স্বাভাবিক সাম্যের সমাজব্যবস্থা কায়েমের জন্য সে আমলের মানুষদের এত কসরত করতে হয়েছিল? এত প্রাণ দিতে হয়েছিল! তারা কি বোকা ছিল!!”

    মাও এর এই কথার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য হচ্ছে-মানব সভ্যতাকে টিকে থেকে আরো বিকশিত হতে হলে কোন না কোন ফর্মে তাদের কমিউনিজমে যেতেই হবে। এই “কোন না কোন একটি ফর্ম” বলতে নির্দিষ্ট করে কিছু এখনই বলে দেওয়া না গেলেও এর কিছু কিছু আলামত আমরা বিশ্বজুড়েই দেখছি। চরম ডান প্রতিক্রিয়াশীল আমেরিকার সরকার ব্যবস্থায়ও যেই জনকল্যাণকর কোন বিল পাশের প্রসঙ্গ আসছে সাথে সাথে ডানপন্থীরা ওবামাকে “সমাজতন্ত্রী” বলে তিরস্কার করছে! অর্থাৎ পুঁজির ক্যান্টনমেন্ট খোদ আমেরিকার প্রেসিডেন্টকেও “সমাজতন্ত্রী পান্ডা” গালি শুনতে হচ্ছে।

    আপনার জ্ঞাতার্থেঃ ইউরোপের ফ্যাশনেবল সমাজতন্ত্রীদের যে বর্ণনা দিলেন তার বাইরেও আরো মানুষ আছে, আরো পার্টি আছে। রাশিয়াতে নিনা আন্দ্রিয়েভার দল-কমিউনিস্ট পার্টি অব রাশিয়া(মাওবাদী) মনে করছে সেই বলশেভিকের মত সর্বহারা শ্রেণী কর্তৃক উগ্র বল প্রয়োগের মাধ্যমেই আবার কমিউনিজম ফিরে আসবে। আবার অন্যান্য সমাজতন্ত্রীরা মনে করছে নির্বাচনের মাধ্যমে আসবে। আসবে এতে কারো সন্দেহ নেই কিন্তু। রাশিয়ায় হাজার হাজার ম্যাকডোনাল্ড শপ খুলে আমেরিকার কপি হয়ে যতই তারা নৃত্য করুক, এখনো তাদের অধিকাংশ মানুষ সমাজতন্ত্রে ফিরে যেতে চায়।

    শেষে যে আমাদের দেশের প্রসঙ্গ টানলেন সেখানে একটু ভুল হচ্ছে। আমাদের এখানে কোন হবি কমিউনিস্ট নাই। সমাজতান্ত্রিক দাবীদার দলগুলি এখন অব্দি নিজেদের কমিউনিস্ট প্রমান করতে পারেনি, সুতরাং এরা হবি কমিউনিস্ট বা ড্রইংরুম মার্কসবাদী কোনটাই নয়।

    যদি সত্যি সত্যিই সমাজতন্ত্রকে/কমিউনিজমকে আক্রমণ করতে চান তাহলে সেই মত তাত্ত্বিক বিষয়াদি তুলে ধরে একে একে খন্ডনের উদ্যোগ নিলে ভাল হয়। আমরাও একটি বিশ্লেষণমূলক বিতর্কে নিজেদের শাণিত করতে পারি।

  7. মাসুদ করিম - ৩ অক্টোবর ২০০৯ (১২:১০ পূর্বাহ্ণ)

    ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এক জায়গায় এগুলো সব এক–এগুলো একেকটি ধর্ম। যখন এরা ভাবে ওর চেয়ে আমি শ্রেষ্ঠ বা আমি সবার সেরা তখনই সামাজিক নানা সমস্যা দেখা দেয়।

    সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু এক জায়গায় এরা সবাই এক–এরা স্রেফ সংখ্যা।

    ডান, মধ্য ডান, মধ্য, বাম, মধ্য বাম, সবুজ এগুলো এক জায়গায় সব এক–এগুলো একেকটি রাজনৈতিক দলের ধরন। এরা যখন ভাবে যে আমার রাজনীতিই শ্রেষ্ঠ, কাজেই আমিই হব সবচেয়ে দক্ষ সরকার–এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সব রাজনৈতিক দলই রাজনৈতিকভাবে অশুদ্ধ ক্রিয়াকলাপে নিজেদের জড়িয়ে ফেলে। আমি রাজনৈতিক দল হিসেবে যেমন সহজে আওয়ামী লীগ নিয়ে কথা বলব ঠিক একই সহজতায় সিপিবি বা বাসদ নিয়ে কথা বলব।

    খোদ মার্কসের কাল থেকে অজস্রবার এই অবসান ঘোষিত হয়েছে, আবার নাহয় হলো!

    দেখুন আশঙ্কাটা শুধু মধ্য-বাম বা সোসালিস্ট দল সম্পর্কে করা হয়েছে, সব বামদল নিয়ে করা হয়নি।

    তা ঠিক, যেদিন থেকে কেউ কেউ কম্যুনিজমের ভূত দেখেছে, সেদিন থেকেই কেউ কেউ সৌখিন কম্যুনিস্ট হওয়ার মিশন নিয়েছেন, যাতে কম্যুনিজমের বারোটা বাজানো যায়। হবি কম্যুনিস্ট টিকিয়ে রাখাটা পুজিবাদেরই অন্যতম দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

    হ্যাঁ, ঠিক যেমন ইসলামী নেতারা তাদের দুর্বলতা ঢাকতে অহরহ বলেন সব ইহুদিনাসারা, র, মোসাদের ষড়যন্ত্র।

    তিনটি পোস্টের দু’টোই হয়তো অন্য যে কোন একটি পোস্টে “মন্তব্য” আকারেই অনেক বেশী প্রাসঙ্গিক হোতো, আমার অভিমত। আপনি নিশ্চয়ই একমত হবেন মুক্তাঙ্গনে এমন মন্তব্যকারীর সংখ্যা কম নয় যাঁরা তাঁদের সাধ্যমত অনেক পরিশ্রম ও চিন্তা দিয়ে বিশ্লেষণ এবং তথ্যবহুল মন্তব্য লেখার চেষ্টাটুকু অন্তত করেন। বিষয়বস্তুর এবং তাকে উপস্থাপনের প্রতি একই পর্যায়ের নিষ্ঠা যখন মূল পোস্টে খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন তাঁদেরই দমে যেতে হয়।

    ঠিকই, মন্তব্য ও পোস্ট আমার কাছেও সমান মূল্যের। কিন্তু পার্থক্যটা হয়ে যায় এখানে যে, আমি কোনোকিছু পোস্ট আকারে দেব না মন্তব্য আকারে দেব সেটার সিদ্ধান্তটা আমিই নিই। আর তথ্যবহুলতা ও বিশ্লেষণধর্মীতা আমার ধাতে নেই–পোস্ট হলেও নেই, মন্তব্য হলেও নেই। আমি ভাষাটা একটু আধটু জানি তাকে সম্বল করে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে লিখি। এটাই আমি, এখানে আমার কিছু করার নেই।

    আপনার জ্ঞাতার্থেঃ ইউরোপের ফ্যাশনেবল সমাজতন্ত্রীদের যে বর্ণনা দিলেন তার বাইরেও আরো মানুষ আছে, আরো পার্টি আছে। রাশিয়াতে নিনা আন্দ্রিয়েভার দল-কমিউনিস্ট পার্টি অব রাশিয়া(মাওবাদী)মনে করছে সেই বলশেভিকের মত সর্বহারা শ্রেণী কর্তৃক উগ্র বল প্রয়োগের মাধ্যমেই আবার কমিউনিজম ফিরে আসবে। আবার অন্যান্য সমাজতন্ত্রীরা মনে করছে নির্বাচনের মাধ্যমে আসবে। আসবে এতে কারো সন্দেহ নেই কিন্তু।

    হ্যাঁ, যেমন হুজুররা ওয়াজে সবসময়েই বলেন–একদিন সারা পৃথিবীতে ইসলাম কায়েম হবে: তেমনি কিছু বলছেন মনে হয়!

    • মনজুরাউল - ৩ অক্টোবর ২০০৯ (১১:৩৭ অপরাহ্ণ)

      হুজুররা বলেন ভাববাদী দৃষ্টিকোণ থেকে যাকে বস্তুবাদ বহু আগেই খারিজ করে দিয়েছে, এবং যারা বামপন্থা বা কমিউনিজম সমর্থন করেন না তারাও তা খারিজ করে দিয়েছেন। আর বামপন্থীরা যা বলছে বা ভাবছে তা আর্থসামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিত, বিশ্ব রাজনীতির হাল-হকিকত বিবেচনায় রেখে। ভাবনায় অপরিপক্কতা থাকতে পারে, তাই বলে তা কোন ভাবেও হুজুরদের ভাবনার সাথে মেলে কি?

    • সৈকত আচার্য - ৪ অক্টোবর ২০০৯ (৬:০৭ অপরাহ্ণ)

      মাসুদ করিম বলছেনঃ

      আমি রাজনৈতিক দল হিসেবে যেমন সহজে আওয়ামী লীগ নিয়ে কথা বলব ঠিক একই সহজতায় সিপিবি বা বাসদ নিয়ে কথা বলব।

      অবশ্যই বলবেন। কেন নয়? কোন বিষয়ে লেখকের মতামত ভুল, শুদ্ধ বা অসম্পূর্ন যাই হোক, নিজের কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হলে তা ছড়িয়ে দেয়ার জন্যই আমাদের এই ব্লগ। এই অধিকারটুকু এখানকার লেখকদের সহজাত একটি অধিকার বলেই মনে করি।

    • রেজাউল করিম সুমন - ৭ অক্টোবর ২০০৯ (৭:৪৪ অপরাহ্ণ)

      @ মাসুদ করিম

      … তথ্যবহুলতা ও বিশ্লেষণধর্মিতা আমার ধাতে নেই – পোস্ট হলেও নেই, মন্তব্য হলেও নেই। আমি ভাষাটা একটু আধটু জানি, তাকে সম্বল করে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে লিখি। এটাই আমি, এখানে আমার কিছু করার নেই।

      সব লেখাকেই যে তথ্যবহুল আর বিশ্লেষণধর্মী হতে হবে – এমন দাবি কেউই করেন না। কিন্তু কোনো কোনো পোস্ট তথ্য আর বিশ্লেষণ দাবি করে, পাঠকদের দিক থেকেও একটা সংগত প্রত্যাশা থাকে; সে-ক্ষেত্রেও কি দায়/দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবে? তথ্যবিন্যাস ও বিশ্লেষণ আপনার ‘ধাতে নেই’ – এ সিদ্ধান্তে সায় দিতে পারছি না।

  8. অবিশ্রুত - ৫ অক্টোবর ২০০৯ (৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ)

    হ্যাঁ, ঠিক যেমন ইসলামী নেতারা তাদের দুর্বলতা ঢাকতে অহরহ বলেন সব ইহুদিনাসারা, র, মোসাদের ষড়যন্ত্র।

    আওয়ামী লীগ নেতারাও অনেক সময় নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার জন্যে অনেক কিছুর ষড়যন্ত্র খুঁজে পান। যেমন, এখন জলিলের বিবিধ কথার তোড়ে তাঁরা লিফলেট বিলি করে জানাচ্ছেন, অক্সফোর্ড স্ট্রিটে তারেক রহমানের সঙ্গে জলিল বৈঠক করেছেন এবং তারপরেই এইসব কথাবার্তা বলছেন। বিএনপি নেতাদেরও এরকম দৃষ্টান্ত রয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সব সময় এরকম অভিযোগগুলিকে সাধারণীকরণ করে দুর্বলতা ঢাকার ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দেয়া যাবে।
    কমিউনিজম নিয়ে কল্পনাবিলাস মার্কসেরও আগে থেকে। যতদূর জানি, ওইসব কল্পনাবিলাস থেকে সরে এসে একে বিজ্ঞানভিত্তিক করে তোলার লক্ষ্যে ‘ইউটোপিয় বনাম বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ নামের একটি বই-ও লেখা হয়েছিল। কাজেই কমিউনিস্টদের প্রকার নিয়ে বিতর্ক একেবারে নতুন নয়।
    জানি না, সহজভাবে বিভিন্ন দলকে নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে মাসুদ করিমকে কেউ মানা করেছে কি না। তবে তাঁর সহজভাবে বিভিন্ন কিছুকে নাড়া দেওয়ার এই স্বভাবকে সত্যিই উপভোগ করছি।
    যেমন, এই মুহূর্তে এর চেয়ে কৌতূককর চিন্তা আর কী আছে যে,বাসদ আর সিপিবি মিলে মার্জ করলে নেতৃত্ব ও ক্ষমতার ভারসাম্য কেমন হবে?
    তবে আমি নই, এই প্রশ্নের উত্তর সবচেয়ে ভালো দিতে পারবেন সুকুমার রায়।
    আর পৃথিবীর ইতিহাস জানার পথে আমার যে-টুকু বোধ জন্মেছে, তাতে মনে করি, যখন কোনও কিছু ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় তখন থেকেই সে রক্ষণশীলতা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের চেষ্টা করে এবং এইভাবে বিপ্লবাত্মক চরিত্রকে জাড্যতার মুখে ফেলার ঝুকি তৈরি করে। তার মানে এই নয় ওই রক্ষণশীলতা ও স্থিতিশীলতা সব সময় খারাপ; মানব জাতির প্রবহমানতার বেশির ভাগ সময় জুড়েই রয়েছে ওই রক্ষণশীলতা ও স্থিতিশীলতা, যদিও একসময় জাড্যতা এসে এর পরিবর্তনকে ফের অনিবার্য করে তোলে। মার্কসবাদ পরিবর্তনের আহ্বান নিয়ে এসেছিল। এবং আমার দৃঢ় ধারণা সমাজ ও রাষ্ট্র বিপ্লবের ক্ষেত্রে মার্কসবাদের চেয়ে শক্তিশালী আর কোনও মতবাদ এই মুহূর্তে আমাদের সামনে নেই। তবে এরকম ধারণার পাশাপাশি আমি এও মনে করি, মার্কসবাদ একাডেমিক বিষয়ে পরিণত হওয়ার মধ্যে দিয়ে খোদ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পাঠ্যপুস্তকেও শোভনীয় হয়ে উঠেছে। সারা বিশ্বেই এখন এক বিশেষ জাতের শিক্ষিত মানুষের উদ্ভব ঘটেছে, যারা মার্কসিস্ট নন, যারা মার্ক্সিওলোজিস্ট। তারা মার্কসবাদ-লেনিনবাদ পড়েন, ভালো বোঝেন, নিত্য নতুন বৈপরীত্য বের করতে পারেন এবং যাদের জীবন যাপনের সঙ্গে কমিউনিজমের কোনও যোগ নেই। এই ক্ষেত্রে তাদের প্রতিভা মার্ক্সিস্টদের চেয়েও অনেক বেশি। তাই দেরিদার মতো অদ্ভুত এক জীব প্রায় সারা জীবন মার্কসবাদবিরোধিতার একাডেমিক ভিত্তি যোগানোর পর শেষ বয়সে বলে বসতে পারেন, আমি মার্কসবাদে বিশ্বাসী! শুধু মার্কসবাদ কেন, পৃথিবীর যে-কোনও রাজনৈতিক মতবাদই একাডেমিক পর্যায়ভুক্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে পরিবর্তনের শক্তি হারিয়েছে। মার্ক্সিওলোজিস্টদের আমি ভয়ের চোখেই দেখি।
    ইউরোপ-আমেরিকা এখন এই মার্ক্সিওলোজিস্ট আক্রান্ত এবং সত্য যে বাংলাদেশেও এর সংক্রমণ ঘটেছে। এরা যাতে নিরাপদে মার্কসবাদ চর্চা করেন এবং মার্কসবাদকে নেহাৎ একাডেমিক পরিসরেই সীমিত করে ফেলেন, তার জন্যে আয়োজনও এখন অনেক বেশি। এদের টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব, এদের পরিসরকে নিরাপদ রাখার দায়িত্বও রাষ্ট্রের। উন্নয়ন বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে মার্কস-এঙ্গেলস-লেনিন-মাওকে পড়তে পড়তে মার্কসীয় সমাজ বিজ্ঞান ও অর্থনীতি পড়তে পড়তে আমরা আত্মতৃপ্তিতে ভুগতে পারি, কিন্তু এই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসলে আমরা ‘গোপাল বড় সুবোধ ছেলে’ হয়ে উঠি। তখন উদাহরণত হরতালের কথা শুনলে আমাদের গা জ্বালা করে, আমরা অনায়াসে হরতাল জনবিচ্ছিন্ন কি না তা ভাবতেই অনেক সময় পার করে দিতে পারি।
    এই পরিস্থিতিকে কেউ যদি ইসলামী নেতাদের দুর্বলতা ঢাকার অজুহাতের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন, আমার বলার কিছুই নেই।

  9. ফারুক ওয়াসিফ - ৬ অক্টোবর ২০০৯ (১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ)

    একমত অবিশ্রুত।

  10. মাসুদ করিম - ৮ অক্টোবর ২০০৯ (২:২৬ অপরাহ্ণ)

    আজ সকালেই আমার এক ষাটোর্ধ্ব ব্যবসায়ী বন্ধু প্রায় সাত বছর পর আমাকে ফোন করলেন। অনেকদিন পর আমার চেয়ে বয়সে বড় এই বন্ধুর ফোন পেয়ে খুব ভাল লাগছিল। আমি একটু আয়েশ করে পুরনো বন্ধুর সাথে আলাপ করব ভাবছি, এমন সময় তিনি বললেন, আমার হাতে বেশি সময় নেই—আজকেই দেশের বাইরে যেতে হবে, তাই অফিসে কিছু জরুরি কাজ সারছি। তোমাকে ফোন করেছি ‘হবি কমিউনিস্ট’ পোস্টটি আমি পড়েছি, কিন্তু ‘স্টান্ট কমিউনিস্ট’-ও যে আছে তুমি জানো? আমি বললাম, অবশ্যই থাকবে। উনি বললেন, দেখেছ কখনো? আমি বললাম, না।
    এরপর তিনি বললেন, কিছুদিন আগে ঢাকা ক্লাবে আমি দেখেছি। লোকটার নাম ফরহাদ মজহার — ওকে আমি চিনি না, লুঙ্গি পরে ঢাকা ক্লাবে ঢুকতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মিডিয়ার লোক ডেকে, সে এক কারবার আর কি! অবশ্য তিনি ক্লাবে ঢুকতে পারেননি, কারণ আমাদের ক্লাবের ড্রেসকোড লুঙ্গিপরা কাউকে অনুমোদন করে না। পরে এক বন্ধুর কাছ থেকে জানলাম সে কমিউনিস্ট, তাই তোমাকে বলছি আছে ‘স্টান্ট কমিউনিস্ট’-ও আছে।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.