ওবামাসকল ওবামাশিকল

তিনি আমার পাশের জনকে বুঝিয়ে বলছেন কী অসাধারণ এই অভিজ্ঞতা ওবামার শপথ অনুষ্ঠান সরাসরি পরিবারের সবাইকে নিয়ে টিভিতে দেখেছেন, পরিচিত সবাইকে দেখতে বলেছেন, যারা দেখেননি তারা পৃথিবীর এক যুগান্তকারী ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন না, তারা দুর্ভাগা, বিশেষত মুসলমানেরা, কারণ এই ওবামা পৃথিবীর মুসলমানদের জন্য এক নেয়ামত [...]

১.
আধঘন্টা ধরে আমার সামনে তিনি বসে আছেন। আমি একবারও তার কথায় অংশগ্রহণ করলাম না। তিনি আমার পাশের জনকে বুঝিয়ে বলছেন কী অসাধারণ এই অভিজ্ঞতা ওবামার শপথ অনুষ্ঠান সরাসরি পরিবারের সবাইকে নিয়ে টিভিতে দেখেছেন, পরিচিত সবাইকে দেখতে বলেছেন, যারা দেখেননি তারা পৃথিবীর এক যুগান্তকারী ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন না, তারা দুর্ভাগা, বিশেষত মুসলমানেরা, কারণ এই ওবামা পৃথিবীর মুসলমানদের জন্য এক নেয়ামত (তিনি আর্শীবাদ বলেছিলেন, কিন্তু তার হাবভাব নেয়ামতই বলছিল), তার ছেলেমেয়ে সবার সামনে তিনি উচ্ছ্বসিতভাবে ওবামার বক্তৃতার সারসংক্ষেপ বাংলায় ওদের শোনাচ্ছিলেন, যদিও তার ইংরেজি মাধ্যম শাসিত ছেলেমেয়ে এমনিতেই অনেক কিছু বুঝেছে বলে তার দাবি, তিনি আধঘন্টা থেকে এসবই বললেন এবং উচ্ছ্বাসের ওপর উচ্ছ্বাসে আগামী দিনগুলো যে কী অসাধারণ অন্যরকম হবে, তার ধারনা দিচ্ছিলেন, কী ভীষণ আত্মকামিতা, যদিও স্বচ্ছ জলে নিজের মুখচ্ছবিটি ওবামারই দেখছিলেন।

২.
আগামী জুলাই হবে ভয়ংকরতম মাস। ম্যাকবেথ প্রেয়সীর ডাইনিদের রাত। ওবামার শান্তিপ্রক্রিয়ায় প্যালেস্টাইন ও কাশ্মীর সমস্যার সমাধান সূত্র মিলেছে। তিনি জুলাইয়ের মধ্যে ইসরাইলের কাছে স্বাধীন প্যালেস্টাইনের রোডম্যাপ চেয়েছেন। এবং এই জুলাইয়ে হিলারি ক্লিন্টন ভারতীয় উপমহাদেশ সফর করবেন, ব্যাগে থাকবে আফ-পাক যুদ্ধের নির্দেশিকা ও ভারত-পাক শান্তির পথ্যতালিকা। কাকে মেরে কাকে রাখবেন, এতো হবে না, এ নীতিতো বুশের ছিল, ওবামাতো CHANGE (রবার্ট ফিস্ক যথার্থই ধরেছেন Bush General Repair Company), তিনি আমাদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন, ইতিহাসবিদ অর্থনীতিবিদ নীতিবিদ শিক্ষক সমালোচক যোদ্ধা নেতা প্রচারক সম্রাট, কী নন তিনি, আমরা ওবামাশিকলে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গেছি, আমরা পরিবর্তনের স্বপ্নে বদলের শপথে সবাই আমেরিকা শাসিত কারাগারে অন্তরীন। কে যে মরবে আর কে যে থাকবে, জুলাইয়ের পর আমরা সবকিছু একে একে দেখতে পাব, কেন জানি খুব বেশি ম্যাকবেথের কথা মনে পড়ছে, কেন যেন জুলাইকে ডাইনির রাত বলতে ইচ্ছে হচ্ছে।

লাঙ্গুলকাণ্ড : আমাদের এই আতঙ্কে তাড়িত ও চাপে ক্লিষ্ট জীবনে ঘুম যৌনতার চেয়েও যৌন। আমাদের এই রাজনীতিবিমুখ সমকাল, আমাদের যৌন সম্পর্কের বিষমকামী সমকামী উভকামী অবস্থান থেকে সরিয়ে এনে, আমাদেরকে করে তুলছে পরিবর্তনকামী। তাই আজ পরিবর্তনকামিতা আর সব যৌন সম্পর্কের চেয়েও যৌন।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

৬ comments

  1. মাসুদ করিম - ৯ অক্টোবর ২০০৯ (৫:৩৩ অপরাহ্ণ)

    ওম শান্তি!

  2. মাসুদ করিম - ৫ নভেম্বর ২০১০ (২:০২ অপরাহ্ণ)

    এত আয়োজন করেই আসতে হয়, ওবামা বা বুশ – এই এক জায়গায় কোনো পার্থক্য নেই, আমরিকারই তো রাষ্ট্রপতি, আজকাল আয়োজনের তুলকালামই ক্ষমতার স্বাক্ষর। এখানে ‘গণশক্তি’ থেকে তুলে দেয়া এই আয়োজনের ছোট্ট বিবরণ

    ওবামা আসছেন সঙ্গে ৩৪ রণতরীর নৌবহর। হোয়াইট হাউস অবশ্যই থাকবে ওয়াশিংটনেই। কিন্তু, এই গ্রহে ক্ষমতার উৎকেন্দ্র, বিখ্যাত ভবনের হৃদয় চলেছে ভারতের পথে। শনিবার মুম্বইয়ে নামবেন হোয়াইট হাউসের গৃহকর্তা। সঙ্গে অত্যাধুনিক কমিউনিকেশন সেটআপ, নিউক্লিয়ার বোতাম, এক ঝাঁক ঝাঁ চকচকে লিমুজিন এবং হোয়াইট হাউসের অধিকাংশ কর্মী। দুদিন থাকবেন মুম্বাইয়ে। আর ওই দুদিন মুম্বাইয়ে আরব সাগরের উপকূল টহল দিয়ে বেড়াবে ৩৪ রণতরীর শক্তিশালী নৌবহর। খুব সম্ভবত, শহরের বিমান বন্দর থেকে হেলিকপ্টার ‘মেরিন ওয়ান’এ ওবামা উড়ে যাবেন দক্ষিণ মুম্বইয়ের কোলাবায় ভারতীয় নৌবাহিনীর ‘হেলিবেস’ আই এন এস শিকরায়। সেখান থেকে নেমে রাষ্ট্রপতির লিমুজিনে চেপে কাছের তাজ হোটেলে। আর ওইটুকু পথে তার লিমুজিনের সঙ্গে ছুটবে দুটি জেট, অত্যাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমৃদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সঙ্গে সুরক্ষার কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে ৪০ গাড়ির কনভয়। এর মধ্যেই তাজ হোটেলের ৮০০ ঘর ওবামা ও তার সফরসঙ্গীদের জন্য ‘বুক’ করে রাখা হয়েছে। একই রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে রাজধানী দিল্লিতে। প্রতি সেকেন্ডের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকবে এয়ারফোর্স ওয়ান। রাষ্ট্রপতি এখানে থাকবেন রবিবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত। ময়ূর হোটেল, যেখানে ওবামা থাকবেন, তা এখনই মার্কিন নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে। নিরাপত্তার মহড়া চলছে তার হোটেল ওবং রাজঘাটে, যেখানে তিনি যাবেন।

  3. মাসুদ করিম - ২৬ জুলাই ২০১১ (১২:২৮ পূর্বাহ্ণ)

    চমৎকার ক্যারিক্যাচার : Statue of Poverty

  4. মাসুদ করিম - ৮ নভেম্বর ২০১২ (৬:৪৯ অপরাহ্ণ)

    আধঘন্টা ধরে আমার সামনে তিনি বসে আছেন। আমি একবারও তার কথায় অংশগ্রহণ করলাম না। তিনি আমার পাশের জনকে বুঝিয়ে বলছেন কী অসাধারণ এই অভিজ্ঞতা ওবামার শপথ অনুষ্ঠান সরাসরি পরিবারের সবাইকে নিয়ে টিভিতে দেখেছেন, পরিচিত সবাইকে দেখতে বলেছেন, যারা দেখেননি তারা পৃথিবীর এক যুগান্তকারী ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন না, তারা দুর্ভাগা, বিশেষত মুসলমানেরা, কারণ এই ওবামা পৃথিবীর মুসলমানদের জন্য এক নেয়ামত (তিনি আর্শীবাদ বলেছিলেন, কিন্তু তার হাবভাব নেয়ামতই বলছিল)

    সেই ভদ্রলোকের এবারের মনোভাব জানি না। কিন্তু তেমনি কয়েকজন গতবারের ‘ওবামাসকল’কে দেখলাম এবার ওবামার উপর খুবই নাখোশ। তাদের কথা ইতিহাসে নাকি ওবামার মতো এত ‘মুসলমান’ আর কেউ খুন করেনি। তাদের মতে, ওবামা আগামী চার বছরে আরো বেশি মুসলমান খুন করবেন এবং শেষ পর্যন্ত পুরো আরব বিশ্ব খ্রিস্টানির দখলে নিয়ে যাবেন।

    কী বলব বুঝতে পারছি না। ‘আরব বসন্ত’-এর উপর ক্ষ্যাপেই এই ধরনের কথাবার্তা বলছেন বিগত ‘ওবামাসকল’রা তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু ‘আরব বসন্ত’কে মেনে নিয়ে কোন আরব আসবে আমাদের সামনে, এটা কি আমাদের জানা ছিল না? আরবের একনায়করা যারা কেউ কেউ ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘কল্যাণকামী’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন, যেমন – সাদ্দাম হোসেন, হুসনি মুবারাক, মুয়াম্মার গাদ্দাফি এবং এখনকার বিদ্রোহবিধ্বস্ত সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ এরা কেউই কি ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘কল্যাণকামী’? এদের হাত থেকে ভোটের গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে ‘আরব বসন্ত’ যে পপুলার ভোটে ইসলামবাদীদের হাতে যাবে এটাতে তো কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। এখন সিরিয়ার যা অবস্থা সেখানেও বিদ্রোহীরা জিতলে পপুলার ভোটে সেখানকার ইসলামবাদীরাই ক্ষমতায় যাবে। পরিবর্তিত বিশ্বপরিস্থিতিতে এই ইসলামবাদী সরকারগুলোকে নিয়েই বিশ্বকে চলতে হবে এবং ওবামার নতুন সরকার এই সরকারগুলোকে কত স্ট্র্যাটেজিক্যালি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সাথে সংযুক্ত করতে পারে তার উপরই নির্ভর করবে ওবামা প্রশাসনের সফলতা।

  5. মাসুদ করিম - ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ (৯:২৫ পূর্বাহ্ণ)

  6. মাসুদ করিম - ২০ জুন ২০১৫ (২:৫৯ অপরাহ্ণ)

    White Terrorism Is as Old as America

    My grandmother used to speak of Klansmen riding through Louisiana at night, how she could see their white robes shimmering in the dark, how black people hid in bayous to escape them. Before her time, during Reconstruction, Ku Klux Klan members believed they could scare superstitious black people out of their newly won freedom. They wore terrifying costumes but were not exactly hiding — many former slaves recognized bosses and neighbors under their white sheets. They were haunting in masks, a seen yet unseen terror. In addition to killing and beating black people, they often claimed to be the ghosts of dead Confederate soldiers.

    You could argue, of course, that there are no ghosts of the Confederacy, because the Confederacy is not yet dead. The stars and bars live on, proudly emblazoned on T-shirts and license plates; the pre-eminent symbol of slavery, the flag itself, still flies above South Carolina’s Capitol. The killing has not stopped either, as shown by the deaths of nine black people in a church in Charleston this week. The suspected gunman, who is white and was charged with nine counts of murder on Friday, is said to have told their Bible-study group: “You rape our women, and you are taking over our country. And you have to go.”

    Media outlets have been reluctant to classify the Charleston shooting as terrorism, despite how eerily it echoes our country’s history of terrorism. American-bred terrorism originated in order to restrict the movement and freedom of newly liberated black Americans who, for the first time, began to gain an element of political power. The Ku Klux Klan Act, which would in part, lawmakers hoped, suppress the Klan through the use of military force, was one of America’s first pieces of antiterrorism legislation. When it became federal law in 1871, nine South Carolina counties were placed under martial law, and scores of people were arrested. The Charleston gunman’s fears — of black men raping white women, of black people taking over the country — are the same fears that were felt by Klansmen, who used violence and intimidation to control communities of freed blacks.

    Even with these parallels, we still hear endless speculation about the Charleston shooter’s motives. Gov. Nikki Haley of South Carolina wrote in a Facebook post that “while we do not yet know all of the details, we do know that we’ll never understand what motivates anyone to enter one of our places of worship and take the life of another.” Despite reports of the killer declaring his racial hatred before shooting members of the prayer group, his motives are inscrutable. Even after photos surfaced of the suspected shooter wearing a jacket decorated with the flags of Rhodesia and apartheid-era South Africa and leaning against a car with Confederate-flag plates, tangible proof of his alignment with violent, segregationist ideology, his actions remained supposedly indecipherable. A Seattle Times tweet (now deleted) asked if the gunman was “concentrated evil or a sweet kid,” The Wall Street Journal termed him a “loner” and Charleston’s mayor called him a “scoundrel,” yet the seemingly obvious designations — murderer, thug, terrorist, killer, racist — are nowhere to be found.

    This is the privilege of whiteness: While a terrorist may be white, his violence is never based in his whiteness. A white terrorist has unique, complicated motives that we will never comprehend. He can be a disturbed loner or a monster. He is either mentally ill or pure evil. The white terrorist exists solely as a dyad of extremes: Either he is humanized to the point of sympathy or he is so monstrous that he almost becomes mythological. Either way, he is never indicative of anything larger about whiteness, nor is he ever a garden-variety racist. He represents nothing but himself. A white terrorist is anything that frames him as an anomaly and separates him from the long, storied history of white terrorism.

    I’m always struck by this hesitance not only to name white terrorism but to name whiteness itself during acts of racial violence. In a recent New York Times article on the history of lynching, the victims are repeatedly described as black. Not once, however, are the violent actors described as they are: white. Instead, the white lynch mobs are simply described as “a group of men” or “a mob.” In an article about racial violence, this erasure of whiteness is absurd. The race of the victims is relevant, but somehow the race of the killers is incidental. If we’re willing to admit that race is a reason blacks were lynched, why are we unwilling to admit that race is a reason whites lynched them? In his remarks following the Charleston shooting, President Obama mentioned whiteness only once — in a quotation from the Rev. Dr. Martin Luther King Jr. intended to encourage interracial harmony. Obama vaguely acknowledged that “this is not the first time that black churches have been attacked” but declined to state who has attacked these churches. His passive language echoes this strange vagueness, a reluctance to even name white terrorism, as if black churches have been attacked by some disembodied force, not real people motivated by a racist ideology whose roots stretch past the founding of this country.

    I understand the comfort of this silence. If white violence is unspoken and unacknowledged, if white terrorists are either saints or demons, we don’t have to grapple with the much more complicated reality of racial violence. In our time, racialized terror no longer announces itself in white hoods and robes. You can be a 21-year-old who has many black Facebook friends and tells harmless racist jokes and still commit an act of horrifying racial violence. We cannot separate ourselves from the monsters because the monsters don’t exist. The monsters have been human all along.

    In America’s contemporary imagination, terrorism is foreign and brown. Those terrorists do not have complex motivations. We do not urge one another to reserve judgment until we search through their Facebook histories or interview their friends. We do not trot out psychologists to analyze their mental states. We know immediately why they kill. But a white terrorist is an enigma. A white terrorist has no history, no context, no origin. He is forever unknowable. His very existence is unspeakable. We see him, but we pretend we cannot. He is a ghost floating in the night.

    কালো এখনো কালোআমেরিকা এখনো আমেরিকাওবামা সাদাদের কালো ওবামা

    Posted by Masud Karim on Thursday, April 30, 2015

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.