আশি আশি বলে বিএনপি আর আসবে না

আমার মনে হয় না বিএনপির আর কোনো আশা আছে।[...]

আমার মনে হয় না বিএনপির আর কোনো আশা আছে। বিএনপির মহাসচিব থেকে শুরু করে বিএনপির সব শীর্ষ নেতা যতই বলে বেড়ান না কেন তারা নিজেরাও জানেন তারা ফাঁকা আওয়াজ তোলা ছাড়া আর সব রাজনীতি ভুলে গেছেন তাই যত দিন ফাঁকা আওয়াজ তুলে মিঠিয়া পাড়া, আমবেচাধর পাড়া ও সুশীলং পাড়ায় শোরগোল জারি রাখা যায় তত দিন তারা এসব বলে যাবেন আর তলে তলে তাদের লন্ডনি ওস্তাদের সন্ত্রাসের তরিকা নিয়ে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুতি চলতে থাকবে। পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির অনুপস্থিত থাকাটাই আমার কাছে এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত মনে হচ্ছে এবং আমাদের জাতীয় জীবনে আবারো দুইহাজারতেরোচৌদ্দপনেরো ধরনের বিএনপি পরিকল্পিত ও নিয়ন্ত্রিত গণসন্ত্রাসের আশঙ্কা করাটাই আমার কাছে খুব সম্ভব মনে হচ্ছে।

এখন বর্তমান সরকারের প্রস্তুতি এই পথেই রাখতে হবে সবচেয়ে বেশি তাকে সব দিক থেকে যতটুকু সম্ভব এই গণসন্ত্রাস ঠেকানোর আগাম সতর্ক অবস্থান নিয়ে প্রতিরোধ কৌশল ভেবে রাখতে হবে পাশাপাশি বিএনপি নির্বাচনে আসলে তাকে নির্বাচনে হারানোর প্রস্তুতিও সম্পূর্ণভাবে নিয়ে রাখতে হবে।

দুইহাজারআঠারো সালের নির্বাচনী রাজনীতিতে আওয়ামি লিগকে যেটা আমি মনে করিয়ে দিতে চাই তা হল খালেদা জিয়া কিন্তু এবার আর নিজের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের জন্য নির্বাচন মিশনে থাকবেন না এবার যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে তিনি নির্বাচন মিশনে প্রক্সি দিতে নামবেন তার ছেলে তারেক জিয়ার হাতে বাংলাদেশ তুলে দেয়ার জন্য কারণ তারেক জিয়ার হাতে বাংলাদেশ তুলে দিতে পারলেই সেবাংলাদেশ আবার খুব সহজেই তার ও যুদ্ধাপরাধীগোষ্ঠীর হয়ে যাবে।

কাজেই সবাই সাবধান বিএনপির ফখরুলরা আশি আশি করবেই কিন্তু তারা যেন আর তলে তলে পরিকল্পনা করে গণসন্ত্রাস করতে না পারে তারা যেন নির্বাচনে এসে আর বাংলাদেশের ক্ষমতায় এসে না পড়ে সেদিকে সংশিষ্ট সবারই সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

১১ comments

  1. Pingback: দুইহাজারআঠারো সালের নির্বাচনী রাজনীতিতে আওয়ামি লিগকে যেটা আমি মনে করিয়ে দিতে চাই | প্রাত্যহিক প

  2. মাসুদ করিম - ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ (৩:৫৬ অপরাহ্ণ)

  3. মাসুদ করিম - ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ (১১:১৬ অপরাহ্ণ)

  4. মাসুদ করিম - ৩০ মার্চ ২০১৮ (৫:৫০ অপরাহ্ণ)

    খালেদা জিয়া কারাগারে অসুস্থ, আজ এনিয়ে বিএনপি-র সংবাদ সম্মেলন ছিল, তাতে বিডিনিউজ২৪.কম-এ শেখ হাসিনাকে নিয়ে ঠাট্টার যেছবি দেখলাম বিএনপি নেতাদের, তাতে কে বলবে তারা খালেদা জিয়ার অবস্থা নিয়ে চিন্তিত।

    প্রধানমন্ত্রীকে মিষ্টি পাঠাতে চান মির্জা ফখরুল

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাঁকুরগাঁওয়ে গিয়ে যে ভাষায় সমালোচনা করেছেন, তাতে ‘ভোট বাড়বে’ দাবি করে ‘আনন্দ’ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারাও এ নিয়ে ঠাট্টায় যোগ দিয়েছেন। মির্জা ফখরুলকে নাকি এখন তাদের ঈর্ষা হচ্ছে।

    ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৃহস্পতিবার জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় বিএনপির কর্মকাণ্ড নিয়ে বলতে গিয়ে নাম ধরেই মির্জা ফখরুলের সমালোচনা করেন।

    ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সাংসদ এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিমান প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ফখরুলকে তিনি বর্ণনা করেন চরম মিথ্যাবাদী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ হিসেবে।

    বিএনপি নেত্রীর স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে শুক্রবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ আসতেই হাসতে হাসতে ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, আমি মিষ্টি পাঠাব উনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে। আমার অনেক উপকার করেছেন তার জন্যে। ভোট অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন।”

    তার এ কথার পর বিএনপির সংবাদ সম্মেলন কিছু সময়ের জন্য অনানুষ্ঠানিক আড্ডার রূপ পায়। আলোচনায় যোগ দেন দলের স্থায়ী কমিটির নেতারাও।

    খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘আমরা যারা আছি, ঈর্ষান্বিত। এভাবে উনাকে স্পন্সর করবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী!”

    আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী হাসতে হাসতে বলেন, “আন্ডারহ্যান্ড ডিলিং আছে কিন্তু!”

    এ সময় খন্দকার মোশাররফ বলেন, “শেরেবাংলা একসময় বলতেন, যদি হিন্দুরা তার সমালোচনা না করত, যুগান্তরে উনাকে গলাগালি না করত, সবাইকে তিনি জিজ্ঞাসা করতেন, আমার রাজনীতি ভুল হইতেছে কিনা, ওরা গাইলে (গালাগাল) না ক্যান?”

    আগের দিন ঠাঁকুরগাঁওয়ের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ওই যে ফখরুল ইসলাম, দিনরাত কথা বলতে বলতে… গলা ফুলায়ে কথা বলতে বলতে গলাই খারাপ হয়ে যায়। বারবার গলার চিকিৎসাও করতে হয়। মিথ্যা কথা বলার একটা সীমা আছে। সারা দিন মিথ্যা কথা বললে- এত মিথ্যা কথা বললে তো আল্লাহও নারাজ হয়।”

    আর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বিএনপি মহাসচিবের ভূমিকার সমালোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, “বিমানমন্ত্রী যে ছিল, বিমানের কী উন্নয়নটা করেছে বলেন? বিমানের প্লেন ঝরঝর, চলে না। টাকাপয়সা সব লুটপাট। রাডারস্টেশন নষ্ট। সবকিছু ধ্বংস করে রেখে গেছে।”

    শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে আলোচনায় মির্জা ফখরুল বলেন, “কালকে আমি বলছিলাম যে এটা নিয়ে (প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের) আমি প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না। এটা হল স্বভাব।”

    আমীর খসরু তখন বলেন, “উনি কিছু বললে তো প্রতিক্রিয়া দেবেন; গালি-গালাজের কোনো প্রতিক্রিয়া নাই।”

    সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কথা বলেন।

    তিনি বলেন, “ঠাকুগাঁও আমাদের মহাসচিবের নির্বাচনী এলাকা। প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় আমাদের মহাসচিবের সমালোচনা করেছেন, তিনি (মহাসচিব) নাকি মিথ্যা কথা বলেন। যিনি মিথ্যা কথা বলেন সবসময়, তিনি অন্যকেও তাই মনে করেন।”

    মওদুদ বলেন, “এতে একটা লাভ হয়েছে, আমাদের মহাসচিবের ভোট অনেক বেড়ে গেছে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এগুলো করতেই থাকেন।”

    এরপর অতীতের ঘটনা তুলে ধরে ব্যক্তিগত ক্ষোভের কথাও বলতে থাকেন বিএনপি আমলের আইনমন্ত্রী মওদুদ।

    “আমার বিরুদ্ধে ছয়বার সংসদে আক্রমণ করেছেন। আমরা কী আপনার সমতুল্য? আপনি হলেন প্রধানমন্ত্রী।… আসলে উনি জানেন, উনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন নাই। এ কারণে উনার মনে ওই দুর্বলতাটা রয়ে গেছে।”

    সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মওদুদের ভাষায়, মিথ্যাচার কাকে বলে তা বাংলাদেশে না এলে কেউ বুঝবে না।

    “মিথ্যা দেশের সর্বোচ্চ লেভেলে, এমনকি জুডিশিয়ারিতেও এখন মিথ্যাচার স্থান পেয়ে গেছে। মিথ্যাকে সত্য বলা হচ্ছে, সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি সুবিধা নিয়ে ঠাকুগাঁওসহ বিভিন্ন জেলায় গিয়ে ভোটের প্রচার চালাচ্ছেন অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, “এগুলো সবই অনৈতিক ও নির্বাচন কার্যবিধির পরিপন্থি। তিনি যদি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নিজ খরচে জনসভা করে ভোট চাইতেন, তাহলে কারও কিছু বলার ছিল না।”

    ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাহাদাত হোসেন সেলিম। অন্যদের মধ্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, লেবার পার্টির একাংশের মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি ও এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মনজুর আলোচনায় অংশ নেন।

  5. মাসুদ করিম - ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ (২:২৬ অপরাহ্ণ)

    ASP’s vehicle comes under ‘bomb attack’ in Chuadanga

    The vehicle of an assistant superintendent of police (ASP) reportedly came under a bomb attack in Damurhuda Upazila on Sunday night.

    Police shot the alleged attacker in the leg and detained him. ASP Abu Russel along with four constables was returning to his office after visiting an accident spot at Uthli in Jibannagar Upazila.

    As they reached near Darshana Filling Station, a young man, Titu, 26, son of Mozahid of Islam Bazar in Darshana, threw a bomb at the vehicle at around 09:00 pm which exploded in a big bang, said Police Super Mahbubur Rahman.

    The blast damaged the right windowpanes of the vehicle, he said.

    However, the ASP and other policemen escaped the attack unhurt, the

    SP said.

  6. মাসুদ করিম - ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ (২:২৮ অপরাহ্ণ)

    চট্টগ্রামে নৌকার প্রার্থীর প্রচারে পেট্রোল বোমা, দগ্ধ ৩

    চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নৌকার প্রার্থীর ভোটের প্রচার লক্ষ্য করে ছোড়া পেট্রোল বোমায় তিনজন দগ্ধ হয়েছেন।

    মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার মাদাম বিরিহাটে চট্টগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলমের প্রচারের মধ্যে হামলার এই ঘটনা ঘটে।

    সীতাকুণ্ডের ঘটনায় আহত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে জানিয়ে মেডিকেল পুলিশ ফঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, “তাদের মধ্যে তিনজন দগ্ধ। অন্যজন শরীরে আঘাত পেয়েছেন।”

    চট্টগ্রাম-৪ আসনের বর্তমান সাংসদ দিদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুপুরে তিনি যখন সমর্থকদের নিয়ে প্রচার চালাচ্ছিলেন, তখনই তার কর্মীদের ওপর হামলা করে পেট্রোল বোমা ছোড়া হয়।

    “আমার বিপক্ষের প্রার্থীর লোকজন এ হামলা চালিয়েছে। আমার কর্মীদের মধ্যে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।”

    সীতাকুণ্ড আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দিদারুল আলমের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির উত্তর জেলা কমিটির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীর বড়ভাই ইসহাক কাদের চৌধুরী।

    কারা এ হামলা চালিয়েছে সে বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

  7. মাসুদ করিম - ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ (৯:৫৮ অপরাহ্ণ)

    Magistrate attacked in Sylhet

    An executive magistrate was attacked reportedly by the activists of BNP in Golapganj upazila of Sylhet today.

    Executive Magistrate Sumanto Banarjee came under the attack in Hetimganj bazaar area under Sylhet-6 constituency around 6:30pm, reports our Sylhet correspondent.

    The magistrate, also the AC Land of the upazila, has been taken to Sylhet MAG Osmani Medical College Hospital.

    Supporters of BNP candidate for Sylhet-6 reportedly attacked the magistrate as he requested them to move away from a road where the party men were holding a roadside meeting, Mamunur Rahman, assistant returning officer and the upazila nirbahi officer.

  8. মাসুদ করিম - ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ (১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ)

    ভোটের সংঘাতে নিহত ১৭, অধিকাংশই আ. লীগের

    বিভিন্ন স্থানে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা আর সংঘাতের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ১৩ জেলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যাদের আটজনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থক।

    রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দেশের ২৯৯ আসনে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলে। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীসহ কয়েকটি স্থানে কেন্দ্র দখলের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে আগের রাতেই সংঘাত শুরু হয়।

    বিকালে ভোট শেষ হওয়া চট্টগ্রামে তিনজন, রাজশাহীতে দুইজন, কুমিল্লায় দুইজন এবং কক্সবাজার, বগুড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, রাঙামাটি, সিলেট, যশোর, লালমনিরহাট, নাটোর ও গাজীপুরে একজন করে নিহত হওয়ার খবর পাঠিয়েছেন আমাদের জেলা প্রতিনিধিরা।

    এবার ভোটের প্রচারের শেষ দিকে এসে গত ২৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে বলেন, গত ১ থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের দলের পাঁচজন নেতাকর্মী নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত হয়েছেন।

    আর রোববার সকালে ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে নিজের ভোট দেওয়ার পর তিনি বলেন, কেবল ডিসেম্বরেই আওয়ামী লীগের ১০ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।

    এরপর সারা দিনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সংঘাতে হতাহতের ঘর আসতে থাকে। সন্ধ্যায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, ভোট ঘিরে দেশের ১৪টি স্থানে অন্তত ১৮ জন নিহতহ হওয়ার খবর তাদের হাতে রয়েছে।

    অবশ্য বিগত নির্বাচনগুলোর সঙ্গে তুলনা করে এবারের জাতীয় নির্বাচনকে ‘সংঘাতহীন’ বলতে চাইছে আওয়ামী লীগ।

    ভোটের দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “বাংলাদেশের গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে, আমি বলতে পারি, এবারের নির্বাচন সংঘাতহীন হয়েছে। কিছু জায়গায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও তা অত্যন্ত নগণ্য।”

    চট্টগ্রাম

    ভোট শুরুর আগে শনিবার রাতে চট্টগ্রামের পটিয়ায় বিএনপিকর্মীদের হামলায় এক যুবলীগ কর্মীর নিহত হওয়ার খবর দেয় পুলিশ।

    নিহত দ্বীন মোহাম্মদের বাড়ি (৩৫) কুসুমপুরা ইউনিয়নের গুরনখাইন এলাকায়।

    পটিয়া থানার ওসি নিয়ামত উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গুরনখাইন এলাকায় রাত ১০ টার দিকে বিএনপি প্রার্থীর সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে যুবলীগকর্মী দ্বীন মোহাম্মদকে হত্যা করে। ইটের আঘাতে তাকে হত্যা করা হয়।”

    চট্টগ্রাম- ১২ (পটিয়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী ব্যবসায়ী এনামুল হক এনাম। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী।

    দ্বীন মোহাম্মদের ভাতিজা সাইফুর রহমান মামুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোটের আগে আমাদের একটি বৈঠক ছিল। বৈঠক থেকে ফেরার পথে ফকিরা মসজিদ বাজার এলাকায় পেছন দিক থেকে বিএনপিকর্মীরা আমাদের উপর হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করে।”

    এ বিষয়ে ধানের শীষের প্রার্থী এনাম কিংবা বিএনপি নেতাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

    ভোটের আগের রাতে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বরইতলী এলাকায় একটি কেন্দ্র দখলের চেষ্টায় ত্রিমুখী সংঘর্ষ বাঁধলে জাতীয় পার্টির এক কর্মী গুলিতে নিহত হন।

    নিহত আহমদ কবিরের (৪৫) বাড়ি ওই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। রাতে সংঘর্ষের পর বরইতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নির্বিঘ্নেই ভোট হয়।

    চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আফরুজুল হক টুটুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই এলাকাটি জামায়াত অধ্যুষিত। শনিবার রাত আড়াইটার দিকে তারা বরইতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের জন্য গেলে জাতীয় পার্টির সমর্থকরা বাধা দেয়। এসময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়।”

    বাঁশখালী আসনে এবার ভোটের লড়াই হচ্ছে চর্তুমুখী। লাঙ্গল নিয়ে জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক সিটি মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে, বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এবং জামায়াত নেতা জহিরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আপেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

    পটিয়ার অন্য ঘটনাটি ঘটে সকাল সোয়া ১০টার দিকে পশ্চিম মালিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এলাকায়।
    পুলিশ বলছে, ওই কেন্দ্র দখলের চেষ্টায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাদলে আবু সাদেক নামে এক যুবক নিহত হন। তিনি বিএনপি সমর্থক ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

    চট্টগ্রাম-১২ পটিয়া আসনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার হাবিবুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলিও ছোড়া হয়। তবে কেন্দ্রে ভোট বন্ধ হয়নি।

    রাজশাহী

    রোববার ভোট চলাকালে রাজশাহীর মোহনপুর ও তানোরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।

    এর মধ্যে মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের পাকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সামনে মিরাজুল ইসলাম (৩০) নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

    রাজশাহী- ৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আয়েন উদ্দিন বলেন, নিহত মিরাজুল পাইকগাছা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তিনি নৌকার পক্ষে প্রচারে ছিলেন।

    আয়েন উদ্দিন বলেন, “বিএনপির কর্মীরা পাকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করতে যায়। এ সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের বাধা দিতে গেলে মিরাজুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।”

    জেলার পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, পাকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে একজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়।পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তারা মৃত্যু হয় বলে তারা শুনেছেন।

    মোহনপুর-পবা এলাকা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের আইনউদ্দিন নৌকা এবং বিএনপির শফিকুল হক মিলন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

    তানোরে নিহত মোদাচ্ছের আলী (৪০) পাঁচন্দর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পাঁচন্দর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে হামলায় তিনি নিহত হন।

    তানোর থানার ওসি রেজাউল ইসলাম বলেন, “জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত ভোটারদের এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। এ সময় লাঠির আঘাতে মোদাচ্ছের আলী গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”

    হামলার খবর পেয়ে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশসহ বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান তিনি।

    কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোরশেদ আলী মৃধা বলেন, হামলার পর প্রায় দুই ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। পরে আবার শুরু হয়।

    তানোর-গোদাগারী নিয়ে গঠিত রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের ওমর ফারুকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন বিএনপির ব্যরিস্টার আমিনুল হক।

    কুমিল্লা ২

    কুমিল্লা-৭ আসনে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন এলডিপিকর্মী, অন্যজন বিএনপিকর্মী।

    অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদু্ল্লাহ আল মামুন জানান, বেলা ১১টার দিকে চান্দিনা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে পশ্চিম বেলাশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং লাঙ্গলকোট উপজেলার মুর্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে তারা নিহত হন।

    চান্দিনায় নিহত মজিবুর রহমান (৩৫) কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামের সুজাত আলীর ছেলে। আর লাঙ্গলকোটে নিহত বাচ্চু মিয়া (৫০) উপজেলার সন্ধ্যাইল গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে।

    সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এসএম জাকারিয়া বলেন, কুমিল্লা-৭ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী এলডিপির রেদোয়ান আহমেদের কর্মীরা সকালে চান্দিনা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে পশ্চিম বেলাশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ‘দখলের চেষ্টা’ করে।

    “একপর্যায়ে তারা একটি বুথের ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ গুলি ছুড়লে তিনজন আহত হন। পরে এলডিপি কর্মী মজিবুর মারা যায়।”

    অন্য ঘটনাটি ঘটে লাঙ্গলকোট উপজেলার মুর্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে বটতলি এলাকায়। সেখানে বাচ্চু মিয়া নামে এক বিএনপিকর্মী নিহত হয়।

    লাঙ্গলকোট থানার ওসি বলেন, মুর্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে দুই পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া হয়। এ সময় লাঠির আঘাতে বাচ্চু মারা যায়।

    কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মুহসিনুজ্জামান মহসিন জানান, লাঙ্গলকোট ও চান্দিনা থেকে আসা দুটি লাশ তাদের হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।

    বগুড়া

    বগুড়ায় কাহালু উপজেলায় একটি ভোট কেন্দ্রের সামনে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।এ

    উপজেলার পাইকোল ইউনিয়নের বাগুইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাইরে রোববার বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে কাহালু থানার ওসি শওকত কবীর জানান।

    নিহত আজিজুল হক পাইকোল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

    আহত দোয়েলকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি যুবলীগের কর্মী।

    ওসি শওকত বলেন, “বাগুইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে আজিজুল ও দোয়েলসহ কয়েকজন ভোটারদের মধ্যে নৌকার স্লিপ দিচ্ছিলেন। এ সময় বিএনপির লোকজন অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে।”

    এতে ঘটনাস্থলেই আজিজুলের মৃত্যু হয় বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

    বগুড়া- ৪ (কাহালু) আসনে বিএনপির প্রার্থী মোশররফ হোসেন, আর মহাজোটের প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেন।

    রাঙামাটি

    রাঙামাটির কাউখালি উপজেলায় বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন; এছাড়া আরও ১০ জন আহত হয়েছেন।

    নিহত মো. বাছির উদ্দিন ঘাগড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুর রহমান বলেন, “ঘাগড়া ইউনিয়নের রাঙ্গীপাড়া এলাকায় রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বিএনপি ও যু্বলীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় গোলাগুলিতে বাছিরসহ ১১ জন আহত হয়।”

    বাছিরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ইউএনও।

    তবে কী নিয়ে এই সংঘর্ষ সে বিষয়ে ইউএনও কিছু বলতে পারেননি।

    সংঘর্ষে আহত আরও ১০ জনকে কাউখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ মিয়া জানান।

    রাঙ্গামাটি আসনে দীপঙ্কর তালুকদার আওয়ামী লীগ এবং এবং মনি স্বপন দেওয়ান বিএনপির মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

    নোয়াখালী

    কেন্দ্র দখলে বাধা দেওয়ায় নোয়াখালী-৩ আসনে বেগমগঞ্জের এক কেন্দ্রে এক আনসার সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।

    রোববার বেগমগঞ্জের গোপালপুর ইউনিয়নের তুলারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইলিয়াস শরীফ জানান।

    নিহত নূর নবী বেগমগঞ্জের আমানুল্লাপুর ইউনিয়নের জয়নারায়ণপুর গ্রামে মতিন মিয়ার ছেলে।

    পুলিশ সুপার বলেন, “বিএনপি-জামায়াতের সমর্থকরা দুপুরে কেন্দ্র দখল করতে গেলে বাধা দিতে গিয়ে হামলায় আহত হন নূরনবী। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।”

    নোয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মামুনুর রশিদ কিরণের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু।

    ব্রাহ্মণবাড়িয়া

    ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর) আসনের ভোটকেন্দ্রে গুলিতে এক কিশোর নিহত হয়েছে; গুলিবিদ্ধ হয়েছে আরও তিনজন।

    নিহত ইসরাইল হোসেন সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের রাজঘর গ্রামের সাঈদ মিয়ার ছেলে।

    ইসরায়েলের বাবা সাঈদ মিয়া বলেন, রোববার বেলা ১২টার দিকে তার ছেলে রাজঘর কেন্দ্রে ভোট দেখতে যায়।

    “ইসরাইল আওয়ামী লীগের কর্মী হলেও সে এখনও ভোটার হয়নি। তার বয়স ১৭ বছর। ওই কেন্দ্রে সে ভোট দেখতে গিয়েছিল। পরে গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে গিয়ে দেখি মারা গেছে।”

    পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর) আসনের মহাজোট প্রার্থী রাজঘর কেন্দ্রে গেলে একদল লোক তার ওপর হামলার চেষ্টা করে। এ সময় গোলযোগে হতাহতের ঘটনা ঘটে।”

    ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন বলেন, তার হাসপাতালে চারজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ইসরায়েলকে নেওয়া হয়েছিল মৃত অবস্থায়।

    আহতদের মধ্যে রাসেল মিয়া (২৬) নামে একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আহত অন্য দুইজনকে তাদের হাসপাতালে চিকিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

    ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে নৌকার র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ধানের শীষের মো. খালেদ হোমেন মাহবুবু।

    কক্সবাজার

    কক্সবাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষে এক যুবলীগকর্মী নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন আরও আটজন।

    পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন জানান, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে’ পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের টইটংয়ে রোববার বেলা ১১টার দিকে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।

    নিহত মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (২৩) উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের উলুদিয়া পাড়ার আবুল কাশেমের ছেলে।

    উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ছাবের আহমদ বলেন, “আহতদের শরীরে ধারালো অস্ত্র ও লাঠির আঘাতের জখম রয়েছে। নিহত আব্দুল্লাহর মৃত্যুও হয়েছে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হয়েছে।”

    এছাড়া রাজাখালী ইউনিয়নের মাতব্বর পাড়ায় আরেক সংঘর্ষে অন্তত চারজন আহত হয়েছেন।

    পুলিশ সুপার বলেন, পেকুয়া উপজেলার দুই জায়গায়ই ভোটকেন্দ্রে আসার পথে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে এসব সংঘর্ষ হয়।

    কক্সবাজার-১ (পেকুয়া-চকরিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী জাফর আলমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী হাসিনা আহমেদ।

    গাজীপুর

    গাজীপুর মহনগরীর হাড়িনাল উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সামনে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, আহত হয়েছেন আরও দুইজন।

    নিহত যুবলীগ নেতা মো. লিয়াকত হোসেন (৪০) শহরের আবদুল হাই মেম্বারের ছেলে। তিনি গাজীপুর শহরের কাজী আজিম উদ্দিন কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক ভিপি এবং মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাতি মাসুদ রানা এরশাদের বড় ভাই।

    আহতরা হলেন স্থানীয় যুবলীগ কর্মী মো. আশরাফ (৪০) ও খায়রুল ইসলাম (৪০)।

    মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল হাদী শামীম বলেন, “দুপুর দেড়টার দিকে ৫০-৬০ জন যুবক লাঠি-সোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজ ফটক, কাজী আজিম উদ্দিন কলেজ ও আশেপাশে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে।

    “পরে তারা হাড়িনাল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে এসে লিয়াকত, আশরাফ ও খায়রুলের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় এবং কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।”

    তাদেরকে প্রথমে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসক লিয়াকত ও আশরাফকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

    লিয়াকতের বন্ধু স্থানীয় একটি হাসপাতালের মালিক মো. হাবিবুর রহমান জানান, আহত লিয়াকতকে ঢাকার উত্তরার লেক ভিউ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    আল-আমিন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৮/১০ জন হাড়িনাল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে চেয়ারে বসে ছিলেন। বেলা পৌনে ২টার দিকে অর্ধশতাধিক যুবক লাঠি-সোঁটা ও দা নিয়ে তাদের কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়।

    সিলেট

    সিলেটের বালাগঞ্জের একটি ভোট কেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টার মধ্যে গণ্ডগোলে উপজেলা ছাত্রদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন।

    বিকেলে সিলেট-৩ আসনের আজিজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে বলে বালাগঞ্জ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান জানান।

    সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আলী আহমদ সায়েম বলেন, “ভোটকেন্দ্রে গোলযোগ চলাকালে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এসময় সায়েমের বুকের নিচে গুলি লাগে।”

    নিহত সায়েম আহমদ সোহেল (৩৫) বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি উপজেলার নলজুড় গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে।

    স্থানীয়রা জানান, বেলা ৩টার দিকে আজিজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় কয়েকজন যুবক ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। অন্যদিকে আরেকটি দল তাদের বাধা দেয়।

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছুঁড়লে সোহেল গুরুতর আহত হন। সিলেটে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

    বালাগঞ্জ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান বলেন, “ভোটকেন্দ্রে গোলযোগের সময় সায়েম নিহত হয়েছে। তবে কীভাবে মারা গেছে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া বলা যাচ্ছে না “

    সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মাহমুদ উদ সামাদ চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন বিএনপির শফি আহমেদ চৌধুরী।

    যশোর

    যশোরের অভয়নগরে ধানের শীষের এক এজেন্টকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পথে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    নিহত শামসুর রহমান (৮৫) উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের পাথালিয়া গ্রামের মৃত গোলাম মাওলার ছেলে।

    অভয়নগর থানার ওসি আলমগীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৃদ্ধ শামসুর রহমান ও তার দুই ভাইপো এবারের নির্বাচনে ধানের শীষের এজেন্ট ছিলেন। রোববার সকালে তারা তিনজন পাথালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটের দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছিলেন।

    “কেন্দ্রের কাছে নৌকার সমর্থকদের প্রতিরোধের মুখে পড়েন তারা। নৌকা সমর্থকরা তাদের মারধর শুরু করলে শামসুর রহমানের দুই ভাইপো তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। প্রতিবেশী আরেক ব্যক্তি তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামসুর রহমান মারা যান।”

    পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সন্ধ্যায় যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, পুলিশ এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

    যশোর ৪ (বাঘারপাড়া ও অভয়নগর) আসনে আওয়ামী লীগের রনজিৎ কুমার রায়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন বিএনপির টি এস আইয়ুব।

    লালমনিরহাট

    লালমনিরহাটে নিহত হয়েছেন এক বিএনপি নেতা।

    জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা জানান, নিহত তোজাম্মেল হক (৬২) সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক। তিনি ওই এলাকার খলাইঘাট গ্রামের বাসিন্দা।

    সদর থানার ওসি মাহফুজ আলম বলেন, রাজপুর ইউনিয়নের পাগলারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া হলে তোজাম্মেলসহ ছয়জন আহত হন।

    “তোজাম্মেলকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।”

    নাটোর

    ‘ভোটের ঝগড়ায়’ ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচা নিহত

    ‘ভোট দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে’ নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় ছুরিকাঘাতে চাচাকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে ভাতিজার বিরুদ্ধে।

    রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সমসখলসী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে নলডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান।

    নিহত হোসেন আলী (৫৫) সমসখলসী গ্রামের ওয়ায়েস উদ্দিনের ছেলে ও আওয়ামী লীগের কর্মী।

    প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে নিহতের স্ত্রী ইয়ার জান বলেন, হোসেন আলী সমসখলসী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র নৌকার পক্ষে স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ করছিলেন। বেলা সোয়া ১১টার দিকে তিনি কেন্দ্রের অদূরে বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে বাড়ির সামনে ভাই আসাদ আলীর ছেলে রতন আলীর সঙ্গে দেখা হয়। এ সময় হোসেন আলী ভাতিজা রতন আলীকে নৌকায় দিতে বললে তিনি ধানের শীষে ভোট দেবেন বলে জানান। এ নিয়ে দিতে চান।

    “এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে রতন তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে চাচার বুকে আঘাত করেন।”

    ইয়ার জান বলেন, ধস্তাধস্তির শব্দ পেয়ে বাড়ির ভেতর থেকে তিনি (ইয়ার জান) বের হয়ে স্বামীকে রক্ষার চেষ্টা করেন।

    “কিন্তু এর আগে হোসেন আলী মাটিতে পড়ে যাণ এবং রতন চাকু ফেলে পালিয়ে যান।”

    পরে প্রতিবেশী তাইজুল ইসলাম ও ফজলুর রহমান ছুটে এসে হোসেন আলীকে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয় বলে ইয়ার জান জানান।

    ইয়ার জান জানান, তার স্বামী এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ভাতিজা রতন বরাবরই ধানের শীষের কর্মী।

    তাইজুল ইসলাম ও ফজলুর রহমান জানান, তারা ঘটনাস্থলে রতনকে চাকু হাতে দেখেছেন। তবে রতন ঘটনার পর পলাতক রয়েছেন।

    ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, কী কারণে হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে তা স্পষ্ট না। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  9. মাসুদ করিম - ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ (১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ)

    আওয়ামী লীগের অভাবনীয় জয়

    সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৫৯টি আসনে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

    রোববার অনুষ্ঠিত এই ভোটের ফলাফলে নৌকার এই অভাবনীয় জয়ের বিপরীতে ভরাডুবি হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে নির্বাচনে আসা বিএনপির।

    সবমিলিয়ে মাত্র ৭টি আসনে জয় পেয়েছে ধানের শীষের প্রার্থীরা; তাদের চেয়ে বেশি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম অংশীদার জাতীয় পার্টি ২০টি।

    লাঙ্গলে প্রতীকে জয়ী ২০টি আসন নিয়ে দৃশ্যত আবারও সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসতে যাচ্ছে এইচ এম এরশাদের দল।

    তা হলে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি এবার ভোটে অংশ নিলেও সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনেও ফিরতে পারছে না।

    তবে ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দেওয়া বিএনপি যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের শপথ না নেওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে দলটির নেতাদের কথায়। সেক্ষেত্রে ওই আসনগুলোতে উপনির্বাচনের সম্ভাবনা থেকেই যায়।

    বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃনির্বাচনের দাবি তুলেছে।

    এ নির্বাচন জাতিকে ভবিষ্যতে ‘সমস্যায় ফেলবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু এবং বিরোধী জোটের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে দিনভর ভোটগ্রহণ চলে।

    ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোট আগেই স্থগিত হয়েছিল। তিনটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ফল স্থগিত করা হয়েছে রোববার। ওই কেন্দ্রগুলোতে নতুন করে ভোট হওয়ার পর ফল ঘোষণা হবে বলে ইসি জানিয়েছে।

    ভোটগ্রহণের মাঝপথেই ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে অংশ নেওয়া জামায়াতে ইসলামী বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়; যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে এতদিন বলা হচ্ছিল যে জামায়াত নির্বাচনে নেই।

    দুপুরের পর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বিএনপি ও তাদের জোটের কয়েকজন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু তখন পর্যন্ত বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বর্জনের কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভোটের প্রচার যেমন তারা চালাতে পারেননি, তেমনি তাদের প্রার্থীদের এজেন্টদেরও কোনো কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

    ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ইসিতে নালিশ দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “রাষ্ট্রপতি একটা গেজেট দিলেই হত যে নৌকা ২৯৯ আসন বা দুইশ সাড়ে নিরানব্বই আসন পেয়ে গেছে।”

    সন্ধ্যার পর মলিন মুখে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতারা; কামাল হোসেন বলেন, “অবিলম্বে এই প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক। এই নির্বাচনের কথিত ফলাফল আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং সেই সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।”

    এই দাবি না মানলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, সোমবার বৈঠক করে তারা করণীয় ঠিক করবেন।

    আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বাম গণতান্ত্রিক জোটও এই নির্বাচনকে ‘তামাশা’ আখ্যায়িত করে নতুন করে নির্বাচনের দাবি তুলেছে।

    অন্যদিকে কারচুপির অভিযোগের পাল্টায় আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বিদেশি পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণকেই তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি ভোটের দিন বিএনপির হামলায় আওয়ামী লীগ সমর্খকদের নিহত হওয়ার বিষয়টিও বলেছেন তিনি।

    এইচ টি ইমাম বলেন, “তারা (বিদেশি পর্যবেক্ষক) সবাই আমাদের বাংলাদেশের আজকের যে নির্বাচন হল তার প্রশংসা করেছেন। তারা বলেছেন, অত্যন্ত সুন্দর সুষ্ঠু এবং সুচারুভাবে এই নির্বাচন পরিচালিত হয়েছে।”

    তার ভাষায়, দলীয় সরকার রেখেও যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব, তা প্রমাণিত হয়েছে রোববারের ভোটের মধ্য দিয়ে।

    অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, “অনেকে মনে করে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না যাওয়াটা ভুল ছিল, আজকের নির্বাচন প্রমাণ করল যে, সেটা ভুল ছিল না।”

    সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলোপের পর তা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিল বিএনপি; কিন্তু তা না হওয়ায় ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল তারা।

    ওই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এক বছর পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার হটাতে আন্দোলনে নামলেও ব্যর্থ হয়। তিন মাসের আন্দোলনে নাশকতায় শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পর পিছু হটতে হয় তাকে।

    এরপর রাজপথের আন্দোলনে অনেকটাই নীরব থাকা বিএনপি বড় ধাক্কা খায় এই বছরের শুরুতে দুর্নীতির মামলায় তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড নিয়ে কারাগারে যেতে হওয়ায়।

    খালেদাকে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আশায় বিএনপি থাকলেও শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ে সফল না হওয়ার প্রেক্ষাপটে কামাল হোসেন, আ স ম রব, আবদুল কাদের সিদ্দিকী ও মাহমুদুর রহমান মান্নাকে নিয়ে নতুন জোট গড়ে তারা।

    বিএনপির এই চমকের পাল্টায় এতদিন ধরে ‘না’ করে আসার পর রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার মধ্যদিয়ে বিএনপি আসে ভোটে, যদিও তাদের কোনো দাবিও আদায় হয়নি।

    ‘ভোট বিপ্লবের’ ডাক দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোটে এলেও নির্বাচনের প্রচারে তাদের প্রার্থীদের না দেখা ছিল আলোচিত; তবে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের দাবি ছিল, পুলিশ ও ক্ষমতাসীনদের বাধায় তারা প্রচারে নামতে পারেননি।

    এরপর ভোটের দিনও তাদের প্রার্থী ও সমর্থকদের তেমন খুঁজে পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রেও ক্ষমতাসীনদের বাধাকে কারণ দেখিয়েছে তারা। অন্যদিকে বিএনপির ভরাডুবির জন্য তাদের নেতাদের উপর কর্মীদের আস্থাহীনতাকে কারণ দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগ জোটের অংশীদার জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

    অন্যদিকে আগের চেয়েও বেশি শক্তি নিয়ে বাংলাদেশে এই প্রথম টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ; যেখানে সংসদে জাতীয় পার্টিকে বাদ দিলে বিরোধী দলের আসন সংখ্যা দাঁড়াল ৭টি।

    বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে এর চেয়ে বেশি সংখ্যক আসন নিয়ে সরকার গঠন করেছিলেন একমাত্র বঙ্গবন্ধু; ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৯৩টি আসনে জয় পেয়েছিল।

    বিরোধী দলবিহীন ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিতর্কিত ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ২৭৮ আসনে জিতেছিল। এরশাদ আমলে ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ২৫১টি আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩৪টি আসন।

    তবে ওই তিনটি নির্বাচনের কোনোটিতেই সব দলের অংশগ্রহণ ছিল না। এবার সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনের চেয়েও বেশি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ।

    এবার ঘোষিত ২৯৮টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ এককভাবে পেয়েছে ২৫৯টি আসন, আর মহাজোটগতভাবে তাদের আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৮টি।

    ১৪ দলীয় জোটের দলগুলোর মধ্যে জাসদ ২টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, বিকল্প ধারা ২টি, তরীকত ফেডারেশন ১টি আসনে জিতেছে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের মিত্র দল জাতীয় পার্টি (জেপি) বাইসাইকেল প্রতীকে একটি আসনে জিতেছে।

    জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে বিএনপি ৫টি আসনে জিতেছে, গণফোরাম দুটি আসতে জিতেছে। তিনটি আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা; তাদের দুজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, আরেকজন খালেদা জিয়ার আসনে বিএনপির সমর্থন পেয়েছিলেন।

    ভোটের হার কত, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি ইসি; তবে ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এটা ৮০ শতাংশের কাছাকাছি হবে।

    বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানিয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানাই, তারা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। এই নির্বাচন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, যেন গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।”

    লাইভ: ভোট দিচ্ছে বাংলাদেশ

  10. মাসুদ করিম - ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ (৪:৪০ অপরাহ্ণ)

    ভোট পড়েছে ৮০%: সিইসি

    একাদশ সংসদ নির্বাচনে গড়ে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

    সোমবার নির্বাচন কমিশনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ তথ্য জানান।

    শান্তিপূর্ণ ভোট হলেও কিছু জায়গায় সহিংসতায় ১৪ জনের প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন সিইসি।

    রোববার দেশের ২৯৯ আসনে ৪০ হাজারের বেশি কেন্দ্রে ভোট চলাকালে সহিংসতা ও অনিয়মের কারণে ১৬টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়। এর ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের ফল আটকে যায়।

    ২৯৮টি আসনের ফলাফলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ২৫৯টি আসনে। তাদের নেতৃত্বাধীন মহাজোট পেয়েছে ২৮৮ আসন। এই নিরঙ্কুশ জয়ে টানা তৃতীয়বারের মত সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

    আর বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মাত্র সাতটি আসনে জয়ী হতে পেরেছে। কারচুপির অভিযোগ এনে ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।

    সিইসি বলেন, “ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর জাতি মূলত ভোট উৎসবে মেতেছিল।”

    ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ৮৭.১৩ শতাংশ। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের ইতিহাসে সেটাই সর্বোচ্চ।

    এবার সারা দেশে ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪০ লাখের বেশি। সেই হিসেবে ৮০ শতাংশ ভোটের হার ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

    আগের দশ নির্বাচন

    ভোটের তারিখ ও সংসদ নির্বাচন

    মোট ভোটার

    প্রদত্ত ভোটার

    প্রদত্ত ভোটের হার

    ৭ মার্চ ১৯৭৩-প্রথম সংসদ নির্বাচন

    ৩,৫২,০৫,৬৪২

    ১,৯৩,২৯,৬৮৩

    ৫৫%

    ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯- দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন

    ৩,৮৩,৬৩,৮৫৮

    ১,৯৬,৭৬,১২৪

    ৫১.১২%

    ৭ মে ১৯৮৬- তৃতীয় সংসদ নির্বাচন

    ৪,৭৮,৭৬,৯৭৯

    ২,৮৫,২৬,৬৫০

    ৫৯.৫৮%

    ৩ মার্চ ১৯৮৮-চতুর্থ সংসদ নির্বাচন

    ৪,৯৮,৬৩,৮২৯

    ২,৫৮,৩২,৮৫৮

    ৫৪.৯২%

    ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১- পঞ্চম সংসদ নির্বাচন

    ৬,২১,৮১,৭৪৩

    ৩,৪৪,৭৭,৮০৩

    ৫৫.৪৫%

    ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬-ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন

    ৫,৬৭,০২,৪১২

    ১,১৭,৭৬,৪৮১

    ২৬.৫%

    ১২ জুন ১৯৯৬- সপ্তম সংসদ নির্বাচন

    ৫,৬৭,১৬,৯৫৩

    ৪,২৮,৮০,৫৭৬

    ৭৪.৯৬%

    ১ অক্টোবর ২০০১- অষ্টম সংসদ নির্বাচন

    ৭,৪৯,৪৬,৩৬৪

    ৫,৬১,৮৫,৭০৭

    ৭৫.৫৯%

    ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮- নবম সংসদ নির্বাচন

    ৮,১০,৮৭,০০৩

    ( ছবিসহ ভোটার তালিকা শুরু )

    ৭,০৬,৪৮,৪৮৫

    ৮৭.১৩%

    ৫ জানুয়ারি ২০১৪- দশম সংসদ নির্বাচন

    ৯১,১৯,৬৫,১৬৭

    (১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা)

    (ভোট ১৪৭ আসনে)

    ১,৭৩,৯২,৮৮৭

    ৪০

  11. মাসুদ করিম - ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ (৬:৩৮ অপরাহ্ণ)

    এবার স্থানীয় নির্বাচনেও যাবে না বিএনপি

    মাঝে একাদশ সংসদ নির্বাচন দিয়ে ভোটের লড়াইয়ে ফিরলেও এরপর আবার বর্জনের ধারায় যাচ্ছে বিএনপি।

    আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

    গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলার পর স্থানীয় সরকারের নির্বাচন দুটির তফসিল হলে সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠকে বসে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি।

    বৈঠক শেষে বর্জনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না’, তাই তাদের এই সিদ্ধান্ত।

    নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। তবে তারপর স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে তারা অংশ নিচ্ছিল।

    একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নানা দাবি তুলে তাতে সাড়া না পেলেও দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেই অংশ নিয়েছিল তারা, সেজন্য গড়ে তুলেছিল নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

    ওই নির্বাচনে ফলাফলে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের বিপরীতে ধানের শীষের ভরাডুবির পর ‘ভোট ডাকাতি’র অভিযোগ তুলে পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে অংশ না নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেলেন বিএনপির নেতারা।

    অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছিলেন, স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনগুলোতে অংশ না নিয়ে বিএনপি ২০১৪ সালের মতোই ‘ভুল’ করবে।

    এর মধ্যেই গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা।

    ফখরুল বলেন, “আমাদের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচন এগুলোতে আমরা অংশ নিচ্ছি না। আমরা মনে করি, এই সরকারের অধীনে ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় এই ধরনের নির্বাচনগুলোতে শুধু প্রহসনের উপনীত হওয়া ছাড়া অন্য কোনো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

    “যেহেতু প্রমাণিত হয়ে গেছে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যেই বর্তমান নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এখানে কোনো নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। সেই কারণে আমরা এই নির্বাচনগুলোতে অংশ নিচিছ না। এটা আমাদের পার্টির সিদ্ধান্ত।”

    একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী বিএনপি নেতাদের এখনও শপথ না নেওয়ার মধ্যে ফখরুল জানান, সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনেও অংশ নেবেন না তারা।

    অর্থাৎ কিশোরগঞ্জ-১ ও গাইবান্ধা-৩ আসনে নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছেন না তারা।

    স্থায়ী কমিটির এই বৈঠকে ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

    জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই মাসের মাথায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

    আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য এই পদে উপনির্বচনের জন্য গত বছর ইসি তফসিল দিয়েছিল। তখন বিএনপি প্রার্থী ঠিক করেছিল দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালকে। সেবার আদালতে এই নির্বাচন আটকে যায়।

    উপজেলা পরিষদের নির্বাচন শুরু হচ্ছে আগামী মার্চ মাসে। কয়েকমাস ধরে পাঁচ ধাপে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।

    নির্বাচন নিয়ে বৈঠকের আগে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

    এতে দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ছাড়াও অংশ নেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আবদুল কাইয়ুম, মাহবুবউদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সাখাওয়াত হাসান জীবন প্রমুখ।

    মিলাদের পর দলের আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন শাহজাহান ওমর, জয়নুল আবেদীন, আমিনুল হক, নিতাই রায় চৌধুরী, এজে মোহাম্মদ আলী, আবদুর রেজ্জাক খান, মাহবুবউদ্দিন খোকন প্রমুখ।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.