স্বভাবতই সবার আগে আপনাকে জানতে হবে আইএস কী, আমার আশেপাশের সবাইকে আমি বলতে শুনেছি এটি একটি জঙ্গি বা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন, ঠিক এখানটায় সবাই ভুল করছেন, ভাবনার গোড়াতেই ভুল, আইএস কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নয়, তার নামটা খেয়াল করুন[...]

আমি দায়েশ বলি কিন্তু আমাদের এখানে আইএস-ই বেশি বলে। এখন এই আইএস নিয়ে যখন আপনি ভাববেন, যেটা এখন যার ভাবার দরকার নেই সেও ভাবছে, তখন আপনি কিসের উপর ভিত্তি করে আপনার ভাবনা শুরু করবেন, স্বভাবতই সবার আগে আপনাকে জানতে হবে আইএস কী, আমার আশেপাশের সবাইকে আমি বলতে শুনেছি এটি একটি জঙ্গি বা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন, ঠিক এখানটায় সবাই ভুল করছেন, ভাবনার গোড়াতেই ভুল, আইএস কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নয়, তার নামটা খেয়াল করুন, ইসলামিক স্টেট, হ্যাঁ – স্টেট, মানে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রটির আমলা আছে, সব প্রতিরক্ষা বাহিনি আছে, নির্বাহী বিভাগ আছে, প্রচার বিভাগ আছে, আইন বিভাগ আছে, বিচার বিভাগ আছে এবং এই রাষ্ট্রযন্ত্রটি বিশ্বব্যাপী ইসলামবাদী জঙ্গি বা সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে, মানে এই রাষ্ট্রটির পত্তন হয়েছে ও রাষ্ট্রটি পরিচালিত হচ্ছে ইসলামবাদী আদর্শে একটি রাষ্ট্র সৃষ্টি ও এর অস্তিত্ব চারিদিকে ঘোষণা করার লক্ষ্যে, এবং রাষ্ট্রটি তার লক্ষ্যে অবিচল আছে এবং ততদিন থাকবে যতদিন এই রাষ্ট্রটিকে আমরা ধ্বংস করে দিতে না পারব, এবং খেয়াল করবেন, ভাল দিক হচ্ছে যেহেতু এটি রাষ্ট্র কাজেই আমরা যদি একে ধ্বংস করতে পারি, তাহলে খেয়াল রাখতে হবে এই রাষ্ট্রের সব নথিপত্রও যেন আমরা আয়ত্ত করতে পারি, তাহলে এর মধ্য দিয়েই আমরা ইসলামবাদী জঙ্গিত্বকে অনেকাংশে নির্মূল করতে পারব।

এখানে সন্ত্রাসবাদের কোনো ধর্ম নেই জঙ্গিদের কোনো ধর্ম হয় না এসব কথায় কোনো কাজ হবে না বলেই আমি মনে করি, আইএস একটি রাষ্ট্র তার ধর্ম থাক কি না থাক কিছু যায় আসে না, একটি রাষ্ট্রের যতক্ষণ অস্তিত্ব থাকবে সেই রাষ্ট্র ততক্ষণ তার লক্ষ্যের দিকে যেকোনো ভাবেই এগিয়ে যাবে, সেই রাষ্ট্রের লক্ষ্য অন্য কারো পছন্দ না হোক তাতে তার কিছু এসে যায় না।

হ্যাঁ, এই রাষ্ট্রটি এখনো কারো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি, কিন্তু রাষ্ট্রটি যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে কারো না কারো কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেতে শুরু করবে না তার নিশ্চয়তা কী, কাজেই তার আগেই আইএস-কে আমরা ধ্বংস করতে না পারলে আমাদের কারোই নিস্তার নেই। একটা কথা বলে রাখি, আইএস-কে বেশিদিন এভাবে চলতে দিলে সবার আগে কোন রাষ্ট্র আইএস-কে স্বীকৃতি দেবে জানেন? ইসরায়েল, লিখে রাখুন। আর এজন্যই সবাইকে আইএস মানে ইসলামিক স্টেট মানে এই অমানবিক রাষ্ট্রটিকে ধ্বংস করতেই হবে, আর আমরা যদি তা না করতে পারি, দেখবেন ধর্মের নামে নিষ্ঠুর সব রাষ্ট্রের পত্তন শুরু হবে এবং তাতে আজকের ইসরায়েল, এই আইএস-এরই জয় হবে এবং আমাদের সবার হবে পরাজয়।

আইএস-এর সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই এটাতে বেশি সময় নষ্ট না করে আইএস-কে ধ্বংস করতে হবে এটাতেই বেশি মনোনিবেশ করা প্রয়োজন আমাদের, সেসাথে এটা ঠিক আছে এই যে সবাই বলছে আমার দেশে আইএস নেই, ঠিকই, আপনার দেশে আইএস নেই, কিন্তু আপনার পৃথিবীতেই আইএস আছে, এটা স্বীকার করুন এবং আইএস ধ্বংস করুন।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

৫ comments

  1. Pingback: আল দৌলা আল ইসলামিয়া আল ইরাক আল শাম | প্রাত্যহিক পাঠ

  2. রবিউল ইসলাম সবুজ - ২৩ জুলাই ২০১৬ (৪:৪২ অপরাহ্ণ)

    আপনার চমৎকার বিশ্লেষনগুলো ভাবনার খোরাক যোগায়।

    সম্রাজ্যবাদের উত্থান, পৃথিবীর রাজনৈতিক-অর্থনেতিক পরিবর্তন, সমাজতন্ত্র, ধর্মীয় মৌলবাদ, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ যেন এক ধারাবাহিক প্রবাহ!

    কালের বিভিন্ন কলায় ভূ-রাজনৈতিক উত্থান-পতন, প্রশাসনিক ক্ষমতার পালা বদল, অর্থনৈতিক সক্রিয়তায় রাজনীতি, খনিজ সম্পদ, জঙ্গীবাদ তথা কালো টাকার প্রভাব – এ সব মিলিয়ে দারুন এক ধারাবাহিক লেখা যেতে পারে। যা পাঠককে সঠিক পথে ধারাবাহিকভাবে বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতির বিষয়ে চিন্তা করতে অনুপ্রাণিত করবে।

    আপনার কাছে এমন একটি লেখার আব্দার করছি।

    • মাসুদ করিম - ২৪ জুলাই ২০১৬ (৮:১৩ পূর্বাহ্ণ)

      মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ব্লগে তো আজকাল মন্তব্যের দেখাই পাওয়া যায় না।

      তেমন লেখা লিখতে পারব না কি না জানিনা, তবে আব্দার যেহেতু করেছেন, একটা ছক তৈরি করি, প্রস্তুত হই, লিখব, ধারাবাহিক নয়, ওই আজকাল যাকে লংরিড বলে সেরকম কিছু লিখতে চাই।

  3. Md AR Apu - ৩০ আগস্ট ২০১৬ (৩:১১ পূর্বাহ্ণ)

    একবারে ভিতর টা তুলে ধরেছেন।। উপস্থাপনা টাও বাসতব। ধন্যবাদ

  4. মাসুদ করিম - ১ নভেম্বর ২০১৬ (১০:০৩ পূর্বাহ্ণ)

    ‘আত্মসমর্পণ নয়তো মৃত‌্যু’, আইএস জঙ্গিদের প্রতি ইরাকি প্রধানমন্ত্রী

    ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুল দখল করে রাখা ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের সরকারি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি।

    বিবিসি বলছে, দেশটিতে আইএস জঙ্গিদের সর্বশেষ এই নগরঘাঁটি উদ্ধারে চূড়ান্ত অভিযান চালানোর দ্বারপ্রান্তে রয়েছে ইরাকি বাহিনী।

    যোদ্ধার পোশাক পরিহিত অবস্থায় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাদের কোনো উপায় নেই। হয় তারা আত্মসমর্পণ করবে নয়তো মারা পড়বে।”

    ইরাকি বিশেষ বাহিনী বর্তমানে মসুল শহরের পূর্বাংশের প্রবেশপথ থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। তারা শহরটিতে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

    জানা গেছে, দক্ষিণ দিক থেকেও সামরিক বাহিনীর অন‌্য ইউনিট শহরটির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

    আইএসের অপর নাম ব‌্যবহার করে আল-আবাদি বলেন, “আমরা সবদিক থেকে দায়েশের খুব কাছে চলে এসেছি এবং আল্লার ইচ্ছায় আমরা এই সাপের মাথা কর্তন করতে সক্ষম হবো। তারে বের হওয়ার কিংবা পালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

    আল-আবাদি পদাধিকার বলে ইরাকি সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক।

    সোমবার ইরাকি সামরিক বাহিনী মসুলের পূর্ব, উত্তর এবং দক্ষিণাংশের বেশ কিছু গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে বলে দেশটির সেনাবাহিনীর সূত্র জানিয়েছে।

    তবে ঠিক কখন মুসলে চূড়ান্ত অভিযান শুরু হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।

    ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৫০ হাজার সদস‌্য, কুর্দি পেশমেরগা যোদ্ধা, সুন্নি আরব আদিবাসী এবং শিয়া আধাসামরিক বাহিনীর সদস‌্যরা এই অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। প্রায় দুই সপ্তা আগে মসুল উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়।

    ২০১৪ সালের জুনে আইএস জঙ্গিরা মসুল দখল করে। তাদের নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি এই শহরটির একটি মসজিদ থেকে ওই অঞ্চলে ‘খিলাফত’ বা ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন।

    ১৭ অক্টোবর ইরাকি বাহিনী অভিযান শুরুর আগে ১৫ লাখ অধিবাসীর শহরটিতে ৩ থেকে ৫ হাজার আইএস জঙ্গি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.